সাধারণভাবে আমরা জানি পদার্থের স্ট্যাটাস বা অবস্থা তিন প্রকার। কঠিন তরল এবং বায়বীয়। কিন্তু মানুষের স্ট্যাটাসের সংখ্যা অসংখ্য। এই বিচিত্র দুনিয়ায় বিচিত্র স্ট্যাটাসের উৎপত্তি হচ্ছে প্রতিদিন। ফেসবুকের কল্যাণে সেই স্ট্যটাসগুলো মনের কৃষ্ণগহবর থেকে বেরিয়েআসছে নির্দ্বিধায়। এই ফেসবুক স্ট্যটাস নিয়ে একটি গবেষণা করা যাক। কথায় আছে যার স্ট্যাটাস নাই তার কিছুই নাই। আবার বাংলা ছবির ডায়লগের মত ডায়লগ আছে, চৌধুরী সাহেব আমার ঘর নাই,বাড়ি নাই, কিন্তু স্ট্যাটাস আছে। এখন আপনার মেয়ে বিয়ে দিবেন কি না বলেন?
যাই হোক ইদানীং চৌধুরী সাহেব টাকা দিয়ে ভালবাসা কেনা যায় না পেইজের স্ট্যাটাসগুলোর মাধ্যমে বাংলা ছবির ডায়লগগুলোর মোহনীয় রূপ রস প্রত্যক্ষ করার ফলে কথায় কথায় ঢলিউডের ফিল্মের কথা আসল। তবে আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় স্ট্যাটাস। শুধুই স্ট্যাটাস।
প্রথমেই স্ট্যটাসকে বিভিন্ন ভাবে ভাগ করে আলোচনা স্টার্ট দেয়া যাক,
১।। ইংরেজি স্ট্যাটাস গোষ্ঠী: ফেসবুকে কিছু ব্যক্তিদের স্ট্যটাস দেখা যায় সবসময়েই ইংরেজিতে। এরা বাংলাদেশী বাংলাভাষী। তবে কী জন্য এবং কী উদ্দেশ্যে ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখও তারা স্ট্যটাস দেয়, বাংলা ইজ মাই মাদার টাঙ্গ,আই'ম রিয়েলি প্রাউড অফ দ্যাট! তা বোঝার মত ক্ষমতা আমার মত আপামর জনসাধারণের অন্তর্ভূক্ত একজনের নেই বলেই আমি মনে করি। আমি কিছুদিন আগ হতেই এই ইংলিশ ভাবাধর্মী ব্যক্তিদিগের স্ট্যাটাস সতর্কতার সাথে নিরীক্ষণ করলাম। কিন্তু তাহাদের এ হেন কার্যকলাপের হেতু বুঝিতে পারি নাই। চিন্তা করতেছি একদিন জিজ্ঞাসা করিব, ভ্রাতা/ভগিনি আপনার বাংলা বলতে কি লজ্জা হয়? সালাম বরকত রফিক জব্বারের কারণে আপনার এই লজ্জা পাইতে হচ্ছে! ওদের ইংরেজিতে অভিশাপ দিয়া একটা স্ট্যাটাস দেন!
২।। সাহিত্য প্রেমী স্ট্যাটাস: এই স্ট্যাটাস গুলো সাহিত্যকৃষ্ট ব্যাক্তিদিগের স্ট্যাটাস। যেমন একটা উদাহরণ,
"কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই'
"শরত বাবু তুমি একবার দেখে যাও কেমন আছে তোমার এই দেবদাস??'
দেবদাস কহিল, "পার্বতি, অতটা রূপ থাকা ভাল নয়, অহংকার বড় বেড়ে যায়, দেখতে পাওনা, চান্দের অত রূপ হলেও কলঙ্কের কালো দাগ, পদ্ম সাদা বলেই কালো ভ্রমর বসে থাকে'
"মানুষের মুখে যা ঢুকে তা খারাপ না, মুখ থেকে যা বের হয় তা খারাপ'(পাওলো কোয়েলহোর দ্য আলকেমিস্ট)
"ঈশ্বর অদৃশ্য, আড়ম্বর করে তাকে পূজা দেয়া যায়। কিন্তু জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে তার উপর নির্ভর করা একটা উচ্চস্তরের সাধনা।(তারাদাস বন্দোপাধ্যায়)'
এরূপ অনেক সুন্দর এবং পাঠমধুর অমর সাহিত্যের এক বা দু লাইন ভেসে উঠে এই সব স্ট্যাটাসে। এসব স্ট্যাটাস জ্ঞানের উৎস হিসেবেও কাজ করে।
৩।। প্রেমিক স্ট্যাটাস: স্ট্যাটাসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভাল স্থান যে কয়টা স্ট্যাটাস দখল করে রেখেছে এর মধ্যে একটি প্রেমিক স্ট্যাটাস। এই স্ট্যাটাসগুলো প্রেম প্রীতি এবং ভালবাসায় কানায় কানায় পূর্ণ থাকে। কিছু উদাহরণ:
"তুমি না থাকলে সকালটা এত মিষ্টি হত না...তুমি না থাকলে এই ভালবাসা সৃষ্টি হত না...জান আই লাভ ইউ'
"চাইনা মেয়ে তুমি অন্য কারো হও,আই ওয়ান্ট ইউ'
এছাড়াও কিছু রোমান্টিক গানে দু এক লাইন ভেসে উঠে এসব স্ট্যাটাসে। যেমন:
ভালবাসি! ভালবাসি! এর বেশী ভালবাসা যায় না! ও আমার প্রাণ পাখি ময়না!
তোমার মাঝে নামব আমি তোমার মাঝে ডুব ...... তোমার মাঝে কাটবো সাঁতার ভাসবো আমি খুব...।
ঐ বুরকা পড়া মেয়ে আমায় পাগল করেছে ...............।
এইসব ছাড়াও আমি ওরে ছাড়া বাচুম না, আমারে ওর কাছে লইয়া যাও টাইপের আরো কিছু স্ট্যাটাস আছে এই ক্যাটাগরির।
৪।। ছ্যঁ¡কা স্ট্যাটাস: এই স্ট্যাটাসগুলোর প্রেম বিদ্বেষী স্ট্যাটাস নামেও পরিচিত। যুকারবার্গ ছ্যঁ¡কা খাইয়া ফেসবুক বানাইলো কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ ছ্যঁ¡কা খাইয়া সেই ফেসবুকেই স্ট্যাটাস দেয়। এসব প্রতিটি লাইনে লাইনে এমনকি শব্দে শব্দে ফুটে উঠে প্রেমের প্রতি নীরব অথবা সরব বিদ্রোহ। এসব কিছু উদাহরণ,
চলে গেছ তাতে কি, নতুন একটা পেয়েছি, তোমার চেয়ে অনেক সুন্দরী...
প্রেমের মূলধন হল ভালবাসা আর ভালবাসার মূলধন হল কষ্ঠ ...
কিছু কিছু মানুষের জীবনে, ভালবাসা চাওয়াটাই ভুল...।
মেয়েরা এত খারাপ কেন? ... ।
ছেলেদের জন্যই আমাদের মত মেয়েরা এত খারাপ হয়ে যায় ...।
সময় স্রোত আর মেয়েমানুষ কারো জন্য অপেক্ষা করে না ...।
৫।। হুমায়ুন আহমেদিয় স্ট্যাটাস অথবা আমি হিমু হইতে চাই স্ট্যাটাস: এই স্ট্যাটাসের মালিকরা হুমায়ুন আহমেদের দারুণ ভক্ত। এরা হিমু হইতে চায়। কয়েকজন নিজেরে হিমু মনে করে এবং হুমায়ুন আহমেদের মত লেখক তারে নিয়া লেখছে ভেবে পুলকিত হয়। এই ধরনের স্ট্যাটাস:
"প্রশ্ন: পৃথিবীর কোনো প্রজাতি কি নিজ প্রজাতির কাউকে হত্যা করতে পারে? উত্তর: পারে। মানুষ! প্রশ্ন: পৃথিবীর কোনো প্রজাতি কি নিজ প্রজাতির কাউকে রক্ষা করার জন্য জীবন দান করতে পারে? উত্তর: মানুষ ! ...'
আইজ খালি পায়ে তিন মাইল হাঁটলাম, মুই হিমু হইতে চাই...
ইয়া! ইয়া! আমি হিমু হইয়া গেছি! ১৫ দিন গোসল করি নাই!
হিমু সাহেবকে এইসব স্ট্যাটাসধারীরা মাঝে মাঝে ভয়ানক সব প্রশ্ন করেন। তাদের প্রশ্ন দেখে মনে হতে পারে হিমু মধ্যদুপুরে হাঁটা বাদ দিয়ে তাদের ফ্রেন্ড লিস্টে বসে ঝিমুচ্ছে। এরকম একটি স্ট্যাটাস:
হিমু তুমি রূপা আপুমণিকে ভালবাস না। কারণ তোমার বাবা তোমার জন্য নারীসঙ্গ নিষিদ্ধ করেছেন। কিন্তু তাহলে তুমি রূপা আপুমণির সাথে প্রেম প্রেম খেলা খেল কেন?
বিরাট প্রশ্ন! হিমু প্রেম করতে পারবে না বলে তার কি প্রেম প্রেম খেলার ও অধিকার নেই!
আমি এখন হুমায়ুন আহমেদ স্যারের "চলে যায় বসন্তের দিন' পড়ছি। এত সুন্দর মানুষ লেখে ক্যামনে!
হুমায়ুন স্যারের কবি বই পড়লাম। এমন অসাধারণ লেখা সহস্র বছরে সৃষ্টি হয় কিনা সন্দেহ!
"আমি হিমু হইতে চাই, কারণ হৈমিক যোগ্যতার দিক দিয়া আমি হিমুর অনেক অনেক উপরে!'
"প্রকৃতি প্রার্থনার বশ নয়, প্রার্থনার বশ হলে দুনিয়ার চেহারাই পাল্টে যেত হুমায়ুন আহমেদ।।
একধরনের স্ট্যাটাসের মধ্যে প্রেম নামক আজব সম্পর্ক হয়ে যায়! একটি স্ট্যাটাসের এতই মহিমা যে এই স্ট্যাটাস দেয়ার পর স্ট্যাটাসধারীর রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস সিঙ্গেল থেকে ইন এ রিলেশনশিপ-এ পরিবর্তিত হয়ে যায়। এরকম একটি স্ট্যাটাস,
মেয়ে-(স্ট্যাটাস) -- আমি হিমু হইতে চাই।
পোলা(কমেন্ট)- আপনি হিমু হইতে পারবেন না। মহিলাদের হিমু হইতে নাই।
মেয়ে---(কমেন্ট)- আপনারে কে বলছে?
--(কমেন্ট)---হুমায়ুন স্যার। আপনে রূপা হয়ে যান।
-(কমেন্ট)--- মেয়ে তাইলে কি আপনি হিমু হইবেন?
--(কমেন্ট) --- পোলা ঠিক আছে। (এই প্রেম হইয়া গেল! এইরকম প্রেমও হয় ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে। এই স্ট্যাটাসগুলোকে লাকি স্ট্যাটাস বলেন কেউ কেউ)
৬।। সমালোচক স্ট্যাটাস: এরা দুনিয়ার সবকিছু নিয়াই সমালোচনা করে। তারপর তাদের সুচিন্তিত মতামত পেশ করেন।
যেমন ধরেন, হুমায়ুন আহমেদের একটা বই পড়লাম, পুরাই ফালতু, জোকসের বই এর থেইক্যা ভাল।
নোবেল পুরস্কার য়োসারে দেয়া ঠিক হয় নাই।
এন্টার্ক্টিকা মহাদেশের পানি খারাপ। খাইলে নির্ঘাত ডায়রিয়া হইব!
বারাক ওবামার ফেয়ার এন্ড লাভলী ইউজ করা উচিত।
ইত্যাদি...
৭।। রাজনৈতিক স্ট্যাটাস: এই সব স্ট্যাটাস পুরাই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং নেতাদের নিয়ে। এসব স্ট্যাটাসধারীরা তাদের পছন্দের রাজনৈতিক দলের গুণগান এবং অপছন্দের দলগুলোর চৌদ্দ গোষ্টী উদ্ধার করে স্ট্যাটাস দেন। সমসাময়িক রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহের আমেজ থাকে এদের স্ট্যাটাসগুলিতে।
যেমন, দেলো ভাইজানের পাজামা এত ঢিলা ক্যা?
খালেদা জিয়ারে ঘর থেইক্যা তাড়ানো উচিত। যত শীগ্র সম্ভব।
হাসিনা দেশ ইন্ডিয়ার কাছে বেইচ্যা দিসে। হাসিনার বিরুদ্ধে আমি যুদ্ধ ঘোষণা করলাম।
সাহারা খাতুনরে একটা বিয়া দেওন দরকার।
"তারেক জিয়া বাংলাদেশের মাহতির' নামক স্ট্যাটাস্টা দেখে আপনি যখন দম নিচ্ছেন তখন আপনি অন্য আরেকজনের স্ট্যাটাসে দেখবেন "তারেক চোরারে ধরা হোক' স্ট্যাটাস। এসব রাজনৈতিক স্ট্যাটাসে রাজনীতিবিদদের নিয়ে আলোচনাই চলে বেশী।
৮।। মন ভাল নেই স্ট্যাটাস: ফেসবুকে সর্বাধিক প্রচলিত স্ট্যাটাসের নাম মন ভালো নেই স্ট্যাটাস। যেমন:
"আজ আমার মন ভাল নেই,'
"চূড়ান্ত মন খারাপ...'
"মন এইরকম খারাপ হয় ক্যান!!আমি কিন্তু কাইন্দা দিমু।'
"আমি মন ভাল করতে পারি না ক্যান!'
"আমার মন খুব খারাপ।আই এম ক্রাইং'
৯।। তাৎক্ষণিক স্ট্যাটাস: তাৎক্ষণিক অবস্থা প্রকাশ করতে এই স্ট্যাটাস। যেমন:
আমি এখন বাসে আছি ...।
এইমাত্র টয়লেট থেকে বের হলাম,আহা কী শান্তি।
আমি টয়লেটে আছি,আপনি কই?
ভাত খাইতেছি ...।
বই পড়তেছি ...।
ঘুমাইতেছি ...। (ঘুমাইয়া ক্যামনে স্ট্যাটাস দেয় এইট্যা গবেষণার বিষয়!)
১০।। বিচিত্র স্ট্যাটাস: এইসব স্ট্যাটাসের মূলমন্ত্র "দুনিয়া বড়ই বিচিত্র'। বিচিত্র দুনিয়ার বিচিত্র তায় বিচিত্র অনুভুতি যাদের হয় তারা এই বিচিত্র স্ট্যাটাস দেন। যেমন,
এইট্যা কি দেখলাম, ম্যানহোলে ওমেন পইড়্যা গেল! দুনিয়া বড়ই বিচিত্র!
ক্যালকুলেটরের চেয়ে হাতি বড়! দুনিয়া বড়ই বিচিত্র!
১১।। বুদ্ধিজীবি স্ট্যাটাস: আরেক প্রকারের স্ট্যাটাস আছে ওইটারে বলে বুদ্ধিজীবি স্ট্যাটাস। বুদ্ধিজীবিগণের স্ট্যাটাসও বুদ্ধিতে ভরপুর। তাই এগুলো বুঝতে মাঝে মাঝে প্রচুর বুদ্ধির প্রয়োজন হয়। বিচিত্র পৃথিবীতে এখন বুদ্ধির সংকট চলতেছে। তাই বুদ্ধিজীবি স্ট্যাটাস নিয়া তাই গবেষণা কঠিন জিনিস। বুদ্ধিজীবিরা রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের গর্তে ভরা মফস্বলের রাস্তা সবকিছু নিয়া কথা বলেন। তারা সাহিত্য সংস্কৃতি নিয়া অনেক ভারী ভারী কথা দিয়া স্ট্যাটাস দেন। এই স্ট্যাটাসে কমেন্ট করেন তাদের মত বুদ্ধুজীবিরা। অর্থাৎ এদের স্ট্যাটাস হল বুদ্ধিময়। যেমন এরকম একটি স্ট্যাটাস:
"রবীন্দ্রনাথ সাম্প্রদায়িক ছিলেন' ( বুদ্ধিজীবি সাহেব রবীন্দ্রবিরোধী! এরা ধর্মীয় কারণে বা অন্য কারণে রবীন্দ্রবিরোধী না! তারা নিজেদের বৃহৎ প্রমাণ করতে রবি ঠাকুরের বিরোধিতা করেন)
এর নিচে যেসব বুদ্ধিজীবি কমেন্ট দিবেন সবাই বলবেন,
ঠিক বলেছেন।
সত্যি কথা বলেছেন।
আসলে এটাই ঠিক।
রাঈট। ঈট ইজ দ্যা মেইন পয়েন্ট।
এখানে যদি কোন আম পাবলিক ঢুকে পড়ে এবং কমেণ্ট দিয়া বিরোধিতা করে তাহলে সকল বুদ্ধিজীবি মিলে বুদ্ধির ঠেলায় তাকে নির্বোধ গর্দভ টাইপের উপাধি দিয়ে নিজেদের বুদ্ধির শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করবেন।
এইরূপ বুদ্ধিজীবিগণের স্ট্যাটাস দেখলে মনে হবে এরা পৃথিবীর শ্রেষ্ট জ্ঞানী। বিশাল জ্ঞানের ভার নিয়ে এই নোংরা বোকাদের পৃথিবীতে তাদের বেঁচে থাকার কোন ইচ্ছাই নেই। শুধুমাত্র বেঁচে আছেন আম পাবলিকদের(তাদের মতে বুদ্ধিহীনদের) কথা চিন্তা করে।
১২।। প্রার্থনামূলক স্ট্যাটাস: এই গ্রুপের স্ট্যাটাসগুলো বিস্ময়কর! যেমন
আল্লাহ মেয়ে দেখতে যাইতেছি, মেয়েটা যেন আমারে পছন্দ করে!
ইয়া আল্লাহ! কিছু পড়ি নাই! কাইল পরীক্ষা!আমারে সাহায্য কর!
আল্লাহ আমারে বিপদ থেকে উদ্ধার কর!
এসব স্ট্যাটাসের মানে কী বোঝা সহজ ব্যাপার না। মানুষ প্রার্থনা করে সৃষ্টিকর্তার কাছে। যাতে তিনি শুনতে পান এমনভাবে। কিন্তু ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এইসকল প্রার্থনা মনে হয় প্রার্থনা ডিজিটাল অবস্থা।
১৩।। অনুকাব্যিক স্ট্যাটাস: এসব স্ট্যাটাসে ছোট ছোট অনুকাব্য থাকে। যেমন,
দাবি একটাই/ তোমার আকাশে আমার নির্বাসন চাই।
"আমার ভিতর তোমার বসবাস
এটাই আমার মহা সর্বনাশ।'
"তাকাও কেন আমার দিকে
হাস কেন বৃথা?
হাসি দেখে জ্বলে বুকে
সেগুন কাঠের চিতা।'
"তোমার আকাশে কে দেয় বাতাস?
তাই তুমি করছ হাঁসফাস।'
"ভালবাসা সস্তা খুব
কিন্তু অত মন্দ না
তর জন্য মনের দুয়ার
আমার কিন্তু বন্ধ না।'
এটাই কি তর ভালবাসা
এই কি তর সখ্যতা??
এর চেয়ে ভাল ছিল
পাশের বাড়ির নম্রতা।
মেয়ে তুই কি আবার হাসবি? বল
তুই কি আবার হাসবি
মিথ্যে নয় সত্যি করে আমায় ভালবাসবি।
তর কি মেয়ে ভালবাসায় রুচি নাই/তাইলে কিন্তু তরে আমি বুঝি নাই।
ওই আকাশ কিংবা মঙ্গল গ্রহ/কোনটাতে নেই কবির মোহ/কবির মনটা ব্যস্ত কাজে/হয়ত তোমার চুলের ভাজেঁ।
হাত ছুঁবে না/মন ছুবে না/হাজারখানেক বাধাঁ/তোমার সাথে আমার প্রেম এক আজব গোলক ধাঁধাঁ।
তোমায় আমি হারিয়ে ফেলি/
হয়ত আমার ভুলে
মন তবুও বাঁধা থাকে/
তোমার কাল চুলে/
এরকম নানারকম স্ট্যাটাসের মাধ্যমেই চলছে ফেসবুক। চলছে মানুষের বিচিত্র ভাবের প্রকাশ।