এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • ভুয়ো খবর যাচাই করে নিন

    যদুবাবু লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৮৮১ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (৪ জন)
  • "There are known knowns; there are things we know we know. We also know there are known unknowns; that is to say we know there are some things we do not know. But there are also unknown unknowns—the ones we don't know we don't know."

    ইতিহাসের বিখ্যাত বা কুখ্যাততম উক্তিগুলোর একটি। ডোনাল্ড রামসফেল্ডের। তাও আজকে হঠাৎ মনে হ'ল একদিকে দুর্নীতিতে মোড়া প্রশাসন আরেকদিকে ‘সনসনিখেস’ মিডিয়া আর হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটি - এইসবের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এখন সেই রামসফেল্ডিয়ান আননোন-এর টেরিটরিতে পৌঁছে গেছি। ভুয়ো খবরের দাপট বাড়তে বাড়তে এমন অবস্থা যে এইটা বললেও অত্যুক্তি হবে না যে একজন মানুষ তার সারাদিনে যা যা শুনছেন, ভাবছেন, যা তাকে আলোড়িত করছে, তার একটা বিরাট অংশ সম্পূর্ণ মনগড়া, ধোঁকার টাটি। আবার এক-ই সঙ্গে যা তার সত্যিই শোনা উচিত, তা আর এসে পৌঁছচ্ছে না এইসব পেরিয়ে। এ যেন সেই ‘অদ্ভুত এক আঁধার’, তাই ‘সকলেই সকলকে আড়চোখে দেখে’। 
     
    এই গোটা স্মোক-শো বা ইন্দ্রজালের খেলা কিন্তু দুর্ঘটনা না, বরং এটাই উদ্দেশ্য ছিল বিভাজনকামী শক্তির, রাষ্ট্রযন্ত্রের অথবা তাদের অনুগামী মিডিয়ার। তাই, লাগাতার একের পর এক কখনো ভুয়ো মিথ্যা খবর ছড়িয়ে ছড়িয়ে একটা এমন জায়গায় নিয়ে যাওয়া যে মানুষ নিজের সাধারণ বুদ্ধিকে, কমন সেন্সকেই, প্রশ্ন করতে শুরু করে দেয়। সত্যি যা-ই হোক, সমস্ত তথ্য আর তাদের পরিবেশন পেঁচিয়ে-পেঁচিয়ে এমন জায়গায় নিয়ে যাওয়া যে তার কাছে সব-ই সম্ভাব্য, প্লজ়িবল। অবিশ্বাস্য লাগুক বা না লাগুক, সব-ই 'হতেই তো পারে', এবং তার উল্টোটা, অর্থাৎ সব-ই তো ভুয়োও হতে পারে। আর তার সঙ্গে বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি-এর মত কী জঘন্য মর্মান্তিক এবং অমানবিক কোন্দল! সেখানে শোকের অবকাশ নেই, সংযমের শিক্ষা নেই, শুধুই চিৎকার। যার গলার জোর যতো বেশি, তার ফ্যাক্ট ততো মজবুত।

    মনে রাখা দরকার, এই ভুয়ো খবরের সর্বগ্রাসী ঢেউ শুধু এই একটি আন্দোলনেই সীমাবদ্ধ নয়। একটি দেশেও নয়। পৃথিবীর যে কোনো দেশে যে কোনো সোশ্যাল মিডিয়াতেই ফেক নিউজ়, ফেক প্রোফাইলের অবাধ চারণভূমি। এক্স/টুইটারে “কমিউনিটি নোট” নামক কিছু বালির বাঁধ আছে বটে, তবে সে-ও জনগণের ভরসায়, অনেকে যদি ধরতে পারে তবে মূল খবরের নিচে একটি ছোট্ট চৌকো বাক্স, আর এতই সামান্য যে ওর উপরে ভরসা করার উপায় নেই। টুইটারের বাইরে অন্য কিছুতে, যেমন হোয়াটস-অ্যাপে সেইসবের-ও বালাই নেই।
     
    আসলে, এই ২০২৪-এর মানুষ দিনের একটা বিশাল সময় কাটায় ফোনে, তার খবর, বিনোদন থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ, বিনিময় সবটুকুই ঘটে ফোনে। এবং ইন্টারনেট যথেষ্ট সহজলভ্য। ফলে যে কোনো সামাজিক মাধ্যমের অ্যাপে এতো প্রচণ্ড বেগে তথ্য, ছবি, ভিডিও ঢুকতে থাকে যে, তার সাথে পাল্লা দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার, প্রায় অসম্ভব। খেয়াল করলেই দেখা যায় টিভি-তেও সারাদিন-ই ব্রেকিং নিউজ়, ছটা স্ক্রিনে ছ-জন লোক চ্যাঁচাচ্ছেন, আর সারাক্ষণ-ই হোয়াটস-অ্যাপে ক্রমাগত হয় ফরোয়ার্ডেড মেসেজ, নয় ভিডিও, নয় একগাদা ছবি। এবং তাদের বেশীর ভাগ-ই জ্বালাময়ী, প্রোভোকেটিভ। সেগুলোর মূল উদ্দেশ্য কিন্তু মানুষকে কিছু খবর জানানো বা ‘ইনফর্ম’ করা নয়, মূল উদ্দেশ্য খোঁচা দেওয়া, আঘাত করা স্পর্শকাতর জায়গায়, আর ছড়িয়ে পড়া। সোশ্যাল মিডিয়া বাঁচেই মানুষের যোগাযোগে, অর্থাৎ এই আদান-প্রদান-ই তার অক্সিজেন, তার লাভক্ষতির অঙ্কের আয়ের ঘরের মূল অঙ্ক। তাই যাবতীয় অ্যালগোরিদমের লক্ষ আসলে ঐটিই, কত দ্রুত ছড়িয়ে পড়া যায়, কত সহজে মানুষকে বাধ্য করা যায় নির্বিচারে মেসেজ দিকে-দিগন্তরে ছড়িয়ে দিতে।   
    গোদের উপর বিষফোঁড়া, একের পর এক সংবাদ-মাধ্যমের সম্পূর্ণ কাণ্ডজ্ঞানহীন, দায়িত্বহীন কাজ। উদাহরণ - এই কয়েকদিন আগেই খবর বেরিয়েছিল, আরজিকর কাণ্ডের সেই প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষের পাশে দাঁড়িয়ে অভিযুক্ত  সঞ্জয় কেক কাটছে। পরে জানা গেলো তিনি অন্য একজন লোক - প্রসূন চ্যাটার্জি। কিন্তু এই ভুয়ো খবর টাইমস নাউ, জ়ি, রিপাব্লিক - সবাই ছেপেছিল। সেই খবর, সেই ছবি নিজেদের টাইমলাইনে পোস্ট করেছিলেন তাবড়, তাবড় সেলিব্রিটি, পাবলিক পার্সোন্যালিটি – সৃজিত মুখার্জি, প্রতীম ডি গুপ্তা ইত্যাদি অনেকেই। সৃজিতবাবুর ফলোয়ার এই আজকের তারিখে ৯০৪,০০০। ভাবুন! ঠিক আছে, সেলিব্রিটিদের না হয় প্রভাব বিশাল কিন্তু কৃতকর্মের দায়ভার শূন্য, সে না হয় একপ্রকার মেনেই নিলাম, কিন্তু ঐ জ়ি, টাইমস- এরা সবাই তো প্রতিষ্ঠিত মিডিয়া, স্কুলের  হোয়াটস-অ্যাপের চ্যানেল না। তারাও ফেক নিউজ় চেক না করে ছড়িয়ে দিলে আর কাকে দোষ দেবেন। আর দোষ দেবেন-ই বা কার কাছে? অভিযোগ জানানোর যে জায়গা, সেই পুলিশ-ও এই আরজিকর কাণ্ডের সময়কালেই অন্ততঃ দুবার ভুয়ো খবর ছড়িয়ে ধরা পড়ে বিব্রত হয়ে পোস্ট মুছে দিয়েছে। লজ্জার একশেষ!
     
    আরও লজ্জার ব্যাপার এই যে, এই খবরটা যে ভুয়ো সেটা ধরা এমন কিছুই কঠিন ছিলো না। একজন-ও যদি একটা রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখতো, তাহলেই ধরা যেতো ঐ ছবির উৎস কোথায়? সেটা একজন সাধারণ মানুষ যার ইন্টারনেট যোগাযোগ আছে তিনিই করতে পারেন। কিচ্ছু বিশাল টেক-স্যাভি হতে লাগবে না।
     
    আজকালকার গুগল সার্চ ইঞ্জিন খুব-ই উন্নত। যে কোনো ছবির উপর রাইট ক্লিক করলেই “সার্চ উইথ লেন্সে”-র অপশন দেখায়। সে দিয়ে শুধু খবরের সত্যতা-ই নয়, চাইলে ফুলের ছবির উপর রিভার্স সার্চ করে জেনে নিতে পারবেন সেটি কোন প্রজাতি, কোনো পেইন্টিং ভালো লাগলে লেন্স বলে দেবে কার আঁকা, অন্য ভাষার ডকুমেন্ট হলে অনুবাদ-ও করে দেবে সঙ্গে-সঙ্গে, এমন কি বইয়ের পাতার কি ছাপানো অক্ষরের ছবি তুলে তার মধ্যে থেকে শুধু টেক্সট-টুকু সেঁচে বের করে দিতে পারে আপনাকে এতো উন্নত সেই টুল। (সঙ্গের ছবিটি দেখুন।) এ ছাড়াও, অন্য ওয়েবসাইট/অ্যাপ-ও আছে। গুগলের-ই images.google.com, আরেকটু শক্তিশালী অস্ত্র চাইলে ইন-ভিড। এই শেষোক্ত জিনিষটি “দায়িত্ববান” সাংবাদিক-রা ব্যবহার করেন। মানে সত্যিকারের সাংবাদিক-রা, ইনফ্লুএন্সার-পদপ্রার্থী চিল্লানোসরাসদের ঐসব বালাই নেই। 
     
    তবে, রিভার্স ইমেজ সার্চের থেকেও আরও প্রাথমিক স্তরেই বোঝার উপায় “প্যারালাল রিডিং”। সেটা কী জিনিষ? সহজে বললে, যেই দেখবেন এমন কিছু হাতে এসেছে যে দেখেই খুব আঁকুপাঁকু করছে শেয়ার করতে, ছড়িয়ে দিতে দিকে-দিগন্তরে, সঙ্গে সঙ্গে একটু থমকে দাঁড়ান। ঠিক এইটাই তো ফেক-ফ্যাক্টরি চায়। সেনসেশনাল খবর দেখলেই একটু, দু-মিনিট দাঁড়িয়ে যান। মানুষের দৈনন্দিন জীবন কিন্তু আসলে প্রচণ্ড সেনসেশনাল, উত্তেজনাপূর্ণ নয়। খবরটা দুবার-তিনবার পড়ুন, ভাবুন এটা কি কোনোভাবে যাচাই/ভেরিফাই করা সম্ভব? পারলে একাধিক "নির্ভরযোগ্য" জায়গা খুঁজে দেখুন। এই একাধিক জায়গা থেকে খুঁজে দেখাকেই বলে সমান্তরাল পাঠ - প্যারালাল রিডিং। তার মধ্যে "নির্ভরযোগ্য" জায়গা কি, সে ঠিক করার দায়িত্ব-ও অবশ্য পাঠকের-ই, তাও এতে ভুয়ো খবর ধরা পড়ার সম্ভাবনা বেশ ভালোই। আর কিছু এমন মিডিয়া বা সাইট আছে, যাদের কাজ-ই ভুয়ো খবর ধরা, এই যেমন অল্ট-নিউজ় একটা নামকরা প্রতিষ্ঠিত ফেক-বাস্টিং এজেন্সি। সেখানে একবার ঢুঁ মেরে আসা হয়তো মন্দ হবে না।

    আর যেটা আরো প্রাথমিক, বা বলা ভালো, সত্যিকারের দরকার সেটা হ'ল "ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং"। একটু তলিয়ে, গভীরে গিয়ে ভাবা। বেশির ভাগ ভুয়ো খবর-ই কিন্তু অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য অন্ততঃ একেবারে ভয়ানক অবিশ্বাস্য না। সেই জন্য নিজের বায়াসকেও প্রশ্ন করতে হবে প্রতিনিয়ত। এই যেমন আমার সামান্য বাঁদিকে কান্নিক, আমাকে কেউ যদি বলে বিজেপির প্রোটেস্ট মিছিলে চটুল নাচ হচ্ছে স্টেজে, বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হবে। যেমন হয়েছিল গুচ্ছ লোকের। আমার বন্ধুদের-ও কেউ কেউ শেয়ার করেছিলেন। পরে জানা গেলো ঐটা নবদ্বীপের একটা মেলার ভিডিও। এই প্রোটেস্টের সাথে সম্পর্কহীন। কাজেই “এমনটা হতেই তো পারে” ভাবা-ই যথেষ্ট না, আপনার বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে কি না সেটাও হয়তো আসলে ভুল দিকেই নিয়ে যাচ্ছে, নিজের বায়াস সরিয়ে রেখেই যাচাই করতে হবে প্রত্যেকটি খবর।
     
    আসলে সব ফেক নিউজ-ও এইরকম-ই। এতো সুচারু ভাবে সেগুলো বানানো যে শুনে মনে হবে কী জানি হতেও তো পারে। আজকালকার সমাজে কী-ই না সম্ভব? কিন্তু ঐরকম-ই একটা ফেক নিউজ়ের ফলে গণরোষের শিকার হতে পারেন নির্দোষ কেউ, বা সাঙ্ঘাতিক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লেগে যেতে পারে কোথাও। জীবন-মরণের প্রশ্ন। ক্রিটিক্যাল থিংকিং প্রসঙ্গে আরেকটা উদাহরণ দিই। গত বছর অর্থাৎ ২০২৩-এর ঘটনা, একটি ছবি ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়, তাতে দেখা যাচ্ছে একজন মোটরসাইকেলের পেছনে প্লাস্টিকে মোড়া কিছু একটা নিয়ে যাচ্ছে, আর প্লাস্টিকের ফাঁক দিয়ে একটি মানুষের পা উঁকি দিচ্ছে। কিন্তু এর মধ্যে কোনো রহস্যরোমাঞ্চ সাঙ্ঘাতিক হত্যাকাণ্ড কিস্যু নেই। ছবিটা আসলে কায়রো-র। একটি দোকান থেকে ম্যানিকুইন ডিস-অ্যাসেম্বল করে অর্থাৎ বিভিন্ন অংশ খুলে নিয়ে আরেকটি দোকানে নিয়ে যাওয়ার পথের ছবি। যেটা উঁকি মারছে সেটা ঐ পুতুলের পা। এই ছবিটিই বিজেপির রাইট-উইং আইটি-সেল টুইট করে ভাইরাল করে দেয়, সঙ্গে মেসেজ “উসকা আবদুল সব সে অলগ থে” , আর মূহুর্তের মধ্যে ইন্টারনেট ভরে যায় জঘন্য সব মেসেজে। সবকটার-ই অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য মুসলিম মানুষদের নামে মিথ্যাচার ও বিশ্রী কালিমালেপন। অথচ, এটা দেখেই একজন লোকের মাথায় প্রথম প্রশ্নই আসা উচিত যে কেউ খুন করলে বাইকে চাপিয়ে লাশ নিয়ে গটগটিয়ে রাস্তা দিয়ে যাবে এমন হওয়াটাই তো আশ্চর্যের। দেখি তো এটা ভুয়ো কি না? বিশেষ করে এমন মেসেজ যেখানে চরিত্রহনন করা হচ্ছে একটি সম্প্রদায়ের মানুষদের, আর করা হচ্ছেই একটি সাম্প্রদায়িক সংগঠনের হ্যান্ডল থেকে।
     
    ভেবে দেখুন ঠাণ্ডা মাথায়, আপনি শুরু করেননি গুজব, কিন্তু দুম করে ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে শেয়ার করে ফেললে কিন্তু আপনিও সেই বিস্তৃত চক্রান্তের অংশীদার হয়ে গেলেন, চেয়ে বা না চেয়ে। তাই প্রাথমিক প্রতিরোধ, আরো অনেক কিছুর মতই শুরু করতে হবে বাড়িতেই।
     
    হয়তো একদিন এমন পৃথিবী আসবে সভ্যতার বা প্রযুক্তির হাত ধরে যেদিন সামাজিক মাধ্যমের এই দানবের দাপাদাপিতে লাগাম পরাতে পারবো আমরা। হয়তো একদিন সরকার হবে এমন একটি ব্যবস্থা যারা সত্যিই সত্যির দিকেই থাকার চেষ্টা করবে প্রাণপণ আর আমাদের এই প্রতিটি মূহুর্তে প্রতিটি তথ্যকে সন্দেহের চোখে দেখতে হবে না। সহজে বিশ্বাস করে নিতে পারবো আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধুদের দলকে, বিখ্যাত লোকেদের কথার দাম থাকবে সামান্য, কোনো প্রতিষ্ঠান মিথ্যা বলবে না সর্বসমক্ষে। কিন্তু আমি সেই আশায় বুক বাঁধতে পারছি না, তাই সবাইকেই অনুরোধ, এই একটু সাবধান হোন, ইন্টারনেট সাবালক হয়ে হাতের বাইরে চলে গেছে, সে এখন এক ওয়েপন অফ মাস ডিস্ট্রাকশন শুধু নয় ডেস্ট্রাকশন-ও বটে, আপনারাও তাকে সামলাতেই না হয় একটু বড়ো হয়ে উঠুন।
     
    পুনশ্চঃ অল্ট-নিউজ়ের পেজে একটি মেথডোলজির পাতা আছে – মেথডোলজি ফর ফ্যাক্ট চেকিং – সত্য যাচাই-এর উপায়সমূহ। নিচে লিংক দিলাম। আগ্রহীরা পড়ে দেখুন।

    সূত্রঃ
    ১) বিজেপির প্রতিবাদ সভায় নাচের ভুয়ো খবর -
    https://www.altnews.in/woman-dancing-at-bjps-r-g-kar-protest-no-viral-video-is-from-a-bengal-village-fair/
    ২) সন্দীপ ঘোষের পাশে দাঁড়িয়ে সঞ্জয় রায়ের কেক কাটার ভুয়ো খবর -
    https://www.altnews.in/sanjay-roy-cutting-cake-next-to-ex-principal-sandip-ghosh-no-man-in-viral-photo-is-not-the-r-g-kar-accused/
    ৩) কায়রোয় ম্যানিকুইন পরিবহণের ছবিকে কেন্দ্র করে দক্ষিণপন্থী আইটি সেলের ছড়ানো ভুয়ো খবর -
    https://www.altnews.in/mannequin-carried-on-bike-image-from-cairo-viral-with-communal-spin-in-india/
    ৪) অল্ট-নিউজ় ফ্যাক্ট চেকিং মেথডোলজ়ি - https://www.altnews.in/methodology-for-fact-checking/ 

    রিভার্স ইমেজ সার্চ কী করে করবেন?


    কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ এই প্রতিবেদনটি লেখার সময়ে বিভিন্ন সূত্র, ছবি ও লেখাটির কাঠামো নিয়ে বিভিন্ন উপদেশের জন্য ইন্দ্রদীপ ভট্টাচার্যর কাছে কৃতজ্ঞ। 
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৮৮১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 172.58.***.*** | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০০:৪৯537530
  • লেখাটা খুবই ভালো লাগলো যদুবাবু। মুশকিল হচ্ছে ক্রিটিক্যাল থিংকিং তো দূরের কথা, সামান্যতম সাধারণ থিংকিং করাতেই আজকাল লোকের প্রভূত অনীহা দেখতে পাই। সবারই ফিউজ অত্যন্ত ছোট। রিয়াকশন দেখাবার ন্যূনতম সুযোগ পেলেই লোকে লাফিয়ে ওঠে। আমার এগুলো দেখে লীলা মজুমদারের 'খেরোর খাতা'র সেই গল্পটা মনে পড়ে যায়। কলকাতার রাস্তায় একটা গাড়ি একজন বুড়িমানুষকে ধাক্কা দিয়েছে ধরে নিয়েই এক্দল মস্তান গাড়ির বনেটে উঠে লাঠি ঘুরিয়ে "দেখে নেবো, দেখে নেবো" করে নাচতে লাগলো। তারা কেউ একবারও দেখেওনি যে গাড়ির ভেতরে কে রয়েছে। এমনকি আদৌ যে বুড়ি মহিলার গায়ে ধাক্কাও লাগেনি তাও তারা জানতোনা।
  • NRO | 165.124.***.*** | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০১:১২537531
  • Truncated quotation, probably done intentionally to mislead. The quotation continues with “And if one looks throughout the history of our country and other free countries, it is the latter category that tends to be the difficult ones.” Clearly, the context was national security.

    ‘Unknown unknown’ is a concept that is frequently used in planning for space exploration and war gaming. It means ‘we don’t understand it because we do not have experience/knowledge about it’. This RG Kar media frenzy is more like ‘known unknowns’ which means we know something about it but we do not understand it.
     
  • যদুবাবু | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০১:১৪537532
  • একেবারেই তাই। প্রভূত অনীহা তো বটেই। আবার ভুল করেও ভুল ধরিয়ে দিলে ডাবল ডাউন করে লোকে। পাবলিক স্পেসে "হ্যাভিং দি লাস্ট ওয়ার্ডে"-র থেকে বড়ো কিছু নেই। জিততেই হবে। 
  • যদুবাবু | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০১:২৪537533
  • ধুর, এ তো বহুল প্রচলিত উক্তি। ওর আগেও আছে, পরেও আছে - যেটুকু প্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে দিয়েছি। মিসলিড করার উদ্দেশ্য নেই। আপনার মনে হয়ে থাকলে দুঃখিত। এই ঘটনাতেও সবকিছু জানা নেই, এবং আমার "ধারণা" ঠিক কী জানা নেই, তাও জানা নেই। হয়তো unknowable! সেই নিয়ে স্পেকুলেট করতে চাই না। কারণ স্পেকুলেশন বিপজ্জনক হতে পারে। 
     
    আর, আর-জি কর কাণ্ডের সময়ে যে হারে ভুয়ো খবর ছড়িয়েছে বা ছড়াচ্ছে সেটা মোটিভেশন হলেও সেটাই একমাত্র কারণ নয় লেখার। আমার মনে হয়েছে যত দিন যাচ্ছে ভুয়ো খবরের প্রকোপ আরও বাড়ছে, আরও বাড়তেই থাকবে, তাই কমনলি-ইউজড টুলস গুলো নিয়ে লিখেছি। 
  • আমিতাভ সেন | 117.194.***.*** | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:২২537546
  • খুব ভালো লিখেছেন। আর একটা জিনিষ ও খুব ইন্টারেষ্টিং। আজকের বাজারে অধিকাংশ মানুষ কে আপনি যদি ধরিয়েও দেন যে তার শেয়ার করা খবরটি ভুয়ো তাহলেও না তিনি তাঁর পোস্ট ডিলিট করবেন না দুঃখ প্রকাশ করবেন। পরিবর্তে এক ঘন্টা পরেই আর একটি ভুয় খবর ছড়াবেন। এঁরা কিন্তু ভুয়ো খবর ছড়িয়েই উত্তেজনা পান যেমন অনেকে বিভিন্ন নেশার দ্রব্য থেকে পান। এনাদের কিছু বোঝানো খুব মিশকিল কিন্তু চেষ্টা ত রাখতেই হবে।
  • একক | 2409:4060:2d8e:6f85::1d8a:***:*** | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:০৭537552
  • ফেক নিউজ চিরকাল আছে। ফরাসি বিপ্লবের সময় আঁতোয়ানেত কে নিয়ে ফেক নিউজ ছড়ানো হয়েচিল, তিনি নাকি যাদের রুটি জোটেনা তাদের কেক খেতে বলেচেন। এটা যে ফেক তা ধরতেই বহু বছর কেটে গেচে।
     
    মানুষ চিরকাল ই প্রামাণ্য কিছুর রেস্পেক্ট এ তুলনা করে ফেক ডিটেক্ট করে। রাস্ট্র এবং বিগ করপোরেটের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে এই ফ্যাক্ট চেকিং প্রসেস অনেক ইন্সটিটিউশনালাইজ হয়েচে। আমরা ক্রাইম রিপোর্ট নিয়ে কোন প্রচার শুনলে এন্সিয়ারবির সাইট দেখে নিই। কেও সায়েন্টিফিক স্টাডির নামে ভুলভাল দাবি করলে উক্ত পেপার পিয়ার রিভিউড কিনা,  পয়েন্ট কতো এসব খুঁজে দেখি। ফোটোগ্রাফ দেখে সন্দেহ হলে ইমেজ সার্চ করি।  এসব ই আমরা অল্পবিস্তর করে আসচি।
     
    কিন্তু ঠিক এই সময়ে দাঁড়িয়ে,  যেখানে রাস্ট্র হলফনামা দিয়ে ভুল তথ্য দিচ্চে কোর্টে,  লেজিসলেটিভ আর এক্সিকিউটিভ দুই মিলে মনের খুশিতে ফেক নিউজ ছড়িয়ে যাচ্চে, সরকারি সাইটে বিজ্ঞানের নামে হাবিজাবি লেখা থাকচে, আর এয়াই এমন যায়গায় পৌঁছেচে যে ইমেজ সার্চ করেও একশো ভাগ নিশ্চিত হওয়া সম্ভব না...তখন আম জনতা কী করবে??  কাকে প্রামাণ্য ধরবে?  কার রেস্পেক্ট এ কাকে বিচার করবে?  এমনিতেই ইস্কুল লেভেল থেকে লজিক তুলে দিয়ে মানুষজনের সঙ্গে সাধারণ তর্ক করাই অসম্ভব হয়ে গেচে। তার ওপর রাস্ট্র - পুলিশ ব্যবস্থা এরা খুব লো লেভেলেও এতো ছড়াচ্চে যে, এদের দেওয়া তথ্যকেও প্রামাণ্য ভাবা যাচ্চে না। নেহাৎ ই ভক্তিবাদ বা পক্ষপাত না থাকলে। 
     
     
    সময়টা বেজায় আনস্ট্রাকচারড। নতুন হাতিয়ার চাই।
  • যদুবাবু | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৩০537562
  • সে তো বটেই। নিউজ়ের আগে থেকেই ফেক নিউজ় আছে মনে হয়। সমস্ত মিডিয়া-ই খবরের পাশাপাশি গুজবের-ও বাহন হয়েছে  - ছাপানো বা প্রিন্টেড বা তার-ও আগে এনসিয়েন্ট রোমে কয়েনের উপর এচ করে। 

    NCRB চেক করা, বা সেন্সাস ঘেঁটে দেখা, বা পিয়ার-রিভিউড কি না, হলেও কেমন জার্নাল ইত্যাদি তো অনেক, অনেক দূরের ব্যাপার। মানে সেটা যারা করেন তারা কত পারসেন্ট? আমি জানি না। খুব-ই কম হবেন হয়তো। 

    তার বাইরে, ব্রডার কমিউনিটির "আম"-জনতা কী করবে সে তো যার যার তার তার। আমি-তুমি বললে থোড়াই কিচু করবে। বেশি জ্ঞান দিলে উল্টে দাবড়ে দেবে। এই সব প্রতিরোধের আসল দায়িত্ব "রাষ্ট্রের" বা সরকারের, সে তো বিন্দুমাত্র ইচ্ছুক নয়। ক্ষমতা টিঁকেই থাকে পোষা মিডিয়ার প্রোপাগাণ্ডার উপর ভর দিয়ে। ওর উপর আশা করে বসে থাকলে হয়েই গ্যাচে। 

    কিন্তু, তার মানে একজন ইন্ডিভিজুয়ালের দায়িত্ব উবে যায় না। কারণ ঐ জনতার মধ্যেও বিভিন্ন লোকের বিভিন্ন এফেক্ট। আমি যদি ফেসবুকে কত লোকের কাছে পৌঁছচ্ছে সেই দিয়ে একটু মাপি তাহলেও বোঝা যায়। এই যেমন ডাক্তার নারায়ণ ব্যানার্জীর দেখলাম ৪৪৬ হাজার ফলোয়ার, সৃজিতের ৯০৪ হাজার, এরা তো মনের আনন্দে, বিন্দুমাত্র পরিণামের কথা না ভেবে সটাসট কপি-পেস্ট মেরেছেন। ফুটেজবাসনা তো এদের-ও নষ্ট করেছে। খালি এদের বদামোর ফলে যে ফল-আউট হয় তার স্কেল-টা অনেক বেশি। উল্টোদিকে সৈকতদা রোজ যা হচ্ছে নোট রাখছে। খেটেখুটে হিয়ারিং ট্রান্সক্রাইব করছে, তার মোট ফলোয়ার ১২ হাজার। আর তো ইন্ডিভিজুয়ালি কাউকে একটা দায়াসারা এফর্ট-ও মারতে দেখলাম না। হয়তো আচে, আমিই দেখিনি, হতেই পারে। মিডিয়ার মধ্যে অল্ট-নিউজ় যা করে সব-ই ইংরেজি, বাংলায় কিছু নেই।
     
    এবার ঐ সব সেলেবরা আমার কথা শুনে তো আর কাল থেকে দায়িত্ববান হয়ে যাবেন্না। কিন্তু একজন লোকেও যদি রিভার্স ইমেজ সার্চ ব্যাপারটা বুঝে একদিন একটা ফেক নিউজ ধরে ফেলেন তাতেই লাভ। 

    একটা সামান্য ফলস অ্যানালজি দিই। একজন মানুষ বাড়িতে এসি কম চালিয়ে কি কম প্লাস্টিক ইউজ় করে কি আর পাঁচটা ঐরকম কাজ করে কী ক্লাইমেট চেনজ় ঠ্যাকাতে পারবেন? না পারবেন না। কিন্তু তার মানে ঐ কাজগুলো বেকার হয়ে যায় না। স্কেলে করলে ছোটো ছোটো ব্যক্তিগত হ্যাবিটের অনেক প্রভাব আছে। হাত ধোয়া থেকে গ্লাভস পরা অনেক কিছুর। পাব্লিক হেলথের দিক থেকে ভাবলে তাই মনে হয়। 
  • Guru | 2409:4060:2e1a:933f:2a34:4b8f:386:***:*** | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:৪৩537564
  • যদুবাবুকে অনেক ধন্যবাদ একটি অত্যন্ত্ প্রাসঙ্গিক লেখা দেবার জন্যে l আমার মনে হয় fake news অনেকটাই নির্ভর করে যিনি বা যারা পোটেনশিয়াল রিসিভার্স of fake news তাদের social construction এর উপরে l যেমন ধরুন RG Kar এর ঘটনা আসলে কিছু সংখ্যালঘু মানুষের দ্বারা ঘটানো এইটা fake news হিসাবে প্রচার করলেও অনেকেই এটি বিশ্বাস করে নেবে যেহেতু ওই সম্প্রদায়ের সম্বন্ধে একটা বিশেষ outlook সোশ্যাল construction kora হয়েছে মেইনস্ট্রিম মিডিয়াতে l 
  • Guru | 2409:4060:2e1a:933f:2a34:4b8f:386:***:*** | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:০০537565
  • https://x.com/salah_shoaib/status/1833572949187825809?t=SAsTLRsW8gFvlhyhaNAwuw&s=19.           যদুবাবুকে অনেক ধন্যবাদ এই fake news ধরবার টুলটি শেখানোর জন্যে l আজকেই উপরের টুইটটা গেরুয়া শিবিরে থেকে ছড়ানো হয়েছে অন্তর্জালে l বাংলাদেশের এক হাসিনাপন্থী সাংবাদিক রাহুল গান্ধীর উপরে ব্যাক্তিগত কুৎসা রটানোর জন্যে করেছিলেন এই টুইটটা l এতে বলা হয়েছে , একজন মহিলাকে দেখিয়ে যে ইনি একজন ইতালিয়ান মহিলা যার সঙ্গে রাহুল গান্ধীর গোপনে বিয়ে হয়ে দুটি সন্তান আছে l কিন্তু আমি যদুবাবুর পদ্ধতি ব্যবহার করে apply করলাম এই টুইটের মহিলার ছবির উপরে এবং দেখা গেলো এই মহিলা আসলে মহারাষ্ট্রের এক কংগ্রেস নেত্রী যার সঙ্গে ইতালির কোনো সম্পর্ক নেই l যদুবাবুকে এই fake news ধড়িয়ে দেবার tool শেখানোর জন্যে অনেক ধন্যবাদ l
  • আহা | 2409:40e6:9:72a0:e0a5:95ff:fe6a:***:*** | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০০:২৪537567
  • এককবাবুর কথা এখন অত ধরতে নেই। পরিবার বিজেপির চ্যানেলের  ফেকফ্যাক্টরিতে ঢাকঢোল পিটিয়ে বসছেন, ফেক নিউজে হাওয়া দিচ্ছেন, ফেক নিউজ ছড়িয়ে বেরাচ্ছেন,  আর সেজন্যই হয়তো বিজেপির চ্যানেল নিয়ে ছুঁতমার্গ দেখলেও  ছিছিক্কার করছেন।  হয়তো নিজেও বললেই বসবেন,  নিজেও হয়ত বিজেপির পথেই বা আগে থেকেই ছিলেন।
    পোস্ট পড়ে মনে হয়েছে বাম তো একেবারেই নয়। সেক্ষেত্রে ফেক নিউজকে ট্রিভিয়ালাইজ, নরমালাইজ করবেন, এটাই স্বাভাবিক। ফেকের তাত্ত্বিক প্রতিষ্ঠা দেবেন।
    বিজেপি মাত্রেই নির্বোধ, রক্ষণশীল, সাদাকালো থেকে বেরন।  গুরুর রেসিডেন্ট চাড্ডিরা অমন নন। 
     
    ওঁরা কিন্তু আবার চাড্ডি বললে রেগেও যান। মতে না মিললে ভুলভাল দাগিয়ে দেওয়া বলেন। খোলাখুলি স্বীকার করতে চান না।  গর্ব সে বোলো,  আমি চাড্ডি, এমন আচ্ছে দিন বাংলায় মোটের উপর এসে গেলেও এসব কিছু সাইটে এখনো আসেনি কিনা। চাড্ডি মানে কিছুটা হ্যাটার ব্যাপার, লাথিঝাঁটার উপর রাখার ব্যাপার, এখনো কিছুটা আছে মনে হয়। এঁরা তাই এখন, এখনো কিছুটা ছুপা মোডে, তবে আর বেশিদিন থাকতে হবেনা। বঙ্গে বিজেপিরে আর রুধিবে কে? সামান্য সময়ের অপেক্ষা। 
     
    যদুবাবু অরণ্যে রোদন করছেন।
     
    জয় বাবা ফেকুনাথ।  
  • একক | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০১:০৬537568
  • @যদুবাবু
     
     
    প্রথমত,  ইন্ডিভিজুয়ালের দায় ব্যাপারটা এতো লিনিয়ার নয় বোধহয় । সৈকতবাবু তো কদিন আগে,  গরু কেসে কেন কেষ্টকে ধরা হলো - এ মহা অন্যায় -- এই মর্মে বারংবার আঙুল তুলছিলেন। এখন যাঁরা ফেকবাস্টিং যজ্ঞে সৈকতভক্ত হয়েসেন, তাঁরাও সেইকালে বিশেষ উঁচা বলেন নি কারন কেষ্টকাণ্ডে জ্বালাতন আছিল সবাই,   আমি স্পষ্টই বলেছিলুম,  কেষ্ট অনেক গুল খিলিয়ে শেষে পচা শামুকে পা কেটেচে, ও নিয়ে বিদুরগিরি করে লাভ নাই। তার মানে এই না যে আমি সৈকতবাবুর স্ট্যান্সকে রেকগনাইজ করচি না। উনি ওঁর কাজ করচেন, কিন্তু ওটিই একমাত্র দায়মুক্তির পথ নয়। যারা ফেক নিউজের ভেক্টর তারা সবাই ফেক নিউজ চেক করতে জানেনা এমন ভেবে নেওয়া ঈষত বাড়াবাড়ি।  অনেকেই ফেক নিউজ চেক করেনা বা জেনেও ছড়ায় কারণ তার বা তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ যদি ওই ফেক দিয়েও মিটে যায় তাহলে একটা বিষে বিষক্ষয় হয়। এটাও একটা ভ্যালিড দায়মুক্তি, অন্তত রাজনৈতিক প্রশ্নে। সৃজিত ইত্যাদি পেজ থ্রি এন্টিটিরা এসব করে পাতি টিয়ারপির জন্যে। কিন্তু বাকী যাদের নাম নিয়েচ, তাদের ইক্যুয়েশন অতো সহজ নয়। ওঁয়ারা জেনেশুনেই "ইতি কুঞ্জর: " বলেন। সেটাও একটা দায় ও লক্ষ্য থেকে। সেটার একটা রাজনীতি রয়েচে। সৈকতবাবুর ও  কৌরবপক্ষে থেকে বিদুর হওয়ার সততা রয়েচে যা বিলক্ষণ রাজনৈতিক। যে যাঁর লক্ষ্যে চলেচেন।আমার কাওকে নিয়েই প্রব্লেম নেই। তুমি নাম করে না লিখলে আমিও প্রসঙ্গে যেতুম না। 
     
    নেহাৎ ওসব নিয়ে কথা বলতে হলে ভাটে বা অন্য টইতে হোক... কারণ এই লেখার উদ্দেশ্য বোধহয় ব্যহত হবে নাম ধরে ধরে কথা বলতে গেলে, তাই না?  
     
     
     
     
     
    এবার মুশকিল হলো : আমার আগের পোস্টের বক্তব্য আদৌ ইন্ডিভিজুয়ালের দায় নেই এরূপ ছিলো না। অল্ট নিউজ আর ইমেজ সার্চ টুলে তোমার লেখা সীমাবদ্ধ থাকলে আমি এটাকে ভেরি হেল্পফুল কন্টেন্ট ক্যাটেগরিতে ফেলে কয়েকজন কে শেয়ার করে নিজের দায় সারতুম :) কিন্তু তোমার লেখার শিরোনাম,  র‍্যামস্ফেইল্ড এর উক্তি,  শেষে ক্রিটিকাল থিংকিং ইত্যাদি মিলে যে প্রতিশ্রুতি তয়ের করেচে : 
     
    তার প্রেক্ষিতেই আমার প্রশ্ন ছিলো, আবার ক্লিয়ারলি রাকচি : হুম ডু ট্রাস্ট হোয়েন ইওর ইন্সটিটিউশনস ফেইল??  পুলিশ কাঁচা মিথ্যে বলে ধরা পড়চে সোশ্যাল মিডিয়ায়, সরকার কোর্টে মিথ্যে বয়ান দিচ্চে..এমতাবস্থায় লোকে ফেক বাস্টিং করবে কাকে সত্যবাদী ধরে??  ধরেই নিলুম সেই সেট অফ পিপল  ফেক বাস্টিং করার ইচ্ছে রাখে। 
     
     
     
  • একক | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০১:২১537569
  • * ডু ইউ ট্রাস্ট
  • যদুবাবু | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:১২537572
  • @এককঃ হ্যাঁ, আমি তোমার প্রশ্নটা আগে বুঝতে পারিনি। স্যরি। আমি "আমজনতা কী করবে??"-তেই আটকে গেছি, "কাকে প্রামাণ্য ধরবে?" অব্দি আর পৌঁছুই নি। 

    "হুম ডু ইউ ট্রাস্ট হোয়েন ইওর ইন্সটিটিউশনস ফেইল?" - এর উত্তর আমার কাছে নেই। 
     
    আজ থেকে কিছুদিন আগে হলে হয়তো বলতাম নিজের বিচারবুদ্ধি। মানে ব্যক্তিগত স্তরে, আমার নিজের বিচারবুদ্ধির উপর সামান্য আস্থা ছিলো, কিন্তু আসলে সেই আস্থাটাও একদম ফার্স্ট প্রিন্সিপল থেকে ধাপে ধাপে আসা কনক্লুশন নয় -সেখানেও ইনস্টিটিউশন ছিল। যেমন ধরো, আমি ভাবতাম অমুক আর্টিকল-টা ল্যান্সেটে কি ঐরকম একটি পিন্যাকল জার্নালে বেরিয়েছে, তাহলে নিশ্চয়ই খুব-ই রিগোরাস স্টাডিই হয়েছে। কোভিডুনিশের সময় সেটাও ঘেঁটে গেছে। হয়তো আমিই বেশি নাইভ ছিলাম। জানি না। 

    তাই এখন এক্কেবারেই জানা নেই ইন্সটিটিউশন-ই ফেইল মারলে কোথায় দাঁড়াই। এটা একটা ব্যক্তিগত এবং গ্লোবাল ক্রাইসিস যার থেকে বেরুনোর উপায় দেখতে পাই না। কেউ পেলে জানাবেন। 

    আর তার আগের কথাগুলো ভাটে বা টইতে হলেই ভালো, এখানে প্রাসঙ্গিক হবে না। আমি সুপার-স্প্রেডারের উদাহরণ দিতে চাইছিলাম ভার্সেস নর্ম্যাল বা নর্ম্যালের থেকে সামান্য বেশি - কিন্তু অপোজ়িট ডিরেকশন। তবে, এইটা একদম ১০০% মেনে নিলাম যে যারা ফেক নিউজ়ের ভেক্টর তারা চেক করতে জানেন না বলেই ছড়ান এটা ওভার-সিমপ্লিফিকেশন। (মানে আমি যদি এখন ক্লেইম করি যে "ফার্স্ট বয়" রিভার্স ইমেজ সার্চ করতে জানেন না তাহলে ঘোড়ায়-ও হাসবে।)

    @গুরুঃ বাঃ, জেনে খুশি হলাম। আর ট্যুইট-টা নিয়ে কী আর বলবো। জঘন্য। 

    @অমিতাভ সেনঃ আগে উত্তর দিইনি তাই স্যরি। ধন্যবাদ জানবেন। 
  • একক | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৩:০০537574
  • @যদুবাবু 
     
    আমার কাছেও উত্তর নেই। 
     
    লেজিসলেটিভ আর এক্সিকিউটিভ পরস্পরকে চেক এন্ড ব্যাল্যান্স করার মধ্যে দিয়েই গনতন্ত্রের সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। তো তারাই যেখানে অশুভ আঁতাত করে বসে থাকে,  সেই অন্ধকারে কোথায় সত্যি খুঁজব। এখন একটাই লক্ষ্য এই নেক্সাসকে দূর্বল করা। অন্তত পরের আইপিএস রিক্রুট  যেন খেয়াল রাখে যে চাকরি খাওয়ার মালিক আদতে এমাইসি নয়,  জনতা।  এই ভয় জরুরি।  নইলে এরা দোঁহে মিলে শয়তানের আড্ডা বানিয়েচে রাজ্যটাকে। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:

RGKar
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন