আমরা আধুনিক মানচিত্রের সাহায্যে কিছুটা আন্দাজ করার চেষ্টা করছি হেনরি মর্টান স্ট্যানলে-র যাত্রাপথ। নইলে পাঠকের পক্ষে বোঝাই মুশকিল এইসব কাণ্ড ঘটছে কোথায়। কাজটা কঠিন। কারণ, এই পথে এমন অনেক জায়গার নাম রয়েছে যার আজ কোনো অস্তিত্বই নেই। বাগামোয়ো থেকে ‘উসেগুহহা’-র রাজধানী সিম্বামওয়েন্নিতে পৌঁছে এবারে উগোগো অঞ্চলের চুন্যু (চুন্যো) নামক জনপদের লক্ষ্যে চলেছে স্ট্যানলের কাফেলা। উসেগুহহা বলে কোনো স্থান বা প্রদেশ আজ আর নেই। এমনকি বোঝাও মুশকিল সেই অঞ্চলের বিস্তৃতি ঠিক কী ছিল। তবে সিম্বামওয়েন্নি নামে একটি ক্যাম্প-সাইট এখনও রয়েছে তানজানিয়ার মোরোগোরো শহরের কাছে। আন্দাজ করা যেতে পারে এই সিম্বামওয়েন্নি-র কথাই স্ট্যানলে বলছেন। কাজেই এখানে বর্ণিত যা-কিছু ঘটছে সবই মানচিত্রে নীল বুটি দেওয়া পথের আশেপাশেই।—সম্পাদক
ফারকুহরের থেকে রোগের বিষয়ে সামান্য যেটুকু খবরাখবর পেয়েছিলাম আর রোগের ধরন নিয়ে যা জেনেছিলাম, তার ভিত্তিতে আমার সঙ্গে থাকা একটা ছোটো চিকিৎসাবিদ্যার বই পড়ে বুঝলাম যে পা-ফোলা আর কখনো-কখনো শরীর ফোলা হার্ট, লিভার বা কিডনির অসুখের লক্ষণ। তবে এর পেটের অবস্থা তো মোটেই খারাপ না—তাহলে এই অসুখকে কী বলব? এক যদি গোদ হয়,--জাঞ্জিবারে সে অসুখ অবশ্য খুবই হয়, কী করে যে এই রোগের চিকিৎসা করব তাও জানি না, তার উপরে আবার এমন লোকের হল যে মাথায়-না-পিঠে পায়ে-না-বুকে ব্যথা তাও বলতে পারে না।
ফারুকরের অসুখের জন্য আমার তক্ষুনি পুরো মনোযোগ না দিলেও হবে এটা বুঝতে পেরে রেহেন্নেকোতে থাকাকালীন তার আমাকে লেখা দুর্বোধ্য চিঠিখানার মর্মোদ্ধারে ব্যস্ত হলাম। পাওয়ার পর থেকেই চিঠিটা আমাকে চিন্তায় রেখেছে। তবে তার লেখা চিঠিও যেমন অবোধ্য, তার হাতে গচ্ছিত জিনিসপত্রের অবস্থার বাবদে তার মৌখিক ফিরিস্তিও দশগুণ বেশি বিভ্রান্তিকর, জটিল ও দুর্বোধ্য। সেসব গল্পের জট-টট ছাড়িয়েও যা দাঁড়ায় সেটা একজন নিয়ম-মেনে-চলা লোকের পক্ষে মেনে নেওয়া মুশকিল। কী করেছে, বা কী করেনি, কাপড়-পুঁতির মধ্যে কী খরচ হল, কী হয়নি, সে সব কথাই জট পাকানো—সেইসব বকবকানির মধ্যে থেকে মানে খুঁজে বার করার চেষ্টা করতে গিয়ে আমার পাগল পাগল লাগছিল। এইসব সমস্যা কমানোর একমাত্র উপায় হল নিজে সব ক-টা কাপড়ের গাঁটরি আর পুঁতির বোঝা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মেলানো, আর তৃতীয় কাফেলার সঙ্গে পাঠানো মালপত্রের আগেকার তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যে কী কী নেই।
পাঠকের হয়তো মনে পড়বে, আমি বলেছিলাম যে বাগাময়ো বা উপকূলের যে-কোনো অংশ থেকে আফ্রিকার অভ্যন্তরের দিকে যাত্রা করার আগে, অন্তত রাস্তায় চার মাস কাটানোর জন্য উপযুক্ত পরিমাণে ভুট্টা আর পুঁতি প্রতিটি কাফেলার সঙ্গে রাখতে হবে। উগোগোতে নজরানা দেওয়ার জন্য যে কাপড় আলাদা করে রাখা আছে, সেটা এই হিসেবে আসবে না। কুলিদের যা কাপড় দেওয়ার জন্য চুক্তি করা আছে, সেই কাপড়ও এই হিসেবের বাইরে।
ফারকুহরের কাফেলাও এই রীতি ও নিয়মের বাইরে না; তবে, একজন শ্বেতাঙ্গের কাফেলা হওয়ার জন্য এমনিতেই সেখানে কিছু বিশেষ ব্যবস্থা ছিল। ২৩ জন পুরুষ এবং ১০ টা গাধা ছিল এই কাফেলাতে আর এদের জন্য ১২০ ডটি মেরিকানি ও কানিকি দেওয়া ছিল। আর সেই সঙ্গে ছিল ৩৫ পাঊন্ড মেলানো-মেশানো পুঁতিও। খোরাকি হিসেবে। ১২০ ডটিতে ২৪০ শুক্কা। আর গড়ে এক শুক্কায় ২৫ কুবাদা শস্য মেলে আর এখানে মাথাকিছু ১ কুবাদা করেই দেওয়ার চল। এর থেকে তো একদম পরিষ্কার যে ২৪০ শুক্কার শস্যে একটা কাফেলা মাস আষ্টেক স্বচ্ছন্দে টিকে থাকবে। তবে কিনা যেহেতু উন্যানয়েম্বের যাত্রায় ১২০ দিনও লাগে না, তাই এর থেকে সাদা মানুষটার হাতে ১২০ শুক্কার বাজারচলতি ভালো কাপড় ও প্রায় ৩৫ পাউন্ড পুঁতিও রয়ে যাবে, তাই দিয়ে সে মুরগি, ডিম, কখনো-কখনো একটা-আধটা ছাগল এইসব বিলাসদ্রব্যও অল্পস্বল্প কিনতে পারবে।
এরপর সব মালপত্রের পরীক্ষা করার পালা। বাগামোয়ো থেকে কাফেলা রওনা হওয়ার আগের তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখার জন্য আমি খুবই উদ্বিগ্ন। মালপত্র ওজন করা, বস্তা খোলা ও আবার বস্তায় বাঁধাছাদা করতেই এক ঘণ্টা লাগল। তারপর আমি জানতে পারলাম যে এই মোটা-মাথা শ্বেতাঙ্গ মানুষটার আকণ্ঠ লোভ ও উচ্ছৃখল অসাবধনতায় অভিযানের ঠিক কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল! মাত্র তিয়াত্তর দিনের মধ্যে সে খোরাকি হিসেবে দেওয়া ২৪০ শুক্কা আর ১২ ডটি রঙিন কাপড় ফুরিয়ে ফেলেছেন। তারপর নজরানার কাপড়ের গাঁট খুলে সেখান থেকেও ৮২ ডটি বা ১৬৪ শুক্কা সরিয়েছেন, সবটাই ছাগল, ডিম ও হাঁস-মুরগির প্রতি তার লালসা মেটাতে খরচ হয়েছে। উন্যানয়েম্বেতে পৌঁছানোর জন্য তার হাতে যেসব কাপড়ের গাঁটরি তুলে দেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে মাত্র দুটো গাঁটরি এখনও খোলা হয়নি, বাকি সমস্ত গাঁটরি ছাগল কিনতে বা কুলি ভাড়া দিতে খরচ হয়ে গেছে। কারণ তার নটা গাধাই মরে গেছে আর-একটি মৃতপ্রায়।
ছয় নম্বর কাফেলাটিতে আমার নেতৃত্বে তেতাল্লিশ জন লোক আর সতেরটা গাধা ছিল। পঞ্চাশ দিন চলার পরে ষষ্ঠ কাফেলার ব্যয়ের তালিকা তৈরি করার সময়, আমি দেখেছিলাম যে এই ক-দিনে মাত্র ৪৩ ডটি বা ৮৬ শুক্কা খরচ হয়েছে—তাই বেশ বুঝলাম যে এত মূল্যবান কাপড় এই ভাবে নষ্ট করার জন্য ফারকুহরের কোনো অজুহাতই থাকতে পারে না। ‘একজন ভিখারিকে ঘোড়ার পিঠে চাপিয়ে দাও, সে ঠিক শয়তানের কাছে চলে যাবে’ এই প্রবাদ দেখি এক্ষেত্রে একদম সত্যি প্রমাণ হয়েছে। মানুষ সওয়ারি করতে পারে এমন একটা দামি গাধা তাকে জাঞ্জিবার থেকে কিনে দিয়েছিলাম, সেই গাধাটাকে মেরে ফেলেছে। একটি শিবির ছেড়ে অন্য শিবিরে যাওয়ার সময়, সে কখনোই গাধার পিঠের থেকে স্বেচ্ছায় নামেনি—কীভাবে যে গাধার পিঠে চাপতে হয় তাও জানে না, ফলে পিঠের একদিক থেকে অন্য দিকে সারাক্ষণ দুলতে থাকে, বেচারা গাধার পিঠটা এমন ভয়াবহভাবে ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে যে সে শীঘ্রই মারা যাচ্ছে। সে উন্যানয়েম্বে অবধি গেলে—অবশ্য কীভাবে যেত তা আমি জানি না—আর এরকম সীমাহীন খরচ চালিয়েই গেলে, একটা শুককা বা এক পাউন্ড পুঁতিও আর পড়ে থাকত না। এটা খুবই সৌভাগ্যের বিষয় যে আমার কিওরাতে তার সঙ্গে মোলাকাত হয়েছিল; সে হাঁটতে পারে না, আর মাকাটা উপত্যকার বিচ্ছিরি অভিজ্ঞতার পরে গাধায়-টানা-গাড়িও তেমন কাজে আসছে না। তবে তাই বলে তো আর তাকে সেখানে ফেলে চলে আসা যায় না! তাহলে তো মরেই যাবে! তবে গাড়ি চলে না এমন প্রান্তরের মধ্যে দিয়ে কতদিন যে এই অবস্থায় তাকে এভাবে টেনে নিয়ে বেড়াতে পারব, তা শুধু আগামীদিনের পরিস্থিতিই বলতে পারবে।
১১ মে, আমাদের তৃতীয় ও পঞ্চম কাফেলা—এখন তো তারা একসঙ্গে মিশে গেছে—মুকনডোকোয়ার ডান ধার দিয়ে চলা শুরু করল। পশ্চিমদিকে এগোতে এগোতে লম্বা লম্বা ভেলভেট-ঘাসের মধ্যে দিয়ে দেখলাম যে সুউচ্চ মুকনডোকোয়া আরও উঁচু হচ্ছে আর আমাদের একটা সরু নদীর উপত্যকায় আটকে ফেলছে। উসাগারাকে ডানহাতে রেখে আমরা মুনিয়ি ছাড়লাম—আর তার পরপরেই দেখলাম মাঝে মাঝে পথ জুড়ে তেরচা পাহাড় দাঁড়িয়ে—অগত্যা আমরা একবার করে উপরে উঠছি আবার নামছি। মিসংহিটের হাঁটুজলে নদী পেরোনর জায়গা থেকে আট মাইল হেঁটে আমরা মুকনডোকোয়ার হেঁটে পারাপারের আরেকটা জায়গায় এসে পৌঁছালাম। এখানেই আমরা বার্টনের রাস্তাকে বিদায় জানালাম, সে রাস্তা গেছে গোমাপাস হয়ে, রুবেহোর খাড়া ঢাল বেয়ে উপরের দিকে উঠেছে। আমাদের পথ চলেছে মুকুনডোকোয়ার ডান তীর ছেড়ে বামদিক ধরে—এমন একটা অঞ্চলের উপর দিয়ে যেটা পর্বতশ্রেণির মধ্যে গাঁথা মুকনডোকওয়া উপত্যকার ঠিক বিপরীত। উর্বর মাটি আর নিজে-থেকে-জন্মানো গাছপালা, পচা পাতার দুর্গন্ধে ভরা আর সেই গন্ধই যেন সবকিছুকে দাবিয়ে রেখে রাজত্ব করছে—ঘৃতকুমারী, ফণীমনসাদের রাজ্য ছেড়ে এসে পড়েছি এক অশান্ত প্রান্তরে, যেখানে কোলকাল ও কাঁটাঝোপের রমরমা।
সবুজে ছাওয়া পাহাড়ের বদলে পাহাড়ের ঢাল আর উপত্যকা, চাষজমির বদলে চোখে পড়ছে জনমানবহীন প্রান্তর। যেন সবুজ-চাদর কেড়ে নিয়ে পাহাড়-চূড়াগুলিকে উলঙ্গ করে দেওয়া হয়েছে, রোদে আর বৃষ্টিতে ধুয়ে তাদের পাথুরে অঙ্গ সাদা হয়ে গেছে। বাদামি মুকুনডোকোয়াকে বাঁ-হাতে রেখে আমরা লম্বা মেটে-ধূসর পাহাড়ি ঢাল বেয়ে আরও উঁচুতে উঠছি। উঠতে উঠতে চোখে পড়ছে আমাদের ডানকাঁধ বরাবর উসাগারা পর্বতমালার সবথেকে উঁচু শীর্ষ এনগুরু।
আগের নদী পেরোনোর জায়গার দু-মাইল দূরে, একটা পরিষ্কার শিবির বানানোর জায়গা পেলাম। নদীর একদম কাছেই, যেখানে নদী তীব্র প্রপাত হয়ে ঝরে পড়ছে। পরের দিন সকালে সবাই যাত্রা শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন আমাকে জানানো হল যে ‘বানা এমডোগো’—ছোটো মনিব শ, এখনও গাড়ি আর তার দায়িত্বে থাকা লোকদের নিয়ে এসে পৌঁছায়নি। আগের রাতেই আমি শ-র জন্য একটা গাধাকে পাঠিয়েছিলাম, শ বলেছিল যে সে এতই অসুস্থ যে হাঁটতে পারবে না। আর মাল বোঝাই গাড়ির জন্যও আর-একটা গাধা পাঠিয়েছিলাম। পাঠাতে বেশ দেরিই হয়েছিল। ঘুমোতে যাওয়ার সময় ভেবেছিলাম যে এরপর ওরা জলদি চলে আসবে। পরের সকালে যখন শুনলাম যে ওরা তখনও এসে পৌঁছায়নি, ভাবলাম যে শ নিশ্চয় জানে না যে আমাদের পরের পাঁচ দিন একেবারে জনশূন্য এলাকার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। অতএব আমি এমগওয়ানার সেনা চৌ-পেরেহকে একটা চিঠি দিয়ে পাঠালাম, চিঠিতে লিখলাম—‘এই আদেশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়িটাকে কাছাকাছির কোনো খাল, গলি বা নদীতে ফেলে দিয়ে, অতিরিক্ত গাধার জিনগুলোকেও সেখানে ফেলে জলদি চলে আসুন, ঈশ্বরের দোহাই দিচ্ছি, এখানে আমরা উপোস করে মরতে চাই না।’
এক ঘণ্টা, দু-ঘণ্টা, তিন ঘন্টা এমনকি চার-চার ঘণ্টা কেটে গেল—অধৈর্য হয়ে ছটফট করছি, শ’র জন্য বৃথা অপেক্ষা। সামনে অনেকটা পথ যেতে হবে, কাজেই আর অপেক্ষা করতে পারলাম না, নিজেই চললাম তার দলবলের সঙ্গে দেখা করতে। হেঁটে নদী পারাপারের জায়গা থেকে প্রায় এক চতুর্থাংশ মাইল দূরে পিছিয়ে পড়া দলের দেখা মিলল—গাড়ি প্রস্তুতকারকরা শুনুন—দশাসই মোটাসোটা চেহারার চৌ-পেরেহ গাড়িটা মাথায় করে নিয়ে আসছে—চাকা, শ্যাফট, দেহ, আক্সেল সব কিছু সমেত; সে দেখেছে যে গাড়ি টানার থেকে বয়ে আনা অনেক সহজ। আমিই এই পরীক্ষাটা করেছিলাম—কাজেই এই দৃশ্যটা আমার পক্ষে খুবই বিড়ম্বনার। লম্বা নলখাগড়ার জঙ্গলের মধ্যে গাড়িটাকে গড়গড়িয়ে ঠেলা দেওয়া হল আর সেখানেই পড়ে রইল। পুরো দলের মধ্যমণি অবশ্যই শ নিজেই, এমন ভাবে গাধার পিঠে চড়েছে যে বোঝা দায় যে সে না তার গাধা বেশি ঘুমন্ত। তাকে চেপে ধরলাম যে সে যখন জানে যে সামনে কতটা পথ হাঁটতে হবে, তখন সে কেন আমাদের এতক্ষণ অপেক্ষা করাল? খুব অদ্ভুত গলায় সে বলল যে সে তার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছে—সে গলাটা তার মেজাজ বিগড়লেই বেরোয়। আমি অবশ্য দেখেছি, সে কতখানি ধীরগতিতে আসছিল। কাজেই তার ‘সেরা প্রচেষ্টা’ সম্পর্কে আমি খুবই সন্দিগ্ধ; আর সেইমতো তাকে অনুরোধ করলাম যে সে যদি নিজের গাধায় চড়ার ভঙ্গিমা বদলাতে না পারে, তাহলে যেন গাধার পিঠ থেকে নেমে পড়ে আরগাধাকে শিবিরের দিকে এগিয়ে যেতে দেয়, যাতে পরের যাত্রার জন্য তার পিঠে মাল চাপিয়ে তৈরি করা যায়। অবশ্যই সেখানে একটু ঝামেলা হল, তবে পূর্ব আফ্রিকা অভিযানের একজন যুবক ইউরোপীয় নেতার অবশ্যই তার দলের বাছাই করা লোকদের থেকে সহযোগিতা দরকার।
মাদেতে পৌঁছলাম বিকেল চারটেতে, দুটো গাধা কম। তারা পথেই তাদের শ্রান্ত শরীর নিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। মুকুনডোকোয়া পেরিয়েছি প্রায় তিনটে নাগাদ, এই নদীর হাবভাব, চলন দেখে নিশ্চিত হয়েছিলাম যে এনগুরু শীর্ষের পশ্চিমের থেকে প্রায় চল্লিশ মাইল উত্তরে একদল পাহাড়ের মধ্য থেকে তার জন্ম। আমাদের রাস্তাটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিমে চলছিল আর এখানে শেষ পর্যন্ত নদীর থেকে দূরে বেঁকে গেল।
(ক্রমশ…)