আমরা আধুনিক মানচিত্রের সাহায্যে কিছুটা আন্দাজ করার চেষ্টা করছি হেনরি মর্টান স্ট্যানলে-র যাত্রাপথ। নইলে পাঠকের পক্ষে বোঝাই মুশকিল এইসব কাণ্ড ঘটছে কোথায়। কাজটা কঠিন। কারণ, এই পথে এমন অনেক জায়গার নাম রয়েছে যার আজ কোনো অস্তিত্বই নেই। পঞ্চম অধ্যায় অবধি ছিল চুন্যু (চুন্যো) নামক জনপদে পৌঁছোনোর কাহিনি। এবার শুরু হল চুন্যু থেকে পথচলা। এ কিস্তিতে আছে উগোগো পর্যন্ত পৌঁছোনোর বর্ণনা, এখানে বর্ণিত যা-কিছু ঘটছে সবই মানচিত্রে নীল দাগ দেওয়া পথের আশেপাশেই।— সম্পাদক
ষষ্ঠ অধ্যায়
মারেঙ্গা এমকালি, উগোগো ও উয়াঞ্জি থেকে উন্যানয়েম্বে
২২ মে থানি ও হামেদের কাফেলাগুলো এসে চুন্যোতে আমার কাফেলার সঙ্গে যোগ দিল। চুন্যো জায়গাটা এমপাওয়াপাওয়া থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টার দূরত্বে। এখান থেকে পথটা এমপাওয়াপাওয়া পাহাড়শ্রেণির সীমানা বরাবর চলে; তিন-চার জায়গায় মূল পাহাড়ের থেকে দলছাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক একটা একটেড়ে পাহাড় ডিঙিয়ে রাস্তা এগিয়ে চলে।
চুন্যো এখনও ছোট্টো গ্রাম। এটি সে গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্র
মূল পাহাড়ের থেকে খোঁচার মতো বেরিয়ে থাকা এই পাহাড়গুলোর মধ্যে শেষেরটা, যেটা কিনা একটা আড়াআড়ি উঁচু শৈলশিরা দিয়ে এমপাওয়াপাওয়ার সঙ্গে জোড়া, তারই পশ্চিম ঢালে, খাড়া ঢাল বেয়ে গজরাতে গজরাতে নেমে আসা ঝোড়ো হাওয়ার থেকে আড়াল করে রয়েছে চুন্যোর গ্রাম। চুন্যোর জল অত্যন্ত খারাপ, আদতে এর লবণাক্ত-নাইট্রাস স্বাদের কারণেই উগোগো আর উসাগারার মাঝের এই জনহীন জায়গাটার নাম হয়েছে মারেঙ্গা এমকালি—তিতো জল। অতিশয় বিশ্রী স্বাদের হলেও আরবরা আর স্থানীয়রা এটাই নির্ভয়ে খায়, হয়ও না কিছু; তবে নিজের নিজের মালবাহী জন্তুদের ওই জলের গর্তগুলোর থেকে সামলে রাখে। জলের প্রকৃতি সম্পর্কে না জানায় আর মারেঙ্গা এমকালি বলতে ঠিক কোন্ জায়গাটা বোঝায় তা ঠিক করে না জানা থাকায়, প্রত্যেকবারই হাঁটার পরে যেমন হয়, সেরকমই গাধাগুলোকে জল খাওয়াতে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলাম; আর তার পরিণতিতে হয়েছিল চূড়ান্ত বিপর্যয়। মাকাটার ভয়াবহ জলাজমির থেকে যেটুকুও বা রেহাই পেয়েছিল, মারেঙ্গা এমকালির জল তাকে ধ্বংস করে দিল। চুন্যো বা মারেঙ্গা এমকালি ছাড়ার পাঁচ দিনেরও কম সময়ে, আমাদের যে মাত্র ন-টা গাধা তখনও বেঁচে ছিল, তার মধ্যে পাঁচটাই—পাঁচ-পাঁচটা জলজ্যান্ত সুস্থ প্রাণী—জ্যান্ত বলি হল। জলটা মনে হয় প্রস্রাব বন্ধ করে দেয়, কারণ তিনটে প্রাণীরই মারা যাওয়ার কারণ সেটা।
চুন্যো ছেড়ে যখন বেরোলাম, তখন আমরা সব মিলিয়ে সংখ্যায় প্রায় চারশোজন—বেশ একখানা জবরদস্ত কাফেলা। বন্দুক, পতাকা, শিঙা, বাজানোর ড্রাম—জগঝম্প ব্যাপার। শেখ থানি আর আমার অনুমতি অনুসারে শেখ হামিদ ভয়ংকর উগোগোর মধ্য দিয়ে এই বিশাল কাফেলাকে পথ দেখানোর ও নেতৃত্ব দেওয়ার কাজটি নিলেন; পরে অবশ্য দেখা গেল যে সেটা খুবই ভুল করা হয়েছিল।
তিরিশ মাইলেরও বেশি চওড়া মারেঙ্গা এমকালি অবশেষে আমাদের সামনে। ছত্রিশ ঘণ্টার মধ্যে এই দূরত্ব পেরোতে হবে যাতে করে সাধারণ হাঁটার কষ্ট দু-গুণেরও বেশি হয়ে যায়। চুন্যো থেকে উগোগো পর্যন্ত এক ফোঁটাও জল মেলে না। একটা বড়ো কাফেলা, ধরা যাক তাতে দুশোরও বেশি লোক, খুব কমই ঘণ্টায় পৌনে দুই মাইলের বেশি বেগে চলতে পারে, অতএব তিরিশ মাইলের পথ পেরোতে সতেরো ঘণ্টা চলার ধৈর্য লাগবে, জল ছাড়া আর যৎসামান্য বিশ্রামসহ। পূর্ব আফ্রিকায় সাধারণত অপরিমিত জল মেলে, জলের অভাবে কাফেলাগুলোকে ভারতের মশক১ বা মিশরের খিরহেবের উপর ভরসা করতে হয় না। গোটাকয়েক লম্বা হন্টনপর্বের মাধ্যমে জলহীন এলাকা পেরিয়ে যেতে পারে বলে তারা এই সময়টুকুর জন্য একটা ছোটো লাউয়ের খোল ভরা জলেই সন্তুষ্ট থাকে আর জল্পনা করতে থাকে যে জলের জায়গায় পৌঁছানোর পরে কতটা প্রচুর পরিমাণে জল খাবে।
জলহীন অঞ্চলের মধ্য দিয়ে হাঁটাটা ভয়ানক একঘেঁয়ে—আর আমার একটা এমন বিপজ্জনক রকমের জ্বর হল যে আমার সব জীবনীশক্তি যেন চুষে নিচ্ছিল। জঙ্গলহীন সমতলের উপর লাফিয়ে বেড়ানো জেব্রা, জিরাফ, ইল্যান্ডস বা আন্টিলোপের দলের রূপ ধরে আফ্রিকার যে বিস্ময়গুলো আমাদের সামনে মূর্ত হচ্ছিল, তাদের মোটেও ভালো লাগছিল না, বা ঘোর অসুস্থতার কবলে পড়ে থাকা আমার তাদের দিকে মোটেই নজর পড়েনি। প্রথম দফার হাঁটার শেষের দিকে আমি আর গাধার পিঠে বসে থাকতে পারছিলাম না; ওই বিজন প্রান্তরে ততক্ষণে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ পথ পেরোনো হয়েছে, ফলে পরের দিন অবধি অপেক্ষা করাও তখন সম্ভব না; সৈন্যদের তাই হুকুম দেওয়া হল আমাকে একটি দোলনা-বিছানায় চড়িয়ে বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, আর সেদিন বিকেলে যখন আবার হাঁটা শুরু হল, তখন আমি অবসন্ন অবস্থায় পড়ে আছি, বিশ্বজগত সম্বন্ধে অচেতন। রাতটা জ্বরের ঘোরে কাটিয়ে সকাল ৩টে নাগাদ, যখন আবার হাঁটা শুরু হল, তখন আমি জুতো পরে তৈরি আর দ্রুত হাঁটতে শুরু করলাম—আমার কাফেলার লোকদের চেনা সাহেব আবার ফিরে এল। সকাল আটটার সময় আমাদের বত্রিশ মাইল হাঁটার পর্ব শেষ। মারেঙ্গা এমকালির নির্জন প্রান্তর পেরিয়ে গেছে, আর আমরা উগোগোতে ঢুকে গেছি। এই জায়গাটা একই সাথে আমার কাফেলার কাছে একটা ভয়ের জায়গা আর আমার কাছে প্রতিশ্রুতির দেশ।
মরুপ্রান্তর থেকে প্রতিশ্রুতির দেশে পালটে যাওয়াটা অবশ্য খুব ধীরে ধীরে আর সহজে হল। ক্রমে ক্রমে জঙ্গল পাতলা হচ্ছে, দীর্ঘ সময় ধরে ফাঁকা জমি আসছে, আসছে, আর শেষে যখন সত্যিই ফাঁকা জমি দেখা গেল, তখনও চাষবাসের কোনো চিহ্ন নেই, যতক্ষণ না পথের সমান্তরালে চলা আমাদের ডানদিকের পাহাড়ের ঢালে কিছু ওষধি আর গাছপালা পরিষ্কার দেখা গেল; তারপরে পাহাড়ের উপর কাঠ দেখলাম, বিস্তৃত জমিতে আবাদ হতেও দেখলাম।—আর দ্যাখো! লম্বা আগাছা ও বেতঝোপে ঢাকা লালমাটির ঢেউয়ের পিঠে সওয়ার হয়ে উপরের দিকে উঠছি যখন, দেখি যে আমাদের থেকে মাত্র কয়েক ফুট দূরে আর সরাসরি আমাদের পথের উপরে, মাটামা ও শস্যের খেত, যা আমরা এতক্ষণ ধরে খুঁজছি,—প্রায় এক ঘণ্টা আগে উগোগোতে ঢুকে গেছি।
যেমন ভেবেছিলাম জায়গাটা তেমন নয়। আমি ভেবেছিলাম, মারেঙ্গা এমকালির চেয়ে কয়েকশো ফুট উঁচু মতন একটা মালভূমি হবে, আর বেশ একটা ছড়ানো মতন জায়গা, যেখান থেকে উগোগো আর তার বৈশিষ্ট্যগুলি বেশ স্পষ্ট দেখা যাবে। তার বদলে, কৃষিজমির আগের ফাঁকা লম্বা-আগাছা-দিয়ে-ঢাকা জায়গাটার মধ্যে দিয়ে হেঁটে আসার সময় আমরা লম্বা মাটামা গাছের জঙ্গলের গভীরে ঢুকে গেলাম—কিছুই প্রায় দেখা যাচ্ছিল না, ভাবছিলাম হয়তো দূরে এমভুমির লাগোয়া একটা-দুটো পাহাড় পাব, সেই এমভুমি যেখানে মহান সুলতান থাকেন, তারাই প্রথম উপজাতি যাদের আমাদের ভেট দিতে হবে।
তবে, প্রথম গ্রামের আশেপাশে উগোগোর অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যগুলোর কয়েকটা এক ঝলক দেখতে পাওয়া গেল—একটি বিস্তৃত সমভূমি—এই সমতল তো এই উপরমুখো, এই টেবিলের মতন সমান তো এই জমি উঠে গেছে এবড়োখেবড়ো টিলার মাথায়, অজস্র বিশাল বিশাল চেহারার অমসৃণ পাথরে ভরা, তার উপর পাথরগুলো এমনভাবে একটার উপর একটা সাজানো যেন আসুরিক কোনো গোষ্ঠীর বাচ্চারা সেগুলো নিয়ে বাড়ি বানানোর খেলা খেলেছে। সত্যিই, গোল, কোণা-বের-করা আর টুকরো হয়ে যাওয়া পাথরগুলো নিজেরাই যেন ছোটোখাটো পাহাড় তৈরি করেছে আর এমনভাবে হাজির যেন প্রত্যেকটাকে একটা বিপুল বলের সাহায্যে নীচের থেকে উপরে ছুড়ে দেওয়া হয়েছে।
বিশেষ করে এমভুমির কাছে একটা পাথর ছিল যেটা বিশাল আকারের আর একটা দৈত্যাকার বাওবাব গাছের ছড়ানো ডালপালায় খানিকটা ঢাকা পড়ে যাওয়া। ঠিক যেন একটা বিশাল মাপের চৌকো বুরুজ! আমি তো অনেকক্ষণ ধরে ভাবছিলাম যে একটা আশ্চর্য রকমের কিছু আবিষ্কারই করে ফেললাম বোধহয়, যেটা অজানা কোনো কারণে পূর্ব আফ্রিকায় আমার পুর্বসূরীদের চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল। কাছে গিয়ে অবশ্য ভ্রান্তি দূর হল, দেখা গেল এটা একটা বিশাল চৌকো পাথর, মাপে প্রতি দিকে চল্লিশ ফুট। বাওবাব গাছই এখানে বেশি দেখা যেত, চাষের জমিতে অন্য কোনো রকমের গাছ ছিল না। সম্ভবত দুটো কারণেই বাওবাব গাছগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল: প্রথমত এই বিশাল আকৃতির গাছ কেটে ফেলার মতন উপযুক্ত কুড়ুলের অভাব আর দ্বিতীয় কারণ এই যে, দুর্ভিক্ষের সময় বাওবাবের ফলের থেকে একরকম আটা পাওয়া যায়, অন্য খাবারের অভাবে যা খাদ্যযোগ্য আর পুষ্টিকরও।
উগোগোতে প্রথম শোনা শব্দগুলো বলেছিল এক শক্তপোক্ত চেহারার ওয়াগোগো বুড়ো, আলসে ভাবে পশুর পালকে সামলাচ্ছিল, আর খুবই আগ্রহ সহকারে পাশ দিয়ে হেঁটে চলে যাওয়া অচেনা মানুষটাকে দেখছিল—লোকটার পরনে সাদা ফ্ল্যানেলের পোশাক আর মাথায় হকসের পেটেন্ট-নেওয়া কর্কের সৌরটুপি—উগোগোর পক্ষে এক মহাবিরল দৃশ্য। শব্দগুলো ছিল, “ইয়াম্বো, মুসুঙ্গু, ইয়াম্বো, বানা, বানা”, (‘পেন্নাম, সায়েব, পেন্নাম, ও কর্তা, কর্তামশাই’)- এমন জোরে বলা যে পুরো এক মাইল দূরের থেকেও শোনা যাবে। কথাটা বলার সঙ্গে সঙ্গে ‘মুসুঙ্গু’ শব্দটা যেন তার পুরো গ্রামকে তড়িদাহত করে দিল; আর প্রথম গ্রামের উত্তেজনা লক্ষ করে পথের পাশে ফাঁকে ফাঁকে অবস্থিত অন্যান্য গ্রামের মানুষজনও এই হঠাৎ জেগে ওঠা পাগলামির অংশ হয়ে উঠল। প্রথম গ্রাম থেকে এমভুমি অবধি এগোতে পারাটাই একটা বিশাল সাফল্যের ব্যাপার; কারণ একটা ছেলে-মেয়ে-বাচ্চাদের একটা বিরাট উত্তেজিত দল চলছিল আমার সঙ্গে সঙ্গে, ইডেনের উদ্যানে প্রথম ধরাদর্শনের মুহূর্তের মাতা ইভের মতোই উলঙ্গ তারা।
উগোগোর এই প্রান্তে সাদা মানুষের পা রাখা এই প্রথম। ভালো করে সাহেবকে দেখতে পাওয়ার জন্য একে অপরের সঙ্গে মারামারি করছে, ঝগড়া করছে, ঝাঁকানি দিচ্ছে, ধাক্কা মারছে। ‘হাই-লে!’ ইত্যাদি বলে তারিফ জানিয়ে চিৎকার মাঝে মাঝেই একটা বিশৃঙ্খল গোলমালের মতো কানে এসে ধাক্কা মারছে—মোটেই ভালো ভাবে নিইনি ব্যাপারটা, কারণ অনেকটাই খুব উদ্ধত বলে মনে হয়েছিল। একটু সম্ভ্রমসহ নীরবতা ও আরও সংযত আচরণ হলেই ভালো হত; তবে হে উসুনগুর শিষ্টাচার-রক্ষাকারী ক্ষমতাধীশ! শ্রদ্ধাপূর্ণ নীরবতা, সংযত আচরণ ও সম্মান এই শব্দগুলোই বর্বর উগোগোতে অজানা। এযাবৎ আমি নিজেকে তুলনা করছিলাম বাগদাদের বণিকের সঙ্গে যে কিনা কুর্দিস্তানের কুর্দিদের মধ্যে দামাস্কাস সিল্ক, কেফিয়েহ২ ইত্যাদির সম্ভার বিক্রির জন্য ঘুরছে, তবে এবার মান নীচু করতে বাধ্য হলাম। সেন্ট্রাল পার্কের চিড়িয়াখানার বাঁদরগুলো যাদের মজার মজার কাণ্ডকারখানা দেখে নিউ ইয়র্কের বাচ্চারা মজা পায়, তাদের চেয়ে নিজেকে উচ্চস্তরের বলে ভাবতে পারলাম না। আমার এক সৈন্য তাদের গলা নামানোর কথা বলেছিল; এই বজ্জাতরা তাকে চুপ করতে হুকুম দিল, যেন সে ওয়াগোগোদের সঙ্গে কথা বলার যোগ্যই না। আমি যখন এই সংকটে পরামর্শের জন্য আরবদের দ্বারস্থ হলাম, তখন বয়স্ক শেখ থানি, দুনিয়াদারিতে অভিজ্ঞ, বলেছিলেন, “পাত্তা দিও না; ওরা সেই দলের কুকুর যারা শুধু চেঁচায়ই না, কামড়ায়ও।”
সকাল ন-টায় এমভুমি গ্রামের কাছে আমাদের কুঁড়েতে পৌঁছালাম, তবে এখানেও মুসুঙ্গুকে এক ঝলক দেখার জন্য ওয়াগোগোদের দল এসে হাজির—গোটা এমভুমি এলাকার সবাই ততক্ষণে সাহেবের আসার কথা জেনে গেছে। তবে ঘণ্টা দুই পরে তারা যে আমাকে দেখার চেষ্টা করছে সে বিষয়ে আমার আর কোনো হুঁশ থাকল না। কারণ, বারবার কুইনিন খাওয়া সত্ত্বেও, মুকুনগুরু আমায় পেড়ে ফেলল।
(ক্রমশ...)
কিরহবের কাছা কাছি শব্দ হয়তো মরককো এবং মাঘরেবের ঘেরহেব ( জল বহন কারী চামড়ার ব্যাগ মতান্তরে জল বহন কারী)। Casablanca য় প্রচন্ড দামে বিক্রি হতে দেখেছি প্রাচিন সুভেনির হিসেবে।
এই জল বহন কারিকে আমরা চিনি ভিসতি নামে ( ফারসি শব্দ ) যে মশক বহন করে। এক ভিসতি মুঘল সমরাট হুমায়ুনকে সাক্ষাত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেন চৌসার যুদ্ধে (১৫৩৯)। শের শাহের কাছে পরাজয়ের পরে হুমায়ুন প্রায় একাকি আগ্রা পলায়নে সক্ষম হন তাঁর সাহায্যে। পরবর্তী কালের মুঘল রাজত্ব যাঁর জন্য রক্ষিত হল তাঁর নাম ইতিহাস মনে রাখে নি ।