এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • সনাতনীদের জ্ঞাতার্থে এবং পালনার্থে রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণাদি হিন্দুশাস্ত্রে বর্ণিত কিছু অত্যাশ্চর্ষ সরস কাহিনির সংক্ষিপ্ত সংকলন

    Ashoke Ghosh লেখকের গ্রাহক হোন
    ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ | ১০২ বার পঠিত
  • পর্ব ১ | পর্ব ২ | পর্ব ৩
    ইন্দ্র ও ঋষি দেবশর্মার পত্নী রুচি

    ঋষি দেবশর্মার পত্নী অতুলনীয়া সুন্দরী রুচির প্রতি ইন্দ্রের লালসা ছিলো। দেবশর্মা স্ত্রীচরিত্র ও ইন্দ্রের পরস্ত্রীলালসার বিষয়ে অবহিত থাকিবার জন্য রুচিকে সাবধানে রক্ষা করিতেন। একদা তিনি তাঁহার প্রিয় শিষ্য বিপুলকে কহিলেন, আমি যজ্ঞ করিতে যাইতেছি, আমার অনুপস্থিতিতে তুমি তোমার গুরুপত্নীকে সাবধানে রক্ষা করিবে। সুরেশ্বর ইন্দ্র রুচিকে সর্বদা কামনা করেন, তিনি বহুপ্রকার মায়া জানেন, বজ্রধারী কিরীটী, চণ্ডাল, জটাচীরধারী, কুরূপ, রূপবান, যুবা, বৃদ্ধ, ব্রাহ্মণ বা অন্য বর্ণ, পশুপক্ষী বা মক্ষিকামশকাদির রূপও ধারণ করিতে পারেন। দুষ্ট কুকুর যেরূপ যজ্ঞের ঘৃত লেহন করে, সেইরূপ দেবরাজ যেন রুচিকে উচ্ছিষ্ট করিতে না পারেন।

    দেবশর্মা চলিয়া যাইবার পরে বিপুল ভাবিলেন, মায়াবী ইন্দ্রকে নিবারণ করা আমার পক্ষে দুঃসাধ্য, আমি পৌরুষ দ্বারা গুরুপত্নীকে রক্ষা করিতে সমর্থ হইব না। অতএব আমি যোগবলে গুরুপত্নীর শরীরে প্রবেশপূর্বক পদ্মপত্রে জলবিন্দুর ন্যায় নির্লিপ্তভাবে অবস্থান করিব, তাহাতে আমার অপরাধ হইবে না। এইরূপ ভাবিয়া মহাতপা বিপুল রুচির নিকটে উপবেশন করিয়া স্বীয় নেত্ররশ্মি রুচির নেত্রে সংযোজিত করিয়া গুরুপত্নীর দেহে নির্লিপ্তচিত্তে প্রবেশ করিলেন। রুচি স্তম্ভিত হইয়া রহিলেন, তাহার দেহমধ্যে বিপুল ছায়ার ন্যায় অবস্থান করিতে লাগিলেন।

    ঋষি দেবশর্মার শঙ্কা সত্য প্রমাণ করিয়া ইন্দ্র আকর্ষণীয় রূপ ধারণ করিয়া উপস্থিত হইয়া দেখিলেন, আলেখ্যে চিত্রিত মূর্তির ন্যায় বিপুল স্তব্ধনেত্রে বসিয়া আছেন আর তাহার সন্নিকটে পূর্ণচন্দ্রনিভাননা পদ্মপলাশাক্ষী রুচিও উপবেশন করিয়া আছেন। ইন্দ্রের রূপদর্শনে বিস্মিতা রুচি বলিবার চেষ্টা করিলেন “তুমি কে? কিন্তু সমর্থ হইলেন না। ইন্দ্র মধুরবাক্যে কহিলেন, সুন্দরী, আমি ইন্দ্র, কামার্ত হইয়া তোমার নিকট আসিয়াছি, আমার অভিলাষ পূর্ণ করো। রুচিকে নিশ্চেষ্ট ও নির্বিকার দেখিয়া ইন্দ্র পুনরায় তাহাকে আহ্বান করিলেন, রুচিও উত্তর দিবার চেষ্টা করিলে বিপুল গুরুপত্নীর মুখ দিয়া কহিলেন, কিহেতু আসিয়াছ? এইরূপ বাক্য নির্গত হইলে রুচি লজ্জিত হইলেন, ইন্দ্রও উদ্বিগ্ন হইলেন এবং দেবরাজ দিব্যদৃষ্টি দ্বারা দেখিলেন, মহাতপা বিপুল দর্পণস্থ প্রতিবিম্বের ন্যায় রুচির দেহমধ্যে অবস্থান করিতেছেন। ইন্দ্র অভিশাপের শঙ্কায় ত্রস্ত হইয়া কাঁপিতে লাগিলেন। ইন্দ্রের অবস্থা দর্শনে বিপুল নিজের শরীরে প্রবেশ করিয়া কহিলেন, অজিতেন্দ্রিয় দুর্বুদ্ধি পাপাত্মা পুরন্দর, তুমি দেবতা আর মনুষ্যের পূজা অধিক দিন ভোগ করিবে না। গৌতমের অভিশাপে তোমার সর্বদেহে যোনিচিহ্ন হইয়াছিল তাহা কি বিস্মৃত হইযাছ? আমি গুরুপত্নীকে রক্ষা করিতেছি, তুমি দূর হও, আমার গুরু তোমাকে দেখিলে এখনই দগ্ধ করিবেন। তুমি নিজেকে অমর ভাবিয়া আমাকে অবজ্ঞা করিও না। তপস্যার অসাধ্য কিছুই নাই জানিয়া ইন্দ্র নিরুত্তর থাকিয়া মূহুর্তমধ্যে অন্তর্হিত হইলেন।

    শিব ও বিষ্ণুর মোহিনী রূপ

    শিব বিষ্ণুর মোহিনী রূপ দর্শনেচ্ছুক হইলে বিষ্ণু শিবকে কহিলেন, “সমুদ্র মন্থনকালে অসুরেরা যখন অমৃতভাণ্ড অপহরণ করিয়াছিল তখন আমি এক সুন্দরী রমণীর রূপ ধারণপূর্বক তাহাদের মোহিত করিয়া দেবতাদের কার্যোদ্ধার করিয়াছিলাম। হে মহেশ্বর, যেহেতু আপনি ইচ্ছা প্রকাশ করিয়াছেন, সেইজন্য আমি আপনাকে কামার্ত ব্যক্তিদের অত্যন্ত অভিলষিত আমার সেই রূপ দেখাইব।” এইরূপ কহিয়া বিষ্ণু তৎক্ষণাৎ অন্তর্হিত হইলেন এবং মহাদেব ও উমা চতুর্দিকে চক্ষু সঞ্চালন করিয়া তাহাকে খুঁজিতে লাগিলেন। অকস্মাৎ নানাবিধ ফুল এবং অরুণবর্ণ পল্লবযুক্ত বৃক্ষশোভিত নিকটবর্তী এক উপবনে মহাদেব অপূর্ব সুন্দরী এক রমণীকে কন্দুক লইয়া ক্রীড়ারত দেখিতে পাইলেন। তাহার নিতম্বদেশ উজ্জ্বল বস্ত্রের দ্বারা আচ্ছাদিত এবং মেখলা শোভিত। সেই কন্দুকের অবক্ষেপণ এবং উৎক্ষেপণ করিয়া সেই রমণী যখন খেলিতেছিলেন, তখন তাহার স্তনদ্বয় কম্পিত হইতেছিল এবং তাহার সেই স্তনভারে বোধ হইতেছিল তাহার সুকোমল অনুর মধ্যভাগ প্রতি পদক্ষেপে ভগ্ন হইয়া যাইবে, এইরূপে তিনি তাহার কুসুমতুল্য কোমল চরণ ইতস্ততঃ সঞ্চালন করতেছিলেন। সেই রমণীর মুখমণ্ডল আয়ত, সুন্দর, চঞ্চল চক্ষুর দ্বারা সুশোভিত এবং তাহার নয়নযুগল কন্দুকের উৎক্ষেপণ এবং অবক্ষেপণের সহিত ঘুরিতেছিল। অতি উজ্জ্বল কর্ণকুণ্ডল তাহার উজ্জ্বল গণ্ডদেশ নীলাভ প্রতিবিম্বে সুশোভিত করিয়াছিল এবং আলুলায়িত কেশরাশি তাহার মুখমণ্ডলকে আরও আকর্ষনীয় করিয়া তুলিয়াছিল। কন্দুক লইয়া খেলিতে খেলিতে তাহার বস্ত্র শিথিল হইয়াছিল এবং কেশ স্খলিত হইয়াছিল। তিনি সুন্দর বাম হস্তদ্বারা তাহার কেশ বন্ধনের প্রয়াস করিতেছিলেন এবং দক্ষিণ হস্তদ্ব্বারা সেই কন্দুক লইয়া খেলিতেছিলেন। এইরূপে বিষ্ণু আত্মমায়ার দ্বারা সমগ্র জগৎ বিমোহিত করিয়াছিলেন।

    মহাদেব যখন সেই সুন্দরী রমণীকে কন্দুক লইয়া খেলা করিতে দেখিতেছিলেন, তখন সেই রমণীও তাহার প্রতি ক্ষণে ক্ষণে দৃষ্টিপাত করিয়া সলজ্জে ঈষৎ হাস্য করিতেছিলেন। সেই সুন্দরী রমণীকে নিরীক্ষণ করিয়া এবং সেই রমণীকে প্রতিনিরীক্ষণ করিতে দেখিয়া মহাদেব তাহার পরমা সুন্দরী পত্নী উমা এবং নিকটস্থ পার্ষদগণকে বিস্মৃত হইলেন। রমণীর হস্ত হইতে অকস্মাৎ কন্দুকটি দূরে পতিত হইলে তিনি কন্দুকটির পশ্চাদ্ধাবন করিবার ফলে মহাদেবের সমক্ষেই বায়ু তাহার কটিদেশের সূক্ষ্ম বস্ত্র উড়াইয়া লইলে মহাদেব দেখিলেন, সেই রমণীর প্রতিটি অঙ্গ অনিন্দ্যসুন্দর এবং সেই রমণীও মহাদেবকে নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন। সেই রমণী তাহার প্রতি আকৃষ্ট হইয়াছেন ভাবিয়া মহাদেব তাহার প্রতি কামাসক্ত হইয়া পড়েন। সেই রমণীর সহিত রমণ করিবার বাসনায় শিব এমনই উন্মত্ত হইলেন যে, ভবানীর সমক্ষেই তিনি নির্লজ্জভাবে সেই সুন্দরীর পশ্চাদ্ধাবন করিলেন। প্রবল বায়ুপ্রভাবে সেই সুন্দরী রমণী ইতিমধ্যে বিবসনা হইয়া পড়িয়াছিলেন এবং তিনি শিবকে তাঁহার প্রতি ধাবিত দেখিয়া সাতিশয় লজ্জিত হইয়া হাসিতে হাসিতে বৃক্ষের অন্তরালে লুকাইলেন এবং দ্রুত স্থান পরিবর্তন করিতে থাকিলেন। মহাদেবের কামতাড়না নিয়ন্ত্রণহীন হইবার ফলে কামান্ধ হস্তী যেমন হস্তিনীর প্রতি ধাবিত হয়, মহাদেবও সেইরূপে সুন্দরীর প্রতি ধাবিত হইলেন। দ্রুতবেগে রমণীর পশ্চাতে ধাবিত হইয়া মহাদেব সেই সুন্দরীর বেণী আকর্ষণপূর্বক তাহাকে আলিঙ্গন করিলেন। হস্তির দ্বারা আলিঙ্গিতা হস্তিনীর ন্যায় বিষ্ণুর যোগমায়া নির্মিতা নিতম্বিনী সুন্দরী মহাদেবের দ্বারা আলিঙ্গিতা হইবার পর আলুলায়িত কেশে মহাদেবের বাহুপাশ হইতে মুক্ত হইয়া দ্রুতবেগে পলায়ন করিলেন। মত্ত হস্তী যেরূপ ঋতুমতী হস্তিনীর অনুগমন করে, অমোঘবীর্য মহাদেবও সেইরূপে সেই সুন্দরীর পশ্চাদ্ধাবন করিতে লাগিলেন এবং তখন তাঁহার বীর্য স্খলিত হইয়াছিল। পৃথিবীর যে সকল স্থানে মহাদেবের বীর্য পতিত হইয়াছিল, সেই সেই স্থান স্বর্ণ ও রৌপ্যের খনিতে পরিণত হইয়াছিল। মোহিনীকে অনুসরণকালে মহাদেব নদী, সরোবর , পর্বত, বন ও উপবনে এবং যে সকল স্থানে ঋষিগণ অবস্থান করিতেন, সেই সকল স্থানে গিয়াছিলেন। মহাদেবের বীর্য সম্পূর্ণরূপে স্খলিত হইলে তিনি উপলব্ধি করিলেন কিপ্রকারে তিনি বিষ্ণুর মায়ায় বশীভূত হইয়াছেন এবং তখন তিনি সেই মোহ হইতে নিবৃত্ত হইলেন।”

    পরাশর ও সত্যবতী এবং কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসের জন্মকাহিনি

    কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস মহাভারতের রচয়িতা এবং অন্যতম প্রধান চরিত্র। বেদব্যাসের পিতা মহামুনি পরাশর এবং মাতা সত্যবতী।
    একদা পরাশর যমুনা নদী পার হইবার নিমিত্ত একখানি নৌকায় উঠিলেন যাহার চালিকা ছিলেন পরমাসুন্দরী ধীবরকন্যা সত্যবতী। সত্যবতীর রূপদর্শনে পরাশর কামার্ত হইয়া সত্যবতীকে সম্ভোগ করিতে চাহিলে সত্যবতী কহিলেন, কুমারী অবস্থায় আপনার সহিত আমার মিলিত হইবার কথা কেহ জানিতে পারিলে বা প্রকাশ পাইলে আমার বিবাহ হইবে না। সত্যবতীর কথা শ্রবণ করিয়া পরাশর ঘন কুজ্ঝ্বটিকা সৃষ্টি করিয়া কহিলেন তোমার সহিত আমার মিলন কাহারো দৃষ্টিগোচর হইবে না এবং আমার বরে তোমার শরীরে কুমারীর লক্ষণ অটুট থাকিবে। পরাশর ও সত্যবতীর মিলনে সত্যবতী গর্ভবতী হইলেন এবং যথাসময়ে একটি দ্বীপে এক পুত্রের জন্ম দিয়েছিলেন। সেই পুত্রের গাত্রবর্ণ ঘোর কৃষ্ণ এবং জন্ম দ্বীপে হইবার হেতু তাহার নামকরণ হইল কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস।

    অযোনীজ, শুক্রোৎপন্ন, নিয়োগপদ্ধতি এবং যজ্ঞোৎপন্ন বিভিন্ন মুনি-ঋষি, রাজপুত্র ও রাজকন্যার কাহিনিঃ

    যুবনাশ্ব এবং মান্ধাতার কাহিনি

    ইক্ষাকুবংশে যুবনাশ্ব নামক এক রাজা ছিলেন। তিনি মন্ত্রীদের উপর রাজ্যভার অর্পণ করিয়া বনমধ্যে যাইয়া সন্তানকামনায় যোগসাধনা করিতে লাগলেন। একদিন তিনি ক্লান্ত ও পিপাসার্ত হইয়া চ্যবন মুনির আশ্রমে প্রবেশ করিয়া দেখিলেন যজ্ঞবেদীর উপর এক কলস জল রক্ষিত আছে। যুবনাশ্ব জল চাহিলেন, কিন্তু তাহার ক্ষীণ কণ্ঠস্বর কেহই শুনিতে পাইলেন না। তখন তিনি সেই কলস হইতে জলপান করিয়া অবশিষ্ট জল ফেলিয়া দিলেন।
    চ্যবন ও অন্যান্য মুনিরা জাগরিত হইয়া দেখিলেন, কলস জলশূন্য। যুবনাশ্বের স্বীকারোক্তি শ্রবণে চ্যবন কহিলেন, রাজা, আপনি অনুচিত কার্য করিয়াছেন, আপনার পুত্রোৎপত্তির নিমিত্ত এই তপঃসিদ্ধ জল রাখিয়াছিলাম। জলপান করিবার ফলে আপনিই গর্ভবতী হইয়া পুত্র প্রসব করিবেন কিন্তু গর্ভধারণের ক্লেশ অনুভব করিন না। শতবর্ষ পূর্ণ হইলে যুবনাশ্বের বাম পার্শ্ব ভেদ করিয়া এক সূর্যতুল্য তেজস্বী পুত্র নির্গত হইল। দেবতারা শিশুটিকে দর্শন করিতে আসিলেন। তাহারা কহিলেন, এই শিশু কি পান করিবে? ‘মাং স্যতি’ (আমাকে পান করিবে) — এই বাক্য বলিয়া ইন্দ্র তাহার মুখমধ্যে স্বীয় তর্জনী প্রবেশ করাইলে পুরে দিলেন, শিশুটি তাহা স্তন্যবৎ চুষিতে লাগিল। এইজন্য তাহার নামকরণ হইল মান্ধাতা। এই মান্ধাতা রামচন্দ্রের পূর্বপুরুষ ছিলেন।

    বিভাণ্ডক মুনি, ঋষ্যশৃঙ্গ মুনি এবং রামচন্দ্রাদি চার ভ্রাতার জন্মকাহিনি

    একদা বিভান্ডক মুনি দীর্ঘকাল তপস্যায় শ্রান্ত হইয়া নদীতে অবগাহন করিতেছিলেন, এমন সময় অপ্সরা উর্বশীকে দর্শনমাত্র তিনি কামার্ত হওয়ায় জলমধ্যে তাহার শুক্রপাত হইয়া গেলো। সেই সময় এক তৃষিতা হরিণী বিভান্ডক মুনির স্নানান্তে সেই স্থান হইতে বিভান্ডকের শুক্রমিশ্রিত জলপান করিয়া গর্ভবতী হইলো এবং যথাকালে এক মানবশিশু প্রসব করিলো। এই মানবশিশুর মস্তকের উপর হরিণের মতো শৃঙ্গ ছিলো। সেই শিশুর ঋষ্যশৃঙ্গ নামকরণ করা হইলো। ঋষ্যশৃঙ্গ বালকাবস্থা হইতেই সর্বদা ব্রহ্মচর্যে নিরত থাকিতেন এবং পিতা বিভাণ্ডক ভিন্ন অন্য কোনো মানুষও দেখেন নাই। সেই সময়ে অঙ্গদেশে রাজা ছিলেন লোমপাদ, তিনি অযোধ্যার রাজা দশরথের বন্ধু ছিলেন। রাজা লোমপাদের কন্যা শান্তার সহিত ঋষ্যশৃঙ্গের বিবাহ হয়। এই ঋষ্যশৃঙ্গ মুনি রাজা দশরথের দ্বারা আয়োজিত পুত্রেষ্ঠি যজ্ঞ সম্পাদন করিলে, দশরথের তিন পত্নী কৌশল্যার গর্ভে রাম, কৈকেয়ীর গর্ভে ভরত এবং সুমিত্রার গর্ভে লক্ষ্মণ ও শত্রুঘ্ন নামে চার পুত্র জন্মগ্রহণ করিয়াছিল।

    (প্রথমতঃ সত্যই কি হরিণী বীর্যমিশ্রিত জলপান করিয়া গর্ভবতী হইয়াছিল, না কি বিভাণ্ডক হরিণীর সহিত মিলিত হইবার কারণে গর্ভবতী হইয়াছিল – ইহা সন্দেহের ঊর্দ্ধে নহে। দ্বিতীয়তঃ রাম, ভরত লক্ষ্মণ ও শত্রুঘ্নকে কি দশরথের পুত্র বলিয়া অভিহিত করা যৌক্তিক?)।

    মৎস্যগন্ধা বা সত্যবতীর জন্মকাহিনি

    শুক্তিমতী নদীর সন্নিকটে রাজা উপরিচরের রাজধানী ছিলো। কোলাহল নামক পর্বত শুক্তিমতী নদীর গর্ভে এক পুত্র এবং এক কন্যা উৎপাদন করিয়াছিল। রাজা উপরিচর সেই পুত্রকে সেনাপতি এবং কন্যাকে মহিষী করিলেন। একদিন মৃগয়া করিতে গিয়ে রাজা উপরিচর তাহার ঋতুস্নাতা রূপবতী মহিষী গিরিকাকে স্মরণ করিয়া কামাবিষ্ট হইলে তাহার শুক্রস্খলন হইয়া যাওয়ায় সেই শুক্র এক শ্যেনপক্ষীকে সমর্পণ করিয়া কহিলেন, তুমি শীঘ্র যাইয়া গিরিকাকে এই শুক্র অর্পণ করিবে। পথিমধ্যে অন্য এক শ্যেনপক্ষীর আক্রমণে সেই শুক্র যমুনার জলে পতিত হইলে অদ্রিকা নামক ব্রহ্মশাপে মৎস্যরূপী এক অপ্সরা সেই শুক্রমিশ্রিত জল পান করিয়া গর্ভিণী হইবার পর দশম মাসে ধীবরের জালে ধৃত হইল। ধীবর সেই মৎসীর উদরে একটি সুদর্শন পুরুষ এবং একটি সুদর্শনা কন্যা সন্তান পাইয়া রাজা উপরিচরের নিকট লইয়া যাওয়ার মূহুর্তে অপ্সরা শাপমুক্ত হইয়া গেলো।

    উপরিচর পুরুষ সন্তানটিকে রাখিয়া ধীবরকে কহিলেন, এই কন্যা তোমারই হোক। সেই সুদর্শনা কন্যার নামকরণ করা হইল সত্যবতী এবং তাহারই অপর নাম মৎস্যগন্ধা।

    দ্রোণাচার্যের জন্মকাহিনি

    দেবগুরু বৃহষ্পতির পুত্র মহর্ষি ভরদ্বাজ গঙ্গায় স্নান করিতে গিয়াছিলেন। সেইস্থানে অনিন্দ্যরূপযৌবনসম্পন্না মদদৃপ্তা অপ্সরা ঘৃতাচি তখন স্নান করিতেছিল। নদীর খরস্রোতে ঘৃতাচির অঙ্গবস্ত্র ভাসিয়া যাওয়ায় জলমধ্যে নগ্নিকা সুন্দরী ঘৃতাচিকে দর্শন করিয়া ভরদ্বাজ কামোন্মাত্ত হইয়া পড়িলেন এবং তৎক্ষণাৎ তাঁহার বীর্যপাত হইয়া গেলো। ভরদ্বাজ সেই স্খলিত বীর্য সংগ্রহপূর্বক একটি 'দ্রোণ' বা কলস নামক পাত্রে সংরক্ষণ করিলেন। সেই সংগৃহীত বীর্য হইতে এক পুত্রের জন্ম হইল। দ্রোণে রক্ষিত বীর্য হইতে জন্ম লইবার জন্য সেই পুত্রের নাম দ্রোণাচার্য।

    কৃপাচার্য ও কৃপীর জন্মকাহিনি

    মহর্ষি গৌতমের পুত্র শরদ্বান অজেয় ধনুর্বিদ ছিলেন এবং তাহার পরাক্রম ও ধনুর্বিদ্যায় পারদর্শিতা দেবরাজ ইন্দ্রকে শঙ্কিত করিয়াছিল। একদা মহর্ষি গৌতমের পুত্র শরদ্বান যখন বনমধ্যে তপস্যা করিতেছিলেন, তখন ইন্দ্রপ্রেরিত অতি সূক্ষ্ম বস্ত্রপরিহিতা উদ্ভিন্নযৌবনা এক অপ্সরা তথায় আগমন করিয়া মনোহর ভঙ্গিমায় শরদ্বানকে আকৃষ্ট করিতে থাকিলেন। সেই অপ্সরার মনোহর অঙ্গভঙ্গিমায় শরদ্বান কামার্ত হইয়া পড়ায় তাহার বীর্যস্খলন হইয়া একটি শর-এর অগ্র্ভাগে পতিত হইলে স্খলিত বীর্য দ্বিধাবিভক্ত হইয়া ভূমিতে পড়িবামাত্র একটি শিশুপুত্র এবং একটি শিশুকন্যার জন্ম হইয়াছিল। সেই শিশুদ্বয়কে দেখিতে পাইয়া রাজা শান্তনু রাজপ্রাসাদে আনয়ন করিয়া শিশুপুত্রের নাম কৃপ এবং শিশুকন্যার নাম কৃপী রাখিলেন।

    বিচিত্রবীর্য, ধৃতরাষ্ট্র, পাণ্ডু ও বিদুরের জন্ম বৃত্তান্ত

    শান্তনুর সহিত সত্যবতীর বিবাহ হইলে সত্যবতীর গর্ভে চিত্রাঙ্গদ ও বিচিত্রবীর্য নামে শান্তনুর দুই পুত্রের জন্ম হইয়াছিল। কনিষ্ঠ পুত্র যৌবনলাভ করিবার পূর্বেই শান্তনুর মৃত্যু হওয়ায় ভীষ্ম চিত্রাঙ্গদকে রাজপদে অভিষিক্ত করিলেন। চিত্রাঙ্গদ বলদর্পে মনুষ্য দেবতা অসুর গন্ধর্ব সকলকেই নিকৃষ্ট ভাবিতেন। একদিন গন্ধর্বরাজ চিত্রাঙ্গদ তাহাকে কহিলেন, তোমার আর আমার একই নাম, আমার সহিত যুদ্ধ করো নতুবা অন্য নাম গ্রহণ করো। তখন কুরুক্ষেত্রে হিরন্মতী নদীতীরে দুজনের ঘোর যুদ্ধে শান্তনুনন্দন চিত্রাঙ্গদ নিহত হইলে ভীষ্ম নাবালক বিচিত্রবীর্যকে রাজপদে অধিষ্টিত করিলেন। বিচিত্রবীর্য যৌবনলাভ করিলে ভীষ্ম তাহার বিবাহ দেওয়ার নিমিত্ত বিমাতার অনুমতি লইয়া অম্বা অম্বিকা ও অম্বালিকা নাম্নী কাশীরাজের তিন কন্যাকে বলপূর্বক হস্তিনাপুরে লইযা আসিলেন।

    বিবাহের পূর্বে কাশীরাজের জ্যেষ্ঠা কন্যা অম্বা ভীষ্মকে বলিলেন, আমি স্বয়ংবরে শাল্বরাজকে পতিরূপে বরণ করিতাম, তিনিও আমাকে পত্নীরূপে চাহেন, আমার পিতারও তাহাতে সম্মতি আছে। অম্বার মনোবাসনা শ্রবণ করিয়া ভীষ্ম অম্বাকে শাল্বরাজের নিকট প্রেরণ করিলেন এবং অন্য দুই কন্যা অম্বিকা ও অম্বালিকার সহিত বিচিত্রবীর্যের বিবাহ দিলেন। বিচিত্রবীর্য দুই সুন্দরী পত্নীকে পাইয়া অতিশয় কামাসক্তির হেতু ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হইয়া মৃত্যুবরণ করিলেন। পুত্রশোকে কাতর সত্যবতী তাহার দুই পুবধূকে সান্ত্বনা দিয়ে ভীষ্মকে কহিলেন, রাজা শান্তনুর বংশরক্ষার ভার এখন তোমার। তুমি ধর্মের তত্ত্ব এবং কুলাচার সবিশেষ অবহিত, অতএব আমার আদেশে বংশরক্ষার নিমিত্ত দুই ভ্রাতৃবধূর গর্ভে সন্তান উৎপাদন করো অথবা স্বয়ং রাজ্যে অভিষিক্ত হও এবং বিবাহ করো।

    ভীষ্ম কহিলেন, মাতা, আমি ত্রিলোকের সমস্তই ত্যাগ করিতে পারি কিন্তু যে প্রতিজ্ঞা করিয়াছি তাহা ভঙ্গ করিতে পারি না। মহারাজা শান্তনুর বংশ যাহাতে রক্ষা হয় তাহার নিমিত্ত ক্ষাত্রধর্মসম্মত উপায় বলিতেছি, শ্রবণ করুন - “পুরাকালে পরশুরাম কর্তৃক পৃথিবী নিঃক্ষত্রিয় হইলে ক্ষত্রিয়নারীগণ বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণের সহবাসে সন্তান উৎপাদন করিয়াছিলেন, বেদে বর্ণিত আছে যে, ক্ষেত্রজ পুত্র বিবাহকারীর পুত্ররূপে গণ্য হয়। ধর্মাত্মা বলি এই ধর্মসম্মত উপায় অবলম্বন করিয়া মহর্ষি দীর্ঘতমার দ্বারা তাহার স্ত্রী সুদেষ্ণার গর্ভে অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ, পুণ্ড্র, ও সুহ্ম নামে পঞ্চ তেজস্বী পুত্র লাভ করিয়াছিলেন”।

    ভীষ্মের নিকট এইরূপ শ্রবণ করিয়া সত্যবতী কিঞ্চিৎ লজ্জিতভাবে নিজের পূর্ব ইতিহাস প্রকাশ করিয়া বলিলেন, কন্যাবস্থায় মহামুনি পরাশরের ঔরসে আমার একটি পুত্র হইয়াছিল তাহার নাম কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস। ভীষ্ম, তুমি আর আমি অনুরোধ করিলে কৃষ্ণদ্বৈপায়ন তাহার ভ্রাতৃবধূদের গর্ভে পুত্র উৎপাদন করিবেন।

    অতঃপর সত্যবতী স্মরণ করিলে বেদব্যাস হস্তিনাপুরে আগমনপূর্বক অম্বিকার সহিত মিলনে তাহার গর্ভে ধৃতরাষ্ট্রকে, অম্বালিকার সহিত মিলনে তাহার গর্ভে পাণ্ডুকে এবং এক দাসীর সহিত মিলিত হইয়া তাহার গর্ভে বিদুরকে উৎপন্ন করিলেন।

    গান্ধারীর দুর্যোধনাদি শত পুত্র ও এক কন্যার জন্মবৃত্তান্ত

    মহর্ষি বেদব্যাস গান্ধারীকে বর দিয়াছিলেন যে তাহার একশত পুত্র হইবে। যথাকালে গান্ধারী গর্ভবতী হইলেন, কিন্তু দুই বৎসর অতিক্রান্ত হইবার পরও তাহার কোনো সন্তান ভূমিষ্ঠ হইল না।

    অপরদিকে কুন্তীর একটি পুত্র যুধিষ্ঠিরের জন্ম হইয়াছে জানিয়া তিনি অধীর ও ঈর্ষান্বিত হইয়া আপনার গর্ভপাত করিলে লৌহের ন্যায় কঠিন একটি মাংসপিণ্ড প্রসূত হইল। তিনি সেই মাংসপিণ্ড পরিত্যাগ করিতে যাইতেছিলেন এমন সময় বেদব্যাস আসিয়া কহিলেন, আমার বাক্য বৃথা হইবে না। অতঃপর বেদব্যাসের উপদেশে গান্ধারী শীতল জলে মাংসপিণ্ড ভিজাইয়া রাখিলেন, তাহা হইতে অঙ্গুষ্ঠপ্রমাণ একশত এক ভ্রূণ সৃষ্টি হইল। সেই ভ্রূণগুলি তিনি পৃথক পৃথক ঘৃতপূর্ণ কলসে রাখিলে এক বৎসর পরে একটি কলসে দুর্যোধন জন্মগ্রহণ করিল। দুর্যোধন জন্মগ্রহণ করিবার এক মাস অতিক্রান্ত হইলে বাকি একশত ভ্রূণ হইতে দুঃশাসন, দুঃসহ প্রভৃতি আরও নিরানব্বইটি পুত্র এবং দুঃশলা নামক একটি কন্যা জন্মগ্রহণ করিলো। গান্ধারী গর্ভবতী থাকিবার সময় এক বৈশ্যা ধৃতরাষ্ট্রের সেবা করিত যাহার ফলে সেই বৈশ্যার গর্ভে যুযুৎসু নামক এক পুত্র জন্মগ্রহণ করিয়াছিল।

    ধৃষ্টদ্যুম্ন ও দ্রৌপদীর জন্মবৃত্তান্ত

    একদা দ্রোণাচার্যের নিকট পরাজিত হইবার পর দ্রুপদ প্রতিশোধ ও পুত্রলাভের জন্য অতিশয় ব্যগ্র হইলেন। তিনি গঙ্গা ও যমুনার তীরে চলিতে চলিতে একটি ব্রাহ্মণদের বসতিতে আসিলেন। সেইস্থানে যাজ ও উপযাজ নামক দুইজন ব্রহ্মর্ষি বাস করিতেন। উপযাজের পদসেবা করিয়া দ্রুপদ কহিলেন, আমি আপনাকে দশ কোটি গাভী দান করিব, আপনি আমাকে এমন পুত্র পাইবার উপায় করুন য়ে পুত্র দ্রোণাচার্যকে বধ করিবে। উপযাজ রাজি হইলেন না, তথাপি দ্রুপদ তাঁহার সেবা করিতে লাগিলেন। এক বৎসর অতিক্রান্ত হইলে উপযাজ বলিলেন, আমার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা যাজ শুচি অশুচি বিচার করেন না। উনি গুরুগৃহে বাস করিবার সময় অপরের উচ্ছিষ্ট ভিক্ষান্ন ভোজন করিতেন। যাজ ধনের প্রত্যাশা করেন এবং আপনার জন্য পুত্রেষ্টি যজ্ঞ করিবেন। যাজের প্রতি অশ্রদ্ধা হইলেও দ্রুপদ তাহার নিকট প্রার্থনা জানাইলে যাজ সম্মত হইলেন এবং উপযাজকে সহায়রূপে নিযুক্ত করিলেন।

    যজ্ঞ সমাপ্ত হইলে যাজ দ্রুপদের পত্নীকে আহ্বান করিয়া কহিলেন আপনার দুই সন্তান উপস্থিত হইয়াছে। অতঃপর যাজ যজ্ঞাগ্নিতে আহুতি দিলে যজ্ঞাগ্নি হইতে এক অগ্নিবর্ণ বর্মমুকুটভূষিত খড়্গ ও ধনুর্বাণধারী কুমার সগর্জনে আবির্ভুত হইলেন। পাঞ্চালগণ হৃষ্ট হইয়া সাধু সাধু কহিতে লাগিল। সেই সময় আকাশবাণী হইলো — এই রাজপুত্র দ্রোণকে বধ করিবেন। তারপর যজ্ঞবেদী হইতে এক কুমারী আবির্ভুতা হইলেন। তিনি সুদর্শনা, শ্যামবর্ণা, পদ্মপলাশলচনা, কুঞ্চিত কৃষ্ণকেশ এবং তাহার অঙ্গসৌরভ বহু দূরেও অনুভূত হইতেছিল। পুনর্বার আকাশবাণী হইল - সমস্ত নারীর মধ্যে শ্রেষ্ঠা এই কৃষ্ণার নিমিত্ত ক্ষত্রিয়ক্ষয় এবং কুরুবংশের সর্বনাশ হইবে। দ্রুপদ ও তাহার পত্নী এই কুমার ও কুমারীকে পুত্র-কন্যা রূপে লাভ করিয়া অতিশয় সন্তুষ্ট হইলেন। কুমারের নামকরণ করা হইলো ধৃষ্টদ্যুম্ন এবং কুমারীর নামকরণ করা হইলো কৃষ্ণা এবং দ্রুপদের কন্যা বলিয়া দ্রৌপদী নামে অভিহিতা হইলেন।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    পর্ব ১ | পর্ব ২ | পর্ব ৩
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ranjan Roy | ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ২২:২৫736845
  • উদ্দালক পুত্র ঋষি শ্বেতকেতু এবং তাঁর প্রচেষ্টায় ভারতে প্রমিস্কুইটি নিষিদ্ধ হয়ে মনোগেমি শুরু হওয়ার কাহিনীটি? 
     
    এবং মমতার পুত্র দীর্ঘতমা মুনির জন্মান্ধ হওয়ার কাহিনীটিই বা কেন বাদ যায়?
  • Ranjan Roy | ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ২২:৩৭736848
  • সরি,
    দীর্ঘতমা মুনির বৃত্তান্ত আগেই বলেছেন। এবার শ্বেতকেতু হোক।
  • বাঃ | 2a03:e600:100::***:*** | ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:৩৫736875
  • অনেকদিন পর উপেন্দ্রকিশোরকে মনে পড়িয়ে দিলেন। সুন্দর সুন্দর গল্প।
  • কিশোর | 103.***.*** | ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪:৪০736895
  • সুন্দর
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন