ভারতের ৪টি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদীর বাংলাদেশ সফর পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক মহলে বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছে। তাছাড়া গুজরাট, মহারাষ্ট্র, দিল্লি এবং অন্যান্য রাজ্যে করোনা ভাইরাসের আক্রমণ ভয়ঙ্কর ভাবে ঊর্ধ্বগামী হওয়া সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব বিলাসবহুল বিশেষ বিমানে বাংলাদেশর স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে অংশগ্রহণ অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্বের প্রতিটি সচেতন মানুষ জানেন যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের নেপথ্যে ভারতের অংশগ্রহণ ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক অধ্যায়। সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সুবর্ণ জয়ন্তীতে অংশগ্রহণ করা প্রতিবেশী দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের নৈতিক বিধির সঙ্গে সংযুক্ত। কিন্তু করোনা অতিমারীর নিয়মবিধি লঙ্ঘন এবং পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী আবহের মধ্যে এই সফর বেশ গুরুত্ব সহকারে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। অনেকে মোদীর এই সফরকে বাংলা এবং আসামের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার উপায় হিসেবে বর্ণনা করছেন। অনেকে মোদীর এই সফরকে একটি কৌশল হিসেবে দেখছেন।
এখানে বলে রাখা ভাল যে, ভারত সরকার কোভিড-২০১৯ অতিমারী প্রশ্নে ২৬/০৬/২০২০ তারিখে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল। সম্প্রতি ২৬/০২/২০২১ তারিখে আর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে International Commercial Passenger Services এর সব উড়ান ৩১/০৩/২০২১ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, এই নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহন এবং DGCA-র অনুমোদিত উড়ানের ক্ষেত্রে কার্যকরী হবেনা।
মোদীর এই সফর নিয়ে এত হৈচৈ’য়ের কারণ কি?
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফর এবং স্বাধীনতা দিবসের সুবর্ণ জয়ন্তীতে অংশগ্রহণ সম্ভবত অন্য আর দশটি বিদেশ সফরের মতোই সাদামাটা থাকত যদি তিনি সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠান শেষে ভারতে ফিরে আসতেন। মোদীর এই সফরে যুক্ত হয়েছে গোপালগঞ্জ জেলার ওড়াকান্দি নামে একটি গ্রাম যা সারা বিশ্বের মতুয়াদের পবিত্র ধর্মক্ষেত্র হিসেবে সুপরিচিত। হরিচাঁদ ঠাকুর এই গ্রামে বাস করেই অসংখ্য মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মতুয়া ধর্ম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং বাংলার নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষকে একত্রিত করে ব্রাহ্মণ্যবাদের নাগপাশ থেকে মুক্ত করেছিলেন।
ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ২৭ মার্চ, ২০২১ ভারতের প্রধানমন্ত্রী এই “মতুয়াধামে” শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবেন। বিষয়টিকে আরো আবেগঘন করার জন্য তিনি “কামনা সাগর”-এ স্নান এবং ওড়াকান্দির চণ্ডাল বাড়িতে খাদ্যগ্রহণ করে সারা বিশ্বের মতুয়াদের শ্রদ্ধাভাজন হওয়ার চেষ্টা করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর সফরে ওড়াকান্দিকে এত গুরুত্ব দিচ্ছেন কেন?
হরিচাঁদের মতুয়া ধর্মের প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে ওড়াকান্দি দলিত, পতিত এমনকি গরিব মুসলমান সমাজের এক বৌদ্ধিক আন্দোলন ক্ষেত্রে পরিণত হয়। ভক্তিবাদী আন্দোলনের পীঠস্থান ওড়াকান্দি থেকে জমিদারতন্ত্রের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন হরিচাঁদ। অন্য দিকে মতুয়া ধর্মের সত্য, প্রেম, পবিত্রতার বাণী এবং সরল গার্হস্থ্য ধর্ম ব্রিটিশ শাসকদেরও সমীহ আদায় করে নেয়। হরিচাঁদের এই স্বতন্ত্র বিচারধারা আরো বেগবান হয়ে ওঠে তাঁর সুযোগ্য পুত্র গুরুচাঁদের হাত ধরে। তিনি বাংলার পতিত সমাজকে শিক্ষিত ভদ্রলোকদের সমকক্ষ করার জন্য গ্রামে গ্রামে শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে তোলার উপর জোর দেন। বাংলার ৩১টি বঞ্চিত জাতিকে একত্রিত করে বহুজন সমাজ গড়ে তোলেন এবং ব্রিটিশদের কাছ থেকে শিক্ষা, চাকরির ক্ষেত্রে সংখ্যা অনুপাতে প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার আদায় করেন। এই বঙ্গীয় তপশীল ভুক্ত জাতি আইন-১৯০৯ বা মর্লি-মিন্টো সংস্কার আইনের জন্যই অনুন্নত সমাজের প্রতিনিধিরা শিক্ষা, চাকরি এবং আইন সভায় প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পায়। বাবা সাহেব ডঃ বিআর আম্বেদকর তাঁর নিজের রাজ্য মহারাষ্ট্র থেকে হেরে গেলে এই মতুয়া সমাজই বাংলা থেকে তাঁকে নির্বাচিত করে সংবিধান সভায় প্রেরণ করেন। এই কঠিন লড়াইয়ে অন্যতম কাণ্ডারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বরিশালের যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল।
ভারত বিভাজন এই সংগঠিত মতুয়া শক্তিকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দেয়। দ্বিখণ্ডিত বাংলায় জাতিদাঙ্গার ক্ষত বুকে নিয়ে লক্ষ লক্ষ ছিন্নমূল মানুষ দেশের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে আসতে বাধ্য হন। কারো জায়গা হয় কুপার্স ক্যাম্প, দণ্ডকারণ্য, মানা ক্যাম্প, মালকানগিরি, নৈনিতালে। কেউ চালান হয়ে যায় আন্দামানে। লক্ষ লক্ষ মানুষ রেল লাইনের ধারে, জঙ্গলাকীর্ণ খাস জমিতে আশ্রয় নিয়ে বাস করতে থাকেন বছরের পর বছর। ভারতে সাধারণ ভাবে বসবাস করার সূত্র ধরেই এই মানুষগুলি ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠেন। জোগাড় করে নেন রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড বা পাসপোর্ট।
২০০৩ সাল পর্যন্ত দেশ বিভাজনের বলি ছিন্নমূল উদ্বাস্তু মানুষদের ভারতে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপর কোন প্রশ্ন ওঠেনি। ২০০৩ সালে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের ২/(১)/(বি) ধারায় “অবৈধ অনুপ্রবেশকারী” অর্থাৎ বিদেশি যারা-
(১) বৈধ পাসপোর্ট বা ট্রাভেল ডকুমেন্টস বা কর্তৃপক্ষের দ্বারা অনুমোদিত নথিপত্র না নিয়ে প্রবেশ করেছে বা
(২)বৈধ পাসপোর্ট বা ট্রাভেল ডকুমেন্টস বা কর্তৃপক্ষের দ্বারা অনুমোদিত নথিপত্র নিয়ে প্রবেশ করেছেন কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেছে” এই ঘোষণার মাধ্যমে উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্বের বৈধতার উপর প্রশ্ন তুলে দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে বলা হয় যে, হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্শি বা খ্রিস্টান যিনি আফগানিস্তান, বাংলাদেশ বা পাকিস্তান থেকে ২০১৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বরে মধ্যে ভারতে এসেছেন এবং যিনি ১৯২০ সালের পাসপোর্ট আইন এবং ১৯৪৬ সালের বিদেশি আইন বা তার বিধি অনুপাতে ছাড় পেয়েছেন তিনি “অবৈধ অনুপ্রবেশকারী” হিসেবে গণ্য হবেন না। এরা আইন মতে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য বা ন্যাচারালাইজেশনের জন্য অনুমতি পাবেন। ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯ এই আইন পাশ হলেও এটিকে কার্যকরী করার রুলস তৈরি করতে পারেনি বর্তমান ভারত সরকার। পাশাপাশি ভারতের সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষা না করার জন্য এই আইনের বিরুদ্ধে ১৫০টিরও বেশি জনস্বার্থ মামলা রজু হয়েছে। এই আইনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে জাতীয় জনপঞ্জি (NPR) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (NRC)। যার ফলে উপযুক্ত কাগজ না থাকা ৪০% মানুষই বেনাগরিক হয়ে যাবার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন দেশের শ্রম এবং উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত থাকা আদিবাসী-মূলনিবাসী বহুজন মানুষ। আর এই আশঙ্কা থেকেই সারা ভারত জুড়ে এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-২০১৯ এর বিরুদ্ধে প্রবল বিক্ষোভ হয়েছে। মানবতার পরিপন্থী হিসেবে এই আইন জাতিসংঘে নিন্দিত হয়েছে।
আসামে “জাতীয় নাগরিকপঞ্জি” বা এনআরসি’র নামে ভয়াবহ তাণ্ডব দেখার পরে সারা ভারতের আদিবাসী, মূলনিবাসী এবং দেশ বিভাজনের শিকার ছিন্নমূল উদ্বাস্তুরা অত্যন্ত উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়ে। বিশেষত আসামের নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ যাওয়া ১৯০৬৬৫৭ জন মানুষের তালিকায় ভারত বিভাজনের বলি ছিন্নমূল উদ্বাস্তু এবং আদিবাসীর সংখ্যাই সব থেকে বেশি। বাদ পড়া নাগরিকদের মধ্যে ১২ লক্ষের বেশি হিন্দু উদ্বাস্তু। বাদ পড়েছেন ১ লক্ষের বেশি গোর্খা, লক্ষাধিক আদিবাসী যাদের মধ্যে আছে বোড়ো, রিয়াং হাজং,চাকমা। রয়েছেন আসামে চাবাগান পত্তনকারী সাঁওতাল, কোড়া, ওঁরাও, মুণ্ডা আদিবাসীরা এবং রয়েছেন কৃষি ও শিল্পে আসামকে অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য অবিভক্ত ভারতের চট্টগ্রাম, রাজশাহী থেকে আসা মুসলমান নাগরিকেরা। আর বিস্ময়কর ভাবে এই বাদ পড়া নাগরিকদের একটি বিশাল সংখ্যা হল LGBT সমাজের মানুষ।
“নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-২০১৯ মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেবে”, এই রকম একটি খুড়োর কল ঝুলিয়ে রেখে মতুয়াদের ভোট ব্যাংক নিজেদের ঘরে নিয়ে আসতে পেরেছিল বর্তমান বিজেপি সরকার। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সবকটি জেলায় মতুয়াদের ভোটই রাজনৈতিক দলগুলির ভবিষ্যৎ গড়ে দেয়। মোট কথা মতুয়া এবং আদিবাসীদের উপর ভর করেই বাংলার রাজনৈতিক ক্ষেত্রে জাঁকিয়ে বসেছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সহ বিজেপি দলের ছোটবড় নেতারা বারবার মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেবার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো তা রক্ষা করতে পারেননি। এই নিয়ে প্রচণ্ড বিক্ষোভ তৈরি হয়েছে মতুয়া সমাজের মধ্যে। গত ২১ মার্চ রবিবার মতুয়া সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের পিতা মঞ্জুল ঠাকুর ভারতে অবস্থিত “মতুয়া ধাম” ঠাকুরনগরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ব্যক্ত করেন যে, “মতুয়া সমাজের ভোট বিজেপির ঘরে না গেলে “সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘ” তার দায় নেবে না। তিনি আরো জানান যে, মতুয়ারা রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে ৩০টি আসন চেয়েছিল। বিজেপি তাঁদের জন্য একটি আসনও বরাদ্দ করেনি। তাই মতুয়াদের এই ক্ষোভ অন্যায় কিছু নয়। মতুয়াদের এই অসন্তোষ যে বিজেপি দলের বাংলা দখলের পথে সব থেকে বড় অন্তরায় হতে চলেছে এই আশঙ্কা করেই নরেন্দ্র মোদী ওড়াকান্দিতে গিয়ে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। তিনি মনে করছেন যে, মতুয়া বিধিমতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে পারলেই ভারতের মতুয়াদের মধ্যে একটি আলাদা আবেগ সঞ্চারিত হবে এবং মতুয়াদের সামনে রেখে বাংলা দখল সহজ হয়ে যাবে।
সফর শেষে সাম্প্রদায়িক আগুনের আশঙ্কা
২০১৪ সাল থেকে বিজেপি, আরএসএস এবং চরম হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি দলিত এবং মুসলমানদের উপর আক্রমণ নামিয়ে আনে। রোহিত ভেমুলার প্রাতিষ্ঠানিক হত্যাকাণ্ড ঘটে। নাজিব গুম হয়ে যায়। ভিড়তন্ত্র খুন করে একলাখ, জুনায়েদ, তাবরেজকে। ধর্ষিতা হয় শতশত আসিফা এবং মনীষা। ধর্ষকদের পক্ষ নেয় বিজেপি। তাই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-২০১৯ পাশ হলে সম্মিলিত ভাবে দেশের আদিবাসী-মূলনিবাসী সমাজ গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এই আইনকে বাতিল করার দাবিতে সব থেকে সোচ্চার প্রতিবাদ জানায় ভারতের মুসলিম সমাজ। প্রচণ্ড শীতকে উপেক্ষা করে শুরু হয় শাহিনবাগ আন্দোলন। দেশের শিল্পী, সাহিত্যিক ও প্রগতিশীল মানুষেরা যুক্তি দিয়ে বোঝান যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-২০১৯ এর মাধ্যমে বিজেপি সরকার প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বৈরিতা বাড়াতে চাইছে। এই আইনে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্শি বা খ্রিস্টান যেসব মানুষ ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁদের নাগরিকত্ব দেবার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আখেরে এই আইনে উল্লেখ করা হয়েছে যে প্রতিবেশী এই তিনটি দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন হয় এবং উক্ত নিপীড়নের জন্যই ৩১৩১৩ জন মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন এবং তাঁরা ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবার জন্য নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছেন(Report of the Joint Committee/2016/pg 39)। বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যেই ভারতের এই দাবি খণ্ডন করেছে। তারা পরিষ্কার জানিয়েছে যে, ১৯৭১ যুদ্ধের সময় যে শরণার্থীরা ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁদের সকলেই স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী তাঁদের সব সুবিধা দেওয়া হচ্ছে তাই বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের আরোপ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
আমরা কিন্তু সিঁদুরে মেঘ দেখছি! ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের ঘিরে বাংলাদেশে প্রতিবাদ হচ্ছে। ছাত্রযুবরা নানা ইস্যু তুলে প্রতিবাদ করছেন। প্রতিবাদ করছে বাংলাদেশ কম্যুনিস্ট পার্টির সদস্যগণ এবং নানা মানবাধিকার সংগঠন। কিন্তু বাংলাদেশের কিছু মৌলবাদী শক্তি যে ভাষায় প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে উঠেছে তা হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের তত্ত্বকেই ইন্ধন জোগাবে। এই হিড়িকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনা বাড়লে, গ্রামে গ্রামে অগ্নিসংযোগ ঘটলে, খুন জখম হলে পশ্চিমবঙ্গে সেই আগুনের আঁচ লেলিহান হয়ে জ্বলে উঠবে। ওপারের মুসলিম ধর্মীয় জিগির এপারের হিন্দুত্ববাদীদের উৎসাহিত করবে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় নিপীড়নের জন্য ভারতে আশ্রয় নেয় বিশ্ব জুড়ে এই তথ্য প্রচার করতে সুবিধা হবে। আর এই ভয়ঙ্কর আবহে হিন্দু-মুসলিম বৈরিতার আবেগকে কাজে লাগিয়ে বাংলা দখল করার দামামা বাজিয়ে দেবে বিজেপি।
এই হনুমান নেতার মুর্দাফরাশ সত্যিই খুব জরুরি।
শরদিন্দু দাদা, আর দেখ, মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদী বাম ছাত্র মিছিলে প্রতিদিন পুলিশলীগ+ ছাত্রলীগ নিয়মিত সহিংস হামলা করছে, প্রতিদিন রক্ত ঝরছে।
তবু এপার বাংলা-ওপার বাংলা তালেবান-শ্রীরাম রোখার সময় এখনই। লড়াই জারি আছে।
উজো, উজো, উজো!
#GoBackModi
অল্পবয়সী ছেলেমেয়েগুলোকে সেদিন কী ভাবে মারল বাংলাদেশী পুলিশ !!! আবার দাঙ্গা !!!! ওদেশের সরকারের এ-ই সময়ে সফরের অনুমতি দেওয়া উচিত হয়নি।
প্রতিভা দি,
জনতার সংগ্রাম চলবেই, আমাদের সংগ্রাম চলবেই, চলবে! (স্বাধীন বাংলা বেতারের গান, ১৯৭১)...
লেখাটি প্রকাশ করার জন্য গুরুচন্ডালিকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
লেখাটি ভালো। তথ্যভিত্তিক। এবং লেখক যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে, তা অক্ষরে অক্ষরে সত্যি। এমনকি তাঁর সফরের আগে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্লটটিও সযত্নে সাজানো। তবু বোধহয় ১৯০৯-এর মন্টে-মির্লো সংস্কারে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষরা আনুপাতিক হারে আইনসভায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পাননি। সেটা নির্ধারিত হয়েছিল পুনে চুক্তিতে, ১৯৩৪ সালে।
মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতির এই দড়ি টানাটানি খুব নতুন কিছু নয়। এর আগে বড়মার শতবার্ষিকী যাপন কিংবা মুকুল রায় অথবা গৌতম দেবের বড়মার কাছে কৃপাভিক্ষা, সে কথাই স্পষ্ট করে।
প্রসঙ্গত সমস্ত মতুয়া নমঃশূদ্র হলেও সমস্ত নমঃশূদ্র মতুয়া নন এবং তাঁদের অধিকাংশই ঠাকুরবাড়ির এই একচেটিয়া গুরুবাদের তীব্র বিরোধী।
শরদিন্দু উদ্দীপনের লেখা অনেকদিন বাদে পড়লাম। শরদিন্দু, নাগরাজ, জগদীশ রায় প্রমুখ দলিত চিন্তাবিদদের এই সময়ে আরও বেশি প্রকাশিত হওয়া উচিৎ।
ধন্যবাদ সোমনাথ রায়।
আপডেট : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে মৌলবাদী দল হেফাজতে ইসলামের সংগে পুলিশের সংঘর্ষ চট্টগ্রামে মাদ্রাসা ছাত্রসহ অন্তত চারজন নিহত হয়েছে।
ঢাকা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বেশ কিছু অঞ্চলে শুক্রবার একই দিনে একই ইস্যুতে জুমার নামাজের পর ইসলামপন্থী বিভিন্ন সংগঠনের সংগে পুলিশের সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ শত শত মানুষ আহত হন।
দিনটি ছিল ২৬ মার্চ, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।
#
বিস্তারিত : মোদির সফর ঘিরে বিক্ষোভ–সংঘাত https://www.prothomalo.com/photo/glimpse/মোদির-সফর-ঘিরে-বিক্ষোভসংঘাত
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আর আমাদের ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে পার্থ্যক্য টা কোন জায়গায় বলুন তো ??দুটোই তো এক মাল !!আমাদের এই ষণ্ডা টা গেছে মতুয়া ভোট আর মুসলমান ভোট দুটোই বাগাতে !১ মতলব এইটাই !!একটা ভন্ড ।...কুচক্রী ।...যে নিজের কার্য্য সিদ্ধির জন্য যত দূর সম্ভব নিচে নামতে পারে ।..চূড়ান্ত ধরনের বজ্জাত লোক !!আর উনি মানে হাসিনা দিদি ।..মুজিবর রহমানের নাম কলংকিত করে অনেক কূটকচালি করে মসনদে আসীন !!১৪ জন প্রতিবাদী কে ফায়ারিং স্কোয়াডে গুলি করে মারেন ওনার বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্র করার অপরাধে , কি সেই অপরাধ তার বিচার হয় নি !!বাংলাদেশের যুবক যুবতী , অধ্যাপক বুদ্ধিজীবী এবং অগণিত সাধারণ মানুষ মোদী নামক ফ্যাসিস্ট শাসক কে যখন ধিক্কার জানায় ।...একটা কলঙ্কময় লোক বলে ধিক্কার দেয় ।..তখন এটা বুঝ্তে কি কারো অসুবিধে হয় যে কে ঠিক আর কে বেঠিক ??? রাষ্ট্রের পয়সা খরচ করে তুমি বাঞ্চোৎ মতুয়া আর মুসলিম তোষণ করবে তোমার রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে ।..সবাই মেনে নেবে ???ভারত আর বাংলাদেশকে বোকা ভাবছে এই দুই নেতা নেত্রী !!সালা চুতিয়া !!!
আপডেট : মোদির সফরের প্রতিবাদ ইস্যু বাম হয়ে উগ্র ডান মৌলবাদী আন্দোলনে এ পর্যন্ত মাদ্রাসা ছাত্রসহ ৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। শনিবারও চট্টগ্রামের হাটহাজারি, ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ হয়েছে। হেফাজত ইসলাম রোববার দিনমান হরতাল ডেকেছে।
#
এর জেরে গত দুদিন ধরে বাংলাদেশে ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বেশ কিছু অঞ্চলে ইন্টারনেট পরিষেবাও মারাত্মক বিঘ্নিত হচ্ছে বলে খবরে প্রকাশ।
আপডেট : মোদি সফরের বিরোধিতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশ-বিজিবির সংগে হেফাজত ইসলামের সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর জানা গেছে।
এ নিয়ে শুক্র ও শনিবার চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজত তাণ্ডবকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মোট ১০ জন নিহত হলেন।
দেখুন : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গুলিতে পাঁচজন নিহত https://www.prothomalo.com/bangladesh/district/ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়-গুলিতে-পাঁচজন-নিহত
এই সন্তোষ লোকটা শেখ হাসিনাকে 'খানকি মাগি' লিখেছে!! আর গুপু সেটা বরাবর রেখে দিয়েছে! এ আইটেম ত লগিন করে লিখে গেছে। কারা যেন বলে গালি ঠ্যাকাতে লগিন দরকার!!??
এর বাড়িতে, যে পরিবেশে থাকে, সেখানে হয়ত এই সন্তোষ মহিলাদের অপছন্দ হলেই 'খানকি মাগী' বা চুতমারানি' বলে সম্বোধন করে ফলে সেই অভ্যাসেই গুরুতে লিখেছে। এর ইমেল আইডিতে যোগাযোগ করে জানানো উচিৎ যে এগুলো সভ্য জগতের ভাষা নয়।
আর যদি ইমেল করে জানানো হয়, তাহলে এটাও জানানো হোক যে যৌনকর্মী যিনি তাঁকে অপমান করার কোন অধিকার এর নেই।
ঠিক কথা দাদা একদম ঠিক বিষাক্ত রাজনীতি কখনো বাবা সাহেব কখন মতুয়া ভাই কখন বৌদ্ধদের নিয়ে রাজনীতি করেন দরকার পড়লে hajaeatbsl জন্ম মসজিদ এ গিয়ে হাত্তে দেন কারণ নিজের নকল trp বাড়ানো। তার মতো মিথ্যে নৌতানকি বাজ কম আছে