এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  প্রবন্ধ

  • সুভাষদা: ভরা থাক স্মৃতি সুধায় 

    Sumit Chakraborty লেখকের গ্রাহক হোন
    প্রবন্ধ | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২৬ বার পঠিত
  • সুভাষদা: ভরা থাক স্মৃতি সুধায়

    সুমিত চক্রবর্তী

    [ ভূমিকা:

    এই লেখাটি Subhas Chandra Ganguly/সুভাষ চন্দ্র গাঙ্গুলী: A Commemorative Collection of Life Sketch
    in English & Bengali
    ” নামে Germinal Publications Private Limited, কলকাতা থেকে প্রকাশিত একটি স্মৃতিচারণার বইতে ছাপা হয়েছে ২০২৪-এর নভেম্বরে। 
     
    গুরুচন্ডালি-র “হরিদাস পাল” বিভাগে ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ লেখাটি পুনঃপ্রকাশিত হলো। ]

    পরিচয়ের দিনগুলি

    কলকাতায় পাকাপাকিভাবে থাকা শুরু করি ১৯৮৫ সালের মাঝামাঝি থেকে। সে সময় আমি পড়তাম সিটি কলেজে (আমহার্স্ট স্ট্রিট শাখা)। ঐ সময় “প্রেসিডেন্সি কলেজ পত্রিকা”র সম্পাদকদের তরফ থেকে সুভাষদাকে (সুভাষ গাঙ্গুলী: ১৯৪৭-২০২৩) সপ্তম দশক(১৯৬১-১৯৭০)এর প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র আন্দোলন নিয়ে লিখতে অনুরোধ করা হয়। ওই দশকে সুভাষদা ওখানকার ছাত্র ছিল এবং হিন্দু হোস্টেলে থাকত। প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র আন্দোলনের ঠিক আগে হিন্দু হোস্টেলের তৎকালীন সুপার হরপ্রসাদ মিত্রর অপসারণের দাবিতে সুভাষদারা কয়েকজন অনশন করে এবং হরপ্রসাদ মিত্র অপসারিত হন। এই আন্দোলন নিয়ে সে সময়কার নামী খবরের কাগজের রিপোর্ট দেখে সুভাষদা লেখা তৈরির কথা ভাবল। ধর্মতলায় খবরের কাগজের সরকারি মহাফেজখানায় যেতে হবে ঐ সময়ের রিপোর্ট দেখতে। সঙ্গে কেউ থাকলে ভালো হয়, আমি সঙ্গী হতে চাইলাম। বস্তুত, আন্দোলন সম্পর্কে আগ্রহ এবং সুভাষদার সঙ্গ লাভ করার আগ্রহ‌ দুটোই ছিল আমার এই ইচ্ছার পেছনে। যদিও নানা কারণে এই লেখা “প্রেসিডেন্সি কলেজ পত্রিকা”য় প্রকাশিত হয় নি, পরে, ১৯৯০ সালে “অনুষ্টুপ” রজত জয়ন্তী বর্ষ, প্রথম সংখ্যায় বেরিয়েছিল। পুরানো খবরের কাগজে একটা জিনিষ খেয়াল করলাম, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই এই সময় ছাত্র আন্দোলন চলছিল‌! ১৯৮৭ সালে আমি অ্যাকসিডেন্ট করে মেডিকেল কলেজে ভর্তি ছিলাম। সুভাষদা নিজে হাতে ডিম আর দই দিয়ে পুডিং তৈরি করে নিয়ে গেছিল আমার জন্য।

    সুভাষদাদের বাড়িতে

    বোধহয় ১৯৮৯ সাল নাগাদ সল্টলেক ৮ নং ট্যাঙ্কের কাছে আমাদের বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয় কয়েক মাসের জন্য। সেখান থেকে হেঁটে করুণাময়ী আসতাম মাঝে মাঝে। সুভাষদা ভারতীদি (সুভাষদার স্ত্রী ভারতী গাঙ্গুলী) তখন কিছু দিনের জন্য ওখানে ছিল না, “একলব্য”র হাতে কলমে বিজ্ঞান শিক্ষার শিবিরে ইন্দোর গেছিল। রবীনদা (মজুমদার) এবং সত্যদা (সত্যব্রত কর) সে সময় সুভাষদাদের ফ্ল্যাটে কয়েকদিন ছিল। রবীনদা পাবদা না কাজরী মাছের চমৎকার পাতলা ঝোল রেঁধেছিল সেখানে। সম্ভবত এরকম কোনো সময়েই আমার লেখা একটা কবিতা অনেকেরই ভালো লেগেছিল। সুভাষদার কথায় সত্যদা কবিতাটা সাপ্তাহিক “দেশ” পত্রিকায় ছাপার জন্য পাঠিয়ে দেয়, ছাপা হয়নি যদিও।
     
    সুভাষদা প্রায়ই বিভিন্ন বিষয়ে লেখা পড়ে শোনাত। একটা সময় টলস্টয়ের জীবনের নানা সংকটের কথা নিয়ে লেখা শোনাত, সম্ভবত টলস্টয়ের নিজের লেখা থেকেই। আমি নিজেও এসময় নানা সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম। এই পাঠ এবং সুভাষদা ভারতীদির সাহচর্য কিছুটা শান্তি দিত। পরে বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ এঁদের মনোজগতের নানা ওঠা-পড়া, আনন্দ এবং গভীর বিপন্নতা নিয়ে এঁদেরই লেখা পড়ে শোনাত। ২০০০ সালে জীবিকার প্রয়োজনে “মনোস্বাস্থ্য সমাজকর্মী(psychiatric social worker)”র একটা এক বছরের কোর্স করে আমি “মানস”এর সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে পেশাগতভাবে কাজ করা শুরু করি। এর আগে “মানস”-এই সাধারণ স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতাম। মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়টি নিয়ে সুভাষদার আগ্রহ ছিল জানতাম। এই সময় প্রায়ই সুভাষদাদের বাড়ি যেতাম। প্রায়ই “মানস”-এ তৈরি জৈব ফসল নিয়ে যেতাম, বিক্রি করতাম। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আমার নানা অভিজ্ঞতার কথা বলতাম। সুভাষদা বার বার বলত, আমি যেন আমার অভিজ্ঞতার নোট রাখি। নোট অবশ্য আমি রাখতাম, তবে সেটা “মানস”-এর বাইরে যাঁদের পারসোনাল কাউন্সেলিং করতাম তাঁদের উপর। “মানস”-এ যাঁদের সঙ্গে কথা বলতাম, তাঁদের উপর নোট প্রধানত “মানস”-এ তাঁদের ব্যাক্তিগত ফাইলেই রাখতাম। ব্যাক্তিগতভাবে বিশেষ রাখিনি। ১৬-১৭ বছর আগে একসময় সপ্তাহে দু-তিন দিন সুভাষদাদের ফ্ল্যাটে যেতাম, বিকেলে সুভাষদার সাথে হাঁটতে বেরতাম, রাতেও থাকতাম। আমি গেলে পরার জন্য পোশাকের একটা সেটও ওখানে রাখা ছিল, আমার জন্য গামছা, লুঙ্গি সব ব্যবস্থাই ভারতীদি করে রেখেছিল। ভারতীদি বলতো পুরোপুরি ওখানে থেকে যেতে, ওখান থেকেই কাজে যেতে। সেটা আর হয়নি। বিয়ের পর আমার যাওয়া কমে গেল। কিন্তু গেলেই সুভাষদা বলতো, সপ্তাহে দুতিন দিন অন্তত ওখানে সময় দিতে। সুভাষদার সংগ্রহে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর যে বইগুলো রয়েছে, সেগুলো ওখানে গিয়ে পড়তে বলতো। সেই কথাগুলো মনে পড়ছে। সুভাষদাদের ওখানে গেলে, ভারতীদি অনিবার্যভাবে জিজ্ঞেস করে, শেষ কখন খেয়েছি। সুভাষদা থাকলে মাঝে মাঝে স্মরণ করিয়ে দিত, “ভারতী, জিজ্ঞেস করার কিছু নেই, খিদে পেলে ও নিজেই খেতে চাইবে”।
     
    অর্চনা গুহ মামলা

    ১৯৯৬ সালে বিকল্প কৃষি, বিকল্প জীবন যাপন এইসব দেখব বলে মধ্যপ্রদেশের হোশাঙ্গাবাদ যাব ঠিক করি। তখন অর্চনা গুহ মামলার শুনানি চলছে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে। সুভাষদা রীতিমতো চাপ দিল এই মামলার শুনানি শুনতে যেতে, “ঐ সময়কার পুলিশি নির্যাতনের একটি মাত্র মামলা বেঁচে আছে। পেশাদার উকিলের পরিবর্তে সৌমেন (মানবাধিকার কর্মী সৌমেন গুহ) নিজে সওয়াল করছে, এটা একটা ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা হবে, হোশাঙ্গাবাদ যাওয়া পিছিয়ে দাও, মামলার শুনানিতে আসো”। হোশাঙ্গাবাদ যাওয়া ছিলো যোগীনদার (যোগীন সেনগুপ্ত) যোগাযোগে। যোগীনদা মজা করে বলেছিল, “সুভাষ তোমাকেও পাকড়েছে!” সেই সময় ব্যাঙ্কশাল কোর্টে কয়েকটা শুনানিতে উপস্থিত ছিলাম, রায়দানের দিন সমেত।
     
    ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসি এবং মৃত্যুদন্ড বিরোধিতা

    এই ফাঁসি নিয়ে সুভাষদা ভয়ানক বিচলিত ছিল। কার্যত পাগলের মত বিচলিত ছিল। ফাঁসির আগে এই মৃত্যুদন্ডকে বাতিল করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি আব্দুল কালামকে সুভাষদা একটা চিঠি লিখেছিল। সেখানে রাষ্ট্রপতিকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল, সীমিত যে কয়েকটি ক্ষেত্রে ভারতীয় রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তার একটি হলো মৃত্যুদন্ড বাতিল করা। রাষ্ট্রপতি আব্দুল কালামকে সেই অধিকার প্রয়োগ করতে অনুরোধ করেছিল সুভাষদা। আরো একবার রাষ্ট্রপতি হওয়ার লোভ অথবা নিতান্তই রাজনৈতিক চাপ ― যে কোনো কারণেই হোক, রাষ্ট্রপতি এই ডাকে সাড়া দিতে পারেননি। এই আবেদন বাতিল হবার পর রাষ্ট্রপতিকে সুভাষদা আরো একটি চিঠি লিখেছিল। সেখানে একটু তির্যক সুর ছিল। সম্ভবত এই রকম লিখেছিল, এরপর বিভিন্ন জায়গায় যখন, “চিত্ত যেথা ভয়শূন্য উচ্চ যেথা শির” মার্কা জ্ঞান দেবেন, তখন নিজের এই কীর্তির কথা আপনার স্মরণ থাকবে তো! এমনকি এরকমও বোধহয় লিখেছিল, শেষ ডাক যখন আসবে নিজের এই “কীর্তি” আপনাকে শান্তিতে যেতে দেবে তো! যাদের চাপে তিনি ধনঞ্জয়ের মৃত্যুদন্ডকে বাতিল করতে পারলেন না, সেই ভারতীয় রাজনীতিবিদদের প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার জেমস মাইকেল লিংডো “ক্যান্সার” বলে উল্লেখ করেছিলেন, সে কথাও এখানে আব্দুল কালামকে সুভাষদা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল। বস্তুত, দল পাকানো, কাঠি করা আর ভয় দেখানো ― এই সম্বল করে এরা রাজনীতি করে। একটা দেশে এরাই হয়তো সবচেয়ে নিকৃষ্ট শ্রেণীর মানুষ। প্রথম চিঠি লেখার সময় সুভাষদার একমাত্র লক্ষ্য ছিল ধনঞ্জয়ের মৃত্যুদন্ডকে রোধ করা। ফলে, মৃত্যুদন্ড দিয়ে আজ অবধি অপরাধ কমানো যায়নি সেই স্টাডির কথা, কাউকে মৃত্যুদন্ড দেওয়ার পর যদি জানা যায়, সেই ব্যাক্তি নিরপরাধ ছিলেন, ভুল শোধরানোর আর কোনো উপায় থাকে না, বহুবার এই ভুল বিভিন্ন রাষ্ট্র করেছে সেকথা উল্লেখ করেছে। শুধু রাষ্ট্রপতিকে নয়, বিভিন্ন খবরের কাগজে এই মৃত্যুদন্ড রোধ করার লক্ষ্যে সুভাষদা চিঠি দিয়েছিল। মজার কথা হলো, নানা বিষয়ে সুভাষদার চিঠি খবরের কাগজে নানা সময়ে প্রকাশিত হলেও এই বিষয়ে কোনো চিঠি কোনো খবরের কাগজ প্রকাশ করে নি! এই সময়ে দেখেছি কি ভয়াবহভাবে খবরের কাগজ মৃত্যুদন্ডের পক্ষে জনমত নির্মাণ করেছে। মৃত্যুদন্ডের বিপক্ষে মামুলি কিছু লেখা, চিঠি প্রকাশিত হলেও কোনো ভালো লেখা প্রকাশিত হতে দেখিনি। এই মৃত্যুদন্ডের পরে রাষ্ট্রপতিকে লেখা সুভাষদার দুটি চিঠিই “বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানকর্মী” পত্রিকার জানুয়ারি-ডিসেম্বর ২০০৪ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। সঙ্গে ধনঞ্জয় যে সম্ভবত নির্দোষ ছিলেন, সেই মর্মে কয়েকটি বিষয় পত্রলেখকের সংযোজন অংশে সুভাষদা উল্লেখ করেছিল। সেখানে উল্লেখ করেছিল, এরকম একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক সাধারণ ক্ষেত্রে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের প্রথা ভাঙা অতি সক্রিয়তার কথা। এর বদলে সরকারের ভূমিকা হতেই পারত, আইন আইনের পথে চলবে, এখানে সরকারের কিছু করার নেই। এই অতি সক্রিয়তা হিডেন অ্যাজেন্ডার ইঙ্গিত দেয়। পরে বোধহয় ধনঞ্জয় মামলা পুনরায় চালু করার ভাবনা সুভাষদার মনে জেগেছিল। বিজয়াকে (আইনজীবী বিজয়া চন্দ) সুভাষদা এই মামলা, তার শুনানি প্রক্রিয়া এবং রায়দান ইত্যাদির ডিটেইল জোগাড় করে দিতে বলেছিল। অনেক চেষ্টা করেও বিজয়া এগুলো জোগাড় করে উঠতে পারেনি। জোগাড় করতে পারেনি বলে সুভাষদা বিজয়ার উপর রেগেও গেছিল। তবে, পুরুলিয়া অস্ত্রবর্ষণ কান্ডে অভিযুক্ত পিটার ব্লিচ ধনঞ্জয়ের ফাঁসির আগেই এই মামলার সওয়াল জবাব ইত্যাদি পড়ে ফেলেছিলেন এবং ফাঁসির দুদিন আগে ১২ই আগস্ট ২০০৪ “হিন্দুস্তান টাইমস” ইংরেজি দৈনিকে তাঁর একটি লেখাও বেরিয়েছিল। সেখানে তিনি লেখেন, সাক্ষীদের কথায় এত অসঙ্গতি ছিল যে, উকিল মনোযোগ দিলে ফাঁসি তো ভালো, কোনো সাজাই ধনঞ্জয়ের হতো না। পরে “আদালত-মিডিয়া-সমাজ এবং ধনঞ্জয়ের ফাঁসি” বইটির একজন লেখকের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, কিছু প্রভাবশালী লোকের উদ্যোগে ধনঞ্জয় মামলার নথি কিছু দিনের জন্য জনতার আওতার বাইরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। সে জন্যই বিজয়া চেষ্টা করেও সে নথি যোগাড় করতে পারে নি। এই সরিয়ে নেওয়া ইঙ্গিত দেয়, এই প্রভাবশালী লোক এবং অন্তত সরকারের মধ্যে কোনো কোনো প্রভাবশালী লোক জানত, ধনঞ্জয়কে ফাঁসানো হয়েছে। আজ দেবাশিস সেনগুপ্ত, প্রবাল চৌধুরী এবং পরমেশ গোস্বামীর অসাধারণ গবেষণা গ্রন্থ “আদালত-মিডিয়া-সমাজ এবং ধনঞ্জয়ের ফাঁসি” বইটির কল্যাণে ওয়াকিবহাল সমস্ত লোকই জানে, ধনঞ্জয় নির্দোষ ছিলেন। ধনঞ্জয় যে নির্দোষ ছিলেন, বইটি সে বিষয়ে একটি দলিল হয়ে রইল। সুভাষদা ভয়ানকভাবে মৃত্যুদন্ড বিরোধী ছিল। একবার কোনো এক বন্ধু বলেছিলেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিনি মৃত্যুদন্ডের পক্ষে। এতে সেই বন্ধুর বাড়ি থেকে তৎক্ষণাৎ সুভাষদা বেরিয়ে এসেছিল, সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সুভাষদা একাধিকবার আমাকে বলেছে, “সুযোগ থাকলে আমি উইল করে যেতাম, আমাকে কেউ যদি কোনদিন হত্যা করে তার যেন মৃত্যুদন্ড না হয়”। পরবর্তী কালে “আদালত-মিডিয়া-সমাজ এবং ধনঞ্জয়ের ফাঁসি” বইটির লেখকদের আমি “বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানকর্মী” পত্রিকায় প্রকাশিত রাষ্ট্রপতিকে লেখা সুভাষদার চিঠি সমেত পুরো লেখাটা সম্পর্কে অবহিত করি। ফুটনোটে সুভাষদার লেখার উল্লেখ তাঁরা করেছেন, তবে, কিছুটা ভুল তথ্য সহ। ভুলটা এই যে, ওঁরা লিখেছেন, “ভুল বিচারে নির্দোষ ধনঞ্জয়কে ফাঁসি দেওয়া হতে যাচ্ছে, এই সম্ভাবনার কথা ২০০৪ সালেই জোর দিয়ে বলেছিলেন সুভাষ গঙ্গোপাধ্যায় (বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানকর্মী, জানুয়ারি-ডিসেম্বর, ২০০৪)”। ধনঞ্জয় যে সম্ভবত নিরপরাধ ছিলেন, পত্র (রাষ্ট্রপতিকে লেখা পত্র) লেখকের সংযোজন অংশে সুভাষদা জোর দিয়ে এটা লিখেছিল, কিন্তু এই অংশ লেখা হয়েছে ফাঁসির পরে। সুভাষদার ভাষায়, “চিঠি ( ফাঁসির আগে রাষ্ট্রপতিকে লেখা চিঠি) দুটিতে এসব তথ্যের ইঙ্গিত টুকু শুধু আছে। সেখানে প্রধানত জোর দেওয়া হয়েছে মৃত্যু দন্ড-বিধি মাত্রেরই অনৈতিক ও মানবতা বিরোধী চরিত্রের উপর”। আর একটা কথা, “বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানকর্মী”র লেখাটি (জানুয়ারি-ডিসেম্বর ২০০৪ সংখ্যা) প্রকাশিত হয়েছিল ২০০৫ সালের জানুয়ারি মাসে, অর্থাৎ, ফাঁসির পরে। ধনঞ্জয় যে সম্ভবত নির্দোষ ছিলেন এই মর্মে সৌমেন গুহরও একটি লেখা বেরিয়েছিল “ভার্সেটাইল” পত্রিকার ডিসেম্বর-মে ২০০৪-২০০৫ সংখ্যায়, অর্থাৎ এটিও ফাঁসির পরেই প্রকাশিত হয়েছিল, আমি পরে পড়েছি। প্রসঙ্গত বলা যেতে পারে, রাজীব গান্ধী হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত নলিনী এবং অপর তিনজনের ফাঁসির সিদ্ধান্ত যাতে বাতিল হয় সেজন্য সুভাষদার উদ্যোগে ২৫ জনের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি টেলিগ্রাম তৎকালীন রাষ্ট্রপতি কে. আর. নারায়ণণকে পাঠানো হয় ১২. ১০. ৯৯ তারিখে। “একলব্য”-র সাথে কাজ করছিলেন এমন কয়েকজনকে সুভাষদা চিঠি লিখে অনুরোধ করেছিল, তাঁরাও যেন এই ফাঁসি রদ করার জন্য সমধর্মী কিছু করেন। এই ফাঁসি শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়েছিল। গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করি, রাজীব গান্ধীর স্ত্রী এবং সন্তানরাও এই মৃত্যুদন্ডের বিরোধিতা করেছিলেন।

    রাজনীতি এবং আধ্যাত্মিকতা

    আমি যে সময় সুভাষদাকে দেখেছি তখন আর সুভাষদা “সমাজ বদলের রাজনীতি”র মধ্যে সেভাবে নেই। ছাত্রাবস্থায় যখন যুক্ত ছিল, সর্বাত্মকভাবেই যুক্ত ছিল বলে জেনেছি। পরে এই রাজনীতির উপর আস্থা ছিল না। সর্বাত্মকভাবে যাঁরা এর মধ্যে ছিলেন, বিশ্বাস নষ্ট হওয়ার পর তাঁদের ভয়াবহ সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। মাঝে মাঝেই বলতো, “বুঝলে, আমার মতো অনেকেই পাগল যে হয়ে যাইনি সেটাই অনেক”। এই সঙ্কটের সময় সুভাষদা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে পড়াশোনা করত, ন্যাশনাল লাইব্রেরি নিয়মিত যেত। “সমাজবিজ্ঞান”, “মার্ক্সবাদ” এগুলোকে “বিজ্ঞান” বলায় সুভাষদার গভীর আপত্তি ছিল। বলত, “ “বিজ্ঞান” না হলেই কোনো বিষয় ছোটো হয়ে যায় না”। এবং বলত, “১৯১৭ সালে বলশেভিকদের ক্ষমতা দখলের সুবাদেই মার্কসবাদ নামক “বিজ্ঞান” পৃথিবী জুড়ে এতখানি প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে”। সুভাষদার কাছে শুনেছি, সুভাষদার অনুবাদে দেখেছি, পরে নিজও পড়েছি, রাশিয়ান সাহিত্য সমালোচক পি. ভি. অ্যান্নেকভকে ২৮. ১২. ১৮৪৬ তারিখে লেখা  চিঠিতে মার্ক্স আফ্রিকার কালো মানুষদের নিয়ে আমেরিকার দাস ব্যবসা বিষয়ে লিখেছিলেন, “The only thing requiring explanation is the good side of slavery”, অর্থাৎ, দাস ব্যবস্থার ভালো দিক নিয়ে ব্যাখ্যার প্রয়োজন রয়েছে। চিঠির মর্মার্থ, দাস ব্যবসার খারাপ দিক নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই, কিন্তু এটা ছাড়া সভ্যতা এগতেও পারবে না, সভ্যতার অগ্রগতির জন্য এর প্রয়োজন রয়েছে। ১৮৪৭ সালে “দর্শনের দারিদ্র্য(The Poverty of Philosophy)”তেও মার্ক্স একই কথা লিখছেন। আর একটা বিষয় সুভাষদার কাছে শুনেছিলাম, একটা সময় “নিউ ইয়র্ক ট্রিবিউন” পত্রিকায় মার্ক্স নিয়মিত লিখতেন। আমেরিকার ভূমিসন্তানদের নিশ্চিহ্ন করার প্রক্রিয়া মার্ক্সের জন্মের আগে শুরু হ‌য়ে মার্ক্স মারা যাওয়ার পরও চলেছে, কিন্তু মার্ক্সের আমেরিকা সংক্রান্ত রিপোর্টে কোথাও এর কোনো উল্লেখ নেই! সুভাষদা মার্ক্স সম্পর্কে শ্রদ্ধাশীল থেকেই এসব কথা বলেছে। তবে আমার মনে হয়, মার্ক্স যদি আফ্রিকার কালো মানুষ হতেন, সভ্যতা অর্থনীতির এই হিংস্র তত্ত্বায়ন করতে পারতেন না। মার্ক্স যদি আমেরিকার ভূমিসন্তান হতেন, এই গণহত্যা (জেনোসাইড) নিয়ে নীরব থাকতে পারতেন না। তাঁর চামড়ার রঙ তাঁর কলমকে চেপে ধরত। একটা জিনিষ অবশ্য বহুদিন ধরেই মনে হতো, মার্ক্সবাদিরা মনে করে, “পুঁজিবাদ”এর যুগে যে সুবিধা মুষ্টিমেয় লোক ভোগ করে, সমাজতন্ত্র বা সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠা হলে সেই সুবিধা সবাই ভোগ করবে। যতদিন বিজ্ঞান প্রযুক্তির তেমন উন্নতি না হচ্ছে, ততদিন “দাস” এবং “নিম্ন শ্রেণীর লোকেরা” “ছোটো কাজ”, সে বিনা পারিশ্রমিকে আমেরিকার তুলো খেতের কাজ হোক বা স্বল্প পারিশ্রমিকে শহরের নর্দমায় নেমে ময়লা পরিষ্কার করার কাজ হোক, সেগুলো করবে, কারণ “উন্নয়ন” তো থেমে থাকতে পারে না! বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতি হলে, সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের কল্যাণে সমস্ত “ছোটো” কাজ যন্ত্র করে দেবে। আর মানুষ কি করবে? না, মাছ ধরবে আর দার্শনিক বিতর্ক করবে!
     
    “বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানকর্মী” পত্রিকা ঘিরে আড্ডার মধ্যে সুভাষদার সঙ্গে প্রায়ই দেখা হতো। গত শতকের শেষ দুই তিন দশকের গণবিজ্ঞান আন্দোলনের অন্যতম করণীয় বিষয় ছিল তাবিজ কবজ, “ধর্মীয় কুসংস্কার” বিরোধিতা। “বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানকর্মী” পত্রিকা গণবিজ্ঞান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও সেখানকার ভাবনা চর্চার পরিমন্ডল অন্যরকম ছিল। এমনকি সৌমেন গুহর তাবিজ কবজ, “ধর্মীয় কুসংস্কার” বিরোধী আন্দোলনের তীব্র সমালোচনা করা একটি লেখাও এখানে প্রকাশিত হয়েছিল। ইদানীং কথাপ্রসঙ্গে সুভাষদাকেও এই আন্দোলনের সমালোচনা করতে দেখেছি। বিজ্ঞান, এবং আধ্যাত্মিকতা এই দুটি বিষয় নিয়েই সুভাষদা পড়াশোনা এবং লেখালেখি করত। বিশেষ করে বিজ্ঞানী এবং ভারতের আধ্যাত্মিক সাধকদের সমধর্মী অনুভবের কথা যেখানে যেখানে লেখা আছে সেই জায়গাগুলো বাড়ি গেলে পড়ে শোনাত। ইংরেজি বুঝতে না পারলে বাংলা করে দিত। আবার বলত, “নিজে পড়, বুঝতে না পারলে বলবে”।
     
    কেঅস অ্যান্ড ক্রিয়েশন

    ২০০২ সালে ভারতীদি বছর খানেকের জন্য আন্দামানে বদলি হয়েছিল। শুনলাম সুভাষদা কলকাতায় থাকবে। সুভাষদাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, “একা থাকতে তোমার অসুবিধা হবে না”? সুভাষদা বলেছিল, “না না, অসুবিধা হবে কেন, আমি এখানেই থাকবো”। মাস তিনেক সুভাষদা এখানেই ছিল। কিন্তু ভালো ছিল না। নানা রকম অস্থিরতার মধ্যে ছিল। কাউকে বলত, চলে এসো, বাড়িতে একা ভালো লাগছে না। আবার বন্ধুস্থানীয় কারো বাড়িতে গিয়ে হয়তো বেশ কিছুদিন কাটিয়ে এলো। ভারতীদি কাছে না থাকলে সুভাষদা কেমন থাকে, এটা কার্যত তার একটা ক্লিনিকাল ট্রায়াল হয়ে গেল। এরপর সুভাষদা ভারতীদির কাছে আন্দামান চলে যায়। ভারতীদির উপস্থিতি এবং আন্দামানের সুন্দর প্রকৃতির মাঝে সুভাষদার মধ্যে আনন্দ নেমে এলো। সুভাষদার হাত থেকে বেরিয়ে এলো আন্দামানের পদ্য “ওয়ান্ডুরে গঙ্গাফড়িং”! “সিরিয়াস” “রাগী” সুভাষদার হাত থেকে যে ঝর্ণার মত এমন ছড়া বেরতে পারে, তা ছিল আমার ধারণার বাইরে। শিবু (শিবপ্রসাদ নিয়োগী) অসম্ভব সুন্দরভাবে শিল্পী গৌতম চট্টোপাধ্যায়কে দিয়ে প্রতি পাতায় সুন্দর সুন্দর কার্টুন দিয়ে অলঙ্করণ করিয়ে এটা একটা পুস্তিকা হিসেবে প্রকাশ করেছিল। কেবল গঙ্গাফড়িঙের পিঠে পিঠব্যাগের বদলে কাঁধে একটা সাইডব্যাগ আর বাঁ হাতে একটা আধখাওয়া বিড়ি থাকলেই প্রকাশনা যাকে বলে সর্বাঙ্গসুন্দর হতো। সেটা অবশ্য শিবুরও মনে হয়েছিল, শিল্পীকে সময়মতো এটা খেয়াল করিয়ে দিতে পারে নি, সেই আক্ষেপ ওরও ছিল। বেশ কয়েকজনকে এই বইটা আমি উপহার‌ দিয়েছি।
     
    “ভরা থাক স্মৃতি সুধায়”

    পরিমলদার (পরিমলেন্দু ভট্টাচার্য) স্মরণসভায় এই গান এবং “মুক্তির মন্দির সোপান তলে” গান দুটি শুনতে শুনতে সুভাষদাকে হেঁচকি পেড়ে পেড়ে কাঁদতে দেখেছি। সুভাষদাকে স্মরণ করতে গিয়েও দেখলাম, অনেকেরই কন্ঠ বেদনায় রুদ্ধ হয়ে আসছে। গত কয়েকমাসের মধ্যে রবীনদা (রবীন মজুমদার), সুভাষদা সমেত চারজন প্রিয় মানুষকে হারালাম। মাঝে মাঝে বিষন্নতা গ্রাস করে। মনে হয়, আমার অস্তিত্বের শর্ত আমার প্রিয়জনদের উপস্থিতি, তাঁদের মৃত্যু আমার সত্তাকেও যেন খন্ডিত করে। সুভাষদা চলে যাওয়ার পর মনে হচ্ছিল, সল্টলেকের দিকে তাকাবো কেমন করে! মন ভালো নেই, যাই সুভাষদাদের ওখান থেকে ঘুরে আসি, সুযোগ থাকলে নিখিলেশদাকে (অ্যামেচার অ্যাস্ট্রনমার এবং টেলিস্কোপ নির্মাতা নিখিলেশ পাল) নিয়ে অথবা একাই চলে যেতাম। খবর না দিয়ে চলে যাওয়ার যায়গা ক্রমশ‌ই কমে আসছে। সুভাষদা চলে যাওয়ার পর কেওড়াতলা থেকে ফেরার পথে বিশুর (অবসরপ্রাপ্ত পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক বিশ্বজিৎ বিশ্বাস) সাথে কথা হচ্ছিল, সুভাষদাদের পরের প্রজন্ম হিসেবে আমরা রয়েছি, কিন্তু, আমাদের কোনো পরের প্রজন্ম নেই।


    লেখার সঙ্গে ওপরে পোস্ট করা সুভাষ গাঙ্গুলীর ছবিটি ২০১৭ সালে তোলা।                                                                   

    Copyright (c) 2025 by Sumit Chakraborty. This is an open access article distributed under the terms of the Creative Commons Attribution-Noncommercial-No Derivative License (see http://creativecommons.org/licenses/by-nc-nd/3.0/us/), which permits anyone (if he/she so wishes) to share this article, provided (1) the distribution is only for noncommercial purposes, (2) the original author and the source are attributed, and (3) no derivative works including any alterations are made. For any distribution, this copyright statement should also accompany the article without any alteration and in its entirety, and the publication history should also accompany the article.

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • প্রবন্ধ | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন