ছোট ও সাধারণ বাস, নাম শেখ সাদি (র) পরিবহন, নিচে লেখা আল্লাহর দান মায়ের দোয়া। সেই বাসে করে আমি জগন্নাথপুর থেকে সিলেট আসছিলাম, যাত্রাকাল এক ঘন্টা চল্লিশ মিনিট। আমি বসেছিলাম পিছনের দিকের এক আসনে, এবং আমার পাশে যিনি বসেছিলেন তার গড়ন হালকা পাতলা, বয়স হবে ষাট বা তার উপরে।
তার মাথায় খাটো ছোট চুল, এবং হাতে ছিল ঘিয়া রঙের কাপড় দ্বারা নির্মিত পুঁটলি বিশেষ। তিনি তা তার কোলের উপর রেখে জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়েছিলেন, যখন আমি গিয়ে বসলাম তার পাশে।
তিনি অল্পক্ষণ আমার দিকে তাকালেন, এবং এরপর বললেন, যাইতেছেন কোথায়?
আমি উত্তর দিলাম, সিলেট।
এরপর আমার কেন জানি মনে হল তাকেও জিজ্ঞেস করা দরকার কোথায় যাচ্ছেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কোথায় যাচ্ছেন?
ভদ্রলোক বললেন, রশিদপুর। এখানে এই জগন্নাথপুরে আসছিলাম এক কাজে কিন্তু কাজটা হয় নাই। বাবা, আপনার বাড়ি কি এই জায়গায়?
জ্বি। আপনার বাড়ি?
আমার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
গাড়ি চলতে শুরু করল।
ভদ্রলোক নানা বিষয়ে প্রশ্ন করা শুরু করলেন। কী করি, দেশের বাইরে যাচ্ছি কি না, ইত্যাদি। দেশের বাইরে যাবার প্রশ্নটা তিনি করলেন কারণ ভদ্রলোক জানেন জগন্নাথপুর একটি প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা।
তার প্রশ্নের কারণে আমাকেও প্রশ্ন করতে হল, আপনি এখানে এসেছিলেন কোথায়?
ভদ্রলোক বললেন, সে এক লম্বা কাহিনী। একটা গল্প বলি?
বললাম, বলেন।
ভদ্রলোক বলতে শুরু করলেন, অনেক আগে হইছে কী, আমার পরিচিত এক লোকের মাইয়ারে আমি বিয়া দিয়া দিলাম এক আম্রিকান ফ্যামিলির পোলার লগে। পোলা আম্রিকা থাকে। মাইয়ারে আম্রিকা নিয়া গেল। তাদের সবাই আম্রিকা গেল গা। এখন আর আমারে চিনে না। বুজ্জো ব্যাপারডা?
ভদ্রলোকের মুখে একটা দুঃখী ভাব ছিল। তিনি জগতের লোকদের অকৃতজ্ঞতা বুঝাতেই গল্পটা তুললেন বলে আমার মনে হলো। আমি বললাম, হ্যা, এমনই হয়। অনেক মানুষ এরকম হয়ে থাকেন।
ভদ্রলোক বললেন, বেশিরভাগ, ৯৫ জন এইরকম।
এই ধরণের কথা শুনতে একরকম ভালো লাগে। মনে হয় ভালো শতকরা ৫ জনের মধ্যে শ্রোতা হিসেবে আমিও আছি।
এইরকম প্রায় ইতস্তত বা নির্দিষ্ট কোন প্রসঙ্গহীন কথাবার্তা আমরা বলে যাচ্ছিলাম। ভদ্রলোকের কথায় কথায় জেনে গেলেন যে আমি লেখালেখি করে, কয়েকটা বই প্রকাশ হয়েছে। জেনে তিনি খুবই খুশি হলেন। অন্যের বিষয়ে জানতে তার আগ্রহ অকৃত্রিম বলে মনে হলো আমার।
লেখালেখির প্রসঙ্গ উঠতেই ভদ্রলোক বললেন, কবি ছিল আগে। নজরুল, বিদ্রোহী কবি হইছেন, বিশ্বকবি হইছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আর বিদ্যাসাগর। পড়ালেখা কইরা সে বিদ্যার সাগর হইছে। মুসলমানদের মইদ্যে বড় হইল নজরুল, হিন্দুর মইদ্যে রবীন্দ্রনাথ, এমন আর এখন হয় না।
আমি বললাম, হ্যা, তারা তো অনেক বড় ছিলেন। ঐ জায়গায় বা তার কাছাকাছি যেতে সময়ের দরকারও আছে।
ভদ্রলোক বললেন, তাগো সমান হওয়া যাইব না। তবে তোমারে একটা কথা বলি, বাবা গরিবের পক্ষে থাকবা। গরিবের উপর হস্তক্ষেপ করবা না।
গাড়ি চলছিলো তাই স্পষ্ট সব কথা শোনাও যায় না। কিছুক্ষণ তিনি জানালার দিকে বাইরে তাকিয়ে রইলেন।
একটু পর আমাকে জিজ্ঞেস করলেন আমরা ভাইবোন কয়জন, বাড়িতে কে কে আছেন ইত্যাদি। এর উত্তর দিয়ে আমিও তাকে পালটা প্রশ্ন করি, আপনার ছেলেমেয়ে কয়জন?
ভদ্রলোক বললেন, এক ছেলে। বিয়া করবে। চারজন ছেলেমেয়ে মইরা গেছে। জন্মের পরে পরেই। আমার ধন নাই, জনও নাই।
শেষের কথাটি তিনি বললেন বেশ দুঃখের সাথে।
এরপর বললেন, আমরা ব্রাহ্মণ। একসময় আমরার ক্ষমতা ছিল। এখন আর কিচ্ছু নাই।
আমি বললাম, কিন্তু ব্রাহ্মণরা তো অত্যাচারীও ছিল?
ভদ্রলোক বললেন, আমরা না। দুই জাতের ব্রাহ্মণ আছে। জমিদার যারা ছিল, এরা অত্যাচার করতো। আমরা না। আমি অত্যাচারের বিরুদ্ধে খাড়াইছি সব সময়।
আমাদের এলাকায় একজন আছিল জমিদার। আলিশান বাড়ি তার। নাম কুমুদরঞ্জন মল্লিক।
কথা শুনতে শুনতে আমার জানতে ইচ্ছা হল যে ভদ্রলোক তার যুবক বয়েসে জীবনে কী হতে চান বা কী করতে চান বলে ভেবেছিলেন। কারণ এই ব্যাপারে আমি ভাবি। মানুষ প্ল্যান পরিকল্পনা করে কিছু হয় না হঠাৎ করেই ঘটনার ছিন্ন বিচ্ছিন্ন ঢেউয়ে একটা কিছু হয়ে পড়ে, এ নিয়ে আমি দ্বিধান্বিত থাকি প্রায়ই। জিজ্ঞেস করলাম, আচ্ছা, যুবক বয়েসে আপনি জীবনে কী হতে চান ভেবেছিলেন?
ভদ্রলোক আমার দিকে তাকিয়ে হাসিমুখে বললেন, ভাবছিলাম হইব কুমুদরঞ্জন মল্লিক। হইতে পারি নাই।
গাড়ি চলতে চলতে আমরা আরও নানা বিষয়ে কথা বললাম। দুয়েকদিন আগে নেপালের ত্রিভুবন বিমান বন্দরে বাংলাদেশের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। ভদ্রলোক এ নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করলেন। এক পর্যায়ে বললেন, একেবারে ত্রিভুবন দেখাই দিছে।
ভদ্রলোক একসময় বললেন, তোমাদের সিলেটে একজনরে মারল না কয়দিন আগে, জাফর না কি জানি নাম, এইডা কে?
আমি প্রথমে বুঝতে পারলাম না তিনি কোন ঘটনার কথা বলছেন। গত এক সপ্তাহ সিলেট শহরে ছিলাম না ও তেমন কোন খোঁজখবরও রাখি নি। আর যেকোন সময় সিলেটে বিএনপি বা আওয়ামিলীগ এর নিজেদের গ্রুপের মধ্যে বা পরস্পরের মধ্যে মারামারিতে একজন বা দুইজন মারা যেতে পারে সিলেটে, তা হলে অস্বাভাবিক বলা যায় না। মাঝে মধ্যেই এমন হয়। ফলে আমার একটু সময় লাগল বুঝতে এবং মনে পড়লো নয় দশ দিন আগের ঘটনা, মুহাম্মদ জাফর ইকবালের ছুরিকাঘাতের ব্যাপারে তিনি জিজ্ঞেস করছেন।
আমি প্রথমে বলা শুরু করেছিলাম, না, এমন কিছু তো শুনি নি...কিন্তু পরক্ষণেই জাফর ইকবালের ঘটনাটির ব্যাপারেই তিনি জিজ্ঞেস করেছেন বুঝতে পেরে বলি, ও হ্যাঁ, ইনি জাফর ইকবাল। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, লেখক, বিজ্ঞানী।
ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলেন, তারে মারল কেন?
আমি বললাম, যে ছেলেটি মেরেছে সে ভেবেছে তিনি ইসলামের শত্রু।
ভদ্রলোক বললেন, না না, এটা হয় না। কোন মানুষই কোন ধর্মের শত্রু হয় না। তারা বিচার বিবেচনা কইরা লেখে।
আমি তখন তাকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাদের সময়, মানে আপনাদের যুবক বয়সে কেমন ছিল সমাজ?
ভদ্রলোক বললেন, আমাদের সময় এমন মারামারি আছিল না। মারামারি যা হইত সব ডাকাডাকি, সামনা সামনি মাইর। ধর, কোন জমিদার তার লোক নিয়া ডাক দিল অমুকের সাথে মাইর হবে। সেই জমিদারও তার লাঠিয়াল নিয়া আইল। এমন এমন, বুজ্জো ব্যাপারডা?
আমি জিজ্ঞেস করলাম, আর হিন্দু মুসলমান সম্পর্ক কেমন ছিল?
ভদ্রলোক বললেন, তখন মানুষের মধ্যে মায়া আছিল। এখন নাই। তখন ধর তোমার সাথে বসে খাইব না, কিন্তু তাও মায়া ছিল। আর এত মানুষও আছিল না। রবীন্দ্রনাথ তার ভাইস্তিরে বিয়া দিল না নজরুলের লগে?
আমি বললাম, জ্বি।
কিছুক্ষন চুপ থেকে তিনি বললেন, আর পাকিস্তান বাংলাদেশ তো পরে। আগে সব ভারতবর্ষ ছিল। সৌদি উমান কাতার এগুলা তো সব হিন্দুরাষ্ট্র ছিল। পরে না ঐসবে ইসলাম হইল।
আমি বললাম, জ্বি।
এক্ষেত্রে সৌদি ওমান বা কাতার হিন্দুরাষ্ট্র ছিল না বা রবীন্দ্রনাথের ভাতিজি নজরুলের সাথে বিয়ে দেন নি এটা আমি বলতে পারতাম হয়ত, হয়ত ইতিহাসের সত্য তার সামনে উপস্থাপন করে দেখাতে পারতাম তারা হিন্দুরাষ্ট্র ছিল না। কিন্তু আমার তা করতে ইচ্ছাও হল না। কারণ সত্য জিনিসটা অদ্ভুত। একজন ব্যক্তি ষাট সত্তর বা আশি বছর বয়স ধরে যা বিশ্বাস করে আসছেন তা তার কাছে সত্য। সিরিয়াস কোন কারণ ছাড়া তার এই সত্য ভেঙ্গে দেয়ার চেষ্টা করা অন্যায় বলেই আমার মনে হল।
এরপর আরও কিয়ৎক্ষণ চুপ থাকার পর আবার কথাবার্তা শুরু হল আমাদের। এর মাঝে ভাড়া নেবার জন্য বাসের একজন কালোমতন লোক এলো। জগন্নাথপুর থেকে সিলেট ভাড়া ৫০ টাকা দিলাম আমি। ভদ্রলোকের রশিদপুর পর্যন্ত ভাড়া বাইশ টাকা। তিনি বিশ টাকা দিলেন। বাসের লোকটি ব্যস্ততার সাথে অন্যদের টাকা নিতে নিতে তাকে বলল, চাচা আরও দুই টেকা?
ভদ্রলোক বাইরের জানালার দিকে তাকিয়ে রইলেন। বাসের লোকটি দুই টাকার জন্য আর বেশি কিছু বললো না লক্ষ করলাম। সে অন্যদের ভাড়া নিতে নিতে চলে গেল।
ভদ্রলোক এবার রাজনীতির প্রসঙ্গে কথা বলা শুরু করলেন। তিনি বললেন, খালেদা জিয়ারে জেলে ঢুকানি ঠিক হয় নাই। তিনি সম্মানীয় লোক। সেনাপতির পরিবার। দুইবারের রাজা ছিল তার স্বামী, দুইবার তিনি নিজেই রানী হইছেন। এমন একটা ব্যক্তিরে জেলে ঢুকানি ঠিক হয় নাই। তোমার বিবেচনায় কী মনে হয়?
আমি বললাম, আমারও তাই মনে হয়।
ভদ্রলোক বললেন, একটা জিনিস আছে। সম্মানীর সম্মান রাখতে হয়। এইসব কথা শুনলে লোকে কইব আমি বিএনপি সাপোর্ট দেই। কিন্তু না। আমি আওয়ামিলীগই ভালোবাসি। ভালোবাসলেও যা সত্য তা আমি বলবই। ঠিক কি না?
আমি বললাম, ঠিক।
ভদ্রলোক বললেন, আমি মুজিবের সাথে নাস্তা খাইছি, মুশতাকের সাথে নাস্তা খাইছি, জিয়ার সাথে নাস্তা খাইছি, এরশাদের সাথে নাস্তা খাইছি। ধর্মগুরু তো।
আমি বুঝলাম ভদ্রলোক ঐতিহ্যবাহী মানী লোকের মান রাখার পক্ষে। তার নিজের ব্রাহ্মণ মান কমে যাবার সাথে খালেদা জিয়ার জেলে প্রবেশের পর মান কমে যাওয়াকে তিনি মেলাতে পারছেন হয়ত, তাই সহমর্মী হয়ে উঠেছেন।
এরূপ নানাবিদ কথাবার্তার সাথে সাথে একসময় বাস রশিদপুর পৌছে গেল। ভদ্রলোক আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নামটা যেনো কী?
আমি বললাম, মুরাদ।
রশিদপুর আসলে তিনি বাস হতে নামলেন। জানালার দিকে গিয়ে আমাকে লক্ষ করে চিৎকার করে বললেন, দেখা হবে মুরাদ। আবার দেখা হবে।
তার মুখে ছিল শিশুসুলভ হাসি। আমার ভাল লাগল। এর আগে যাতায়াতের সময় কোন অপরিচিত লোকের সাথে আমি এত কথা বলি নি। মনে হল লোকটির মধ্যে খুব সহজে অন্যের সাথে মিশে যাবার আশ্চর্য ক্ষমতা আছে।
মিনিট দুয়েক পরে গাড়ি যখন হালকা গড়াতে শুরু করেছে আবার তখন কী মনে করে আমি আমার প্যান্টের পকেটে হাত দিলাম এবং অস্বাভাবিক ঠেকল। মানিব্যাগের জায়গায় মানিব্যাগ নেই। ব্যস্তভাবে আমি পকেট খুঁজলাম। মানিব্যাগ বের না হয়ে একটি কাগজ বের হলো। তাতে লেখাঃ
নগদ যা পাও হাত পেতে নাও
বাকির খাতায় শূন্য থাক।
দূরের বাধ্য লাভ কি শুনে
মাঝখানে যে বেজায় ফাঁক।
- কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিক
কবিতাটি পড়ে আমার মাথা চক্কর দিয়ে উঠল। এই ভালো ভালো চেহারার লোকটি, এমন অমায়িক কথা বলা লোকটি, এইরকম একটা কাজ করতে পারলো? কীভাবে সম্ভব? মানুষের প্রতি তাহলে মানুষ বিশ্বাস রাখবে কীভাবে?
বাসের ভাড়া নিয়েছিল যে লোকটি আমি তাকে দ্রুত ডেকে বললাম, গাড়ি থামাও, আর আমার পাশে যে লোকটি বসেছিল সে কোনদিকে গেল?
আমি বেশ উৎকন্ঠিত ভাবে বলেছিলাম। লোকটি ড্রাইভারকে গাড়ি থামাতে বলল এবং দরজা দিয়ে ঝুঁকে বাইরে তাকিয়ে আঙুল দেখিয়ে বলল, ঐ যায়!
আমি গাড়ির দরজায় ঝুঁকে তাকালাম ওদিকে। দেখলাম ছাতা হাতে কালো শার্ট পরা একজন গাট্টাগোট্টা লোক হেঁটে যাচ্ছে।
আমি বাসের লোকটিকে বললাম, আরে এই লোক না। আমার পাশে যে বুড়ো লোক বসেছিল, শাদা পাঞ্জাবীর মতো পোষাক পরা, হাতে ঘিয়া রঙের পুঁটলি।
লোকটি চোখ বড় বড় করে বলল, আপনার সিটের লগে?
আমি বললাম, হ্যা, আমার সিটের পাশে।
লোকটি বিরক্ত মুখে গাড়িতে থাবা দিয়ে ড্রাইভারকে বলল, উস্তাদ টান দেন।
আর আমাকে বলল, আপনি গিয়া নিজের জাগায় বসেন। সিলেট যাইতে পঁচিশ মিনিট।
আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কিন্তু ঐ লোকটির কী হবে? আমার মানিব্যাগ নিয়ে সে চলে গেছে!
বাসের লোকটি নির্লিপ্ত ভাবে জবাব দিল, মানিব্যাগ খুইজা দেখেন। আপনার পাশের সিট ভাঙ্গা। ঐখানে আজ কেউ বসে নাই।
আমার মাথা দ্বিতীয়বারের মতো চক্কর দিয়ে উঠল। এবারেরটা আগেরবারের চেয়ে বেশি গভীর। আমি বাসের উপরের দিকে থাকা হাতল রড ধরে ধরে গিয়ে নিজের সিটে বসলাম। পাশের সিটে হাত দিয়ে দেখলাম কিছুটা নড়বড়ে। কিন্তু তার মানে এই না যে এখানে কেউ বসতে পারবে না।
ভেতরে নানা ধরণের চিন্তা ঘোরপাক খাচ্ছিল। উৎকন্ঠিত ও বিধ্বস্ত মন নিয়েই বাসায় ফিরলাম। প্যান্টের পকেটে মানিব্যাগ পাই নি। মোবাইল আর ঐ কবিতার কাগজ ছাড়া আর কিছুই নেই।
কিন্তু মানিব্যাগ পেয়েছিলাম সন্ধ্যার পরে। ব্যাগ খুলতে গিয়ে ব্যাগের মধ্যে পাই। তখন আমি আবার দ্বন্দ্বে পড়ে যাই। কুমুদরঞ্জন মল্লিককে কি এবার আমি বিশ্বাস করব, না অবিশ্বাস করব? অথবা সত্যিই কি তার সাথে আজ আমার দেখা হয়েছিল?