এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  প্রবন্ধ

  • টুকরো কথা – জলহাওয়ার হালহকিকত, বিষয় দূষণ

    Sarbani Ray লেখকের গ্রাহক হোন
    প্রবন্ধ | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ | ৫৯ বার পঠিত
  • আমাদের মহান ভারত যে আর কিছুকালের মধ্যেই চীনকে টেক্কা দিয়ে যাবে, তা অনেকের বিশেষ করে ভক্তদের মতো আমিও বিশ্বাস করি, যদিও সম্ভবত আমাদের কারণ আলাদা আলাদা। আমার কারণটা সোজাসাপটা, রামদেবীয় লজিক, পতঞ্জলি সারটিফায়েড। এক দশক আগে বেজিং এর ছবিটা যেমন দেখা যেত, সবকিছু ঢেকে আছে আবছা ধুসর এক ধুলো আর ধোঁয়ার চাদরে, মোদের গরব মোদের আশা দিলওয়ালাদের প্রিয় দিল্লীরও সেই একই দশা। আবার বেশ কিছুকাল হল আমরা জনসংখ্যাতেও নাম্বার ওয়ান হয়েছি, আগে যার শিরোপা দীর্ঘকাল চীনের দখলে ছিল। অতএব যেমনই হোক, যত দীর্ঘই হোক পথ, যে গলি দিয়েই ঢুকি না কেন, ভালো মন্দ সে যা নিরিখেই হোক, আমরা কাকে লক্ষ্যে রেখে চলেছি সেতো বেশ পরিস্কার। সম্ভবত বর্তমান সেবকদল দেশকে সত্তর বছরের যাবতীয় রোগব্যধি থেকে মুক্ত করতে হোমিওপ্যাথি পদ্ধতি প্রয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রোগ বাড়াও, রোগ সারাও!  
     
    কিছুকাল আগে দিল্লির এলিট জনতা প্রতিবাদে পথে নেমেছিল, দূষণমুক্ত হাওয়া ও স্বচ্ছ জলের নাগরিক অধিকারের দাবী নিয়ে। দিল্লি ও তার সংলগ্ন এলাকা, রাষ্ট্রীয় রাজধানী ক্ষেত্র যাকে বলা হয়, দীর্ঘকাল ধরে এসব জায়গার জলের গুণমান অত্যন্ত খারাপ। সমাজের উপর স্তরের লোকেরা, নিজেদের বাড়িতে দামী ওয়াটার পিউরিফায়ার লাগায়, খাবার জলের জন্যে। এছাড়া অনেক বড় বড় হাউসিং সোস্যাইটি গুলিতে নিজস্ব ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসানো আছে, সাপ্লাই লাইনে।আর হাজারে হাজারে নিম্নবিত্ত, সাধারণ গরীব লোকেদের খাওয়ার জন্যে ভরসা কেনা জল, যা বিসলেরির বড় বড় বোতলে ভরে বিক্রি হয়, বোতলের আনুমানিক বয়স, রঙ ও ভেতরের জল দেখে যার আসল উৎপত্তিস্থল সম্পর্কে খুব একটা ভরসা হবে না। বছরখানেক আগেও যমুনার অনতিদূরের গীতা কলোনির বাসিন্দা একজনের কাছে শুনলাম কলে এত লালচে কাদা জল আসছে যে কলের মুখে নাকি সস্তা কী ফিলটার পাওয়া যায় তাই লাগিয়ে রেখেছে। খাওয়ার জল নয়, সে তো বিসলেরি বোতল, এ শুধু ব্যবহারের জলের জন্যে।

    এ কিউ আই সাতশ, হাজারে যাওয়ার জন্যে অপেক্ষা করতে হল প্রতিবাদ করতে? দিল্লি বিগত কয়েক বছর ধরেই বিশ্বজুড়ে দূষিত শহরের তালিকার শীর্ষে রয়েছে। স্বচ্ছ জল হাওয়ার জন্যে প্রতিবাদ তো দেশের প্রতিটি শহরে নিয়মিত হওয়া উচিত, কারণ অন্য বড় শহরগুলিও খুব ভালো জায়গায় নেই। পরিবেশ নিয়ে এতকিছু হচ্ছে আজকের দুনিয়ায় তবে এদেশে সে অর্থে আমরা নাগরিকেরা এ নিয়ে মাথা ঘামাই না। এসবের জন্যে যারা কথা বলে তাদের পরিবেশবাদী বলে দাগিয়ে পাশে রেখে দিই। দেশের বড় বড় সমস্যা, এর মধ্যে এসব নিয়ে কথা বলা মানে বাড়াবাড়ি। তার মাঝে শাসকেরা পরিবেশ আইন কানুন হয় বদলে দেয় নয় ফাঁক ফোকর রাখে সেসবকে ফাঁকি দিতে, অথবা সেসবে জল ঢেলে বেড়ায় (আক্ষরিক অর্থে, দিল্লিতে জল ঢালছিল)। 
     
    তবে এই ফাঁকে অন্যান্য শহরের প্রশাসকরা একটু নিশ্বাস টিশ্বাস ফেলে নিতে পারছে, কারণ দিল্লির এরকম বিশ্বরেকর্ডকারী খারাপ নম্বরের পরে তাদের নিয়ে আর কেউ মাথা ঘামাচ্ছে না। আপাতত এ রাজ্যেও কলকাতা, দুর্গাপুর ইত্যাদিরা খুশী থাকুন, আপনারা দুশ তিনশ এ কিউ আইয়ে বিপদসীমার যথেষ্ট উপরে থাকলেও, এ নিয়ে কোনো কথা এই শীতে অন্তত উঠবে না। তবে ওই আর কী, আমি কালই কলকাতার দেখলাম, তিনশর ওপরে এ কিউ আই ছিল, দুশর ওপরে তো নিত্যদিনের ব্যাপার।বিকেলে বাড়ির বাইরে চোখ জ্বলছে, তবে কলকাতা এখনো দিল্লি হয়নি, হলেও এখানে এই প্রতিবাদটুকুও হবে কিনা সন্দেহ, যদি না এতে কেন্দ্রীয় চক্রান্তের কোনো অ্যাংগল খুঁজে পাওয়া যায়!

    স্বচ্ছ জল নিয়েই বা এত কথা বলার কী আছে, এই রেকর্ড বেরোজগারির বাজারে ফিল্টার ব্যবসায়ী সেলসম্যান, পাড়ায় পাড়ায় বিসলেরির বোতল বেচা ছেলেরা, ওদের রোজগারের উপায় বন্ধ হয়ে গেলে ভালো হবে? শহরবাজারে সাধারণ নাগরিকদের ওরকম দূষণ নিয়ে বেঁচে থাকার অভ্যেস আছে!

    দেখতে গেলে সকল সময়ে, প্রায় সব শাসনকালেই পানীয় জলের স্বচ্ছতা নিয়ে নানা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, কী সব ঘনঘোর নাম সব, সহজধারা, জলশক্তি, জলজীবন, কিন্ত এতসব করেও এত বছরে সেরকম কোনো আশানুরূপ ফল পাওয়া গেল না কেন, স্বচ্ছ জল আজও বেশীরভাগ নাগরিকের কেন অধরা, তার উত্তরও বোধহয় আমাদের অজানা নয়।

    বিহার ইলেকশনের সময় সেখানকার স্থানীয় রিপোর্টাররা, ইউটিউবাররা প্রচুর গ্রাউন্ড রিপোর্ট করেছে, সরকারের কাজকর্মের নমুনা দেখিয়ে। তাদের অনেক রিপোর্ট একদা জাতীয় স্তরের সাংবাদিকগণ ও ইদানীং কারের অনেক বিখ্যাত ইউটিউবে খবর পরিবেশনকারীরাও দেখিয়েছে, নিজেদের চ্যানেলে ব্যবহার করেছে। তার মধ্যে একটা দেখছিলাম, স্কুলের অবস্থার ওপর, একজন তরুনের খবর। সারা রাজ্যে গড়ে প্রতি পঁয়ত্রিশ জন ছাত্র পিছু একটি শিক্ষক। সংখ্যা দিয়ে রিপোর্টার দেখিয়েছেন রাজ্যে কতগুলি স্কুলে ইলেকট্রিসিটি নেই, কোথাও ইলেক্ট্রিসিটি আছে, কিন্তু লাইট পাখা নেই। সমস্যার নানা রূপ নানা নাম; কোথাও ছাদ নেই, একটা ঘরেই সব ক্লাস বসে, কারণ হয় আর ঘর নেই নয় স্কুলে মোট একজনই শিক্ষক। কোথাও কোথাও আবার স্কুলের নামে শুধু একটা বোর্ড লাগানো, পুরো স্কুলই হাওয়া। এবং প্রচুর জায়গায় হয় পানীয় জল নেই অথবা যে জল আছে তা পানযোগ্য নয়।আর সর্বোপরি হয় টয়লেট নেই, টয়লেট আছে কিন্তু মেয়েদের টয়লেট নেই, অথবা স্বচ্ছ ভারতের নামে বানানো অর্ধপূর্ণ টয়লেট বা ভাঙ্গা টয়লেট দাঁড়িয়ে আছে !!
     
    এ প্রসঙ্গে মনে পড়ল ২০১৭ তে, তখন “স্বচ্ছ ভারত” একেবারে তুঙ্গে, দেশের বড় বড় পাবলিক সেক্টর, প্রাইভেট সেক্টর, এমনকি কোনো কোনো মালটিন্যাশনালও টয়লেট বানিয়ে বেড়াচ্ছে, তাদের কর্পোরেট রেসপন্সিবিলিটির খাতায়। ওদিকে কেন্দ্রীয় সরকার স্বচ্ছ সেস নিচ্ছে আর আমরা গদগদ হয়ে তা দিচ্ছি, “আহা, এতদিনে একজন এসেছে যে ভারতের প্রধান সমস্যা সঠিক অনুধাবন করেছে। দেশ উন্নত দেশগুলির মত স্বচ্ছ হলেই ভুরি ভুরি বিদেশী কম্পানি, বিনিয়োগকারীরা, সব দৌড়ে দৌড়ে আসবে, আরো কত কী হবে, স্বর্গ নেমে আসবে, পাখি গান গাইবে, মলয় বাতাস বইবে ইত্যাদি প্রভৃতি। আমি সেইসময় হরিয়ানার একটি প্ল্যান্টে পোস্টেড। মহিলা সিনিয়র অফিসার, এইচ আর এসে ধরে পড়ল, সি এস আরের অন্তর্গত প্রোগ্রামে স্থানীয় একটি স্কুলে মেয়েদের সাইকেল দেওয়া হবে কম্পানির তরফ থেকে, তাই আমি গেলে ভালো হয়।ভালো কাজ, আপত্তির কিছু থাকে না। আমি নিজের গ্রুপের একটি জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র মেয়েকে নিয়ে গেলাম, এইচ আরের তরফেও দুটি জুনিয়র মেয়ে ছিল, এছাড়া এইচ আরের কিছু অফিশিয়ালস।

    গ্রামের স্কুলে ঢুকে যেই এইচ আর আমার পরিচয় দিয়েছে, প্রধান শিক্ষক সহ আরো কয়েকজন দৌড়ে এসে আমাকে ঘিরে অভিযোগের বন্যা বইয়ে দিল। “ম্যাডাম আপনাকে সাইকেল দিতে হবে না, এইসব ছাত্রছাত্রীরা গ্রামের, বেশী দূর থেকে কেউ আসে না, স্কুলে হেঁটেই আসতে পারবে। আপনি বরং আমাদের আরো টিচারের ব্যবস্থা করে দিন, আমরা কত চিঠি দিচ্ছি, বড় ক্লাসে অংক সায়েন্সের টিচার লাগবে, সরকার কথাই শোনে না। ছেলেমেয়েগুলো বোর্ডের পরীক্ষা দেবে কী করে! সাইকেলের বদলে আপনারা টিচার দিন। সে এক মহা অদ্ভুত আবদার, কিন্তু আকুতিটা এখনো এতদিন পরেও কানে বাজে।

    কোনোরকমে এইচ আর ও আমি মিলে বোঝাই যে আমরা আধা সরকারী হলেও তাদের সরকার বলতে রাজ্যের প্রশাসনে যারা তাদের সাথে আমাদের সরাসরি যোগাযোগ সামান্যই, বিশেষ করে স্কুলের এই সমস্যার সমাধান রাজ্যের শিক্ষাদপ্তরের হাতে, সেখানে আমরা কিছু করতে পারি না। শেষমেশ কথা দিই যে সমস্যাটি আমি আমাদের উপরওয়ালাদের জানাবো যদি তারা কিছু করতে পারে। কিন্তু আপাতত স্কুলকে সাইকেল নিতেই হবে, ক্যামেরাম্যান দাঁড়িয়ে আছে উঠোনের এক কোণে অনুষ্ঠান শুরুর অপেক্ষায়, ম্যাগাজিনে ফটো ছাপতে হবে!

    আমাদের চায়ের ব্যবস্থা হয়েছিল একটি অন্ধকারপ্রায় ক্লাসরুমে, দুজন মহিলা টিচার এলেন, বোধহয় মহিলা বলে এদের দায়িত্ব পড়েছিল অতিথি আপ্যায়নের। ছাত্রী মেয়েরা এক দুই করে এসে দরজার আড়াল থেকে মেয়ে অফসরদের দেখে যাচ্ছিল আর ফিক ফিক হাসছিল। আমি তাদের একজনকে ডেকে ওর সঙ্গে ক্লাসরুম গুলো ঘুরে দেখতে গেলাম। কিরকম অন্ধকার অন্ধকার ঘরগুলো, স্কুল যারা তৈরি করেছিল একটু ভেবেচিন্তে বানায় নি, বাচ্চারা আসবে, অত ঘন্টা কাটাবে, একটু আলো হাওয়া বড় জানালা দেওয়া ঘর বানাবে তো!

    আমাকে আলো পাখা চেক করতে দেখে, সাহস করে মহিলা শিক্ষিকা খুবই কুন্ঠিত স্বরে বললেন, “ম্যাডাম, আপনি একটু যদি টয়লেটগুলোও দ্যাখেন, দেখে গিয়ে আপনাদের অফিসে জানাবেন। এগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না।“ শুনলাম অর্ধেক টয়লেট আমাদের কম্পানি আর বাকী অর্ধেক ওই চত্বরের আর এক বিখ্যাত বিদেশী কম্পানি বানিয়ে দিয়েছে। আমার টয়লেট দেখার একেবারে ইচ্ছে ছিলনা, তবু ওদের কাঁচুমাচু মুখ দেখে বাইরে এসে উঠোনের একধারে সারি সারি টয়লেট দেখতে গেলাম। আমাকে সেদিকে যেতে দেখে এইচ আর আর্তনাদ করে উঠল, “ম্যাডাম, ওদিকে কিছু নেই, ওদিকে যাচ্ছেন ক্যানো, ওদিকে যাবেন না। এই আপনারা ম্যাডামকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন!” পরে শুনেছিলাম এইচ আর ব্যাপারটা জানত, মহিলাদের টয়লেট নিয়ে ক্ষোভের কারণ, কিন্তু তারা এসবে পাত্তা দেয় নি। আমাদের যতগুলো তৈরি করার কথা ছিল, তা করে, স্কুল কে হ্যান্ডওভার হয়ে গেছে, আবার এসব নিয়ে মাথাখারাপ করবে কেন। যুক্তিও আছে, টয়লেট তৈরি সরকারের হয়ে করে স্কুলকে দিয়ে দিয়েছে, এবার যা সমস্যা তা সরকারের স্কুলের দেখার কথা। যাক, এসব নিয়ে বিশদে এখানে বলার মত আর নেই কিছু।
    যা বুঝলাম টয়লেটের জন্য স্কুল চত্বরে একটি বড় উঠোনের মত জায়গার এক দিকে খালি একফালি খালি জমি বাছা হয়েছিল। এদিকে হিসেবনিকেশ হয়ে কোথায় কতগুলি টয়লেট হবে সেটা সরকারের বেঁধে দেওয়া, কম্পানিদের তাতে হাত ছিলনা। তাদের শুধু কাজ গুণেগেঁথে সারা দেশে কুড়ি হাজার, তিরিশ হাজার যা তাদের ভাগে পড়েছে তা শেষ হয়েছে কিনা হিসেব মিলিয়ে দেওয়া। সেইসময় শুনেছিলাম কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজে সরাসরি সব প্রজেক্টের ও অফিসের ইউনিট হেডেদের সাথে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ রাখত প্রতিদিন টয়লেটের হিসেব নিতে!
    দেখতে গিয়ে দেখি এক একটা ঘুপচি ফালির মত সারি সারি অনেকগুলো টয়লেট। ভেতরে ঢুকলে দরজা না খুললে ঘোরা যায়না, এতটাই কম জায়গা ভেতরে। তায় দরজার ওপর খোলা, নীচে খোলা।
    “বলুন ম্যাডাম, মেয়েরা কী করে এই টয়লেট ব্যাবহার করে, চতুর্দিকে লোকজন, ছেলেমেয়ে, টিচার, তাদের চোখের সামনে ওরা স্কুলের টয়লেট ইউজ করতে চায়না। তেমন জরুরী দরকার হলে বাড়ি যেতে চায়। ক্লাসের মাঝে বাড়ি যেতে দিতে হয়।” আমি যা দেখলাম তাতে শুধু মেয়েরা কেন একটু লম্বা চওড়া ছেলেরও অসুবিধে হবে।আসলে তো আর স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সুবিধের জন্যে টয়লেট বানানো হয়নি, হয়েছে গুনতির হিসাব ঠিক করতে আর কীর্তি স্থাপনা করতে!

    এর পরে ২০২২ নাগাদ পাটনা থাকাকালীন আমি বিহারের অনেক জায়গায় এমনকি ফাঁকা মাঠেও দেখেছিলাম টয়লেটের নামে ওই একইরকম সারি সারি ঘুপচি ফালি, শুধু দেওয়াল দাঁড়িয়ে, দরজা জানালা আদতে ছিলনা না কী চুরি করে নিয়ে গেছে কে জানে, টয়লেট পুরো মাটি ভরে বুজে গেছে, শুধু পা রাখার জায়গা দেখে বোঝা যায় যে এরাও সম্ভবত খাতার গুণতিতে আছে!              
    এসব সমস্যা শুধু যে হরিয়াণা বা বিহার ইউপি তে হয়েছে, এই স্কুলে পানীয় জল, বা লাইটের অভাব, স্বচ্ছ ভারতের প্রহসন ও টয়লেট সমস্যা বিশেষ করে মেয়েদের, পশ্চিমবঙ্গে এসব যে নেই তা কিন্তু মোটেও নয়। আমার স্বল্প অভিজ্ঞতায় এরকম বা অন্য আরো সমস্যা এখানকার সরকারী স্কুল, প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলগুলিতেও আছে। ব্যক্তিগত কারণে আমাকে এমন একটি জায়গায় যেতে হয় যার আশেপাশে সব গ্রাম। সেখানেও স্কুলে সুযোগ সুবিধার মান এমন কিছু ঠিকঠাক নেই, যেরকম শুনেছি। এখন তো আবার সেখানে অন্য নাটক চলছে, হালের গণ্ডগোলের ফলে শিক্ষক সংখ্যা চব্বিশ থেকে তিনে নেমে এসেছিল, সম্ভবত এর কথা একবার নিউজ চ্যানেলেও উল্লেখ করেছিল।

    আমার বন্ধুরা দু একজন পুরুলিয়ার ওদিকে আদিবাসী গ্রামগুলোতে কাজ করছে বেশ কয়েক বছর ধরে। অনেক জায়গায় স্কুলই নেই, গ্রাম কে গ্রাম কেউ পড়তেই জানেনা তার ফলে সরকারি সাহায্য প্রকল্পের কথা জানেই না।বন্ধুদের ছাত্রছাত্রী, কলেজের ছেলেমেয়েরা যারা এ কাজে জড়িত তারা পালা করে গিয়ে গিয়ে ওদের দরকারী কাগজপত্র বানিয়ে, সরকারী ভাতা ইত্যাদি ক্লেম করতে সাহায্য করে। এক জায়গায় একটা স্কুল খুলেছিল, কিন্তু চালাতে পারে নি। ছেলেমেয়েদের পড়ানোর দরকার ব্যাপারটাই ওরা বুঝতে পারে না, তাই দু এক দিন প্রথমে পাঠিয়ে পরে আর স্কুলে পাঠাতে চায় না। এখন গ্রামে কোনো মেধাবী বাচ্চা বুঝতে পারলে, বুঝিয়ে শুনিয়ে এরা চেষ্টা করে কোথাও বোর্ডিং বা আশ্রম স্কুল যে দু একটা আছে আদিবাসী বাচ্চাদের জন্যে সেখানে পাঠিয়ে দেওয়ার। আমার বন্ধু বলছিল, “এক একটা গ্রাম এমন আছে যেখানে একজনও পঞ্চাশ বছরের ওপর বাঁচে নি আজ পর্যন্ত”!
       
    ইউপি, বিহারের এইসব স্থানীয় অনামী রিপোর্টাররা, কোথাও কোথাও স্থানীয় ছোট কাগজের লোক, যাকে বলে লোক্যাল মিডিয়া, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই কঠিন সময়ে যা করছে তা সত্যিই অতুলনীয়। বিহারের প্রত্যেকটি ভাঙ্গা ব্রিজ, এমনকি বিখ্যাত সেই চুরি যাওয়া দু কিলোমিটার রাস্তার কথা সর্বসমক্ষে তারাই এনেছে প্রথম। সেই তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে তথাকথিত প্রগতিশীল বুদ্ধিধারী লোকেদের রাজ্যে বেশীরভাগ লোকে ইউটিউবে ট্র্যাভেল নয়ত ফুড ব্লগিং করে। পলিটিকস, প্রশাসন ও রাজ্যের বা দেশের অবস্থা নিয়ে যারা কথা বলে তাদের মধ্যে বেশীরভাগই বায়াসড অথবা প্রকাশ্যে কোনো দলের সমর্থক, হয় এদিক নয় ওদিক কিম্বা সেদিক। এরা মূলত নানা নিউজ, প্রিন্ট বা টেলিভিশন, এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ার হেডলাইনের ওপর আলোচনা করে, নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে খবর করেনা। অবশ্য এটাও একরকম জরুরী কিন্তু এদের অনেকেরই ব্যক্তিগত বায়াস আলোচনায় খুব খোলাখুলি বা কখনো চাপাভাবে এসেই যায় এবং সম্ভবত অডিয়েন্সও সেরকম, কেউ সত্যি খবর শুনতে বা দেশের অবস্থা জানতে এদের চ্যানেল দেখে না। দু একজন যারা মাঝেসাঝে গ্রাউন্ড রিপোরটিং যদিও বা করে তারা খুব বিশ্বস্তভাবে মেনস্ট্রীমকে কাউন্টার করে কিছু করেনা, কেমন যেন মনে হয় স্পষ্ট এজেন্ডা নিয়ে রিপোর্ট করছে। মনে হয় যেন কখনোসখনো এই যেমন ইলেকশনের সময় বা খুব বড় কোনো ইস্যু হয়ে কোথাও ইমেজ বিল্ডিংয়ের দরকার পড়লে আশীর্বাদ টাশীরবাদ নিয়ে নেমে পড়ল আর কী! এরা একটু সাহসী হলে আমাদেরও কী আর একটা আধটা রাস্তা চুরি বা পুল চুরি জানা যেত না, আমাদের রাজ্যে কি সে ট্যালেন্ট (মানে অভিনব চুরির) নেই?

    দিল্লির প্রতিবাদে শুনছিলাম একজন এলিট প্রতিবাদীনি মিহিস্বরে বলছেন তিনি আদ্যোপান্ত দিল্লির মেয়ে, জনম করম সব সেখানে। সম্প্রতি লন্ডন সফর থেকে ফিরে তিনি অনুভব করলেন আসলে দিল্লির হাওয়া কতটা খারাপ, এবং তার দুই মেয়ে এর ফলে ভবিষ্যতে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে এই ভেবে তিনি প্রোটেস্টে এসেছেন।তার মানে?লন্ডনে না গেলে উনি বুঝতেই পারতেন না যে দিল্লির হাওয়া খারাপ? আর এত বছরে এই প্রথম শীতের শুরুর পল্যুশন দেখলেন?

    অবশ্য উনি বলছিলেন যে ওনার বেড়ে ওঠা কালে এরকমটা দেখেননি, এত খারাপ অবস্থা, যেটা ওনার আশংকা ওনার মেয়েদের দিল্লিতে থাকলে দেখতে হবে। তবে এটাও ঠিক যে এবারের হাওয়ায় দূষণ আগের বছরগুলোর থেকে অনেক বেশী, অথচ যা কেন্দ্রে লোকে প্রথম দিকে গাইছিল পাঞ্জাবের স্টাবল বারনিং এর কারণ বলে, তা মিথ্যে প্রমাণিত হয়ে গেছে, পাঞ্জাবে স্টাবল বারনিং এবারে নব্বই পারসেন্টের ওপর কম হয়েছে। আসল কারণ অবশ্যই হল যে দেওয়ালীতে দিল্লিতে এবারে অন্যান্য বছরের তুলনায় বাজি অনেক বেশী পোড়ানো হয়েছে, গ্রীন ইকো বাজির নাম করে। প্যাকেট সবুজ করে দিলেই বাজি গ্রীণ হয়না, সে যদি সবাই বুঝত তাহলে হয়ত আমাদের দেশের চেহারা অন্য রকম হলেও হতে পারত। তাছাড়া সরকারের প্রথম বছর, ভক্তদের আনন্দ উল্লাস বেশী ছিল তাই প্রশাসনও দিলদরিয়া, এবং তার সাথে আরো কারণ হিসেবে ছিল এক্সে ধ্রুব রাঠীর বারণ, ও ফলস্বরূপ ভক্ত ভগবান যে যেখানে সবার কালিদাস মোডে চলে যাওয়া......... বুমমমম!

    তবে এরকম প্রতিবাদে বা আজকের দিনে আমাদের দেশে সিভিল সোস্যাইটির প্রতিবাদে যাকে হিন্দিতে বলে “ঘন্টা ফারাক” পড়ে শাসকদের, কিস্যু হয় না। এই প্রতিবাদও ছিল খানিকটা আংশিক অভয়া প্রোটেস্ট টাইপ, যারা যুদ্ধং দেহি, যার বেশীরভাগ ছাত্রছাত্রীর দল, তারা যুক্তি দিয়ে ডাটা দিয়ে বক্তব্য রাখছিল। কিন্তু তাদেরকে তো দু মিনিটে লেফট বলে উড়িয়ে দেবে লোকে। সম্প্রতি আবার নতুন কমবো নেমেছে বাজারে, মাওবাদী ও মুলি, মিলে নাকি হাঁসজারু লেফট হয়েছে, প্রাইম ইনফ্লুয়েন্সার বাণী দিয়েছেন। যারা বাকী রইল তাদের আর কিছুই করতে হবে না কারণ তারা একেবারে আদুরে অভিমান টাইপস ব্যাপার, মুখে বলছে, “আমরাই তো তোমাদের ভোট দিয়ে আনলাম, আগের সরকার কিছু করেনি বলে।তোমরা একটু আধটু যুদ্ধ যুদ্ধও তো করছ না, এমারজেন্সী ডিক্লেয়ার করলেও আমরা রাস্তায় নামতাম না।“ যা বুঝলাম, আপ এর ওই একিউআই মনিটরের আশেপাশে জল ছিটিয়ে ডাটা গোল করার ভিডিও দেখেই এলিট ভক্ত সব দিল্লিবাসীর অটুট বিশ্বাস চিড় খেয়েছে, তারই এক আধ মাত্রার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে।

    এদের নিয়ে সত্যি কিছু বলার নেই। শুধু এখনো মাঝে মাঝে হৃদয়ের কোনো এক কোণে খিঁচ লাগে, যখন এই প্রতিবাদের মাঝে শুনি একজন ডেলি ওয়েজারকে সাংবাদিক প্রশ্ন করতে সে জানায় আজ রোজগার বন্ধ রেখে এসেছে প্রতিবাদে, অনেক আশা নিয়ে, জলের আশা।

    “হাওয়া তো আমরা সারা বছরই খারাপ পাই, আমাদের বাইরে কাজ করতে হয়, হাওয়া থেকে বাঁচি কী করে। এখানে স্বচ্ছ জলের দাবী করা হচ্ছে আরো সেই কারণে এলাম, সে নাকি আমাদের অধিকার। জল কিনে খেতে হয়, অনেক খরচা হয়ে যায়। এই প্রতিবাদের ফলে জল যদি স্বচ্ছ হয় তাহলে আর জল কিনে খেতে হয় না।“
     
    বিশ্বাসে মিলায় কৃষ্ণ........
    শুধু জল মেলে না !!!!!! 

    ( চলতেই থাকবে )
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • প্রবন্ধ | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ | ৫৯ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    বাদামি - %%
    আরও পড়ুন
    পত্তাদকাল - %%
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অরিন | ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:২১736551
  • তারপর ভূগর্ভস্থ জলও তে বিশেষ সুবিধের নয় আপনাদের

    https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/36892698/

    "Nitrate and fluoride concentrations ranged from 0.24 to 380.19 mg/l and 0.05 to 7.90 mg/l, respectively due to fertilizer use, wastewater infiltration and geogenic processes. The health risks from high levels of nitrate and fluoride were calculated for males, females, and children. It was found that health risk from nitrate is more than fluoride in the study region. However, the spatial extent of risk from fluoride is more indicating that more people suffer from fluoride pollution in the study area. The total hazard index for children was found to be more than adults"

    বহু বছর আগে আমরা ঝাড়খণ্ডের রোরো পাহাড়ে দেখেছিলাম মহিলারা Asbestos এর ডাস্ট নিয়ে টিপ পরছে।  জায়গাটা জুড়ে বহু মানুষের বুকের রোগ, স্থানীয় ডাক্তারবাবু হাহা করে হাসছিলেন। লেখাটা পড়ে দেখতে পারেন 

    https://www.tandfonline.com/doi/pdf/10.1179/oeh.2003.9.3.254
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক প্রতিক্রিয়া দিন