এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • বংশগতি

    মুরাদুল ইসলাম লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২৭ অক্টোবর ২০১৮ | ২০০০ বার পঠিত
  • স্যার, এইবার আমি আমার পিতার কথা বলব, আমার মনে হচ্ছে যে মানুষের জীবনের সাথে তার পিতার জীবন জড়িত, ফলে আমার বিষয়ে বলতে গেলে আমার পিতার কথা আসবে, আমার বিষয়ে বুঝতে আমার পিতার বিষয়ে বুঝতে হবে। আপনি কি মনে করেন এই ব্যাপারে? বলব কি স্যার?

    হ্যাঁ, হ্যাঁ, বলুন।

    আমার পিতার নাম ছিল আরশাদ মিয়া। তবে লোকে তাকে ডাকত কাবিল কবিরাজ নামে। তিন গ্রাম গ্রামান্তরে ঘুরে বেড়াইতেন আর অনেক অনেক লতাপাতা সংগ্রহ করতেন। আর আমাদের বাড়ির পাশে ছিল সামান্য ধান্য ক্ষেত। সেখানে চাষবাসও করতেন অল্প অল্প। আচ্ছা এই মুহুর্তে, এই ধান্য জমির কথা স্মরণে আসায় আমার দাদাজির কথা মনে হলো আমার। তিনি আমার পিতার পিতা। ফলে তিনিও আমার সাথে সংযুক্ত, তাই ধান্য জমি সংশ্লিষ্ট অদ্ভুত ঘটনাটি আমার বলতে ইচ্ছে হচ্ছে, বলব কি স্যার?

    ওকে বলুন।

    এটি আমার বাবার মুখ থেকে শোনা। দাদাকে আমি খুব বেশি দেখি নি। তবে তার চেহারা আমার আবছাভাবে মনে আছে। তিনি খুব লম্বা লোক ছিলেন। মেদহীন শরীর, মুখে লম্বা দাড়ি। চোখ ছিল গোলাকৃতির অনেকটা, এমন চোখ সাধারণত হয় না বলেই আমার মনে হয় কারণ সাধারণ চোখেরা ঠিকঠাক গোল না যেন।

    আচ্ছা।

    তো আমার দাদা মোশাররফ মিয়া কাজ করতেন এই ধান্য জমিতে, উদয় অস্ত তিনি পরিশ্রম করতেন। জমিতে সবুজ ফসল ফলত। কিন্তু দেখা গেল এইসব কচি সবুজ ধান গাছের এক অংশ নাই হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। দাদাজি প্রতিদিন পাহাড়া দিতেন, জমিকে চোখে চোখে রাখতেন। তাও ধান গাছ কমে যেতে লাগলো।

    পাশের বাড়ির আমজাদ খাঁ এর ছেলে হারুণের সাথে দাদাজির এক সমস্যা হয়েছিল মাছ কেনা নিয়ে। আমার দাদার সন্দেহ হলো নিশ্চয়ই এখানে কোন ঘাপলা আছে। নিশ্চয়ই এই হারুণ কোনও একটা কিছু করছে, তাই প্রতিদিন কমে যাচ্ছে ধান গাছ। এটা গ্রামাঞ্চলে অনেক হয়। গ্রাম হলো তুকতাক যাদু টোনা ইত্যাদি নানা ব্যাখ্যাতীত কার্যাবলীর সমাহার। এখানে অসম্ভব বলে কিছুই নেই। যুক্তিকে অগ্রাহ্য করে প্রায় সব কিছুই এখানে হতে পারে। আর যে সময়টার কথা বলছি তা অনেক আগেকালের। আমার জন্মও তখন হয় নি। সুতরাং অবস্থা ছিল আরো বিভ্রান্তিময়।

    বুঝতে পারছি।

    দাদাজি ছিলেন খুব সাহসী। আগের কালের লোকদের এমনিতেই সাহস ছিল অনেক। তারা রাত বিরেতে মাছ শিকারে যেতে পারত, দোষী বটগাছের নিচ দিয়ে, ভয়ংকর গোরস্থান মাড়িয়ে হেঁটে চলতে জানতো।

    দাদাজি সাহস করে একদিন ঘরের চালে উঠে বসে রইলেন। চাল বলতে ঐ ছন দিয়ে নির্মিত ছাদ বিশেষ। তিনি দেখতে চাইলেন যে রাতে কী হয় তার সবুজ শস্যাবৃত ধান্য জমিতে।

    রাত্রির নিস্তব্ধতায় দাদাজি ঠায় বসে রইলেন। তিনি দেখলেন একসময় আকাশ থেকে জোছনা ঝরে পড়ছে, চাঁদের তীব্র আলোতে তার চোখ ধাঁধিয়ে গিয়েছিল। ঘরের চালে ঘুমিয়ে পড়ার আগে চন্দ্রগ্রস্থ দাদাজি দেখেছিলেন ডানাযুক্ত পরীদের। লোককথায় আছে, ডানাযুক্ত পরীদের নিশাকালে দেখতে নেই, তাতে দূর্ভাগ্য আসে। হায়! কথাটি যে এতো সত্য, তা কি দাদাজি বুঝতে পেরেছিলেন?

    হুম। তার কি হয়েছিল?

    তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। তার ঘুম ভাঙে খুব ভোরে। যখন প্রথম শিশির পড়ছে। শিশির জল যখন তার মুখে এসে পড়ল তখন তিনি জেগে উঠলেন, আর বুঝতে পারলেন যে তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তিনি তার ধান্য জমির দিকে তাকালেন, যে জমি পাহারা দিতেই তিনি আজ রাতে এখানে এসে বসেছিলেন।

    চোখ কচলে দাদাজি যখন জমির দিকে তাকালেন, ভোরের আলো তখন ঠিকমতো ফুটে উঠে নি। তিনি দেখলেন আবছা আবছা ভাবে, সবুজ ধান চারার একটা অংশ আস্তে আস্তে যেন নড়ছে।

    দাদাজি উত্তেজনা অনুভব করলেন। তিনি খুবই সন্তর্পণে নেমে এলেন মাটিতে। এরপর উঠান থেকে তিন হাত লম্বা একটি বাঁশ হাতে নিলেন, ও জমির দিকে চললেন। যেখানে ফসল নড়ছে সেখানে খুবই সাবধানতার সাথে গিয়ে তিনি দেখলেন, লুঙ্গি পরা হারুণ বসে আছে। হারুণের হাতে দড়ি আর দড়ির অন্য পাশে তার গরু বাঁধা। গরুটি প্রাতরাশ সেরে নিচ্ছে।

    দাদাজি ক্রোধে আত্মহারা হলেন। তার বুদ্ধিনাশ হলো। তিনি হাতের বাঁশটি শক্ত করে ধরে হারুণের মাথার পেছন দিকটায় আঘাত করলেন।

    এরপর ফিরে গেলেন ঘরে। বাঁশটি ফেলে দিয়ে ঘুমাতে গেলেন।

    সেদিন তিনি বেশ বেলা করে উঠেন। খুব ভালো ঘুম হয়েছিল তাঁর। এই শেষ, এমন ঘুম আর কোনদিন হয় নি তাঁর।

    আপনার নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে হচ্ছে কেন একথা বলছি? আপনি হয়ত ভাবছেন তিনি খুনের দায়ে ধরা পড়েছিলেন? কিন্তু না, তা হয় নি। কেউ বুঝতেও পারে নি দাদাজি খুন করেছেন।

    তখনকার পুলিশ ব্যবস্থাও এতো ভালো ছিল না। কেবল দাদাজিই জানতেন তিনি হারুণকে খুন করেছেন।

    দাদাজি আর জমিতে যেতে পারতেন না। তিনি জমিতে গেলে দেখতে পেতেন আলের ধারে হারুণ বসে আছে। চাষবাস ছাড়তে হলো। কিন্তু তাও হারুণ তাকে ছাড়লো না। ঘরের উঠানে, পুকুরঘাটে প্রায়ই দাদাজি হারুণকে দেখতে লাগলেন।

    তাঁর ভেতরে ভয় কাজ করতে লাগলো। হারুণের মুখ দেখে মনে হয় সে কিছু একটা বলতে চায়। দাদাজি এটা নিতে পারছিলেন না।

    গোপনে এক কবিরাজ, তদবির মুন্সীর তাবিজ নিলেন। সেই তাবিজের বদৌলতে হারুণ দিনের বেলায় আসতো না। কিন্তু রাতের বেলায় দাদাজির মনে হতো যে হারুণ হয়ত বাইরেই আছে। তার পদশব্দ শোনা যাচ্ছে।

    কয়েক মাইল দূরে আমাদের কিছু আত্মীয় থাকতেন। আমাদেরই বংশের লোক। দাদাজি দিনের শেষের দিকে হাঁটা শুরু করতেন, এবং হেঁটে তাদের ওখানে গিয়ে রাতে থাকতেন। আর সকালে আবার ফিরে আসতেন বাড়িতে।

    বাকি জীবন তিনি এভাবেই কাটিয়েছেন। এই হলো আমার দাদাজির গল্প। এটাকে আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন স্যার?

    এটা খুব স্বাভাবিক। উনার যে অপরাধবোধ ছিল সেটাই ওই হারুণের ছায়াকে তৈরী করেছিল।

    এবার তাহলে আমার বাবা আরশাদ মিয়ার গল্পে যাই। দাদাজির গল্পটি বাবা আমাকে প্রায়ই বলতেন। বাবা কবিরাজি শিখেছিলেন দাদার তাড়নাতেই। কবিরাজ তদবির মুন্সী হারুণকে দিনের বেলায় অদৃশ্য করে দিয়েছিল তাবিজ দিয়ে, এটা দেখে দাদাজি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তাই তিনি ছেলেকে বানাতে চেয়েছিলেন কবিরাজ। দাদাজির আশা পূরণ হয়েছিল। আমার বাবা বেশ ভালো কবিরাজই হয়েছিলেন। তাঁর খ্যাতি নানা দিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। বলা হতো যে, তিনি নাকি বোতলে ভরে জ্বিনদের রাখতে পারতেন। অবশ্য এমন কোন ঘটনা আমি দেখি নি। কিন্তু আমাদের বাড়িতে কিছু ধূষর কাচের বোতল ছিল। যেগুলি বাবা টিনের বাক্সের মধ্যে ভরে রাখতেন। কাউকে দেখতে দিতেন না।

    লোকেরা বলত বাবা জ্বিনদের দিয়ে কাজ করান তাই তাঁর সন্তান বাঁচবে না। কিন্তু এটা হয় নি। হয়ত আমার বাবা শক্তিশালী কবিরাজই ছিলেন।

    তবে শেষজীবনে এসে বাবা এক অদ্ভুত সমস্যায় পড়েন। এই সমস্যাটির কথা বলতে গিয়েই উনার গল্প আজ আপনাকে বলা। সমস্যাটি হলো, আচ্ছা, আপনিই তো আমাকে বলেছিলেন স্বপ্ন হচ্ছে মানুষের জীবনকে চেনার দরোজা?

    হ্যা, আমি বলেছিলাম।

    ঠিক, তাই আপনিই ব্যাপারটা ঠিকমতো বুঝতে পারবেন। আরো অনেকের কাছে বাবা এই কথাটি বলেছেন, তার স্বপ্নের কথা। তার নানা ধরণের লোকদের সাথে পরিচয় ছিল। ঝাড়ফুঁক করা লোক, ওঝা, স্বপ্ন বিশারদ, ভবিষ্যবক্তা, পাথর বিক্রেতা, হিরাল ইত্যাদি ইত্যাদি, অনেক ধরণের লোকদেরই তিনি বলেছেন। একসময় স্বপ্নটি নিয়ে তিনি প্রায় বিপন্ন হয়ে উঠেন। তাঁর চেহারা মলিন হয়ে যায়। চোখ হয়ে যায় অঘুমে ম্লান। প্রতিদিন একই স্বপ্ন, একই অদ্ভুত স্বপ্ন দেখতে থাকলে এমন হওয়াটাই স্বাভাবিক, তাই না?

    হ্যাঁ, তিনি কী স্বপ্ন দেখতেন?

    বাবা দেখতেন তিনি একটি শুকনো হাওড়ের উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। হাওড়ে পানি নেই তখন, একটা আল ধরে তিনি হেঁটে আসছিলেন। সময় তখন অন্ধকার রাত। চারিদিক নিঝুম নিঃস্তব্দ।

    বাবার হাতে ছাতা, এবং অন্য হাতে একটি চটের ব্যাগ। সেই ব্যাগের মধ্যে টিনের বাক্সটি আর তার ভেতরে ধূষর রঙের কাচের বোতল। হাঁটতে হাঁটতে তিনি একসময় দেখতে পেলেন জোড়া জোড়া লাল চোখ তাঁর দিকে আস্তে আস্তে ধেয়ে আসছে। তিনি চারপাশে একসময় দেখলেন আট জোড়া চোখ।

    বন্য শেয়াল।

    আপনি নিশ্চয়ই জানেন হাওড় অঞ্চলের বন্য শেয়ালগুলো খুবই হিংস্র হয়ে থাকে। একা কোন মানুষকে বাগে পেলে এরা মেরে ফেলতেও পারে।

    বাবা ভয় অনুভব করলেন।

    এমন নিঃস্তব্দ নিরালা রাতের অন্ধকারে, এই হাওড় মধ্যখানে তাঁর বাঁচার আর কোন উপায় নেই।

    তিনি হাতের চটের ব্যাগ ফেলে দিয়ে ছাতা নিয়ে একটা শেষ চেষ্টা করা শুরু করলেন। তিনি মাটিতে বসে পড়লেন, এবং কয়েক পা এগিয়ে গিয়ে যখন শেয়ালেরা আস্তে আস্তে তার কাছ ঘেঁষতে চাচ্ছে, তখনই ধুম করে ছাতাটি মেলে ধরতে লাগলেন। ছাতার হঠাৎ মেলে যাওয়া দেখে শেয়ালেরা একটু দূরে যেত। এরপর বাবা ছাতা গুটিয়ে আরো কয়েক পা যেতে। শেয়ালেরা আবার আসতো, কাছে ঘেঁষতে শুরু করলেও বাবা আবার ছাতা মেলে ধরতেন।

    এভাবেই বাবা এগিয়ে যেতে থাকলেন। শ্বাপদাক্রান্ত পরিবেশে, মৃত্যুকে প্রায় অনুভব করতে করতে। একসময় বুনো শেয়ালের লাল লাল চোখ দেখে তার কলিজা যেন শুকিয়ে যেত। তিনি প্রচণ্ড পিপাসায় কাতর হয়ে উঠেন তিনি, ঘেমে উঠেন।

    একসময় তিনি দেখতে পান ছাতা কাজ করছে না, মেলছে না। এদিকে লালচুখো হিংস্র শেয়ালেরা এগিয়ে আসছে। তাদের চাপা হিসহিসানি শোনা যাচ্ছে, হায়েনার অপ্রকাশিত হাসির মতো বিভৎস।

    এই সময়ে বাবার ঘুম ভেঙে যেত। রাতে তিনি আর ঘুমাতে পারতেন না। এটা প্রতিরাতেই হতো। প্রতিরাতে।

    এটা কেন হতো আপনার মনে হয়?

    এটা বুঝার জন্য আগে আপনার বাবার জীবনকে আরো ভালোভাবে আমার বুঝতে হবে। যে তথ্য আপনি দিয়েছেন, তা হলো আপনার দাদার একটি অপরাধের বা পাপের গল্প, এবং এই সংশ্লিষ্ট অপরাধবোধের গল্প। এরপর আপনার বাবার ক্ষেত্রে এটা কেন হচ্ছে, তা তো সহজে বলা যাবে না। আপনার কি মনে হয় না দাদাজির কাছ থেকে এই অপরাধবোধ বাবার কাছে সঞ্চারিত হয়েছে? আপনি কি মনে করেন না এটা হয়, এক পুরুষ থেকে অন্য পুরুষে এটি চলে যায়? যেমন আমার ক্ষেত্রেও এটিই হচ্ছে। আমার দাদাজির ঐ অপরাধবোধ, ঐ হারুণই আমার মধ্যে বিপন্নতা তৈরি করছে? সে-ই বুনো শেয়াল হয়ে, লাল চুখো বুনো শেয়াল হয়ে আমার বাবার স্বপ্নে আসতো, আপনার কি এমন মনে হয় না? এটা কি হতে পারে না?

    দেখুন, হতে পারে না বলে কিছু নেই। হয়ত হতে পারে। কিন্তু আমরা ব্যাপারটাকে এভাবে দেখতে চাই না। আপনার ঘটনাকে আপনার, আপনার বাবার ঘটনাকে আপনার বাবার ও আপনার দাদার ঘটনাকে আপনার দাদার ধরে নিয়েই আমাদের এগুতে হবে। অন্যথায় নানা ধরণের বিভ্রান্তিকর সমস্যায় আমরা পড়ে যাব।

    কিন্তু এটা তো হয় না। আমাদের জীবন একা, কেবল একা একজন মানুষের জীবন হয় কী করে? আমরা তো অন্যদের সাথে যুক্ত, তাই না? আমরা তো আমাদের পূর্বপুরুষের অংশ, তাই না? আপনি কি এটি বিশ্বাস করেন না?

    হ্যাঁ, কিন্তু ব্যাপারটা আসলে এমন নয় আপনি যেভাবে ভাবছেন। আপনি এখন যেটা করছেন তা হলো নিজের সমস্যার জন্য অন্য আরেকজনকে দায়ী করে অপরাধবোধ থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা। কিন্তু এই চেষ্টা ভালো নয়।

    তার মানে, তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন আমার খাটের নিচে প্রতিদিন রাতে যে ঘাপটি মেরে হারুণ বসে থাকে, সে হারুণ নয়? আপনি বলতে চাচ্ছেন আমি মিথ্যা বলছি? আপনি বলতে চান আমি ভুল দেখেছি? সে কি হারুণ নয়? আর আমি কেন হারুণকে দেখব? সে কেন খাটের নিচে বসে প্রতিদিন রাতে এসব গল্প আমাকে শোনাবে? আপনি এর উত্তর দিন।

    আচ্ছা, আপনি কি নিয়মিত রাতে ওষুধ খাচ্ছেন? ওষুধগুলো খাবেন, তাহলে হারুণকে দেখবেন না। ভালো ঘুম হবে আপনার।

    হারুণ আমাকে অন্য যে আরেকটি গল্প বলেছে, তার মৃত্যু পরবর্তী জীবন নিয়ে, সেটা তাহলে এখন আমার বলতে হবে। তাহলে আপনি বিষয়টা ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন। এটা কি বলব?

    না, আজ আর সময় নেই। আপনি আগামী সপ্তাহে আসুন।

    কিন্তু এটা বলা তো খুবই দরকার। আপনি বুঝতে পারছেন না। হারুণ আমাকে যা বলেছে তা অদ্ভুত, এবং তার সাথে যুক্ত আছে আমার অসুস্থতার বিষয়ও।

    হ্যাঁ, আমি বুঝতে পারছি। কিন্তু আজ আর নয়। আপনি আগামী সপ্তাহে আসুন। আর ওষুধ বাদ দিবেন না। নিয়ম মতো খাবেন। আচ্ছা...

    হ্যাঁ, যান। ভালো থাকুন। বেশি চিন্তা করবেন না।

    আচ্ছা..ঠিক আছে....আগামী সপ্তাহেই কাহিনীটি বলব। আপনিও ভালো থাকুন স্যার।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৭ অক্টোবর ২০১৮ | ২০০০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • i | ***:*** | ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৫৫86010
  • মুরাদুলের সিগনেচার লেখা। ভালো লাগল বরাবরের মত।
  • R | ***:*** | ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৪৪86012
  • সাংঘাতিক লাগলো দাদা.। সত্যিই দারুণ।
  • | ***:*** | ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:১৮86011
  • ভালো লেগেছে।
  • মজনু শাহ | ***:*** | ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ১১:১৯86013
  • গল্পে মুরাদুল ইসলাম টেনশন তৈরি করতে পারেন। বর্ণনাভঙ্গীটা সুন্দর। আদিভৌতিক ব্যাপারগুলো সব সময়ের প্রেক্ষিতেই প্রাসঙ্গিক মনে হয়। অপরাধ সঞ্চারিত হওয়ার ব্যাপারটা আছে আমাদের মধ্যে। নানারকম অপরাধ, নানারকম মাত্রায়। দুম করে যে শেষ হয়েছে, তাতে দ্যোতনা আরো বেড়েছে গল্পটার।
  • Tim | ***:*** | ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:১৪86014
  • ভালো লাগলো। মুরাদুলের গল্প ভাবিয়ে নিতে পারে।
  • Mahmud ullah | 103.148.***.*** | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০১:৩০102375
  • খুব ভা‌লো লাগ‌লো, হুমায়ূন আহ‌মেদ টাইপ ছোয়া পেলাম অ‌নেক দিন পর। লেখ‌কের জন‌্য ভা‌লোবাসা। 

  • আতোয়ার রহমান | 66.22.***.*** | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২৩:৪২103115
  • বর্ণনাভংগীতে নতুনত্ব আছে, গল্পের গাঁথুনি শক্ত । লেখককে ধন্যবাদ ।

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন