রাম। রাক্ষসপুরীর যাবতীয় ক্লেশ এবং অপমান যেন সীতা ভুলে গেলেন এই আশ্রমে অবতারণের সঙ্গে সঙ্গেই। সেই যে তাপসীরা সঙ্গে করে বিভিন্ন কুটীর-অভ্যন্তরে পরিক্রমা করাচ্ছেন তাঁকে, কেউ ডাকছে সখী, কেউ জানকী, কেউ বা বধূ আর নাম ধরেও কেউ যে সীতা সম্ভাষণ করছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা আর যেন শেষই হচ্ছে না তাঁর! (অন্দরের দিকে তাকিয়ে) ঐ যে আসছেন।
তাপসী। এই নাও তোমার স্বামী, এত লড়াই করে তোমাকে উদ্ধার করে নিয়ে এল, আহা, শ্যামবর্ণ যেন কালি!
সীতা। (ব্রীড়াবনত) আর্যপুত্রের জয় হোক। (তাপসী দৌড়িয়ে পালিয়ে যান)
রাম। সীতা, এই জনস্থানের কথা মনে পড়ে? মনে আছে তোমার সন্তানতুল্য গাছপালার কথা?
সীতা। মনে নেই আবার! তখন যাদের অবনতমস্তকে দেখা যেত এই এক যুগ অতিক্রান্ত হবার পর তারা মহীরুহ হয়ে উঠেছে, আজ তাদের দেখতে হলে মাথা ওপরে তুলে দেখতে হয়।
রাম। তাই হয়, দেবী। কালের প্রভাবে উঁচু হয় নীচু, নীচু হয় উঁচু। এই ছাতিম গাছটাকে মনে পড়ে তোমার? অযোধ্যায় আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবার জন্য ভরত যখন এসে এই ছাতিম গাছের নীচে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন শুভ্রবসন ভরতকে দেখে ভীত হরিণের দল দৌড়িয়ে পালিয়েছিল। আর, নদীর ধারে ঐ তটভূমিতে পিতার শ্রাদ্ধের আয়োজন করছিলাম যখন, তখনই সেই স্বর্ণগাত্র মায়ামৃগ দেখেছিলাম আমরা, মনে পড়ে?
সীতা। না না আর্যপুত্র, ও কথা আর মনে করিয়ে দেবেন না।
রাম। ভয় পেয়ো না দেবী, ভয় পেয়ো না আর। সে সব দিন কেটে গেছে। (হঠাৎ চোখ কুঞ্চিত করে ওপরের দিকে তাকিয়ে) এ কী! কোথা থেকে লোধ্রফুলের রেণুর মতো সূক্ষ্ম শুভ্র ধূলিকণা উড়ে আসছে, পটহের গম্ভীর ধ্বনি আশ্রমবাসীদের শঙ্খধ্বনিকে ছাপিয়ে নাগরিক শব্দদূষণ সৃষ্টি করছে!
লক্ষ্মণ। জয় হোক আর্যের। আর্য, আপনাকে সাদরে অযোধ্যায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রায় সমগ্র অযোধ্যাবাসী, অমাত্যবৃন্দ, এবং মায়েদের সঙ্গে নিয়ে ভ্রাতৃবৎসল ভরত এই আশ্রম অভিমুখে আসছেন।
রাম। ভরত আসছে? এই আশ্রম পর্যন্ত?
লক্ষ্মণ। হ্যাঁ, আর্য। তাঁরা প্রায় এসেই পড়েছেন।
রাম। সীতা, দেখ দেখ, তোমার শ্বশ্রুমাতাদের দেখ, আর দেখ অপাপবিদ্ধ ভ্রাতৃবৎসল এই ভরতকে।
ভরত। মেঘমুক্ত শরতের নির্মল চন্দ্রের মতো সদ্যসঙ্কটমুক্ত, আর্যাসমন্বিত, জগতে অতুলনীয় আমার জ্যেষ্ঠভ্রাতাকে অযোধ্যায় সাদরে নিয়ে যাবার জন্য সমস্ত স্বজনদের নিয়ে আজ এই আশ্রম এসেছি। আর্য, আমি ভরত। প্রণাম করছি।
রাম। মায়েরা, আপনাদের সকলকে প্রণাম। (রাম, সীতা এবং লক্ষ্মণ একসঙ্গে প্রণাম করেন)
ভরত। আর্য সুমন্ত্র, আপনি কোথায়?
সুমন্ত্র। (প্রবেশ করেন) এই যে কুমার, আমি এখানে।
রাম। তাত সুমন্ত্র, আমাদের প্রণাম গ্রহণ করুন।
সুমন্ত্র। জয়ী হও বৎস। তোমার আদেশে চতুর্দশ বৎসর তোমার প্রতিনিধি হয়ে তোমার পূত পাদুকাদ্বয়কে শিরোধার্য করে ভরত কৃতিত্বের সঙ্গে অযোধ্যাপালন করেছেন। পিতৃপুরুষের পুণ্যবলে সমস্ত সঙ্কট মুক্ত হয়ে নির্দিষ্ট সময়েই তুমি বনবাস সম্পূর্ণ করেছ। পূর্বপ্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আজ ভরত এসেছেন তোমার অভিষেক সম্পূর্ণ করে, অযোধ্যায় তোমাকে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়ে অযোধ্যার সিংহাসন ফিরিয়ে দেবার জন্য। তোমার নিশ্চয়ই মনে আছে বৎস, এই সিংহাসন ফিরিয়ে নিতে তুমি অঙ্গীকারবদ্ধ।
ভরত। (রামের প্রতি) আপনি অনুমতি দিন আর্য। কুলগুরু মহর্ষি বশিষ্ঠ এবং কুলপুরোহিত মাননীয় বামদেব সমস্ত প্রজাদের নিয়ে অভিষেক সম্ভার নিয়ে উদ্গ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছেন। মুনিরা আপনার শুভ কামনায় তীর্থবারি নিয়ে অপেক্ষারত।
মাতৃত্রয়। যাও বৎস, অভিষেক গ্রহণ করো।
রাম। আমি অনুগৃহীত। (সমবেত উল্লাসধ্বনি) কিন্তু, কিন্তু আমার একটি দ্বিধা আছে। আমার প্রতিশ্রুতি আমি স্বীকার করছি। কিন্তু সে প্রতিশ্রুতি যদি না দিতাম তাহলে চোদ্দ বছর পূর্বে পিতৃসত্য পালিত হত না, অনুজ রাজশ্রেষ্ঠ ভরত তাহলে কোনমতেই অযোধ্যার দায়িত্ব নিতেন না। আপনাদের সকলের মনে আছে আমাকে রাজ্যে অভিষিক্ত করতে চেয়েছিলেন পিতা মহারাজ দশরথ কোশলরাজ্যের প্রজাবৃন্দের মতগ্রহণের পর। চোদ্দ বছর ভরতের সুশাসন উপভোগ করার পর তাঁদের আর নতুন করে রাজা পরিবর্তনের প্রয়োজন কী? রাজা হই বা না হই, আমাদের প্রত্যেকের ভ্রাতৃপ্রেম অটুট, ভরত যদি রাজা থাকেন আমি যথাসম্ভব তাঁকে সাহায্য এবং উপদেশ দেব। পরিবর্তনের প্রয়োজন কী?
ভরত। প্রয়োজন সত্যে। আপনি জ্ঞানবান, চরিত্রবান এবং নির্লোভ। আপনি ভালোই জানেন চোদ্দ বছর পূর্বে আপনি রাজ্য পুনর্গ্রহণের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কোন যুক্তিতেই আজ আর তা অগ্রাহ্য করতে পারেন না। তবুও যদি আপনার দ্বিধা থাকে, তাহলে এই স্বজনদের, অমাত্যদের, গুরুদের এবং বৃক্ষ-পশুপাখিসম্বলিত এই আশ্রমকে সাক্ষী রেখে সমবেত প্রজাবৃন্দের মত আমি আবার গ্রহণ করব। (উইংসের ভেতরে তাকিয়ে) সমবেত অযোধ্যাবাসীবৃন্দ, চোদ্দ বছর বনবাসের পর যাবতীয় সঙ্কট থেকে নিজের পৌরুষদ্বারা মুক্ত হয়ে আমাদের সকলের প্রিয় এবং পূজনীয় শ্রীরামচন্দ্র এখন পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অযোধ্যার সিংহাসনে অভিষিক্ত হবেন। আপনারা প্রত্যেকে নির্দ্বিধায় শ্রীরামকে সিংহাসন গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ করছেন কী?
ভরত। অযোধ্যাবাসীরা সকলেই সানন্দে শ্রীরামকে অভিষিক্ত দেখতে চেয়েছেন। কিন্তু আমরা জানিনা, এই সমবেত কণ্ঠস্বরের মধ্যে একটিও ভিন্নমত কণ্ঠস্বর নিমজ্জিত ছিলো কিনা। উপস্থিত অযোধ্যাবাসীদের মধ্যে একজনেরও যদি মতদ্বৈত থাকে, আমি অনুরোধ করব তিনি বিনা সঙ্কোচে, নির্ভয়ে এবং নির্দ্বিধায় তা ব্যক্ত করুন।
ভরত। নীরব। তাহলে আমরা সকলেই ধরে নেব সকল অযোধ্যাবাসী এই মুহূর্তে আমাদের জ্যেষ্ঠ শ্রীরামচন্দ্রের অভিষেকের জন্য অপেক্ষা করছেন।
ভরত। (সুমন্ত্রকে) তাত, আপনি তাহলে মহর্ষি বশিষ্ঠ এবং মাননীয় বামদেবকে আহ্বান করুন।
সীতা। (হাত তুলে ভরতকে নিবারণ করেন) বৎস ভরত, অভিষেকের ব্যবস্থা হোক্, কিন্তু তার পূর্বে আমার কিছু বক্তব্য আছে।
ভরত। বলুন দেবী। আপনি তো মাতৃসমা, আপনি আদেশ করুন কী করতে হবে।
সীতা। আর্যপুত্র যখন অভিষেকে সঙ্কোচ ব্যক্ত করছিলেন, তখন তাঁর কথার মধ্যে একটি অনুক্ত বক্তব্য নিহিত ছিলো। কুলগুরু, কুলপুরোহিত, আমার পূজনীয়া শ্বশ্রুমাতাবৃন্দ, মাননীয় অমাত্যগণ, উপস্থিত কনিষ্ঠগণ এবং সমস্ত অযোধ্যাবাসীকে অভিবাদন করে এবং তাঁদের অনুমতি নিয়ে আমি সে বিষয়ে বলতে চাই।
কৌশল্যা। বলো বাছা, সঙ্কোচ কোরো না।
সীতা। তাত সুমন্ত্র জানেন, স্বর্গত মহারাজ যখন আর্যপুত্রের অভিষেকের ব্যবস্থা করছিলেন, তখন স্পষ্টতই তিনি কোশলরাজ্যে রামের রাজত্ব নয়, রামরাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। যে রাজ্যে প্রজাদের ইচ্ছাতে রাজ্যপালক নির্বাচিত হন, সেই রাজ্যকেই তিনি রামরাজ্য হিসাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন। আমি কি ঠিক বললাম?
সুমন্ত্র। কন্যা, তুমি তোমার স্বর্গত শ্বশুর মহারাজ দশরথের অভিলাষ ঠিকই বুঝেছো।
সীতা। (সুমন্ত্রের দিকে চেয়ে কৃতজ্ঞ হাসিতে ধন্যবাদ জানিয়ে) এই রাজ্যপালক কি শুধুমাত্র রাজা? রাজা একাই? না রাজা এবং তাঁর সহধর্মিনীর যোগ?
সীতা। পিতা জনকের প্রাসাদ থেকে আমার স্বামী যখন আমাকে বিবাহ করে কোশলরাজ্যের বধূ করে নিয়ে আসেন তখন আমি বালিকা মাত্র। তারপর থেকে নিরন্তর আমি তাঁর সংস্পর্শেই কাটিয়েছি। আপনারা সকলেই জানেন, ভাগ্যদোষে আমি বনবাসের সময় রাক্ষসের দ্বারা অপহৃত হয়েছিলাম, প্রবল পৌরুষের দ্বারা আমার স্বামী আমাকে উদ্ধার করেছেন। বন্দিনী অবস্থাতেও আমার হৃদয় তাঁর হৃদয়ের থেকে কখনো বিচ্ছিন্ন হয়নি। আমাদের দুজনের কাছেই পরস্পরের হৃদয় এবং মন কাচের মতই স্বচ্ছ, প্রতিটি মুহূর্তেই তিনি আমার মন দেখতে পান, যেমন আমি দেখতে পাই তাঁর মন। আজ যখন কুমার ভরত অভিষেকের বিষয়ে অযোধ্যাবাসীর অভিলাষ বোঝার চেষ্টা করছিলেন তখন সহর্ষে অযোধ্যাবাসী রামের রাজত্বের পক্ষে তাঁদের অভিলাষ ব্যক্ত করেছেন, কিন্তু তা কি রামরাজ্যের পক্ষে?
সীতা। আমি স্বচ্ছ কাচের মধ্য দিয়ে যেমন দেখা যায়, স্পষ্ট সেরকম ভাবেই আর্যপুত্রের মনের কথা পড়তে পারছি। তাঁর মন বলছে, “সীতা, তোমার চরিত্রে আমার সন্দেহ হয়েছে, ব্যাধিগ্রস্ত নেত্রের সম্মুখে যেমন দীপশিখা, আমার পক্ষে তুমি তেমনই কষ্টকর। তুমি রাবণের অঙ্কে নিপীড়িত হয়েছ, সে তোমাকে দুষ্ট চক্ষে দেখেছে, এখন যদি তোমাকে পুনর্গ্রহণ করি তবে কী করে নিজের মহৎ বংশের পরিচয় দেব? যে উদ্দেশ্যে তোমাকে উদ্ধার করেছি তা সিদ্ধ হয়েছে, এখন আর তোমার প্রতি আমার আসক্তি নেই, অযোধ্যার প্রজারাও আর তোমাকে চায় না, তুমি যেখানে ইচ্ছা যাও”।
ভরত। দেবী, আমাকে ক্ষমা করবেন, আপনার মন বিক্ষিপ্ত হয়েছে, আপনি অসম্ভব কথা বলছেন। আর্য শ্রীরাম নররূপী ভগবান, মানুষের দেহ তিনি ধারণ করেছেন এ কথা সত্য, কিন্তু মানুষের যাবতীয় দোষ তিনি বর্জন করেছেন। আপনি যা ভাবছেন তা সত্য হতেই পারে না।
সুমন্ত্র। বৎস রাম, আমাদের শঙ্কামুক্ত করো।
সীতা। বৎস লক্ষ্মণ, আমার চিতা প্রস্তুত করো, স্বামী যা সঙ্কোচে বলতে পারছিলেন না, তার প্রকাশ হলো, অপ্রীত হয়ে সর্বসমক্ষে তিনি আমাকে ত্যাগ করেছেন, অগ্নিপ্রবেশে প্রাণত্যাগই এই অপমানের উত্তর।
লক্ষ্মণ। (রামকে) আর্য, আপনি নীরব আছেন কেন? দেবী সীতা মিথ্যা বলেন না, ইনি কি আপনার মনোভাব সঠিক বুঝেছেন? আমি কখনও আপনার অবাধ্য হইনি, দেবী সীতাও যখন যে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন নতমস্তকে সহর্ষে তা পালন করেছি। আজ আমার সামনে কঠিন পরীক্ষা, আপনি আমাকে উদ্ধার করুন। শুধু একবার বলুন জীবনে এই প্রথমবার অপাপবিদ্ধা দেবী আপনাকে ভুল বুঝেছেন।
লক্ষ্মণ। তবে তাই হোক্।
লক্ষ্মণ। (সীতার পায়ে মাথা রেখে) দেবী, দুর্ভাগা আমি, আপনার এই আদেশ পালনও আমার কপালে ছিলো!
সীতা। বৎস লক্ষ্মণ, তুমি অগ্নির মতো শুদ্ধ, কোন পাপ তোমাকে স্পর্শ করতে পারেনি। (স্থাণুবৎ দণ্ডায়মান রামকে প্রদক্ষিণ করতে করতে, জোড় হাতে) আমার স্বামী আর্যপুত্রকে প্রণাম করি। শ্বশ্রুমাতাদের প্রণাম করি (মঞ্চে উপস্থিত নারীরা কাঁদতে কাঁদতে মুখে হাত চাপা দিয়ে বসে পড়েন – লক্ষ্মণ একটি চিতাকাষ্ঠ প্রজ্জ্বলিত অগ্নিতে যোগ করেন, সীতা সেই অগ্নিকে একবার প্রদক্ষিণ করেন) । সমস্ত দেবতা, ব্রাহ্মণ এবং বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রণাম করি (লক্ষ্মণ আর একটি চিতাকাষ্ঠ প্রজ্জ্বলিত অগ্নিতে যোগ করেন, সীতা সেই অগ্নিকে আর একবার প্রদক্ষিণ করেন)। যদি আমার সমস্ত দেহ-মন-হৃদয় আমার স্বামী রাঘবের প্রতি আজীবন একনিষ্ঠ থেকে থাকে, আর্যপুত্র যাকে দুষ্টা পাপীয়সী মনে করেন, সেই আমি যদি পতিব্রতা এবং শুদ্ধচারিণী হই, তাহলে যেন আমার নাশ না হয়, অগ্নি যেন আমাকে রক্ষা করেন, আজীবন যেন রাঘবের ভজনা করতে পারি।
অগ্নি। (রামকে) রাম, এই বৈদেহী। এঁর হস্তধারণ করো। (রাম এগিয়ে এসে সীতার হাত ধরেন) বৎস রাম, আমি যা বলছি, মন দিয়ে শোন। তোমার এই পত্নী বাক্য, মন, বুদ্ধি বা দৃষ্টিতে কখনও, এক মুহূর্তের জন্যও, ভ্রষ্ট হননি। রাবণের কারাগারে ইনি যখন নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন, সে সময় রাক্ষসীদের বহু তর্জন ও প্রলোভন সত্ত্বেও এঁর অন্তঃকরণ একমাত্র তোমাতেই নিবিষ্ট ছিলো, দুষ্ট রাবণের সাধ্যও ছিলো না অসংযমী মন নিয়ে এঁর তেজের সামনে মুহূর্তের জন্যও দাঁড়ায়। তোমাকে আদেশ করছি, নিজের ভাগ্যকে বারংবার অভিনন্দিত করে নিঃসঙ্কোচে এই নিষ্পাপ মৈথিলীকে গ্রহণ করো। আমি তোমাকে আশীর্বাদ করি তুমি বিশুদ্ধস্বভাবা জানকীর উপযুক্ত হও।