এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • বিজ্ঞানের দর্শন: মানবেন্দ্রনাথ রায় # তিন

    Ashoke Mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ৩০ অক্টোবর ২০১৬ | ২০৬৮ বার পঠিত
  • এক | দুই | তিন
    [৬] কিছু অন্য প্রশ্ন

    উপরে বর্তমান প্রবন্ধের সংক্ষিপ্ত পরিসরে আমরা বিশ শতকে পদার্থবিজ্ঞানের নতুন সমস্যাগুলির কিছু কিছু বিষয়ে এম এন রায়ের বক্তব্য নিয়ে যতটুকু আলোচনা করলাম তাতে বোধ হয় এটা বোঝানো সম্ভব হয়েছে যে আলোচ্য বিষয়ে তিনি অনেক মূল্যবান কথা আমাদের উপহার দিয়েছেন। এর বাইরেও আরও বেশ কয়েকটি সমস্যা নিয়ে তিনি তাঁর পূর্বোল্লেখিত বইগুলোতে বিশ্লেষণ করেছেন, এবং সমকালীন সময়ের বিচারে তাদের যথেষ্ট যথাযথ সমাধান দেবার প্রয়াস করেছেন। যেমন, বিজ্ঞানের প্রেক্ষিত থেকে ঈশ্বরের অস্তিত্ব বা উপস্থিতির প্রশ্ন, সৃষ্টির আদিতে কী ছিল বা জগত সৃষ্টি হল কীভাবে, পৃথিবীতে প্রাণের উদ্ভবের প্রশ্ন, বিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে জীবজগতের সাপেক্ষে মানুষের অবস্থান, ইত্যাদি। তাঁর ‘বিজ্ঞান ও দর্শন’ বইতে তিনি সমকালীন বিজ্ঞানের বহু বিষয়কে সংকলিত করে সময়ের ধারণা, তার বাস্তবতা, তার অসীমতা, ইত্যাদির সমস্যাগুলিকে উত্থাপন করেছেন। এমনকি, আমরা একটু পরেই দেখাব, তাপ-গতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্র তথা তার মধ্যে নিহিত এন্ট্রপির ধারণা থেকে কীভাবে সময়ের তথা সমগ্র বিশ্বজগতের শুরু খোঁজারর ভ্রান্ত ধারণাটির উৎপত্তি হয়েছিল তার তিনি চমৎকার ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

    তবে এই সব প্রশ্নে তাঁর অবদানের উল্লেখ করার আগে একটা কথা আমি এখানে বলে নিতে চাই। এই সব প্রসঙ্গে তিনি যে বিস্তারিত আলোচনা করতে গেছেন, তাতে বৈজ্ঞানিক তথ্যের দিক থেকে কিছু কিছু ভুল বক্তব্য ঢুকে গেছে। আমি এরকম অল্প কয়েকটি ভুলের কথা উল্লেখ করব একটাই কারণে। ইংরেজি মূল গ্রন্থের অনুপস্থিতিতে বইটির সম্প্রতি বঙ্গানুবাদ প্রকাশের কারণে এটি খুব সঙ্গতভাবেই বিজ্ঞান অনুরাগী অথচ তথ্যাল্পতার শিকার পাঠকদের উপরে যে প্রভাব বিস্তার করবে তার কথা ভেবে।

    ১। “ইলেকট্রন প্রোটনের চেয়ে এক হাজার গুণ বড়।” [Ibid, 90] না, প্রোটনগুলিই বরং ইলেকট্রনের চাইতে প্রায় দুহাজার গুণ ভারি। সেই সময় এদের আকার সম্বন্ধে কোনো ধারণাই বিজ্ঞানীদের ছিল না। কেউ কেউ ধ্রুপদী পদার্থবিজ্ঞানের পদ্ধতিতে (ভুলভাবে) যে আকার নির্ধারণ করেছিলেন, তাতেও ইলেকট্রনকে প্রোটনের তুলনায় ৫-৬ গুণ বড় দেখানো হয়েছিল; এক হাজার গুণ নয়।

    ২। “পরমাণুর নিউক্লিয়াসের আভ্যন্তরীণ অংশ নিউট্রন দিয়ে গঠিত, আর নিউক্লিয়াসের বহিরাংশ গঠিত হয় সক্রিয় প্রোটন দিয়ে।” [Ibid, 92] আমি যতদূর জানি, এখন তো নয়ই, এমনকি মানবেন্দ্রনাথ রায় যখন এই বইটি লিখছিলেন তখনও এইভাবে পরমাণুকে দেখা বা বলা হত না।

    ৩। তাপগতিবিদ্যা ও তড়িচ্চৌম্বক শক্তির মধ্যে তুলনা করতে গিয়ে তিনি লিখেছিলেন: “. . . the electric current passes from the negative to the positive pole. In other words, the direction of electricity is from the minus to the plus. The passage of thermal energy is just in the opposite directionfrom the plus to the minus.” [Ibid, 114] না, আসলে উভয় ক্ষেত্রেই শক্তি প্রবাহের অভিমুখ বেশি থেকে কমের দিকে। তড়িৎ শক্তির ক্ষেত্রে ইলেকট্রন যেখানে বেশি সেখান থেকে যেদিকে কম সেই দিকে তড়িৎ প্রবাহ (আসলে ইলেকট্রন প্রবাহ) হবে। আর তাপ শক্তির বেলায় তাপমাত্রা যেদিকে বেশি সেদিক থেকে যেদিকে তাপমাত্রা কম সেই দিকে তাপ প্রবাহিত হবে।

    ৪। “The Quantum is not an atom of energy. It is not a compact entity as the atom of matter was believed to be. It is a composite thing—the product of a quantity of energy and a period of time. Both the components are variable. The theory of constancy and indivisibility is based upon the observed fact that while the component elements are variable, this product is always the same.” [Ibid, 119] রায় এখানে মনে হচ্ছে হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা সূত্রগুলির মধ্যে একটির কথা বলছেন: ∆E.∆t ≥ ħ, যেখানে E দিয়ে শক্তি এবং t দিয়ে সময় বোঝানো হয়েছে। তিনি অন্যান্য অনিশ্চয়তা সূত্রের কথা জানতেন কিনা বলতে পারছি না, যেমন ∆p.∆x ≥ ħ, যেখানে p দিয়ে একটি সূক্ষ্মকণার ভরবেগ ও x দিয়ে কণাটির অবস্থান সূচিত হয়েছে। কিন্তু প্লাঙ্ক ধ্রুবককে তিনি যেভাবে শক্তির এককের সাথে তুলনা করে আলোচনা করেছেন, তাতে এটা স্পষ্ট যে এই সূত্রগুলির তথা প্লাঙ্ক ধ্রুবকের গাণিতিক তাৎপর্য সম্ভবত তাঁর কাছে সেদিন ধরা পড়েনি।

    ৫। “. . . theories of thermo-dynamics have no validity in the microcosmic world, where reversibility or irreversibility has no meaning. The vibratory motion of electrons is not governed by the laws of thermo-dynamics.” [Ibid, 124] এখানেও রায় প্রয়োজন আর প্রয়োগের মধ্যে মিলিয়ে ফেলেছেন। বিজ্ঞানের একটা বিশেষ ক্ষেত্রে একটা বিশেষ নিয়মের প্রয়োজন হচ্ছে কিনা, এক কথা; আর সেই নিয়মটি সেখানে প্রযোজ্য নয় বলা সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা। তাপগতিবিদ্যার নিয়মগুলি তাপ এবং যান্ত্রিক শক্তির প্রেক্ষিতে প্রথমে আবিষ্কৃত ও চর্চিত হলেও তার প্রথম (শক্তির সংরক্ষণ) ও দ্বিতীয় (শক্তির বিনিময়) সূত্রদ্বয় দুনিয়ার সমস্ত রকম শক্তির প্রসঙ্গেই প্রযোজ্য। ইলেকট্রনের বৈশিষ্ট্য বা চালচলন বর্ণনায় এদের দরকার হয় না ঠিকই। তার মানে এ নয় যে ইলেকট্রন এই সূত্রগুলিকে লঙ্ঘন করতে পারে বা করে। না, তা করতে পারে না।

    অথচ, তা সত্ত্বেও তিনি আধুনিক বিজ্ঞানের শিক্ষাগুলি থেকে বস্তুবাদী দর্শনের জন্য দুটো খুব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত অত্যন্ত চমৎকারভাবে তুলে আনেন। সেগুলো পাঠ করতে করতে এই দুচারটে ভুলের কথা আমরা তখন ভুলে যেতে বাধ্য হই।

    প্রথমত, তাপগতিবিদ্যার নিয়মসমূহ এবং এন্ট্রপির ধারণা থেকে তিনি সময় সম্পর্কে একটি বক্তব্য তুলে ধরেন, যার সারকথা হল, আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার তত্ত্ব আসার অন্তত পঞ্চাশ বছর আগে পদার্থবিজ্ঞান এদের সাহায্যে সময়ের ধারণাকে এক বাস্তব ধারণা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে দেয়: “The law of entropy enables us to understand the process of becoming, and follow it up as a physical process. It gives a physical content to the concept of time. Without the law of entropy, physics does not present us with a dynamic picture of the world. It simply shows us a physical system spread out in space; but the “flow of time” is absent in the picture. . . . The concept of time is inseparable from the dynamic view of the world.” পরিবর্তনশীল বিশ্বকে বুঝতে গেলে সময় সম্পর্কে ধারণা পেতে হয়। কিন্তু বাস্তব জগতে ঘটমান পরিবর্তনশীলতার কোনো বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব না থাকলে আমাদের এক বস্তু-নিরপেক্ষ পরম সময়ের ধারণা নিয়েই খুশি থাকতে হচ্ছিল, যার থেকে দর্শনে অনেক সমস্যা তৈরি হচ্ছিল। “The law of entropy, long before the theory of relativity, indicated the way out of the vicious circle, as far as time was concerned. By enabling us to detect the dynamic character of the physical universe, and to trace the process through successive stages, it revealed the real nature of time, as a convention for comparing intervals between events. Time thus ceased to be an empty concept -- of an imaginary, metaphysical category, existing by itself, defying all definition.” [Ibid, 112-13]

    বিজ্ঞানের কোনো তত্ত্বের ভিত্তিতে সময়ের ধারণা সম্পর্কে এরকম একটি শক্তিশালী বস্তুবাদী বিশ্লেষণ -- শুধু প্রাক-রায় কেন, আজ পর্যন্তও -- কোনো মার্ক্সবাদীর রচনায় পড়েছি বলে আমি অন্তত মনে করতে পারছি না। তাঁর এই বিশ্লেষণকে তিনি আরও এগিয়ে নিয়ে গিয়ে দেখান, “This revolution in the concept of time, though implied in the law of entropy, was not fully felt until physics came under the domination of the Principle of Relativity. The concept of time acquires a content of reality only when it is associated with a causal chain of events. In other words, the phenomenon of causality, events following events continuously in an unbreakable chain of cause and effect, bring the category of time within the reach of our comprehension.” [Ibid, 113-14] এইভাবে সময় এবং কারণ-কার্য সম্বন্ধ বিজ্ঞানের শক্তিতে বলীয়ান হয়েই এক অনবচ্ছেদ্য দার্শনিক পরিণয়ে আবদ্ধ হয়।

    মানবেন্দ্রনাথের পরে কম-বেশি বছর দশেক বাদে প্রথমে রাইখেনবাখ [Reichenbach 1956, 24] এবং পরে মারিও বুঙ্গে [Mario Bunge 1959, 87-88] এই প্রশ্নে প্রায় অনুরূপ ব্যাখ্যাই উপস্থিত করেন। সেগুলির খানিকটা হলেও প্রচার হয়; কিন্তু রায়ের অবদান তাঁর পুরনো বইয়ের পাতায় চাপাই পড়ে থাকে।

    দ্বিতীয় সিদ্ধান্তটি আরও চমকপ্রদ। এন্ট্রপি এবং তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্রের পরিপ্রেক্ষিতে সময়ের সাপেক্ষে সারা মহাবিশ্ব কোনো এক সুদূর ভবিষ্যতে একই তাপমাত্রায় পৌঁছলে সার্বিকভাবে এক তাপীয় সাম্যাবস্থা এসে যাবে, এবং তখন এই মহাবিশ্বের তাপ-মৃত্যু ঘটবে -- সমকালীন বিজ্ঞানীদের একটা অংশের এরকম এক আশঙ্কার বিরোধিতা করে তিনি বলেন, “A state of perfect equilibrium is a purely abstract concept. In physical reality, if ever reached, it could last only for an instant. Then it must tip over, one way or the other. The equilibrium [being] lost, in the very slightest degree, at any point, the Second Law of Thermo-Dynamics would reassert itself instantly, and the cosmic evolution would begin all over again, mechanically.” [Ibid, 109]

    ভালো করে লক্ষ করে দেখলে হয়ত আধুনিক বিজ্ঞানের পাঠক বুঝতে পারবেন, এই সাম্যাবস্থা ভেঙে যাওয়ার ব্যাপারে রায় যা বলেছেন তার গায়ে যেন হাইজেনবার্গের একটি বিশেষ অনিশ্চয়তা সূত্রের (∆E.∆t ≥ ħ) প্রয়োগের গন্ধ লেগে রয়েছে। এই সূত্রের জেরেই, সাম্প্রতিক কালে স্টিফেন হকিং দেখিয়েছেন, অত্যন্ত অল্প সময়ের ব্যবধানে শক্তির এতটাই তারতম্য হওয়া সম্ভব, যা একটা সুস্থিত বা সমমিত অবস্থা থেকে এই মহাবিশ্বকে নতুন দিকে চালিত করতে পারে। যতদূর আমি বুঝেছি, রায় এভাবে এই বিষয়টা জানতেন বলে মনে হয় না। কিন্তু তাঁর দার্শনিক বোধ-প্রাখর্যই হয়ত তাঁকে এই বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্তের এত কাছে সেদিন পৌঁছে দিয়েছিল।

    এই প্রসঙ্গে এখানে উল্লেখযোগ্য, এই সব রচনার কিছু টুকরো টুকরো অংশ প্রকাশের ফলে ১৯৩০-এর দশকের শুরুতেই রায় তাঁর পাণ্ডিত্য ও আধুনিক বিজ্ঞানের দার্শনিক ভাষ্য প্রদানের প্রশ্নে এক স্বচ্ছ বস্তুবাদী প্রজ্ঞার জন্য আন্তর্জাতিক মহলে একটু একটু করে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন। ব্রিটিশ জেলে বন্দি থাকার তৃতীয় বছরে যখন জেলের ভিতরে শাসকরা তাঁর পড়াশুনার কোনো সুযোগ দিতে চাইছিল না, সেরকম সময়ে তাঁর কারাগার জীবনে এই রকম কিছু স্বাচ্ছন্দ্যের দাবিতে কলম তুলে নিয়েছিলেন আইনস্টাইন স্বয়ং। সদ্য আগত আমেরিকায় বসে তিনি ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে চিঠি লিখে বলেছিলেন, “I have come to know from reliable sources that the Indian physicist M. N. Roy engaged in significant scientific work is finding it difficult or even impossible to continue his scientific work as political prisoner (District Jail, Almorah, India) without any apparent reason.” আইনস্টাইনের তাঁকে “পদার্থবিজ্ঞানী” বলে পরিচয় দেবার ঘটনাটি যদি কাউকে বিস্মিত করে, তাহলে মনে রাখতে হবে, তাঁর প্রথা বহির্ভূত স্বশিক্ষার উচ্চ মানের ফসলগুলিই এই ভুল ধারণা সৃষ্টির পক্ষে সহায়ক হয়ে উঠেছিল। [Cited, Roy 2005; উল্লেখিত, ভট্টাচার্য্য ২০১৩]

    এইভাবে আমরা দেখতে পাই, বিজ্ঞান ও দর্শনের আলোচ্য বিভিন্ন প্রশ্নেই তাঁর মতাদর্শগত অবস্থান অত্যন্ত সুস্পষ্ট রূপে বস্তুবাদী এবং বিজ্ঞান অনুসারী। কোথাও কোনো ছলেই তিনি রহস্যবাদ বা ভাববাদকে এতটুকু ছাড় দেন না।

    জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও এই একই বৈশিষ্ট্য দেখতে পাই। বিশ শতকের প্রথম ভাগে সেই সময়ে সারা পৃথিবীতেই জার্মান দার্শনিক শোপেনহাউয়ার, ফরাসি চিন্তাবিদ অঁরি বের্গসঁ, প্রমুখর ভাববাদী মতবাদের বিপুল প্রভাব। তাঁরা আবার জীবনের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের সমস্যাকে ঘিরে নানা রকম রহস্যের জাল বুনে যাচ্ছিলেন এবং এইভাবে ভাববাদের সপক্ষে একটা মর্যাদাব্যঞ্জক দার্শনিক বাতাবরণ তৈরি করে দিচ্ছিলেন। প্রায় এক শতাব্দ পরে সেই সব অবৈজ্ঞানিক কথার গ্রহণযোগ্যতা এতটাই কমে গেছে এবং বিজ্ঞানের নিজস্ব জ্ঞানভাণ্ডার প্রাসঙ্গিক জায়গাগুলোতে এতটাই সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে যে রায়ের সেদিনকার বিরোধী যুক্তিগুলোর প্রয়োজনীয়তা আজ আর প্রায় নেই। তাছাড়া, পরবর্তীকালে জীববিজ্ঞানের যে সমস্ত আবিষ্কারকে কেন্দ্র করে আবার নতুন করে দার্শনিক বিভ্রান্তি মাথা চাড়া দিয়েছে, যার তখন কেবলমাত্র পূর্বপ্রস্তুতি চলছিল, অর্থাৎ, প্রাণরসায়ন, জিনতত্ত্ব, বশগতিবিদ্যা, ইত্যাদি ক্ষেত্রে, রায়ের রচনায় সেসবের উল্লেখ নেই বললেই চলে।

    অন্যদিকে, তিনি প্রাণের উৎপত্তি বিষয়ক ওপারিন বা হলডেনের তত্ত্বকল্পগুলি নিয়েও যেমন এখানে বা অন্যত্র কোনো আলোচনা উত্থাপন করেননি (হয়ত জেলখানায় তাঁর কাছে সেই সব তথ্য পৌঁছয়নি), তেমনই লাইশেঙ্কোর বংশগতি সংক্রান্ত যে ভ্রান্ত মতবাদ নিয়ে কমিউনিস্ট দুনিয়া ও বিরোধী শিবির তখন উত্তাল, তা নিয়েও তাঁর কোনো বক্তব্য নেই। তাই আমি এই প্রবন্ধে তাঁর সেই কথাগুলি ধরে ধরে কোনো আলোচনা করার প্রয়োজন আর দেখছি না। আগ্রহী পাঠকরা তাঁর বক্তব্যগুলি পড়ে দেখতে পারেন। তথ্যের দিক থেকে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু না পেলেও তাঁরা হয়ত বস্তুবাদ ও যুক্তিবাদের পক্ষে বেশ কিছু ভালো যুক্তিতর্কের খোঁজ পেয়ে যাবেন।

    [৭] আপাতত শেষ কথা

    এই শেষের জায়গাটা খুবই জরুরি। আমরা যারা বস্তুবাদ ও বিজ্ঞানমনস্কতার সপক্ষে এই দেশে একটা দীর্ঘস্থায়ী শক্তিশালী মনন-আন্দোলন গড়ে তুলতে চাই, তাদের সামনে সব সময়েই একটা বড় সমস্যা হল নানা বিষয়ে উপযুক্ত জ্ঞানের যোগান অব্যাহত রাখা। আর সকলেই একথা নিশ্চয়ই মেনে নেবেন, জ্ঞানের উৎপাদন ও সংগ্রহ একটা সামূহিক ধারাবাহিক সঞ্চরণশীল প্রক্রিয়া। কেউ সব কিছু একা একা জানতে পারে না, পাঁচ জনের সাহায্যের দরকার হয়। তাছাড়া, যে কোনো বিষয়ে জ্ঞানের নিরন্তর বিকাশ হয়ে চলেছে। তাই একবার কিছু জিনিস জানলেই কাজ হয় না, জানাটাকে সময়-সাপেক্ষে ক্রমাগত ঐক্ষণিক (up-to-date) করে নিতে হয়। তাই এম এন রায় যে যে বিষয়ে যা যা জেনেছিলেন, তা দেখে এবং শিখে নিলে আমাদের লাভ বই ক্ষতি হবার নয়। একথা ঠিক, তাঁর কাছ থেকে শিখতে গিয়ে অনেক জায়গায় তাঁর সঙ্গে হয়ত আমাদের মতবিরোধ হবে। হোক না। একে তো প্রতিটি বিষয়ে তিনি যবে লিখেছিলেন তার পর ষাট সত্তর বছর পার হয়ে গেছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান সব জায়গাতেই অনেক বেশি এগিয়ে গিয়েছে। স্বভাবতই দার্শনিক উপলব্ধিকেও সেই অনুযায়ী আরও উন্নত স্তরে তুলে নিয়ে যেতে হবে। অন্যদিকে তিনি লেখার সময়ও যে বিজ্ঞানের সমকালীন সমস্ত সমস্যাকে একেবারে ঠিক ঠিক ধরতে পেরেছিলেন তা নাও হতে পারে। তথ্য সংগ্রহে ঘাটতি থাকতে পারে, সংগৃহীত উপাদান বুঝতে ভুল হতে পারে, তাদের উপস্থাপনায় ভুল থাকতে পারে, আবার দার্শনিক তাৎপর্য নির্মাণেও বিভ্রম ঘটে থাকতে পারে। তাঁর রচনাসম্ভার থেকে সঠিক জিনিসগুলিকে গ্রহণ করব আর ভুল জিনিসগুলিকে বাদ দিয়ে দেব, সেই অনুযায়ী আমরা ঝাড়াইবাছাই করে নেব -- এরকম একটা বৈচারিক মানসিক প্রস্তুতি সর্বদাই আমাদের থাকা উচিত।

    আসলে প্রশ্নটা হল জ্ঞান চর্চার জগতে আমাদের মার্ক্সবাদীদের মানসিক প্রশস্ততার সমস্যা। চিন্তার জগতে উদারতার অভাব। আমরা সর্বদা মার্ক্সবাদী চিন্তাবিদদের কাছে আশা করি, তাঁরা সব বিষয়ে সব কিছু নির্ভুল বলবেন। তা যদি না হয়, কারোর যদি একটা কথাও ভুল বলে সাব্যস্ত হয়, ব্যস! তখন তাঁদের সবটাই ভুল বলে ধরে নেওয়া হবে। এইভাবেই আমরা প্লেখানভ থেকে নেবার সময় নিতে, বা নিলেও স্বীকৃতি দিতে, অস্বস্তি বোধ করি। আশ্চর্যের কথা, বুর্জোয়া চিন্তাবিদদের কাছ থেকে নেবার বেলায় কিন্তু আমাদের এই সমস্যা হয় না। মানবতাবাদী কবি রবীন্দ্রনাথের থেকে পছন্দসই কিছু গ্রহণ করতে বা বার্ট্রান্ড রাশেলের মতো কট্টর মার্ক্সবাদ বিরোধীর বক্তব্য থেকে কাজে লাগার মতো কিছু পেলে আমরা তা নিতে এবং স্বীকার করে নিতে দ্বিধা বোধ করি না। কিন্তু মার্ক্সবাদী আন্দোলনের মূল ধারা থেকে একবার কেউ সরে গেলে, বা সরে গেছেন মনে হলে, আমরা তাঁকে আর সহ্য বা ক্ষমা করতে পারি না। মানবেন্দ্রনাথ রায়ের কাছ থেকে নেবার বেলাতেও আমরা এতকাল সেই মনোভাবই নিয়ে চলেছি।

    তবে একটাই বড় আশার কথা, এখন দুনিয়া জুড়েই খোলা হাওয়া বইতে শুরু করেছে। করপোরেট পুঁজিপতিদের সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বায়নের ঠেলায় মার্ক্সবাদীদেরও বর্তমানে তাদের ছোট ছোট মহল্লা ভেঙে দিয়ে ভুবন-মন গড়ে তোলার কথা ভাবতে হচ্ছে। আমরা এখন দেরিতে হলেও বুঝতে শুরু করেছি, অনেক কিছু আমরা জানি না; অনেক কথা যা আগে এক সময় জানতাম, বা জেনেছি বলে ভাবতাম, তা সময়ের দাবি মেটাতে পারছে না; আর না জেনে দুনিয়ায় কোনো কিছুই করা যায় না। এই অবস্থায় যদি মনের দরজা জানালা আমরা আরও চওড়া করতে পারি, তাতে আমাদেরই লাভ। আগেই বলেছি, আধুনিক বিজ্ঞানের দর্শনের অনেক জায়গাতেই রায় বস্তুবাদ ও যুক্তিবাদের মঞ্চে দাঁড়িয়ে এমন কিছু কথা বলতে পেরেছিলেন যার মৌলিকতা অনস্বীকার্য এবং প্রাসঙ্গিকতা এখনও ফুরিয়ে যায়নি; যে কথাগুলো তাঁর পরে অনেক দিন কেটে গেলেও আজ পর্যন্ত কেউ বলতে পারেননি। সেই সব বিষয়ের চর্চা আজ দেরিতে হলেও শুরু হওয়া দরকার।



    গ্রন্থপঞ্জি

    Mario Bunge (1959), Causality: The place of the causal principle in modern science; Harvard University Press.

    Richard Feynman (1992), The Character of Physical Law; Pengun Books, London.

    B. Kuznetsov (1965), Einstein; Progress Publishers, Moscow.

    V. I. Lenin (1976). Materialism and Empirio-Criticism; Foreign Languages Press, Beijing.

    T. D. Lysenko (1949). “Concluding address”; Situation in Biological Science: Proceedings of the Lenin Academy of Agricultural Sciences of the USSR; Sessions July 31- August 7, 1948; Foreign Languages Publishing House, Moscow;

    Ashoke Mukhopadhyay (2006), Physics and Philosophy: Towards a dialectical synthesis. Bodhoday Mancha, Kolkata.

    Ashoke Mukhopadhyay (2009), The Science and Philosophy of Einstein’s Theory of Relativity; Bodhoday Mancha, Kolkata.

    Karl R. Popper (1967), “Quantum Mechanics without the Observer”; in Mario Bunge (ed.), Quantum Theory and Reality; Springer-Verlag, New York.

    Hans Reichenbach (1956), The Direction of Time; The University of California Press, Berkeley and Los Angeles.

    M. N. Roy (1939), Heresies of the Twentieth Century; Renaissance Publishers, Mumbai.

    M. N. Roy (1940a), Materialism: An outline of the history of scientific thought; Renaissance Publishers, Mumbai.

    M. N. Roy (1947), Science and Philosophy; Renaissance Publishers, Kolkata.

    M. N. Roy (1952), Reason Romanticism and Revolution, Vols. I-II; Renaissance Publishers, Kolkata.

    M. N. Roy (1940b), Science and Superstition; Renaissance Publishers, Mumbai.

    M. N. Roy (1940c), Science Philosophy and Politics; Renaissance Publishers, Mumbai.

    মানবেন্দ্রনাথ রায়, বিজ্ঞান ও দর্শন (বঙ্গানুবাদ: স্বদেশ রঞ্জন দাস); রেনেসাঁস পাবলিশার্স, কলকাতা।



    মন্তব্য-১: ২০১৩ সালে শারীরিক কারণে ঘোরতর অসুবিধা এবং অনিচ্ছা সত্ত্বেও পরিপ্রশ্ন পত্রিকার জন্য আমাকে এরকম একটি প্রবন্ধের প্রারম্ভিক খসড়ায় হাত দিতে বাধ্য করার জন্য আমি সেই পত্রিকার সম্পাদক মাননীয় বঙ্কিম দত্ত, এবং পাশাপাশি প্রবন্ধটি লিখতে বিভিন্নভাবে সাহায্য করার জন্য পত্রিকার দুই সহকর্মী সোমনাথ ভট্টাচার্য এবং শুভেন্দু চ্যাটার্জীর কাছে, আন্তরিকভাবে ঋণী। এই রচনাটি তারই পরিবর্ধিত রূপ।

    মন্তব্য-২: মানবেন্দ্রনাথ রায়ের আলোচ্য প্রধান গ্রন্থ বাংলায় বহুকাল আগে অনুদিত হয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত হলেও আমি এই প্রবন্ধে তার সদ্ব্যবহার করতে পারলাম না। কেন না, এক, অনেক জায়গাতেই অনুবাদ যথার্থ ও সুখপাঠ্য হয়নি (যা খুবই কঠিন কাজ); দুই, বহু জায়গাতেই অনুবাদক রায়ের বক্তব্যকে সহজ সরল করতে গিয়ে অনেক বাড়তি কথা ঢুকিয়ে দিয়েছেন, যা এই ধরনের দলিল অনুবাদের ক্ষেত্রে একেবারেই কাম্য নয়। অনুবাদকের সদিচ্ছা বা কষ্টস্বীকার নিয়ে আমার কোনোই অভিযোগ নেই। কিন্তু অনুবাদের যথাযথতা নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে।

    মন্তব্য-৩: দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, এম এন রায়ের সমস্ত অনুরাগীও রায়ের এই বিজ্ঞানের দর্শন সংক্রান্ত মতবাদের উপরোক্ত উজ্জ্বল দিকগুলি যথার্থভাবে ধরতে সক্ষম হননি। কলকাতার রেনেশাঁস পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত ‘জিজ্ঞাসা’ পত্রিকায় (বর্ষ ২৭ সংখ্যা ১; ২০০৮) গ্রন্থপঞ্জিতে উল্লেখিত আমার Physics and Philosophy গ্রন্থের পুস্তক পর্যালোচনা করতে গিয়ে সুবীর কুমার সেন কার্যত আমার বক্তব্যের বিরুদ্ধে তাঁর মতামতগুলিকেই বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছিলেন। সেটা হয়ত তেমন কোনো দোষের ব্যাপার ছিল না। কিন্তু আমি সেদিন অবাক হয়ে লক্ষ করেছিলাম, যে কোপেনহেগেন ভাষ্য বা বিজ্ঞানের যে প্রত্যক্ষবাদী ভাষ্যের বিরুদ্ধে আমি মার্ক্সবাদী অবস্থান থেকে আমার জ্ঞান বিশ্বাস ও সাধ্য অনুযায়ী বস্তুবাদী দর্শনকে তুলে ধরতে চেষ্টা করেছিলাম, মানবেন্দ্রনাথ রায়ের দর্শনের সঙ্গেই ছিল যার ধারাবাহিক সংহতি, লেখক সেই অবস্থানকে কঠোরভাবে সমালোচনা করেছিলেন। তিনি আধুনিক বিজ্ঞানের দার্শনিক ব্যাখ্যায় বেশ সুস্পষ্ট ভাষায় ভাববাদ ও প্রত্যক্ষবাদের শিবিরে তাঁর আসন খুঁজে নেন। এইভাবে রায়ের অনুগামী একটি পত্রিকায় রায়ের একজন অনুগামীকে দেখলাম রায়ের বিজ্ঞানের দর্শনকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে এবং রায় যে দর্শনের বিরুদ্ধে তাঁর আলোচ্য বইগুলি লিখেছিলেন সেই সব ভ্রান্ত মতবাদকেই সেখানে প্রতিষ্ঠা করে দিতে। প্রসঙ্গটা নিতান্তই ব্যক্তিগত বলে এতকাল কোথাও এ নিয়ে কিছু বলিনি। এখানে বলতে হল এই জন্য, যে মার্ক্সবাদীদের তরফে যেমন মানসিক প্রশস্ততার কথা বলতে হচ্ছে, কিছু কিছু রায়পন্থীদের তরফেও বোধ হয় তার সমান প্রয়োজন রয়েছে।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    এক | দুই | তিন
  • ব্লগ | ৩০ অক্টোবর ২০১৬ | ২০৬৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন