
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে পাক্কা দেড় মাস আটকে সেখান থেকে একে একে রওনা হলো অভিযানের মোট পাঁচটি কাফেলা। চলছে অভিযানের মূল কাহিনি। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। এ অধ্যায়ে উন্যাময়েজি অঞ্চল, যেখানে বর্তমান টাবোরা শহর, তার কাছে রুবুগা নামের জনপদে পৌঁছনর কথা। তরজমায় স্বাতী রায়
আমরা আধুনিক মানচিত্রের সাহায্যে কিছুটা আন্দাজ করার চেষ্টা করছি হেনরি মর্টান স্ট্যানলে-র যাত্রাপথ। নইলে পাঠকের পক্ষে বোঝাই মুশকিল এইসব কাণ্ড ঘটছে কোথায়। কাজটা কঠিন। কারণ, এই পথে এমন অনেক জায়গার নাম রয়েছে যার আজ কোনো অস্তিত্বই নেই। যেমন, আগের কিস্তিগুলোতে আমরা পেয়েছি, এমপোয়াপোয়া থেকে রওনা হয়ে কিদিদিমো হয়ে এমসালালো দিকে এগিয়ে যাওয়ার বর্ণনা। এ কিস্তিতে পেয়ে গেলাম তুরা থেকে রুবুগা হয়ে তারপর উন্যাময়েজি। এই উন্যাময়েজি অঞ্চলই বর্তমানে টাবোরা শহর। এখানে বর্ণিত যা-কিছু ঘটছে সবই (ওপরের) মানচিত্রে নীল বুটিদার দাগ দেওয়া পথের আশেপাশেই।
১৮ তারিখে, হামিদ, হাসান ও আমার মোট তিনটে কাফেলা তুরা থেকে রওনা হল। একটা পেঁচালো রাস্তা, লম্বা লম্বা মাটামার ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে সব জায়গা ছুঁয়ে ছুঁয়ে চলেছে। এক ঘন্টার মধ্যে তুরা পেরো, বা পশ্চিম তুরা পেরিয়ে গেলাম। আবার জঙ্গলে ঢুকলাম, সেই জঙ্গলের থেকে তুরার কিম্বুরা মধু সংগ্রহ করে আর হাতি ধরার জন্য সুগভীর ফাঁদ পাতে— জঙ্গলটা হাতি-ধরার ফাঁদে ভরা। পশ্চিম তুরা থেকে এক ঘণ্টা পথ চলে আমরা জিওয়া বা পুকুরের কাছে এসে পৌঁছালাম। একটা ছোট উন্মুক্ত এমবুগা বা সমভূমির মাঝখানে দুটো পুকুর— এই জায়গার মাটিটা এই শেষ-বর্ষাতেও বর্ষাকালের উপচে-পড়া জলে কাদা কাদা। তিন ঘণ্টা বিশ্রাম নেওয়ার পর, আমরা আবার দ্রুত বৈকালিক ছোটা শুরু করলাম।
পশ্চিম তুরা ছেড়ে বেরনোর ঠিক পরেই যে জঙ্গলটাতে ঢুকেছিলাম, কওয়ালা নদীর কাছে এসে না পৌঁছানো অবধি সেটার মধ্য দিয়েই চলতে লাগলাম। বার্টন তাঁর মানচিত্রে ভুল করে এর নাম কওয়ালে লিখেছেন। চওড়া, আঁকাবাঁকা নদীর পেটের মধ্যের গভীর গর্তে বা বড় বড় খন্দে জল জমিয়ে রাখা। এর মধ্যে একরকমের পাঁকাল মাছ পাওয়া গিয়েছিল, তাই খেয়েই পেট ভরালাম— বাগামোয়ো ছাড়ার পর থেকে আর জিভে মাছ ছোঁয়াইনি, কাজেই তেমন একটা বাজেও লাগেনি। তবে স্বাদের ব্যাপারে আমি যেরকম খুঁতখুঁতে, মনে হয় না যে বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকলে, হাজার পরিস্থিতির চাপেও আমি পাঁকাল মাছ খেতাম।
ক্রমশ...
[i] আলনসকার আরব্য রজনীর এক অতি-অলস, দিবাস্বপ্নবিলাসী, ভিক্ষুক চরিত্র। সে একবার উত্তরাধিকার সূত্রে কিছু টাকা পেয়ে তাই দিয়ে বাসনপত্র কিনে পসরা সাজিয়ে বসে। ক্রেতার জন্য অপেক্ষা করতে করতে সে কল্পনা করতে থাকে যে এই বাসন বেচে অনেক পয়সা হবে, তাই দিয়ে সে হীরে-জহরতের ব্যবসা করবে। সেই ব্যবসায় লাভ করে অনেক বাড়ি-গাড়ি, দাস-দাসী কিনবে সে। তারপর প্রধানমন্ত্রীর মেয়েকে বিয়ে করবে। বৌএর কোন অভাব সে রাখবে না। কিন্তু বৌকে পাত্তাও দেবে না। বৌ তার নজর কাড়ার জন্য কাকুতি-মিনতি করলে সে তখন বৌকে এক লাথি মারবে। এই ভাবতে ভাবতে সে ঝোঁকের মাথায় এক লাথি মারলে সে লাথি তার বাসনপত্রের গায়ে লাগলে বাসন গড়িয়ে পড়ে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায়।
হীরেন সিংহরায় | ১৯ আগস্ট ২০২১ ১৫:৩৮496879চমৎকার আকর্ষনীয় লেখা। পড়ে যাচ্ছি সাগ্রহে ।
দুটো কথা ছিল - আরবিতে প শব্দটা নেই বলে সেটা ব উচ্চারিত হয়। তার নমুনা ওই এমবাওয়াওয়া।
স্ট্যানলি হিন্দু কুলির কথা বলেছেন। এরা কারা ? প্রথম ভারতীয়রা তো পুর্ব আফ্রিকা গেছেন চুক্তি বদ্ধ শ্রমিক হয়ে।
স্বাতী রায় | 117.194.***.*** | ২২ আগস্ট ২০২১ ২০:৩৭497011
Drmitali Bera | ২৬ অক্টোবর ২০২১ ১৯:৫৭500240