আমরা আধুনিক মানচিত্রের সাহায্যে কিছুটা আন্দাজ করার চেষ্টা করছি হেনরি মর্টান স্ট্যানলে-র যাত্রাপথ। নইলে পাঠকের পক্ষে বোঝাই মুশকিল এইসব কাণ্ড ঘটছে কোথায়। কাজটা কঠিন। কারণ, এই পথে এমন অনেক জায়গার নাম রয়েছে যার আজ কোনো অস্তিত্বই নেই। বাগামোয়ো থেকে ‘উসেগুহহা’-র রাজধানী সিম্বামওয়েন্নিতে পৌঁছে এবারে উগোগো অঞ্চলের চুন্যু (চুন্যো) নামক জনপদের লক্ষ্যে চলেছে স্ট্যানলের কাফেলা। উসেগুহহা বলে কোনো স্থান বা প্রদেশ আজ আর নেই। এমনকি বোঝাও মুশকিল সেই অঞ্চলের বিস্তৃতি ঠিক কী ছিল। তবে সিম্বামওয়েন্নি নামে একটি ক্যাম্প-সাইট এখনও রয়েছে তানজানিয়ার মোরোগোরো শহরের কাছে। আন্দাজ করা যেতে পারে এই সিম্বামওয়েন্নি-র কথাই স্ট্যানলে বলছেন। কাজেই এখানে বর্ণিত যা-কিছু ঘটছে সবই মানচিত্রে নীল বুটি দেওয়া পথের আশেপাশেই।—সম্পাদক
প্রাতঃরাশের পরে আমি ফারকুহরকে বুঝিয়ে বলতে শুরু করলাম যে দ্রুত এগোতে পারাটা আমার কাছে কতটা জরুরি; যেসব লোকদের আমার ও তাঁদের নিজেদের কর্তব্য নিয়ে ভাবার জন্য মাইনে দিয়ে রাখা হয়েছে তাদের নিয়ে চিন্তা করা ছাড়াও আমার ঢের সমস্যা আছে; সে যেহেতু অসুস্থ আর সম্ভবত আগামী বেশ কিছুদিন মোটেই হাঁটতে পারবে না, কাজেই তাকে কোনো একটা শান্ত জায়গায়, একজন ভালো প্রধানের তত্ত্বাবধানে, রেখে যাওয়াই ভালো, যে কিনা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে যতদিন না সে সুস্থ হয় তার দেখাশোনা করবে। সবকথাতেই ফারকুহর রাজি হল।
সবে কথা বলা শেষ করেছি, এমন সময় বোম্বে তাঁবুর দরজার কাছে এসে বলল, “মি. শ আপনার সাথে কথা বলতে চান।”
আমি শিবিরের দরজার বাইরে গেলাম ও সেখানে শ-র সাথে দেখা হল। মনে হল, সে দারুণ অনুতপ্ত ও লজ্জিত। আমার কাছে ক্ষমা চাইতে শুরু করল আর তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য কাকুতিমিনতি করতে শুরু করল, প্রতিশ্রুতি দিল যে আর কখনও আমি তার কোনো দোষ খুঁজে পাব না।
আমি হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললাম, “আর বলতে হবে না, বন্ধু। সবথেকে ভালো পরিবারের মধ্যেও ঝগড়া হয়। তুমি তো ক্ষমা চেয়েছ, ব্যস সব মিটে গেছে।”
সেই রাতে, যখন ঘুমতে যাচ্ছি, একটা গুলির শব্দ শুনতে পেলাম: আর একটা বুলেট আমার দেহ থেকে কয়েক ইঞ্চি উপর দিয়ে আমার তাঁবু এফোঁড়-ওফোঁড় করে বেরিয়ে গেল। আমি জলদি আমার রিভলবার তুলে নিয়ে তাঁবু থেকে ছুটে বেরোলাম, আর আগুন ঘিরে বসে শিবির পাহারা দেওয়া জিজ্ঞাসা করলাম, “কে গুলি চালাল?” হঠাৎ শব্দে তারা সকলেই ঘাবড়ে লাফিয়ে উঠেছে।
“কে গুলি চালাল?”
একজন বলল, “বানা এমডোগো”—ছোটো হুজুর।
একটা মোমবাতি ধরিয়ে, সেটা নিয়ে শ-র তাঁবুতে গেলাম। “শ, তুমি কি গুলি চালিয়েছ?”
কোনো উত্তর নেই। এত জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে যে মনে হচ্ছে ঘুমিয়ে কাদা।
“শ! শ! তুমি কি গুলি চালালে?”
“অ্যাঁ-অ্যাঁ?” সে আচমকা জেগে উঠে বলল, “আমি?... আমি গুলি? আমি তো ঘুমোচ্ছিলাম।”
তার পাশেই থাকা বন্দুকের দিকে আমার নজর গেল। খপ করে সেটা তুলে নিলাম—হাত দিয়ে দেখলাম—কড়ে আঙুলটা নলের মধ্যে ঢুকিয়ে দিলাম। বন্দুকটা তখনও গরম—পোড়া বারুদ লেগে আমার আঙুলটা কালো হয়ে গেল!
“এটা কি?” আমি আঙুলটা তুলে ধরে জানতে চাইলাম; “বন্দুকটা গরম। লোকেরাও তো বলছে যে তুমিই গুলি চালিয়েছ।”
‘‘ওহ—হ্যাঁ’’, সে জবাব দিল; ‘‘মনে পড়েছে। স্বপ্ন দেখেছিলাম যে একটা চোর আমার দরজা দিয়ে ঢুকছে, আর আমি গুলি চালালাম। ওহ—হ্যাঁ—ভুলে গেছিলাম। আমিই গুলি ছুড়েছি। কেন, কী হয়েছে?”
“না, হয়নি কিছু,” আমি বললাম। “তবে এটা বলব যে ভবিষ্যতে সমস্ত সন্দেহ এড়ানোর জন্য, আমার তাঁবুতে বা নিদেনপক্ষে আমার ধারেকাছে গুলি না চালাতে। আমার গায়ে লাগতে পারে, আর জান তো যে সেক্ষেত্রে বিচ্ছিরি সব খবর রটবে। এও জান নিশ্চয় যে সেটা খুব সুবিধার নাও হতে পারে। শুভ রাত্রি।”
আমাদের সকলেরই ব্যাপারটা নিয়ে নিজের নিজের মতো ধারণা ছিল; তবে লিভিংস্টোনের সঙ্গে দেখা না হওয়া পর্যন্ত আমি কখনোই কারও কাছে এ সম্পর্কে একটা শব্দও উচ্চারণ করিনি। ডাক্তার লিভিংস্টোন আমার সন্দেহ ভাষায় প্রকাশ করেছিলেন, “ও আপনাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল!”
তবে কী যে আনাড়ি খুন করার উপায়! অবশ্যই, কাজটা করলে আমার নিজের লোকেরা তাকে সেই অপরাধের যোগ্য শাস্তি দিত। এর থেকে তো হাজারটা ভালো সুযোগ সে পরের এক মাসের পথ চলার সময় পাবে! এর ব্যাখ্যা হিসেবে এটাই ধরে নিলাম যে সে ক্ষণিকের জন্য উন্মাদ হয়ে গিয়েছিল।
১৬ মে উগোম্বো এবং এমপাওয়াপাওয়ার মধ্যের সমতলভূমির উপর দিয়ে যাচ্ছিলাম, কাছেই মাঝে মাঝে নীচু পাহাড়ের শ্রেণি—খাড়া উঠে-যাওয়া সমতল-মাথাওলা পাহাড় যাকে বলে ট্র্যাপ-রক—আর অজস্র বড়ো বড়ো পাথরের টুকরোকে যেন প্রচণ্ড জোরে তাদের থেকে স্থানচ্যুত করা হয়েছে। পাহাড়ের গা বেয়ে কোলকাল জন্মেছে, তাদের যেমন আকার তা আবিসিনিয়াতেও দেখিনি। সমতলে জন্মেছে বাওবাব, অগণিত তেঁতুল আর বিভিন্নরকমের কাঁটাগাছ।
এমপাওয়াপাওয়া এখন একটি জেলা। সেই সমতল। ছবিটি ২০১৪ সালের। সৌজন্য: উইকিপিডিয়া
উগোম্বো থেকে ঘণ্টা পাঁচেক চলার মধ্যেই পর্বতশ্রেণিটি উত্তর-পূর্ব দিকে বেঁকে গেল। আমরা চলতে থাকলাম উত্তর-পশ্চিম মুখে, এমপাওয়াপাওয়ার সুউচ্চ পর্বতমালার দিকে। আমাদের বাঁ দিকে নীল মেঘ ছোঁয়া বিশালাকার রুবেহো। উন্যানইয়েম্বে যাওয়ার এই নতুন রাস্তাটা, যেটা ধরে আমরা চলছি, সেটা ধরার কারণটা বোঝা গেল—আমরা রুবেহোর খাড়া চড়াই আর গিরিপথ এড়িয়ে যেতে পেরেছি—এরপর শুধু উগোগোর দিকে ধীরে ঢালু হয়ে নেমে যাওয়া প্রশস্ত মসৃণ সমভূমি, খারাপতর কোনো পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার ব্যাপার নেই।
পনেরো মাইল হাঁটার পরে আমরা একটা শুকনো নদীখাতে শিবির তৈরি করলাম, নদীর নাম মাতামোম্বো, তেতো হলদেটে রঙের জলের জন্য লোকে চেনে। কুডু, স্টেইনবোক১ ও অ্যান্টিলোপ ছাড়াও আশেপাশে রয়েছে অসংখ্য বাঁদর আর গন্ডার। এই শিবিরে আমার পুঁচকে কুকুর ওমর অন্ত্রের প্রদাহে মারা গিয়েছিল—উগোগোর প্রায় দোরগোড়ায় এসে—সেই দেশে তার বিশ্বস্ততা আমার কাছে খুব অমূল্য হতে পারত।
পরের দিনও আবার পনেরো মাইল হাঁটা—একটা অন্তহীন কাঁটাঝোপের জঙ্গলের মধ্য দিয়ে। শিবিরের দু-মাইলের মধ্যেই রাজপথের মতো প্রশস্ত রাস্তাটা সোজা এমপাওয়াপাওয়ার শিবিরের কাছে একটা ছোটো নদীর খাতে গিয়ে মিশেছে। এমপাওয়াপাওয়ার শিবিরের কাছেই অনেকগুলো স্বচ্ছ জলের ধারা।
উগোম্বো থেকে দীর্ঘ পদযাত্রার দরুন পরের দিন সকালেও আমরা বেদম ক্লান্ত। এমপাওয়াপাওয়াতে কাফেলাগুলোর ভাগ্যে ওয়াসেগাহহা ও ওয়াডোর মাছি-অধ্যুষিত এলাকার থেকে আসা টাটকা যেসব অমূল্য বিলাসিতা জোটে, ঠিক করেই নিয়েছিলাম যে সেগুলো প্রাণভরে উপভোগ করব। একটা বিশাল ‘এমটাম্বা সিকামোর’২ গাছের ছত্রছায়ায় শেখ থানি শিবির করেছিলেন।
শেখ থানি একজন বুদ্ধিমান অথচ সরল-ভাষী বৃদ্ধ আরব। আর দু-দিন আগে এখানে এসে পৌঁছানোর পর থেকেই টাটকা দুধ, চমৎকার ছাগমাংস আর দামি ষাঁড়ের কুঁজ ইত্যাদি ভালো ভালো খাবার খেয়ে যাচ্ছে। আমাকে বলেছিলেন যে তাঁর মতে এই সুখকর প্রাচুর্য ছেড়ে এত তাড়াতাড়ি মারেঙ্গা মাকালির দিকে ছোটার কোনো মানে হয় না। সেখানে লবণাক্ত নাইট্রাস জলের সঙ্গে শুধু দ্রুতগতিতে হাঁটা৩ আর নানাবিধ ঝঞ্ঝাট অপেক্ষা করে আছে। “না!” সে আমাকে দৃঢ়ভাবে বলল, “বরং এখানে আরও দু-তিন দিন থামুন, আপনার ক্লান্ত প্রাণীগুলোকে একটু বিশ্রাম দিন; কুলি যা লাগে তা সংগ্রহ করুন, তাজা দুধ, মিষ্টি আলু, গোরুর মাংস, ছাগমাংস, ঘি, মধু, বিন, মাটামা, বাজরা আর বাদাম খান—তারপর, ইনসাল্লাহ! আমরা কোথাও না থেমে সোজা উগোগো চলে যাব।” আমার নিজের ইচ্ছে আর ওই যেসব জিনিসের নাম বলল সেগুলোর প্রতি আমার লোভের সঙ্গে পরামর্শটা একেবারে খাপে খাপ মিলে গেল। তাই তার কথায় সায় দিতে বেশি দেরি হল না। “উগোগো”, সে বলেই চলল, “দুধ ও মধুতে ভরা—ময়দা, বিন আর প্রায় সবরকম খাবারে ভরা; আর, ইনসাল্লাহ! আর এক সপ্তাহের মধ্যেই আমরা উগোগোতে চলে যাব!”
আমাদের পাশ দিয়ে যাওয়া কাফেলাগুলোর থেকে উগোগো আর তার উৎপাদিত দ্রব্যগুলির সম্বন্ধে এতই দারুণ ভালো ভালো কথা শুনেছি যে আমার কাছে তখন সে এক ‘প্রতিশ্রুতির দেশ’। উগোগোতে সংগ্রহ করা চমৎকার খাদ্যসামগ্রীর অংশবিশেষ দিয়ে আমার শ্রান্ত পেটকে চাগিয়ে তুলতে আমি তখন খুবই উদগ্রীব। তবে যখন শুনলাম যে এমপাওয়াপাওয়াতেও সেইসব উপাদেয় খাবারদাবার ও ভালো ভালো জিনিস পাওয়া যায়, সকালের বেশি সময়টাই তখন কেটে যেতে লাগল এখানকার বোকা লোকদের আমাদের খাবার দেওয়ার জন্য প্ররোচিত করতে; আর শেষপর্যন্ত যখন একবেলার খাবারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিম, দুধ, মধু, মাটন, ঘি, মাটামার আটা ও বিন ইত্যাদি সংগ্রহ করা হয়ে যেত, তখন ওইসব কাঁচামাল দিয়ে আমার খুঁতখুতে, বুভুক্ষু পেটের উপযুক্ত প্রাতরাশ তৈরির কাজে আমার গভীর মনোযোগ আর সর্বোত্তম রন্ধনপ্রতিভা কয়েক ঘণ্টা ধরে ব্যস্ত থাকত। পরে সেইসব খাদ্য পরিষ্কার হজম হয়ে যেতে বুঝলাম আমার চেষ্টা সার্থক। এই ঘটনাবহুল দিনটা শেষ হওয়ার সময়, আমার ডায়েরিতে এই কথাগুলো লিখে রেখেছিলাম: “ঈশ্বরকে ধন্যবাদ! মাটামা পরিজ আর বুড়ো ছাগল খেয়ে সাতান্ন দিন কাটানোর পরে, একটা সত্যিকারের প্রাতঃরাশ ও নৈশভোজ অসম্ভব তৃপ্তি সহকারে উপভোগ করলাম।”
ক্রমশ…
Terekeza সোহায়িলি শব্দ। থেমে দেখা , অবলোকন। ক্লান্তিকর পথ ছোটা নয়। স্ট্যানলি সোয়াহিলি শেখার কোনো চেষ্টা করেন নি - ইংরেজ পাঠক তো আর বেয়াড়া প্রশ্ন করবে না া বাইবেলে নৌকা বাঁধার দড়ি কামিলোকে ক্যামেল বলে চালিয়ে দিয়েছে !
@বীরেন বাবু ও অন্য যারা পড়ছেন, একটা অনলাইনে পাওয়া যায় এমন সোয়াহিলি থেকে ইংরেজী অভিধানের সন্ধান দিতে পারেন কেউ? আমি যে দু একটা পেয়েছি সেগুলো বড়ই সংক্ষিপ্ত, অনেক শব্দই পাচ্ছি না। একটা বড়সর অভিধান পেলে খুব উপকার হত।
যতদুর জানি অন লাইনে সোয়াহিলী অভিধান পাওয়া যায়। মুশকিল হল স্ট্যানলি সে ভাষাটার তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছে মতন লিখে গেছেন। আমাদের মতো যারা ওই ভাষাটার সঙ্গে পরিচিত ( আপনি আমি অজস্র সোয়াহিলি শব্দ চিনি -কলম কাজী ) তাদের কানে লাগে সেটা। তাই মাঝে মধ্যে মন্তব্য করি ! আপনি স্ট্যানলির লেখা থেকে অনুবাদ করছেন ইংরেজি ভাষা থেকে। সেখানে স্ট্যানলির কথা বাংলায় অনুবাদ করা ছাড়া গতি নেই! আমি বরং বিদ্যে জাহির করা থেকে বিরত থাকি! ভালো লিখছেন !
@বীরেন বাবু আপনি প্লীজ যেখানে ভুল পাবেন অবশ্যই ধরিয়ে দেবেন। আপনার মন্তব্যগুলো অতন্ত মূল্যবান। স্ট্যানলির জানার সীমাবদ্ধতা থাকা খুবই সম্ভব। উপনিবেশ কালের সাহেব বলে কথা, তার উপর মনোযোগ নিশ্চয় ছিল অভিযানে, যেটুকু জেনেছেন সেটুকু হয়তো উপরি পাওনা হিসেবে জেনেছেন। তবে তিনি যাই লিখুন না, ঠিকটা আজকের পাঠকদের জানা উচিত আর জানা দরকার,এমনকি ফুটনোটের মাধ্যমে হলেও।
ইমেলে যোগাযোগ করতে পারেন। বিস্তারিত আলোচনা করা যায়। আপনি অত্যন্ত তথ্য নিষ্ঠা সহকারে স্ট্যানলির আখ্যান আমাদের জানাচ্ছেন। বাংলায় প্রথম । সেটিকে অভ্রানত না মানলে অনেক ফুটনোট লাগবে! সেটা ভেবে সংকোচিত হছছি।
hsingharay@aol.com
হীরেন বাবু অনেক ধন্যবাদ। দরকারে যোগাযোগ করব। ব্যাক্তিগত কারণে অনেক দেরিতে উত্তর দেওয়ার জন্য দুঃখিত।
অবশ্যই আপনার সুবিধা মতন যোগাযোগ করুন।
স্ট্যানলি কি মার্কিন সাংবাদিক? তিনি তো ওয়েলশ গৌরবারথে ব্রিটিশ !