পাশের শহর থেকে লোহাগড়া গ্রামে পুলিশের বড় অফিসার দ্বিজদাস দত্ত এসেছেন। কালু সর্দারের খুন হওয়া এক ঘটনা, কিন্তু তার মূল উদ্দেশ্য লিডার আশরাফ আলী খান সাহেবের সাথে দেখা করা।
আশরাফ আলী খানের সাথে দেখা করে, তিনি বিকালের দিকে তালাশ মাহমুদের সাথেও দেখা করতে গেলেন। তালাশ মাহমুদের কুকুরটা যে মারা গেছে তা তিনি জেনেছেন।
তালাশ মাহমুদ তাদের বাসার বৈঠকখানায় ছিলেন। দ্বিজদাস দুঃখ প্রকাশ করলেন।
প্রাথমিক কথাবার্তার পর দ্বিজদাস বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে শুরু করলেন। রহস্য বিষয়ে তালাশ মাহমুদের আগ্রহ পত্র পত্রিকার মারফতে জেনেছিলেন দ্বিজদাস, তাই হুস্কা ক্যাসলের বিষয়টা না উল্লেখ করে পারলেন না।
দ্বিজদাস বললেন, আপনি এই বিষয়টায় আগ্রহ পাবেন। গত দুইদিন আগে পত্রিকাতে পড়লাম বহেমিয়া দখলের পর নাৎসিরা হুস্কা ক্যাসলে অবস্থান নিয়েছে। পত্রিকায় লিখেছে, ওখানে ওরা যাবতীয় সব গুপ্ত বিদ্যার চর্চা করে যাচ্ছে।
তালাশ মাহমুদ অবিশ্বাসের সুরে বললেন, যুদ্ধ বাদ দিয়ে এসব করে বেড়ালে হবে?
দ্বিজদাস বললেন, মনে হয় বিশ্বাস করলেন না। কিন্তু ভেবে দেখুন, নাৎসিদের বিশ্বাসের সাথে কিন্তু যায়, তারা সারা ইউরোপ থেকে গুপ্ত বিদ্যার বইগুলা সংগ্রহ করছে এই খবর তো অনেক আগে থেকেই বের হচ্ছে। আর এখন সরাসরি পৌঁছে গেছে নরকের দ্বারে। হুস্কা ক্যাসল তো সেই নরকের দ্বারের উপরেই। সেখান থেকে যদি নারকীয় শক্তি বের করে আনতে পারে, পৃথিবীকে আর বাঁচানো যাবে না।
তালাশ মাহমুদের হুস্কা ক্যাসল নিয়ে জানা ছিল। জনশ্রুতি আছে বহেমিয়ার এক জঙ্গলাকীর্ণ অঞ্চলে এক বিশাল অতল গর্ত ছিল। এই গর্ত থেকে রাতে বিকট সব জান্তব চিৎকার শোনা যেত। নানাভাবে এই গর্তের কোন তল আছে কি না তা মাপার চেষ্টা করা হয়েছে। বড় বড় পাথর খণ্ড নিক্ষেপ করা হয়েছে, কিন্তু সেগুলি কোথাও পৌঁছে নি। শেষে এক পর্যায়ে একজন ডিউক দাগী আসামীদের মুক্তির শর্তে দড়ি বেঁধে নামিয়ে দিয়েছিলেন গর্তে। এদের যারা ফিরে এসেছিল দড়ি ধরে, এদের কেউ শারীরিক বা মানসিক ভাবে কখনো সুস্থ হয় নি। চুল দাড়ি পেকে একেকজনের বয়েস যেন ত্রিশ চল্লিশ বছর বেড়ে গিয়েছিল, আর কী দেখেছে কিছুই বলতে পারে নি কারণ তাদের তখন আর কোন মানসিক ভারসাম্য ছিল না।
এই গর্ত থেকে বের হয়ে আসা বিকট দর্শন জন্তু নাকি মানুষের বাচ্চাদের ধরে নিয়ে যেতে শুরু করেছিল একসময়। তখনই ১৩০০ সালের দিকে এর উপর নির্মাণ করা হয় হুস্কা ক্যাসল। শক্ত করে বন্ধ করে দেয়া হয় সেই গর্ত, নরকের দ্বার।
বিভিন্ন জন বিভিন্ন সময়ে এই ক্যাসলে শয়তানি শক্তির উপাসনা করেছে কালো শক্তিতে শক্তিমান হতে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউই সফল হতে পারে নি।
তালাশ মাহমুদ ভ্রূ কুঁচকে বললেন, আপনে এসবে বিশ্বাস করেন?
দ্বিজদাস বললেন, বিশ্বাস অবিশ্বাস পরের ব্যাপার। কিন্তু ব্যাপারগুলা তো আপনারই কাজের বিষয়। ঠিক কি না?
তালাশ মাহমুদ বললেন, তা ঠিক। কিন্তু আমি যুক্তি দিয়ে বিচার করে সমাধান করতে চেষ্টা করি। সব সময় যে পারি সমাধানে যেতে এমন না।
তালাশ মাহমুদ খেয়াল করলেন দ্বিজদাস একটু ইতস্তত করছেন। পুলিশের একজন বিভাগীয় প্রধান কালু সর্দারের খুনের জন্য এই গ্রামে এসেছেন তালাশ মাহমুদ বিশ্বাস করেন না। তার আসার অন্য কোন কারণ আছে। তালাশ মাহমুদ সেটা বুঝার চেষ্টা করছিলেন।
দ্বিজদাস এই সময়ে বললেন, পৃথিবীতে ভালোর শক্তি শেষ হয়ে যাচ্ছে মাহমুদ সাহেব। সব আপনার যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারবেন না। এই যুদ্ধটা না লাগলেও হতো। তাছাড়া আমাদের দেশের দিকেই দেখেন, কেমন অশান্ত পরিস্থিতি। ঢাকায় বড় ঝামেলা হবে আভাস পেলাম। স্যারের এই সময়ে ঢাকায় থাকা দরকার। স্যারকে অনুরোধ করলাম। কিন্তু তিনি এখানে একটা বড় আয়োজনে আটকা পড়ে গেছেন। আপনি কি উনাকে একবার রিকুয়েস্ট করবেন আমাদের হয়ে?
তালাশ মাহমুদ বললেন, আমার কথা তো উনি শুনবেন না। আর এখানের আয়োজন একাই সামাল দিচ্ছেন। তাও, আমি বলে দেখব। ঢাকায় কী নিয়ে ঝামেলা হবে বলছেন?
দ্বিজদাস বললেন, আপনাকে বলতে বাধা নেই। একটা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চক্রান্ত হচ্ছে বলে আমাদের কাছে খবর আছে।
তালাশ মাহমুদের তখন মনে হলো আশরাফ আলী খান ও তার স্ত্রীর সেই তর্কের কথা, যা তিনি বাইরে থেকে শুনেছিলেন।
কথাবার্তার শেষপর্যায়ে দ্বিজদাস বললেন, মাহমুদ সাহেব আপনার কোন রকম সাহায্য লাগলে আমাদের জানাবেন।
তালাশ মাহমুদ বললেন, আপনি যদি লোকাল পুলিশদের বলে রাখেন আমার ব্যাপারে তাহলে ভালো হয়। কয়েকদিনের মধ্যে আমার পুলিশের সাহায্যের দরকার হতে পারে।
দ্বিজদাস বললেন, আপনার কি ফোর্স লাগবে, কাউকে সন্দেহ করছেন কালুর হত্যা বা আপনার কুকুরের মৃত্যু বিষয়ে? নাকি আরো বড় কিছু?
তালাশ মাহমুদ বললেন, আমি বড় কিছুর সন্দেহ করছি। কয়েকজন পুলিশ সদস্য লাগতে পারে।
দ্বিজদাস বললেন, কোন সমস্যা নেই, আমি লোকাল ফাঁড়িতে আপনার জন্য কয়েকজনকে রেডি রাখব। আপনি লোক পাঠালেই এরা চলে আসবে। যাওয়া আসাটা একটা সমস্যা, অনেক সময় লেগে যায়।
যেদিন গ্রামে শিন্নী হবে ওইদিনই মধ্যরাতে রাতে তালাশ মাহমুদের দরজায় ধাক্কাতে লাগলো লালফর। তালাশ মাহমুদের ঘুম আসছিল না, কেবল শুয়েছিলেন। তিনি দরজা খুলতেই লালফর তার পায়ে ঝাঁপিয়ে পড়লো।
লালফরের সারা শরীর ঘামে ভর্তি।
তালাশ মাহমুদ কিছু বলে উঠার আগেই লালফর কাঁদতে কাঁদতে বলল, স্যার আমারে মাফ কইরা দেন, স্যার আমারে মাফ কইরা দেন।
তালাশ মাহমুদ লালফরকে পা থেকে সরাতে সরাতে জিজ্ঞেস করলেন, কী হয়েছে লালফর, কী হয়েছে আগে বলো?
লালফর বলল, স্যার, বব স্যাররে মাইরা ফেলছে।
লালফর ডুকরে কেঁদে উঠলো।
তালাশ মাহমুদ বললেন, কে মেরে ফেলছে?
লালফর বলল, স্যার, উনি পাপের শাস্তি পাইছেন, এইবার আমার শাস্তি হবে। স্যার আপনে আমারে বাঁচান।
তালাশ মাহমুদ লালফরকে ধমক দিয়ে বললেন, লালফর, কী হয়েছে আমারে খুলে বলো?
লালফর বলল, বব স্যার আর আমি জঙ্গলে গেছিলাম আইজ ফকিরের ঘরে যাইতে, কিন্তু দীঘির ধারে এক নীল আলো আইসা বব স্যাররে নিয়া যায়। স্যার হার্মিসরে মারার বুদ্ধি বব স্যার দিছিলেন, যাতে আপনে ফকিরের বিরুদ্ধে যান। এর শাস্তি উনি পাইছেন। এইবার আমারে ধরবে, আমারে বাঁচান স্যার।
তালাশ মাহমুদ অল্প কিছুক্ষণ ভাবলেন। তারপর তার পিস্তল নিয়ে লালফরকে বললেন, চলো, ববের কী হয়েছে দেখে আসি।
লালফর প্রথমে ভয়ে যেতে চায় নি। পরে সম্মত হলো।
মধ্যরাতে হেঁটে তারা দিঘীর পাড়ে, জঙ্গলের কিছুটা ভেতরের দিকে গিয়ে দেখলেন এক জায়গায় ববের মৃতদেহ পড়ে আছে।
তালাশ মাহমুদ লালফরকে বললেন, এটা নিয়ে কাউকে কিছু বলার দরকার নেই। আমরা আজ রাতেই ফকিরের একটা ব্যবস্থা করব। আগে কিছু করে ঝামেলা বাঁধানোর দরকার নেই।
তালাশ মাহমুদের ভাবনা ছিল, পুলিশ নিয়ে রাতে সরাসরি ফকিরের বাড়িতে যাবেন।
ভোর রাতে তিনি ও লালফর পুলিশ ফাঁড়ির দিকে যাত্রা করলেন।
ওইদিন সকাল থেকেই শুরু হলো বড় শিন্নীর আয়োজন।
সকালে আশরাফ আলী খানের বাড়িতে আসলেন পুলিশ অফিসার দ্বিজদাস বাবু। ঢাকায় বড় ঝামেলা হয়েছে, আশরাফ আলীর দলের লোকজন সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামার সাথে জড়িত, তিনজন লোক মারা গেছে। অনেক দোকানপাট পুড়েছে, আহত হয়েছে অনেক মানুষ।
দ্বিজদাস বাবু এসেছেন আশরাফ আলী খানকে ঢাকা শহরে নিয়ে যেতে।
দ্বিজদাস বললেন, স্যার, আপনারে যে এইবার যেতে হয়। আমরা আগেই এর আশঙ্কা করেছিলাম, আপনাকে জানিয়েও গেলাম।
পাইপ টানতে টানতে আশরাফ আলী খান বললেন, দেখেন, আমি এইখানে এত কাজে ব্যস্ত। ঢাকায় কী হয়েছে তা আমার জানার কথা না। এখানে কাজ শেষ করে আমি ওখানে যাব, এর আগে নয়।
দ্বিজদাস বললেন, কিন্তু স্যার এত বড় ঘটনা, তিনজন মারা গেছে, এত লোক আহত হয়েছে, এত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, একজন সিনিয়র নেতা হিসেবে আপনার ওখানে থাকা দরকার পরিস্থিতি সামলাতে। এই ধরনের সাম্প্রদায়িক ইস্যুতে আপনারাই পারেন ঘটনা শান্ত করতে।
আশরাফ আলী পাইপে লম্বা টান দিয়ে বললেন, অন্যান্য নেতা যারা আছেন, তাদের সাথে যোগাযোগ করেন। আমি মাত্র কয়দিন বাইরে, এই কয়দিনও তারা সামলাতে পারলো না। নাকি তারাই এটা বাঁধিয়েছে আমারে বিপদে ফেলতে?
দ্বিজদাস বললেন, আপনার আর কি বিপদ স্যার?
আশরাফ আলী বললেন, আমার কী বিপদ বুঝতে পারলে আপনি আমার জায়গায় থাকতেন দ্বিজুবাবু। যান নিজের কাজে যান। এইসব ঘটনা এখানে কমবেশি হবেই, রাজনীতির এক প্রকার কলাটরাল ড্যামেজ।
অভিজ্ঞ অফিসার দ্বিজদাস আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন, এখন কথা বলে আরো নিশ্চিত হলেন এই দাঙ্গার পেছনে কার হাত। এই দাঙ্গার জন্যই আশরাফ আলী খান বাড়িতে এসে অন্যান্য আয়োজনে মত্ত আছেন।
তখন আশরাফ আলী খান সাহেবের বাড়িতে বিরাট শিন্নী চলছিল, অনেক মানুষ খেতে এসেছে, বিরাট বিরাট ডেকচিতে রান্না হয়েছে, চল্লিশটি গরু জবাই হয়েছে। মাঠের মধ্যে বিশাল তেরপল টাঙ্গিয়ে খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। মানুষদের বসতে দেয়া হয়েছে বাঁশের মধ্যে, খাবার দেয়া হচ্ছে কলাপাতায়।
সন্ধ্যা বেলায় এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটে গেল।
এক চক্রাকার নীল আলো এসে ঘুরতে লাগলো আশরাফ আলী খান সাহেবের বাড়ির উঠানে। আশরাফ আলী সাহেবের মেয়ে হাসনাহেনা উঠানে ছিল। তার ঠিক মাথার উপড়ে নীল আলো ঘুরতে লাগলো।
চানতারা বানুর অস্বস্তি হচ্ছিল সারাদিন, এই নীল আলোর নেমে আসা দেখে তিনি দৌড়ে এলেন উঠানে, এবং উন্মাদের মত চিৎকার করতে লাগলেন।
তখন সেখানে উদয় হলেন সাদা আলখেল্লা পরিহিত ফকির ফয়জুল্লাহ।
ফয়জুল্লাহ চিৎকার করে বললেন, এই দিনের জন্যই আমি বইসা আছিলাম রে পাগলা। এই সেই দিন।
ফকির ফয়জুল্লাহ তার বাঁকানো লাঠি দিয়ে মাটিতে আঘাত করে দাঁড়ালেন সেই ঘুরতে থাকা নীল আলোর নীচে, আশরাফ আলী খান সাহেবের মেয়ে হাসনাহেনা ফকির ফয়জুল্লাহর হাত ধরে ছিল।
নীল আলো বাড়তে বাড়তে মুহুর্তে চারপাশ ছেয়ে ফেললো।
চানতারা বানু জ্ঞান হারালেন।
আলো যখন চলে গেল সেখানে হাসনাহেনা এবং ফকির ফয়জুল্লাহকে দেখা গেল না।
তালাশ মাহমুদ পুলিশের কয়েকজন সদস্য এবং দ্বিজদাস বাবুকে নিয়ে যখন ফিরে আসলেন লোহাগড়া গ্রামে, তখন সন্ধ্যা নেমে এসেছে। তিনি শুনলেন সব কথা, ফকির ফয়জুল্লাহ হাসনাহেনাকে নিয়ে চলে গেছে।
গ্রামের মানুষেরা এত ভয় পেয়েছে যে কেউ ফকিরের আস্তানার দিকে যেতে সাহস পাচ্ছে না।
তালাশ মাহমুদ, দ্বিজদাস বাবু, লালফর, এবং কয়েকজন পুলিশ সদস্য ছুটলেন জঙ্গলে ফকিরের আস্তানার দিকে।
ভাঙ্গা বাড়িটার সামনে গিয়ে তারা দেখলেন ভেতরে আলো জ্বলছে।
তালাশ মাহমুদ প্রায় দৌড়ে গিয়ে লাথি দিয়ে দরজা খুলে ফেললেন। এবং দেখলেন, বৃদ্ধ ফকির ফয়জুল্লাহ বসে আছেন একটি ভাঙ্গা টেবিলের সামনে, সেই টেবিলে ছড়ানো ছিটানো নানা বই, এবং কাচের জার।
তালাশ মাহমুদ তার দিকে পিস্তল তাক করে বললেন, হাসনাহেনাকে কোথায় লুকিয়ে রেখেছেন?
ফকির ফয়জুল্লাহ তালাশ মাহমুদের দিকে তাকিয়ে হাসলেন। বললেন, সে জায়গামত পৌঁছে গেছে।
পাশ থেকে দ্বিজদাস বাবু পিস্তল উঁচিয়ে বললে, হেঁয়ালি করবেন না ফকির, আপনি এখান থেকে পালাতে পারবেন না। সরাসরি বলুন, কোথায় লুকিয়ে রেখেছেন মেয়েটিকে এবং আপনার উদ্দেশ্যই বা কী?
ফকির ফয়জুল্লাহ বললেন, এই মেয়ের দুনিয়াতে এক বিশেষ কাজ ছিল। হুস্কা ক্যাসলে যে নরকের দরজা খুইলা ফেলা হইতেছে, তা বন্ধ করার কাজ ছিল তার। সে না গেলে নরকের দরজা খুলে যাবে। সেই কাজের জন্যই তাকে পাঠাইয়া দেয়া হইছে। দুনিয়ার রক্ষকর্তারা দুনিয়ারে বাঁচাইতেই এই কাজ করছেন। একবার হুস্কা ক্যাসলের নারকীয় শক্তি যদি বাইর করতে পারে নাৎসিরা, তাহলে আর কিছুই থাকবে না বাছাধনেরা।
তালাশ মাহমুদ বললেন, আপনি কে?
ফকির ফয়জুল্লাহ শব্দ করে হেসে বললেন, আমি ফকির ফয়জুল্লাহ, আমি নিকোক্লাস ফ্লামেল, আমি জাবিরের গুপ্ত জ্ঞানের একমাত্র বাহক, আমি হার্মিস ট্রিস্মেগিস্টাসের রক্ত। আমি সময়ের স্তরে স্তরে ঘুরে বেড়াই, নিজের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাই, তোমরা আমারে বুঝবে না তুচ্ছ মানবের দল।
এই কথা বলে ফকির ফয়জুল্লাহ টেবিল উলটে দিলেন, এবং দাউ দাউ আগুনে ছেয়ে গেলো পুরো ঘর। তালাশ মাহমুদ এবং দ্বিজদাস বাবু, দুজনই গুলি ছুড়লেন। এবং আগুনের ঝাপটা দেখে বের লাফিয়ে হয়ে আসলেন ঘর থেকে। মুহুর্তের মধ্যে পুরো ঘর আগুনে ছেয়ে ফেললো।
বাইরে দাঁড়িয়ে অবাক দৃষ্টিতে দেখছিলেন তালাশ মাহমুদ, দ্বিজদাসবাবু, লালফর এবং পুলিশের সদস্যরা, এত দ্রুত আগুন বিস্তারিত হতে তারা এর আগে কখনো দেখেন নি। দ্বিজদ্বাসবাবু আগুন দেখতে দেখতে তালাশ মাহমুদকে আস্তে আস্তে বললেন, আলকেমিস্ট!