এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ইস্কুলের গল্প 

    JD লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৮ এপ্রিল ২০১৯ | ৪৩৫২ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • (ভূমিকাঃ এইটা অনেকদিন আগের লেখা - আসলে লেখা নয়, এসব বন্ধুদের সন্তান-সন্ততিদের জন্য বানানো একটা মিউজিয়াম, বছর কুড়ি-পঁচিশ আগের উত্তর কলকাতার একটা ইস্কুলের গল্প - গুরু-তে দেবো ভাবিনি, কিন্তু কাল রাত্তিরে কী করে যেন অনেক পুরোনো একটা টই চোখে পড়লো, সে-ও এই এক-ই স্কুলের আরো পুরোনো গল্প, তবে সেসব আখ্যান ভয়ের, লজ্জার, এবং ভয়ানক কষ্টের - পড়ে মনে হলো এই অন্ধকার ক্লাসরুমে দু-একটা ঘুলঘুলি হলে মন্দ হয় না, তাই ... )

    বরানগরের আসল নাম কি এবং কোত্থেকে এসেছে এই নিয়ে তর্কের শ্যাষ নাই, মাঝে মাঝে ফেসবুকে দেখি বিভিন্ন সেপিয়া কালারের ছবির সাথে কিছু আজগুবি আর্গুমেন্ট, তবে সত্যি বলতে আমার ধারণা ওই জায়গাটার নাম চিরকাল-ই বরানগর ছিলো, নির্ঘাৎ মিশন স্কুলের সেকশান-ডি এর কোনো এক বাঁদর এবং ব্রিলিয়ান্ট ছেলে টাইম ট্রাভেল করে পেছনে গিয়ে কয়েকগাছা সরকারী দলিলে ইচ্ছে করে একটা ‘হ’ ঢুকিয়ে এসেছে, এখন কোথাও একটা হাওয়া খেতে খেতে মজা দেখছে ... তো যাই হোক, সেই স্কুলের কয়েকটা ছেলে-ছোকরা একটা গ্রুপ খুলেছে ফেসবুকে, তাতে সব পুরোনো গল্প-গাছা হচ্ছে, কিছু খুব সাংঘাতিক – সেসব সামনে এলে সমূহ বিপদ, আর বাদবাকি পড়ছি, আর মাঝে মাঝে ফিচিক-ফিচিক করে হাসি পাচ্ছে ... বর্ষাকাল এলেই বাড়ির সামনের সরু গলিতে যেমন জল ঢোকে, তেমনি আজকে দেখছি গ্রহান্তরের এই নির্জন গুহায় বসে হুহু করে অনেক-অনেক পুরোনো কথা মনে পড়ে যাচ্ছে ... জল নেমে গেলেই নিয়ম করে একদিন যেমন ছাদে বা বারান্দায় শুকোতে দিতাম পুরোনো খাতা-বই আর দু-একটা কিসের স্ট্যাম্প মারা কাগজ, সেইরকম কয়েকটা স্যাঁতসেঁতে স্মৃতি চলকে উঠছিলো, পাশাপাশি রেখে দিলাম এই পড়ন্ত বিকেলের রোদে ... এদের কতোটা সত্যি, কতোটা আমার গেঁজেল মেমোরি তা জানিনা ..

    ইস্কুলে আমাদের প্রধান কর্তব্য ছিলো টিফিনে ফুটবল খেলা, তাই টিফিন-টাইমের আগেই লুকিয়ে লুকিয়ে সাবাড় করতাম টিফিন ... প্রথমে নিজেরটা, তারপর আস্তে আস্তে পাশের, তারপর তারপাশের ... আস্তে আস্তে গোটা ক্লাসের টিফিন গোটা ক্লাস বেশ সুন্দর সমবন্টণ করে খেয়ে ফেলতো, ওদিকে বোর্ডে হয়তো মাইটোসিস-মিয়োসিস চলছে, কিংবা দৈর্ঘ্য x প্রস্থ = ক্ষেত্রফল ... খেলাটা হতো হয় মাঠে, নয় দোতলার ছাতে, আমরা সবাই একদিকে, বাকিরা আরেকদিকে .. আর সেই ছাতের ঠিক পাশেই ছিলো বি-আই কোম্পানির পাঁচিল, টিফিনে খেলার সময় থেকে থেকেই বল চলে যেতো, একবার ওরা কমপ্লেন করেছে, নাম না বললে বল দেবে না ... আমাদের সৌ-বাবু ছিলো সর্দার গোছের, দিব্যি নাম-টাম লিখে দিয়ে এসেছে, আমরাও বল পেয়ে গেছি ... আমি সেই বছর বোধহয় মনিটর ছিলাম, পরের দিন হেডু ডেকে পাঠিয়ে বললো কিছু বদমাইশের নাম পেয়েছি, নজর রাখবে ... আমি বুঝলাম হারামি বি-আই কোম্পানি কাঠি করেছে ... হেডুর কাছ থেকে লিস্ট-টা নিয়ে দেখি উপরে জ্বলজ্বল করছে কালপ্রিটদের নাম ... ১) সত্যজিত রায়, ২) অমর্ত্য সেন, ৩) সৌরভ গাঙ্গুলী ...

    ইস্কুলে মাঝেমাঝেই অসামাজিক কাজকর্ম হতো, এই যেমন একবার এই সৌ-বাবু খৈনী খেতে গিয়ে হেডুর কাছে ধরা পড়লো, আমি তো ভাবলাম এই বুঝি রাস্টিকেট করে দিলো ... তারপর দেখলাম না, গুরু পাপে লঘু দন্ড গার্জেন কল ... তা-ও কাউকে একটা নিয়ে যেতে হবে, তা সৌ-এর বুদ্ধি অনেক, চুপচাপ বাইরে থেকে একজন রিকশা-ওয়ালাকে নিয়ে চলে গেছে, বলেছে এই আমার মামা হয় ... হেডুও তাকে অনেক জ্ঞান-ট্যান দিচ্ছে, 'ছেলেকে তো শাসন-টাসন করেন না', ফেক মামা-ও শুনতে শুনতে হঠাৎ সৌ-কে এক ঠাঁটিয়ে চাঁটি কষিয়েছে ... বলাই বাহুল্য চাঁটি খেয়ে হজম করা ছাড়া গত্যন্তর নেই ...পরে বেরিয়ে চোটপাট করায় নতুন মামার বক্তব্য সে মন দিয়ে অ্যাক্টিং করছিলো ... চাঁটি-টা না মারলে ঠিক ক্যারেক্টারে ঢোকা যাচ্ছিলো না !

    তবে ছাত্ররাই শুধু বেয়াদব আর টিচার-রা মহানুভবতার গাছ ছিলেন এমন ঢপ মেরে নরকে যাওয়ার কোনো শখ আমার নেই ... এক-একজন টিচার ছিলেন যারা যে কোনো গুণ্ডাবাহিনীতে জয়েন করলে তরতর করে সোজা উপরে উঠে লোকসভায় সীট বাগিয়ে ফেলতে পারতেন, করেন-নি সে আমাদের সৌভাগ্য !

    এর’ম একজন ছিলো এস-কে-জি-টু। বলাই বাহুল্য, টু মানে ওয়ান-ও আছে, কিন্তু সিক্যুয়েলের দাপটে প্রিকোয়েল-কে আর কেউ মনে রাখে না ! তো সে এক আগমার্কা স্যাম্পেল ছিলো ... লোক-টা নিজের কোচিং এর সবাই কে গাদা গাদা নম্বর দিতো আর বাকি সবাই-কে ফেল করাতো ... এক্কেবারে হাড়-হারামি লোক মাইরি ... ভুগোলে ম্যাপ পয়েন্টিং দিয়েছিলো জুয়ারি নদী, শালা এর থেকে বেদিয়াপাড়ার নর্দমা বললে বেশী লোকে পারতো ... একবার ক্লাসে এসে বললেন, ‘হ্রদ কাকে বলে?’ – কেউ বলছে এই তো বাড়ির পেছনে যেটায় বিকেলে ছিপ ফেলি, কেউ আবার ফার্স্ট বয়, সে বলছে হ্রদ মানে তো ইদিকে বৈকাল, উদিকে ইরি-অন্টারিও ইত্যাদি, এস-কে-জি-টু সংজ্ঞা শুরু করলেন, ‘হ্রদ এমন জিনিষ যাতে মিষ্টি জল থাকতেও পারে, আবার না-ও পারে, স্থল দিয়ে ঘেরা হতেও পারে আবার নাও পারে, ঢেউ অথবা বিশাল মনস্টার তাতে দেখা যেতেও পারে, আবার না গেলেও কমপ্লেন করার কিছু নেই ...”, একটা এক পাতা লম্বা ডেফিনিশান যেদিন শেষ হলো, আমরা সমবেত দীর্ঘশ্বাস ফেলে বুঝলাম এই বছরেও কপালে গাড্ডু নাচছে ...

    তো একদিন দেখি টিফিন টাইমে সবাই হই-হই করে নাচছে ! জিগ্যেস করে জানা গেলো এস-কে-জি-টু পটল তুলেছে, তাই ছাত্রদের আনন্দের সীমা নেই (বলাই বাহুল্য পোলিটিক্যাল কারেক্টনেস সিঁথির মোড়ের ট্রাফিক সিগনালে হাঁ করে দাঁড়িয়ে থাকে, রাস্তা ক্রস করে বরানগরে ঢুকবে এমন সাহস তার আজ ওব্দি হয়নি) ... তা যা হোক, আমিও একটু ভয়ে-ভয়ে নাচলাম, তারপর শুনলাম না টু নয়, ওয়ান, মানে এস-কে-জি-ওয়ান! একজন বয়স্ক, সর্বজন শ্রদ্ধেয় মাস্টারমশাই ... দেখি গোটা ক্লাসে শোকের ছায়া নেমে এলো ... এতোদিন পরে অবশ্য তেমন রাগ নেই, বেঁচে থাকুন আর আরো অনেক প্রজন্ম-কে ভুগোল ভুলিয়ে ছাড়ুন ... তবে অকারণে শ্রদ্ধা করার-ও কারণ দেখিনা ...

    ভুগোলে ভয়ের কারণ অবশ্য একা এস্কেজি-টু ছিলেন না, ছিলেন অসিত-দা ! পরীক্ষার হলে চোতা ধরে থোঁতা করার গিনেস বুক থাকলে অসিত-দার নামে প্রথম দশখানা তাক-ই খালি রাখতে হবে ... তা এমন টিচার যে ছাত্রকূলের শ্রেণীশত্রু হয়ে দেখা দেবেন সে আর আশ্চর্যের কি আছে ! অক্ষমের প্রতিশোধস্পৃহা বড়ো বিচিত্র - একদিন মনে আছে টিফিনের সময় সিঁড়ির তলায় অসিত-দার সাইকেলের হাওয়া খোলা হচ্ছে, হঠাৎ দেখি সিঁড়ি দিয়ে এস কে পাল নেমে আসছেন (যাঁর নাকি বল-পেনের ব্যাবসা ছিলো) ... এস কে পাল সাইকেলটা দেখে আর্তনাদ করে বললেন 'ওরে ওটা আমার সাইকেল, অসিত-দার টা খুঁজছিস তো? ওটা ওইখানে"!! (এই এস কে পাল অবশ্য ভালো লোক ছিলেন, রাইট সাইড প্লাস ওয়ান, লেফট সাইড মাইনাস ওয়ান করে আর কুইজ খেলেে যে একটা গোটা ক্লাস চালিয়ে দেওয়া যায়, এটা ওনাকে না দেখলে Zআন্তি পারতাম না ...)

    আর একজন ছিলেন, প্রাইমারির তারক-দা ! পড়া না পারলে ভয় দেখাতেন পেন্টুল খুলে নিয়ে সামনে-পিছনে দুটো গাছের পাতা লাগিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেবেন ... সেসব ভয়ঙ্কর ব্যাপারের কথা কল্পনা করলে ক্লাসের অতি দুর্ধর্ষ ছেলেও ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলতো! আর মারামারির কথা না বলাই ভালো – অল্প চড়-চাপড় তো ধর্তব্যের মধ্যেই পড়তো না, আসল আসল শাস্তির কথা বলতে গেলে এখনো ভয় করে ! সতি বলতে কি এখনো ভাবি রাস্তায় সেই (অ)ভদ্রলোক-টিকে পেলে বাটাম দেবো ... আর আমি নিজে এখন শিক্ষক বলে হলফ করে বলতে পারি যে একবার-ও ছাত্রদের ভয় না দেখিয়ে, বাপ-মা উদ্ধার না করে বা মারধোর না করে, বরং তাদের সাথে বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার করে তাদের অনেক বেশী ভালো শেখানো যায়... সেই একটা জোক্ পড়েছিলাম, একজন লোক-কে কেউ জিগ্যেস করছে, দাদা আপনি ভালো ব্যবহার কোত্থেকে শিখলেন? সে বলছে, ওই তো অভদ্র ছোটলোকদের দেখে, ওরা যা যা করে আমি সেগুলো করি না, ব্যাস !

    এবং এটাও মনে করি যে আপনি অভাব-স্বভাব যাই দেখিয়ে জাস্টিফাই করতে ইচ্ছে হয় করুন, , একজন বয়স্ক লোক যে মূহুর্তে একজন শিশুর গায়ে হাত তোলে সেটা তার খুব ইচ্ছে করে বলেই তোলেন ... জাস্ট হাতের সুখ, আর কিস্যু না ! আমার এক ছাত্র একটা আফ্রিকান দেশ থেকে এখানে এসে পড়ছে বৃত্তি নিয়ে, সে দেশের ২৫% লোক এখনো দাসত্ব করে, কি ভয়ানক অভাব আমরা কল্পনা করতে পারবো না, তাকে জিগ্যেস করেছিলাম তোমাদের ইস্কুলে পেটায়? সে অবাক হয়ে বলেছিল টিচার-রা আবার পেটাবে কেনো?

    যা হোক, সেসব রাগের কথা বলতে গেলে রাত কাত হয়ে যাবে ... বরং ভালো লাগার গল্প করি বাকি সময় টুকু ... ভালো লাগতো কাকে?

    খুব শান্ত, নির্বিরোধ মানুষ ছিলেন সতীশ টুডু। টুডু-দা ছিলেন আমাদের স্কুলের সর্বঘটে কাঁঠালী কলা, উনি যে ঠিক কিসের টিচার ছিলেন কেউ জানতো না, তবে যে কোনো ক্লাসেই স্যার না এলে টুডুদা চলে আসতেন, কখনো আমরা বায়না করতাম ক্যুইজ-ক্যুইজ খেলা হবে, ডানদিক-বাঁদিকের মধ্যে চলতো চোখা-চোখা প্রশ্নবাণ, টুডু-দা চুপচাপ দেখতেন! তা একদিন এসে বললেন নাঃ আর ক্যুইজ নয়, আজ লেখাপড়া হবে, যাই ক্লাস হোক না কেনো, ব্যকরণ কিংবা বায়োলজি, টুডু-দা-ই পড়িয়েই ছাড়বেন ... জিগ্যেস করে জানা গেলো ক্লাস-টা লাইফ সায়েন্সের, আজকের বিষয় উদ্ভিদ ! টুডুদার মুখ অলৌকিক হাসিতে উদ্ভাসিত হয়ে উঠলো, বললেন, ‘অ, গাছ? তা গাছ দুরকম ! একরকম গাছ গাছে হয়, আরেকরকম গাছ জলে হয় ... নে এবার ক্যুইজ-ক্যুইজ খ্যাল” ... আবার সেই টুডু-দাকেই দেখেছি, ফুটবল খেলতে গিয়ে কেটে যাওয়ায় নিজে দৌড়ে গিয়ে ফার্স্ট-এইড বক্স হাতে করে ক্ষত ঢেকে দিচ্ছেন স্নেহ করে ... বছর কয়েক আগে শুনলাম, টুডু-দা আর নেই, খুব অল্প বয়সে হঠাৎ ছেড়ে চলে গেলেন, কে জানে হয়তো সেই অন্য জগতেও টিচার আসেননি আর একদিন-ও কামাই না করা টুডু-স্যার চলে গেছেন সেখানে আরেকদল দামাল ছেলেকে সামলাতে ...

    পার্ট-ওয়ানে সুভাষ-দার কথা লিখেছিলাম, ইংরেজী পড়াতেন – দেখতে ছিলো মাইকেল মধুসূদনের মতো (অন্ততঃ আমার তাই মনে হয়) ... আর এখানে তাই লিখলাম না, কিন্তু এটা ভেবে দেখলাম যে আমার যে কজন লোক-কে দারুণ লাগতো, তাদের মধ্যে অন্ততঃ চারজন – সুভাষ-দা, সুদীপ্ত নন্দী, সুদীপ্ত চক্রবর্তী আর প্রাইমারির নিশীথ-দা – ইংরেজির শিক্ষক ছিলেন ! কেন যে ভাষাটা আরেকটু মন দিয়ে পড়লাম না, এই আক্ষেপ এ জীবনে আর ঘোচার নয় !

    আর একজনের কথা না বললে এই গঙ্গাজলে গঙ্গাপুজো অসম্পূর্ণ থেকে যাবে, তার নাম বটুক-দা ! পানের কষে মুখ-ঠোঁট লাল করে ক্লাসে আসতেন, প্রথমে পড়াতেন সংস্কৃত, পরের দিকে দেবভাষার দুর্যোগ কেটে যাওয়ার পর বাংলা ... যদিও সত্যি বলতে, বটুক-দার বাংলা আর সংস্কৃতের মধ্যে খুব বেশী তফাৎ ছিলো না, হুট করে ঘুম থেকে উঠে মনে হতো হয়তো অভাগীর স্বর্গ পড়াতে পড়াতে গিয়ার শিফট করে চলে যাবেন সুভাষিতানিতে বা পাশ-ফেল গল্পে কে ফেল করেছে নোট লেখাতে গিয়ে লিখে দেবেন পুস্তকস্থা তু যা বিদ্যা ... তবে হ্যাঁ, বটুক-দা জীবনে একটি উপকার করেছিলেন, ক্লাস সেভেনে নিয়ম করে রোজ হাতের লেখা দেখাতে হতো ... সেই বছর রুল-টানা খাতায় লিখে লিখে আমার হাতের লেখা শুধরে গেলো, ভাবা যায়?

    যাহোক যা বলছিলাম, বিদ্যা দদাতি বিনয়ম, মানে বিদ্যে পেটে পড়লে কমঃ বিনয় কোঙারের মতন মুখের ভাষা হয় ... তা ইস্কুলে সবাইকে বাপ তুলে খিস্তি করার রেওয়াজ ছিলো বলে আমি প্রচুর লোকের বাবার নাম জানি এবং জানতাম, যেটা বোধহয় আর কোথাও কোনোদিন হয়নি ... ইলেভেন-টুয়েল্ভে না, কলেজে তো নয়-ই ...তা এই বুড়ো বয়সেও অনেকের টা দিব্যি মনে পড়ছে, যেমন... যেমন সেই সৌ-বাবুর বাবার নাম ছিলো বরুণ (বৃষ্টি পড়লেই কাকুকে হিসি করতে বারণ করা হতো), আরেক বন্ধু, যে রাশিয়ান কবিতা লিখতে পারতো, তার বাবার নাম ওম (প্রকাশ না পুরী সে নিয়ে ঐতিহাসিক-রা একমত নন)। একজনের ডাকনাম-ই ছিলো পুলিশের ব্যাটা ... বলাই বাহুল্য তার বাপ দোর্দণ্ডপ্রতাপ পুলিশ অফিসার ছিলেন, ছেলের সাথে ফুটবল খেলতে গেলে টের পাওয়া যেতো... ও হ্যাঁ, আর নীলাঞ্জনের বাবা ছিলেন নিরঞ্জন, সন্ধ্যের দিকে বর্ষার জল ঢোকা ল্যান্ডলাইনে ফোন করলে কে ধরছেন বোঝা লোকনাথ বাবার সাধ্যি নয় ...

    এইসব জ্ঞানার্জনের পথ কিন্তু আদৌ কুসুমাস্তীর্ণ ছিলো না ... বরং রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম বলা চলে, এই যেমন সেকশান এ-তে নীলাঞ্জন নামে আরেকজন ছিলো, সে আমাদের সাথে একটা কোচিং-এ পড়তো (ইন্দ্র-দা, অঙ্ক) আর আমরা ওর পাড়া দিয়ে গেলে ওকে ডেকে নিয়ে যেতাম ... তো আমাকে কোনো এক পুচ্ছ-পক্ক ছেলে বলে দিয়েছে, আরে ওর তো ডাকনাম পিন্টু, বাড়িতে কড়া নেড়ে আওয়াজ পাবি না, ওরা দোতলায় থাকে, নীচে দাঁড়িয়ে “পিন্টু পিন্টু” বলে ডাকিস বেরিয়ে আসবে ... আমিও গিয়ে দোতলার দিকে মুখ করে তারস্বরে "পিন্টু বেরিয়ে আয়, পিন্টু ঘুমোচ্ছিস নাকি" এইসব বলে খুব চিল্লাচ্ছি ... একসময় দেখি সদর দরজা খুলে গেলো আর একজন গম্ভীর লোক বেরিয়ে এসে বললেন, "আমার নাম পিন্টু পাইক, তুমি কাকে চাও?"

    সেইদিন আমি উসেইন বোল্টের থেকেও জোরে দৌড়েছিলাম ...

    আমার বাবা-ও কম বিখ্যাত ছিলেন না, বাবার নাম ছিলো জগন্নাথ ... এখনো মনে আছে শুদ্ধসত্ত্ব-দা শ্রী কৃষ্ণের লীলা পড়াতে গিয়ে জগন্নাথ কোথায় কি পানু-কাজ করেছেন তার সচিত্র বর্ণনা করে চলেছেন, আর গোটা ক্লাস আমার দিকে তাকিয়ে খ্যা-খ্যা করে হাসছে ...(ভদ্রলোক এখন তান্ত্রিক হয়ে গেছেন, আনন্দবাজারে বশীকরণ-টরণে অ্যাড-ও বেরোয় নাকি!)

    সেই জগন্নাথ-বাবু আর নেই, অনেক দিন ইহলোকের মায়া কাটিয়ে অন্য জগতে চলে গেছেন ... এক বন্ধুর কাছ থেকে আরো অনেকের খবর শুনলাম, মন-টা ভারী হয়ে গেলো, এই তো সেদিন দেখলাম ফোয়ারার মোড়ে বাজার করে ফিরছেন, এর মধ্যেই নেই মানে কি??? আরও কত খবর এমনি-ই রোজ উড়ে আসছে, কেউ না কেউ কোথাও পিতৃহারা হচ্ছে ... সেই বয়সে কেউ যদি বলতো, বড়ো হওয়া মানেই যদি রোজ রোজ এই দুঃসংবাদ নিতে শেখা, তাহলে অনেকদিন আগেই খেলবো না বলে বল নিয়ে বাড়ি ফিরে আসতাম ...

    নীল গেইম্যান এক জায়গায় বলেছিলেন, “... the real problem with stories -- if you keep them going long enough, they always end in death.” ... মাঝে মাঝে মনে হয় এর থেকে সত্যি কথা আর বোধহয় কিছুই নেই, এই দেখুন ... শুরু করেছিলাম ইস্কুলের গল্প বলতে ... কোথায় কোথায় অলি-গলি-ঘুঁজি ঘুরে সেই পোঁছে গেলো চেনা ঠিকানায় !

    অনেক গল্প তা-ও বলা বাকি রয়ে গেলো জানি ... বাকি রয়ে গেলেন কতো প্রিয় শিক্ষক, কতো বন্ধুদের গল্প ... যোগেশ-দার কোচিঙ-এর গল্প বলা হলো না, বলা হলো না দিব্যদা-বাবলুদা-সুকোমল-দার গল্প ... আর, আর ... আমাদের ইস্কুলের দুই পা দূরে সেই রাজকুমারী ইস্কু্লের গল্প, যেখানে বচ্ছরকার দিন সরস্বতী পুজোয় একবার করে যাওয়াই ছিলো সেই টিনেজ বয়সের সবথেকে বড়ো কীর্তি !

    আসলে কি, আমাদের মতন বয়সে গল্পের ঝোঁক আসে, মনে হয় বিকেলে দাওয়ায় পা ছড়িয়ে বসি মেজপিসির মতো, যাঁর কাছে শুনতাম পাঁচালীর গল্প, পুরাণের গল্প আর ফুরিয়ে যাওয়া দুপুরের গল্প। দেখতাম শাপদগ্ধ যযাতি আর তার পুত্র যদু-কে। যদু পিতার জরা নিতে ভয় পাচ্ছেন আর যযাতির অভিশাপ তার সন্তান-সন্ততি অধিকার হারাচ্ছে রাজসিংহাসনের ! আমি-ই সেই যদুবাবু, আমার বয়েস অনেক। তা-ও বুড়িয়ে যেতে ভয় পাই, আর তাই ফুরিয়ে যাওয়া দুপুরের গল্পের মধ্যে দিয়ে শুধুই পৌঁছতে চেষ্টা করে চলেছি আমার কৈশোরে আর শৈশবে ... আর সে বিকেল-মাখা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে নিজেকে নিজেই বলছি, ‘দশটা বছরের গল্প কি আর দশ মিনিটে হয়?’
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৮ এপ্রিল ২০১৯ | ৪৩৫২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • Abhyu | 47.39.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৬:২০104668
  • তারাপদ স্যার একবার ঠ্যাঙানো প্রসঙ্গে বলেছিলেন - তোদের সব কমপ্ল্যান খাওয়া হাড়, ধরলেই মট করে ভেঙ্গে যায়, মারব কি! আমাদের স্কুলে পেটাই ও আদর দুইই ছিল। তবে সবচেয়ে অসুবিধে হত স্যারমিসদের ছেলেমেয়েদের - বেশ একটু শাঁখের করাত টাইপ অবস্থা!

  • যদুবাবু | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৬:২৭104669
  • "স্যারমিসদের ছেলেমেয়ে" দের সত্যি করুণ অবস্থা! 

    আমার এক বন্ধুর বাবা নরেন্দ্রপুরে পড়াতেন। তা একদিন বোর্ডে অঙ্ক কষতে গিয়ে কিছু একটা ছড়িয়েছেন, আর বারবার ভুল করে খুব লেজেগোবরে হচ্ছেন, ক্লাসে যথারীতি চাপা গুঞ্জন ও খিকখিক - খালি একজনের মুখ ভয়ানক গম্ভীর। 

    শেষে বিধ্বস্ত স্যারবাবা তার দিকে ফিরে বললেন, "কি রে হাসছিস না যে বড়ো? তোর বাবা বলে? হাস, হাস তুইও হাস!" 

     

  • Abhyu | 47.39.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৪১104670
  • পেটানো প্রসঙ্গে



  • &/ | 151.14.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৪১104671
  • এখন আর নিজের ছেলেপিলেদের নিজের স্কুলে দিতে পারেন না টিচাররা, বেসরকারী মহার্ঘ্য স্কুলে পাঠাতে বাধ্য হন। পরিবেশ একেবারেই বদলে গেছে মাত্র দশ-পনেরো বছরে।

  • Abhyu | 47.39.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৪৩104672
  • এটাও থাকা উচিত



  • &/ | 151.14.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৪৫104673
  • জ্যোতিষ্ক নামটা বেশ কঠিন। কিন্তু ভেবে দেখুন সম্রাট কণিষ্কের কথা। অবশ্য তাঁর আর কী? যেসব কর্মচারীদের ক্রমাগতঃ সম্রাটের নাম লিখতে হত বড় বড় রোল করা লাটাইয়ের মতন চিঠিতে, তাঁদের চাপ।

  • Abhyu | 47.39.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৪৯104674
  • আমাদের ব্যাচমেটের নাম আনন্দ শঙ্কর মাইতি (ASM)।
    বাবা GSM = গ্রেট স্লো মোশান
    ছেলে ASM = আরো স্লো মোশান

  • &/ | 151.14.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৫১104675
  • লীলা মজুমদারের বাবা তো শুনেছি নিজের ছেলেমেয়েদের পিটিয়ে মাটিতে বিছিয়ে দিতেন। অবশ্য দুরন্তগুলোকে। লীলার এক প্রায় সমবয়সী দিদি ছিল, সে খুব শান্ত লক্ষ্মীমেয়ে ছিল।পাকদন্ডীতে তার গল্প পড়ে যা মনে হয়। হয়তো ওদের বাবা ওই মেয়েকে মারতেন না।

  • যদুবাবু | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৫৫104676
  • অভ্যুদাঃ গল্পটা দারুণ !! এটার-ই শেষ গপ্পোটা ছিলো সেই ছাত্র আর তার থিসিস গাইড? লীলা মজুমদারের গল্প পড়া হলো কতোদিন বাদে - পড়লেই অটোমেটিক্যালি মুখে হাসি খেলে যায় ! আচ্ছা ওই অসাধারণ ইলাস্ট্রেশন-গুলো কার? জানো? 

    &\- আমার ইস্কুলের লক্ষ্মী স্যার আমাকে কণিষ্ক বলেই ডাকতেন। কেন সে বোধগম্য হয়নি। তবে বড়ো বয়সে লজ্জায় মাথা কাটা গেছে অনেকবার কাজেই তাঁর দূরদর্শিতার প্রশংসা না করে উপায় নেই। 

  • &/ | 151.14.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৫৬104677
  • যদুবাবু, শুধু ফেবুপেজে কেন, আগেকার দিনে এখানেও স্কুলডেজ নিয়ে আহা আহা বাহা বাহা হত। কোন কোন টিচার আর গার্জিয়ান পিটিয়েপুটিয়ে মেরেধরে কত উন্নতি ঘটিয়েছিলেন, সেই নিয়ে আহা আহা।
    সেই তেনাদের মাঝে মাঝে বলতে ইচ্ছে করে তাহলে আর বস টস নিয়ে অভিযোগ করেন কেন? বস প্রত্যেকদিন সকালে ঠাঁটিয়ে থাপ্পড় যাতে দেন সেই ব্যবস্থা করে নিন, তাতে আরো উন্নতি হবে।

  • &/ | 151.14.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৫৮104678
  • কণিষ্কদের বংশে কার যেন হুবিষ্ক না কী নাম ছিল। সেই তুলনায় কণিষ্ক অনেক শ্রুতিমধুর।

  • যদুবাবু | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৭:০২104679
  • হা হা হা হা !! আরও স্লো মোশন ... এই লাইনের শেষে নিশ্চয়ই পারফেক্টলি মোশনলেস কেউ আবির্ভূত হবেন। 

    নাম বলতে মনে পড়লো, কদিন আগে জানলাম গ্রীক পুরাণের প্রমিথিউস আর তার ভাই এপিমিথিউস - এদের নামের অর্থ forethought, ও afterthought। পৌরাণিক-দের রসবোধ ছিলো মানতেই হবে। 

  • যদুবাবু | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৭:০৪104680
  • "তাহলে আর বস টস নিয়ে অভিযোগ করেন কেন? বস প্রত্যেকদিন সকালে ঠাঁটিয়ে থাপ্পড় যাতে দেন সেই ব্যবস্থা করে নিন, তাতে আরো উন্নতি হবে।" - এইটা মোক্ষম বলেছেন। এরপরে এই মারধোরের নষ্টালজিয়া দেখলেই এইটা স্প্রে করে আসবো। :D 

  • &/ | 151.14.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৭:০৯104682
  • মূল শব্দটা একই। মেথিউ মনে হয়। একজনের ক্ষেত্রে আগে একটা প্রো লাগিয়েছে, আরেকজনের ক্ষেত্রে লাগিয়েছে এপি। ঃ-)

  • &/ | 151.14.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৭:১৩104684
  • স্ট্রাকচার মনে হয় আমাদের সংস্কৃতের মতই। প্র পরা অপ সম ইত্যাদিদের মতন নানা উপসর্গ সামনে জুড়ে জুড়ে নতুন নতুন শব্দ তৈরী।

  • যদুবাবু | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৭:২১104685
  • ঠিক, ঠিক ... আমার পাশের বাড়ির কাকুরা যেমন অনেক ভাইবোন, কিন্তু তাদের নাম সব জোড়ায়-জোড়ায় ছন্দ মেলানো। একদম বড়ো থেকে ছোটোর দিকে গেলে - সদা - গদা, পল্টু-লাল্টু, কালু-বিলু, ্ রমা-ক্ষমা। যিনি অড-ম্যান-আউট তার ডাক নামটিও আউটলায়ার - খ্যাঁদা। 

  • যদুবাবু | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৭:২৫104686
  • হ্যাঁ, ইভোলিউশনের ট্রি-তে নিশ্চয়ই গ্রীক আর সংস্কৃত কাছাকাছিই (মানে এক-ই শাখার ডালপালা) পড়বে কে জানে? ক্লাসিক ল্যাঙ্গোয়েজ নিয়ে আমার অবশ্য এক বিন্দুও জ্ঞান নেই, কাজেই আন্দাজে অন্ধকারে ঢিল মারলাম। খালি কয়েকটা গাছপালা আর ব্যাঙের সায়েন্টিফিক নেম জানি। আর অঙ্কে যা যা লাগে। 

  • Abhyu | 47.39.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৭:৩৬104688
  • হ্যাঁ শেষ গল্পটা ছিল "যা মা বাবাকে বলগে যা। এই বলে চলে গেল।" :)
    লীলা মজুমদারের খেরোর খাতার ছবিগুলো বিখ্যাত কারও আঁকা। অহিভূষণ মালিক সম্ভবতঃ কিন্তু এখন ঠিক মনে পড়ছে না। খুঁজেও পাচ্ছি না কোথাও।

  • Abhyu | 47.39.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৮:২৫104690
  • এইটা খুব ভালো লাগল
    Delhi is a novel
    Bangalore is a blog
    Bombay is a poem
    Calcutta is a little magazine: avant-garde, blue-sky, obscure; hopelessly rebellious and romantic.

  • যদুবাবু | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৮:৪২104691
  • একজন লিখেছিলো, Kolkata is a heated argument over a cup of tea. আমার মনে হলো এর থেকে ভালো উপমা হয় না? 

  • Abhyu | 47.39.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২১ ০৯:১৬104692
  • এটাও ভালো, তবে তোমার লিট্ল ম্যাগাজিনের উপমাটা আরো বেশি ভালো লেগেছে আমার।

  • সম্বিৎ | ১২ এপ্রিল ২০২১ ১০:২৮104693
  • খেরোর খাতার ছবি বোধহয় ভাইপোবাবুর আঁকা।

  • Abhyu | 47.39.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২১ ১০:৩৪104694
  • সত্যজিৎ রায়ের আঁকা? তোমার কাছে পুরোনো কপি আছে, যেখানে নাম লেখা? আমি মাঝখানে অনেক খুঁজেছিলাম।

  • সম্বিৎ | ১২ এপ্রিল ২০২১ ১১:৪১104697
  • দেখলাম। ইলাস্ট্রেটরের ক্রেডিট যায়নি। কিন্তু, ছবি দেখেও ভাইপোবাবুই মনে হচ্ছে। লেখাগুলো কি সন্দেশে বেরিয়েছিল?

  • সম্বিৎ | ১২ এপ্রিল ২০২১ ১২:০৯104699
  • খবর পেয়েছি। ইলাস্ট্রেশন তাপস দত্ত।

  • Abhyu | 47.39.***.*** | ১২ এপ্রিল ২০২১ ২১:০৮104707
  • থ্যাঙ্কু ন্যাড়াদা।

  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন