অলংকরণ: রমিত
কবিতা – ১
আমার ভিতরে কোনো দীঘল জলাধার নেই,
অন্তত অনুভবে বা অনুতাপে খুঁজে পাই নি কোনো জলাধার।
অথচ যখনই তিন মাইল হাঁটি, সারা গা ভরে যায় জলে।
আজ জানি,
তোমার জলাধারের টইটম্বুর জলে কতটা রোদে বাষ্প হয়,
কতটা বাষ্পে হয় মেঘ!
দুপুরে নিহিত মেঘের অভিমুখে হেঁটে যাই তাই।
বিসংবাদ আছে বলেই যে প্রেমিক-পিওন আমার কাছে আসে,
সেও আচম্বিতে মোরাম-এ একা পেয়ে শোনায় তার নিদারুণ প্রেমের কথা!
কিন্তু, তাতে কি?
নিশ্চিত অনুমানে,
তিন মাইল হেঁটে গিয়ে আমি,
তোমার আনত চোখে এরপর দেখি বারো-মাসের ভালোবাসা,
বিশুষ্ক তৃণে দীঘল মেঘ!
কবিতা – ২
দিগন্তে হাঁটা দিলে,
রক্তিম আকাশে আজও খরস্রোতা নদী দেয় ডুব।
আদিগন্ত ঢাকা থাকে আজও, নিভৃত বনাঞ্চলে।
বিকেলে পাতা ওড়ে, আর প্রভাতে ভিড় করে পাখি।
এসব এখনো হয়,
এখনো ভালোবাসায় কোনো খামতি পড়েনি।
যদিও আজ আর নেই, জানি,
আমাদের মাঝে সেই চিরকালের প্রভা।
তবুও,
মাস্তুলে কিংবা উত্তাল জলে,
জেগে আছে দশ-বিশ বছরের নিরবধি সময়।
অসমাপ্ত দিনের মতো কোনো এক অসমাপ্ত ক্ষণে
যার বেড়ে ওঠার কথা ছিল,
সে আজও ওঠেনি বেড়ে!
তাই দিগন্তে হাঁটা দিলে,
গাঢ় হয় বনের রং
রক্তিম আকাশে এখনো খরস্রোতা নদী দেয় ডুব।
কবিতা – ৩
লবণাক্ত দিনগুলি ঘরবন্দি থাকি,
কখনও পুরানো দিনের কথা
নির্বাক যুগের চলচ্চিত্রের মত
মনের ভিতর ঘুরে ফিরে আসে।
বয়সে নবীন নয় এরকম,
প্রবীণও নয় যারা
মাঝে মাঝে সাজানো কোলাজে
মিলিয়ে দেখে
আর ভাবে
নির্বিবাদে পাওয়ার মত আজ আছে শুধু
নিরক্ষীয় উষ্ণতা
আর
আত্মমগ্ন মানুষের মাথা ঘোরানো দমবন্ধ হাওয়া...