সম্প্রতি ভি-ডেমের রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতবর্ষ গণতন্ত্রের মার্গ থেকে বিচ্যুত হয়েছে। এমনকি ইআইইউ এর রিপোর্ট মোতাবেকও ভারতের র্যাঙ্কিং-এ পতন হয়েছে। ভি-ডেম ও ইআইইউ দেশের রাজনৈতিক অবস্থানগুলিকে সম্পূর্ণ গণতন্ত্র, ত্রুটিযুক্ত গণতন্ত্র, হাইব্রিড শাসন ব্যবস্থা, স্বৈরাচারী শাসন এবং বদ্ধ স্বৈরতন্ত্র, নির্বাচনী স্বৈরতন্ত্র, নির্বাচনী গণতন্ত্র, উদার গণতন্ত্র ইত্যাদি নানা পন্থায় ভাগ করেছে। সেই অনুযায়ী ২০০৬ সাল থেকে ২০২০ অব্দি এই তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখলে বোঝা যায় যে, ২০১৪ সালে ভারত গণতন্ত্র হিসেবে সবচেয়ে উচ্চতম স্থানে অবস্থান করেছিল। তারপর থেকে আজ অব্দি সেখানে কেবলই অধঃপতন দেখা গেছে। আজ তাই দেশের মধ্যে ফ্যাসিবাদ ও একনায়কতন্ত্রের উত্থান নিয়ে প্রভূত আলোচনা চলছে। একইসঙ্গে গণতন্ত্ররক্ষার জন্য নানাবিধ আন্দোলনও দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ঐতিহাসিক দলিল-দস্তাবেজ অনুযায়ী বিচার করলে একথা কি বলা যায় যে ভারতবর্ষ আগে গণতান্ত্রিক ছিল, এখন আর থাকছে না? রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতে প্রায় সবসময়েই ভঙ্গুর প্রকৃতির গণতন্ত্র দেখা গেছে। যদি আরও অতীতে ফিরে যাওয়া যায় তবে, আর্যদের ভারত আগমণের মধ্যে দিয়ে যে দখলদারির ইতিহাস শুরু হয়েছিল ব্রিটিশ শাসনের অবসানে সেই ঔপনিবেশিকতাবাদে ইতি টানা হয় ঠিকই কিন্তু তার অব্যবহিত পরেও ভারতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। কেননা, ভারতবর্ষের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর কুরশির সতেরোটা বছর তো প্রায় বিরোধী-শূণ্যই ছিল। সিপিআই(পরবর্তীকালে যা ভেঙে যায়) ছাড়া প্রায় অন্য কোনও দল তখন সেভাবে ছিল না। এমনকি ইন্দিরা গান্ধীর প্রথম বারো বছরের রাজত্বকালে ইমারজেন্সীর মধ্যে দিয়ে বিরোধী কন্ঠস্বরকে অবদমন করার যে প্রয়াস তাকেও গণতান্ত্রিকতা বলে চিহ্নিত করা যায় না। সুতরাং, একথা মেনে নিতেই হবে যে, ভারতবর্ষের শাসনব্যবস্থার মুখোশ হিসেবে চিরকাল নির্বাচনী গণতন্ত্র থাকলেও তার মুখ প্রকৃতপক্ষে এক-দল রাজনৈতিকিকরণের দিকেই। আজও দেশের অন্যতম বিরোধী দল কংগ্রেস গান্ধী পরিবার ছাড়া নিজেদের নেতৃত্ব নির্দিষ্ট করতে সক্ষম হয়নি। কিন্তু এই আধা-গণতান্ত্রিক ও আধা-একনায়কতন্ত্রের দায় কি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলের ওপরে বর্তাবে নাকি জনসাধারণকেও এর ভাগ বইতে হবে?
আসলে প্রকৃত গণতন্ত্রে নেতা নয় গণ’ই হল প্রধান। তাই নেতাকে শুধু নয়, গণ’কেও অর্জন করতে হয় সচেতন শৃঙ্খলা, ন্যায়পরায়ণতা, দৃঢ়তা, পরমতসহিষ্ণুতা ও সততার আঙ্গিক। ‘আমি রাজনীতি বুঝি না’, ‘ওসবে আমার আগ্রহ নেই’, ’রাজনীতি নোংরা কাদা’ ইত্যাদি মনোভাব কেবলমাত্র একধারার পলায়নবাদকে সমর্থন করে, তার দ্বারা মহান ও বৃহৎ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না। অথচ স্বাধীনতা-উত্তর ভারতবর্ষে আমজনতার একমাত্র অনুযোগ হল, আমাদের দেশে এমন কোনও মহান নেতা নেই যিনি মসনদে আসীন হওয়া মাত্রই দেশ থেকে মূল্যবৃদ্ধি ও দুর্নীতি অবলুপ্ত হবে, চাকরির সুযোগ ও রোজগার বৃদ্ধি হবে এবং সর্বোপরি নারী-স্বাধীনতা ও বাক-স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে। আর এইভাবেই জনগণের হাত গুটিয়ে বসে থাকার পরেও সমাজজীবনে নেমে আসবে সুখ, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার ছত্রছায়া। জনমনের এই যে অবস্থান অর্থাৎ একজন নেতার আবির্ভাবের প্রতি আকাঙ্ক্ষা ও ব্যাকুলতা, সেটাই আজ পুষ্ট করেছে ‘রামরাজত্ব’-এর ধারণাকে ও একইসঙ্গে জন্ম দিয়েছে প্রকৃত একনায়কতন্ত্রের প্রথম সোপানটিকে। তবুও, জনকল্যানকামী অন্তত একজন নেতার আবির্ভাবের এই প্রত্যাশার অপ্রাপ্তি নাগরিকমনে যতই হতাশার মহীরুহ স্থাপন করে থাকুক না কেন, আজও তা মানুষকে আশাহীন করতে পারেনি। তাই মানুষের চাহিদা অনুযায়ী আজ এমনই একজন নেতার আবির্ভাব হয়েছে কিন্তু তা গণ’র চরিত্রের থেকে আলাদা হয়ে গিয়ে জনকল্যানকামী রাষ্ট্রের উদ্গাতা হয়ে উঠতে পারেনি। ভারতবর্ষে পিতৃতান্ত্রিক পরিবারবাদের মধ্যেও এই অগণতান্ত্রিকতার সমর্থন ব্যক্ত। বাবা ও ঠাকুরদার মতামতের গুরুত্ব আজও এই দেশে যথেষ্ট অর্থাৎ তিনিই হলেন পরিবারের পালনকারী ও রক্ষাকর্তা, সমগ্র পরিবারের নির্ভরশীলতার স্থানও তিনিই। সমভাবে দেশের ক্ষেত্রেও তাই জনগণ এমনই একজন পিতৃরূপী নেতার (নেত্রী হলে দেশের একমাত্র ‘মহিলা’ মুখ্যমন্ত্রী বলে ব্যতিক্রমের দরজা দেওয়া হয়) প্রত্যশা করে থাকে। ফলে যতদিন না দেশের জনমন থেকে পিতৃতান্ত্রিক রামরাজত্বের ধারণা ফিকে হবে ততদিন দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয়। ফলে আজ গণতন্ত্র থাকছে না বলে হাহাকার করা নিরর্থক, কেননা গণতন্ত্র কোনকালে ছিলই না।
তবুও রাজীব গান্ধীর যুগ থেকে দেশে বহু-দল রাজনীতির আবহ সৃষ্টি হয়েছিল, একথা অনস্বীকার্য। আর তারপরেই কংগ্রেসের প্রধানতম বিরোধী দল হিসেবে ভারতীয় জনতা দলের উত্থান। সেই থেকে আজকের ক্ষমতাসীন শাসক দল হিসেবে তাদের প্রতিষ্ঠা ভারতের রাজনৈতিক আকাশে অন্য অবস্থানের মেঘ এঁকেছে। এই দ্বন্দ্বমূলক অবস্থান থেকে মানুষ ধীরে ধীরে গণতন্ত্রের ছবি সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে। কিন্তু সে তো একদিনে স্পষ্ট হবার নয়। আজ দেশজুড়ে যেরকমভাবে ধর্মের জিগির, বিরোধী দলের শূণ্যকুম্ভ ঢক্কানিনাদ, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাহরণ, কেন্দ্রিয় সংস্থাগুলির অপব্যবহার ও বহুস্বপ্ন লালিত নায়কোচিত এক বিরাট নেতার ‘ধর কোদাল কাট মাটি’-সুলভ সিদ্ধান্তগ্রহণের প্রতি গণহিস্টেরিয়া প্রসারিত, তাতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত যে কোনটা গুরুত্বপূর্ণ, পেট্রোল-গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি নাকি রামমন্দির, পিএসইউ বিক্রি নাকি ৩৭০, জিডিপি হ্রাস নাকি পাকিস্তান, কর্মসংস্থান সংকোচন নাকি চিন! আর এখানেই তার বৃহৎ আন্দোলনে আশ্রয়গ্রহণ ছাড়া উপায়ন্তর নেই। একথাও সত্য যে গৃহযুদ্ধ ব্যতীত প্রায় কোনও দেশই সভ্যতর হয়ে উঠতে পারেনি, বিজেপিই কি তবে সেই ‘নেসেসারি ইভিল’- উত্তর জানা নেই। ভারতবর্ষের ক্ষেত্রে স্বাধীনতার পরে যে আধা-গণতন্ত্রের স্বাদ সাধারণ মানুষ এতদিন উপভোগ করেছে আজ বোধহয় সময় এসেছে তাকে বদলে দিয়ে উন্নততর গণতন্ত্রের আখ্যান রচনার। সেখানে দাঁড়িয়ে সাধের আধা-গণতন্ত্রের এই মৃত্যুজনিত দুর্দশার সাক্ষী না হয়ে উপায় নেই। তবে গণ-আন্দোলনের এই মন্থনে সম্পূর্ণ-একনায়কতন্ত্রের গরল যতই নিষ্কাষিত হোক, অমৃতের সন্ধান বন্ধ করলে হবে না। ভারতবর্ষের হতদরিদ্র শ্রেণি থেকে বহু ধনী মানুষের অন্তরে গণতন্ত্রের যে অর্থ প্রতিষ্ঠিত তা হল ভোটাধিকার, সেই বৃত্তকেই আজ অতিক্রম করতে হবে।
বুঝতে হবে যে, দেশে আজ একইসঙ্গে জাতীয় ও জাতীয়তাবাদী পুঁজির জন্ম হয়েছে এবং তা একচেটিয়া ক্ষমতা দখলের পক্ষপাতী। এটাই এখন স্বৈরতন্ত্রের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। আসলে এই যুগ পুঁজির একচেটিয়াকরণের দিকে ধাবমান। সেখানে মুষ্টিমেয়র হাতে পুঁজি যত সঞ্চিত হচ্ছে, গণতন্ত্রের পরিসর ততই সংকুচিত হচ্ছে। তাই এখন পুরোনো ঐতিহাসিক কায়দায় নয়, সংসদীয় রাজনীতির ঠাটবাটের অন্তরালে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে ফ্যাসিবাদ। হিটলার, মুসোলিনি, আইয়ুব খান, কিম, আল আসাদ, ফতে আল সিসি, আয়াতুল্লাহ, সাদ্দাম হুসেন, গদ্দাফি ইত্যাদি বহু ধরণের শাসকের অবস্থান এই পৃথিবীর ইতিহাস দেখেছে। এখন সেসব ধাঁচে আর কিছুই হবার নয়। ফলে এক নতুন আঙ্গিকের ফ্যাসিবাদের উত্থান আজ সম্ভব হয়েছে। একে পরাজিত করতে তাই নতুন উপায়ের সন্ধান করতে হবে। তারও আগে যেটা ভাববার বিষয় তা হল, যাদের বিরুদ্ধে আজ এত অভিযোগ অর্থাৎ বিজেপি সরকার, তারা ক্ষমতায় এল কীভাবে?
প্রকৃতপ্রস্তাবে বর্তমানের বিজেপি হল ভারতীয় জনমনের প্রকৃত প্রতিফলন। এই সরকার দেশের উদার-গণতন্ত্রের মুখোশ ছিঁড়ে ফেলে জনগণকে একেবারে তার উলঙ্গ প্রতিলিপির সামনে সটান দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। বিজেপি দেশকে একটি বাইনারির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। একদিকে তারা যোগী, সাক্ষী মহারাজ, অমিত শাহ, প্রজ্ঞা ঠাকুর, তাজিন্দর সিং বগগার মত নেতাদের ঋণাত্মক বক্তব্যকে সামনে রেখেছে ও অন্যদিকে মোদী, শিবরাজ সিং চৌহান, ফড়নবিশ ইত্যাদিজনের ধনাত্মক উন্নয়নশীল বক্তব্যকেও প্রতিষ্ঠিত করেছে। একদল গডসের পক্ষে কথা বলেছে, তো মোদিজি সেখানে গান্ধীজির জয়গান গেয়েছেন। এই যে দ্বৈতসত্তার মধ্যে অবস্থানযাপন, এটা ভারতীয় মনকে দ্বিধাবিভক্ত করেছে। জয়রাম আর প্রভু এ প্রসঙ্গে বিজেপির ক্ষমতা দখলের পদ্ধতিকে তিনটি বিভাগে বিভক্ত করে দেখিয়েছেন যে কীভাবে বিজেপি দেশে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, তিনি লিখেছেন যে,
বিজেপির টার্গেট
oভারতবর্ষের বিবিধতাকে মান্যতা দেওয়া ও একইসঙ্গে বিভক্তিকরণের রাজনীতির প্রচলন।
oজনমনের রক্ষনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে পুরাতন ঐতিহ্য ও ধর্মীয় মনোভঙ্গীকে জাগিয়ে তোলা।
oভোট ব্যাঙ্কের বিভক্তিকরণ – একদিকে জাতপাতের ভিত্তিতে ও অন্যদিকে ধর্মসম্প্রদায়ের ভিত্তিতে।
oসংবাদের বিনির্মান, আবেগের প্রতিনির্মাণ ও সামাজিক মাধ্যমগুলিতে প্রচুর বিনিয়োগের মধ্যে দিয়ে জনমনের চাহিদানুযায়ী প্রজ্ঞাপন চালিয়ে যাওয়া।
oবিরোধীহীন দেশ সৃষ্টি।
বিজেপির সাফল্য
oবিরোধীশূণ্য একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রতিষ্ঠা যার দ্বারা বিনা বাধায় যেকোনো সিদ্ধান্তের প্রস্তাবকে পাস করিয়ে নেওয়ার অধিকার অর্জন।
oনারসিসিজম বা আত্মমগ্নতাকে ধনাত্মক আঙ্গিকরূপে প্রতিষ্ঠা করা।
oসুসংগঠিত দলীয় গঠনতন্ত্র নির্মাণ।
oনির্বাচন নামক আখ্যানের খোলনলচে বদলে দেওয়া।
oইস্তেহার অনুযায়ী ৩৭০ধারা অবলুপ্তিকরণ, তিন-তালাককে অপরাধের তকমাদান, রামমন্দির প্রতিষ্ঠা, এনআরসির প্রতিশ্রুতিরক্ষা।
oএমপি ও এমএলএ কেনাবেচার সুসফল পদ্ধতিতন্ত্র আবিষ্কার।
বিরোধীদের ব্যর্থতা
oদলীয় বিচ্ছিন্নতা
oবর্তমানের দুর্বলতম কংগ্রেস ব্যতীত অন্য কোনও জাতীয় দলের অভ্যুত্থান না হওয়া।
oআঞ্চলিকতার প্রাধান্যকেই যথেষ্ট মনে করা, যেমন- বাংলায় তৃণমূল, উত্তরপ্রদেশের সপা-বিএসপি, কেরালায় সিপিআইএম ইত্যাদি সকলেই নিজেদের রাজ্যে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারলেই নিশ্চিন্ত যেন।
oমোদির বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ মুখ নির্মাণ করতে না পারা।
oবিরোধীতার বিষয়কে গণ-আন্দোলনে রূপান্তরে ব্যর্থতা।
oজনগণের সঙ্গে সংযোগহীনতা।
এমতাবস্থায় দেশের জনমনে, যেখানে গণতন্ত্রের নমনীয় অবস্থান থেকে একনায়কতন্ত্রের অনমনীয় অবস্থানের প্রভাব সর্বাধিক, সেখানে সমস্যা হল মানুষকে জীবনের এই দ্বন্দ্বমূলক অবস্থান বিষয়ে সচেতন করে তোলা। যেখানে সে ভাবছে এরপরে আদৌ কি পুরোনো অবস্থানে ফিরে যাওয়া যায়, নাকি যা হচ্ছে এটাকে মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই, নতুবা নতুন করে আরেকবার উন্নততর গণতন্ত্রের জন্য গণ-আন্দোলনের ভিতরচনার কাজে হাত লাগানো উচিৎ, সেখানে তাকে স্বপ্ন দেখার মনোবল ফিরিয়ে দেওয়া। আজ সে পথেই যেন উত্তরভারতজুড়ে কৃষক আন্দোলন শুরু হয়েছে, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দেখা যাচ্ছে, পঞ্জাবে মিউনিসিপ্যাল নির্বাচনে কংগ্রেসের জয়ের হিড়িক, অন্ধ্রে পৌরসভায় বিজেপির আসন না পাওয়া, মন কি বাতের অপছন্দের সংখ্যা বৃদ্ধি ইত্যাদি ঘটছে । অন্যদিকে বাংলায় বিজেপির উত্থানের নানা কাহিনী যেমন সমানে তাল ঠুকছে যাকে একা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া কেউই যেন টেক্কা দিতে পারছে না, সেখানেই আজ দলমত নির্বিশেষে মানুষকে অবস্থান নির্ণয় করতে হবে। এখন শুধু দেখার অপেক্ষা যে, ভারতের ভাগ্যাকাশে কোনদিকে সূর্য ওঠে – ডিস্টোপিয়ার, ইউটোপিয়ার নাকি মধ্যবর্তী কোনও নতুন অবস্থানে।
তথ্যসূত্রঃ
1.https://www.bbc.com/news/world-asia-india-56393944
2.https://medium.com/journal-of-knowledge/indias-love-for-dictatorship-and-why-bjp-will-continue-its-success-207a1810ab1
3.https://www.project-syndicate.org/commentary/modi-hundred-days-democracy-by-shashi-tharoor-2019-09?barrier=accesspaylog
চাইবো শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য সুরক্ষা, শিক্ষান্তে সুনিশ্চিত কাজের অধিকার যা কেবল সমাজতান্ত্রিক পরিকাঠামো তেই সম্ভব, অথচ, দেশের মানুষ যাদের জনগণ বলে অভিহিত করা হয়েছে তারা মানবেন্দ্রনাথ রায়, ভগৎ সিং এর সোসালিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি, সুভাষচন্দ্র বসু র বিশ্বযুদ্ধের আবহে সামরিক অভ্যুত্থান, বামপন্থার সশস্ত্র বিপ্লব বা জনগণতান্ত্রিক বিপ্লবের তত্ত্ব কে সমর্থন না করে বুর্জোয়া গণতন্ত্রের নিবার্চনের সুযোগেও বামশক্তিকে শক্তিশালী বিপক্ষের আসনে প্রতিষ্ঠিত করা থেকে উদাসীন থেকেছে। এই লেখকের তাত্ত্বিক স্বমাজ ও
জ্ঞান বিশ্লেষণ করে আত্মপ্রসাদ ও আত্মপ্রচার কে হাতিয়ার করেছে। আমরা ভিয়েতনাম এর মত বাইসাইকেল চালিয়ে পেট্রোল ডিজেল জ্বালানী সঞ্চয় করতে পারবো না, কিউবার মত কৃষি ভিত্তিক সরল জীবনযাপন করে হ চি মিনের জন্মদিন উপলক্ষ্যে ২ঘন্টা অতিরিক্ত স্বেচ্ছাশ্রম দান ক
কে গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব বলে অভিহিত করবো , পড়শী তো ছেড়েই দিলাম সহোদর ভ্রাতা পরিবারের আর্থিক সঙ্কটে পাশে দাঁড়ানোর বিষয়েও উদাসীন থাকবো। এই আত্মসর্বস্ব সমাজে একনায়ত্ব ধর্ম নামক আফিং সর্বস্বত্ব গ্রাস করবেই করবে, কোনো শা .... ঠেকাতে পারবে না, আত্মসর্বস্ব বুদ্ধিজীবী রা তো নয় ই
হিটলারের জুজু দেখিয়ে কি হবে, হিটলার আমাদের মানসিকতায় , রক্তে, অভ্যাসে
সন্দীপবাবু আপনি আমার লেখাতে সময় ব্যয় করে যে মন্তব্য করেছেন সে-জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই । আজও অনেকের মনে কিছু সংশয় রয়েই গেছে , আমারও
আশা করি একদিন নিশ্চয় আবার সব সমাজতান্ত্রিক পরিকাঠামোতে সম্ভব হবে তার আগে পরিকাঠামোটি তো নিজে সম্ভব হয়ে উঠুক তারপরে না'হয় সম্ভবনাময় হবে উঠবে।
একটা কথা এখানে বলার থাকে। আপনি আমার সাথে একমত হতেও পারেন নাও হতে পারেন, ভালোও লাগতে পারে , খারাপও লাগতে পারে কিন্তু সত্যিটা হলো ভারতের সব মানুষ এখনও ভোটাধিকার পাওয়ার যোগ্য নন। আমি কাউকে ছোটো করতে চাইছি না কিন্তু প্রত্যেকে এখনো ভোট নামক গুরুভারটির সঠিক মূল্য তো বোঝেন ই না তা প্রয়োগ করা তো পরের কথা। যে মানুষ নিজেই অপরের প্রতি সহনশীল নয়, সে বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবেও দেখে না কোনদিন সে সবদিক বুঝে ভোট দেবে এটা মানতে হবে ? ভারতে সব জায়গায় গণতন্ত্রের পরিবেশ ই নেই। এখনো ভয়ের সামন্ততন্ত্র চলছে।
কিন্তু এথেন্সও তো সেরকম ভাবত! সেই মডেলটাই গ্রহনযোগ্য বলছেন?
এই যেমন আমার বউ ও আমার সম্পর্কে এরকমই ভাবে! সেটা কি ঠিক?
আপনি তাহলে বন্দুক দেখিয়ে গ্রাম কে গ্রাম ভোট লুঠ করার এই সিস্টেম টাকে গণতন্ত্র বলছেন। তাহলে বলবো এথেন্স এর সিস্টেম অন্তত এর থেকে বেটার ছিল। এথেন্স এর কথা যদিও আমি তুলিনি।
এক ভোটার আমাকে বললো সে ভোট দিতে গিয়ে নাকি নিচের দিক দেখে এক নির্দল বা অচেনা দলের প্রার্থী কে ভোট দিয়ে এসেছে। আমি বললাম সে কি , কেন ? উনি খুব কাজের মানুষ বুঝি ? সে জানাল তা আমি দেখলাম একে তেমন কেউ ভোট দেবে না, এই বোতাম টায় হাত দিলে করোনা ভাইরাস থাকার চান্স কম। তো আমার আর কিছু বলার নেই।
হিটলারের যুদ্ধ করার সাহস ছিলো। আমাদের হিটালারদের মুখে বিষ্টা ঘষে দিলেও যুদ্ধ করবে না।
রমিত বাবু,
আপনি যখনই একটা কিছু criteria দেবেন ভোটাধিকার এর জন্য, সেটাকে misuse করবে শাসক। একমাত্র উপায় প্রতিটি মানুষকে যথার্থ শিক্ষিত করে তোলা, logically চিন্তা যাতে করতে পারে (সেটার বড়ই অভাব বলা বাহুল্য)। সেরকম শিক্ষা সাধারণ মানুষকে কোনোদিন এই সমাজব্যবস্থা দিতে চাইবে না।
আমরা হিটলারের বুকের উপর বসে হিটলারের গোঁফ উপড়ে ফেলব।
এখনো যারা এদেশে গণতন্ত্র নামক বস্তু টি আছে বলে মনে করে তাদের শত কোটি প্রণাম করি তাদের অসীম স্বপ্ন বিশ্বাস এবং আশার মনোভাবের জন্য !!ওই গণতন্ত্র নামক বস্তু টা অদৌ নেই , থাকলেও আছে কতিপয় কর্পোরেট , ক্ষমতা ভোগী বাঞ্চোৎ কালোবাজারি কিছু লোক রাজনৈতিক ভাবে চরিত্র হীন নেতা এবং সেলেব্রিটি দের জন্য(( ক্রিকেটার এবং বলিউডি নৌটঙ্গী দের কথা হচ্ছে )) !!ওরাই ভোগ করছে গণতন্ত্রের মজা !!ভারত কোনো দিনও স্বাধীন রাষ্ট্র হয় নি , হয়েছিল কিছু কংগ্রেসি টুপী মাথায় থাকা লোক তাদের পোষ্য দের জন্যই !! যে চেহারা এখন দেখি ওই লোম্বা গণতন্ত্রের যেভাবে দিনের পর দিন ধর্ষিতা হচ্ছে গণতন্ত্র , এর পর ""গণতন্ত্র""""সুপ্রিম কোর্ট """ এসবে বিশ্বাস রাখা যায় না আর !!বাম ডান অতি বাম , মধ্য পন্থী মানবতা পন্থী সবাই আনন্দে কাপড় তুলে নেত্য করুক আপত্তি নেই , কিন্তু ওই বস্তু টা নেই !!সুতরাং ।...আম জনতা গুজবে কান দেবেন না !!!!!!
পশ্চিমবঙ্গের বাম শাসনের ক্ষেত্রেও প্রথম বিশ বছরও প্রায় বিরোধীশূন্যই ছিল বোধহয়। ফলে সেই সব সময়ে ভোটের হুজ্জুতিও কম হত। এখন সংযুক্ত মোর্চার সিপিএম এইসব প্রচার চালাচ্ছে আর প্রমাণ করতে চাইছে যে পাড়ায় পাড়ায় কত গণতান্ত্রিক পরিবেশ তখন ছিল। এখনও এদের ঔদ্ধত্য দেখলে তার রেশ বোঝা যায়।
তাই? বিরোধী শুন্য ছিলো?? নিচে ভোটের percentage গুলো দেখে নেবেন। কংগ্রেস আর বামেদের ভোট গায়ে গায়ে ছিলো।
https://www.ndtv.com/elections/previous-stats/state/west-bengal
ঔদ্ধত্য? হ্যাঁ কিছুটা ছিল তো বটেই। তিনোমুল 5 বছর থাকার পর যা ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে তার দশ ভাগের এক ভাগ দেখিয়েছে বাম, তাও টানা 20 বছর চালানোর পরে।
সত্যি আর কত ইতিহাসের নামে গপ্পো কথা লিখবেন। মানুষ তো দেখছি আপনাদের গপ্পো গুলোই এখন শুনছে। RIP logic
তাই? বিরোধী শুন্য ছিলো?? নিচে ভোটের percentage গুলো দেখে নেবেন। কংগ্রেস আর বামেদের ভোট গায়ে গায়ে ছিলো।
https://www.ndtv.com/elections/previous-stats/state/west-bengal
ঔদ্ধত্য? হ্যাঁ কিছুটা ছিল তো বটেই। তিনোমুল 5 বছর থাকার পর যা ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে তার দশ ভাগের এক ভাগ দেখিয়েছে বাম, তাও টানা 20 বছর চালানোর পরে।
সত্যি আর কত ইতিহাসের নামে গপ্পো কথা লিখবেন। মানুষ তো দেখছি আপনাদের গপ্পো গুলোই এখন শুনছে। RIP logic
তাই? বিরোধী শুন্য ছিলো?? নিচে ভোটের percentage গুলো দেখে নেবেন। কংগ্রেস আর বামেদের ভোট গায়ে গায়ে ছিলো।
https://www.ndtv.com/elections/previous-stats/state/west-bengal
ঔদ্ধত্য? হ্যাঁ কিছুটা ছিল তো বটেই। তিনোমুল 5 বছর থাকার পর যা ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে তার দশ ভাগের এক ভাগ দেখিয়েছে বাম, তাও টানা 20 বছর চালানোর পরে।
সত্যি আর কত ইতিহাসের নামে গপ্পো কথা লিখবেন। মানুষ তো দেখছি আপনাদের গপ্পো গুলোই এখন শুনছে। RIP logic
তাই? বিরোধী শুন্য ছিলো?? নিচে ভোটের percentage গুলো দেখে নেবেন। কংগ্রেস আর বামেদের ভোট গায়ে গায়ে ছিলো।
https://www.ndtv.com/elections/previous-stats/state/west-bengal
ঔদ্ধত্য? হ্যাঁ কিছুটা ছিল তো বটেই। তিনোমুল 5 বছর থাকার পর যা ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে তার দশ ভাগের এক ভাগ দেখিয়েছে বাম, তাও টানা 20 বছর চালানোর পরে।
সত্যি আর কত ইতিহাসের নামে গপ্পো কথা লিখবেন। মানুষ তো দেখছি আপনাদের গপ্পো গুলোই এখন শুনছে। RIP logic
তাই? বিরোধী শুন্য ছিলো?? নিচে ভোটের percentage গুলো দেখে নেবেন। কংগ্রেস আর বামেদের ভোট গায়ে গায়ে ছিলো।
https://www.ndtv.com/elections/previous-stats/state/west-bengal
ঔদ্ধত্য? হ্যাঁ কিছুটা ছিল তো বটেই। তিনোমুল 5 বছর থাকার পর যা ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে তার দশ ভাগের এক ভাগ দেখিয়েছে বাম, তাও টানা 20 বছর চালানোর পরে।
সত্যি আর কত ইতিহাসের নামে গপ্পো কথা লিখবেন। মানুষ তো দেখছি আপনাদের গপ্পো গুলোই এখন শুনছে। RIP logic
ওহ গুরুতে কমেন্ট করতে গেলে হয় পোস্ট হয় না নয় পাঁচ বার পোস্ট হয়ে যায়
বিরোধীদের ব্যর্থতা
oদলীয় বিচ্ছিন্নতা
oবর্তমানের দুর্বলতম কংগ্রেস ব্যতীত অন্য কোনও জাতীয় দলের অভ্যুত্থান না হওয়া।
oআঞ্চলিকতার প্রাধান্যকেই যথেষ্ট মনে করা, যেমন- বাংলায় তৃণমূল, উত্তরপ্রদেশের সপা-বিএসপি, কেরালায় সিপিআইএম ইত্যাদি সকলেই নিজেদের রাজ্যে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারলেই নিশ্চিন্ত যেন।
oমোদির বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ মুখ নির্মাণ করতে না পারা।
oবিরোধীতার বিষয়কে গণ-আন্দোলনে রূপান্তরে ব্যর্থতা।
oজনগণের সঙ্গে সংযোগহীনতা।
একটাই পয়েন্ট যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ ওটাই যাস্ট মিস করে গেলেন।
- পরিবারবাদ।
এবার দেখা যাক সারা ভারতের অবস্থা।
- সারা ভারতের পরিপ্রেক্ষিতে একটাই পরিবার - গান্ধী পরিবার। ভাগ্যিস রাহুল গান্ধীর বাচ্চা কাচ্চা নেই। তো কুছ পরোয়া নেহি - প্রিয়াংকা আর রবার্ট ভদ্রা তো আছেই। ওদের নেক্স্ট জেনারেশন কে দিয়ে চালিয়ে নেওয়া যাবেখন।
- তো দেখা যাক কে কোথায় দাঁড়িয়ে:
বিহার: তেজস্বী(?) লাল্লু যাদব
ইউ পি: অখিলেশ মুলায়ম যাদব - মায়াবতী ও তার ভাইপো
মহারাষ্ট্র - ঠাকরে - পাওয়ার - সুলে - আর পেছনে গান্ধী
তেলেঙ্গানা - রেড্ডি পরিবার
অন্ধ্র - নাইডু ও রেড্ডি পরিবার
কর্ণাট্ক - গৌড়া পরিবার - ইয়েদুরাপ্পা পরিবার (?)
তামিলনাড়ু - করুণানিধি ও মারন পরিবার।
পব - আগে এরকম দেখিনি - কিন্তু ইদানীং যা দেখছি etc.
যতদিন না এই ব্যবস্থার কোনো পরিবর্তন হচ্ছে - যা দেখছেন তা তো কিছুটা সহ্য করতে হবে ভাইটি। অথচ বাংলার কোনো ইন্ডিপেনডেন্ট কলামে (গুরুচন্ডালী সমেত) এই নিয়ে কোনো লেখা দেখলাম না।
অথচ এই সাধারণ কথাটা সাধারণ লোকেরা আজকাল বেশ বুঝতে পারছে। একটাই শ্রেণী যারা ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারছেন না - তারা হলেন তথাকথিত বুদ্ধিজীবিরা।