

পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথগ্রহণ শেষ। শপথ নেওয়া হয়ে মন্ত্রীবর্গের। মন্ত্রিসভাও তৈরি। সব ধরনের প্রতিকুলতার বিপ্রতীপে তৃণমূল কংগ্রেসের ধারাবাহিক তিনবার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যের মসনদে আসীন হওয়া - নিশ্চিতভাবে আগামীদিনে সমাজবিজ্ঞানের আলোচনা ও গবেষণার বিষয় হয়ে উঠবে। আপাতভাবে এই ফলের নানা ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রেক্ষিত হাজির করাই এই নিবন্ধের উদ্দেশ্য।
তৃণমূল কংগ্রেস
নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের সাফল্যের নানা অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক কারণ ইতিমধ্যেই নানা মাধ্যমে আলোচিত হচ্ছে। তাতে গত দশ বছরে রাজ্যে গ্রামের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বৃদ্ধিতে দেশের মধ্যে প্রথম হওয়া, রাজ্য বাজেটে গ্রামীণ ক্ষেত্রে খরচের ক্ষেত্রে শতকরা হিসেবে প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাওয়া, নানা জনজাতির বিকাশে রাজ্য সরকারের ভূমিকাসহ আরও নানা বিষয় উঠে আসছে। এছাড়াও দল হিসেবে গত দশ বছরে তৃণমূল নিজেদের সংগঠিত ও প্রসারণের মাধ্যমে নিজের সাংগঠনিক শক্তি অনেক মজবুত করেছে, যাকে এ রাজ্যের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে সমাজবিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই ‘পলিটিক্যাল সোসাইটি’ বা ‘পার্টি সোসাইটি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। গত তিন/চার দশকের অভিজ্ঞতায় এই ‘পার্টি সোসাইটি’ নির্বাচন জেতার অন্যতম প্রধান শর্ত। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে শতকরা হিসেবে তৃণমূলের ভোট উল্লেখযোগ্যভাবে (১০%) বেড়েছে। এতে ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই উপাদানই রয়েছে। রাজ্যে সরকারে থাকার সুবাদে কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, বার্ধক্য ভাতা, সর্বশেষ সংযোজন স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প সহ জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের ইতিবাচক ভোট যে তৃণমূল পেয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বিশেষ করে কন্যাশ্রী ও স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা ভোটের ভিত্তিকে সুদৃঢ় করেছে কারণ পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে এই দুই প্রকল্প সাধারণ মহিলাদের অস্মিতার কারণ। এর সাথে মনে রাখতে হবে চার ঘন্টার নোটিশে ডাকা লকডাউন কালে রেশন ব্যাবস্থার মাধ্যমে মাথা পিছু পাঁচ কেজি চাল সহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী প্রদান এবং বিদ্যালয়ের মাধ্যমে মিড্ ডে মিলের সাহায্যে অগণিত দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারকে বাঁচার ন্যূনতম রসদ জোগান এই ইতিবাচক ভোটের বৃদ্ধিতে প্রভূত অবদান রেখেছে। আবার নানা কারণে বিজেপির প্রতি নেতিবাচক মনোভাব থেকে বিকল্প হিসেবে আর কেউ গ্রহণযোগ্য না থাকায় সেই ভোটেরও সিংহভাগ তৃণমূলের ঝুলিতে ঢুকেছে। অবশ্যই মনে রাখা দরকার তৃণমূলের এই ভোট বৃদ্ধি হয়েছে রাজ্যের সংখ্যালঘু মানুষ ও আপামর মহিলাদের সমর্থনের শক্ত ভিত্তির ওপর।
বিজেপি
বিজেপির রাজ্য জয়ের খোয়াবে একমাত্র ভরসা ছিল প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোট যা তারা গত লোকসভা নির্বাচনে প্রায় পুরোটাই পেয়েছিল। কিন্তু শুধুমাত্র নেতিবাচক ভোটের ওপর ভরসা করে রাজ্যে ক্ষমতায় আসা সহজ নয়। তার পিছনেও দীর্ঘ প্রস্তুতি প্রয়োজন। কংগ্রেসে থাকাকালীন সময় ধরলে টানা দু’দশক মমতা ব্যানার্জি ছিলেন সিপিএম বিরোধীতার একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য মুখ আর তাই ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে প্রবল প্রতিষ্ঠানবিরোধী আবহে তিনি ক্ষমতায় আসেন। ২০২১ সালে সেরকম কোন পরিস্থিতি ছিল না, বা গত দুবছরে বিজেপি এ রাজ্যে এমন কোন কার্যক্রম গ্রহণ করেনি যা তাদের পক্ষে ইতিবাচক ভোটমণ্ডলী তৈরি করতে সাহায্য করবে। বরং লোকসভা নির্বাচনের দু’বছর অতিক্রান্ত, বিজেপিও দেশের ক্ষমতায় সাত বছর আসীন, ফলে কিছু প্রতিষ্ঠানবিরোধী ভোট বিজেপির বিপক্ষেও গেছে। বিশেষত দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেই সিএএ বা ক্যাব নিয়ে অতি তৎপরতা সহ সাম্প্রতিক অভিবাসী শ্রমিকদের প্রতি মনুষ্যেতর আচরণ বিজেপির প্রতি নতুন করে বীতরাগের জন্ম দিয়েছে। এ রাজ্যের ভোটের শেষ চার দফায় দেশে কোভিড পরিস্থতির ভয়াবহ অবনতি মানুষকে কেন্দ্রীয় সরকারের অবহেলা ও ব্যর্থতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। সর্বজনিক টীকাকরণের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে পাশ কাটিয়ে যেনতেন প্রকারে বাংলা দখলের মরিয়া প্রয়াস মানুষের দৃষ্টি এড়ায় নি। অন্যদিকে মূলত দিল্লি ও উত্তর ভারত থেকে আসা বিজেপির নেতৃত্বের ধারাবাহিক আক্রমণের মুখে মমতা ব্যানার্জি বাঙালি জাতীয়তাবোধের যে দেওয়াল তুললেন প্রধানমন্ত্রী সহ বিজেপি নেতাদের ক্রমাগত ভুল বাংলা উচ্চারণে তা আরও মজবুত হল, কারণ দুপারের বাঙালি চিরকালই তার মাতৃভাষার প্রতি অসীম আবেগী ও শ্রদ্ধাশীল। ফলত বিজেপির নেতিবাচক ভোটের পাল্লা আরও ভারী হল, কমল দু’বছর আগে পাওয়া শতকরা হিসেবে প্রাপ্ত ভোটের হার।
বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ
ভোটের প্রাক মুহূর্তে এমন এক জোট তৈরি হল যেখানে পরস্পরের প্রতি ছিল চূড়ান্ত অবিশ্বাস যা বিস্তৃত ছিল নিচু তলা অবধি। এই জোটের মূল দল সিপিআই(এম)ও ইতিবাচক ভোটের আশায় স্লোগান তুলেছিল ‘গর্বের চৌত্রিশ’। সমস্যা হল বামফ্রন্টের প্রথম দশ বছরে যে মানুষেরা বিভিন্নভাবে উপকৃত হয়েছিলেন প্রকৃতির নিয়মেই তাঁরা আজ অবসৃত। ফলে নতুন প্রজন্ম সহ তরুণ ভোটারদের এ শ্লোগান ছোঁয় না কারণ তাদের বামেদের দাবি মত ‘গর্বের বাংলা’ দেখার সুযোগই হয়নি! আর যাঁরা বয়সে তুলনামূলক অগ্রজ বামফ্রন্টের শেষ দু’দশক তাঁদের জন্যও মধুর অভিজ্ঞতায় ভরা ছিল না, ফলে এই শ্লোগান আদতে কোন প্রভাবই ফেলে নি যেমন সামাজিক মাধ্যমে টুম্পার প্রচার নিয়ে আত্মশ্লাঘা অনুভব করলেও আদতে তা যেন অঞ্জন দত্তের ‘বেলা বোস’ হয়ে বিশুদ্ধ নাগরিক জীবনে আটকে গেল। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার যে এখন আমাদের দেশ ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট’ এর মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যার মর্মাথ হল জনসংখ্যায় তারুণ্যের সংখ্যাধিক্য। তাদের প্রতিশ্রুতির তালিকায় রাজ্যের যুব সম্প্রদায়ের কাছে ‘চাকরির খাম’ পৌঁছে দেওয়ার কথা থাকলেও তা রাজ্যের সিংহভাগ যুবসমাজের কাছে কোনো প্রভাব ফেলে নি। এ রাজ্যের ১৮-২৩ বয়সের যুবদের মধ্যে গড়ে ১০ শতাংশ স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করার সুযোগ পায় বাকিরা বিভিন্ন স্তরে ঝরে পড়ে, পরবর্তী ধাপগুলোয় খুব স্বাভাবিক ভাবেই এই হার আরও কমে যায়। ফলে ৯০% যুবক/যুবতী বাস্তবে চাকরির বদলে চায় কর্মসংস্থান, যার জন্য তাদের নির্ভর করতে হয় অসংগঠিত ক্ষেত্রের ওপর যেখানে খামের বদলে ঘামের বেশি মূল্য। গত চারশ বছর ধরে পৃথিবীতে পুঁজির কেন্দ্রিকরণের যে ধারা চলে আসছে যার আধুনিক রূপ ‘কর্পোরেট পুঁজি’, সিঙ্গুর বা নন্দীগ্রামের শিল্প স্থাপনার পরিকল্পনা সেই ধারাতেই পুষ্ট। অথচ এই সময় এ রাজ্য এমএসএমই এর বৃদ্ধির হারে দেশে প্রথম অর্থাৎ রাজ্যে পুঁজির যে বিকেন্দ্রিকরণ ঘটেছে তা তত্ত্ব আওড়ানো বাম নেতৃত্বের নজরেই ছিল না, তাই এ বিষয়ে তাদের ইস্তাহারও নীরব। বেশ কিছুদিন আগেই ফরাসি অর্থশাস্ত্রী থমাস পিকেটি লক্ষ্য করেছিলেন যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই সারা পৃথিবী জুড়েই শ্রমজীবী মানুষ ক্রমশ বাম শিবির থেকে ডান শিবিরে চলে যাচ্ছেন, ব্রেক্সিট, ট্রাম্পের আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া পিকেটির যুক্তির সপক্ষে সাম্প্রতিক উদাহরণ। এ রাজ্যের বাম আন্দোলন বরাবরই ‘ভদ্রলোক’ কেন্দ্রিক (যা নিয়ে বিস্তর লেখালেখি আছে) ফলে চাকরির পরিধির বাইরে তাদের দৃষ্টিশক্তি মায়োপিয়ায় আক্রান্ত। সম্পতি কাঞ্চা ইলাইয়া কেরালা ও পশ্চিমবঙ্গের বামেদের তুলনামূলক আলোচনায় একটি নিবন্ধে এ প্রসঙ্গে বলেন যে বাংলায় যেহেতু শুরু থেকেই বাম আন্দোলনের পুরোধা বর্ণহিন্দু সম্প্রদায় তাই নিম্নবর্ণের মানুষেরা কোনোদিনই নেতৃত্বের পর্যায়ে ওঠেনি, সে সুযোগটাই বিজেপি নিচ্ছে। ‘গর্বের চৌত্রিশ’ পর্যায়ে কান্তি বিশ্বাসের মত ব্যতিক্রম ছাড়া নিম্নবর্ণের কাউকেই সেভাবে সামনের সারিতে দেখা যায় নি, এমনকি ঔপনিবেশিক ঘরানায় সরকার ও দলে উত্তরবঙ্গ সহ পিছিয়ে থাকা জেলাগুলি থেকেও তেমন কোনো প্রতিনিধিত্বই ছিল না। রাজ্যের বর্তমান বাম নেতৃত্বের দু’একজন ব্যতিক্রম ছাড়া বিরোধী পরিসরে রাজনীতি করার অনভিজ্ঞতার কারণে গত দশ বছরে বামেদের তরফ থেকে একটিও উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি যা সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করে, তাদের দৈনন্দিন সমস্যা সমাধানে আলোর পথ দেখায়, যা ভোট বাক্সে বামেদের সম্পর্কে ইতিবাচক প্রতিফলন হিসেবে দেখা দেবে। তৃণমূলের প্রতিষ্ঠানবিরোধী ভোট তাদের ছেড়ে বিজেপিতে চলে গেছে নানা কারণে যদিও খাতায় কলমে তারাই ছিল রাজ্যের প্রধান বিরোধী শক্তি। ফলে তাদের ভোটের ভাগ ক্ষয় হতে হতে ৫ শতাংশের আশেপাশে গিয়ে ঠেকেছে আর তাদের তরুণ নেতৃত্বও পূর্বজদের ফেলে আসা পথ ধরে এগোতে গিয়ে প্রথমেই খাদের কিনারা থেকে গভীরে গিয়ে পৌঁছল। কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বামপন্থী মহলে যে বিতর্ক আজও চলছে তা হল বিজেপিকে নিয়ে সিপিআই(এম) এর রাজনৈতিক অবস্থান। তৃণমূল ও বিজেপিকে একই সারিতে রেখে তাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন প্রক্রিয়ার শুরুতে দাবি করেন যে তৃণমূলকে হারিয়েই বিজেপিকে হারাতে হবে। দলের রাজ্য সম্পাদক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান বিধানসভা ত্রিশঙ্কু হলে তারা কিছুতেই তৃণমূলকে সমর্থন করবেন না – মূল নির্যাস যে কোনো উপায়ে রাজ্যের শাসক দলকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে। উল্লেখযোগ্য ভাবে সিপিআইএম(এল) লিবারেশন বিহার নির্বাচনের অভিজ্ঞতায় এই রাজনৈতিক লাইনের বিরোধিতা করে বিজেপি কেই মূল শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে এবং বিজেপি কে ভোট না দেওয়ার আবেদন করে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না দল হিসেবে এই হিন্দু মৌলবাদী শক্তির সাথে সিপিআই(এম) এর সম্পর্ক কী হওয়া উচিত তা নিয়ে দলের মধ্যেই রয়েছে ঐতিহাসিক টানাপোড়েন। জরুরি অবস্থা চলাকালীন ১৯৭৫ সালের অগাস্ট মাসে পদত্যাগ করেন সিপিআই(এম)-এর প্রথম সাধারণ সম্পাদক পি সুন্দরাইয়া। দলের পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের কাছে লেখা ঐ মাসের ২২ তারিখের চিঠিতে তাঁর পদত্যাগের যে দশটি কারণ উল্লেখ করেছিলেন তার প্রথমটিই ছিল জনসংঘ ও আরএসএস নিয়ে পার্টির অবস্থান। তিনি এই দুই শক্তিকে সাথে নিয়ে জরুরি অবস্থার বিরোধিতা করার যে পার্টি লাইন তার বিরোধী ছিলেন। এমনকি তিনি আরএসএস কে ‘আধা সামরিক ফ্যাসিস্ট’ বলেও অভিহিত করেন। যদিও এর শিকড় আরো গভীরে, অবিভক্ত কমুনিস্ট পার্টির প্রথম সম্পাদক পিসি যোশিও স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই এই মৌলবাদীদের নিয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় পার্টির মধ্যেই তীব্রভাবে সমালোচিত হন। এই দোদুল্যমানতা থেকেই কিছুকাল পূর্বেও জাতীয় স্তরে কংগ্রেস ও বিজেপির সঙ্গে সমদূরত্ব বজায় রাখায় অটল ছিল সিপিআই(এম)। সুতরাং ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গে আব্বাসকে সাথী করে তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটে থাবা বাড়ানোর বাসনা কোনো ভাবেই বিস্ময়জনক তো নয়ই বরং তাদের ঐতিহাসিক ভূমিকার সঙ্গে যথেষ্ট সংগতিপূর্ণ। তৃণমূল বিরোধিতায় তাদের আর বিজেপির যেন ছিল ‘মিলে সুর তুমহারা…। পরিণামে রাজ্যের শাসকবিরোধী ভোট তুলনামূলক বড় ও বিত্তশালী দলের ঝুলিতে গিয়ে পড়েছে আর বাম ও কংগ্রস-এর লোকসভা নির্বাচনে যে ভোট অবশিষ্ট ছিল তাও তারা ধরে রাখতে পারে নি।
এবারের নির্বাচনের ভয়াবহ দিকটা হল বিরোধী রাজনীতির পরিসর ক্রমশ সংকুচিত হয়ে যাওয়া যা শাসকের পক্ষেও অশনি সংকেত। বিজেপি বাদে অন্য দলগুলি বিরোধী রাজনীতির পরিসরে জায়গা না পেলে শাসক বিরোধী সব ক্ষোভ বিক্ষোভে একমাত্র লাভ হবে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল। রাজ্যের বকেয়া পৌরসভা নির্বাচন সহ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সংগঠিত করার মাধ্যমে শাসক ও প্রধান বিরোধী দল ছাড়া অন্য দল বা সংগঠনগুলোও তাদের কার্যকলাপ করার সুযোগ পাবে। সাধারণ মানুষ বিশেষ করে ছাত্র সমাজের মধ্যে হিন্দুত্ববাদীদের পাল্টা আদর্শ নিয়ে আলোচনা ও বিতর্কের পরিবেশ সৃষ্টি করাটাও এ সময়ের আশু কর্তব্য। এ প্রসঙ্গে বলা ভাল যে ২০২৪ এর পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের আগে ২০২৩-এর পঞ্চায়েত নির্বাচন রাজ্যের শাসকের অগ্নিপরীক্ষা কারণ মনে রাখা দরকার ২০১৮ তে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপক অংশের মানুষের ভোট না দিতে পারার ক্ষোভ তার পরের বছর লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে বিজেপি র উত্থানের ভিত্তি প্রস্তুত করে দেয়। রাজ্যের শাসক দল আগামীতে কিভাবে তার পক্ষে এই বিপুল মতদানকে মর্যাদা দেয় সে দিকেই তাকিয়ে আছে রাজ্যবাসী এবং অবশ্যই বাকি দেশের জনতা।
দীপক সেনগুপ্ত | 2405:201:a803:884b:d16c:c9c8:c857:***:*** | ১২ মে ২০২১ ০৯:১৯105883বিচক্ষণ বিশ্লেষণ
তপন ভট্টাচার্য্য | 150.129.***.*** | ১৩ মে ২০২১ ১৬:১১105932তৃণমূলায়িত (১৪৮ জন প্রার্থী যারা তৃণমূল থেকেই এসেছে এবং ঠিক ভোটের আগেই এসেছে, এক দুজন ছাড়া) বিজেপিকে বাংলার জনগণ কেন ভোট দেবে? আর তাছাড়া এই বিজেপি বাংলারও নয়। বিজেপিকে বাংলায় ক্ষমতায় আসতে হলে আগে বাঙ্গালীদের মন, সংস্কৃতি, ভাষা ও ভাবধারা বুঝতে হবে। এটা কোন গুজরাত, মধ্য প্রদেশ, রাজস্থান, দিল্লী, উত্তর প্রদেশ বা বিহার থেকে আসা পরিযায়ী সুুুুবিধাভোগী অবাঙ্গালী ও বঙ্গ বিদ্বেষী নেতার পক্ষে সম্ভব নয়। আর কেবলমাত্র মিথ্যাচার ও ভেদাভেদের দ্বারা পশ্চিমবঙ্গে ভোটে জেতা সম্ভব নয়।
শান্তনু ঘোষ | 2409:4061:2c93:2d33::d08a:***:*** | ১৬ মে ২০২১ ২০:৩৪106101দেবত্র দার লেখা ভীষণ প্রাসঙ্গিক...
Santanu | 2405:204:91:35da:d15d:c233:75fe:***:*** | ১৬ মে ২০২১ ২০:৩৭106102Khub bhalo likhecho Debotro
অভিজিৎ ঘোষ | 202.142.***.*** | ১৬ মে ২০২১ ২১:১০106103একদম সঠিক বস্তুনিষ্ঠ লিখেছিস্
আলিউল হক, কল্যাণী, নদীয়া | 2409:4060:5:331f:1cd6:7a3:8544:***:*** | ১৬ মে ২০২১ ২১:১৫106105ভোট পর্বের প্রথম দফা থেকেই ভারতীয় জনতা পার্টির মেরুকরণ কে তীক্ষ্ণ থেকে তীব্রতর করার প্রচেষ্টা, শীতলকুচির ঘটনার পর সংখ্যালঘুদের মধ্যে তীব্র আশঙ্কা সৃষ্টি এবং ভোট পর্বের শেষ দুটি দফাতে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিজেপি সম্পর্কে চরম ভীতি তৈরি করার সাফল্য এ ক্ষেত্রে অন্যতম কারণ বলে আমি মনে করি। তাছাড়া দেবত্র দা পুরোপুরি বিশ্লেষণ অনেকটাই নিখুঁত হয়েছে আমার মনে হয়
উটকো মন্তব্য | 151.197.***.*** | ১৬ মে ২০২১ ২১:২৫106107পিকেটি বোধয় মন্ত্রী হয় নি, যদিও সোস্যালিষ্ট পলিটিক্সে সক্রিয়!
Santanu nag | 103.44.***.*** | ১৭ মে ২০২১ ০৬:৪৯106127সময়োপযোগী, নির্মেদ, তথ্যভিত্তিক সঠিক বিশ্লেষণ। আরো লেখার দাবী রইলো। এতো ক্ষোভ ও বঞ্চনা সত্ত্বেও সরকারি কর্মচারীদের পোস্টাল ভোট শাসক দল কেনো পেলো, সেই বিষয়ে একটা লেখা প্রত্যাশা করছি।
এটা থাকল এখানে।
debu | 75.8.***.*** | ১৬ অক্টোবর ২০২১ ২৩:২৩499675
কল্যাণ সেনগুপ্ত | 2409:4060:384:1741::1c53:***:*** | ০৫ নভেম্বর ২০২১ ১২:০৯500726
লক্ষ্য বিজেমূল নয়, লক্ষ্য আসলে তৃণমূল | 2a0b:f4c1:2::***:*** | ০৫ নভেম্বর ২০২১ ১২:৫৪500727