৮
লকডাউনে এই হয়েছে এক জ্বালা। বাড়িতে বন্দী জীবন, ইতিউতি কিছু খারাপ খবর আসে, তাই মনে সবসময়ে একটা ভারী চিন্তার স্রোত বইতে থাকে। হঠাৎ মেয়ে এসে কাঁধ ধরে নাড়া দিতে চমকে উঠলাম।
— ওমা! আজ মাংসের কী করছ।
— চিকেন স্টু বাবু
— স্টু! আজ তো দশমী, রুনা জেঠুর মত রান্না করছোনা? বাবা খাসির মাংস আনেনি?
— না বাবু, ওখানে যা হচ্ছে, ওসব একটা প্রথা মেনে হচ্ছে। এদিকে শহরে অসুখের বাড়াবাড়ি। হাল্কা খাওয়াই ভালো। তুই বরং আমাকে একটু সাহায্য কর।
(মেয়ে ব্যাজার মুখে)
— বল কী করতে হবে।
— আমি চিকেনটা ধুয়ে রেডি করে দিয়েছি, তুই প্রেশার কুকারে জল দিয়ে মাংসটা সেদ্ধ বসিয়ে দে তো।
— কতটা জল?
— কুকারের চার ভাগের এক ভাগ। এক চামচ নুন দে, এখানে আধভাঙা গোলমরিচ আর থেঁতো করা রসুন আছে, এক চামচ করে দিয়ে দে। এক টিপ হলুদ দে।
হলুদ অতটা না, আর একটু কম।
ঠিক আছে এবারে কুকারের ঢাকনা লাগা।
— সব্জি দেবেনা মা?
— দেব তো, এই যে আলু, পেঁপে, গাজর বড় বড় টুকরো কেটে রেখেছি। মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে চিকেনটা তুলে নিয়ে ঐ জলেই সব্জিগুলো সিটি দিয়ে নেব।
— তারপর?
— তারপর কড়ায় সবকিছু একসঙ্গে ফোড়ন দিতে হবে।
— কী ফোড়ন?
— বিভিন্ন জন বিভিন্ন রকম দেয়। কিন্তু আমি আমার মা যেমন করত, তেমন করি।
— কেমন সেটা?
— সাদা তেলে গোটা জিরে, ছোট এলাচ, গোটা গোল মরিচ, আর অল্প একটু দারচিনি ফোড়ন দিয়ে মাংস, সব্জি, জল সব টগবগ করে ফোটাব। নুনটা দেখে নিতে হবে। অল্প ধনে গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো আর শেষে দুধ আর মাখন দিয়ে নামাতে হবে।
— কর্ন ফ্লাওয়ার টাওয়ার লাগবেনা? সুইট কর্ন? ডিমের সাদা?
— ধুর। ওসব লাগে স্যুপ বানাতে। এটা তো স্টু। এখানে হাড় সমেত বড় মাংসের পিস থাকে। ঝোলটা পাতলা। ভারতীয় মশলা ব্যবহার হয়। স্যুপ হল তুলনায় ঘন, আর ওতে মাংস হাড় থেকে ছাড়িয়ে একদম ছোট করে দেওয়া হয়। ওখানে হলুদ, ধনে, জিরে, গরম মশলা ওসবের কারবার নেই।
— ওহ! এত কিছু তফাৎ?
— হুম।
— কিন্তু রুনা জেঠু কীভাবে মাংস রান্না করে? সেভাবে রান্না করলে এখানে ক্ষতিটা কী?
— আরে বাবু শোন, রুনা জেঠু ঠিক যেভাবে রান্না করে, তেমন ভাবে এখানে এই শহরের বাড়িতে করা সম্ভব নয়।
— কিন্তু কেন?
— প্রথমত ঐ রান্না ভীষণ রিচ, মশলাদার। আর দ্বিতীয়ত ঠিক ঐরকম সব উপকরণ পাওয়া যাবেনা।
— কেন পাওয়া যাবেনা?
— আরে বাবা এখন লকডাউন চলছে। রুনাদা মাংসটা প্রথমে টাটকা পেঁপে পাতা দিয়ে মুড়ে রাখে।
— তাই নাকি, কেন এরকম করে?
— এটা মাংস নরম করার একটা প্রাচীন পদ্ধতি।
— তারপর?
— আগে থেকে অর্ডার দেওয়া থাকে তো, মাংস বাড়িতে আসে ভোর রাতে। পেঁপে পাতা দিয়ে ঘণ্টা দু'য়েক মুড়ে রেখে দেওয়ার পরে, মাংস ম্যারিনেট করা হয়।
— কী দিয়ে?
— পরিমাণ মত পেঁয়াজ কুচো, আদার টুকরো, আস্ত রসুন, খানিকটা গোটা জিরে, গরম মশলা - মানে ছোট এলাচ, লবঙ্গ, দারচিনি, গোটা শুকনো লঙ্কা অল্প তেলে ভেজে, সব একসঙ্গে বাটা হয়। এবারে ঐ ভাজা বাটা মশলা দিয়ে ঘণ্টা তিনেক মাংস মেখে রাখা হয়। অল্প নুন দেওয়া হয়। সঙ্গে দেওয়া হয় ধনে গুঁড়ো আর ফেটানো টক দই। বড় পিসগুলো চিরে দিতে হয়। আধঘণ্টা সময় বাকি থাকতে মাংসের ওপরে খানিকটা চিনি ছড়িয়ে দেয় রুনাদা।
— চিনি কেন?
— মাংস গরম কড়ায় ফেললে, চিনি গলে ক্যারামেল হবে আর রান্নাটা লালচে দেখাবে তাই। এরপর কষে যেমন রান্না হয়, তেমনই হবে। তবে রুনাদা একটা কাজ করে, যেটা আবার তোর বাবা পছন্দ করেনা।
— কী?
— রান্নায় টকটকে রং আনার জন্য ম্যারিনেশনের সময়ে রেড চিলি টমেটো সস মেশায়। খেতে ভালো লাগে।
— এখানে টাটকা পেঁপে পাতা পাওয়া যায়না, তাই না মা?
— বাজারে পেঁপে বিক্রি হয়, পাতা তো আর হয়না। পেঁপে কুরিয়ে মাখায় অনেকে। পেঁপে পাতা ছাড়াও আরও কিছু আছে, যা গ্রামে শহরে আলাদা।
— যেমন?
— উপকরণে তফাৎ আছে। ওখানকার রসুনগুলো হাতে ঘষলেই খোসাগুলো সুন্দর উঠে যায়। কিন্তু এখানে রসুন ছাড়াতে জান নিকলে যায়।
— এরকম পার্থক্য কীকরে হয়?
— সেটাই তো, রুনাদা বলে, ওখানকার রসুন স্থানীয় ভাবে চাষ করা রসুন। রোদে শুকনো - তাই সহজে খোসা ছেড়ে যায়। আর এখানে বহুদিন হিমঘরে থাকা রসুন বিক্রি হয়। তাই তার শাঁসের ওপরে খোসা চেপে বসে যায়, ছাড়ানো যায়না।
— রুনাজেঠু বলেছে যখন, তখন ঠিকই হবে। রসুন ছাড়া আরও কিছু আছে নাকি?
— আছে তো, ঐ যে রাঁধুনি!
— কোন রাঁধুনি?
— আরে এ রাঁধুনি হল মশলা। তোদের বাড়ির দিকে আবার রাঁধুনিকে বলে চন্দনি। রুনাদা পাঁচ ফোড়নের মধ্যে আলাদা করে রাঁধুনি মেশায়। কিন্তু ওখানকার বাজারে কেনা রাঁধুনির যে গন্ধ, বড়বাজার থেকে কেনা রাঁধুনির তেমন হয়না। অদ্ভুত ব্যাপার। তারপর ধর ওখানে বড় উনুনে কাঠের জালে রান্নার একটা এমন গন্ধ থাকে, যেটা কোনদিন এই গ্যাস ওভেনে রান্না করলে হবেনা।
— আর একটা জিনিস খেয়াল করেছ মা? রুনা জেঠু রান্না করলে, অনেকটা মাংস খেয়ে নিই। কিন্তু অন্য নেমন্তন্ন বাড়িতে বেশি খাওয়া যায়না। ইচ্ছে করেনা।
—হা হা হা, এই একই প্রশ্ন আমি তো রুনাদাকে করেছিলাম, যে এরকম কেন হয়? তা রুনাদা বলল ক্যাটারিং পার্টি মাংসে ডালডা মিশিয়ে দেয়। লোকের খেতে ভালোলাগে কিন্তু খেতে পারেনা, মুখ মেরে দেয়।
—বাবা, কীসব ব্যাপার! আচ্ছা মা, তুমি বলেছিলে আমাদের বাড়ির পুজো দুশ বছরের পুরোনো। দশমীতে লোকজন ডেকে খাসির মাংস খাওয়ানোও কী দুশ বছর ধরে চলছে?
— সেটা আমি নিশ্চিত নই। অবশ্য আগে তো শাক্ত মতে পুজো হত, বলিও হত, তখন রেওয়াজ ছিল কিনা শুনিনি কখনও। তারিণীপ্রসাদ পুজো বৈষ্ণব মতে চালু করলেন। তখন থেকে দেবীর নিরামিষ ভোগ। মাংস উনি খেতেন না। আর তোর বাবা বলে যে বাড়িতে মাংস ঢোকাও তিনি নিষিদ্ধ করেছিলেন।
— তাহলে এই খাওয়াটা কবে থেকে শুরু হল?
— তোর ঠাকুরদা অমরেন্দ্রনাথের আমলে।
— হঠাৎ এমন কেন হল?
— খুব সম্ভবত এর ওপরে আছে ইংরেজ আমলে মেদিনীপুরের সশস্ত্র বিপ্লবের প্রভাব।
— সেকী? ব্যাপারটা একটু খোলসা কর তো।
— খোলসা কর বললেই তো হয়না। খুলে বলতে সময় লাগে। শ্রোতার ধৈর্য লাগে।
— ধৈর্য আছে, বলনা।
— প্রথমে তারিণীপ্রসাদের সময়কালটা দেখ। মেদিনীপুরে অনেক আগে থেকেই ইংরেজের বিরুদ্ধে নানারকম বিদ্রোহ হচ্ছিল এক এর পর এক। উনিশ শতকের শেষের দিকটা বিপ্লবী কার্যকলাপ বা গুপ্ত সমিতির কাজ জোরদার হয়ে ওঠে। আবার এইধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আমাদের দ্বিতীয় কুমুদিনীর দাদু ঋষি রাজনারায়ণ বসু। যা হোক এইরকম একটা আবহে ১৮৭৫ এ তারিণীপ্রসাদের জন্ম।
— আচ্ছা!
— ১৮৯০ এ মারা যান তারিণীর বাবা গোবিন্দ প্রসাদ। এবারে একটা চোদ্দ পনের বছরের ছেলের হাতে বিশাল জমিদারি এসে পড়ে। তারিণীর পড়াশোনা লাটে ওঠে। এগরার ঝাটুলাল হাই স্কুলে তিনি তখন অষ্টম শ্রেণীতে পড়ছিলেন। প্রথাগত পড়াশোনা ওখানেই শেষ। কর্ম জীবন শুরু।
— তারপর?
— এরপরে ধর বঙ্গভঙ্গ ১৯০৫ এ, সারা বাংলা জুড়ে ব্যায়াম, কুস্তি, লাঠিখেলা শেখার আখড়া গড়ে উঠেছে। আর তার আড়ালে চলছে ইংরেজ বিরোধী কাজ কারবার। তারপর ১৯০৮ এ ক্ষুদিরামের ফাঁসি, পুরো বাংলা ফুঁসছে। মেদিনীপুরে স্বদেশী আর বয়কট তখন তুঙ্গে উঠেছে। তারিণী তখন যুবক। এবারে তুই নিজেই ভেবে দেখ, অস্থির সময়ে যে মানুষটা বড় হচ্ছে, তার ওপরে যুগের প্রভাব তো পড়বেই।
— সে তো ঠিক কথা।
— এরপর আবার ব্রিটিশ সরকার মেদিনীপুর জেলা দু'ভাগ করার তোড়জোড় শুরু করে দেয়।
— ওদের সেই এক খেলা মা।
— সেই সময়ে কাঁথিতে একজন বড় নেতা দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের নেতৃত্বে যে আন্দোলন হল, তাতে ইংরেজের সেই ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেল।
— দারুণ! বীরেন্দ্রনাথের কথা একটু বল।
— আমি কিছু বলবনা। কম্পিউটারে একটা পি ডি এফ বই ডাউনলোড করে রেখেছি - ওঁর আত্মজীবনী - স্রোতের তৃণ। সেটা পড়বি।
— ঠিক আছে, তারপর?
— এই বীরেন শাসমলের নেতৃত্বে কাঁথিতে হয়েছিল চৌকিদারি কর না দেওয়ার এবং তখনকার ইউনিয়ন বোর্ড বর্জনের আন্দোলন। মৈতনা, বেলবনী সংলগ্ন অঞ্চলে তারিণী এই আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা নেন। সময়টা ধরতে পারছিস তো? এ হল অসহযোগ আন্দোলনের কাল। এই সময় থেকে তারিণী অন্ধ গান্ধীভক্ত হয়ে উঠলেন। ওঁর স্থির বিশ্বাস হল যে ভগবান বিষ্ণুই এগারোতম অবতার হয়ে গান্ধীবাবা হয়েছেন। তিনি গান্ধীবাবার কংগ্রেসি আদর্শে জীবন নির্বাহ করতে শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে এলাকার অভিভাবক হয়ে ওঠেন। এও শুনেছি যে উনি মেদিনীপুর শহরের জজ কোর্টে জুরি বোর্ডের এক জন সদস্য বিচারক ছিলেন। বছরে বেশ কয়েকবার সাতমাইল থেকে উটের গাড়িতে চেপে কোর্টে যেতেন।
— উট? এই বাংলায় উটের গাড়ি?
— হ্যাঁ, তোদের বাড়ি থেকে সাতমাইল পর্যন্ত হেঁটে বা নৌকো করে যেতে হত। তারপর ওখান থেকে উটের গাড়ি পাওয়া যেত। বাংলা তো কী হয়েছে? বালিয়াড়ি এলাকা তো। এখনকার মত আইনি, বেআইনি সব পথে তো আর তখন বালি কাটা হতনা। বালিয়াড়ি অনেক বিস্তৃত ছিল।
— নৌকো কোথায় চলত?
— তোদের বাড়ি থেকে বারোমাইল পর্যন্ত আগে হাঁটতে হত। কোন যানবাহন ছিলনা। বারোমাইল থেকে সাতমাইল পর্যন্ত, উড়িষ্যা কোস্ট ক্যানালে নৌকো চলত।
— আচ্ছা, তারপর বল।
— তোর বাবা কাকাকে অমর বাবুর ছেলে হিসেবে কম লোকে চেনে, ওদের পরিচয় হল তারিণীবাবুর নাতি। ওনার বিচার, মানুষের প্রতি ব্যবহার, পশুপ্রেম - এগুলো এলাকায় মিথ হয়ে আছে। বিয়ের পরে কত লোকের মুখে কত যে গল্প শুনেছি, তার ইয়ত্তা নেই।
১৯২৫ সালের ৫ জুলাই কাঁথির দারুয়া ময়দানে এক বিশাল জনসভা হয়। সেখানে মহাত্মা গান্ধী বক্তৃতা দেন। সেই জনসভায় তারিণী উপস্থিত ছিলেন আর মহাত্মার হেঁটে যাওয়া পথের ধুলো কুড়িয়ে নতুন গামছায় বেঁধে বাড়ি নিয়ে আসেন। গান্ধীবাবার সেই পদরেণু মন্দিরে গৃহদেবতা গোপীনাথ ও শ্রী রাধিকার মূর্তির মাঝখানে রেখে রোজ পুজো করা হতো।
— গান্ধীজির পায়ের ধুলো? সেটা কোথায় মা? আমি দেখব।
— কালের নিয়মে সে আর এখন আর নেই বাবা। একশো বছরে নষ্ট হয়ে গেছে।
— তারিণীপ্রসাদের গল্পগুলো কী - সেই যেগুলো লোকমুখে শুনেছ?
— তোর বাবাকে জিজ্ঞেস করবি। একবার তোর ঠাকুরদা বয়সকালে মেদিনীপুর শহর থেকে ফেরার সময়ে ডাকাতের হাতে পড়েছিলেন।
— সেকী?
— গ্রামে তো তখন রাস্তাঘাট ছিলনা। পিছাবনি থেকে হেঁটে ফেরা ছাড়া উপায় নেই। লোকজন, বাড়িঘরদোর তখন অত গড়ে ওঠেনি। জঙ্গলের রাস্তা। এদিকে রাত হয়ে গেছে। গরীব মানুষের অবস্থা সেসময়ে এতটাই খারাপ, সকালে যে চাষি বা দোকানদার, রাতে মুখে গামছা বেঁধে সেই ডাকাত। যা হোক, তোর ঠাকুরদাকে ডাকাতে ধরল। কিন্তু যখন দেখল, যে এ তারিনীবাবুর পুও, তখন ছেড়ে দিল। আর উপদেশ দিল যে এপথে রাতে একা কখনও যাবেনা।
— বাপরে বাপ। তারিণী বক্সি এমন কী করেছিলেন মা, যে তিনি মারা যাবার পরেও ডাকাত তাঁর ছেলেকে ছেড়ে দেয়।
— ছেলেদের ইস্কুল, মেয়েদের ইস্কুল, হাসপাতাল তৈরি করা, বহু অনাথ আতুরকে আশ্রয় দেওয়া, ভরণপোষণ করা, অস্পৃশ্যতা বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলা, এলাকাকে সব দিক দিয়ে আগলে রাখা - এ কি আর এক কথায় বলা যায়? কত লোক আছে - যাদের তোর বাবা চেনেওনা। তারা পরিচয় পেলে বলে যায়, আমাদের পরিবারকে তোমার ঠাকুরদা বাঁচিয়েছিলেন।
— বুড়ো ঠাকুরদা ইস্কুল কীভাবে তৈরি করলেন মা?
— তুই কিন্তু প্রসঙ্গান্তরে চলে যাচ্ছিস। কথা হচ্ছিল আজ মানে দশমীর দিন, মাংস খাওয়ানোর প্রথা কীভাবে এল। সেটা মনে আছে তোর?
— ও হ্যাঁ হ্যাঁ, তুমি বললে সশস্ত্র বিপ্লবের প্রভাব। মানে একরকম যুদ্ধ। গান্ধীজি তো এমন কিছু করেননি। গান্ধীবাদী বাড়িতে এসব হবে কেন?
— হবে হবে, পুরোটা শোন আগে।
— বল শুনি।
"তোমাকে পেয়েছি অনেক মৃত্যু উত্তরণের শেষে,
তোমাকে গড়ব প্রাচীর, ধ্বংস—বিকীর্ণ এই দেশে।
দিক্দিগন্তে প্রসারিত হাতে তুমি যে পাঠালে ডাক,
তাইতো আজকে গ্রামে ও নগরে স্পন্দিত লাখে লাখ।।"