সুলেখক সুমিতা দাস ‘কলাম্বাস সিরিজের’ পরে এসেছেন বস্ত্রশিল্পের অসামান্য আলোচনা নিয়ে। বস্ত্রশিল্পের প্রায় প্রতিটি শাখায় তিনি বিচরণ করেছেন তাঁর বইটিতে। যে-মহাদেশে তুলো প্রায় উৎপাদন হয় না, যে-ইউরোপে সুতির কাপড় উৎপাদনের ঐতিহ্য নেই, সেই মহাদেশে কীভাবে একশো বছর ধরে বিশাল বিশাল মিল গড়ে উঠল, এ বইতে আছে তার চুম্বকীয় বর্ণনা। মাথায় রাখতে হবে ভারতের হাজার হাজার বছরের সুতির কাপড়ের উৎপাদন কাঠামো এবং বিশ্ববাজার ধ্বংস করে সেই উৎপাদন ব্যবস্থা প্রথমে মেট্রোপলিটনে নিয়ে যাওয়া, ও পরে সারা ইউরোপে ছড়িয়ে যাওয়া আদতে দীর্ঘকালের এশীয়-ইউরোপ বাণিজ্য লড়াই-এর ইউরোপ পক্ষ জেতার ফলশ্রুতিতে ঘটেছিল।
বাংলার ইতিহাসের অন্যমনস্ক দর্শকেরও নিশ্চয়ই জানা থাকবে কয়েক হাজার বছর ধরে বাংলা তথা এশিয়া ছিল বিশ্ব উৎপাদন এবং বাণিজ্যের ভিত্তিভূমি। সঙ্গে যোগ করত হবে আফ্রিকা এবং আমেরিকার নাম। গত আড়াইশো বছর ধরে যে স্বচ্ছল শিল্পবিকশিত ইউরোপকে আমরা দেখে থাকি, সে ছিল তখন মূলত এশিয়ার খাতক। ইউরোপীয়রা দৈনন্দিন প্রয়োজনের এমন কিছু উৎপাদন করতে পারত না, যা এশিয়া আফ্রিকা আমেরিকায় বিক্রি হতে পারে। অইউরোপীয় রাষ্ট্র সমাজ যা তৈরি করত, তারা সেগুলিই কিনত। কতকাল থেকে কেউ জানে না এশিয়া বিশ্বের কারখানা। এশিয়া বলতে পারস্য (আজকের ইরান ইরাক), দক্ষিণ এশিয়া—বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানি এবং চিন। বিশ্বের মোট উৎপাদনের ৮০+ ভাগীদার তারা। তার মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার অংশীদারি ২৬-৩০+ এবং বাংলার ৬+। ইউরোপকে এই অঞ্চলে রুপো, মশলা বা অন্যান্য দামি ধাতু ইত্যাদি দিয়ে ব্যাবসা করতে হত, সেটা সে আনত বিশ্বলুঠেই। সেই স্মৃতি আজ ভারতীয় মুদ্রা নামে টিকে আছে—রূপিয়া।
প্রাচীন কাল থেকে এশিয়ার সঙ্গে ইউরোপের তিনটে সমুদ্রপথ দিয়ে বস্ত্র, সোরা, রেশম, জংহীন লোহা ইত্যাদির ব্যাবসা হত—ক) সুরাট আর কালিকট থেকে জাহাজ পাড়ি জমাত পারস্য বন্দরে। সেখান থেকে উটের পিঠে রাজপথ ধরে কাজ়ভিন (আমরা যাকে ক্যাস্পিয়ান সাগর বলি) সাগরের তীরে আরমেনিয়া আর তাব্রিজ়, কৃষ্ণ সাগরের তীরে ত্রাবজ়োন (ট্রাবিজ়োন্ড), সিরিয়ার আলেপ্পো এবং দামুশ্ক (দামাস্কাস) হয়ে পৌঁছোত ভূমধ্যসাগরের তীরে শহরের রাজা কন্সট্যান্টিনোপলে। সেখান থেকে ইউরোপের লোম্বার্দি (ভেনিস আর জেনোয়ার ব্যবসায়ী) ব্যবসায়ীদের মারফত জাহাজে ভেনিস আর জেনোয়ায়। সেখান থেকে সারা ইউরোপ ছড়িয়ে যেত। খ) দ্বিতীয় পথ হল সুরাট-কালিকট হয়ে সোজা কন্সট্যান্টিনোপল—সেখান থকে রাজপথ বা সমুদ্রপথ বাহিত হয়ে ইউরোপ। গ) তৃতীয় পথটা ছিল কালিকট-সুরাট থকে সোজা কায়রো। মিশরীয় বণিকেরা ভারতীয় পণ্য নিয়ে চলে আসত এডেন বন্দরে। সেখান থেকে লোহিত সাগর পাড়ি দিয়ে সুয়েজে। তারপর কায়রো হয়ে জাহাজে করে আলেকজান্দ্রিয়া, ইউরোপীয়দের সঙ্গে হাতবদল। সামগ্রিক ব্যাবসাটা চালাত মুসলমান বণিকেরা, উৎপাদন থেকে বিতরণ সবই নিয়ন্ত্রণ করত এশীয়রা। ইউরোপীয়রা শুধুই খরিদ্দার (সূত্র ‘কালিকট থেকে পলাশী’, সতীন্দ্রমোহন চট্টোপাধ্যায়)। এ ছাড়া পারস্য লেভান্ট অঞ্চল হয়ে স্থলপথে কন্সট্যান্টিনোপলে পৌঁছোত কারিগরি উৎপাদন। ফলে ইউরোপকে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মশলা থেকে লোহা থেকে কাপড় থেকে সোরা থেকে সব কিছুই খরিদ করতে হত, এই বাজারে কিছুই বিক্রি করতে পারত না, তার বাণিজ্য ঘাটতি মিটত না।
কয়েক হাজার বছরের এই বাণিজ্য ঘাটতি মেটাতে ক্রুসেডের আমল ১০৯৯ থেকেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইউরোপ। প্রথম ক্রুসেডে ফরাসিরা পূর্বের দিকে অনেকটা পথ পাড়ি দিয়ে এশিয়া-ইউরোপের বাণিজ্যকেন্দ্র কনস্ট্যান্টিনোপল ইতালীয় বণিকদের হাতে ছেড়ে জেরুজালেমে সাম্রাজ্য স্থাপন করে। ধর্মীয় উদ্দেশ্য ছাড়াও ছিল মূলত এশীয় ঘাটতি বাণিজ্যের রাশ নিজেদের হাত নেওয়া। কিন্তু প্রথমে তুর্কি, পরে মোঙ্গল ইত্যাদির পশ্চিমের দিকে যাত্রায় ইউরোপের পরের ক্রুসেডগুলো ব্যর্থ হয়, পূর্ব এলাকা দখলে বাধা পড়ে এবং প্রথম ক্রুসেডের ৪৫০ বছর পরে কন্সট্যান্টিনোপল ইউরোপীয়দের হাতছাড়া হলে ইউরোপীয়রা সমুদ্র দিয়ে আরবি বণিকদের নিয়ন্ত্রিত পথ এড়িয়ে আফ্রিকা ঘুরে এশিয়া আসার চেষ্টা করতে থাকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তৈরি করে। ক্রুসেডের সৈন্যনির্ভর লড়াই বাণিজ্য লড়াইয়ের ঘোমটায় আশ্রয় নিল। উদ্দেশ্য এক, উপনিবেশ তৈরি করে বাণিজ্যজাত সম্পদ প্রবাহ ইউরোপের পক্ষে নিয়ে যাওয়া।
জেরুসালেমের দোরগোড়ায় প্রথম ক্রুসেডাররা। পশম ও রেশমে বোনা চিত্র (টেক্সটাইল টেপেস্ট্রি)। ডিজাইন দোমিনিকো পারাদিসি। ১৬৮৯-৯৩। বয়ন সান মিশেল ওয়ার্কশপ। সূত্র—দ্য মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট, নিউইয়র্ক।
পলাশি চক্রান্তের তিন বছরের মধ্যে আইনি বেআইনিভাবে বাংলায় ব্রিটিশরা বিপুল উদ্বৃত্ত তৈরি করল। তরল সময়ের রাজনৈতিক পরিবেশে অপরিমিত ঘুষের বন্যা বইল ইংরেজদের সিন্দুকে। এরপর থেকে তাদের আর বাণিজ্য করতে ইউরোপ থেকে সোনা-রুপা বহন করে আনতে হয়নি। দাদনি বণিকদের থেকে ধারও করতে হয়নি; সে অর্থ দিয়ে তারা তিন বছরের ব্যাবসার পুঁজি জোগাড় করল। পলাশির পর লুঠ আর ঘুষ এবং বাঙলার খাজনা দিয়ে দেশেরই জিনিস কিনে (অন্য নামে লুঠ করে) বিদেশে পাঠানোর নতুন বাণিজ্যনীতি গড়ে তুলবে ইংরেজরা। উচ্চমূল্যের এই ধাতুগুলি পূর্বের দেশগুলিতে বাণিজ্যের জন্য বয়ে আনার সহস্রাব্দ প্রাচীন এই প্রবণতাটি গায়ের জোরে বদল করে দিল ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির বাঙলা দখল। কোম্পানি শুধু দামি ধাতু আনা বন্ধ করল তাই নয়, প্রথমে গায়ের জোরে ব্যাবসার দখলদারি নিল, পরে বাঙলার শিল্প পরিকাঠামো ধংস করে নিজেদের দেশের পণ্যের বাজার তৈরি করল। অর্থাৎ পলাশিতে নবাব পক্ষের হারের ফলে শুধুই বাংলা পদানত হল না, হাজার হাজার বছরের বিশ্ববাণিজ্য ইতিহাসের গতিপথ পালটে এই প্রথম ইউরোপ উদ্বৃত্ত বাণিজ্য খাত তৈরি করল। ইউরোপ হল উত্তমর্ণ এশিয়া হল অধমর্ণ। বাংলার অর্থনীতিতে বিশিল্পায়ন ঘটল, কারিগর চাষিদের বিশ্ববাজারে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেল।
পলাশির পর শুধু বাংলা নয় এশিয়া এবং বিশ্বজুড়ে ইউরোপীয় উপনিবেশ তৈরি হল রাষ্ট্রীয় মদতে। বিশ্ব অর্থনীতি দখল করে ইউরোপে বিশাল বিশাল কারখানায়ও সে শ্রম প্রতিস্থাপন প্রযুক্তি দিয়ে প্রতি পলে শ্রমিককে উদ্বৃত্ত করেছে। লুঠেরা পুঁজির বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে, বাজার উন্মুক্ত করতে, বিশ্বজুড়ে বিশিল্পায়ন করতে পুঁজির প্রয়োজন ছিল রাষ্ট্রের একচেটিয়া পৃষ্ঠপোষকতা। সেই দরকষাকষিতে কখনও একচেটিয়া পুঁজি শক্তিশালী হয়েছে, কখনও রাষ্ট্র। একচেটিয়া পুঁজি রাষ্ট্রীয় সেনাবাহিনীর সাহায্যে নানান আন্দোলন দমন করল, যুদ্ধ চাপিয়ে দিল আর রাষ্ট্রের আইন ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে। পুঁজি ছড়িয়ে যাবার যেসব হাতিয়ার দেখি, ফরোয়ার্ড ট্রেডিং, শেয়ার বাজার, পণ্য এক্সচেঞ্জ ইত্যাদি তৈরি করল। রাষ্ট্র তাকে দিয়ে কিছুটা হলেও হাতে গোনা শ্রমিকের সুরক্ষাকবচ দেওয়াতে বাধ্য করল। রাষ্ট্র এবং পুঁজির যৌথ উদ্যোগে বিশ্বজুড়ে কর্পোরেট লুঠ চলল, সেই সম্পদ জড়ো হল আজকের ইউরোপ-আমেরিকায়।
ইউরোপীয় শিল্পায়নের ইতিহাসে পলাশির গুরুত্ব বিশাল কারণ পলাশি লুঠের উদ্বৃত্তে ২৩ বছর পরে ইংল্যান্ডে ১৭৮০-তে গড়ে উঠবে প্রথম কেন্দ্রীভূত কাপড়ের মিল। কিন্তু লন্ডন কেন, ইউরোপ ভূমিতে তুলো হয় না, তুলো হয় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশগুলিতে। ইউরোপ জানত তুলো মানে ভারত এবং বাংলা এবং বঙ্গোপসাগরীয় এলাকা। যে জন্য তৈরি হবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। তুলো মানেই যেহেতু ভারত, তাই কলাম্বাস এবং অন্যান্য ইউরোপীয় লুঠেরারা যেসব দেশে লুঠ করে উপনিবেশ তৈরি করতে গিয়ে তুলো দেখেছে, সেই অঞ্চলকে ভারত এবং অধিবাসীদের ভারতীয় দেগে দিয়েছে—আমেরিকার দুই অর্ধ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইস্ট ইন্ডিজ একের পর এক দেশ/অঞ্চল ভাবুন, তাহলেই বোঝা যাবে ভারত আর তুলোর সম্পর্ককে কীভাবে ইউরোপীয়রা দেখছে।
অথচ বাঙলা এবং ভারতীয়রা ইউরোপীয়দের বহু আগেই ভারতীয় কাপড়ের বিশ্বায়ন সেরে ফেলেছিল। কয়েক হাজার বছর ধরে সমুদ্র এবং সড়ক পথে সারা বিশ্বে কাপড় রপ্তানি করেছে—গরমে সুতির কাপড় পরার আরম অনুভব করতে শিখিয়েছে। কিন্তু কন্সট্যান্টিনোপল হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় ইউরোপ জুড়ে উন্মাদনা উঠল পূর্ব দেশে আসার বাঙলা এবং বাঙলা সংলগ্ন দেশে আসার—ইউরোপ জুড়ে তৈরি হল একের পর এক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। উদ্দেশ্য ব্যাবসার ঘোমটায় ক্রুসেডের বিস্তৃতি এবং উপনিবেশ তৈরি। তাদের একটার, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির, হাতে পতন হল বাঙলার। আদতে শুধু বাঙলার পতন হল না, পতন হল সামগ্রিক এশীয় ব্যাবসারও। সেসময় ইউরোপীয় ব্যাবসার কেন্দ্র হয়ে ওঠা ইংল্যান্ডের হাতে বাঙলা লুঠের বিপুল উদবৃত্ত অর্থ (কতটা বিপুল বুঝতে দেখুন Cuenca-Esteban, J. (2007). India’s contribution to the British balance of payments, 1757–1812) জমা তো হল, বাংলার লুঠ আর রাজস্বজাত ব্যাবসা অর্থ দিয়ে বাঙলা বা ভারতের কাপড়ের বিশ্বজোড়া ব্যাবসা ধ্বংস করা যাবে না। ইতিমধ্যে ব্রিটিশেরা দখল নিয়েছে সমুদ্রবাণিজ্যের। দীর্ঘকালের মুসলমান বণিকদের ব্যাবসাপথের নিয়ন্ত্রণ ব্রিটিশ হাতে গেল। তাতেও বিপুল উৎপাদনের মূল কাঁচামালের সমস্যা মেটে না। ইউরোপে যেহেতু যথেষ্ট পরিমাণে তুলো হয় না, হয় পশম, সে বিশাল বিশাল সুতি কাপড়ের কল চালাবে কী দিয়ে? কাপড়ের কলে তুলো এল প্রথমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ উপনিবেশ, তারা বিদ্রোহ করে স্বাধীন হলে আর একটা প্রাক্তন উপনিবেশ আমেরিকা থেকে।
মাথায় তুলোর বোঝা, খেত থেকে ফিরছেন কৃষ্ণাঙ্গ দাসের দল। ১৮৬০-এর দশক। দক্ষিণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
সেখানকার দেশীয় মানুষদের ওপর গণহত্যা চালিয়ে, একের পর এক সমাজকে উচ্ছেদ করে তাদের এলাকা দখল নিয়ে আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলে বিশাল বিশাল তুলো বাগিচায় তুলো উৎপন্ন হল আফ্রিকান দাস-শ্রম খাটিয়ে। বাঙলার উদ্বৃত্ত সম্পদ আর কাপড় প্রযুক্তির জ্ঞান আর আমেরিকার শ্রম উদ্বৃত্ত এই নিয়ে গড়ে উঠল প্রথমে ইংল্যান্ডে, তারপরে ইউরোপের মূল ভূখণ্ডে একের পর এক বিশাল বিশাল কাপড়ের কল। কিন্তু এই কাপড়ের কলে খাটবে কে? প্রচুর শ্রমিক প্রয়োজন কাপড়ের কল চালাতে। তাই প্রথমে ইংল্যান্ডে, তারপরে অন্যান্য দেশের কারিগর, চাষি, পশুপালকদের ওপর উপনিবেশ চাপিয়ে দেওয়া হল। তাদের উচ্ছেদ করে আমেরিকার দাসশ্রম খাটানোর ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করে জুতে দেওয়া হল কারখানায়। ইতিমধ্যে ফরাসি বিপ্লবের প্রভাবে ফ্রান্সে দাস শ্রমিক খাটানোর ব্যবস্থাপনা পালটেছে। কিন্তু একচেটিয়া পুঁজির চাপে ফরাসিরাও শেষ অবধি হাল ছেড়ে দিয়ে ব্রিটিশ দাস শ্রম ব্যবস্থা অনুসরণ করল।
এত সব গাইলাম কারণ, ইউরোপীয় যে বাণিজ্যযুদ্ধ এশিয়ার ওপর চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল হাজার বছর আগে ক্রুসডের ছলে, সেটাকে তারা কাপড়ের মিল তৈরি করে সামাল দিলেও সেই লড়াই আজও চলছে নানান ধরনের বহুপাক্ষিক বাণিজ্য কাঠামো তৈরির নামে। এশীয়-ইউরোপীয় বাণিজ্য লড়াই-এর ধরতাই-এর মূলত শেষ পর্ব বুঝতে পিপল্স বুক সোসাইটি থেকে সুমিতা দাসের কলমে প্রকাশিত ‘ভারত থেকে ম্যাঞ্চেস্টার—প্রথম বিশ্বায়িত পণ্য: সুতিবস্ত্র’ নামক অসামান্য বই হাতিয়ার হতে পারে। সুমিতা প্রাচীন সময়ের ভারতের হাত চালানো তাঁত থেকে ম্যাঞ্চেস্টারের কলে বস্ত্র উৎপাদনের পদ্ধতি, ব্যাবসা এবং প্রযুক্তি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করছেন। বইতে সাদা কালো সহ রঙিন ছবি ব্যবহার করেছন তিনি। বস্ত্র সংক্রান্ত প্রায় সব বিষয় আলোচিত হয়েছে। এই ধরনের বই বাংলায় হাতে গোনা, সুশীল চৌধুরীর ‘পৃথিবীর তাঁতঘর’ সর্বার্থে ব্যতিক্রম। এ ছাড়া, তুলোর বিশ্ব ইতিহাস নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেছেন স্বেন বেকার্ট, ‘এম্পায়ার অব কটন’ বইতে। বইটি সম্প্রতি বাংলায় অনূদিত হয়েছ।
সুমিতার ব্যতিক্রমী বইটি সর্বস্তরের মানুষের অবশ্যপাঠ্য।
"পৃথিবীর তাঁতঘর" কোঘায় পাওয়া যাবে?
খুব ভালো লাগলো রিভিউ পড়ে। বইটি অবশ্যই সংগ্রহ করতে হবে।
এটাও পড়বেন। পিপলস বুক সোসাইটি - কলম্বাস-পূর্ব আমেরিকা: মুছে দেওয়া সভ্যতার ইতিহাস - সুমিতা দাস
কলম্বাসের পর আমেরিকা: ধ্বংস মৃত্যু লুন্ঠন ও গণহত্যা - সুমিতা দাস - পিপলস বুক সোসাইটি
অসাধারণ