এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • আজ কার্ল মার্ক্স (১৮১৮-২০১৮) ...

    Ashoke Mukhopadhyay লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৭ মে ২০১৮ | ২৩৫৮ বার পঠিত
  • উনিশ শতকের এক উদ্ভ্রান্ত সময়ের কথা। ইউরোপে তখন শিল্প বিপ্লবের ধাক্কায় কৃষি থেকে উচ্ছিন্ন হয়ে যে বিপুল কারখানা শ্রমিক কর্মচারির দল তৈরি হয়েছে, তাদের তখন ভালো করে দুবেলা খাবার জুটছে না। সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত কাজ আর কাজ। কাজের কোনো সময় সূচি নেই। বারো ঘন্টা বা চোদ্দ ঘন্টা করে কাজ। মাথা গুঁজবার ঠাঁই নেই অধিকাংশের। দেশলাই বাক্সের মতো বস্তিঘরে আলুর বস্তার মতো গা ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকতে হয় প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের। সবচাইতে শিল্পোন্নত পুঁজিবাদী দেশ ইংল্যান্ডের এই জঘন্য হাল হকিকত নিয়ে সদ্য এক গ্রন্থ রচনা করেছেন ফ্রেডরিখ এঙ্গেল্‌স—“ইংল্যান্ডের শ্রমিক শ্রেণির অবস্থা” (১৮৪৩)। ইংল্যান্ডের বুকে চার্টিস্ট আন্দোলনের অভিঘাত তখন সবে মাত্র শেষ হয়েছে। সেখানকার ধনতান্ত্রিক শাসক গোষ্ঠী আপাতত সেই আন্দোলন দমন করতে পেরেছে ঠিকই, পথে ঘাটে রোজকার বিক্ষোভ মিছিল আর নেই বটে, কিন্তু বস্তিতে বস্তিতে মজুরদের মধ্যে কারখানা মালিকদের বিরুদ্ধে অসচেতন অসহায় রাগ এবং বিক্ষোভের আগুন তখনও ধিকিধিকি করে জ্বলছে। অন্য দিকে ফ্রান্স আর জার্মানির বুকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য গণসংগ্রাম ফেটে পড়ার মুখে।

    আর তার পাশাপাশি ইউরোপের বুকে ক্রম অগ্রসরমান জ্ঞান বিজ্ঞান দর্শন তখন যোগ্য বাহক খুঁজে বেড়াচ্ছে। মধ্য যুগ পার করে এসে এযাবত কাল যারা জ্ঞান চর্চার সহায়ক ছিল, সেই পুঁজিপতি শ্রেণির সদস্যরা এখন আর সত্য জানতে বা জানাতে চায় না। সমাজ জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে তাদের এখন চাই মিথ্যা বা অর্ধ সত্য। ভুল তথ্য আর কথার মারপ্যাঁচ। ওদিকে শোষিত নিপীড়িত জনসাধারণ জানতে চায়, তাদের জীবনের চলমান দারিদ্র্য বেকারি অস্বাস্থ্য অশিক্ষা গৃহাভাব ইত্যাদি যাবতীয় দুঃখ দুর্দশার পেছনের যথার্থ কারণ কী, সেসবের আসল উৎস কোথায়। খালি চোখে সরল দৃষ্টিতে সব জিনিস বাস্তবে বোঝা যায় না। তাদের তাই জ্ঞানের রাজ্যে ঢুকতে হবে, সত্য সন্ধানী দর্শনের বোধ আয়ত্ত করতে হবে, বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ সত্যকেও বুঝতে চেষ্টা করতে হবে। এই ভাবেই দুই তরফের মেলবন্ধন সম্ভব হবে।

    সকলেই কি নিজে নিজে এই কথাটা এরকম ভাবে বুঝে নিতে পারে?

    না। এটা সহজ করে সেদিন বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যিনি, তাঁর নাম কার্ল মার্ক্স। তাঁর ১৮৪৪ সালের সেই চিরস্মরণীয় প্রাসঙ্গিক একখানি বাক্য আজ আবার আমাদের স্মৃতির দরজাতে এসে ধাক্কা দিচ্ছে: “As philosophy finds its material weapon in the proletariat, so the proletariat finds its spiritual weapon in philosophy.” অর্থাৎ, জ্ঞান বিজ্ঞান দর্শনের অগ্রগতি এখন থেকে ঘটবে সর্বহারা শ্রেণির হাত ধরে; আর সর্বহারা শ্রেণি তার মুক্তির দিশা খুঁজে পাবে সেই জ্ঞানের মশালের আলোকে।

    এই ভাবেই ধাপে ধাপে মার্ক্স তাঁর বৈপ্লবিক মতবাদে উপনীত হয়েছিলেন। এঙ্গেল্সকে সঙ্গে নিয়েই। তিনি যাত্রা শুরু করেছিলেন হেগেলের ভাববাদী দর্শন থেকে। সেই হেগেল যিনি একদিন সাম্য মৈত্রী স্বাধীনতার শ্লোগানে আপ্লুত হয়ে ১৭৮৯ সালের বাস্তিল দুর্গ ভাঙা ফরাসি বিপ্লবের জনজোয়ারকে দু হাত তুলে স্বাগত জানিয়েছিলেন। অচিরেই মার্ক্স বুঝলেন, এই দর্শন দিয়ে তাঁর কাজ হবে না। কেন না, এই হেগেলীয় বিশ্ববীক্ষা এমন যে সে প্রুশিয়ার স্বৈরাচারী রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে সভ্যতার নাকি অন্তিম চূড়া বলে মনে করে। যার বিরুদ্ধেই জার্মানিতে তখন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম চলছে।

    তারপর লুডবিগ ফয়ারবাখ। তিনি একখানা বই লিখে কঠোর বস্তুবাদী যুক্তির হাতুড়িতে হেগেলের ভাববাদকে একেবারে যেন মাটিতে মিশিয়ে দিলেন। খ্রিস্টধর্মের সুদীর্ঘ কল্প কাহিনির ঐতিহ্যকে তিনি তছনছ করে দিলেন যুক্তিতথ্যের বাণ মেরে। মার্ক্স আর এঙ্গেল্‌স দুজনেই তখন রাতারাতি ফয়ারবাখের শিষ্য বনে গেলেন। কিন্তু তার পর কিছু দূর এগিয়ে তাঁরা আবিষ্কার করলেন, ফয়ারবাখ যখন বস্তুবাদী তিনি ইতিহাস মানেন না, ইতিহাসের ব্যাখ্যা দিতে পারেন না; আর তিনি যখন ইতিহাসের ব্যাখ্যা দিতে উদ্যোগী হন, তখন আর তিনি বস্তুবাদ অবলম্বন করতে পারেন না। “As far as Feuerbach is a materialist he does not deal with history, and as far as he considers history he is not a materialist. With him materialism and history diverge completely, . . . .” এমনটা হলে অতীত ইতিহাস থেকে ভবিষ্যত শোষণমুক্ত সমাজ নির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে বাস্তব জীবন সংগ্রামের প্রেরণা পাবে কীভাবে শোষিত মানুষ?

    অতঃপর আরও দুই পা ফেলে মার্ক্স আর এঙ্গেল্‌স অবশেষে পৌঁছলেন দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদের ধারণায়। যেখানে চিন্তার কাঠামো তথা ভিত্তি হল বস্তুবাদ। বস্তু থেকেই চিন্তা; মানব মস্তিষ্কের সঙ্গে বাস্তব বহির্জগতের ঘাত প্রতিঘাত থেকেই চিন্তা চেতনা ধ্যান ধারণা মতবাদ আদর্শ মুল্যবোধের জন্ম। আর বিচার বিশ্লেষনের পদ্ধতি ও চিন্তার প্রক্রিয়াটি হল দ্বন্দ্বমূলক। দুনিয়ার কোনো ঘটনাই বিচ্ছিন্ন নয়—দেশে-কালে পরস্পর সংযুক্ত। বিকাশমান প্রক্রিয়া হিসাবেই সব কিছুকে দেখতে হবে। শাশ্বত সনাতন চিরকালীন সত্য বলে কোথাও কিছু নেই।

    এই দার্শনিক বোধ আয়ত্ত করতে করতেই মার্ক্স সেই সময় ফ্রান্সে বসে অ্যাডাম স্মিথের এক বিস্মিত জিজ্ঞাসার উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছেন। মূল্যের শ্রমতত্ত্ব (labour theory of value) অনুযায়ী ধনতন্ত্রের অর্থনীতিতে যে মোট সম্পদ তৈরি হচ্ছে, তা থেকে শ্রমিক পাচ্ছে মজুরি, মালিক পাচ্ছে মুনাফা আর জমির মালিক পাচ্ছে ভাড়া। প্রত্যেকেই তাদের নিজ নিজ প্রাপ্য বুঝে পাচ্ছে। অথচ এক দিকে যখন জমি এবং কারখানা মালিকের সম্পদের পাহাড় ফুলে ফেঁপে উঠছে, তখন পাশাপাশি শ্রমিকদের অবস্থা ক্রমবর্ধমান দুর্দশার দিকে ধাবমান কেন? স্মিথ অনেক খুঁজেও এর সমাধান পাননি।

    প্রশ্নটাকে লক্ষ করলেও মার্ক্সেরও কিন্তু সময় লেগেছিল উত্তরটা পেতে। তিনি একটু একটু করে গভীরে ঢুকে ধনতান্ত্রিক সমাজ অর্থনীতি রাজনীতির চরিত্র ও চালচিত্র ভালো করে বুঝতে বুঝতে ১৮৪৭ সালের পরে একদিন ধরে ফেললেন সেই রহস্য। মালিক শ্রেণি শ্রমিকের কাছ থেকে কেনে—না, তার শ্রম (labour) নয়—তার শ্রমশক্তি (labourpower)। শ্রমিক উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যয় করে তার শ্রম। মালিক পুঁজিবাদের বাজার দর অনুযায়ী অনেক দরাদরি করে যে দাম দেয় তা একজন মজুরের শ্রমশক্তির বাজার মূল্য। আর সেই শ্রমিক যখন কলে কারখানায় কাজ করে, সে তার শ্রম দিয়ে যা উৎপাদন করে তার বাজার মূল্য উৎপাদন ব্যয়ের তুলনায় (যার মধ্যে শ্রমিকের শ্রমশক্তির মূল্যও ধরা আছে) বেশি। এই উদ্বৃত্ত মূল্য থেকেই আসে মুনাফা। অর্থাৎ, একজন শ্রমিক তার শ্রমশক্তি যে মূল্যে বিক্রি করে, আর সেই শ্রমশক্তিকে কাজে লাগিয়ে সে যে মোট মূল্য উৎপাদন করে—দুটো সমান নয়। সে পায় কম, দেয় বেশি। এইখানেই সে ঠকে যায়, মালিক লাভবান হতে থাকে। আর তারপরই তিনি এবং এঙ্গেল্‌স ১৮৪৮ সালে আহ্বান জানালেন শ্রমিক বিপ্লবের প্রস্তুতির।

    এই ভাবেই মার্ক্স সেদিন রিকার্ডো ও স্মিথের মূল্যের শ্রমতত্ত্বকে বিকশিত করে শেষ পর্যন্ত উদ্বৃত্ত মূল্যের আর্থসামাজিক উৎসমূলে পৌঁছে যান। এঙ্গেল্স মার্ক্সের এই আবিষ্কারকে তুলনা করেছেন ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচনের তত্ত্ব আবিষ্কারের গুরুত্বের সঙ্গে। স্বাভাবিক। একই বছরে (১৮৫৯) দুই তত্ত্বের আত্মপ্রকাশ হয়ত নিছকই কাকতালীয় নয়। আর, একবার এই দুই তত্ত্বই প্রকাশ্যে বলে দিলে অনেকেরই মনে হয়, “আরে, তাই তো, এ আর এমন কী। আমরাও তো জানতাম। উনি শুধু মুখ ফুটে আমাদের আগেই কথাটা বলে ফেললেন।” উঁহু। ব্যাপারটা এত সরল নয়। খালি চোখে দেখা জানা তথ্য থেকে এই দুটোর কোনোটাই সরাসরি বোঝা যায় না! গভীরে ঢুকতে লাগে! বহু তথ্য খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করতে হয়। তবে ধীরে ধীরে মাথার মধ্যে ভাবনাটা স্পষ্ট হতে থাকে।

    গত দেড় শতক ধরে এই দুই তত্ত্বকেই সাংঘাতিক বিরোধিতার সামনে পড়তে হয়েছে! সমালোচনা। ভুল ধরা। ভ্রান্ত প্রমাণ করা। “উনিশ শতকের যান্ত্রিক চিন্তার ফসল”। আজও সেই কলরোল থামেনি। ডারউইনের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার একটু হয়ত স্তিমিত হয়ে এসেছে। জীববিজ্ঞান তার বিভিন্ন শাখা প্রশাখা নিয়ে আজ এমন এক উচ্চতায় পৌঁছে গেছে যে সরাসরি প্রাকৃতিক নির্বাচনের ধারণাকে অস্বীকার করা বা ভ্রান্ত বলা ভদ্র সমাজে ক্রমেই মুশকিল হয়ে উঠছে। এখন তাই কথার মারপ্যাঁচে ওতে দর্শন বা ন্যায়শাস্ত্রের তরফে কী কী খুঁত আছে, সেই সব বের করার ফুটোস্কোপি চলছে।

    মার্ক্সের বেলায় অবশ্য গালমন্দে এতটুকু কমতি নেই। কেন না, এতে সরাসরি মালিক শ্রেণির স্বার্থ জড়িত। মার্ক্সীয় তত্ত্ব সত্য হলে ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে যুক্তিগ্রাহ্য ন্যায্য এবং সভ্যতার উচ্চশিখর বলে দেখাতে অসুবিধা হয় যে! মালিকরা মজুরদের ঠকিয়ে লাভ করছে বললে তাদের আত্মসম্মানে ভয়ানক লাগে।

    ফলে সারা বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত নোবেল ভূষিত অর্থনীতিবিদদের এক দলকে দিয়ে গত প্রায় দেড়শ বছর ধরে তোতাপাখির মতো বলানো হচ্ছে, “আরে মশাই, মূল্যের ধারণাই এখন অচল। বাজার দাম (price) ছাড়া আর কিছু নেই অর্থনীতিতে।” আবার কেউ বলছেন, আসলে ওই মূল্য তো তৈরি হচ্ছে প্রযুক্তির জোরে। অন্য আর একজন কেউ বোঝাচ্ছেন, না হে না, মূল্য আসছে শক্তির ব্যবহার হিসাব নিকাশ করে। কিন্তু এনারা সকলেই মুখে না বললেও মনে মনে জানেন, এই সব বলে শেষ পর্যন্ত কোনো লাভই হচ্ছে না। শক্তিই বল আর প্রযুক্তিই বল, এই সবই আসলে উৎপাদনে প্রদান (input) হিসাবে কাজ করে, এবং সেই প্রদান হিসাবে এরা কোনো পণ্য উৎপাদনের প্রক্রিয়ায় যে মূল্য নিয়ে আসে, উৎপন্ন দ্রব্য বা প্রাপ্তি (output)-তে সেই সমান মূল্যই সঞ্চারিত ওরফে যুক্ত হয়ে যায়। প্রাপ্তির বাড়তি মূল্যের হিসাব এদের থেকে পাওয়া যাবে না। মার্ক্সের সেই সরল গাণিতিক সমীকরণ: P = C + V + S, (যেখানে, P = উৎপন্ন দ্রব্যের বাজার মূল্য; C = স্থির পুঁজির ব্যয়; V = চল পুঁজি বা মজুরি বাবদ ব্যয়; S = উদ্বৃত্ত মূল্য) এই সব দিয়ে কিছুতেই ভুল প্রমাণ করা যাচ্ছে না! পিথাগোরাসের উপপাদ্যের মতোই সেটি নিউটন আইনস্টাইন হাইজেনবার্গ হকিং—সকলের সমস্ত ঝড় ঝাপটা সামলে আজও অবিচল বেঁচে বর্তে আছে।

    বিপদ শুধু এইটুকুই নয়।

    সেই সরল গণিতের মাধ্যমেই মার্ক্স সুদূর প্রাচীন কালে দেখিয়েছিলেন, মুনাফার হার R = S/(C + V)। সুতরাং, অঙ্কের নিয়মে নতুন প্রযুক্তি ও যন্ত্রের জন্য বিনিয়োগ তথা খরচ বাড়লে মুনাফার হার কমে যেতে থাকবে। তার ফলে পুঁজিবাদে মুনাফার হার পতনের প্রবনতা (tendency of the falling rate of profit) এক স্থায়ী বৈশিষ্ট্য হিসাবে লেগেই থাকবে এবং তজ্জনিত একটা অবধারিত সঙ্কটের আশঙ্কা তার পেছনে ছায়ার মতো ধাওয়া করে চলবে।

    আর কী আশ্চর্য! ঠিক এই জিনিসটাই ঘটে চলেছে আজও। এই একুশ শতকেও। পুরনো পণ্যের গুণমান বৃদ্ধি করতে এবং নতুন পণ্য বাজারে আনতে গেলে প্রযুক্তির গবেষণায় বিপুল পুঁজি বিনিয়োগ করতেই হয়। তাতে স্থির পুঁজির পরিমাণ যত বাড়ে, লাভের গুড় তত কমে যেতে চায়।

    স্বভাবতই, পুঁজিপতিরা এটা মেনে নেবে না। যন্ত্রপাতি বাবদ খরচ বৃদ্ধির সাথে সাথে তারা অন্য উপায় খুঁজতে থাকে উদ্বৃত্ত মূল্য বৃদ্ধির। উপরোক্ত অনুপাতটিকে ধরে রাখার। আর, আবার পাঠকরা অবাক হবেন জেনে, মার্ক্স সেই ব্যাপারেও আমাদের সচেতন করে গেছেন! এবং, সেই কথাগুলো এখনও—মার্ক্সের মৃত্যুর ১৩৫ বছর পরেও—একেবারে হুবহু মিলে যাচ্ছে!

    যথা: স্থির পুঁজি বাবদ ব্যয় যখন বেড়ে যাচ্ছে, তখন চল পুঁজি, অর্থাৎ, মজুরি বাবদ খরচ কমাতে হবে। মজুরি ছাঁটাই করা না গেলে, স্থায়ী মজুরের সংখ্যা কমাও। বদলি বা ঠিকা মজুর নিয়োগ কর। চুক্তি ভিত্তিক লোক নাও। সামাজিক নিরাপত্তামূলক বা ভবিষ্যত-সুরক্ষা বাবদ ভাতা ইত্যাদি কমিয়ে বা একেবারে রদ করে দাও। কল্যাণমূলক খাতে খরচ কমিয়ে ফেল বা বন্ধ করে দাও। কাজের সময় এবং/অথবা যান্ত্রিক নৈপুণ্য বাড়িয়ে শ্রমের উৎপাদনশীলতা তথা উদ্বৃত্ত ও মজুরির অনুপাত (মার্ক্স যাকে বলেছেন শোষণের হার) বৃদ্ধি করতে থাক। এক একবার অর্ডার মাফিক মাল সরবরাহের পর কিছু দিন করে কারখানা বন্ধ করে দাও। কাঁচা মাল নেই, বিদ্যুতের সমস্যা, শ্রম বিক্ষোভ, বাজারে চাহিদা নেই,আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কমে গেছে—ছল যেমন যেমন দরকার খুঁজে নাও (প্রয়োজনে আনন্দবাজার পত্রিকাগোষ্ঠীর সাহায্য নিতে পার)। তাতে বিদ্যুতের বিল কমবে, গুদামের খরচ কমে যাবে। ইত্যাদি ইত্যাদি।

    নীল চশমা খুলে পুঁজিবাদি দুনিয়ার হকিকতের দিকে তাকালে এই সব তথ্য দেখতে আর মিলিয়ে নিতে এখন আর কারোর তেমন কষ্ট করতে হয় না।

    মার্ক্স তাঁর “পুঁজি” গ্রন্থের বিভিন্ন খণ্ডে এই সব বিষয়কে বিশদ ভাবে ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর ধনতন্ত্রের বাইরের কাঠামোয় অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। পুরনো কারখানা সিস্টেম উঠে যাচ্ছে। বাষ্প চালিত যন্ত্রের এখন আর দেখা মিলবে না। এক ছাদের নীচে হাজার হাজার শ্রমিক জড়ো হয়ে কাজ করার দৃশ্যও এখন দুর্লভ। অবাধ প্রতিযোগিতার যুগ পেরিয়ে পুঁজিবাদ এখন একচেটিয়া স্তরে পৌঁছেছে এবং সেই ভাবে বিকশিত হয়েছে। পুঁজির মালিকানা এবং বিচরণ স্থলও এখন আর কোনো একটা দেশের ভূখণ্ডে সীমাবদ্ধ হয়ে থাকে না। বিশ্বায়নের ফলে পুঁজির সীমাপার চলাচল আরও বৃদ্ধি পেয়েছে ও দ্রুতগতি হয়ে উঠেছে। পণ্য ও পরিষেবার পাশাপাশি ফাটকা বাজারে পুঁজির অংশ গ্রহণ বিপুল পরিমাণে বেড়ে গেছে। মার্ক্সের রচনায় বর্তমান কালের এই সব বৈশিষ্ট্য দেখতে পাওয়া যাবে না।

    কিন্তু যখনই আমরা পুঁজিবাদী উৎপাদন প্রক্রিয়ার বাস্তব অর্থনৈতিক পদ্ধতি বুঝতে চাইব, মূল্যের চলাচল বুঝতে চেষ্টা করব, শোষণের প্রক্রিয়া পদ্ধতি এবং হার জানতে চাইব, অর্থাৎ, এক কথায় ধনতন্ত্রের বাইরের খোলস নয়, ভেতরের খোলটাকে দেখতে চাইব, মার্ক্স এখনও আমাদের দিশাদর্শক!

    শোষিত মানুষের দিগ-দর্শন হিসাবে তাই মার্ক্সবাদ চির অম্লান!
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৭ মে ২০১৮ | ২৩৫৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কল্লোল | ***:*** | ০৯ মে ২০১৮ ০৬:০৯62769
  • ধনতন্ত্রের স্বরূপ চেননোর ক্ষেত্রে মার্ক্স অতুলনীয়। উদ্বৃত্ত মূল্যের থিয়োরী আজও একই রকম প্রাসঙ্গিক।
    কিন্তু এর থেকে বেরিয়ে আসার যে পথ মার্ক্স দেখিয়েছেন, তাতে নতুন সমাজ ও তার উৎপাদন/বন্টন ব্যবস্থা নিয়ে তিনি বেশ গোলমালে।
    রাষ্ট্র ও সমাজতন্ত্রে তার ভূমিকা, পার্টি ও সমাজতন্ত্রে তার ভূমিকা, এসব নিয়ে প্যারী কমিউন সংক্রান্ত লেখায় কিছু দিক নির্দেশ ছিলো বটে, তবে তা বেশ অপ্রতুল। তবু যতটুকু ছিলো, তা মানা হয়নি/যায়নি।
    বহুমতের গণতন্ত্রের উল্টোদিকে "সর্বহারার একনায়কতন্ত্র" আদতে নেতা ও আমলাদের একনায়কতন্ত্রে পরিনত কারন, ব্যক্তি পুঁজির জায়গা নিয়েছে রাষ্ট্রীয় পুঁজি, যা অসম্ভব গোলমেলে এক অর্থনৈতিক ধারনা।
    সেসব নিয়ে কথা হোক। মার্ক্সকে ছোট না করেই হোক। লেনিন যেমন ধণতন্ত্রের থেকে সাম্রাজ্যবাদের ধারনায় পৌঁছেছিলেন, তেমনই।
  • PM | ***:*** | ০৯ মে ২০১৮ ০৭:৫৯62770
  • থিওরিটিকাল ফিসিক্স আর অ্যাপ্লায়েড ফিসিক্স এ একই লোকের পারদর্শী হওয়া দুর্লভ। অইন্সটাইন, বোর , হকিং কে ব্রীজ বানাতে দিলে কি হোতো বলা মুসকিল।

    মার্ক্স থিওরি দিয়ে গেছে, লেনিন সেটার অ্যাপ্লিকেসনের চেষ্টা করেছে-- দীর্ঘ মেয়াদি সাফল্য আসে নি। আরো নানা লোক চেষ্টা করবে নতুন পদ্ধতি তে। শুন্য আবিস্কারের পর থেকে আজকের কম্পিউটার আসতে ২০০০ বছর সনয় লেগেছে। এখানেও সময় লাগবে।

    ১০০০ বছর বাদে ও মানুষ যদি টিকে থাকে, তাহলে মাঝে কোথাও এর সফল ইম্প্লিমেন্টেসন হতেই হবে। যা চলছে তাই হয়ে চললে ডাইনোসরের হালই হবে আমাদের
  • কল্লোল | ***:*** | ১০ মে ২০১৮ ০২:৩৮62771
  • পিএম। বিষয়টা শুধু সফল প্রয়োগের সমস্যা নয়। বরং অনেক বেশী দর্শনগত, অর্থনীতির দর্শন, রাজনৈতিক দর্শন।
    মার্ক্স উৎপাদনের ক্ষেত্রে শ্রম ও পুঁজির বাইরে কিছু ভাবতে পারেন নি। সেটা হয়তো তার সময়ে দাঁড়িয়ে ভাবা সম্ভব হয় নি। কিন্তু মার্ক্স পরবর্তি চিন্তকেরাও ভাবেন নি, সেটাই সমস্যা।
    দ্যাখো যে উৎপাদন ব্যবস্থার চালিকা শক্তি হয়ে দাঁড়ায় পুঁজি (তা রাষ্ট্রীয় হলেও) সে ব্যবস্থা আর যাই হোক সমাজতান্ত্রিক নয়। সমাজতান্ত্রিক উৎপাদন ব্যবস্থায় সমাজকে চালিকা শক্তি হিসাবে থাকতে হবে। আর সেটা প্রতিনিধিত্বমূলক নয়, সমাজের সবটা নিয়েই থাকতে হবে। সেখানেই চাবিকাঠিটি বলে আমার ধারনা। এটা হলে আমাদের এতোদিনকার উৎপাদনের ধারনাটাই বদলে যাবে।
    রাষ্ট্রীয় পুঁজির বিপদ হলো, রাষ্ট্রের সাথে সাথে এটিও সমাজবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এঙ্গেলস তার পরিবারের উদ্ভব, ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও রাষ্ট্র লেখায় খুব স্পষ্টতঃ বলেছেন রাষ্ট্র সমাজ থেকে উদ্ভুত হলেও তা নিজেকে সমাজের থেকে বিচ্ছিন্ন করে নেয়। ফলে তার মালিকানায় যে পু`ব্জি, সেও সমাজবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে বাধ্য। অথচ মার্ক্সের মতে পুঁজি একটি সামাজিক শক্তি। সে সমাজবিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে পারে না। এটা জোর করে করতে গেলে, তাতে পুঁজি সমাজে ফিরে আসার রাস্তা তৈরী করে নেয়, ব্যক্তিমালিকের হাতে ফিরে আসে। যা হয়েছে রাশিয়ায়, যা বকলমে হচ্ছে চীনে।
    ফলে, এটা শুধু প্রয়োগের সমস্যা নয়। এটা দার্শনিক সমস্যা। এই সমস্যার সাথেই জড়িত রাষ্ট্র, দল, সরকার। ট্রটস্কির নিরন্তর বিপ্লব নতুন করে পড়ার দরকার, বাকুনিন, প্রুধোঁ নিয়ে আবারও ভাবা দরকার। তাদের থেকে নেবার কিছুই নেই এমনটা বোধহয় নয়।
  • abcd | ***:*** | ১১ মে ২০১৮ ১১:২৪62772
  • সংগঠিত শ্রমিক শ্রেণীই সমাজের এগিয়ে থাকা শ্রেণী বলে শুনেছি। এখন যদি পরিস্থিতি এরকম হয়:
    "এক ছাদের নীচে হাজার হাজার শ্রমিক জড়ো হয়ে কাজ করার দৃশ্যও এখন দুর্লভ",
    যা কিনা একেবারেই সত্যি ঘটনা। তাহলে মার্ক্সের ঐতিহাসিক বস্তুবাদ অনুযায়ী পুঁজিতন্ত্র থেকে সমাজতন্ত্রে পরিবর্তনের যে কথা বলা হয় তার ভ্যালিডিটি কি আজকের যুগে আর নেই বলা যায়? কারখানার একছাদের নিচে শ্রমিক সংখ্যা যদি কমতে থাকে তাহলে তো সর্বহারা প্রলেতারিয়েতের সংখ্যা কমে আসতে শুরু করেছে। যারা ব্যবস্থা পাল্টে ক্ষমতা দখল করবে তাদের সংখ্যায় কমে আসা কি মার্ক্সের ঐতিহাসিক বস্তুবাদের একটি কাউন্টার এক্সাম্পল হয়ে ওঠে না? অন্তত এক্ষেত্রে কি মার্ক্স ভুল ছিলেন? সমাজতন্ত্র নয় পুঁজিবাদই একদিন সমাজের শ্রেণীদ্বন্দ্ব নির্মূল করে ফেলতে পারে, কারখানার শ্রমিকের সংখ্যা কমিয়ে আনতে আনতে? একদিন আপনা থেকেই সবাই সমান হয়ে যাবে?
  • কল্লোল | ***:*** | ১৩ মে ২০১৮ ১২:১৫62773
  • এক ছাদের নীচে। কল সেন্টার ও বিপিওগুলোর দিকে তাকান। আজকের প্রলেতারিয়েৎ পেয়ে যাবেন।। তবে প্রলেতারিয়েৎ যে "এগিয়ে থাকা" সে নিয়ে বহুতর সন্দেহ আছে। রাশিয়া/চিন/ভিয়েৎনাম/কিউবা সব দেশেই নেতৃত্ব ছিলো তথাকথিত "শ্রেণীচ্যুত" হওয়া শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্তের হাতে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন