এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

  • দুই লেজান্ড্রর গল্প - একটি ভুল প্রতিকৃতি ও একটি অসম্পূর্ণ ক্যারিকেচার

    যদুবাবু
    আলোচনা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ২৭ অক্টোবর ২০২৪ | ১০৪৬ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৪ জন)


  • একটু উঁচু ক্লাসের অঙ্ক পড়তে গেলেই এক-ই লোকের নাম (অথবা পদবী) বার বার ফিরে আসে, বিভিন্ন উপপাদ্য, বা সমীকরণ বা অন্যান্যা গাণিতিক বিষয়ের নামে। যেমন গাউস, লেজান্ড্র, কশি, রীম্যান, লাপ্লাস ... ইত্যাদি প্রভৃতি [১]। কয়েকক্ষেত্রে অবশ্য এক-ই পরিবারের একাধিক লোকের নামে নানান কিছু, যার সবথেকে ভালো উদাহরণ বার্নৌলি - জ্যাকব, যোহান, ড্যানিয়েল, নিকোলাস ... কোন বার্নৌলির নামে কোন প্রিন্সিপল আর কার নামে সম্ভাবনার সূত্র - এই এক দারুণ ধাঁধার প্রশ্ন।

    এই জিনিয়াসদের মধ্যে গাউস-কেই ধরুন না কেন। অ্যালজেব্রা, জ্যামিতি, নাম্বার থিওরি, রাশিবিজ্ঞান, কার্টোগ্রাফি, নট (গিঁট) থিওরি - আরও কিসে না কিসে ১০০-র উপরের অঙ্কের জিনিষের নামে Gauss উঁকি মারছেন। একটা আস্ত উইকি পেজ বরাদ্দ আছে শুধু "List of things named after Carl Friedrich Gauss"-এর নামে। পড়তে পড়তে আশ্চর্য লাগে যে এই একজন-ই লোকের নামে এতো কিছু? এরা কী এক-ই লোক? তাও গাউস এমন খুঁতখুঁতে পারফেকশনিস্ট মানুষ ছিলেন যিনি বিশ্বাস করতেন একদম নির্ভুল, সমালোচনার উর্ধ্বে থাকবে এমন জিনিষ নামানো না গেলে পাবলিশ করার-ই দরকার নেই। তার মোটো ছিল, Pauca sed Matura ("Few, but Ripe")। তাতেই এই। ভাগ্যিস এখনকার মত "পাব্লিশ অর পেরিশ" কালচার তিনি দেখেননি।


    গাউসের মোটো-সম্বলিত সিল


    তবে, আমার গপ্পের নায়ক গাউস নন। বরং এমন একজন লোক যার সাথে গাউস দীর্ঘদিন "কে প্রথম কাছে এসেছি?", অর্থাৎ প্রায়োরিটি ডিস্পিউটে জড়িয়েছিলেন লিস্ট স্কোয়ারের আবিষ্কার নিয়ে। সেই নিয়ে বিস্তর চিঠিচাপাটি, মান-অভিমান, একশো বছর পরেও রাশিবিজ্ঞানের ইতিহাসের আগ্রহের ব্যাপার। তিনি আদ্রিয়ান-মারি লেজান্ড্র (নাকি লেজঁদ্র?) (জন্ম - ১৭৫২, মৃত্যু - ১৮৩৩।) অঙ্কের ইতিহাসে তার-ও কীর্তি কম নয়। চট করে ভাবলেই মনে পড়ছে - লেজান্ড্র পলিনমিয়াল, লেজাণ্ড্র ট্রান্সফর্মেশন, লেজাণ্ড্র ডিফারেনশিয়াল ইকোয়েশন, লেজান্ড্র সিম্বল, লেজান্ড্র কণ্ডিশন ফর ক্যালকুলাস অফ ভেরিয়েশন, লেজান্ড্র রিলেশন ইত্যাদি ইত্যাদি আরও কত কিছু। ভদ্রলোক এর-ই পাশাপাশি নাম্বার থিওরি, এলিপটিকাল ইন্টিগ্রাল, ক্যালকুলাসের উপর বই লিখেছিলেন বেশ কিছু, আর ইউক্লিডের জিওমেট্রির মালমশলা নিয়ে লিখেছিলেন বেশ জনপ্রিয় পাঠ্যবই, একাধিক ভাষায় অনূদিত হয়েছিল সেটি। তাও লেজান্ড্র জীবদ্দশায় প্রচুর খ্যাতি পেয়েছিলেন এ কথা লিখলে মিথ্যা বলা হবে। অন্যান্য সমমানে বিখ্যাত গাণিতিকদের মত তার 'সমগ্র' বেরোয়নি। এমন কি, ব্যক্তি লেজান্ড্র কেমন ছিলেন সে বিষয়ে আমাদের জানা আজ-ও অতি অল্প। ছাত্র অথবা বন্ধুদের দু-একটি চিঠির ভেতর যেটুকু যা ধরা যায় তাইই।

    তবে, সে এমন কিছু আশ্চর্য হয়তো না। কত বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক কি অঙ্কবিদ সারাজীবন নিভৃতচারী হয়ে কাটান। অন্য এক আশ্চর্যতর জগতের বাসিন্দা হয়ে। তাদের রোজনামচা না-ই জানা থাকতে পারে। কিন্তু লেজাণ্ড্রের গল্পের সবথেকে আশ্চর্য বিষয় এই যে এক শতাব্দীর-ও বেশি সময় ধরে মানুষ অন্য এক লেজান্ড্র-র ছবি দেখে ভেবেছে এই সেই আদ্রিয়ান-মারি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেখানে যেখানে যে বইতে লেজান্ড্রর কথা পড়েছে, যে ওয়েবসাইটে অঙ্কের ইতিহাসে লেজান্ড্রর কীর্তি পড়েছে, সেই কীর্তির পাশে যাঁর ছবি দেখেছে তিনি আদৌ গণিতজ্ঞ লেজান্ড্র নন। আদ্রিয়েন-মারির সাথে তাঁর যে কোনোরকম বাহ্যিক সাদৃশ্য ছিলো এমন-ও না। তবে, মিল ছিল পদবীতে। যে ভদ্রলোকের রাজপুরুষোচিত চেহারা দেখে আমরা গড় করেছি তাঁর নাম লুই লেজান্ড্র। লুই অঙ্কের লোক ছিলেন না, ছিলেন ফরাসী বিপ্লবের সময়কার এক বিপ্লবী। আদ্রিয়ান-মারির সমসাময়িক লুয়ি (১৭৫৫-১৭৯৭) প্রথম জীবনে ছিলেন একজন কসাই (বুচার) - ফরাসী বিপ্লব যখন শুরু হচ্ছে, অর্থাৎ ১৭৮৯ নাগাদ তিনি La Montagne (অর্থ: পর্বত, the mountain) দলে যোগ দেন, বাস্তিল দুর্গ আক্রমণে অংশ নেন, এবং পরে রাজার মৃত্যুদণ্ডে সায় দিয়ে ভোট দেন। এই Montagne দলের লোকদের, অর্থাৎ Montagnards-দের মধ্যেই ছিলেন ইতিহাসের পাতায় কলঙ্কিত নায়ক রেইন-অফ-টেররের রোবস্পিয়ের। তবে, বিখ্যাত বা কুখ্যাত যাই হোন, লুই ছিলেন আগাগোড়া রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব - তার সাথে আদ্রিয়ান-মারির প্রায় কোনো সম্পর্কই নেই, শুধু ঐ পদবী বাদ দিয়ে।


    লুই লেজান্ড্র


    এবং এইখানেই আরও আশ্চর্যের কথা। দুইজনেই কমবেশি বিখ্যাত না'হক ঐতিহাসিক চরিত্র, আমাদের কাছে না হলেও সেই দেশে তো বটেই। তবু, বছরের পর বছর ধরে এই দুই লেজান্ড্রর নামের পাশে এক-ই লোকের ছবি বসেছে বইতে আর সব জায়গায়, কিন্তু কারুর-ই এই অদ্ভুত ডাবল-রোল চোখেও পড়েনি। এর একটা কারণ হতে পারে এই যে যারা মন দিয়ে অঙ্ক পড়েছে তারা আর ইতিহাস পড়েননি, আর ভাইসি ভার্সা। আর দ্বিতীয় কারণ এই যে এতোসব শক্তিশালী সার্চ ইঞ্জিন তো এই কয়েকদিন আগেও ছিলো না আর পাশাপাশি রেখে দেখার কাজ-ও এতো সোজা ছিল না।

    এই আশ্চর্য ভ্রান্তি বা অ্যানোম্যালি প্রথম ধরা পড়লো ২০০৫ সালে। ইউনিভার্সিটি অফ স্ট্রাবুর্গের দুই ছাত্রের চোখে ধরা পড়ল যে দুইজন সম্পূর্ণ ভিন্ন লোকের - প্রতিকৃতি এক-ই। ফরাসী ব্লগেও লেখালিখি শুরু হলো। অঙ্কের দুনিয়ায় শোরগোল পড়লো, "ছবি তুমি কার?" - আদ্রিয়ান-মারি না লুই না অন্য কেউ? সেই অনুসন্ধানে মুখ্য ভূমিকা নিলেন জাঁ বার্নার্ড ফ্রাসোয়াঁ, তার ওয়েবসাইটে রীতিমত গোয়েন্দা-তদন্তের মত পরপর সূত্রসহ ছবি দিয়ে। অচিরেই জানা গেলো যে হ্যাঁ ঐ ছবিটি লুই লেজান্ড্রর-ই। যে ছবিটি সবাই দেখে অভ্যস্ত সেটি একটি লিথোগ্রাফ প্রতিকৃতি। সমসাময়িক আরও অনেক ফরাসী ব্যক্তিত্বের সাথে এক-ই বইতে সেই ছবি। তাতে তৎকালীন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বৈজ্ঞানিক, শিল্পী, সেনানায়ক, এমন কি সেই ভাগ্যহত রাজা ষোড়শ লুইয়ের ছবি যেমন ছিল, ঠাঁই পেয়েছিলেন বেশ কিছু গণিতজ্ঞ-ও - লাগ্রাঞ্জ, কার্নট, কনডর্সেট (এই কনডর্সেটের কথা আগের পর্বে লিখেছিলাম, যার জুরি থিওরেম দিয়ে বোঝা যায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের গতিপ্রকৃতি।) এরা সবাই রীতিমত বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, যাদের খ্যাতি পড়াশুনোর জগত ছাড়িয়েও বেশ কিছুদূর যায়। কনডর্সেটের খ্যাতির কথা আগেই বলেছি, বাকিরাও হয় রাজনীতি না হলে সরকারি কাজের ভার পেয়ে স্বনামধন্য ছিলেন। যেমন ছিলেন, আমাদের লেজান্ড্র-ও, বিশেষতঃ ইউক্লিডের পাঠ্যরূপের জন্য। কাজেই ঐ তারকাখচিত বইয়ের প্রতিকৃতি দেখে ভুল হওয়া আশ্চর্য হলেও একেবারে অসম্ভব নয়। যদিও বইয়ের শেষের সূচিতে জ্বলজ্বল করছে, "LEGENDRE (Louis), né à Paris, en 1756, mort à Paris, le 13 décembre 1797"। আরও খুঁটিয়ে দেখলে বোঝা যায় ছবির তলায় যে সই, সেটি "Legendre", আর আমাদের অঙ্কের স্যার সই করতেন "Le Gendre"। এ যেন সেই দুলাল চন্দ্র ভড়ের তালমিছরি। ছবি ও সই না মিলিয়ে নিলে নকল দুলালের মিছরি খেয়ে ঠাণ্ডা লেগে যাবে। লিথোগ্রাফের ছবিই যে লুইয়ের ছবি তার আরও অকাট্য প্রমাণ - ঐ মন্তানার্দদের সাথে লুইয়ের একসাথে গ্রুপ ছবি। তাতে যার ছবি দেখা যাচ্ছে তিনিই যে লিথোগ্রাফের মানুষ বুঝতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়।


    লুই লেজান্ড্র ও অন্যান্য মন্তানার্দগণ


    তবে ইনি না হয় লুই, তাহলে আসল আদ্রিয়ান মারি কোনজন? এই ধাঁধার জট ছাড়াতে লেগে গেলো আরও দুই বছর। ২০০৭ সালে জেরার্ড মিশঁ নামে আরেক গণিতজ্ঞ ঐ জাঁ বার্নার্ড ফ্রাসোয়াঁর ওয়েবসাইট থেকে এই প্রতিকৃতি-বিতর্কের কথা জানতে পেরে নিজের ওয়েবসাইটে একটি নোটিশ ঝোলান, আর একটি রীতিমত দুষ্প্রাপ্য ওয়েবসাইটের গহ্বরে খুঁজে পান একটি ব্যঙ্গচিত্র অর্থাৎ ক্যারিকেচারের অ্যালবাম। তাতেই এক পাতায় পাশাপাশি পেন্সিল স্কেচে দুই বিখ্যাত লোকের ছবি - বাঁদিকে লেজান্ড্র আর ডানদিকে ফ্যুরিয়ের।


    বাঁদিকে লেজান্ড্র আর ডানদিকে ফ্যুরিয়ের


    ঐ যে সামান্য কার্টুন-মার্কা একটি ছবি, দেখেই মনে হচ্ছে অল্প কুপিত, অথবা বিরক্ত, শীর্ণকায় লেজান্ড্র, যেন এই মাত্র গাউসের সাথে একচোট ঝগড়া সেরে এলেন। পাশে বেশ হাসিখুশি, সদাশয়, গোল-গাল ফ্যুরিয়ের। লেজান্ড্র মানুষ যে একেবারেই তিক্ত বা কুঁদুলে ছিলেন এমন না, কনিষ্ঠ গণিতজ্ঞ আবেল বা জেকবিকে লেখা তার চিঠি এখনো পাওয়া যায় আন্তর্জালে। সেই সব চিঠিতে তার স্নেহের ছাপ, এবং কনিষ্ঠ সহকর্মীদের উৎসাহ দেওয়ার ছাপ স্পষ্ট। তবে, দুঃখের কথা এই যে, ক্যারিকেচার যেমন-ই হোক, ঐটিই আজ অব্দি পাওয়া আদ্রিয়ান-মারি লেজান্ড্র-র একমাত্র প্রতিকৃতি। মনে করিয়ে দিই, লেজান্ড্র-র মৃত্যু হয় ১৮৩৩ সালে, আর ফটোগ্রাফির আসতে আসতে প্রায় ১৮৪০, অর্থাৎ তখনো সামান্য দেরি। এলেও বা কী হ'ত বলা শক্ত। লেজান্ড্র সত্যিই পছন্দ করতেন না কেউ তার ব্যক্তিজীবনে আগ্রহ দেখাক। ওঁর ফিউনেরালের পোয়াঁসো বলেছিলেন, "Our colleague often expressed the desire that in speaking of him it would be only a question of his works, which are in fact his whole life."


    আদ্রিয়েন-মারি লেজান্ড্র


    তাও যে পাওয়া গেছে এই ভাগ্যি, কারণ সেই ক্যারিকেচারওয়ালা বইয়ের ইতিহাস-ও চমকপ্রদ। ঐ আঁকাগুলো লেজান্ড্রদের সময়কার শিল্পী জুলিয়েন-লিওপোল্ড বয়লির। বয়লির বাবা ছিলেন Académie des Beaux-Art এর তৈলশিল্পী, ছেলে বরাত পেয়েছিলেন সেই সময় ঐ সংগঠনের সদস্যদের ক্যারিকেচার আঁকার। সে কাজ তার জীবদ্দশায় শেষ হয়নি। বয়লির মৃত্যুর পর অসম্পূর্ণ সেই ক্যারিকেচারের অ্যালবামটির ঠাঁই হয় নিলামের দোকানে - নিউ ইয়র্কের ক্রিস্টি'জ়-এর তোষাখানায়। খবর পেয়ে নিলাম জিতে সেটি হস্তগত করেন ও পরে ইন্সটিটিউট দে ফ্রান্সে দান করেন ড্যানিয়েল ওয়াইল্ডেনস্টাইন। যে ইন্সটিউটের ওয়েবসাইটে অ্যালবামের সন্ধান পেয়ে আদ্রিয়েন-মারি লেজান্ড্রর ছবি উদ্ধার করেন জেরার্ড মিশঁ। সেইদিন সেই নিলামের ফল অন্য হলে, অথবা ইন্সটিটিউটের একটি অবস্কিওর ওয়েবসাইটে অ্যালবামের স্ক্যান ঠাঁই না পেলে হয়তো আজ-ও অজানা থাকতো লেজান্ড্র-র আসল ছবি।

    এতো অব্দি পড়ে প্রশ্ন উঠতে পারে পরের প্রজন্ম না-ই পারুক, লেজান্ড্রর সমসাময়িক কেউ-ই পারলেন না এতো বড়ো একটা ভুল ধরতে? এর উত্তর সহজ। আদ্রিয়েন-মারির নামের পাশে লুইয়ের প্রতিকৃতি দিয়ে প্রথম বই ছাপা হয় ১৯০০ সাল নাগাদ। বই ছেপে বেরোতে বেরোতে লেজান্ড্র-কে নিজের চোখে দেখেছেন এমন কেউ-ই প্রায় বেঁচে নেই।

    “কে প্রথম কাছে এসেছি?”:


    শুরু করেছিলাম গাউস আর লেজান্ড্র-র প্রায়োরিটি ডিসপিউটের গল্প দিয়ে। শেষ করছি আবার সেই গাউস আর লেজান্ড্রর ঝগড়াঝাঁটির গল্পে ফিরেই। ঝগড়ার বিষয় “মেথড অফ লিস্ট স্কোয়ার”স”, যা রাশিবিজ্ঞান কিংবা অঙ্কের ছাত্রদের শেখানো হয় একেবারেই প্রাথমিক স্তরে। এখনও রাশিবিজ্ঞানের প্রথম ক্লাসেই রিগ্রেশনে শেখানো হয় অর্ডিনারি লিস্ট স্কোয়ারস এস্টিমেশন। ধরা যাক, দুটি চলরাশি আছে - Y আর X, যেমন রক্তচাপ আর বয়স। আর আমরা একাধিক লোকের নমুনা সংগ্রহ করে বেশ কতকগুলি (X, Y)-জোড় পেয়েছি। এইবার আমরা চাই এমনভাবে একটি সরলরেখা আঁকতে যা মোটের উপর সবকটা (Y, X) বিন্দুর-ই কাছাকাছি থাকে। সরল না হয়ে বক্র হলেও ক্ষতি নেই, কিন্তু সরল দিয়েই বোঝা যাক শুরুতে।
    তা সেই যে সরলরেখা (Y = a + bX), সেইটা আঁকতে হলে কীভাবে জানা যাবে ঐ a আর b ঠিক কত নেওয়া উচিত?

    এইরকম সমস্যা প্রথম উপস্থিত হয় বহুদিন আগের জ্যোতির্বিজ্ঞানে, রাতের আকাশের গ্রহনক্ষত্রের অবস্থান নির্ণয় করতে, এবং জিওডেসি-তে। অষ্টাদশ শতক, যাকে আমরা এখন বলি 'এজ অফ ডিসকভারি', সেই সময়েই একে একে অয়লার, টোবিয়াস মেয়ার, বসকোভিচ, লাপ্লাস – সবাই এই এক-ই প্রবলেমে নিজেদের অবদান রাখছেন একে একে। গাণিতিক সমস্যার মূল কিন্তু সেই এক-ই। সেখানেও বেশ কিছু অবজ়ার্ভেশন আছে, সবেতেই অল্পবিস্তর পরিমাপের ভ্রান্তিও আছে, আমাদের কাজ সেই তথ্যের উপর ভিত্তি করে এমন একটি সরল কিংবা বক্ররেখা আঁকা যা ঐ তথ্যরাশির “নিকটতম”। এই নিকটত্ব বা দূরত্ব মাপার উপায় কি? যদি একটি সরলরেখা চান, তাহলে আপনি চট করে খাতার পাতায় আপনি গ্রাফ এঁকে ফেলবেন, অনুভূমিক অক্ষে X, আর উল্লম্ব অক্ষে Y – আর যা যা ডেটাপয়েন্ট পেয়েছেন সব ছকে ফেললেন ঐ গ্রাফের পাতায়। এবার ঐ (X,Y) পয়েন্ট-ক্লাউডের মধ্যে দিয়ে একটা সরলরেখা যদি কল্পনা করে নেন, তাহলে সেই রেখা থেকে ঐ পয়েন্ট-ক্লাউডের দূরত্ব মাপার একটি উপায় ‘লিস্ট স্কোয়ার্স’। প্রত্যেকটি বিন্দু থেকে সরলরেখায় একটি লম্বালম্বি লাইন টেনে ফেলুন – তাহলে যে একঝাঁক রেখাংশ পাওয়া যাবে, সেই রেখাংশগুলির দৈর্ঘ্যই ঐ বিন্দু থেকে সরলরেখার দূরত্ব, আর মোট দূরত্বের পরিমাণ ঐ প্রত্যেকটি দূরত্বের যোগফল – কিন্তু এমনভাবে যোগ নিতে হবে যাতে শুধু দৈর্ঘ্যর মান্ইটুকুই যোগ হয়, অভিমুখ নয়, না হলে রেখার উপরের বিন্দুর দূরত্ব আর নিচের বিন্দুর দূরত্ব কাটাকুটি হয়ে যাবে। সে এক বিশ্রী ব্যাপার। ‘মেথড অফ লিস্ট স্কোয়ারস’ দেখায় যে ঐ মোট দূরত্বের পরিমাপ হিসেবে আমরা যদি প্রত্যেকটি বিন্দু থেকে ঐ সরলরেখার লম্বালম্বি দূরত্বের বর্গের যোগফল (বা গড়) নিই, তাহলে চট করে একটু অঙ্ক কষে বের করে ফেলা যায় ঠিক কোন a আর b-এর জন্য ঐ যোগফল ন্যূনতম হবে, আর সেটাই বলে দেবে ঠিক কোনখান দিয়ে আঁকতে হবে সরলরেখা (নিচের ছবির 'ফিটেড লাইন') [২]


    বিভিন্ন বিন্দু থেকে একটি সরলরেখায় উল্লম্ব দূরত্ব


    ফিরে আসি গল্পে। এই লিস্ট স্কোয়ার্সের প্রথম বর্ণনা লেজান্ড্র পাব্লিশ করেন ১৮০৫ সালে। সেই গবেষণাপত্রর নাম "Nouvelles mehodes pour la determination des orbites des cometes" - যাতে বর্ণনা ছিল মেথড অফ লিস্ট স্কোয়ারসের, স্বনামেই। যদিও সেই লিস্ট স্কোয়ার্স মেথডের সাথে সম্ভাবনা-তত্ত্বের মিল দেখাননি লেজান্ড্র, কিন্তু তাতে তো আর ‘মেথড’ পালটায় না। ঐ এক-ই সময়ে, কেউ কেউ বলেন ‘হয়তো’ কিছু আগেই, এবং ‘হয়তো’ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে গাউস-ও কষে ফেলেছেন এই এক-ই অঙ্ক, এক-ই সূত্র বা পদ্ধতি। অঙ্কের ঐতিহাসিক রিচার্ড প্ল্যাকেটের মতে এই অনুমান সম্পূর্ণ মিথ্যা নয়, গাউস যে ভেবেছিলেন এই পদ্ধতির কথা সেটা লিখে জানিয়েছেন একাধিক সহকর্মীকে, কিন্তু ঐ যে ওঁর "অল্প, কিন্তু পরিপক্ক" মোটো - ভেবে থাকলেও সঙ্গে সঙ্গে ছাপেন নি। ছাপতে ছাপতে লেগে যায় আরও চার বছর, গাউসের লিস্ট স্কোয়ার্সের বর্ণনা বেরোয় "Theoria Motus Corporum Coelestium"-এ, উপরি হিসেবে এইবার পাওয়া গেলো নর্ম্যাল ডিস্ট্রিবিউশনের সঙ্গে লিস্ট স্কোয়ার্সের সম্পর্ক। কিন্তু গোল বাধলো ঐ গবেষণাপত্রের-ই একটি বাক্যে। গবেষণাপত্রে গাউস লিখলেন, "On the other hand our principle, which we have made use of since the year 1795, has lately been published by LEGENDRE"। এ যেন একেবারে "আমারও ছিল মনে, কেমনে বেটা পেরেছে সেটা জানতে"-র কাণ্ড। গাউসের এই দাবী থেকেই শুরু হয় দীর্ঘ ও কিঞ্চিত তিক্ত বাগবিতণ্ডা। অঙ্কের বহু বহু প্রায়োরিটি ডিস্পিউটের মধ্যে সবথেকে বিখ্যাত অথবা কুখ্যাত বোধহয় এইটিই।

    দীর্ঘ তর্কের মধ্যে ঢুকে কাজ নেই। তবু, শেষ করি দুটি চিঠি দিয়ে। প্রথমটি ১৮০৬ সালের। গাউস লিখছেন ওলবার্স-কে। ৩০শে জুলাই, ১৮০৬। আর পরেরটি গসের বই প্রকাশের পরে।
    ৩১শে মে, ১৮০৯। লেজাণ্ড্র-র দীর্ঘ চিঠি গাউস-কে। আমি এই দুটি চিঠিই পড়েছি রিচার্ড প্ল্যাকেটের গবেষণাপত্রে, অনূদিত অবস্থাতেই। সেই দুটির-ই একটি করে অংশ, নিচে হুবহু তুলে দিলাম।

    চিঠি ১) গসের চিঠি ওলবার্স-কে। (ঐশ্বরিক ক্ষমতার অধিকারী জিনিয়াস গাউস বলছেন যে ওর এমন-ই কপাল যে যাতেই হাত দেন দেখেন লেজান্ড্র-ও সেই এক-ই প্রবলেমে কাজ করছেন। এই এখন যেমন ওঁর মেথড অফ লিস্ট স্কোয়ারস।)

    “It seems to be my fate to compete with Legendre in almost all my theoretical works. So it is in the higher arithmetic, in the researches on transcendental functions connected with the rectification of the ellipse, in the fundamentals of geometry, and now again here. Thus, for example, the principle which I have used since 1794, that the sum of squares must be minimized for the best representation of several quantities which cannot all be represented exactly, is also used in Legendre's work and is most thoroughly developed.”

    চিঠি ২) লেজান্ড্রর চিঠি গাউস-কে। (লাতিনে "principium nostrum" অর্থ "our method"। লেজান্ড্র ক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন কারণ প্রচলিত রীতি অনুযায়ী সমস্ত প্রায়োরিটি ডিস্পিউট সমাধা হওয়ার কথা শুধুমাত্র গবেষণাপত্র প্রকাশের সময়ক্রম অনুযায়ী। আর কিছুই বিবেচ্য নয়।)

    "I will therefore not conceal from you, Sir, that I felt some regret to see that in citing my memoir p. 221 you say "principium nostrum quo jam inde ab anno 1795 usi sumus" etc. There is no discovery that one cannot claim for oneself by saying that one had found the same thing some years previously; but if one does not supply the evidence by citing the place where one has published it, this assertion becomes pointless and serves only to do a disservice to the true author of the discovery. In Mathematics it often happens that one discovers the same things that have been discovered by others and which are well known; this has happened to me a number of times, but I have never mentioned it and I have never called principium nostrum a principle which someone else had published before me. You have treasures enough of your own, Sir, to have no need to envy anyone; and I am perfectly satisfied, besides, that I have reason to complain of the expression only and by no means of the intention."

    এই বড়োসড়ো গপ্পের শেষ এইখানেই। তবে, ঈশপের মত দুইটি নীতিবাক্য রেখে যাবো। এক, ব্যঙ্গচিত্র বা ক্যারিকেচার-কে অবজ্ঞা করবেন না। এই যে আমি ও আমরা মাঝেমাঝেই কাগাবগা ছবি আঁকি এঁর-ওঁর, বলা যায় না হয়তো একদিন এইই ওনাদের প্রামাণ্য প্রতিকৃতি হবে। আর দুই, প্রায়োরিটি ডিস্পিউটের ইতিহাস পুরনো হলেও সেই ট্রাডিশন সমানে চলছে। এই নিয়ে মজার ছলেই বিখ্যাত উপপাদ্য স্টিগলার'স ল' অফ এপোনিমি - যার অর্থ কোনো আবিষ্কার-ই, কোনো ল'-ই, আসল আবিষ্কারকের নামে নামাঙ্কিত হয় না। এমন কি স্টিগলারের সূত্র-ও স্টিগলারের নয়। তবুও, ঐ পর্বতপ্রমাণ প্রতিভাদের আদানপ্রদান দেখুন। দীর্ঘ বিতর্ক বা অনুযোগ, অভিযোগের ভাষাও ভদ্র হতে পারে। আজ এই দুশো বছর পরে, খেউড় যখন আমাদের লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কায় পর্যবসিত, এই সব ইতিহাস একবার মনে করে নেওয়া মন্দ না।

    সূত্রনির্দেশ

    1. Plackett, R. L. "Studies in the History of Probability and Statistics. XXIX." Biometrika 59.2 (1972): 239-251
    2. Gérard P. Michon, The true face of AdrienMarie Legendre, Final Answers,
    3. Duren, Peter. "Changing faces: the mistaken portrait of Legendre." Notices of the AMS 56.11 (2009): 1440-1443.
    4. Stigler, Stephen M. "An attack on Gauss, published by Legendre in 1820." Historia Mathematica 4.1 (1977): 31-35.






    [১] লজ্জার মাথা খেয়ে স্বীকার করে নেওয়াই ভালো যে আমি এই সমস্ত ফরাসী ও অন্যান্য দেশের গণিতজ্ঞদের নাম বইতে পড়েই শিখেছি, তাও শুধু ইংরেজিতেই, শুনে শেখার সুযোগ পাই নি। তাই এইবেলা প্রবন্ধ লিখতে গিয়ে ফরাসী নামের বাংলা উচ্চারণ লিখতে গিয়ে আক্ষরিক অর্থেই নাকের জলে চোখের জলে অবস্থা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে উইকিপিডিয়া থেকে ফোনেটিক সিম্বলের সাহায্য নিয়েছি, এবং শুনে শুনে আন্দাজে কাছাকাছি বাংলা বানান লিখেছি। আর কয়েক জায়গায় পাতি আন্দাজে ঢিল ছুঁড়েছি। এইটুকু নিজগুণে মাপ করে দেবেন। অবশ্য আমার ফরাসী বন্ধুরা আমার নামের যা দুর্গতি করেন, সেই তুলনায় এ তো তুশ্চু।

    [২] বলাই বাহুল্য, এই প্রবন্ধের পাঠক এই সব নির্ঘাত জানেন, তাও দুটো 'ইয়ে মানে' জোড়া দরকার। প্রথমতঃ, সরল না হয়ে বক্র হলেও চলবে, দুইয়ের জায়গায় দু-কুড়ি চলরাশি হলেও, লিস্ট স্কোয়ার্স কাজ করতেই পারে, তবে খুব হাই-ডাইমেনশনে চলে গেলে সেই সব জ্যামিতি এক অন্য আশ্চর্য জগৎ, সেখানে আর আমাদের জ্যামিতিক ইনটিউশন কাজ করে না, এবং গাউস কি লেজান্ড্র-র প্রতিপত্তি-ও সামান্য কম। তাই ছেলেবেলায় শেখা সবকিছুই সেখানে অল্প গুবলেট হয়ে যায়। তবে সে এক অন্য দিনের গল্প। আর দুই, "ন্যূনতম দূরত্ব" মাপতে বর্গের সমষ্টি না নিয়ে অ্যাবসোলিউট ভ্যালুর সমষ্টি নিলেও হয়, তাকে বলা হবে 'লিস্ট অ্যাবসোলিউট ডেভিয়েশন' বা ল্যাড, এবং ঐতিহাসিকভাবে অঙ্কের লোকের মাথায় প্রথমে এসেছে ল্যাড, পরে লিস্ট স্কোয়ার্স। লিস্ট স্কোয়ার্সের সুবিধে যে যে জিনিষটাকে মিনিমাইজ় করতে চাই, সেটা ডিফারেনশিয়েবল, তাই সহজেই কষে বের করা যায়, আর অসুবিধে যে অনেক অনেক দূরে চলে গেলে বর্গের হারে এরর বেড়ে একটু ঝামেলা হয়, তার জন্য অন্য ব্যবস্থা।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৭ অক্টোবর ২০২৪ | ১০৪৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • &/ | 151.14.***.*** | ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ০২:১১538894
  • জার্মানরা আর ফরাসীরা কী প্রচন্ডরকম উৎসাহে কঠিন উচ্চাঙ্গের অঙ্ক কষতেন, ভাবা যায় না!!!!
  • যদুবাবু | ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ০২:৪১538895
  • @&/ : ঠিক। তবে কষতেন কেন, কষছেনও। অন্তত ফ্রান্সে। ফিল্ডস মেডেল প্রাপক তালিকায় ফ্রান্স বোধহয় দুই নম্বরে। মোট ১২ বা ১৩। জার্মানি তুলনায় অনেক কম তবে সেটা মনে হয় নাৎসি শাসনের সময়কার গ্রেট পার্জের ফল। 
     
    "Following the great purge, in 1934 David Hilbert, by then a symbol of German mathematics, was dining with Bernhard Rust, the Nazi minister of education. Rust asked, "How is mathematics at Göttingen, now that it is free from the Jewish influence?" Hilbert replied, "There is no mathematics in Göttingen anymore.""
  • &/ | 151.14.***.*** | ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ০২:৫৭538896
  • নারায়ণ সান্যাল লিখেছিলেন, হিলবার্ট বলছেন, "দেখুন আপনাদের পাওয়ার পলিটিক্স আমি বিশেষ বুঝি না। আমি নেহাৎই এক অঙ্কের মাস্টার। কেবল বুঝি জীরো টু দ্য পাওয়ার যে সংখ্যাই হোক, ফলাফল জীরো।"
    ওই অন্ধকার আমল জার্মানির আসল শক্তিটা হরণ করে নিল, ওই অঙ্ক বিজ্ঞান প্রযুক্তি এইসবই তো ছিল আসল শক্তি। বৃহদর্থে অ্যাকাডেমিয়ার সবই। সেই সমস্ত মেধাসম্পদ একেবারে রফতানি হয়ে গেল সাগরপারে, অতি অল্প সময়ের মধ্যে। এমন অবস্থাই করলেন পাওয়ারফুলেরা, এঁরা পালিয়ে পালিয়ে দলে দলে চলে গেলেন। নাহলে তো মেরেই ফেলত। কেবল ভাবি, যতজন অকালে প্রাণ দিলেন তাঁদের মধ্য থেকে কত নতুন নতুন কাজ আসার সম্ভাবনা ছিল!
  • &/ | 107.77.***.*** | ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৫:২৮538897
  • নারায়ণ বাবু  সম্ভবত  কল্পনার আশ্রয় নিয়েছেন, কিন্তু হিলবার্ট  যে খুবই দুঃখে ছিলেন তখন , সেটা ঠিকই  
  • যদুবাবু | ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৫:৫৫538898
  • হ্যাঁ ওই কোটটা মনে আছে, জিরো টু দি পাওয়ার সেভেন ইকুয়াল টু জিরো। পড়ার সময় গায়ে কাঁটা দিয়েছিল।  
     
    হ্যাঁ, পৃথিবীর ইতিহাস অত্যন্ত হিংস্র ও করুণ। অন্য টইয়ে জেনোসাইড নিয়ে লেখার সঙ্গে একটি ম্যাপের লিংক আছে — বিশ্বের কোথায় কোথায় কনফ্লিক্ট চলছে।বিশ্বজোড়া লার্জ স্কেল অর্গানাইজড গণহত্যার জন্য কনফ্লিক্ট কথাটা বড্ড অশ্লীল লাগে। কিন্তু সেই দেখতে দেখতে ভাবছিলাম কত কত সম্ভাবনা প্রত্যেক মূহূর্তে শেষ হতেই থাকে। কতটুকুই বা জানি আমরা? যদিও একটি অতিসাধারণ প্রাণের দাম আমার কাছে পৃথিবীর তাবৎ শিল্প ও বিজ্ঞানের সম্ভাবনার থেকে বেশি। 
     
    আমরা প্রিটেন্ড করি আমরা সিভিলাইজড স্পিসিস কিন্তু আসলে কল্পনাতীত নিষ্ঠুর। 
  • &/ | 151.14.***.*** | ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৬:২০538900
  • সেই। করার কিছু নেই। মন্দপাল ঋষির সন্তান সেই শার্ঙ্গিক পক্ষীশাবকগুলোর মতন বরং নিরাসক্ত হয়ে বলা যায়, " মা, নিজের শক্তি থাকতে পুড়ে কেন মরবে? বরং তুমি উড়ে পালাও। পরের বসন্তে আমরা আবার ফিরে আসব নতুন জন্ম নিয়ে।"
    স্ফুলিঙ্গের মত জন্মাই, ক্ষণিক উড়ে পুড়ে শেষ হয়ে যাই, এই টুকুই তো জীবন আমাদের, পৃথিবীর ইতিহাসের পরিপ্রেক্ষিতে দেখলে।
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:7139:2bf5:5e7:***:*** | ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৭:৫২538903
  • লেজেন্ড্রের ছবির ব্যাপারটা জানতাম না, পড়তে ভারি ভালো লাগলো। 
     
    আর উচ্চারন নিয়ে ভাববেন না, আমার মনে হয় বুঝতে পারলেই হলো। আমি ছোটবেলার থেকে গাউস কে গস বলে এসেছি, অনেক পরে জানতে পেরেছি গাউস। তবে উনি যে অংকের জগতে ঢাউস প্রতিভা ছিলেন তাতে সন্দেহ নেই। মানব সভ্যতার প্রথম তিন চারজন ম্যাথামেটিশিয়ানদের মধ্যে গাউস এর নাম থাকবে। ঐ গল্পটা জানেন নিশ্চয়ই - ছোটবেলায় গাউসের অংকশিক্ষক এক অলস দুপুরে ভেবেছিলেন ঘন্টাখানেক ঘুমিয়ে নেবেন, তাই ক্লাসে এসে সবাইকে বলেছিলেন এক থেকে একশো অবধি সব সংখ্যা যোগ করতে। কয়েক মিনিট পরেই গাউস স্যারের টেবিলে গিয়ে হাজির - তিনি দেখেছেন পঞ্চাশটা ১০১ যোগ করলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।ফলে স্যারের ঘুমের দফারফা :-)  
  • যদুবাবু | ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৪২538907
  • @ডিসি - হ্যাঁ। সত্যিই তাই। গ্রেটেস্ট বললেও অত্যুক্তি হবে না। 

    ঐ ১ + ২ + ... + n এর গল্পটা আমি ছোটো থেকে শুনেছি, ওয়েবসাইটেও আছে, কিন্তু কোনো টেক্সটবইতে পাইনি। সবথেকে কাছাকাছি যে গল্পটা পড়েছি, নিচে দিচ্ছি। এই বইটার নাম Men of Mathematics - the lives and achievements of great mathematicians from Zeno to Poincare (by E. T. Bell). এইটা আর ঐ গল্পটা এতো কাছাকাছি যে আমার মনে হয় দুটো আলাদা ঘটনা না, একটাই ঘটনা, এবং সেটা এইটাই।

    "Shortly after his seventh birthday Gauss entered his first school, a squalid relic of the Middle Ages run by a virile brute, one Büttner, whose idea of teaching the hundred or so boys in his charge was to thrash them
    into such a state of terrified stupidity that they forgot their own names. More of the good old days for which sentimental reactionaries long. It was in this hell-hole that Gauss found his fortune. Nothing extraordinary happened during the first two years. Then, in his tenth year, Gauss was admitted to the class in arithmetic. As it was the beginning class none of the boys had ever heard of an arithmetical progression. It was easy then for the heroic Büttner to give out a long problem in addition whose answer he could find by a formula in a few
    seconds. The problem was of the following sort, 81297 + 81495 + 81693 + . . . + 100899, where the step from one number to the next is the same all along (here 198), and a given number of terms (here 100) are to be
    added.

    It was the custom of the school for the boy who first got the answer to lay his slate on the table; the next laid his slate on top of the first, and so on. Büttner had barely finished stating the problem when Gauss flung his
    slate on the table: “There it lies,” he said—“Ligget se’ ” in his peasant dialect. Then, for the ensuing hour, while the other boys toiled, he sat with his hands folded, favored now and then by a sarcastic glance from
    Büttner, who imagined the youngest pupil in the class was just another blockhead. At the end of the period Büttner looked over the slates. On Gauss’ slate there appeared but a single number. To the end of his days
    Gauss loved to tell how the one number he had written was the correct answer and how all the others were wrong.
    Gauss had not been shown the trick for doing such problems rapidly. It is very ordinary once it is known, but for a boy of ten to find it instantaneously by himself is not so ordinary." 

    (Emphasis mine)
  • প্রতিভা | 115.96.***.*** | ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:০২538908
  • অঙ্কে আমি চিরকালই বিগ জিরো, তাই সে অংশ বাদ দিয়ে ছবি বিভ্রাট আর কাছা আসাআসি খুব উপভোগ করলাম।
    আঁদ্রিয়ানের চুল দেখে সত্যেন বোসের কথা মনে পড়ল।
    তোমার লেখার সম্পূর্ণ রসগ্রহণ করতে পারি না,এটা আমার খুব দু:খ ! 
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:7139:2bf5:5e7:***:*** | ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:০৮538909
  • এই বইটা আমার কালেকশানে আছে। আর্কিমিডিস, নিউটন, আর গাউস - এই তিনজনকে সেরার সেরা বলা হয়েছে, দ্বিমত হওয়ার অবকাশ নেই। হয়তো জন ভন নয়ম্যানকে এনাদের কাছাকাছি রাখা যেতে পারে।
     
    বিটিডাব্লু, গাউসের ছাত্রদের নাম দেখছিলাম, সেই ছাত্ররা মিলেই তো একটা গ্যালাক্সি বানিয়ে ফেলবেন! রীম্যান, মোবিয়াস, ডেডেকিন্ড - কিসব নাম! একেকজন অংকের একেকটা দরজা খুলে দিয়েছেন।  
  • যদুবাবু | ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:৩৪538910
  • প্রতিভাদি - এইটা তো দারুণ বললে। সত্যিই ঐরকম চুল।

    আর একটুও দুঃখ পেয়ো না। ঐ শিশিবোতল অঙ্কের অংশটা আসলে কিছু তেমন ইন্টারেস্টিং-ও না। ছবি-বিভ্রাট-টাই আসল গল্প। আসলে লিখতে লিখতে একটু বোরিং মাস্টারমশাই-মোডে ঢুকে যাই মাঝে-মধ্যে। 

    ডিসি: হ্যাঁ দারুণ না বইটা? লেখার স্টাইল-ও ভারি চিত্তাকর্ষক। গল্পের বইয়ের মত হুহু করে পড়া যায়। 
  • lcm | ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ১০:২৫538911
  • গাউস 
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:7139:2bf5:5e7:***:*** | ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ১০:৩০538912
  • যদুবাবু, হ্যাঁ। 
  • &/ | 151.14.***.*** | ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ০৬:০০538930
  • শ্রীনিবাস রামানুজনও ওরকম আর একজন। গণিতজ্ঞ হার্ডির মতে রামানুজন ১০০ তে ১০০ (নিজেকে উনি মাত্র  ২৫ দিয়েছিলেন)।
  • যদুবাবু | ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ০৬:১৭538931
  • এই এক সপ্তাহ আগে কোয়ান্টায় রামানুজনের উপর একটা ভারি সুন্দর আর্টিকল পড়লাম। লেখাটা তো ভালো বটেই, সাজিয়েছেও ভারি সুন্দর - অরিজিনাল চিঠি, খবরের কাটিং ইত্যাদির ছবি দিয়ে। পড়ে দেখুন। 

    https://www.quantamagazine.org/srinivasa-ramanujan-was-a-genius-math-is-still-catching-up-20241021/ 
  • lcm | ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ০৭:৩৮538932
  • এহে! লিখতে ভুলে গেছি। এই লেখাটার জন্য যদুবাবুকে ঐ দশ ডয়েশ মার্ক দিলাম।
    smiley
  • যদুবাবু | ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:১৬538933
  • smileylaugh
     
    আমিও এই উপহার ঐ যৌথ বাওবাব বাগান ফান্ডে জমা করলাম। 
     
    নোটের উপর আবার একটা নরমাল ডেনসিটি আঁকা, ফর্মুলাসহ। উফ্। একবার এইটা এক পিস বাগাতেই ওই দেশে যেতে ইচ্ছে হয়। 
  • ভুলে গেছি | 185.238.***.*** | ০৫ নভেম্বর ২০২৪ ০১:০১539119
  • কি কঠ্ঠিন লেখা, কিন্তু ছাড়াও যায়না। আরও কয়েকবার পড়তে হবে। :)
  • Debasis Bhattacharya | ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ১১:২২539159
  • চমৎকার ভ্রান্তিবিলাস। প্রথম যিনি বইতে ল্যজঁদ্র্‌-র ভুল ছবি দিয়েছিলেন, তিনি কে, এবং কেনই বা এহেন ভুলটি করলেন, সেটা জানতে লোভ হয় এ লেখা পড়ার পরে। ওই সময়ে ওখানেও কি নবান্ন ছিল, এবং সিভিক ইলাস্ট্রেটর নিয়োগ হত? 
     
    আচ্ছা, একটা জিনিস ঠিক বুঝতে পারিনি। 'ন্যুনতম বর্গ পদ্ধতি' ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যে লেখচিত্রটি দেওয়া হয়েছে, তাতে নির্ণেয় সরলরেখা থেকে বিন্দুগুলো পর্যন্ত যে গেরুয়া রেখাংশগুলো দেখা যাচ্ছে, সেগুলো কিন্তু সরলরেখা থেকে বিন্দুগুলোর লম্ব-দূরত্বের প্রতিনিধিত্ব করছে না। এটাই হবার কথা কি? আমি গণিতজ্ঞ বা পরিসংখ্যানবিদ নই, এবং তার ধারে কাছেও কিছু নই, কাজেই বোকার মত প্রশ্ন করলাম কিনা বুঝতে পারছি না। যদুবাবু স্বয়ং বা অন্য কেউ সাহায্য করবেন কি? 
  • dc | 2402:e280:2141:1e8:49cd:6cbb:ea6f:***:*** | ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ১২:১০539161
  • দেবাশীষবাবু, ঐ ছবিতে যেটা দেখানো হয়েছে, সেটা হলো অর্ডিনারি লিস্ট স্কোয়্যার্স পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে আমাদের গোল হলো, এমন একটা লাইন টানা, যেটা গিভেন ডেটাকে সবচেয়ে ভালো রিপ্রেসেন্ট করবে - এই লাইনটাকে বলে ফিটেড লাইন বা রিগ্রেশান লাইন। এবার ঐ ছবিতে দেখুন, প্রতিটা বিন্দুর থেকে ফিটেড লাইন অবধি একটা করে ভার্টিকাল লাইন টানা হয়েছে, যা কিন ঐ পয়েন্ট থেকে লাইন অবধি ভার্টিকাল ডিসট্যান্স (y^ - yi)। ফিটেড লাইনটা এমনভাবে টানা হয় (অর্থাত স্লোপ আর ইনটারসেপ্ট এমনভাবে ক্যালকুলেট করা হয়) যাতে ঐ সবকটা পয়েন্টের ভার্টিকাল ডিসট্যান্সের স্কোয়ারের সাম  (y^ - yi)^2 সবচাইতে কম হয়। অর্থাত ওরকম অনেক অনেক লাইনের মধ্যে থেকে ঐ ফিটেড লাইনের ক্ষেত্রেই স্কোয়ার সাম সবথেকে কম।  
     
    এই পদ্ধতিতে ধরে নেওয়া হয়, শুধু রেসপন্স ভেরিয়েবলে (y) এরর আছে, কাজেই অ্যাক্সিস বরাবর এরর মেজার করা হয়না। আপনি যেটা বললেন, প্রতিটা পয়েন্ট থেকে ফিটেড লাইন অবধি পার্পেন্ডিকুলার লাইন টানা, তাকে বলে অর্থোগনাল রিগ্রেশান বা টোটাল লিস্ট স্কোয়ার্স পদ্ধতি। যদি রেসপন্স (y) আর প্রেডিকটর (x), দুই ভেরিয়েবলেই এরর থাকে, তখন অর্থোগনাল রিগ্রেশান ব্যবহার করা যেতে পারে। (এছাড়া কিছু লিনিয়ার ট্রান্সফর্মের ক্ষেত্রেও ব্যাবহার করা হয়)। 
     
    এটা স্রেফ স্ট্যাটিসটিক্সের ছাত্র হিসেবে বললাম, যদুবাবু এসে আরও ভালো ভাবে বুঝিয়ে দেবেন :-)
  • Debasis Bhattacharya | ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৪৭539169
  • হুম, বুঝলাম বলেই মনে হচ্ছে। রিগ্রেশন লাইনের কনসেপ্ট-টা জানতুম, কিন্তুক আমার ধারণা ছেলো, রিগ্রেশন শুধু বিন্দুগুলো থেকে ওই লাইনের ওপরে লম্ব টেনে টেনেই বুঝি হিসেব করা হয়। ভাল করে পড়াশোনা না কোল্লে যা হয় আর কি! 
     
    যাই হোক, অনেক ধন্যবাদ! 
  • যদুবাবু | ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ২০:২০539180
  • এই তো ডিসি একদম ব্যাপক বুঝিয়ে দিয়েছেন। এর থেকে ভালো আর কী বোঝাতাম! 
     
    আমি লম্ব-দূরত্ব সেইজন্যেই লিখিনি কিন্তু vertical বোঝাতে উল্লম্ব লেখা উচিত ছিল হয়তো, অথবা শুধুই ভার্টিক্যাল। (আসলে উল্লম্ব শব্দটা পছন্দ নয়। যেমন, বিন্যাস অথবা নির্ভরণ অথবা ভেদাঙ্ক পছন্দ নয়। না হলেও কিছু করার নেই।)  
  • Debasis Bhattacharya | ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ২০:৪৫539181
  • ডিসি এবং যদুবাবু --- উভয়কেই আন্তরিক ধন্যবাদ। তবে, আমার মনে হয়, সব বাংলা পারিভাষিক শব্দ সব সময়ে মনের মত না-ও হতে পারে, কিন্তু তবু উদ্দিষ্ট অর্থটি মোটের ওপর প্রকাশ করতে পারছে বলে মনে হলে সেটা বারবার ব্যবহার করে দেখা উচিত। 
  • যদুবাবু | ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ০২:২১539601


  • Struik-এর হিস্ট্রি অফ ম্যাথেমেটিক্স বইটা খুঁজে পেলাম অফিসে। ভেতরের পাতায় ভুল লগেন্দ্রবাবুর ছবি সহ পাতার ছবি এখানে জুড়ে দিলাম।
  • &/ | 151.14.***.*** | ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ০৩:১৬539603
  • আমাদের এক কলেজ-সহপাঠী এঁকে বলত 'লেজেন্দ্র'। ঃ-) বলত, লেজেন্দ্র পলিনোমিয়াল তো ওরকম হবেই, বিশাল লেজের মত। ঃ-)
  • যদুবাবু | ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ০৪:০০539604
  • ল্যাজেন্দ্র, লগেন্দ্র, লেজেন্দ্র - কত ভালো ভালো বঙ্গালি নাম। 

    আর এই "আমার এক কলেজ-সহপাঠী" কিন্তু দুর্দান্ত ভালো একজন মানুষ। সে বিনা বাক্যব্যয়ে সমস্ত ছোটোখাটো ঘটনা, বড়োসড়ো অপকীর্তি, দুঃসাহসিক কাণ্ডকারখানা কি দুষ্টুমি থেকে সামান্য ছড়িয়ে ফেলা - সবকিছুর-ই দায় নির্বিবাদে মাথা পেতে নিয়ে নেয়। মিনিময়ে কিছুই চায় না। কিচ্ছু না। "ও পাড়ার পিন্টুদা"-র মত উদারচরিতানাম। 
  • &/ | 151.14.***.*** | ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ০৪:২০539605
  • হ্যাঁ, শুধু তাই নয়, সেই 'স্কুল বা কলেজ সহপাঠী' অজর, অমর, চিরতরুণও বটে। সময় তরতর কলকল বয়ে যাবে, মর্মরস্বপ্নে শ্যাওলা ধরে যাবে, কালের সহস্র চিহ্ন ভাস্কর্য করে দেবে সবকিছুতে, কিন্তু 'সে' রয়ে যাবে সেই একই আঠেরো-উনিশের প্রাণবন্ত তরুণ।
  • dc | 49.207.***.*** | ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ০৭:৫৯539607
  • ল্যাজেন্দ্র নামটা বেশ ভালো লাগলো laugh
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন