এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ভ্রমণ  যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে  খাই দাই ঘুরি ফিরি

  • ডেভিড লিভিংস্টোনের খোঁজে

    হেনরি মর্টন স্ট্যানলে
    ভ্রমণ | যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে | ২১ জানুয়ারি ২০২১ | ২৭৬৩ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ | ৩২ | ৩৩ | ৩৪ | ৩৫ | ৩৬ | ৩৭ | ৩৮ | ৩৯ | ৪০ | ৪১ | ৪২ | ৪৩ | ৪৪ | ৪৫ | ৪৬ | ৪৭ | ৪৮ | ৪৯ | ৫০ | ৫১ | ৫২ | ৫৩ | পর্ব ৫৪ | পর্ব ৫৫ | পর্ব ৫৬ | পর্ব ৫৭ | পর্ব ৫৮ | পর্ব ৫৯ | পর্ব ৬০ | পর্ব ৬১ | পর্ব ৬২ | পর্ব ৬৩ | পর্ব ৬৪ | পর্ব ৬৫ | পর্ব ৬৬ | পর্ব ৬৭ | পর্ব ৬৮ | পর্ব ৬৯ | পর্ব ৭০ | পর্ব ৭১ | পর্ব ৭২ | পর্ব ৭৩ | পর্ব ৭৪ | পর্ব ৭৫ | পর্ব ৭৬ | পর্ব ৭৭ | পর্ব ৭৮ | পর্ব ৭৯ | পর্ব ৮০ | পর্ব ৮১ | পর্ব ৮২ | পর্ব ৮৩ | পর্ব ৮৪ | পর্ব ৮৫ | পর্ব ৮৬ | পর্ব ৮৭ | পর্ব ৮৮ | পর্ব ৮৯ | পর্ব ৯০ | পর্ব ৯১ | পর্ব ৯২ | পর্ব ৯৩ | পর্ব ৯৪ | পর্ব ৯৫ | পর্ব ৯৬ | পর্ব ৯৭ | পর্ব ৯৮ | পর্ব ৯৯ | পর্ব ১০০ | পর্ব ১০১ | পর্ব ১০২ | পর্ব ১০৩ | পর্ব ১০৪ | পর্ব ১০৫ | পর্ব ১০৬ | পর্ব ১০৭ | পর্ব ১০৮ | পর্ব ১০৯ | পর্ব ১১০ | পর্ব ১১১ | পর্ব ১১২ | পর্ব ১১৩ | পর্ব ১১৪ | পর্ব ১১৫ | পর্ব ১১৬ | পর্ব ১১৭ | পর্ব ১১৮ | পর্ব ১১৯ | পর্ব ১২০ | পর্ব ১২১ | পর্ব ১২২ | পর্ব ১২৩ | পর্ব ১২৪ | পর্ব ১২৫ | পর্ব ১২৬ | পর্ব ১২৭ | পর্ব ১২৮ | পর্ব ১২৯ | পর্ব ১৩০ | পর্ব ১৩১ | পর্ব ১৩২ | পর্ব ১৩৩ | পর্ব ১৩৪ | পর্ব ১৩৫ | পর্ব ১৩৬ | পর্ব ১৩৭ | পর্ব ১৩৮ | পর্ব ১৩৯ | পর্ব ১৪০ | পর্ব ১৪১ | পর্ব ১৪২ | পর্ব ১৪৩ | পর্ব ১৪৪ | পর্ব ১৪৫ | পর্ব ১৪৬ | পর্ব ১৪৭ | পর্ব ১৪৮ | পর্ব ১৪৯ | পর্ব ১৫০ | পর্ব ১৫১
    ডেভিড লিভিংস্টোনআফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলেজাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে পাক্কা দেড় মাস ধরে সেখান থেকে একে একে রওনা হলো অভিযানের মোট পাঁচটি কাফেলা। চলছে অভিযানের মূল কাহিনি। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। তরজমায় স্বাতী রায়


    চতুর্থ অধ্যায়: উকড়ে, উকামি ও উদয়ের মধ্যে দিয়ে উসেগুহহা-র উদ্দেশে যাত্রা (পূর্বপ্রকাশিত অংশের পর)


    আমরা আধুনিক মানচিত্রের সাহায্যে কিছুটা আন্দাজ করার চেষ্টা করব হেনরি মর্টান স্ট্যানলে-র যাত্রাপথ। কাজটা কঠিন। কারণ, এই পথে এমন অনেক জায়গার নাম রয়েছে যার আজ কোনো অস্তিত্বই নেই। এই অধ্যায়ে বর্ণিত অভিযানের সেই অংশ যেখানে বাগামোয়ো থেকে ‘উসেগুহহা’-র রাজধানী সিম্বামওয়েন্নিতে পৌঁছোনোর কথা বলা হয়েছে। উসেগুহহা বলে কোনো স্থান বা প্রদেশ আজ আর নেই। এমনকি বোঝাও মুশকিল সেই অঞ্চলের বিস্তৃতি ঠিক কী ছিল। তবে সিম্বামওয়েন্নি নামে একটি ক্যাম্প-সাইট এখনও রয়েছে তানজানিয়ার মোরোগোরো শহরের কাছে। আন্দাজ করা যেতে পারে এই সিম্বামওয়েন্নি-র কথাই স্ট্যানলে বলছেন। নীচের মানচিত্রে দেখা যাবে এই অধ্যায়ে বর্ণিত কিকোকা নামের জায়গাটা। -সম্পাদক

    গাঁঠরি, অন্যান্য মাল, গাধা ও মানুষ সমেত আমাদের কাফেলা নিরাপদেই কিঙ্গানি নদী পার হল। আমি পাড়েই শিবির করব ভেবেছিলাম। আমার সঙ্গে পথে খাওয়ার জন্য অনেকগুলো ছাগল ছিল। সেগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য শিকার করে মাংস জোগাড়ের উদ্দেশ্যে, আর নিজের মজার জন্যও হরিণ শিকার করতে বেরোলাম। তবে আমার লোকেরা জলহস্তীদের যেমন শ্রদ্ধা আর ভয়ের চোখে দেখছিল, তাতে আমি তাড়াতাড়ি বালুচ সৈন্যদের চৌকিতে হাজির হলাম। এটা বাগামোয়োর কাছে, নদীর থেকে চার মাইল দূরে, কিকোকা নামের একটা ছোটো গ্রামে।

    নদীর পশ্চিম তীর পূর্ব পাড়ের তুলনায় বেশি সুবিধাজনক। এই সমতল জমি, জলাশয়ের ধারের তটভূমি যেমন ধীরে ধীরে উপরে ওঠে, মাইলখানেক তেমনই ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠেছে, যতক্ষণ না সেটা একটা মসৃণ গোল পাহাড়ের আকার নেয়। নদীর অন্য পাড় আমরা যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হচ্ছিলাম, এ পাড়ে সেগুলো কিছু নেই। পাঁকের স্রোত, কালো কাদাভরা জমি, ও উঁচু লম্বা ঘাস—কোনোটিই নেই, নেই সেই বিষবাষ্পপূর্ণ জঙ্গলের হানিকর বাতাস। যে-কোনো ইংরেজ প্রাসাদের সামনে যেমনটা দেখা যায়, একটা বিস্তীর্ণ ঘাসে-ঢাকা জমি, আর তাতে মানানসই বৈচিত্র্য আনার জন্য যথেষ্ট ঝোপঝাড়, এখানেও দৃশ্যটা সেরকম। উন্মুক্ত প্রান্তরটি পেরিয়ে, রাস্তা চলেছে তরুণ আবলুশ গাছের একটি তরুবীথিকার মধ্য দিয়ে—সেখানে গিনি-ফাউল ও হার্টবিস্ট দেখা যায়; এরপরে পথটা ঘুরে ঘুরে চলেছে, ছাগল চলার পথ যেমন খামখেয়ালি ধরনে এঁকে-বেঁকে চলে, অনেকটা সেই ধাঁচের। ঢেউ খেলানো জমির ঢেউয়ের মাথায় ঘন সবুজ আমপাতা আর হালকা রঙের বিশাল ক্যালাবাস পাতার মুকুট পরা।



    ক্যালাবাস গাছ



    হার্টবিস্ট হরিণ


    ক্যালাবাস অবশ্য তুলনায় সংখ্যায় অনেক কম। সেই জমি ধরে রাস্তা কখনও উপরে, কখনও নীচে চলেছে। নীচু জায়গাগুলো কোথাও কম, কোথাও বেশি ঘন জঙ্গলে ঢাকা, মাঝে মাঝেই এখানে-ওখানে উন্মুক্ত খোলা মাঠ, ভর-দুপুরেও জটলা-করে-দাঁড়িয়ে-থাকা লম্বা, লম্বা গাছের ছায়ায় মোড়া। আমাদের আসার শব্দে ভয়ে সবজে কবুতর, জে, সারস, ঘুঘু, সোনালি ফেজ্যান্ট , কোয়েল, বনমুরগিরা ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে গেল। সেই সঙ্গে পালাল কাক আর বাজপাখিরাও। মাঝে মাঝে এক-একটা একাকী গগনবেড় দূরে ডানা ঝাপটাচ্ছিল।



    আফ্রিকান পেলিক্যান বা গগনবেড়


    জোড়া হরিণ আর অসট্রেলিয়ান ক্যাঙ্গারুর মতো লাফিয়ে পালানো বানর ছাড়া এখানে অন্য প্রাণী থাকার তেমন সম্ভাবনাও নেই। তবে ওই দ্বিতীয় প্রজাতির প্রাণীরা বেশ বড়ো মাপের, গোল গুলির মতো মাথা, বুকের অংশ সাদা, আর শেষ প্রান্তে একটা লম্বা মোটকা ল্যাজ।

    আমরা বেলা পাঁচটা নাগাদ কিকোকায় পৌঁছালাম, তার মধ্যে চারবার ঘোড়া-খচ্চরগুলোর পিঠে মাল তোলা আর নামানো হয়েছে, একটি গভীর খানা, একটি কাদা-ভরতি নর্দমা আর একটা নদী পেরোনো হয়েছে—মোট এগারো মাইল পথ চলা।

    কিকোকার বসতি মানে শুধু কয়েকটা খড়ের কুঁড়ে মাত্র; কোনো স্থাপত্যশৈলী মেনে তাদের বানানো হয়নি, বরং খানিকটা আধাখ্যাঁচড়া গোছের—ঘরের ভিতর আর ছাঁচ থেকে যতটা সম্ভব সূর্যের আলোকে দূরে ঠেলে রাখার উদ্দেশ্যে বানানো, মৃমা ও জাঞ্জিবার থেকে আসা আলসে মানুষদের তৈরি। সেখানে জল সরবরাহের জন্য আছে একটা খাল আর কটা কুয়ো। সে জল মিষ্টি হলেও তেমন একটা স্বাস্থ্যকর বা ক্ষুধাবর্ধক না। কারণ প্রচুর পরিমাণে শুকনো ডাল-পালা-পাতা এই সব বর্ষার জলে মিশে এখানে এসে পড়ে আর তারপরে এখানেই পচে। চাষের জায়গার ব্যবস্থা করার জন্য চারপাশটা পরিষ্কার রাখার স্বল্প চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে কাঠ কাটা আর জঙ্গল-সাফ করার মতো পরিশ্রম-সাপেক্ষ কাজ করার চাইতে এখানকার লোকেরা খোলা মাঠ দখল করতে বেশি পছন্দ করেছেন, যেখানে ঘাস কেটে, লাঙল চালিয়ে দুই বা তিন ইঞ্চি মাটি চষে, তাতে তারা বীজ বোনে। এতেই কাজ হবে সেই ভরসায়।

    আমার তৈরি করা, বই-সংলগ্ন মানচিত্রটি খুলতে পাঠককে প্ররোচিত করার জন্য বলি যে আমি যে পথে গেছি সেই পথে এর আগে কোনো সাদা মানুষ পা ফেলেনি। বার্টন-স্পিক আর পরে স্পেক-গ্রান্টের যে যাত্রাপথ, পাঠক যদি সেই পথটি বুঝে নেওয়ার ঝামেলাটুকু মেনে নেন, তাহলে দেখবেন যে আমার পূর্বসূরীদের পথ আর আমার পথের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য। বার্টনের মানচিত্র অনুযায়ী, বাগামায়োর সরাসরি পশ্চিমে ৫ ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশ দূরে, এলাকাটি শহর, গ্রাম বা কোনোরকম বসতি বর্জিত। আমার মানচিত্রে এই ঘাটতি পূরণ করা হয়েছে, এবং এইভাবে ধীরে ধীরে আফ্রিকার অন্তঃস্থলটি আরও বেশি পরিচিত হয়ে উঠছে। যাত্রাপথে সাদা মানুষের অজ্ঞাত বা তাদের কাছে অপ্রমাণিত যা কিছুই আবিষ্কার করেছি, সেই সব ক্ষুদ্রতম জিনিসেরও আবিষ্কারক হিসেবে আমি নিজের দাবি জানাচ্ছি। এই অনুরোধটি জানানোর উদ্দেশ্য এই যে জাঞ্জিবারের একজন বিশিষ্ট ভ্রমণ-অভিজ্ঞ ভদ্রলোক, যিনি কয়েক বছর ধরেই সেখানে বসবাস করছেন, তিনি আমাকে এই পথ ধরে এগোতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, বলেছিলেন যে এই পথের তো সবই জানা, তাই এই পথটা মোটেই আকর্ষণীয় হবে না। তাঁর উদ্দেশ্য খুবই মহৎ ছিল, তিনি চেয়েছিলেন যে আমি রুফিজি নদী ধরে উত্তরে যাই, যাতে ভৌগোলিকরা এই জায়গা সম্বন্ধে জানতে পারেন। আমারও যাওয়ার ইচ্ছে হয়েছিল, তবে পরিস্থিতি সেটা হতে দেয়নি। আমাকে আবিষ্কারক হিসেবে পাঠানো হয়নি, পাঠানো হয়েছিল একটা কাজ সারতে। দায়িত্ব পালনের সবথেকে দ্রুত ও সংক্ষিপ্ততম উপায়টি খুঁজে বার করাই ছিল আমার চর্চার বিষয়। যদি দ্রুততম আর সংক্ষিপ্ততম উপায়টি আমাকে তিনজন ভদ্রলোকের অতিক্রম করা সুপরিচিত পথ ধরে নিয়ে যেত, প্রত্যেকেই যে রাস্তার সম্বন্ধে যা জানেন লিখে গেছেন, সে দোষ-গুণ আমার নয়; তবে দেখা গেছে যে, আমি এতই ভাগ্যবান যে আমার কর্ম আমাকে এমন পথ দিয়ে নিয়ে গেছে, যে পথে আগে কখনও লোকে হাঁটেনি, সে পথ গিয়েছে এখনও অজানা নানা জায়গার মধ্যে দিয়ে। আমি মনে মনে রুফিজি হয়ে যাওয়ার পথটিকে বাদ দিয়েছিলাম। কারণ আমার সাধ্যের নিরিখে সেটা সম্পূর্ণ অগম্য। তার জায়গায় আমি উকরে, উকার্নি, উদয়, ছা, উসাগারা এবং উত্তর উগোগো হয়ে যাওয়া রাস্তাটি বেছে নিই; আমাদের পথচলার ফলাফল আর ব্যয়িত সময় প্রমাণ করেছিল যে এটাই সবথেকে ভালো সিদ্ধান্ত ছিল, কারণ এই পথটাই সরাসরি পশ্চিম দিকের পথ।

    পরের দিন কিকোকাতে আমাদের বিশ্রাম; চার নম্বর কাফেলাটি, যাতে শুধু ওয়ান্যাম্বেয়েজির লোকই আছে, আমাদের তাড়াতাড়ি পথ চলার পথে কেবলই বাধা সৃষ্টি করছে। এই কাফেলার যে প্রধান, মাগাঙ্গা আমার কাছ থেকে বেশি কাপড় আর বেশি উপহার আদায় করার জন্য অজস্র উপায় বার করেছিল। ইতিমধ্যেই তার জন্য আমার খরচ অন্য তিনটি কাফেলার প্রধানদের সম্মিলিত খরচের বেশি হয়ে গেছে। তবু, যাতে আমি রাস্তা খালি পাই তাই সে তাড়াতাড়ি উন্যানইয়েম্বেতে পৌঁছে দিলে অনেক পুরস্কার পাবে এই প্রতিশ্রুতি আদায় করে নেওয়া ছাড়া আর বিশেষ কোনো কাজ তার থেকে পাইনি।

    ২৭ তারিখে, ওয়ান্যাম্বেয়েজির লোকরা রওনা দিলে, আমরাও দ্রুত সকাল সাতটার পরেই শিবির গুটিয়ে রওনা দিলাম। কিঙ্গানি আর কিকোকার মধ্যে যেমন দেখেছি, একই রকম প্রকৃতি, বিস্তীর্ণ হরিৎ প্রান্তর—আকর্ষণীয় এবং সুন্দর।

    আমি তাড়াতাড়ি এগিয়ে গেলাম যাতে শিকারের সুযোগ হাতছাড়া না হয়। কিন্তু গাছ বা প্রাণী কিছুরই কোনো ছায়ামাত্র নেই। সামনে, পশ্চিমে ঢেউ খেলানো জমি, একবার উঠছে, একবার নামছে, একে অপরের সঙ্গে সমান্তরাল, যেন একটি লাঙল-চষা খেতকে অনেক গুণ বড়ো করে দেখা হচ্ছে। প্রত্যেকটি শৈলশিরার উপর জট-বাঁধা জঙ্গল, বা ঝাপঝুপো পাতার গাছের জোট। রোসাকো, আমাদের পরবর্তী বিশ্রামের জায়গার কাছে না পৌছানো অবধি এই চলল। তারপর এই একঘেয়ে ঢেউ-খেলানো জমি পালটে গেল। ঘন জঙ্গলে ঢাকা ছোটো ছোটো, স্বতন্ত্র টিলার দেখা মিলল। এইগুলোর মধ্যেই একটা কাঁটাওলা বাবলা গাছের দুর্ভেদ্য জঙ্গলে ঢাকা টিলাতে রোসাকো অবস্থিত, প্রাকৃতিক প্রাকারবেষ্টিত গ্রাম। এর উত্তরে আর একটি প্রতিবেশী গ্রাম, সেও একই ভাবে সুরক্ষিত। দুটি গ্রামের মাঝে রয়েছে একটি অত্যন্ত উর্বর আর সুফলা উপত্যকা। তার মাঝখান দিয়ে বহমান একটি ছোটো সোঁতা, পাশের উপত্যকার বা ছোটো ছোটো পাহাড়গুলোর নিষ্কাশনী হিসেবে কাজ করে সেই ধারা।

    রোসাকো হল উকড়ের সীমান্তবর্তী গ্রাম, আর কিকোকার অবস্থান উজারামোর ​​উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে। গ্রামে ঢুকলাম আর তাঁবু, প্রাণী ইত্যাদি দিয়ে গ্রামের মাঝের জায়গাটা দখল করলাম। গ্রামপ্রধান আমার ব্যবহারের জন্য তাঁবুতে একটা কিতান্দা নিয়ে এলেন। কিতান্দা একটা চৌকাকার শোওয়ার জায়গা, পালংকের ঝালর-ঝোলর, বাহারি সাজগোজ নেই, তবুও স্বাচ্ছন্দ্যের দিক দিয়ে একই রকম আরামদায়ক।



    আধুনিক কিতান্দা


    পিঠের থেকে মালপত্র নামানোর পরে গাধা-ঘোড়াগুলোকে ঘাস খেতে ছেড়ে দেওয়া হল। আর পাছে আসন্ন মাসিকা-কালের বর্ষায় মালপত্রের কোনো অপূরণীয় ক্ষতি হয়, সেই ভয়ে সৈন্যদের কাজে লাগানো হল সব মালপত্র গুছিয়ে রাখার জন্য।

    আমি আফ্রিকাতে অন্য যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখার চেষ্টা চালাচ্ছিলাম, তার মধ্যে একটা হল, একটা পাহারাদার কুকুরকে কাজে লাগানো, যেসব সহবৎ-জ্ঞানহীন লোকেরা যখন-তখন আমার তাঁবুতে ঢুকতে চায় আর দামি জিনিসপত্রের ক্ষতি করে, তাদের ঠেকানোর জন্য। বিশেষত আমি বলশালী গোগোদের উপর পাহারাদার কুকুরের ডাকের প্রতিক্রিয়া দেখতে চেয়েছিলাম। আরবদের কাছে শুনেছিলাম যে কেউ চাক বা না চাক, তারা এসে তাঁবুর দরজা তুলে ভিতরে ঢুকে পড়ে আর তাদের চেহারা দেখে লোকে ঘাবড়ে গেলে, তারা মুখ টিপে হাসে আর বলতে থাকে, “এই যে সাদা চামড়ার লোক, তোমার মতো কাউকে আমি আগে দেখিনি, তোমার মতো আরও অনেকজন আছে? তুমি কোথা থেকে এসেছ?” এছাড়াও, তারা ঘড়িটি নেয় আর খোশমেজাজে কৌতূহলী প্রশ্ন করে, ‘হ্যাঁগো সাদা মানুষ, এটা কীসের জন্য?' তার উত্তরে আপনি অবশ্যই বলবেন যে এটা ঘণ্টা, মিনিট জানায়। কিন্তু নিজের শারীরিক শক্তিতে গর্বিত, পশুর থেকেও কম ভদ্রতাজ্ঞান-যুক্ত গোগোটি আপনাকে অপমান মিশিয়ে উত্তর দেবে। আমি একটা পাহারাদার-কুকুরের কথা ভেবেছিলাম, আর বোম্বেতে তেমন একটা কিনেওছিলাম, শুধু বিশ্বস্ত সহচর হিসেবেই নয়, এইসব লোকদের ভয় দেখানোর জন্যও।



    গোগো গোষ্ঠীর মানুষ। পরের মুখে ঝাল খেয়ে এই জনগোষ্ঠীর মানুষদের যে বদনাম করলেন স্ট্যানলে, সেটা তাঁর বর্ণবিদ্বেষী শ্বেতাঙ্গ ঔপনিবেশিক পরম্পরার অঙ্গ। বরং এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বিশেষ ভাবে পরিচিত তাঁদের সংগীতপ্রিয়তার জন্য। আজও। এখানে শুনুন এই গোগো বা ওয়াগোগো গোষ্ঠীর সঙ্গীতকার ম্‌সাফিরি জ়াওসে-র গান ও কথা। সৌজন্য সিএনএন। -সম্পাদক। https://edition.cnn.com/videos/intl_tv-shows/2015/04/27/spc-african-voices-msafiri-zawose-a.cnn/video/playlists/intl-african-voices/

    তবে রোজাসাতে পৌঁছানোর পরেই দেখা গেল ওমর নামের কুকুরটি, যে কিনা তুর্কি দেশের কুকুর বলে ওই নামটা পেয়েছিল, সে অনুপস্থিত; ঝমঝমিয়ে বৃষ্টিতে সে সৈন্যদের থেকে দূরে সরে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিল। আমি মাবরুকি বার্টনকে ওমরের সন্ধানের জন্য আবার কিকোকায় পাঠালাম। পরের দিন সকালে, ঠিক যখন রোসাকো ছেড়ে বেরোতে যাব, আমাদের বিশ্বস্ত অনুচরটি হারানো কুকুর সঙ্গে নিয়ে এসে হাজির, তাকে কিকোকায় পাওয়া গেছে।

    সকালে আমাদের যাত্রা শুরুর আগে, চতুর্থ কাফেলার নেতা মাগাঙ্গা দুঃখের খবর নিয়ে এলেন। তিনজন কুলি অসুস্থ, ‘দোয়া’ মানে ওষুধ চাই। যদিও আমি ডাক্তার নই বা কোনোভাবেই ডাক্তারি পেশার সঙ্গে যুক্ত নই, তবু আজকের এই ঝামেলার মতো সমস্যা সামলানোর জন্য আমার একটা হরেক ওষুধওয়ালা ওষুধের বাক্স ছিল— এটা ছাড়া আফ্রিকায় কোনো পর্যটকই বেঁচে থাকতে পারে না। মাগাঙ্গার অসুস্থ কুলিদের দেখতে গিয়ে দেখি একজন ফুসফুসের প্রদাহে ভুগছে, আর-একজন মুকুনগুরুতে (থেকে থেকে আসা আফ্রিকান জ্বর) ভুগছে। তারা ধরেই নিয়েছে যে তাদের মৃত্যু আসন্ন, পূর্ণবয়স্ক মানুষেরা উচ্চস্বরে ‘মা’, ‘মা’ করে কাতর আতর্নাদ করছে। পরিষ্কার বোঝাই গেল যে চতুর্থ কাফেলাটি সেদিন আর নড়তে চড়তে পারবে না, তাই মাগাঙ্গাকে নির্দেশ দিলাম যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সে যেন তার কাফেলা নিয়ে রওনা দেয়। তারপর আমরা বেরিয়ে পড়লাম।

    যে গ্রামগুলি পেরিয়েছি, তাদের আশেপাশে ছাড়া আর কোথাও কোনো চাষবাষের চিহ্ন নেই। এক ঘাঁটি থেকে আর-এক ঘাঁটির মধ্যে বিস্তৃত দেশটি সাহারার মরুভূমির মতোই জনমানববর্জিত, যদিও সাহারার থেকে বেশি মনোরম। সৃষ্টির ঊষালগ্নে প্রথম মানবটি যখন আফ্রিকার এই অংশের তুল্য সুষমামণ্ডিত পৃথিবীর দিকে দৃষ্টিপাত করেছিল, বাস্তবিকই তার অভিযোগ করার কোনো কারণ ছিল না। সমুদ্রের মধ্যে জেগে থাকা ছোট্ট দ্বীপের মতো, বিস্তীর্ণ তৃণপ্রান্তরের মধ্যে ছোটো ছোটো ঘন ঝোপ মাথা তুলে আছে। সেই ঝোপ মানুষের তপ্ত মধ্যাহ্নের আশ্রয়, ভয়ংকর অন্ধকারে সস্ত্রীক নিরাপদ অবসরের জায়গা। সকালে নির্মলতা উপভোগ করতে করতে তৃণাচ্ছাদিত ঢাল বেয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া যায়—ঢালের পাদদেশে প্রবাহিত ছোটো ছোটো নদীর যে-কোনো একটিতে হাত-মুখ ধোয়া, স্নান ইত্যাদি সেরে নেওয়া যায়। ফল-গাছে ভরা বাগানটিই একমাত্র প্রয়োজন, গভীর ও শীতল, উচ্চ অরণ্যানী তার চারপাশে, তাদের ছায়ায় ছায়ায় প্রাণীরা বিচরণ করে, যত ইচ্ছা ততই মেলে। দিনের পর দিন, উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব এবং পশ্চিম, যে দিকেই চলা যাক, সেই একই দৃশ্য চোখে পড়বে।

    ঐকান্তিকভাবেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইউন্যানেম্বে যেতে চেয়েছিলাম, তবুও চতুর্থ কাফেলার মালপত্র এসে পৌঁছানো নিয়ে হৃদয়-জোড়া উদ্‌বেগ পিছুটান হিসেবে কাজ করছিল। আমার কাফেলাটি নয় মাইল পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছানোর আগেই আমার উদ্‌বেগ আকাশ ছুঁল। আমি তখুনি সেখানেই তাঁবু খাটানোর হুকুম দিলাম। তাঁবু খাটানোর জন্য যে জায়গাটা বাছা হল, সেটা একটা লম্বা পথ-হারা নালার কাছেই—নালাটা বর্ষাকালে জলে ভরে যায়, দুধারের ছড়ানো ঢাল বেয়ে জল গড়িয়ে নামে। আমরা শিবির স্থাপন করেই, শিবিরের পাশে গোল করে কাঁটা-ওয়ালা বাবলা ও অন্যান্য গাছের ডাল দিয়ে পশুদের জন্য আস্তানা বানিয়ে দিলাম আর তাদের ঘাস খেতে ছেড়ে দেওয়া হল। তখনই জানলাম, কত যে ভয়ানক সংখ্যায় আর কত রকমের যে পোকার দল! প্রথম দিকে অত পোকা দেখে খুবই ঘাবড়ে গিয়েছিলাম, বেশ কিছু প্রজাতির পোকার উপর নিরলস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরে অবশ্য সে ভয় কিছুটা কমেছিল।

    বিভিন্ন প্রজাতির পোকাদের খুঁজে বার করার কাজটি খুবই আকর্ষণীয় ছিল। কতটা কাজে লাগবে জানি না, তবে এখানে তার একটি খতিয়ান জুড়ে দেওয়া গেল। এই নমুনাগুলি জোগাড় করার পিছনে আমার এটাই জানার উদ্দেশ্য ছিল। এই পোকার দলে কি সেই পোকাটি আছে, যাকে প্রকৃতিবিদরা জিনস গ্লোসিনা মুরসিটানস বলেন আর লিভিংস্টোন, ভার্ডন এবং গামিংয়ের ডাকেন ৎসেৎসে বলে ( কখনো-কখনো সেৎসে নামেও ডাকা হয়)?



    ৎসেৎসে মাছি

    এই পোকা ঘোড়াদের পক্ষে মারাত্মক। সম্ভব হলে, আমি আমার ঘোড়া দুটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই; তবে ডা. কার্কের মতো প্রাণীজগৎ নিয়ে শখ-থাকা মানুষ প্রবল উত্সাহে ও অন্ধবিশ্বাসসহ পূর্বাভাস করেছেন যে আমার ঘোড়াগুলোর ৎসেৎস মাছির কামড়েই মৃত্যু হবে। বোগোমায়োর পশ্চিমদিকে এই মাছিতে ভরতি। এখনও অবধি আমি প্রায় দু-মাস হল আফ্রিকায় এসেছি, কিন্তু ৎসেৎসে মাছি চোখে পড়েনি। ৎসেৎসে মাছি কামড়ালে যেসব লক্ষণ দেখা যায়, তার মধ্যে একটা হল দুর্বল হওয়া। আমার ঘোড়াগুলো কাহিল হয়ে তো পড়েইনি, উলটে আরও তাগড়াই হয়েছে। আমার তাঁবুতে তিনটে আলাদা প্রজাতির মাছি আশ্রয় নিয়েছিল আর সম্মিলিতভাবে একটানা গান শুনিয়ে যাচ্ছিল—তাদের একদলের পুরুষালি গম্ভীর খাদের গলা, অন্যটির তারস্বর আর তৃতীয় দলেরটা দুর্বল মহিলাকণ্ঠের খাদের স্বর। প্রথম শব্দটি আসছিল একটা পেট-সর্বস্ব, মারাত্মক মাছির থেকে, এক ইঞ্চি লম্বা, অথচ বাপ রে! পেটে কতই না রক্ত ধরে!


    (ক্রমশ... পরের অংশ পড়ুন আগামী বৃহস্পতিবার)


    ১) স্লেটরঙের সাদা ছিট ছিট পালকওলা বড়ো চেহারার আফ্রিকান মোরগ জাতীয় পাখি।
    ২) একটি বড়ো আফ্রিকান হরিণ, লম্বা মাথা আর গোলচে পিঠওয়ালা।
    ৩) মাঝারি আকারের, রংচঙে পাখি, সারাক্ষণ চিৎকার-চেঁচামেচিতে পটু।
    ৪) রংচঙে লম্বা ল্যাজ-ওয়ালা পাখি। এই দলের পাখিদের মধ্যে ছেলেপাখিদের বাহার বেশি।
    ৫) পেলিক্যান পাখি, বৃহদাকার জলচর পাখি, লম্বা ঠোঁটের নীচে একটা চামড়ার থলি থাকে, তাতে এরা খাবার জমিয়ে রাখে।
    ৬) গোগো হল বান্টুদের একটি জাতিগত ও ভাষাতাত্ত্বিক দল। মূলত তানাজানিয়ার দোদমা অঞ্চলের বাসিন্দা।



    গ্রাফিক্স: স্মিতা দাশগুপ্ত
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
    | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ | ৩২ | ৩৩ | ৩৪ | ৩৫ | ৩৬ | ৩৭ | ৩৮ | ৩৯ | ৪০ | ৪১ | ৪২ | ৪৩ | ৪৪ | ৪৫ | ৪৬ | ৪৭ | ৪৮ | ৪৯ | ৫০ | ৫১ | ৫২ | ৫৩ | পর্ব ৫৪ | পর্ব ৫৫ | পর্ব ৫৬ | পর্ব ৫৭ | পর্ব ৫৮ | পর্ব ৫৯ | পর্ব ৬০ | পর্ব ৬১ | পর্ব ৬২ | পর্ব ৬৩ | পর্ব ৬৪ | পর্ব ৬৫ | পর্ব ৬৬ | পর্ব ৬৭ | পর্ব ৬৮ | পর্ব ৬৯ | পর্ব ৭০ | পর্ব ৭১ | পর্ব ৭২ | পর্ব ৭৩ | পর্ব ৭৪ | পর্ব ৭৫ | পর্ব ৭৬ | পর্ব ৭৭ | পর্ব ৭৮ | পর্ব ৭৯ | পর্ব ৮০ | পর্ব ৮১ | পর্ব ৮২ | পর্ব ৮৩ | পর্ব ৮৪ | পর্ব ৮৫ | পর্ব ৮৬ | পর্ব ৮৭ | পর্ব ৮৮ | পর্ব ৮৯ | পর্ব ৯০ | পর্ব ৯১ | পর্ব ৯২ | পর্ব ৯৩ | পর্ব ৯৪ | পর্ব ৯৫ | পর্ব ৯৬ | পর্ব ৯৭ | পর্ব ৯৮ | পর্ব ৯৯ | পর্ব ১০০ | পর্ব ১০১ | পর্ব ১০২ | পর্ব ১০৩ | পর্ব ১০৪ | পর্ব ১০৫ | পর্ব ১০৬ | পর্ব ১০৭ | পর্ব ১০৮ | পর্ব ১০৯ | পর্ব ১১০ | পর্ব ১১১ | পর্ব ১১২ | পর্ব ১১৩ | পর্ব ১১৪ | পর্ব ১১৫ | পর্ব ১১৬ | পর্ব ১১৭ | পর্ব ১১৮ | পর্ব ১১৯ | পর্ব ১২০ | পর্ব ১২১ | পর্ব ১২২ | পর্ব ১২৩ | পর্ব ১২৪ | পর্ব ১২৫ | পর্ব ১২৬ | পর্ব ১২৭ | পর্ব ১২৮ | পর্ব ১২৯ | পর্ব ১৩০ | পর্ব ১৩১ | পর্ব ১৩২ | পর্ব ১৩৩ | পর্ব ১৩৪ | পর্ব ১৩৫ | পর্ব ১৩৬ | পর্ব ১৩৭ | পর্ব ১৩৮ | পর্ব ১৩৯ | পর্ব ১৪০ | পর্ব ১৪১ | পর্ব ১৪২ | পর্ব ১৪৩ | পর্ব ১৪৪ | পর্ব ১৪৫ | পর্ব ১৪৬ | পর্ব ১৪৭ | পর্ব ১৪৮ | পর্ব ১৪৯ | পর্ব ১৫০ | পর্ব ১৫১
  • ভ্রমণ | ২১ জানুয়ারি ২০২১ | ২৭৬৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন