জীবন বাজি রেখে লড়েছি, আর জিতেছি : সোহেল আবদুলালি
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৯ জুন ২০১৩ | ১০৩২ বার পঠিত | মন্তব্য : ২৬
আমি একজন সারভাইভর। আমি আমাকে ধর্ষণ করার জন্য কাউকে অনুরোধ করি নি, আমি ধর্ষণ উপভোগও করি নি। এটা ছিল আমার জীবনে সহ্য করা সবচেয়ে কষ্টকর অত্যাচার। কোনও ধর্ষণ কখনও কোনও মেয়ের দোষে ঘটে না। ধর্ষণকে নিয়ে আমাদের সমাজে পালন করে চলা অদ্ভুত নীরবতা আর অবাস্তব কাল্পনিক মিথকে ছিন্নভিন্ন করে দেবার উদ্দেশ্যেই আমার এই লেখা। আমি এই লেখার মাধ্যমে শুধু এইটুকু সবাইকে জানাতে চাই যে মেয়েরা কোনও সহজলভ্য ভোগসামগ্রী নয়, ধর্ষণের মত অপরাধ একজন মেয়েকে, মানুষ হিসেবে, সামাজিক ও মানসিকভাবে সবচেয়ে একা করে দেয়।
স্ট্যাটাস নাই তো কিছুই নাই : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | বাকিসব : নেট-ঠেক-কড়চা | ১২ আগস্ট ২০১৩ | ১১৮২ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৬
সাধারণভাবে আমরা জানি পদার্থের স্ট্যাটাস বা অবস্থা তিন প্রকার। কঠিন তরল এবং বায়বীয়। কিন্তু মানুষের স্ট্যাটাসের সংখ্যা অসংখ্য। এই বিচিত্র দুনিয়ায় বিচিত্র স্ট্যাটাসের উৎপত্তি হচ্ছে প্রতিদিন। ফেসবুকের কল্যাণে সেই স্ট্যটাসগুলো মনের কৃষ্ণগহবর থেকে বেরিয়েআসছে নির্দ্বিধায়। এই ফেসবুক স্ট্যটাস নিয়ে একটি গবেষণা করা যাক। কথায় আছে যার স্ট্যাটাস নাই তার কিছুই নাই। আবার বাংলা ছবির ডায়লগের মত ডায়লগ আছে, চৌধুরী সাহেব আমার ঘর নাই,বাড়ি নাই, কিন্তু স্ট্যাটাস আছে। এখন আপনার মেয়ে বিয়ে দিবেন কি না বলেন?
ঋতু, সম-যৌনতা, বৃহন্নলা এবং অতীত ও বর্তমানের রক্ষণশীল ভারতীয় সমাজ : বিশ্বেন্দু নন্দ
বুলবুলভাজা | অন্য যৌনতা | ০৮ জুলাই ২০১৩ | ৪৬৬৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪৭
দেবতাদের মধ্যে সমযৌনতা খুব একটা অপ্রচলিত নয়, যদিও অনেক সময় এগুলি সঙ্গমের চিত্র বহন করে না, বরং আচারে প্রকাশ পায়। অগ্নি অন্য দেবতার বীর্য গ্রহণ করে। যদিও তিনি স্বাহার স্বামী, তিনি সোমের(চাঁদ) সঙ্গে রমণ করেন, কেননা তিনি মুখ দিয়ে পৃথিবীর উৎসর্গ স্বর্গে বসে পান করেন। হিন্দু শাস্ত্র বলে এটি আসলে মিথুন ভঙ্গিমা, যেখানে অগ্নির মুখ যোনির কাজ করে। রামায়ণ আর শৈব পুরাণে যখন পার্বতী আর শিব উপগত হন, তখন দেবতাদের আশঙ্কা হল এই অনন্ত কাল ধরে চলা সঙ্গমে বিশ্বে প্রলয় আসন্ন। এবং তাঁরা বিশ্ব পিতামাতার মিলনে বাধা দান করে। উচ্ছ্রিতদণ্ড রাগান্বিত শিব স্বর্গে উপগত তাঁর অস্খলিত বীর্য কোনও দেবতাকে ধারন করার নির্দেশ দিলে, অগ্নি সেই বীর্য ধারণ করে পান করেন। তবে কথাসরিৎসাগরে বলা হয়েছে শিব অগ্নিকে এটি পান করতে বাধ্য করেন। বেদে মিত্রা আর বরুণের বহু অন্তরঙ্গতার গল্প রয়েছে। ভগবৎপুরাণে এদের দুজনের এক অযোনিসম্ভূত সন্তানের কথা বলা হয়েছে। বরুণের বীর্য বল্মীক স্তুপের ওপর পড়লে বাল্মিকির জন্ম হয়। উর্বশীকে দেখে মিতা এবং বরুণ বীর্য স্খলন করে জলে পড়লে অগস্ত্য আর বশিষ্ঠ্যর জন্ম হয়।
আমাদের অপ্রকাশিত গল্প : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ১৫ এপ্রিল ২০১৯ | ১৬০৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
এই কথাটি বলেছিলেন আমাদের সবচেয়ে প্রাচীন গুরু। যিনি তার ধ্যানে পেয়েছিলেন কিছু জিনিস, যা তার মতে সত্যের কাছাকাছি। ওঃ ঈশ্বর! এসব কথা বাইরে প্রকাশ করার রীতি নেই। কিন্তু আমাদের ভেতরটাকে টুকরে খাচ্ছে অন্ধকারের বিষপোকা। যদিও বাইরে থেকে হয়ত বুঝা যাচ্ছে না তথাপি আমাদের ভেতর ঝাঁঝরা হয়ে যাচ্ছে, আমাদের অন্তর নিরন্তর অনুভব করছে এক ধরনের ভয়াবহ অস্বস্থি। তাই আমরা বলে ফেলছি যে, আমাদের সেই গুরু হঠাৎ একদিন তার ধ্যানে পেয়েছিলেন মানুষের আত্মার কোটা শেষ হয়ে গেছে। এখন আত্মাহীন মানুষেরা জন্ম নিবে। আমাদের পূর্বপুরুষেরা তার কথা শুনেছিলেন এবং তারা স্বভাবতই বিশ্বাস করেন নি। এমন উদ্ভট কথা কখনো কী হয় আর? তারা একে হেসে উড়িয়ে দেন, অতঃপর তারা রাগে ফেটে পড়েন এবং সেই মহান গুরুকে সবাই মিলে ধরে নিয়ে ফেলে দেন এক অন্ধকার কুয়ায়। আমাদের ধারনা তিনি সেই অন্ধকারে এখনো বসে আছেন, ধ্যানে আছেন।
বাতাসের সাথে আমি : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ০৬ জুন ২০১৯ | ১৩৭০ বার পঠিত
আমার কথা শেষ করতে পারলাম না। ওপাশ থেকে ঝাঁঝালো কণ্ঠ আমাকে বলতে লাগল, তোমার মত এত সেলফিশ আত্মকেন্দ্রিক লোক আমি দেখি নি। সারাদিনে একটা ফোন দেবার সময় তোমার হয় না। স্বাভাবিক কোন কিছুই তোমার মধ্যে নাই। স্বাভাবিক আবেগ, স্বাভাবিক মানুষের অনুভূতি। মিনিমাম দায়িত্বজ্ঞান বলতে যে জিনিস মানুষের থাকে, সেটাও তোমার নাই। আমি এতদিন, এতোটা দিন ধরে তোমাকে সহ্য করে গেছি। তোমার অন্যায়, তোমার এইসব পেইন দেয়া আমি সহ্য করে গেছি। কিন্তু আর নয়। এরকম কোন সম্পর্ক চলতে পারে না। এরকম কোন সম্পর্ক আসলে হয়ই না। তোমার সাথে হয়ত আমার কোন সম্পর্কই ছিল না। এবং থাকলে আজ থেকে, এই মুহুর্ত থেকে আর থাকবে না। একটা সেলফিশ, আত্মকেন্দ্রিক ইডিয়টের সাথে আমি কোন সম্পর্ক রাখতে চাই না, আজ সারাদিন ভেবে এটাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সুতরাং, তোমার সাথে আমার সব কিছু আজ, এই মুহুর্তে, এখানেই শেষ।
ওপাশ থেকে ফোন রেখে দিল নারী কণ্ঠ।
পালান সরকার - এক বইওলার একক চলা : দু'টি লেখা - হাসনাত কালাম সুহান ও দুর্জয় আশরাফুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | অপার বাংলা | ০৩ মার্চ ২০১৯ | ২৬১৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
পলান সরকার একার উদ্যোগে গড়ে তুলেছিলেন এক চলমান গ্রন্থাগার। ঝোলা ভর্তি বই নিয়ে মাইলের পর মাইল হেঁটে তিনি বই পৌঁছে দিতেন বাংলাদেশের গ্রামে গ্রামে, পাঠকের দরজায়। নিজের বই পড়ার অভ্যাস তিনি চারিয়ে দিয়েছিলেন প্রত্যন্তে ও প্রান্তে। থেমে গেল পলান সরকারের চলা, কিন্তু তাঁর তৈরী পাঠকদের মননে তাঁর কীর্তি থেকে যাবে, থেকে যাবে তাঁর স্বপ্ন। তিনি যে আলোকবর্তিকাটি জ্বালিয়ে দিয়েছেন আজীবনের সঞ্চয়ে ও শ্রমে, তা আলো দেবে ভবিষ্যতকে।
পলান সরকারকে নিয়ে দু'টি লেখা, লিখেছেন হাসনাত কালাম সুহান ও দুর্জয় আশরাফুল ইসলাম।
দু-চার কথায় : দু-চার জন
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০২ আগস্ট ২০১৬ | ১০৪৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
হুট করে লিখতে বললেই কি পাট করে প্রবন্ধ নেমে যায়? সব সময় হয়তো না। কিন্তু, কিছু কিছু বলার মতো কথা তো থাকেই যা অন্তত না বলে থাকা অনুচিত। অনুরোধ একান্তই ফেরাতে পারেননি যাঁরা, তাঁদের দু-কলম অনন্যোপায় লেখা এখানে একসঙ্গেই থাকল, নাহোক নিজেদের মধ্যে গল্পগুজব করার অছিলাতেই।
রোজাভা বিপ্লব এবং তাদের বৈকল্পিক শিক্ষা ব্যবস্থা : ইয়াসিন দুমান (অনুবাদঃ দেবব্রত চক্রবর্তী )
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৮ জানুয়ারি ২০১৬ | ৫৯২৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩২
রোজাভাঃ টাইগ্রিস এবং ইউফ্রেটিস নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে,সিরিয়ার উত্তরে এবং তুরস্কের সীমান্তে আবদুল্লা অচালানের রাষ্ট্রবিহীন গণতন্ত্র তত্ত্বের ভিত্তিতে গত ৬-৭ বছর ধরে যে অভূতপূর্ব গণতান্ত্রিক পরীক্ষা এবং এক বৈকল্পিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠছে সে সম্বন্ধে ইতিপূর্বে গুরুর ব্লগে দুটি পর্বে লেখা প্রকাশিত হয়েছে। আগের লেখাটির সময়সীমা ছিল ২০১২ সালের রোজাভা বিপ্লব শুরু হওয়ার সময় পর্যন্ত – রোজাভা বিষয়ক তৃতীয় পর্ব প্রকাশিত হওয়ার পূর্বে এবং রোজাভার সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগের সূত্রে কেবল মাত্র গুরুচন্ডা৯-র পাঠকদের উদ্দেশ্যে ইস্তাম্বুল থেকে রোজাভার ‘বৈকল্পিক’ শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে একটি লেখা পাঠিয়েছেন ‘ইয়াসিন দুমান’। ইয়াসিন দুমান বর্তমানে ইস্তাম্বুলে পি এইচ ডি ছাত্র, কুর্দিশ অ্যাক্টিভিস্ট এবং রোজাভার শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত – ইয়াসিন দুমানের লেখাটির অনুবাদ,লেখক পরিচিতি এবং ফুটনোট সহযোগে রইল আপনাদের উদ্দেশ্যে -পাঠক যদি এই বিষয়ে কোন প্রশ্ন রাখেন ( ইংরাজিতে রাখলে আমাকে কষ্ট করে অনুবাদ করতে হয়না) তাহলে লেখক যথাসম্ভব উত্তর দেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। আমরা যারা আমাদের বর্তমান সময়ের এই অসাধারণ উচ্চাভিলাষী সামাজিক পরীক্ষা নিরীক্ষা বিষয়ে আগ্রহী তারা এই সূত্রে রোজাভার সাথে একটি প্রত্যক্ষ যোগাযোগ,মত বিনিময় গড়ে তুলতে পারবেন বলে আশা রাখি।
ঠাকুরের সঙ্গে : শাহাদুজ্জামান
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ২৭ এপ্রিল ২০১৭ | ৯৫৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ১২
এরপর পিনাকীর বয়ান– দরজার ফাঁক দিয়ে তাকিয়ে দেখি একতালার বারান্দায় পাঞ্জাবী পরা লম্বা সাদা দাড়ি, টুপি মাথায় এক বুড়া লোক বসে পেপার পড়ছে। সেটা দেখে তো আমার ভয় বেড়ে গেল আরও। ভাবি এই হুজুর যদি এখন দেখে এক ধুতি পরা লোক তার বাড়িতে উঁকি ঝুঁকি মারছে, তাহলে না জানি কোন ঝামেলা বাঁধায়? আমি সাহস করে লোহার গেটে ধাক্কা দিই। দাড়ি, টুপি ভদ্রলোক পেপার হাতে নিয়েই বাগান পার হয়ে লোহার গেট খোলেন। আমাদের দেখে একটু কপাল কুচকান। আমি তাকে লম্বা করে একটা সালাম দেই– ‘আসসালামালাইকুম চাচা। উনি কোলকাতা থেকে এসেছেন, একসময় এই বাড়িটা উনার বাবার ছিল, বাড়িটা জাস্ট একটু দেখতে এসেছেন।’ বলেই আমি বেশ নার্ভাস থাকি। কে জানে ভদ্রলোক এই নিউইয়র্ক কিন্ডারগার্ডেনের দীনিয়াতের টিচার কিনা। ছুটির দিনে হয়তো একটু আরাম করে বসছেন পেপার পড়তে, সেইখানে এক লোক কোলকাতা থেকে এসে যদি বলে এই বাড়ি আমার ছিল, তাহলে তার ভালো লাগার কথা না। পুরা ব্যাপারটায় একটা গ্যাঞ্জাম লেগে যাবার সম্ভাবনা আছে।
খুচরো হিসেব : কৃষ্ণেন্দু মুখার্জ্জী
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ২৮ এপ্রিল ২০১৮ | ১১১০ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৩
পাঁচ মিনিট নয়, আধ ঘণ্টার মতো লাগল। জমাদার যখন রাস্তা থেকে রক্তের শেষ বিন্দুটি মুছে ফেলেছে, তখন অমিত বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিমি মতো দূরে। অনেকটা হাঁটা হয়েছে। আজ বাস চলবে না কারণ কিছুক্ষণের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় যাবে এই রাস্তা ধরে। আধ ঘণ্টা আগের থেকে প্রাইভেট গাড়ির যাতায়াতও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফুটপাথের খোঁদলে পা পড়ল অমিতের এবং মুখ থেকে চাপা আর্তনাদ বেরিয়ে এল একটা। গোড়ালির কাছে একটা ব্যথা, খুব পুরনো ব্যথা - বছর তেরোর পুরনো চোট। পায়ে পা জড়িয়ে পড়ে যাওয়ার অভিনয় করতে গিয়ে বেকায়দায় গোড়ালি মচকে গিয়েছিল। দলের হয়ে একটা পেনাল্টি আদায় হয়েছিল বটে, গোলটাও হয়েছিল কিন্তু ব্যথাটা ভুগিয়েছিল অনেকদিন। আজ দীর্ঘদিন পর আবার সেটা জানান দিয়েছে। গাছের তলায় একটা বেদীর মতন, সেখানে বসে পড়ল অমিত। একটু জিরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।
সহযাত্রী : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৫ এপ্রিল ২০১৮ | ২১১৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
এরপর আমার কেন জানি মনে হল তাকেও জিজ্ঞেস করা দরকার কোথায় যাচ্ছেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কোথায় যাচ্ছেন?ভদ্রলোক বললেন, রশিদপুর। এখানে এই জগন্নাথপুরে আসছিলাম এক কাজে কিন্তু কাজটা হয় নাই। বাবা, আপনার বাড়ি কি এই জায়গায়?জ্বি। আপনার বাড়ি?আমার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। গাড়ি চলতে শুরু করল। ভদ্রলোক নানা বিষয়ে প্রশ্ন করা শুরু করলেন। কী করি, দেশের বাইরে যাচ্ছি কি না, ইত্যাদি। দেশের বাইরে যাবার প্রশ্নটা তিনি করলেন কারণ ভদ্রলোক জানেন জগন্নাথপুর একটি প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। তার প্রশ্নের কারণে আমাকেও প্রশ্ন করতে হল, আপনি এখানে এসেছিলেন কোথায়?ভদ্রলোক বললেন, সে এক লম্বা কাহিনী। একটা গল্প বলি?বললাম, বলেন।
বংশগতি : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৭ অক্টোবর ২০১৮ | ২০০০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৭
স্যার, এইবার আমি আমার পিতার কথা বলব, আমার মনে হচ্ছে যে মানুষের জীবনের সাথে তার পিতার জীবন জড়িত, ফলে আমার বিষয়ে বলতে গেলে আমার পিতার কথা আসবে, আমার বিষয়ে বুঝতে আমার পিতার বিষয়ে বুঝতে হবে। আপনি কি মনে করেন এই ব্যাপারে? বলব কি স্যার?
হ্যাঁ, হ্যাঁ, বলুন।
আমার পিতার নাম ছিল আরশাদ মিয়া। তবে লোকে তাকে ডাকত কাবিল কবিরাজ নামে। তিন গ্রাম গ্রামান্তরে ঘুরে বেড়াইতেন আর অনেক অনেক লতাপাতা সংগ্রহ করতেন। আর আমাদের বাড়ির পাশে ছিল সামান্য ধান্য ক্ষেত। সেখানে চাষবাসও করতেন অল্প অল্প। আচ্ছা এই মুহুর্তে, এই ধান্য জমির কথা স্মরণে আসায় আমার দাদাজির কথা মনে হলো আমার। তিনি আমার পিতার পিতা। ফলে তিনিও আমার সাথে সংযুক্ত, তাই ধান্য জমি সংশ্লিষ্ট অদ্ভুত ঘটনাটি আমার বলতে ইচ্ছে হচ্ছে, বলব কি স্যার?
ওকে বলুন।
ফেসবুকে রবীন্দ্রনাথ বিষয়ক আরেকটি গবেষণা : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ২১ মে ২০১৫ | ১৪৯৬২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৮
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন চলে গেল। একজন রবীন্দ্র গবেষক হিসেবে কিছু একটা লেখা দরকার। আমার রবীন্দ্রগবেষণার শুরু ফেসবুকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপস্থিতি নিয়ে এক ধ্রুপদি গবেষণার মাধ্যমে যা ২০১১ সালের মে মাসে এখানেই প্রকাশিত হয়েছিল। ধ্রুপদী শব্দের অর্থ বিজ্ঞ পাঠকেরা নিশ্চয়ই জানেন কিন্তু যদি কেউ থেকে থাকেন যিনি জানেন না তার জন্য বলছি ধ্রুপদী শব্দের অর্থ হল গুরুগম্ভীর, চিরায়ত, ক্লাসিকাল ইত্যাদি। উল্লেখ্য, শব্দের অর্থ আমি এইমাত্র অনলাইন অভিধানের সাহায্য নিয়ে জানলাম। এর আগে শব্দটির সাথে পরিচয় ছিল কবি হেলাল হাফিজের কবিতার খাতিরে,
হয়তো তোমাকে হারিয়ে দিয়েছি
নয় তো গিয়েছি হেরে
থাক না ধ্রুপদী অস্পষ্টতা
কে কাকে গেলাম ছেড়ে।
সাত্তার সাহেব এবং একটি সবুজ ঝাঁকড়া আম গাছের নির্দিষ্ট কিছু দুঃখ : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ২৪ অক্টোবর ২০১৫ | ২০৫২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৭
সাত্তার সাহেব সামান্য শব্দহীন হাসি হাসলেন। আমাদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘পায়রা সম্পর্কিত তোমাদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা কি?”আমরা হঠাৎ এই প্রশ্নে বিভ্রান্ত হয়ে গেলাম। আমরা কোন উত্তর দিতে পারলাম না। এবং এক পর্যায়ে বললাম,” ক্ষমা করবেন। আমাদের পায়রা সম্পর্কিত নিজস্ব কোন চিন্তাভাবনা নেই।” সাত্তার সাহেব তার সিগারেটে শেষ টান দিয়ে তা ফেলে দিলেন এবং ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “পায়রা হচ্ছে পৃথিবীর আত্মার প্রতিচ্ছবি। প্রতিটি পায়রা আসলে পৃথিবীর আত্মার এক একটি অংশ। মানুষের জীবনের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে পায়রাদের জীবন। প্রতিটি মানুষের আত্মা আসলে এক একটি পায়রা অথবা কোন এক পায়রার প্রতিচ্ছবি যা পৃথিবীতে বসবাসরত এবং আকাশে উড্ডয়নরত অনেক অনেক পায়রার প্রভাবে প্রভাবান্বিত। এইসব পায়রাযুক্ত জীবন হয়ত যাপনকারী ব্যক্তি অনুভব করতে পারে না কিন্তু কারো অনুভব করা কিংবা না করার উপরে পৃথিবীর অমোঘ সত্যগুলোর কিছু আসে যায় না।”
শ্রমজীবি হাসপাতালঃ এক স্বাস্থ্য আন্দোলনের নাম : সীতাংশুকুমার ভাদুড়ী
বুলবুলভাজা | খবর : খবর্নয় | ২১ নভেম্বর ২০১১ | ৮০৯ বার পঠিত
নতুন কলেবরে শ্রমজীবী হাসপাতাল গড়ে তোলার পরিকল্পনাকে রূপায়িত করতে যাঁরা সাহায্য করতে চান তাঁরা প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন এই ঠিকানায় - ৫, জি টি রোড, বেলুড়, হাওড়া। ফোন - ২৬৫৪-১১৮১/২৮৭৭-০১১২। শ্রীরামপুরে অস্থায়ী কার্যালয় - অগ্রিমা অ্যাপার্টমেন্ট, ১৯ মুখার্জি পাড়া লেন (ইউ বি আইয়ের রিজিওনাল অফিসের পাশের রাস্তা)।
খোলা চিঠি : দুর্গা ঠাকুর
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৯ মার্চ ২০১০ | ৬৩০ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
দু:খের কারণগুলি আরো খুলিয়াই বলি তাহলে। এত বৎসর ধরিয়া বাঙালী আমার পূজা করিতেছে, অথচ মেয়েদের আশীর্বাদ করিয়া কেহ কখোনো বলে না "মা দুগ্গার মতন তেজী হও,সাহসী হও, শক্তিশালী হও'! পুরুষ যে বলিবে না ইহাতে বিস্ময়ের কিছু নাই। মেয়েরা দলে দলে শক্তিশালী হইলে তাহাদের ঘোর বিপদ, বলাই বাহুল্য।
ভূমা : কৌশিক ভাদুড়ি
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : উৎসব ২০১২ | ২৩ নভেম্বর ২০১২ | ১১৫২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
রুণাবৌদি বালিগঞ্জের মেয়ে. সহুরে জীবন যাপনের মধ্যে বড় হয়েছেন. হিন্দুস্তানপার্কের এই বাড়িটা দাদুর করা. ছোটবেলায় দাদুর কাছে গল্প শুনেছেন তখন নাকি হিন্দুস্তান পার্কে শেয়ালের ডাক শোনা যেত. আশেপাশে অনেকটা জায়গা নিয়ে একএকটা বাড়ি হচ্ছে. রাসবিহারী এভিন্যুর মাঝখান দিয়ে ট্রাম লাইন পাতা হচ্ছে. রাস্তার মাঝ বরাবর একটু উঁচু করে ঘেসো জমি, তার ওপর দিয়ে ট্রাম লাইন. এ জিনিস কলকাতায় তখন বিরল. রুণাবৌদি তাঁর জ্ঞান থেকেই দাদুকে শয্যাশায়ী দেখে এসেছেন. প্যারালিসিস হয়ে বিছানাতেই থাকতেন সব সময়, একটা চারদিকে জানলাওলা বিশাল ঘরে দাদু থাকতেন। ঘরের সামনে বারান্দার ওপর দরজা। বাকি তিন দিকেই বাগান, দাদু নিজের থাকার জন্যে ঘরটা এই ভাবেই প্ল্যান করে নিয়েছিলেন. রুণাবৌদিরা; বোনেরা মাঝে মাঝে দাদুর বিছানার পাশে এসে বসতেন. স্পষ্ট ভাবে দাদু কথা বলতে পারতেন না, কেমন এলিয়ে এলিয়ে বলতেন. তাই খুব বেশি কথা দাদুর সঙ্গে কখনও হয়েছে মনে করতে পারেন না. দাদু মারা যান তখন রুণার বয়স সাত. খুব ছোটবেলার কথাও ওনার মনে আছে কিছু কিছু.
বাবার কথা ছোটবেলায় কেউ কিছু বলতে চাইত না. কালেভদ্রে বাড়িতে আত্মীয়রা কেউ কেউ আসত. মা বলে দিতেন: ইনি তোমার অমুক পিসি বা জ্যেঠু. কিন্তু পরের বার যখন তাঁর সঙ্গে দেখা হত, সে মুখ একদম অচেনা লাগত বৌদির.
নোম্যাড : কৌশিক ভাদুড়ী.
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৬ অক্টোবর ২০১২ | ৮৮৬ বার পঠিত
এভাবে চলতে চলতে একদিন চাঞ্চল্যকর একটি তথ্য প্রকাশ পায়। ফুটোস্কোপ যেহেতু পূর্বজন্মের উদ্ভাবিত আগলপাগল তত্বের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত এবং তদানিন্তন প্রযুক্তি যথেষ্ট কুশলী নয়, ওটিতে ব্যবহৃত একটি লেন্স যথেষ্ট মজবুত ভাবে লাগেনি, ফলে ওটি খসে যায়। পরজন্মের যন্ত্র ব্যাপারি পরজন্মোচিত তত্পরতায় লেন্সের স্থলে একটি ভাঙ্গা আয়নার টুকরো বসিয়ে দেয়ে। পরজন্মের অবজার্ভার পরজন্মোচিত আচরনবিধি অনুসারে আনুপুঙ্খিক নিরীক্ষণ ছাড়াই যন্ত্রটি বীক্ষণের কাজে ব্যবহার করেন। ফলত মননগ্রামটি পরজন্মের প্রতিবিম্ব হয়ে পড়ে। এই অবসরে কটি জীববৈজ্ঞানিক সংকেত পরিচিত হওয়া যাক।
ক) হোমো স্যাপিয়েন্স স্যাপিয়েন্স : হসস, খ) হোমো স্যাপিয়েন্স সুপিরীয়রো : হসসু, গ)পূর্ব জন্ম : পূজ, ঘ)পরজন্ম : পজ।
যাই হোক হোসসু-এর আবির্ভাব বিষয়ে সুমেরিকার জ্ঞানী সমাজে কোনোও দ্বন্দ্ব নেই, শুধু নথি হিসেবে মননগ্রামের একটি অনুলিপি রাখা দরকার। ডেড লাইনও নির্দ্দিষ্টকৃত। ফুটোস্কোপ মেরামতির পরিকল্পনাও শেষ। সে বিশদ অন্যত্র। ইতিমধ্যে পূজ-র সাপুরে খবরওলা যে খেলা দেখাতে এসে পজ-কে খবর সরবরাহ করত, পজর আদালত তাকে জেলে পাঠিয়েছেন। নির্বিষ রাখা পজ-এ জামিন অযোগ্য অপরাধ। কার্য্যত ঝাঁপি বন্ধ আজ।
উদ্বাস্তু হওয়ার ইতিকথা : ইন্দুবরণ গাঙ্গুলী
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৯ জানুয়ারি ২০২০ | ২২৯২ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
খণ্ডিত ভারতের স্বাধীনতার কথা শুনে তৎকালীন বাংলার মুসলিম নেতাদের একাংশের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়েছিল, এই ভেবে যে, পূর্ব বাংলা পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হলে বাঙালি মুসলমানদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে পশ্চিম পাকিস্তানের প্রশাসকগণ। সুতরাং বাঙালি মুসলমানের পরাধীনতা থেকেই যাবে। তাই তৎকালীন বাংলার প্রধানমন্ত্রী সইদ সোরহাবর্দি, বাংলা মুসলিম লিগের সম্পাদক জনাব আবুল হাসিম প্রমুখ নেতা প্রস্তাব করেন, ভারতকে দুই ভাগ নয়, তিন ভাগে ভাগ করা হোক, যথা পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশ। মোদ্দা কথা, বঙ্গভঙ্গ বন্ধ করে, বাংলাকে একটি স্বতন্ত্র স্বাধীন দেশে পরিণত করা হোক। এ প্রস্তাব নিয়ে তারা সর্বশ্রী শরৎচন্দ্র বসু, কিরণশংকর রায় ও সত্য বকসীর সাথে বহু বৈঠক করেন। এমনকি স্বাধীন বাংলার সংবিধান কী হবে, তার জন্য একটি সাব কমিটিও গড়া হয়। শরৎচন্দ্র বসু এ বিষয়ে গান্ধিজির সাথে সংযোগ স্থাপন করেন। গান্ধিজি বঙ্গভঙ্গ বন্ধ করার এ প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেন বটে, কিন্তু কংগ্রেস সভাপতি আচার্য কৃপালনী ও ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির বিরোধিতায় শেষ পর্যন্ত এ প্রস্তাব ভেস্তে যায়। এ সব ঘটনাই ১৯৪৬ সনের মে মাসের।
লকডাউন : দক্ষিণ কলকাতার না-মানুষদের সঙ্গে কথাবার্তা : অর্ক ভাদুড়ী
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০২ মে ২০২০ | ৩৫১৫ বার পঠিত
"রিকশ নিয়ে না বেরিয়ে উপায় নেই। সরকার চাল দিচ্ছে, কিন্তু তাতে মাস চলবে না৷ তাই দু'বেলাই বেরচ্ছি। পুলিশ দেখতে পেলে কখনও কখনও হাওয়া খুলে দিচ্ছে, মারছে, আবার টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে হাওয়া ভরে নিচ্ছি।" সংক্রমণের বিষয়ে বললেন, "হলে হবে। কী আর করা যাবে! এমনিও তো বেঁচে থাকতে কষ্ট হচ্ছে, মরে গেলে যাব। অসুবিধা কী!" আরও বললেন, "খিদেতে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। আপনি তিনদিন না খেয়ে থাকলে এমনিই অসুখে পড়বেন। পেট ভরা থাকলে ভাইরাস কিছু করতে পারবে না। খালি পেটে থাকলে ভাইরাস আরও কাহিল করে দেবে। ঘরে থাকলে না খেতে পেয়ে এমনিই দুর্বল হয়ে যাব।"
লাশের পরে লাশ : শুভেন্দু দেবনাথ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০২ মে ২০২০ | ৩৪৪৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
তিনি জানবেন না তার মজবুত বাড়ির ভিত টিমটি বার দিয়ে নয় কিছু মানুষের বুকের হাড় দিয়ে তৈরি। কিংবা একদিন ওই ধাপার মাঠেই গড়ে উঠবে বিলাসবহুল শপিং মল। আমরা যাব, ব্র্যান্ডেড জিন্স কিনব, মাল্টিপ্লেক্সে বান্ধবী অথবা বউয়ের হাত ধরে পপকর্ণ খেতে খেতে কোনো রিয়েলেস্টিক সিনেমা দেখব, আর ভাবব বিষাদে ডুবে যাব, আর ওই মাল্টিপ্লেক্সের ভিতের ভেতর শুয়ে থাকা মানুষগুলো হাসবে। অথবা ওই ধাপার মাঠ যেমন আছে তেমনিই পড়ে থাকবে। এখন যেমন ওই মাঠের যেখানে সেখানে কিছু নেশাড়িদের দেখতে পাওয়া যায় গাঁজা গাছ খুঁজতে, তেমনই ওই লাশের সারে উর্বর জমিতে নিজে নিজেই জন্মাবে কিছু গাঁজা গাছ। আমরা যেমন যেতাম একসময়, তেমনি কোনো তরুণ কবি ও লেখক ওখান থেকে তুলে আনবে ফুরফুরে সতেজ গাঁজা গাছের চারা, সেই গাছের পাতায় নেশা করবে। মৃত্যুর গন্ধ মাখা ওই তামাকে নেশা আরো বেশি হবে, তারপর নেশাতুর কলমে লিখবে...
হামিদুর রহমানের নোটবুক থেকে : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ২৫ মে ২০২০ | ২৮৮১ বার পঠিত
জীবনে এতো রহস্য কেন এটা নিয়ে আমি ভেবেছি। আমার এই লেখাগুলি হয়ত সেইসব রহস্য কিনারা করার এক চেষ্টা। আমি একসময় খুবই যুক্তি দিয়ে চিন্তা করতাম। সেইসময়ে, বা তার কিছু পরে রফিকুন্নবীর সাথে আমার দেখা। এরপর থেকে রহস্য নিয়ে আমার ভাবনা চিন্তার অনেক বদল হয়েছে।
রফিকুন্নবী বলেন, কী মিয়া এইসব কী কও! মিস্ট্রি থাকব না? তাইলে থাকলো কী! মিস্ট্রি ইজ দি ইন্ট্রিগ্রাল পার্ট, ইন্ট্রিগ্রাল বুঝো তো, মানেই হইল ধরো মূল একটা জিনিস, অব লাইফ। তাই মিস্ট্রি কখনো সলভ হয় না।
আমি বললাম, সলভ হয় তো। অনেক হয়। শার্লক হোমসীয় কার্যকলাপ হয় তো।
রফিকুন্নবী তখন বিরক্তির সাথে আমার কথা উড়িয়ে দেন। বলেন, ধুর মিয়া! মিস্ট্রি কখনো সলভ হয় না, একটা গেলে ঐ জায়গায় আরেকটা আসে। সলভ দিয়া মিস্ট্রি বিষয়ে ভাবা হইল একটা ফান্ডামেন্টাল মিসটেক। ভাববা রিপ্লেসমেন্ট দিয়া। মানে ঐ রহস্য সইরা কোনটা আসলো।
ঈদে যাদের কথা মনে পড়ছে : অর্ক ভাদুড়ী
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৫ মে ২০২০ | ৫৯০৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ১১
ঈদ বলতে বুঝি, কয়েকজনের বাড়িতে বচ্ছরকার নেমন্তন্ন। বিরিয়ানি, সেমাই, হালিম। ব্যস। আর রইল জাকারিয়া স্ট্রিট। আমাদের সেকুলারিজমের প্র্যাকটিক্যাল খাতা।
ঈদ নিয়ে তাই আমার বলার কিছু নেই। করোনা, লকডাউন আর সাইক্লোনে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া সময়ে তেমন করে ঈদ এলই বা আর কই! আমি বরং বলি কয়েকজন খুচরো মানুষের গল্প, যাঁদের আজ, এই ঈদের সন্ধেয় আচমকা মন পড়ছে, অকারণেই। একজন বর্ণহিন্দুর চোখ দূর থেকে দেখেছে যে 'অপর'দের, তাদেরই কয়েকজন।
কোভিড-১৯ ও CO2 অবনমনের প্রত্যাশা—প্রাপ্তি নাকি প্রত্যাখ্যান : অর্ধেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১২ জুন ২০২০ | ৩০২০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
মনে রাখা দরকার, কোভিড কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, এগুলো কিন্তু আসলে দুনিয়াব্যাপী বাজার-অর্থনীতির পন্থায় পালটে যাওয়া জলবায়ুর ফলাফল। অর্থাৎ, রোগের সিম্পটম্স্ মাত্র। লকডাউন হোক, অতিমারির কারণের বিরুদ্ধে, সিম্পটম্স্ বা ফলাফলের বিরুদ্ধে নয়। পৃথিবীতে মানবজাতির অস্তিত্বরক্ষার জন্য মানবজাতিকেই আবার ভাবা প্রাকটিস করতে হবে। সুতরাং, তিনমাসের থমকে থাকা সভ্যতার গতির মধ্যে যখন দীর্ঘ প্রত্যাশিত প্রাপ্তির ভাঁড়ার পূর্ণ হতে শুরু করেছে, তখন ক্ষমতাবানদের সঙ্গে এঁটে ওঠার লড়াইয়ে কে বিজয়ী হয় সেটাই দেখার—সবুজ-নীল বাসযোগ্য পৃথিবী নাকি তমসাচ্ছন্ন বাজার-অর্থনীতি নিয়ন্ত্রিত দুনিয়াদারি।
সময়ের সাহসী সন্তান' যে সংবাদকর্মী : অর্ক ভাদুড়ী
বুলবুলভাজা | খবর : টাটকা খবর | ২০ জুলাই ২০২০ | ২৬৪১ বার পঠিত | মন্তব্য : ৮
এই সময়টা অদ্ভুত। এমন অনেককিছু চারপাশে ঘটে চলেছে, যা হয়তো ঘটার কথা ছিল না। এমন অনেক মানুষের সঙ্গে আলাপ হয়ে যাচ্ছে, যাঁদের সঙ্গে হয়তো আলাপ হত না কোনওদিন। চোখের সামনে বদলে যাচ্ছেন মানুষ। পাহাড়ের মতো বড় হয়ে যাচ্ছেন কেউ, কারও ওজন হয়ে যাচ্ছে পাখির পালকের মতো হাল্কা।রাস্তাঘাট, চেনা শহর, পরিচিত মুখ- বদলে যাচ্ছে সবকিছুই। অন্ধকার বাড়ছে। তাই প্রতীকদার মতো আকাশপ্রদীপদের পাশে পাশে থাকাটা জরুরি।
উড়ান : রোদ্দুর মিত্র
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ২১ জুলাই ২০২০ | ১৫৪১ বার পঠিত
বৃষ্টির তেজ প্রচণ্ড রকমের বেড়ে গেছে এই কয়েক মিনিটে। ঝোড়ো হাওয়ার সাথে শিরশিরে শব্দ, হুড়মুড় করে নেমে এসেছে হারুর ছাদে। বুকটা ক্ষণে ক্ষণেই কেঁপে উঠছে, একটু ভয় ভয়ও লাগছে বটে, কিন্তু ছাদ থেকে হারু কিছুতেই নামবে না আজকে। ওর সব স্বপ্ন, ছেলেবেলায় অঙ্ক খাতার পিছনে সুপারহিরোদের ছবি, ব্যাটম্যানের স্কার্ফ, এক এক করে নষ্ট হয়ে যাবে। বেলগাছের ডালে ঝুলে থাকা বাবার মুখটাও অস্পষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই সুযোগ। চোখ বন্ধ করে ঝড়ের মধ্যে শরীরটা ভাসিয়ে দিলেই কেল্লাফতে। একজোড়া ডানা ঠিক খুঁজে নেবে হারুকে। সে ভিজছে, অনবরত ভিজবে অসময়ের বৃষ্টিতে। মায়ের থেকে লুকোনো কান্না, ওষুধের দোকানে ধার, অপমান, চড়া সুদে ফিরিয়ে দেওয়ার পালা। আর তারপর ম্যাজিক!
প্যানডেমিকমুক্ত পৃথিবী বলে সত্যিই যে কিছু হয় না আর : অর্ধেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৯ জুলাই ২০২০ | ৪৬৪৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
পার্মাফ্রস্ট বলে প্রকৃতিতে একটা ব্যাপার আছে যা স্থলভাগের প্রায় ২৪% এলাকা জুড়ে এর অবস্থান করে । পার্মাফ্রস্ট মানে মাটির নিচে সহস্র-অযুত বছর ধরে জমে থাকা চিরবরফ অঞ্চল। এই হিম-মৃত্তিকাই ধারণ করে আছে মানব সভ্যতার আদিম অস্তিত্বকে। এর বুকেই দাফন আছে বরফ-যুগের প্রাণীদের হাড়-কঙ্কাল, এমনকি কিছু গাছপালার অংশও। এগুলি এতটাই গভীর এবং পুরু বরফের স্তর যে, সাইবেরিয় অঞ্চলের বাসিন্দারা মাটি খুঁড়ে ঘর বানিয়ে তাতে শার্কের মত বৃহৎ প্রানীর মাংস অব্দি সংরক্ষণ করে বছরের পর বছর ধরে । বিজ্ঞানীরা বলছেন যে এই বরফও নাকি এখন দ্রুত গলে যাচ্ছে । কেননা, বিশ্ব-উষ্ণায়ণের জেরে এই সব অঞ্চলের তাপমাত্রা বাড়ছে লাগামছাড়া হারে। ২৩ জুন, ২০২০ জানা গেল যে, রাশিয়ার মস্কো থেকে প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত উত্তর মেরুবৃত্তের অন্যতম শীতলতম এলাকা ভেরখোয়ানস্ক শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস । এখানে সচরাচর লোকজন বছরের বেশরভাগ সময়ে মাইনাস ৫০ ডিগ্রির তাপমাত্রায় জীবনযাপন করতে অভ্যস্ত । বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই অংশে অনেক দ্রুত বরফ গলে যাচ্ছে, তাও ধীরে ধীরে নয়, প্রায় রাতারাতি।
২৯ জুলাই : ফুটবল ছাড়িয়ে : অর্ক ভাদুড়ী
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৯ জুলাই ২০২০ | ১৯২৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া ইলাসট্রেটেড উইকলি লিখছে, "বৃহস্পতি এবং শুক্রবার সর্বত্র বাঙালিরা মাথা উঁচু করে সগর্বে চলাফেরা করছিলেন। ট্রামে, অফিসে, রাস্তার মোড়ে- সর্বত্র বাঙালিবাবুদের আলোচ্য বিষয় কেবল মোহনবাগান। খালি পায়ে খেলে বাঙালি ছেলেদের বুট পায়ে দেওয়া ব্রিটিশ সৈন্যদের হারিয়ে দেওয়া গল্প।" অন্যদিকে ইংরেজরা একেবারেই ভাল চোখে দেখেননি মোহনবাগানের এই আচমকা উত্থান। ৪ অগস্টের হিতবাদী পত্রিকা জানাচ্ছে, সেমিফাইনালের দিন সন্ধ্যায় একই ট্রেনের বগিতে ভ্রমণরত একজন ভারতীয় খ্রিস্টান সরল মনে ইংরেজ সহযাত্রীর কাছে খেলার ফল জানতে চান। উত্তরে ইংরেজটি ওই ভারতীয় ভদ্রলোকের গালে সজোরে একটি চড় কষিয়ে দেন।
লকডাউনে ব্যতিক্রমী হকারটাউনে : বিশ্বেন্দু নন্দ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : সমাজ | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ২৩৫৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
আমরা যেন মাথায় রাখি, বঙ্গভাগের পর বছরের পর বছর ভূমিভাগের ব্যথা সহ্য করে বাংলার নানান অঞ্চল উদ্বাস্তুদের আত্মীকরণের লড়াই চালাচ্ছিল, সে সময় বিপুল সংখ্যক প্রায় সব হারিয়ে আসা মানুষ পথকে বেছে নিয়েছিলেন জীবিকার পাথেয় হিসেবে। কলকাতা, অন্যান্য অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল শহুরে নিম্নবিত্তদের জন্যে বিপুল স্বাভাবিক বাজার এবং ক্রমশ কলকাতার কপালে উঠেছিল শস্তাতম শহরের তকমা।
আগস্ট -গণতন্ত্রের জন্মসুখ নাকি দুটি ঐহিক সমাধির স্মৃতি ? (পর্ব ১) : অর্ধেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ২৬১৫ বার পঠিত
পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের ভিত-প্রতিষ্ঠা হয়েছিল অগণতান্ত্রিকতার মন্ত্রে । স্বাধীনতার শর্তে দেশভাগের ঘোষণা ছিল জনমতের বিপরীতে গৃহীত একটি ব্যক্তিগত অহং পরিতৃপ্তকারী সিদ্ধান্ত। তাই নিরীহ মানুষের রক্তগঙ্গার বিনিময়ে এসেছিল র্যাডক্লিফ-লাইন। একদিকে হিন্দু-শিখ-মুসলমানের লাশের পাহাড়ের ওপরে দাঁড়িয়ে সেদিন উত্তোলিত হয়েছিল ত্রিরঙা পতাকা, বর্ষিত হয়েছিল রক্তমাখা ফুল। ‘মহাত্মা গান্ধী কি জয়’ চিৎকারে ধ্বনিত হয়েছিল আকাশ-বাতাস । অন্যদিকে, গান্ধীজী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর একটি প্রস্তাবের উত্তরে বলেছিলেন, “চতুর্দিকে লোকে না খেতে পেয়ে মরছে । এই ভয়াবহ দুর্দশার মাঝখানে আপনি উৎসবের আয়োজন করতে চান?” সুতরাং, ঠোকাঠুকি লেগেছিলই শুরুতেই । আসলে, যে কোনও অগণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠা গণতন্ত্রমতে চলতে পারে না ।
আগস্ট -গণতন্ত্রের জন্মসুখ নাকি দুটি ঐহিক সমাধির স্মৃতি ? (পর্ব ২ ) : অর্ধেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ০৫ অক্টোবর ২০২০ | ২২২৬ বার পঠিত
আজকের গণতন্ত্র হল, বেশিরভাগ মানুষকে বেশিরভাগ সময়ের জন্য বোকা বানিয়ে রাখা আর সংখ্যাগরিষ্ঠতার মানদণ্ডে সংসদে অধিষ্ঠিত হওয়া । অনেকে বলতে পারেন, তাহলে সরকার পরিবর্তন হচ্ছে কী করে ? হচ্ছে, কেননা যে পক্ষ যখন সফলভাবে মানুষকে বোকা বানাতে পারছে তখন তার দিকে পালাবদলও হচ্ছে । এখানে বোকা বানানোটা আসল, কে বানালো, কীভাবে বানালো সেটা বড় কথা নয় । মাঝে মাঝে তো সম্পূর্ণ বিপরীত মতাদর্শের দলগুলির মধ্যেও রফা হয়ে যায়, তারা একা না পেরে উঠলে একত্রে বোকা বানানোর পরিকল্পনা করে । এটা কিছুটা ধূমপান-মদ্যপান কিংবা টেলিভিশনের মত ব্যাপার। সকলেই জানে স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর কিন্তু তবুও সেটাই এদেশের জিডিপি নির্ধারক । সকলেই জানে টিভি বোকাবাক্স, তবুও সে সন্ধ্যেবেলার বৈঠকী আকচা-আকচির মধ্যে নিজের সুবিধাবাদের পক্ষ নির্বাচনে আত্মসমর্পণ করবে । বড় মুখ করে বলবে, গণতন্ত্র উদযাপনের এর চেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরণ আর কী আছে যেখানে বিরোধীরা এসে খোলাখুলি তুলোধুনা করতে পারছে সরকারকে। সে বুঝবেই না, যারা পারছে তাদের মধ্যে সে নিজে পড়ে না । ভাববে না, কেন পড়ে না ? সে শুধু জানে, তার অংশগ্রহণে বিপদ আছে । আর এই নাকচ করতে না পারাটাই আজকের গণতন্ত্রের বৃহত্তম বিপদ ।
আগস্ট -গণতন্ত্রের জন্মসুখ নাকি দুটি ঐহিক সমাধির স্মৃতি ? (পর্ব ৩) : অর্ধেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ১১ অক্টোবর ২০২০ | ১৭৪৯ বার পঠিত
ভারতবর্ষের সংবিধান যখন লেখা হয় তখন হাতে ছিল আমেরিকা (১৭৭৬ সাল), আয়ারল্যান্ড(১৯৩৭ সাল) এবং ইউনাইটেড নেশন চার্টারের (১৯৪৫ সাল) অন্তিম পান্ডুলিপি । ফলে ভারতের সংবিধান পাশ্চাত্য প্রভাবে যে ভাষায় লেখা হল তা আধুনিকতম গণতন্ত্রের উচ্চারণ করেছিল ঠিকই । কিন্তু, ভারতবর্ষের ভাবমননে অধিষ্ঠিত ছিল সনাতনী ধারার প্রবাহ । যে ধারা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য বা সম্রাট অশোক কিংবা আকবর এঁদের মধ্যেও একটা গণতান্ত্রিক মনোভঙ্গির স্বকীয়তার ছাপ রেখেছিল, কেননা এঁরা গায়ের জোরের চেয়ে ন্যায়পরায়ণতাকে বেশি মর্যাদা দিতেন । গান্ধীজীর মধ্যেও এই ধারার একটা প্রভাব দেখা যায় যখন তিনি কংগ্রেসকে বলেন, “স্বাধীনতা কংগ্রেস পায়নি, পেয়েছে ভারত । মন্ত্রিসভা গঠন করতে হবে সবচেয়ে দক্ষ লোকেদের দিয়ে, তাঁরা যে-পার্টিরই লোক হন”। তাই যতই নেহেরুর প্রধানমন্ত্রীত্ব বিনা-গণনির্বাচনে স্থির হোক স্বাধীনতা-উত্তর ভারতের ক্ষমতার ভাগ-বাঁটোয়ারায় ডাক পড়েছিল সকলের । এমনকি আর. কে. ষন্মুখম চেট্টি, বি. আর. আম্বেডকর ও শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির মত ব্রিটিশ-অনুরাগী মানুষেদেরও। গান্ধীজীর অভিভাবকত্বে মন্ত্রীসভা গঠনে উদারতায় ত্রুটি ছিল না, অন্তরে শুধু অভাব ছিল গণতান্ত্রিকতার। কিন্তু পরবর্তীকালে সেই ঔদার্যটুকুর কথাও বেমালুম ভুলে গিয়ে জাতীয়তাবাদের আড়ালে বর্বরতার রাজত্ব কায়েম হয়েছে । নেতৃবর্গের মধ্যে এক ধরণের অদ্ভুত প্রবণতা দেখা গেছে ও যাচ্ছে - পথপ্রদর্শকের ভূমিকা ছেড়ে ক্ষমতালোভী রক্তচক্ষু বাহুবলীর ভূমিকায় উত্তরণ ।
একবার দাঁড়াও বন্ধু এবং : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : উৎসব | ১৪ অক্টোবর ২০২০ | ৪৬২২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৯
টেবিলে আমার স্ত্রী সরাসরি আমার দিকে তাকিয়ে ঠান্ডা স্বরে জিজ্ঞেস করল, “শ্রাবন্তী কে?”
আমি অবাক হয়ে গেলাম এই প্রশ্নে। আমিও জিজ্ঞেস করলাম, “শ্রাবন্তী কে?”
এবং এরপরেই আমার মনে পড়ল শ্রাবন্তী কে।
এ নিয়ে আমাদের কথা কাটাকাটি হতে লাগল। আমি আমার বউকে বোঝাতে পারছিলাম না যে শ্রাবন্তী আমার লেখার একটা চরিত্র।
লেখার ড্রাফট দেখিয়েও আমি তাকে বিশ্বাস করাতে পারলাম না।
সে বলল, অনেকবার সে বেইজমেন্টে এসে দেখেছে আমি এই মেয়ের সাথে কথা বলছি।
তার কথা মিথ্যে নয়। আমি এরকম অনেক কথা বলেছি ওই মেয়ের সাথে। এবং সৎ ভাবে বলতে গেলে বলতে হয়, ওই মেয়ের প্রতি আমার বড়ো রকম দুর্বলতা তৈরি হয়েছে। কারণ সে ঠিক আমার মনের মতো। এটা কি আমার লেখার চরিত্র সেই জন্যে? কেবল লেখার চরিত্র হলে সে কীভাবে উঠে আসবে? এইভাবে হাসবে, আর আমার পাশে বসে আমারই লেখা নিয়ে এমন সব কথা বলবে যা আমি নিজেও কখনও ভাবিনি? এসব নিয়ে আমি নিজেও দ্বিধায় ছিলাম।
এর মধ্যে শুরু হল বউয়ের সাথে ঝামেলা।
বেণীর সঙ্গে মাথা : বিশ্বেন্দু নন্দ
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ | ৪৫৭৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ২৬
আমরা কারিগর ব্যবস্থার মানুষেরা, বড় কৃষক বা কুলাক আর কর্পোরেট কৃষকের মধ্যে মৌলিক ভেদ করি। কুলাকেরা গ্রামের মাটিতে থাকে। সে বৃহত্তর গ্রাম সমাজের অংশ, গ্রামের ওঠাপড়া, অন্যান্য সমাজের ভাল থাকা মন্দ থাকায় তার যায় আসে, গ্রামের কারিগরদের, তার কৃষির কাজের অঙ্গাঙ্গী হাতিয়ার। সে সাধারণত একফসলি চাষ করে না – তাই সামগ্রিকভাবে যান্ত্রিক পুঁজিনির্ভর কৃষি তার পথ নয়। তার উৎপন্ন ফসলের বাজার গ্রামে বা তার আশে পাশে। তার মূল লক্ষ্য বিদেশের বাজার নয়, স্থানীয় বাজার, উদ্বৃত্ত সে বিদেশে পাঠায়। কিন্তু কর্পোরেট কৃষকেরা দেশিয় চাষের জোর, তার মৌলিকতা, ফসল বৈচিত্র বিষয়ে চরম উদাসীন।
সুশান্ত সিংহ রাজপুত: বৃহৎ গ্রন্থনির্মাণ পর্বের একটি অক্ষর : অর্ধেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : সমাজ | ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ৩০১২ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
প্লেটো থেকে হিউম অবধি সকলেই প্রায় নানা আঙ্গিকে আত্মহত্যার আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক দিকগুলি নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল আত্মহত্যার মনস্তত্ত্বের দিকটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা। যুগে যুগে আত্মহত্যার আশ্রয় নিতে দেখা গেছে এমন বহু মানুষকে যাদের জীবনে আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক প্রভাবগুলির প্রতিকূলতা প্রায় কিছুই ছিল না। তবুও, তাঁরা সে পথ বেছে নিয়েছিলেন। সুতরাং, আত্মহত্যার অন্তরালে যে কারণের বৈপরীত্য, ব্যাপকতা ও দ্বন্দ্বময়তা দেখা যায় তা শুধুমাত্র মনস্তত্ত্বের আঙ্গিকেই সুবিচার লাভ করে।
বদলে যাওয়া নন্দীগ্রামে : স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | খবর : টাটকা খবর | ১৫ মার্চ ২০২১ | ৪০২৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
শুভেন্দুর মূল তাস, যা বোঝা গেল দুইটি। এক, নন্দীগ্রামে মমতা বহিরাগত। দুই, সাম্প্রদায়িক বিভাজন। এই এলাকায় গত বছর দশেক ধরে আরএসএস-এর নানা সংগঠন তাদের প্রভাব বিস্তার করেছে। ফলে একটা 'মুসলিম আগ্রাসন' সংক্রান্ত টেনশন এমনিতেই আছে। শুভেন্দু অধিকারীর সাম্প্রতিক সব সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বক্তৃতা সেই আগুনকে আরও উস্কে দিয়েছে।
নন্দীগ্রামের জনবিন্যাসের অঙ্কে চোখ বোলালে দেখা যাচ্ছে ওখানে ৩০/৩৪ শতাংশ মুসলিম ভোট আছে বলে যে আলোচনা চলছে তা একটু বাড়াবাড়ি। নন্দীগ্রাম বিধানসভা গঠিত নন্দীগ্রাম ১ ও ২ ব্লক মিলিয়ে। ২০১১-র জনগণনা অনুযায়ী এই দুই ব্লক মিলিয়ে মোট ৩৩১,০৫৪ জনসংখ্যার ২৪৪,৬৬৭ জন, অর্থাৎ ৭৩.৯৬% হিন্দু, এর মধ্যে ৫৪,৫০৩ (১৬.৪৬%) জন তপসিলি জাতি ভুক্ত। আর মুসলিম জনসংখ্যা ৮৫,৬৯৬, বা ২৫.৮৮%।
সিম্পসন’স প্যারাডক্স : যদুবাবু
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : শিক্ষা | ১৭ এপ্রিল ২০২১ | ৭৩৮৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪৬
সিম্পসন’স প্যারাডক্স ‘অমনিপ্রেজেন্ট’, কাজেই মোলাকাত তার সাথে হবেই, জানতে বা অজান্তে … তবে আশা এই যে, একবার গল্পের মত করে ব্যাপার-টা বুঝে নিলে তাকে দেখলে আঁতকে উঠবেন না। বরং একটা উদাহরণ মনে মনে গেঁতে নিন, কখন কোথায় চক-ডাস্টার হাতে জ্ঞানের গোঁসাই হয়ে ট্যান দিতে হবে কেউ বলতে পেরেছে?
ব্লাড টেস্ট, প্রসিকিউটর’স ফ্যালাসি ও ওয়ান্ডার উওম্যানের ল্যাসো – এজলাসে Bayes-বাবু : যদুবাবু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : স্বাস্থ্য | ০৮ মে ২০২১ | ৪২২১ বার পঠিত | মন্তব্য : ২৪
ও-জে-সিম্পসন নিজের স্ত্রীকে খুন করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন, বহুদিন ধরে বহুল-চর্চিত ট্রায়াল হয় তার, সে ট্রায়ালের সম্প্রচার হয় সারা আমেরিকা জুড়ে টেলিভিশনে। এবং আশ্চর্যজনকভাবে, প্রথমবার ট্রায়ালে গুচ্ছ গুচ্ছ প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও ছাড় পেয়ে যান ওজে। প্রসিকিউশন প্রমাণ এনে দেন ওজে নিজের স্ত্রীকে মারধোর করতেন, কিন্তু ডিফেন্স অ্যাটর্নি অ্যালান ডেরশোউইজ সওয়ালে বলেছিলেন, তাতে কী? প্রতি ২৫০০-এ নির্যাতনকারীর ১ জন খুন করেন শেষমেশ। জুরির লোকেরা একটু বেইজ থিয়োরেম জানলেই দেখতে পেতেন এই তথ্য বরং প্রমাণ করে যে ওজে সিম্পসনের দোষী হওয়ার সম্ভাবনা ৯০% এর উপরে!
একদা এক রাত্রি : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : ইদের কড়চা | ২৮ মে ২০২১ | ২৬১৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
আমি ঘুরে তাকালাম। টিল্ডা সিগারেট ফুঁকছে। তার গায়ে কোন কাপড় নেই। বিছানার চাদর মেঝেতে গড়াগড়ি খায়। ধোঁয়া তার মুখ ঢেকে দিচ্ছে। আমি কাঁপা কণ্ঠে বললাম, কিন্তু আমি যে স্পষ্ট দেখলাম? টিল্ডা বলল, সে আসে। কারণ এইরকম কিছু তার মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত ছিল। যখন ওইদিনের মত পরিস্থিতি তৈরি হয় এখানে, যেন সময়ের পুনরাবৃত্তি হয়, তখন সে আসে, আবার চলে যায়। আমি দেখতে পাই না। কিন্তু আমার ভাবতে ভাল লাগে যে সে আমার কাছাকাছি আছে। অন্তত এইভাবে হলেও।
সলিলদা : অন্য শিক্ষাকর্মী : শুভেন্দু দাশগুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : শিক্ষা | ০৯ জুন ২০২১ | ২৮০৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
সলিলদা খুঁজে পেলেন অন্য শিক্ষার ধারণা পাওলো ফ্রের-এর লেখায়। প্রয়োগে আমরা। আমার প্রয়োগে থাকার গল্প বলে সলিলদা, সলিলদা দের গল্প বলি। দেবাশিস আমি বেছে নিলাম নিউ আলিপুরের পিছনে সাহাপুরে গরীব পরিচারিকাদের বসতি। পরিচারিকাদের পরিবারের বসতি। সলিলদা আমাদের বোঝালেন কি করতে হবে। আমরা সেই মতো অন্য লেখাপড়ার আন্দোলনের কর্মী হয়ে গেলাম। সপ্তাহের কয়েকটা দিন সন্ধাবেলা আমরা পরিচারিকাদের নিয়ে বসতাম। প্রথামাফিক অ আ ক খ বর্ণমালা শেখাইনি।
পাওলো ফ্রের দর্শনে, সলিলদার, সলিলদাদের পরিচালনায় অন্যভাবে শুরু। একটা উদাহরণ দিই।
মার্জারিন, ডিভোর্স, ভ্যাক্সিন ও সিগারেট -- কাকতালীয় ও কার্যকারণ সম্বন্ধ : যদুবাবু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ৩১ জুলাই ২০২১ | ৩৪৪৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ৭
কখনো কখনো দুয়ের মধ্যে এসে দাঁড়িয়ে থাকেন এক তৃতীয়জন, ‘লার্কিং ভেরিয়েবল’ অথবা ‘কনফাউণ্ডার’। চাদ্দিকে এর মেলাই উদাহরণ, এই যেমন আপনার মাইনেও বাড়ছে আর পাল্লা দিয়ে ব্লাড প্রেশার, হয়তো দেখা যাবে, মাইনে বাড়ছে বয়সের সাথে, রক্তচাপ-ও তাই ... আবার কিছু মাথামুন্ডু নেই এমন জিনিষেও কোরিলেশান বেশি হতেই পারে, Zআনতি পার না। আই-এস-আই-এর একটা মজার গল্প আছে এই নিয়ে। দেবপ্রিয়বাবুর কোর্স, মিড-সেমেস্টারে প্রশ্ন এসেছে, 'মানুষের উচ্চতাও যেমনি বাড়ছে, মাথার চুলের ঘনত্ব তেমনি কমছে ... ক্যায়সে?' আমার এক প্রিয় জুনিয়র দুর্ধর্ষ উত্তর লিখে এলো, 'লম্বা লোকের টাক সূর্যের অনেকটাই কাছে, সেখানে গরম বেশী, খুব ঘাম ... ঘেমো টাকে অল্প চুল যদি না-ই পড়লো, তা'লে আর ঘেমে লাভ কি?' (বলাই বাহুল্য, আসলে হাইট আর জেন্ডারের সম্পর্ক আছে, ‘জেণ্ডার’ এখানে লার্কিং ভেরিয়েবল।)
জন স্নো, কলেরা ও ব্রড স্ট্রিটের একটি পাম্প : যদুবাবু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৩১২০ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৮
১৮৫০-এর লণ্ডন। তার একদিকে বর্ণিল সন্ধ্যার মায়াবী হাতছানি, আর একদিকে ঘিঞ্জি গলিতে আবর্জনার মধ্যে পিলসুজের তলার মানুষের লড়াই। এর-ই মধ্যে বারেবারে হাজার-হাজার মৃত্যুর পরোয়ানা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে কলেরার দৈত্য। রোগের কারণ অজানা, মনে করা হত দূষিত বাতাস বা মায়াজমা থেকেই কলেরা ছড়ায়, যদিও মায়াজমা ঠিক কি জিনিস তা অবশ্য কেউ-ই জানতেন না। ঠিক সেই সময়েই লন্ডনের এক তরুণ ডাক্তারবাবু, জন স্নো, ঝাঁপিয়ে পড়লেন কলেরার মোকাবিলায়, দীর্ঘদিনের চেষ্টায় প্রমাণ করলেন মায়াজমা নয়, দূষিত জল-ই এই রোগের বাহক। আজকের যদুবাবুর টিউশনিতে সেই জন স্নো-র গল্প, এক মহামারির দানবের চোখে চোখ রেখে সত্যি খোঁজার রূপকথা।
বাংলার নবাবি কেল্লা ও কেল্লাবাসীর কিসসা - ২ : ফারুক আব্দুল্লাহ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : ইতিহাস | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৪০৯০ বার পঠিত | মন্তব্য : ১০
ছোটে নবাব সাহেবের সাথে বিশাল আকৃতির জরাজীর্ণ বালাখানার সামনে এসে দাঁড়ালাম। প্রাসাদের ভাঙা সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় ওঠার সময় নবাব সাহেব জানালেন, বর্তমানে এই বালাখানাই নাকি কেল্লা নিজামতের সব থেকে পুরনো প্রাসাদ। এই প্রাসাদ নিয়ে একটি গল্পও শোনালেন, বালাখানা প্রাসাদের নির্মাণকাজ চলাকালীন, কোনো এক জরুরি কাজে নবাব হুমায়ুন জা-কে নাকি ইংল্যান্ড যেতে হয়েছিল। ইংল্যান্ডে তিনি উঠেছিলেন মহারাণী ভিক্টোরিয়ার বাকিংহাম প্যালেসে। অল্পবয়সী নবাব প্যালেস দেখে মুগ্ধ হয়ে যান, এবং মুর্শিদাবাদে বাকিংহাম প্যালেসের মত একটি প্রাসাদ নির্মাণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। হুমায়ুন জা তাঁর সেই ইচ্ছের কথা একদিন সময় সুযোগ বুঝে রাণী ভিক্টোরিয়ার কাছেও প্রকাশ করেন, এবং সেই মর্মে মহারাণীর কাছ থেকে একটি লিখিত অনুমতিও চেয়ে নিয়ে আসেন। মুর্শিদাবাদে ফিরেই তিনি বালাখানা প্রাসাদের নির্মাণকার্য বন্ধ করে, বাকিংহাম প্যালেসের আদলে একটি নতুন প্রাসাদ নির্মাণ করার আদেশ দেন। সেদিনের সেই প্রাসাদটিই নাকি আজকের হাজারদুয়ারি।
আপনি যেখানেই থাকুন : যদুবাবু
বুলবুলভাজা | লঘুগুরু : উৎসব | ১৩ অক্টোবর ২০২১ | ৩৪৯১ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৮
উদ্ভ্রান্ত সেই আদিম দিবসে বাবার হাত ধরে আমিও যেতাম সেই সব রোমহর্ষক সংগ্রামে। তখন-ও ‘দিনেরাতে মুলে রাখে কান’ মোবাইল ছিল না পকেটে-পকেটে, তবুও ঘাবড়াইনি কোনোদিন, জানতাম রণে-বনে-জলে-জঙ্গলে পকেটে একটা নাম-ঠিকানা লেখা চিরকুট থাকলেই চলে, হারিয়ে গেলেও কেউ খুঁজে পেয়ে আমাকে ক্যুরিয়ার করে দেবেন। তবে কি না, ছোটোবেলায় হারাইনি কোনোদিন-ই, ইচ্ছে ছিল একবার অন্তত হারিয়ে গিয়ে বাবার নাম ধরে মনের আনন্দে চ্যাঁচাবো, সেই গোপালের ছেলে যেমন চিল্লিয়েছিল “অ্যাই গোপাল, গোপাল”! কিন্তু সে শখ আর পূর্ণ হল না কোনোদিন।
তবে হারিয়ে একবার গেছিলাম, তাও আবার আধদামড়া, হিজল-দাগড়া বয়সে। সে-ও সেই অভিশপ্ত সপ্তমীর দিনটাতেই। সেই গল্প বলছি।
বাসায় চুরি : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ১৯ অক্টোবর ২০২১ | ২৪৪৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ৭
তিনি জানালেন, আমাদের বাসায় যে চুরি হইছে, আপনারা অনেকেই জেনে থাকবেন। আমার বড় ভাই হাসানুর রহমান সাহেবের স্ত্রী যেইভাবে ঘটনাটি বর্ননা করছেন, আপনারা দেখেছেন উনি কিরকম মিথ্যাবাদী। উনি বলতে চাইছেন আমার ছোট ভাই মিজানুর রহমান কোনভাবে এই চুরির সাথে দায়ী। কিন্তু এইটি পুরা মিথ্যা কথা। আমার ভাই মিজানুর রহমান পাঁচ অক্ত নামাযী মানুষ। তিনি বিড়ি সিগারেট কিছুই খান না। আমরা যখন ছোট আছিলাম, তখন ঝড়ের দিনে আমগাছের নিচে আম, জামগাছের নিচে জাম পড়ে থাকত, অনেক পড়ে থাকত। আমার ভাই মিজানুর রহমান মিজান কোনদিনই ঐসব আম জাম হাতে নেন নাই। তিনি কীভাবে চুরি করবেন? তাও নিজের ঘরে তিনি কেনোই বা চুরি করতে যাবেন? আপনারা কস্মিনকালে শুনেছেন কেউ নিজের ঘরে চুরি করে?
উৎসবের মরশুমে কেমন আছে মুর্শিদাবাদের কেল্লা নিজামত ? : ফারুক আব্দুল্লাহ
বুলবুলভাজা | ভ্রমণ : ঘুমক্কড় | ২১ অক্টোবর ২০২১ | ২৬০২ বার পঠিত
দুঃস্বপ্নের মতো আসা কোভিড দু বছর আগের সমস্ত ছবিই সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছিল।দুটি লকডাউনের ধাক্কায় একেবারে স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল সমগ্র কেল্লা নিজামত এলাকা।কেল্লা জীবন্ত হয় পর্যটকদের আগমনে, পর্যটকরা শুধু কেল্লার জৌলুশই বৃদ্ধি করে না সেই সাথে কেল্লার ভেতরের অজস্র সাধারণ মানুষের জীবিকা অর্জনের মাধ্যমও হয় তাঁরা।কিন্তু লকডাউনে সব কিছু বন্ধ থাকায় কেল্লা পর্যটক শূণ্য হয়ে পড়ায় কেল্লার টাঙ্গাওয়ালা,নৌকার মাঝি, টোটোওয়ালা, হোটেলওয়ালা, রেস্টুরেন্টওয়ালা, আইস্ক্রিমওয়ালা, ফুচকাওয়ালা,ছোট হকার, সৌখিন দ্রব্যের দোকানদার, চাওয়ালা,পার্কিং ব্যাবসায়ী, সবাই হঠাৎ করেই জীবিকা হারায় ৷ সবাইকেই চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়তে হয়েছিলো।
গোলু ও মেঘদিদি : দেবাদৃতা ভাদুড়ি
বুলবুলভাজা | গপ্পো : কুমুদির জন্য (ক) | ১৪ নভেম্বর ২০২১ | ৩০০০ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৯
একদিন গোলু জানালা দিয়ে দেখলো কালো মেঘে পুরো আকাশ ভর্তি হয় গেছে।মন খারাপ হল।কোনও আলো নেই।গোলু তখন দেখল যে বৃষ্টি কমেছে।কিন্তু একটাই সাদা মেঘ।হঠাৎ গোলু দেখল ওই সাদা মেঘটা নেমে আসছে।হঠাৎ সত্যি মেঘটা জানালার কাছে এসে বলল,"কি গোলু?কেমন আছো?"
গোলু বলল "হ্যাঁ!একি! মেঘ আবার কোথাও বলে!"
মেঘ বলল,"হ্যাঁ গো,আমি বুন্টি মেঘ।আমার নাম বুন্টি।তুমি আমাকে মেঘ দিদি বোলো।"
বাংলার নবাবি কেল্লা ও কেল্লাবাসীর কিসসা - ৩ : ফারুক আব্দুল্লাহ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : ইতিহাস | ১৮ নভেম্বর ২০২১ | ২৭৭৮ বার পঠিত
বড়ে কোঠির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সেই শুভ দিন এল ১৮২৯ সালের ২৯শে আগস্ট। সেদিন কেল্লার ভেতরে বহু ইংরেজ আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন। নবাব হুমায়ুন জা স্বয়ং সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে, একটি সোনার ইট গেঁথে, প্রাসাদের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, যে নবাব নাজিম নিজে প্রাসাদের ভিতের ভিতরে নামলেও, সেখান থেকে উঠতে পারেননি – কারণ ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করে নবাব নাকি সেখানেই অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন। মাটির নীচে, অত গভীরে হয়তো অক্সিজেন কম ছিল। যাই হোক, অজ্ঞান অবস্থায় তাঁর ভৃত্যরা উপরে তুলে নিয়ে এসে শুশ্রূষা করতেই নবাবের জ্ঞান ফিরে আসে। এই ঘটনাটি সে সময়ে বেশ শোরগোল ফেলেছিল।
প্রোফেসর বক্সের সাবধানবাণী – ভূ-পর্যটকের ভুল অথবা টলেমি ও কে সি পালের পৃথিবী : যদুবাবু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ২৯ জানুয়ারি ২০২২ | ৩৬৯৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩১
মনে করুন সেই ছোট্টবেলার ভূগোল বই – সৌরজগতের ছবি আঁকা। প্লুটো তখন-ও লাইনের শেষে টিমটিম করে দাঁড়িয়ে আছে, আর বাকিরা আগে-পিছে উঁকি মারতে মারতে ঘুরে চলেছে – আমাদের দেখা সৌরজগতের প্রথম ‘মডেল’ এবং বলাই বাহুল্য, সেটিও খুঁটিয়ে দেখলে ‘ভুল’-ই। তবে এক্কেবারে ডাহা ভুল নয়, অন্তত সূর্য তো মধ্যিখানে, তাই না?
একটা সময় তা-ও ছিল না, যেমন ধরুন টলেমি আর কোপারনিকাস – টলেমি-র মডেল ‘জিওসেন্ট্রিক’ আর কোপারনিকাসের ‘হেলিওসেন্ট্রিক’। ‘জিওসেন্ট্রিক’ অর্থাৎ পৃথিবীর চারদিকে সূর্য বা অন্য গ্রহ প্রদক্ষিণ করে এমন কথা এখন বাচ্চারাও শুনলে হাসবে। আর বড়দের মধ্যে? সেই এক বিখ্যাত কন্সপিরেসি-থোরিস্ট কে-সি-পাল ছাড়া আর কেউ এ কথা বিশ্বাস করবেন, এমন ভাবনা-ই অসম্ভব, কিন্তু টলেমি নেহাত বোকা বা গোঁড়া মানুষ ছিলেন না। ছিলেন একজন জিনিয়াস!
উপনিবেশ, আর্যতত্ত্ব এবং কেশব সেনের ব্রাহ্মসমাজ (১) : বিশ্বেন্দু নন্দ
বুলবুলভাজা | বিতর্ক | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ২৮৫৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৫
১৮৫৭-র যুদ্ধের কাছাকাছি সময়ে ম্যাক্সমুলারের রান্না করা ‘ভারতভূমিতে ককেসাসিয় আর্য আগ্রাসন তত্ত্ব’ (এখন থেকে আর্যতত্ত্ব) ঔপনিবেশিক বাজারে সভ্যতা-বিস্তার আর সাম্রাজ্যরক্ষার ককটেল বানিয়ে খাইয়ে দেয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্য। সাম্রাজ্যের প্রয়োজনে প্রাচীন আর্যতত্ত্বের নবতম রূপকার ম্যাক্সমুলার প্রথমে আর্যকে জাতিবাচক অভিধায় অভিহিত করে যতদূর-সম্ভব ভুল করেছিলেন। কিছু পরে, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে সংস্কৃত ভাষায় বডিন অধ্যাপনার প্রতিযোগিতায় ছিটকে গিয়ে তিনি পূর্বের নিজ-অবস্থান সংশোধন করে, আর্য শব্দের জাতিবাদিতা কেড়ে, তার নখ-দাঁত বিচ্ছিন্ন করে নিরীহ ভাষাগোষ্ঠী হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিলেন। কিন্তু ততদিনে আর্যতত্ত্ব মোটামুটি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিত্তি তৈরি এবং তাকে জোরদার করার কাজে সহায়ক হয়েছে। কেশবচন্দ্র শুধু যে ‘বৈজ্ঞানিক’ আর্যতত্ত্ব অবলম্বনে ব্রিটিশদের ভারতবর্ষের ‘বিছড়ে হুয়ে ভাই’ বলবেন না, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকে ‘গডসেন্ড, ভগবৎ-ইচ্ছা’ আখ্যায় ভূষিত করে ব্রাহ্ম ভাইবেরাদারদের উপনিবেশ লুঠে ছোটতরফ ভদ্রবিত্তের চাকুরি, দালালি, উমদোরির অংশিদারিত্বও নিশ্চিত করবেন....
উপনিবেশ, আর্যতত্ত্ব এবং কেশব সেনের ব্রাহ্মসমাজ (২) : বিশ্বেন্দু নন্দ
বুলবুলভাজা | বিতর্ক | ১৮ মার্চ ২০২২ | ২৩০৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৫
রামকমল যখন কলকাতার শাসক কেষ্টুবিষ্টুদের সঙ্গে দিনরাত ওঠাবসা করছেন, সেই সময় ১৮৩০-এর অগাস্টের গোড়ার দিকে কলকাতায় পাদ্রি হিলের প্রথম বক্তৃতা। বক্তা একে প্রণম্য ইওরোপীয় পাদ্রি, তায় বক্তৃতার বিষয় রাজার ধর্ম, [কলকাতার] হিন্দু সমাজের পাঁজর পর্যন্ত কেঁপে উঠল। কলকাতার সমাজ কাঁপল ইয়ং বেঙ্গলিদের নতুন খাদ্যাভ্যাসে। রায়বাহাদুর প্রমথনাথ মল্লিক, কলিকাতার কথায় লিখছেন,
‘... হিন্দু কলেজের ছেলেরা হেনরী ভিভিয়ান ডিরোজিও এবং হেয়ার সাহেবের শিক্ষায় প্রকাশ্যভাবে অখাদ্য খাইতে আরম্ভ করিয়াছিল ও হিন্দুধর্মের প্রতি অনাস্থা দেখাইতে লাগিল। মহেশচন্দ্র ঘোষ ও কৃষ্ণ[মোহন] বন্দ্যোপাধ্যায় খৃষ্টান হইল। রামমোহন ব্রাহ্মধর্ম (তখনও ধর্ম হয়নি) প্রচার করিলেন। সমাজে ও কলিকাতার হিন্দুধর্ম গেল গেল রব পড়িয়া গেল। রামকমল সেন হিন্দু কলেজ হইতে উক্ত ডিরোজিওকে ছাড়াইতে গেলেন, কিন্তু উইলসন, হেয়ার ও শ্রীকৃষ্ণ সিংহের (কালীপ্রসন্ন সিংহের পিতামহ) জন্য তাহা পারিলেন না। উক্ত সেনকে মিন্টের ও ব্যাঙ্কের দেওয়ান করিয়া কোম্পানি বশ করিয়া ফেলিল। ডিরোজিও নিজে ইহাদের ধন্যবাদ দিয়া চাকরি ছাড়িয়া দিলেন। ... ডিরোজিওর ছাত্রেরা সকলেই কোম্পানির বড় চাকরীয়া ডিপুটি কলেক্টর হইল’।
চ্যালেঞ্জারের দুর্ঘটনা ও প্রোফেসর ফাইনম্যানের মাইনরিটি রিপোর্ট : যদুবাবু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ১৯ মার্চ ২০২২ | ৩৭১২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩৮
ফাইনম্যান নাসার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা নিয়ে বিস্তারিত একটি রিপোর্ট লিখে মতামত দেন, যে এই ভেঙে-পড়া ব্যবস্থা ঠিক না হওয়া অবধি মহাকাশযাত্রা স্থগিত থাকুক। বলেন, “For a successful technology, reality must take precedence over public relations, for nature cannot be fooled”। রজার’স কমিশনের ঘোর আপত্তি সত্ত্বেও সে রিপোর্ট শেষমেশ প্রকাশ পায়, তবে একেবারে শেষে অ্যাপেন্ডিক্স-এফ হিসেবে। অথচ, থিওকল, বইসজলি আর তাদের সঙ্গীদের সমস্ত সাবধানবাণী ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে, নাসার ম্যানেজমেন্ট উৎক্ষেপণের আগে যে প্রি-লঞ্চ এস্টিমেটটি কষেছিলেন, তাতে বলা ছিল, লঞ্চে শাটল ফেল করার সম্ভাবনা ১০০,০০০এ মাত্র ১ – প্রায় নেই বললেই চলে। তাহলে?
দেউচা-পাঁচামিঃ কিছু পর্যবেক্ষণ ও প্রশ্ন : স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ২১ মার্চ ২০২২ | ১৮২৫ বার পঠিত
ঘনঘন পট পরিবর্তন হচ্ছে দেউচা-পাঁচামিতে। গত বছর নভেম্বর ডিসেম্বর নাগাদ দু-তিনটি স্থানীয় ভাবে গড়ে ওঠা গণ কমিটির নেতৃত্বে আন্দোলন হচ্ছিল। ইতিমধ্যে, জানুয়ারিতে মূলত দেউচার বাইরে, রাজ্যের অন্যান্য এলাকায় উপস্থিত থাকা বিভিন্ন রাজনৈতিক ও মানবাধিকার সংগঠন ও এনজিও, কিছু দেউচার স্থানীয় নেতৃত্বের সাথে মিলে, বীরভূম জমি, জীবন, জীবিকা ও পরিবেশ বাঁচাও মহাসভা গড়ে তোলে। পাল্টা, ওই সিঙ্গুরের ন্যানো বাঁচাও কমিটির মত-
বাংলার নবাবি কেল্লা ও কেল্লাবাসীর কিসসা - ৮ : ফারুক আব্দুল্লাহ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : ইতিহাস | ৩১ মার্চ ২০২২ | ২৭০৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
মুর্শিদাবাদের কেল্লা নিজামতের ভেতরে ছোট ছোট নানান দর্শনীয় বিষয় ছিল যার অধিকাংশই আজ নষ্ট হয়ে গেছে, বিশেষ করে কেল্লার ভেতরের যেসব দৃষ্টি নন্দন বাগান ছিল আজ সেসব গভীর জঙ্গলে ঢাকা পরে আছে, যেমন আজ সেদিনের কেল্লার ‘মহল সেরা’ এলাকায় গেলে দেখা যাবে একটি বিরাট অঞ্চল জঙ্গলে পরিণত হয়েছে অথচ নবাবী আমলে এই এলাকাতেই ছিল দেশ বিদেশের দামি সুগন্ধি ফুলের বাগান, আজও অবশ্য সেই জঙ্গলের ভেতরে নবাবী আমলের কিছু ফুলের গাছ দেখা যায়।
উপনিবেশ, আর্যতত্ত্ব এবং কেশব সেনের ব্রাহ্মসমাজ (৩) : বিশ্বেন্দু নন্দ
বুলবুলভাজা | বিতর্ক | ০১ এপ্রিল ২০২২ | ১৫৮৮ বার পঠিত
... সাম্রাজ্যের মানুষেরা যে কেশবচন্দ্রকে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করতে চায়, সেটা কোনও গোপন এজেন্ডা ছিল না। কেশবের খ্রিস্টধর্মে মতি দেখে ম্যাক্সমুলার প্রকাশ্যে বলেছিলেন, একমাত্র বিশপ কটন কেশবচন্দ্রকে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করতে পারেন। কেশবচন্দ্রকে যে সাম্রাজ্য উপনিবেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রজা হিসেবে গণ্য করছে, সেই ইঙ্গিতটা স্পষ্ট হয়ে যায় সাম্রাজ্য-কর্ত্রী ভিক্টোরিয়া তাঁকে দু’টি বই উপহার দেওয়ায়। সাম্রাজ্য তাঁকে অত্যধিক গুরুত্ব দেওয়ায় তিনি ৪০টা ব্রিটিশ শহর এবং আমেরিকা থেকে বক্তৃতা দেওয়ার ডাক পাবেন ...
উপনিবেশ, আর্যতত্ত্ব এবং কেশব সেনের ব্রাহ্মসমাজ (৪) : বিশ্বেন্দু নন্দ
বুলবুলভাজা | বিতর্ক | ২২ এপ্রিল ২০২২ | ১৬৬২ বার পঠিত
শেষ বয়সে জনগণের ওপরে কেশবচন্দ্রের প্রভাব দৃশ্যত কমে গিয়েছিল; কিন্তু তাঁর প্রচারিত আর্যতত্ত্বের রেশ থেকে যায় বুদ্ধিজীবি মহলে। আর্যতত্ত্ব প্রচারে কেশবচন্দ্রের প্রভাব আজও এতটাই গুরুত্বের, যে এখনও প্রায় প্রত্যেকটি জাতীয় দল/গোষ্ঠীকে আর্যতত্ত্ব বিষয়ে নির্ণায়ক অবস্থান নিতে হয়। কেশবচন্দ্র সেন এবং ব্রাহ্ম সমাজের ঐতিহাসিক গুরুত্ব এখানেই। মুলার শেষ বয়সে তার সন্তান আর্যতত্ত্বকে নিয়ে কী করবেন সে বিষয়ে স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি, যদিও তিনি আর্যতত্ত্বের দাঁত-নখ উপড়ে দিয়েছেন। আধুনিককালে আর্যতত্ত্বের অন্যতম প্রধান প্রবক্তার দ্বিধা সত্ত্বেও ব্রিটিশ সাম্রাজ্য আর্যতত্ত্বকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার, সাম্রাজ্যের স্বার্থ রক্ষার কাজে সফল হয়েছে। খ্রিস্ট মিশনারি, প্রাচ্যবাদী এবং ব্রিটিশ সরকার যৌথভাবে মুলার এবং কেশবচন্দ্রের এই তত্ত্বকে তাদের স্বার্থে বারংবার ব্যবহার করেছে
ইদ-এ-মুর্শিদাবাদ : ফারুক আব্দুল্লাহ
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : ইদের কড়চা | ০৬ মে ২০২২ | ১৪৫৪ বার পঠিত
ইসলামে রমজানের উপবাস মানুষের উপর নিষ্ঠুরভাবে চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। শয্যাশায়ী, নিরাময় অযোগ্য রোগী, গর্ভবতী মহিলা, সফরকারী মানুষকে রোজা পালন করা থেকে সাময়িক ছাড় দেওয়া হয়েছে। অবশ্য পরবর্তী সময়ে তাদের প্রতিকূল অবস্থা দূর হলে তখন তাদের সেই রোজাগুলি করে নিতে হবে। কোন ব্যক্তি উপবাস করে ভুলবসত পেট ভরে খেয়ে নিলেও তার উপবাস ভঙ্গ হয় না।
বাংলার নবাবি কেল্লা ও কেল্লাবাসীর কিসসা - ৯ : ফারুক আব্দুল্লাহ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : ইতিহাস | ১৬ জুন ২০২২ | ৩১০৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
কেল্লার ভেতরে নবাবের দরবারের আলো নিভে গেছে, বহু বছর হল নবাবী গৌরবও অস্ত গিয়েছে। শ্বেত পাথরের ফোয়ারায় আর রঙধনু রং ধরেনা, এখন আর নবাবের ভাঙ্গা প্রাসাদ থেকে দরবারী কানাড়া, দাদরা ঠুংরির আওয়াজ ভেসে আসেনা, প্রতি সন্ধ্যায় সারেঙ্গীর সুরও আর বাজেনা। নবাবের সাধের ফুলের বাগান আজ গভীর জঙ্গলে পরিণত হয়েছে।
মালেক আব্দুর রহমান : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : উৎসব | ০১ নভেম্বর ২০২২ | ১৯০৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
ছবি আঁকতে আমি পার্কে যেতাম প্রায়ই, এবং সবদিনই আমার সাথে মালেক আব্দুর রহমানের দেখা হতো। মালেক আব্দুর রহমান একজন সত্তুর বছর বয়স্ক লোক, এবং বলাবাহুল্য যে, অন্যসব মানুষের ব্যাপারে আমার যেমন কোন আগ্রহ ছিল না তেমনি তার ব্যাপারে আমার কোনরূপ আগ্রহ ছিল না। তিনি রীতিমত আমাকে আমার কাজে বিরক্ত করতেন।
এই বিরক্তি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আমি তার গল্পে ঢুকে যাই। সেই গল্পই এক্ষণে প্রকাশ করছি।
হাণ্ড্রেড-ইয়ার ফ্লাড, এক্সট্রিম ভ্যালু থিওরি এবং একটি রাজনৈতিক হত্যার দলিল : যদুবাবু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ২৫ নভেম্বর ২০২২ | ২২৯৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৮
ভয়াবহ বন্যার সম্ভাবনার কথা ভেবে তর-তম করেন ভূবিজ্ঞানীরা, হাণ্ড্রেড ইয়ার ফ্লাড, ফাইভ-হান্ড্রেড ইয়ার ফ্লাড, থাউজ্যান্ড … ইত্যাদি। কিন্তু, এই হাণ্ড্রেড-ইয়ারস ফ্লাডের মতো এমন ঘটনা যা হয়তো কোথায় একবার-ও হয়নি আগে, বা হলেও হয়তো সেই কোন মান্ধাতার আমলে, সেই বিরল থেকে বিরলতম দুর্ঘটনার মোকাবিলা করার পরিকল্পনা করবেন কেমনে? একটা নির্দিষ্ট প্রশ্ন ভাবলে সুবিধে হয়, ধরুন আপনি সেই ছোটোবেলার হান্স ব্রিঙ্কারের গল্পের মত এক ডাচ গ্রামের লোক, বন্যার জল আটকাতে চারদিকে এমন বাঁধ দিতে চান, যাতে আগামী একশো, কি হাজার বছরের বন্যার জল-ও কক্ষণো সেই বাঁধ টপকাতে না পারে, এইবার ভাবুন কত উঁচু বাঁধ বানাবেন হান্স? উচ্চতা মাপবেন কী করে সেই অনাগত বিপুল তরঙ্গের?
আধুনিক বিজ্ঞানের বহু বহু প্রশ্নের উত্তর যে রাশিবিজ্ঞান দিয়েছে সে তো বলাই বাহুল্য। সেসব প্রশ্নের উত্তর যোগানোর জন্য তথ্য (ডেটা)-ও তো আছে প্রচুর পরিমাণে, বরং দরকারের চেয়ে কিছু হয়তো বেশিই। কিন্তু এই ধরণের এক্সট্রিম ইভেন্টের (চূড়ান্ত?) সম্ভাবনা মাপার সূত্রটি ধরতে গেলে সেইসব অঙ্কের ভাঁড়ারেও কিছু কমতি পড়ে যায়। দরকার পড়ে অন্য একরকমে প্রোবাবিলিটি থিয়োরি – থিয়োরি অফ এক্সট্রিমস।
বাংলার নবাবি কেল্লা ও কেল্লাবাসীর কিসসা - ১১ : ফারুক আব্দুল্লাহ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : ইতিহাস | ৩১ মার্চ ২০২৩ | ১৮৪২ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
এ প্রসঙ্গে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার শেষ নবাব নবাব নাজিম মনসুর আলি খান ফেরাদুন জার বংশধর নাফিসুন নিসা নাসির (নাফিসা) এর বিয়ের খাওয়া দাওয়ার কথা আজও ভুলতে পারিনি। আগেই বলেছি এক সময় নিজামত পরিবারে বিরিয়ানির কোনো অস্তিত্ব ছিলনা তবে আজকাল নিজামত পরিবারে বিরিয়ানির খুব রমরমা শুরু হয়েছে। নাফিসার বিয়েতেও মূল খাবার হিসেবে বিরিয়ানি খাওয়ানো হয়েছিল, সেই বিরিয়ানির স্বাদ আজও মুখে লেগে আছে। সেবার খেতে বসে প্রথমেই দেওয়া হয়েছিল ঘিয়ে ভাজা পরোটা ও চিকেন রেজালা, ওহ সে কি অপূর্ব স্বাদ।
নতুন অতিথি শিউলিফুল : দেবাদৃতা ভাদুড়ি
বুলবুলভাজা | গপ্পো : কুমুদির জন্য (খ) | ০৬ জুন ২০২৩ | ১৩৩৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
কিন্তু গোলুর মনকেমন যায় না। ক্রমশ বাড়ে। চোখের সামনে মেয়েটাকে কষ্ট পেতে দেখতে ভালো লাগছে না গোলুর। হঠাৎ আকাশ থেকে একটা শিউলিফুল এসে পড়ে। একটু বড়! গোলু যেই না হাতে নেয়, ফুলটা কথা বলতে শুরু করে। বলে, "গোলু, তোমার মনে আছে মেঘ দিদির কথা?" গোলু বলে, "হ্যাঁ। কেন বলো তো?" "ওই আমাকে তোমার কাছে পাঠিয়েছে। তোমার দুঃখ মেটাতে। কি হয়েছে তোমার?" শিউলি ফুল বলে ওঠে। কিন্তু গোলু কিছু বলেনা। ওর মনে হয় স্বপ্ন দেখছে। গোলু বলে, "জানো তো, ওই যে মুখুজ্যেদের বাড়ির কাছে, একটা মেয়ে বসে আছে, পুরনো গোলাপি জামা পরে, ওর খুব কষ্ট। পুজোয় একটাও জামা হয়নি। খুব দুঃখ। এদিকে দেখো।
মুর্শিদাবাদবাসীর ঈদ উদযাপনের কথা : মোঃ আব্দুল উকিল
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : ইদের কড়চা | ২৪ এপ্রিল ২০২৩ | ১১৮৮ বার পঠিত
সাদা-কালোর মধ্যে যে সম্পর্ক, ভালো মন্দের মধ্যেও অনুরূপ একই ধরনের সম্পর্ক বলা যেতে পারে। একে অপরকে ছাড়া সকলেই যেন গুরুত্বহীন। তবে ভালো ও মন্দকে পাশাপাশি রাখলে এমন কোনো মানুষ নেই যে সে ভালোকে পছন্দ করবে না।সকলেই ভালো থাকতে চাই। আর ভালো থাকার জন্যই গড়ে উঠেছে বিভিন্ন রীতিনীতি, আচার অনুষ্ঠান, বিভিন্ন ধরনের উৎসব অনুষ্ঠান। সেই সব উৎসব দেখা গেছে কখনও পরিবারকেন্দ্রিক আবার কখনও বা সমাজকেন্দ্রিক। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন উৎসব যেমন আবির্ভূত হয়েছে, আবার কিছু কিছু উৎসব কালের আবর্তে বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায়। এমনকি কিছু উৎসব তার রূপের পরিবর্তন করেছে। যাইহোক না কেন উৎসব মানেই কতগুলো বৈশিষ্ট্য বহন করে থাকে, হতে পারে তা রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয়।
বাংলার নবাবি কেল্লা ও কেল্লাবাসীর কিসসা - ১৩ : ফারুক আব্দুল্লাহ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : ইতিহাস | ০৯ জুন ২০২৩ | ১৯১১ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
কেল্লায় যে এত ভূতের বসবাস আমি নিজেও তা জানতাম না আগে, আমি তো সপ্তাহে অন্তত পক্ষে একদিন হলেও কেল্লায় যাই, কিন্তু কেল্লার ভেতরে জ্বিন দেখার সৌভাগ্য আমার এখনও হয়নি। একবার তো কেল্লার জঙ্গলে ঢাকা বেগম মহলে ভরা শীতের সময় প্রায় সন্ধ্যা ৮টা পর্যন্ত ছিলাম, কিন্তু সেদিনও সেখানে কিছুই দেখতে পাইনি—তবে নিশ্চয় কোনো না কোনো দিন ঠিকই কেল্লার ভেতরে জ্বিনের দেখা পাবো—এই আশা রাখি।
টডের রাজস্থান ও বাঙালি হিন্দুর সাম্প্রদায়িকতাঃ একটি ঔপনিবেশিকতা বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গী : স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | পড়াবই : বই কথা কও | ০১ অক্টোবর ২০২৩ | ৩৭৬১ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩০
১৯০২ এর সেপ্টেম্বরে, মৃত্যুর মাস তিনেক আগে, কাশ্মীরে থাকাকালীন,কর্নেল জেমস টডের ‘অ্যানালস অ্যান্ড অ্যানটিকুইটিস অফ রাজস্থান’ বইটি দেখে সহচরদের বিবেকানন্দ বলেছিলেন, “বাঙলার আধুনিক জাতীয় ভাবসমূহের দুই তৃতীয়াংশ এই বইখানি হইতে গৃহীত।”
ভুল কিছু বলেননি। রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে মাইকেল মধুসূদন, বঙ্কিমচন্দ্র হয়ে জ্যোতি-রবি-অবন ঠাকুর, কার কল্পনাকেই-বা প্রভাবিত করেনি টডের বই-এর মুসলমান শাসকদের বিরুদ্ধে রাজপুত পৌরুষ ও নারী সতীত্বের আপোষহীন লড়াইয়ের চিত্র? ‘কেতুনপুরে বকুল-বাগানে/কেসর খাঁয়ের খেলা হল সারা।/যে পথ দিয়ে পাঠান এসেছিল/সে পথ দিয়ে ফিরল নাকো তারা’ পড়েছি রবীন্দ্রনাথের ‘হোরিখেলা’ কবিতায়। “বিধর্মী শত্রু সোনার মন্দির চূর্ণ করে বল্লভীপুর ছারখার করে চলে গেল,” পড়েছি অবন ঠাকুরের রাজকাহিনীতে।
বাংলার নবাবি কেল্লা ও কেল্লাবাসীর কিসসা - ১৫ : ফারুক আব্দুল্লাহ
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : ইতিহাস | ০৫ অক্টোবর ২০২৩ | ১২০০ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
ভদ্রলোকের নাম সৈয়দ আমীর মির্জা,বয়স ৮৬ বছর। থাকেন কেল্লা নিজামতের ভেতরে হাজারদুয়ারি প্রাসাদের সন্নিকটে একটি বাড়িতে। ভদ্রলোকের সাথে আমার প্রথম দেখা হয়েছিল ২০১৯ সালে, পরে আরও বহুবার দেখা হয়েছে। বর্তমানে অধিক বয়সের ভারে ও নানান শারীরিক সমস্যা জনিত কারণে ভদ্রলোক এখন ঠিক মতো হাঁটাচলাও করতে পারেন না, তবুও তাঁর সাথে কথা বললে ভদ্রলোকের আচার-আচরণ ও মার্জিত ব্যবহারই বুঝিয়ে দেয় তাঁর শরীরে আজও নীল রক্ত বইছে।
সমষ্টি থেকে ব্যষ্টি - ইকোলজিক্যাল ফ্যালাসি! : যদুবাবু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : সমাজ | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩ | ২০১২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩৫
আজ থেকে প্রায় বাহাত্তর বছর আগে, ১৯৫০ সালে, প্রোফেসর উইলিয়ম এস রবিনসন একটি যুগান্তকারী পেপারে (“Ecological Correlations and the Behavior of Individuals”) প্রমাণ করে দেখান, যে, দুটি রাশির মধ্যে সম্পর্ক (অর্থাৎ কোরিলেশন) সম্পূর্ণ আলাদা-আলাদা দুরকম হতেই পারে, যদি একটি মাপা হয় সমষ্টির জন্য (অর্থাৎ এগ্রিগেট লেভেল) আর একটি ব্যক্তির পর্যায়ে (অর্থাৎ ইন্ডিভিজুয়াল লেভেলে)। রবিনসনের পেপারে ১৯৩০ সালের আমেরিকান জনগণনার—অর্থাৎ সেন্সাসের—ডেটা অ্যানালাইজ করে দেখানো হয়, যে ঐ সময়ের ৪৮টি স্টেটে যদি বিদেশে-জন্মানো (ফরেন-বর্ন) শতাংশ এবং সাক্ষর জনতার (আমেরিকান ইংলিশে সাক্ষর) শতাংশের মধ্যে কোরিলেশন পজিটিভ: ০.৫৩। এর থেকে ধারণা হতে পারে—যে রাজ্যে যত বিদেশ থেকে আসা লোক, সে রাজ্যে তত কম নিরক্ষর মানুষের শতাংশ, অথবা, তত বেশি সাক্ষরতার হার। আর একটু এগিয়ে ব্যক্তি-স্তরে নিয়ে গেলে, এমন মনে হতে পারে—যে, বিদেশে-জন্মানো মানুষের (আমেরিকান ইংলিশে) সাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা দেশে-জন্মানোদের থেকে বেশি। কিন্তু, এই সম্পর্ক-ই যদি ব্যক্তির স্তরে দেখেন, ঐ দুই রাশি—বিদেশে জন্ম আর সাক্ষরতা—এবার কিন্তু কোরিলেশন নেগেটিভ: —০.১১, অর্থাৎ সমষ্টি থেকে ব্যষ্টি-স্তরে আসতেই সম্পর্ক উল্টে গেলো।
তবুও কখনো কখনো ব্যক্তির আচরণ আর সমষ্টির ব্যবহার এক-ই হয়, কখনো হয় এক্কেবারে উলটো। সেই গণ্ডগোলের নাম “ইকোলজিক্যাল ফ্যালাসি”। “ইকোলজিক্যাল ফ্যালাসি” শব্দবন্ধ অবিশ্যি রবিনসনের দেওয়া নাম নয়, সেটির আবির্ভাব কিছুদিন পর সেলভিনের ১৯৫৮ সালের পেপারে – ইকোলজিক্যাল ফ্যালাসির সংজ্ঞা পেলাম আমরাঃ ‘the invalid transfer of aggregate results to individuals’!
ফকির ফয়জুল্লাহ - প্রথম পর্ব : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬৯৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
তালাশ মাহমুদ বললেন, বেশি বুজরুকি দেখালে, আর বেশি বললেই যুক্তি শক্ত হয় না। আপনার ম্যাডামের সব কেচ্ছাকাহিনী শেষ করে দেব সামনের লেখায়। তাই সময় লাগছে। এর মধ্যে এখন আবার আরেক জরুরী কাজে যেতে হচ্ছে। সেখানে ক'দিন থাকতে হবে, পরিস্থিতি কেমন হবে, কীরকম সময় পাব জানি না। যদি সময় পাই তাহলে ওখানে বসেই লেখা শেষ করে আপনাকে পাঠিয়ে দেব। চিন্তার কিছু নেই। একশো ভাগ নিশ্চিত থাকুন, আমি জিতবই। কারণ আমার আগ্রহ সত্যে।
সবুর খান বললেন, তাহলে আগে কিছু বলুন, দুয়েকটা পয়েন্ট।
তালাশ মাহমুদ বিরক্ত স্বরে বললেন, কী আর বলব, এসব রেট্রোফিটিং, কিছু জেনারালাইজড অনুমান করে, তারপর যেটা মিলে ওইটারেই আপনারা সবাই মিলে সামনে আনেন। এসব চালাকি তো নতুন না।
ফকির ফয়জুল্লাহ - তৃতীয় পর্ব : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১২ এপ্রিল ২০২৪ | ৪৮৬ বার পঠিত
আশরাফ আলী অবাক হলেও মেলাতে চেষ্টা করলেন এই মহিলা কীভাবে তার মনের কথা বুঝতে পারল। একে কি তিনি আন্ডার এস্টিমেট করেছেন? একসময়ে কংগ্রেস করেছেন, এখন মুসলিম লীগের নেতা, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কোন প্রধান শিক্ষা পেয়ে থাকলে সেটা হল, কাউকে কখনো আন্ডারএস্টিমেট করতে নেই। এই ভুল তিনি করতে চান না।
কিন্তু মহিলা বুঝল কীভাবে? এরকম যদি সে সব বুঝে ফেলে, অতিপ্রাকৃতিক কোন ক্ষমতাবলে, তাহলে তো এর সাথে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কথা বলে লাভ নেই। প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা বলে ফেলাই যুক্তিসংগত।
ফকির ফয়জুল্লাহ - চতুর্থ পর্ব : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | ৪৬৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
কাজের লোক তালাশ মাহমুদকে এসে বলল আশরাফ আলী খান তার কক্ষে গিয়ে দেখা করতে।
তালাশ মাহমুদ আশরাফ আলী খানের কক্ষের সামনে গিয়ে শুনলেন ভেতরে কথা কাটাকাটি হচ্ছে। আশরাফ আলীর সাথে মুখে মুখে কথা বলছেন তার স্ত্রী গোলাপজান, আর আশরাফ আলী ধমকাচ্ছেন। এইরকম কিছু ঘটতে তালাশ মাহমুদ আগে দেখেন নি। তিনি অবাক হলেন। তিনি দেখে এসেছেন তার ভাবী কখনো ভাইয়ের সামনে উঁচু স্বরে কথাই বলেন না।
একটু বিব্রত হয়েই দরজায় শব্দ করে তালাশ মাহমুদ বললেন, ভাইজান, আসবো?
গোলাপজান তখন চলে গেলেন।
আশরাফ আলী বললেন, হ্যাঁ তপু আসো।
ফকির ফয়জুল্লাহ - পঞ্চম পর্ব : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | ৫২৪ বার পঠিত
সম্পদ বা ক্ষমতা কোনটাতেই তালাশ মাহমুদের আগ্রহ নেই। পুর্বপুরুষের জমিদারীর কোথায় কী আছে এগুলি জানার ব্যাপারেও কোনোদিন তার আগ্রহ হয় নি। তার আগ্রহ কেবল রহস্যে, এবং রহস্য উদঘাটনে। এর জন্য দেশ দেশান্তরে ছুটে যেতেও তিনি পিছপা হন না।
আশরাফ আলী খানের কথা শুনে তিনি মনে মনে ঠিক করে ফেলেছেন এখানে তার কোন কাজ নেই। ফলে, একটা সুযোগ বের করেই কেটে পড়তে হবে।
সম্ভবত, আশরাফ আলী খান এটা বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি এমনিতে থাকবেন না, তাই ঐ ম্যাডামকে নিয়ে এসেছেন। যাতে ওই দ্বৈরথকে কেন্দ্র করে তালাশ মাহমুদ রয়ে যান।
হাসনাহেনার উপরে নীল আলোর ব্যাপারটাতে তালাশ মাহমুদ আগ্রহ বোধ করেছিলেন। কিন্তু যেহেতু একজন মাত্র সাক্ষী ঘটনার, এবং তার নিজেরই অবস্থা এখন ঠিক নেই, ফলে এটাকে বেশী পাত্তা দেবার মত বিষয় মনে হলো না। মোটকথা, তালাশ মাহমুদ চান না আশরাফ আলী খানের রাজনীতির ঘুটি হতে।
ফকির ফয়জুল্লাহ - ষষ্ঠ পর্ব : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | ৫১১ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
ফকির ফয়জুল্লা বলতে থাকলেন, এই ফকির ফয়জুল্লা সময়ে সময়ে, স্থানে স্থানে ঘুইরা এইখানে আসছে, আর তোরা তারে বাইর কইরা দিবি? কয়দিনের জিন্দেগী তদের? কারে কী কস? সব ক'টারে একবারে খাইয়া ফেলবো!
পুরা জঙ্গল যেন গম গম করছিলো ফকির ফয়জুল্লার স্বরে।
উপস্থিত সবাই স্তব্ধ হয়ে গেলো।
তালাশ মাহমুদের দিকে তাকিয়ে ফকির ফয়জুল্লাহ বললেন, এদের নিয়া যান। কী বালের তদন্ত করেন আপনে? কোন প্রমাণে এখানে আসছেন দলবল নিয়া? প্রমাণ থাকলে আইসেন, আমি নিজেই ধরা দিব।
তালাশ মাহমুদ বললেন, কিন্তু আপনে কে? এই গ্রামে কী করছেন?
ফকির ফয়জুল্লা বললেন, আমি কে এইটা জানতে কি আসছেন দলবল নিয়া? আমি ফকির ফয়জুল্লা, আমি স্থানে স্থানে ঘুরি, সময় থেকে সময়ে গতান্তরিত হই। আমার কাজ শেষ হওয়ার আগে আমারে কেউ সরাইতে পারব না। এইখান থেকে দূর হন।
ফকির ফয়জুল্লা উত্তরের অপেক্ষা না করে, তাদের তাচ্ছিল্য করেই ভেতরে চলে গেলেন।
ফকির ফয়জুল্লাহ - সপ্তম পর্ব : মুরাদুল ইসলাম
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৬১৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
তালাশ মাহমুদ ভ্রূ কুঁচকে বললেন, আপনে এসবে বিশ্বাস করেন?
দ্বিজদাস বললেন, বিশ্বাস অবিশ্বাস পরের ব্যাপার। কিন্তু ব্যাপারগুলা তো আপনারই কাজের বিষয়। ঠিক কি না?
তালাশ মাহমুদ বললেন, তা ঠিক। কিন্তু আমি যুক্তি দিয়ে বিচার করে সমাধান করতে চেষ্টা করি। সব সময় যে পারি সমাধানে যেতে এমন না।
তালাশ মাহমুদ খেয়াল করলেন দ্বিজদাস একটু ইতস্তত করছেন। পুলিশের একজন বিভাগীয় প্রধান কালু সর্দারের খুনের জন্য এই গ্রামে এসেছেন তালাশ মাহমুদ বিশ্বাস করেন না। তার আসার অন্য কোন কারণ আছে। তালাশ মাহমুদ সেটা বুঝার চেষ্টা করছিলেন।
দ্বিজদাস এই সময়ে বললেন, পৃথিবীতে ভালোর শক্তি শেষ হয়ে যাচ্ছে মাহমুদ সাহেব। সব আপনার যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারবেন না। এই যুদ্ধটা না লাগলেও হতো। তাছাড়া আমাদের দেশের দিকেই দেখেন, কেমন অশান্ত পরিস্থিতি। ঢাকায় বড় ঝামেলা হবে আভাস পেলাম। স্যারের এই সময়ে ঢাকায় থাকা দরকার। স্যারকে অনুরোধ করলাম। কিন্তু তিনি এখানে একটা বড় আয়োজনে আটকা পড়ে গেছেন। আপনি কি উনাকে একবার রিকুয়েস্ট করবেন আমাদের হয়ে?
তালাশ মাহমুদ বললেন, আমার কথা তো উনি শুনবেন না। আর এখানের আয়োজন একাই সামাল দিচ্ছেন। তাও, আমি বলে দেখব। ঢাকায় কী নিয়ে ঝামেলা হবে বলছেন?
ভক্স পপুলি : যদুবাবু
বুলবুলভাজা | ভোটবাক্স : লোকসভা - ২০২৪ | ২৪ মে ২০২৪ | ১৬৪৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ২৮
ধরা যাক আমাদের n-সংখ্যক ভোটার আছে, n বিজোড় সংখ্যা (অর্থাৎ “টাই” অসম্ভব)। প্রত্যেক ভোটারের ঠিক বিকল্পে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা ধরা যাক pc, এবং সবার ভোট পড়ে গেলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে “মেজরিটি রুল” অনুযায়ী, অর্থাৎ যে সবথেকে বেশি ভোট পাবেন, সেটিই আমাদের গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত। কনডরসে-র উপপাদ্যে এও ধরে নেওয়া হয়, যে, প্রত্যেক ভোটার ‘স্বতন্ত্র’, ‘দক্ষ’ এবং ‘আন্তরিক’। ‘স্বতন্ত্র’ – অর্থাৎ যে যার নিজের ভোট দিচ্ছেন বা একজনের পছন্দ আরেকজনকে প্রভাবিত করে না। ‘দক্ষ’ – অর্থাৎ, প্রত্যেকের ঠিক বিকল্প খুঁজে নেওয়ার সম্ভাবনা অর্ধেকের থেকে বেশি, যত সামান্যই হোক, এক্কেবারে র্যান্ডম গ্যেস অর্থাৎ ইকির-মিকির-চামচিকির করে আন্দাজে যা-ইচ্ছে-তাই একটা বোতাম টিপে দেওয়ার থেকে তার প্রজ্ঞা বা দক্ষতা একচুল হলেও বেশি। আর শেষ অ্যাজ়াম্পশনের কথা আগেও লিখেছি, ভোটার-রা ‘আন্তরিক’, সিরিয়াস-ও বলা যায়—কেউ ইচ্ছে করে ভুলভাল ভোট দিয়ে নষ্ট করছেন না।
বাংলাদেশ অভ্যুত্থান ও পশ্চিমবঙ্গঃ ঠিক কি ঘটছে দু’পার বাংলায়? : স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য
বুলবুলভাজা | অপর বাংলা | ১১ আগস্ট ২০২৪ | ৩৪৭০ বার পঠিত | মন্তব্য : ১১২
ছাত্ররা আশাতীত সাফল্য দেখিয়েছে। তার পরেও দৃঢ়তা দেখিয়েছে। স্বৈরাচার না মৌলবাদ, এই প্রশ্নের বাইরে স্বৈরাচার ও মৌলবাদ উভয়কেই দূরে রাখার যে প্রকল্প তারা ঘোষণা করেছে, তার সাফল্যের ওপর শুধু বাংলাদেশ নয়, দুই বাংলার পারষ্পরিক সম্পর্কও নির্ভর করছে। এসবের সাথে তাঁরা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদেরও বিরোধিতা করতে পারবেন কিনা সেটা অনেক বড় প্রশ্ন হয়ে যায়। কিন্তু তাঁরা যদি ‘৭২-এর সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা আবার ফিরিয়ে আনতে পারেন, সেটাই হবে, আমার মতে, তাঁদের সবচেয়ে বড় সাফল্য। এরকম কোনও উদ্দেশ্যের কথা অবশ্য তাঁরা এখনও ঘোষণা করেননি। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের মানুষ আরেকটা কাজ করতে পারেন। যখনই কেউ মুজিব মুর্তি ভাংচুরের প্রসঙ্গ তুলে বলতে আসবে মুসলমানদের দেশ বাংলাদেশ এত খারাপ যে জাতির জনককেও ছাড়ে না, তাঁকে আগে একবার জিজ্ঞেস করে নেবেনঃ “আর ভারতের জাতির জনকের হত্যা বিষয়ে তোমার/আপনার কি মত?” তাঁরা যদি গান্ধী হত্যার তীব্র নিন্দা না করেন, বুঝে যাবেন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর আঘাত নিয়ে তাঁদের কোনও মাথাব্যাথা নেই; না তাঁরা স্রেফ বাংলাদেশকে ব্যবহার করে এদেশের মাটিতে নিজেদের বিষবৃক্ষের ফসল তুলতে চাইছেন।
দুই লেজান্ড্রর গল্প - একটি ভুল প্রতিকৃতি ও একটি অসম্পূর্ণ ক্যারিকেচার : যদুবাবু
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ২৭ অক্টোবর ২০২৪ | ৯৩৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ২৩
আমার গপ্পের নায়ক এমন একজন লোক যার সাথে "Prince of Mathematics" গাউস দীর্ঘদিন প্রায়োরিটি ডিস্পিউটে জড়িয়েছিলেন লিস্ট স্কোয়ারের আবিষ্কার নিয়ে। সেই নিয়ে বিস্তর চিঠিচাপাটি, মান-অভিমান, একশো বছর পরেও গণিত বা রাশিবিজ্ঞানের ইতিহাসের আগ্রহের ব্যাপার। তিনি আদ্রিয়ান-মারি লেজান্ড্র (নাকি লেজঁদ্র?) (জন্ম - ১৭৫২, মৃত্যু - ১৮৩৩।) অঙ্কের ইতিহাসে তার-ও কীর্তি কম নয়। চট করে ভাবলেই মনে পড়ছে - লেজান্ড্র পলিনমিয়াল, লেজাণ্ড্র ট্রান্সফর্মেশন, লেজাণ্ড্র ডিফারেনশিয়াল ইকোয়েশন, লেজান্ড্র সিম্বল, লেজান্ড্র কণ্ডিশন ফর ক্যালকুলাস অফ ভেরিয়েশন, লেজান্ড্র রিলেশন ইত্যাদি ইত্যাদি আরও কত কিছু। ভদ্রলোক এর-ই পাশাপাশি নাম্বার থিওরি, এলিপটিকাল ইন্টিগ্রাল, ক্যালকুলাসের উপর বই লিখেছিলেন বেশ কিছু, আর ইউক্লিডের জিওমেট্রির মালমশলা নিয়ে লিখেছিলেন বেশ জনপ্রিয় পাঠ্যবই, একাধিক ভাষায় অনূদিত হয়েছিল সেটি। তাও লেজান্ড্র জীবদ্দশায় প্রচুর খ্যাতি পেয়েছিলেন এ কথা লিখলে মিথ্যা বলা হবে। অন্যান্য সমমানে বিখ্যাত গাণিতিকদের মত তার 'সমগ্র' বেরোয়নি। এমন কি, ব্যক্তি লেজান্ড্র কেমন ছিলেন সে বিষয়ে আমাদের জানা আজ-ও অতি অল্প। ছাত্র অথবা বন্ধুদের দু-একটি চিঠির ভেতর যেটুকু যা ধরা যায় তাইই।
তবে, সে এমন কিছু আশ্চর্য হয়তো না। কত বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক কি অঙ্কবিদ সারাজীবন নিভৃতচারী হয়ে কাটান। অন্য এক আশ্চর্যতর জগতের বাসিন্দা হয়ে। তাদের রোজনামচা না-ই জানা থাকতে পারে। কিন্তু লেজাণ্ড্রের গল্পের সবথেকে আশ্চর্য বিষয় এই যে এক শতাব্দীর-ও বেশি সময় ধরে মানুষ অন্য এক লেজান্ড্র-র ছবি দেখে ভেবেছে এই সেই আদ্রিয়ান-মারি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেখানে যেখানে যে বইতে লেজান্ড্রর কথা পড়েছে, যে ওয়েবসাইটে অঙ্কের ইতিহাসে লেজান্ড্রর কীর্তি পড়েছে, সেই কীর্তির পাশে যাঁর ছবি দেখেছে তিনি আদৌ গণিতজ্ঞ লেজান্ড্র নন। আদ্রিয়েন-মারির সাথে তাঁর যে কোনোরকম বাহ্যিক সাদৃশ্য ছিলো এমন-ও না। শুধু, মিল ছিল পদবীতে।