কার্য-কারণ-সম্বন্ধ অর্থাৎ কজালিটি নিয়ে আগের কিস্তিতে অল্প আলোচনা করেছিলাম, আজকে সেই আলোচনার-ই দ্বিতীয় কিস্তি, কিন্তু আজকের বিষয় রাশিবজ্ঞান, না ইতিহাস, না পুরনো দিনের সেপিয়া-টোনে-ছোপানো একটা রহস্য গল্প – তা বলা ভারি শক্ত। তবু, আজ তো শনিবার, সপ্তাহের সেরা দিন, পাতা উল্টোতে উল্টোতে একটু পিছিয়ে যেতে ক্ষতি কী?
একটু নয় আসলে, অনেকটাই। চলে যাব সো-ও-জা ১৮৫০-এর আশেপাশের লন্ডনে। সে লন্ডন কেমন ছিল, এখনকার লন্ডন দেখে তার কিছুই বোঝার জো নেই, শহরের মুখ-মুখোশ সব-ই গেছে বদলে। ভরসা সেই ডিকেন্সের চোখ, যিনি বলেছিলেন লন্ডন শহরকে পড়া উচিত একটি বইয়ের মত। ডিকেন্সের বর্ণনা ছড়িয়ে আছে বইয়ের পাতায়, সেই ছবির দিকে তাকালেই ধাক্কা লাগবে পাশাপাশিই বিসদৃশভাবে গুঁজে দেওয়া ‘স্প্রিং অফ হোপ’ আর ‘উইন্টার অফ ডেস্পেয়ার’-এর দৃশ্যে। সেই ফ্রেমের একদিকে ভক্সহল গার্ডেনের মায়াবী সন্ধ্যা, ‘temples and saloons and cosmoramas and fountains… captivated our hearts … dazzled our senses’, আর তার ঠিক বিপ্রতীপ কোণে কোভেন্ট গার্ডেনের সকাল, “strewed with decayed cabbage-leaves, broken haybands. . . men are shouting, carts backing, horses neighing, boys fighting, basket-women talking, piemen expatiating on the excellence of their pastry, and donkeys braying.”
উপায়হীন, ক্ষমতাহীন মানুষদের ইতিহাস অবশ্য কখনোই পাল্টায়নি, কিন্তু সেই ১৮৫০-এ লন্ডনের গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতন আতঙ্কের এক বিশাল কারণ ছিল কলেরার মহামারি। শুধু ১৮৪৮-৪৯-এই লন্ডনে কলেরাতেই মারা যান ১৪,১৩৭ জন মানুষ, মৃত্যুর হার ১০,০০০-এ ৬২ জন। কলেরার উপসর্গগুলিও সাংঘাতিক, প্রচণ্ড ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালান্স আর ডিহাইড্রেশন - ফলে ক্রমাগত ভেদবমি আর আমাশা – মরণাপন্ন কলেরা রোগীর ডিহাইড্রেশন এত ভয়ানক হয় যে গায়ের রঙ নীলাভ হয়ে যায়।
সরবরাহের অঞ্চল | বাড়ির সংখ্যা | কলেরায় মৃতের সংখ্যা | প্রতি ১০,০০০ বাড়িতে মৃত্যু |
সাউথওয়ার্ক এণ্ড ভক্সহল | ৪০,০৪৬ | ১,২৬৩ | ৩১৫ |
ল্যামবেথ | ২৬,১০৭ | ৯৮ | ৩৭ |
বাকি লন্ডন | ২৫৬,৪২৩ | ১,৪২২ | ৫৯ |