আমাকে যাঁরা রাতদিন ছুটতে দেখেন, তাঁরা বিশ্বাস করতেই চাইবেন না, বর্ধমান জীবনে আমি একজন চির অসুস্থ মানুষ বলেই পরিচিত ছিলাম। ১৯৯১ পর্যন্ত বছরে ১৫ দিন থেকে দু মাস হাসপাতাল বাস আমার জন্য ছিল বাঁধা।
একাধিকবার স্যালাইন এবং রক্ত নিতে হয়েছে।
একবার আট বোতল। একবার দশ বোতল। আলসারের জন্য। আলসার ধরল কলেজ জীবনে তার আগে ছিল ম্যালেরিয়া টাইফয়েড ঘুষ ঘুষে জ্বর নিত্য মাথার যন্ত্রণা নিত্য সঙ্গী।
আমি জন্ম থেকেই রোগভোগে ভোগা মানুষ। খুব ছোটবেলায় হয়েছিল কালাজ্বর। যমে মানুষে টানাটানি।
আমাকে যখন আমার গায়ের রঙ কালো বলে, সবাই কাল্টা বলে ডাকতো, আমার দাদি, জহুরা বিবি, আমার বাবার সৎ মা আতখাই করে বলতেন, আহা রে পুতির আমার সোনার বরন রঙ ছিল, কালা জ্বরে খেয়ে নিল।
'কাল্টা' বলে ডাকাতে আমারও রাগ হতো, কারণ আমি দেখেছি ফর্সা ছেলের আদর বেশি। আমি আর আমার মামাতো ভাই ছিলাম রাম লক্ষ্মণ জুটি। লোকে বলতো, মানিকজোড়। তাকে সবাই আদর করতো। ফর্সা। সাজগোজ করা। চোখে সুরমা দেওয়া। আমার কোনও অস্তিত্বই লোকের চোখে পড়তো না, রবীন্দ্রনাথের গল্পের চরিত্রের দশা আমার। কোনও পাত্তা দেয় না লোকে।
বড়দি আর মেজদি এবং আমার প্রাণপ্রিয় দাদির কাছে ছাড়া আদর নাই তেমন।
'কেমুন একটা ছ্যালে বনেবাদাড়ে ঘুরে বেড়ায়। সাপ ইঁদুর খেয়ে বেড়ায় গো। গায়ে খড়ির দাগ। পা ফাটা। মুখ শীতকালে কালচে হয়ে ফাটা। ঠোঁট ফাটা। জামার বোতাম নাই। জামার তলা গরমকালে আইসক্রিম গোল্লা করে খাওয়ার দরুন চেবানো। ছেঁড়াছাঁড়া।
একটা গান আমি বেসুরো গলায় মাধ্যমিক পর্যন্ত খুব গেয়েছি--
ছেঁড়া জামায় দেখে কে আমায়!
মাস্টারমশাইদের চোখে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত, পাক ছেলে। আর এই বয়সেই পেকে উঠেছে এত, লুকিয়ে লুকিয়ে সিনেমার পত্রিকা 'নব কল্লোল' আর 'প্রসাদ' পড়ে। ক্লাসের পড়ার নাম নাই।
সুযোগ পেলেই শিক্ষক ক্লাস থেকে বের হলেই গাছে ওঠে।
বসন্তের টিকা দিতে এলে বাঁশের কঞ্চির জানালা ভেঙ্গে পালায়।
তারপর জ্বর সর্দি কাশি পেট খারাপ লেগেই আছে।
'ছুটি' গল্পের ফটিকের সঙ্গে আমি এখনও একাত্ম বোধ করি। যতবার ক্লাসে পড়াতে যাই কেঁদে ফেলি।
চোখ দিয়ে জল গড়াতে থাকে। গলা বুজে আসে।
আমাকে এই দশা থেকে উদ্ধার করেন শম্ভুনাথ থান্দার মশাই। যিনি কাষ্ঠকুড়ুম্বা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। আমাদের গ্রাম থেকে ৩৫-৪০ কিলোমিটার দূরে।
নতুন চাকরি পেয়ে এলেন, আমাদের দলিজ ( খানকাঘর/ বৈঠকখানা ঘরে) থাকতে লাগলেন।
তিনজন নতুন চাকরি পেয়ে যোগ দেন।
১৯৭৩-এ।
দুজন থাকলেন আমাদের বৈঠকখানায়। একজন দূরে দিঘির পাড়া ( সেকালের নাম চাঁড়ালপাড়া)য় অনাথকামারের বাড়ি।
গ্রামের একমাত্র কামার অনাথ কামারের সঙ্গে আমি পরে 'গণদেবতা'র অনিরুদ্ধ কামারের কিছুটা মিল পাই। বড় তেজি মানুষ। অনাথ কাকার মেয়ে উমা আমাদের সঙ্গে কিছুদিন পেরাইমারিতে পড়েছিল।
চমৎকার ঘাস কাটার হাত ছিল উমার। ছাগলের জন্য বেছে বেছে কালচে ঘন নরম ঘাস কাটতো। আমিও আমাদের ছাগলের ঘাসের জন্য উমার সাগরেদি করেছি। তালপুকুরের পাড় থেকে শুরু করে আশপাশের ধান কাটা জমিতে ভালো ভালো ঘাস কেটেছি। এছাড়া উমার একটা গুণ ছিল, এক ধরনের লম্বা ঘাস হতো। তাকে বলা হতো, ব্যাঙের বাড়ির ঘাস। ভিতরটা ফাঁপা । হাত দিয়ে টিপলে পটপট করে আওয়াজ হতো।
আমাদের গ্রামীণ জীবনে ওইগুলোই তো ছিল আনন্দের উৎস।
সেই ঘাস দিয়ে উমা দারুণ ঘর বানাতো। দোতলা তিনতলা।
তিনতলার বেশি বাড়ি হয়, এ আমরা কল্পনাও করতে পারিনি।
এমনকী বর্ধমান শহরে ১৯৯২-৯৩ পর্যন্ত বাড়ির নিশানি বা পথনির্দেশ দিতো এইভাবে, সেই তিনতলা বাড়ির চারটে বাড়ি পরে।
বর্ধমান শহরে হাতে গোনা তিনতলা বাড়ি ছিল।
চারতলা বাড়ি? মনে পড়ছে না।
আটের দশকের শুরুতে পূর্ত ভবন হল । আটতলা। লোকে দেখতে যেত। বাব্বা আটতলা বাড়ি। এবং তার কোনও লিফট ছিল বলে মনে পড়ছে না।
থাকলেও আমাদের চড়ার অধিকার ছিল না।
সিঁড়ি বেয়েই উঠতে হয়েছে। কলেজে পড়ার সময় একবার ভালো করে সাহিত্য ও পত্রিকা করবো বলে ৩৫ হাজার টাকা ঋণের আবেদন করেছিলাম। আমি তখন ছাত্র নেতা। কিন্তু কাউকে দিয়ে বলাইনি। পাইওনি।
আমাকে কালাজ্বর থেকে বাঁচান দুজন অদ্ভুত মানুষ। একজন এল এম এফ পাশ শশধর পান। আর একজন হিটু মুন্সি। দ্বিতীয় জন ডবল এমএ।
শশধর পান করেন অ্যালোপ্যাথি। হিটু মামা হোমিওপ্যাথি। একালের মতো সেকালেও দুই পদ্ধতিতে বিরাট ঝামেলা।
হোমিওপ্যাথি মনে করে, অ্যালোপ্যাথিতে রোগীও মরে, রোগীর পরিবারও খরচের জন্য ডোবে।
আর অ্যালোপ্যাথি ভাবে, হোমিওপ্যাথি তো ছদ্মবিজ্ঞান।
ওতে কিস্যু হয় না।
শশধর পান নাকি পয়সা ছাড়া চিকিৎসায় অনাগ্রহী। এমন একটা কথা নিন্দুকরা বলতেন।
আমার ক্ষেত্রে সে-কথা খাটে না। সারাদিন নিজের চেম্বার, এ গ্রাম সে গ্রাম ঘুরে রাত জাগতেন আমার শিয়রে।
দুজনে নাকি সমানে তর্ক করতেন। এটা দেওয়া ভুল হচ্ছে ওটা দেওয়া ভুল হচ্ছে।
তারপর বলতেন, দাও খাইয়ে। বাঁচার আশা তো নাই।
আমি চিরকৃতজ্ঞ এই দুই মানুষের কাছে । আমি যে এখনও অসুস্থতা নিয়েই হেঁটে চলে বেড়াচ্ছি, বাবা মা পরিবার ছাড়া এঁদের অবদান সমধিক।
শশধর পান ঘোড়ায় চড়তেন।
মাথায় ছিল বিরাট টমবয় মার্কা টুপি।
তখন বৃষ্টি হয়েছিল। শীতকালের বৃষ্টি। এক পৌষে জন্ম। আরেক পৌষে কালাজ্বর।
এঁটেল মাটি ঠেলে ঘোড়া পারতো না।
হেঁটেই আসতেন শশধর পান।
শুনেছি এক পয়সাও নেননি।
তিনি ছিলেন কংগ্রেসি। বাবা কমিউনিস্ট। মতের কোনও মিল নাই।
বাবা পয়সা দিতে গেলে বলেন, কেন সকালে তোদের ঘরে খাঁটি খেজুর গুড় দিয়ে কতরকমের পিঠে আর খেজুর রস খেয়েছি। খুব ইচ্ছে করলে, দু সেরা খেজুর গুড় পাঠিয়ে দিবি।
আর একদিন হাঁসের মাংস দিয়ে চালের আটার রুটি খাওয়াস।
সে তো আপনিই পাবেন!
ওরে ন্না, মানুষের প্রাণ বাঁচানো ডাক্তারের কাজ।
এ যে পেরেছি দুজনে অনেক ভাগ্যি রে।
ছেলের চোখ দুটো দেখেছিস।
একটু নিয়ম শৃঙ্খলায় রাখিস বাবা। তোর মতো উড়নচণ্ডী পার্টি করা লোক যেন না হয়। তোর মতোই তো দেখতে।
তারপরই বলেন, তোদের পার্টিটাকে দু চোখে দেখতে পারি না। কিন্তু তোদের মতো ছেলেগুলো কংগ্রেসে কেন এলো না বলদিনি। তোরা ঘরের পয়সা উড়িয়ে পার্টি করিস। কারও টাকা মারিস না।
আমাদের দলের লোকগুলো... কী যে বলি।
গান্ধী কী বললেন, আর এঁরা কী করছে। ছ্যা ছ্যা রে।
হিটুমামার জমিতে বাবা লালঝান্ডা উড়িয়ে জমি খাস করেছিলেন বলে, প্রায়ই বলতেন, ব্যাটাকে দেখলেই গুলি করে মারবো। আমাদের বাড়ির সামনে বহুদিন সিআরপি বা কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল, কমিউনিস্ট বাবাকে ধরার জন্য।
বাবাকে ধরতে চান, কিন্তু তাঁর ছেলেকে বাঁচাতে ওই শৌখিন মানুষটি দিনের পর দিন রাত জাগছেন। নিজের হাতে জ্বর মাপছেন। শশধর পানের সঙ্গে তর্ক করছেন। জলপটি দিচ্ছেন।
আর ফ্লাস্ক থেকে চা বের করে ডাক্তার পানকে দিচ্ছেন।
খাও খাও, মানুষ মারা বিদ্যে তোমাদের। চা খেয়ে আরও তাগদ করো।
দুজনে চলতো খুনসুটি।
আর শশধর পান নাকি বলতেন, তোমাদের বিদ্যে তো এই, যত তরল হবে তত কাজের। যাও গঙ্গার উৎসে গোমুখে এক ফোঁটা হোমিওপ্যাথি ফেলে বঙ্গোপসাগরে এক চামচ তুলে খাইয়ে দাও।
হিটু মামা জন্মসূত্রে 'মুসলিম'। শশধর পান জন্মসূত্রে 'হিন্দু'।
আমাদের এলাকায় রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব রেষারেষি ছিল প্রবল কিন্তু হিন্দু মুসলমানে প্রকাশ্য সাম্প্রদায়িকতা ছিল না। শোনা যেত, পলাশন বাজারে মুসলমানদের জায়গা কিনতে দেওয়া হয় না। তবে এহিয়া চাচা কিন্তু দিনের পর দিন হোমিওপ্যাথি চেম্বার করেছেন আরেক পানের দোকানে।
পান পদবি।
হিটু মামা খুব শিক্ষিত এবং শৌখিন মানুষ।
সঙ্গে থাকতো দোনলা বন্দুক। আর একাধিক শাগরেদ। কারও হাতে টেপ। কারও হাতে রেডিও। কারও হাতে মাছ ধরার চার। আর চায়ের ফ্লাস্ক।
তার ডিম খাওয়া নিয়ে বহু কিংবদন্তি আছে। সত্য মিথ্যা জানি না।
তবে তাঁর বিশ্বস্ত সঙ্গী রাম সাঁওতাল মামাকে আমি মামার পেটে হাঁটতে দেখেছি।
আমরাও অবশ্য ছোটরা বাবাদের পায়ে পিঠে হাঁটতাম।
এতে নাকি ব্যথা কমে।
হিটু মামা খেতেন ও খাওয়াতেন।
বিশাল একটা চায়ের পেটির মতো কাঠের পেটি ছিল। পেটি নামেই আসলে সিন্দুকের মতো।
তাতে থাকতো হরেকরকম শহুরে বিস্কুট।
বড়দের বোকামি নিয়ে মামা মজা করতেন, ছোটদের দিতেন প্রশ্রয়।
তাঁকে ঘিরে এত সত্যি মিথ্যে গল্প ছিল আমরা ভাবতাম, এই বুঝি সেই সেলফিস জায়েন্টের বাগান। বিরাট জায়গা জুড়ে চার কামরা মাটির বাড়ি।
সেখানে বাইরে বিরাট বিস্কুটের পেটি।
আমাদের উঁকিঝুঁকি মারতে দেখলেই ডাকতেন, কে রে?
আমাদের ভয়ে প্রাণ উড়ে যেত।
কাকে নাকি বন্দুক দিয়ে ভয় দেখিয়ে বলেছেন, শ্লা আর মিথ্যে বলছিস শুনলে খুলি উড়িয়ে দেবো। লোককে টেপ রেকর্ডে তার গলা শুনিয়ে চমকে দিতেন।
নানা ধরনের বিস্কুট থাকতো।
হাতি ঘোড়া জোকার পুতুল বিস্কুট। আর কমলা রঙের ক্রিম বিস্কুট -- কী যে স্বাদ।
দানশীল ছিলেন।
খাওয়াতেন এবং খেতেন --এই করে করে বহু জমি চলে গেল। অকালে মারা যান।
স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী, তিনি বর্ধমান শহরেই থাকতেন। বিদ্যালয়ে পড়াতেন। খুব অভিজাত সুন্দরী। মেয়েগুলো প্রত্যেকেই খুব গুণী ও উচ্চশিক্ষিতা। এক মেয়ে আমাদের সঙ্গে বিজ্ঞান পড়তো। এখন প্রধান শিক্ষিকা। মেজমেয়ে বিজ্ঞানী। আমেরিকায় থাকেন।
হিটু মামিমা অসাধারণ গুলি কাবাব বানাতেন।নরম জীবনের সেরা খাওয়া কয়েকটি কাবাবের মধ্যে এটি একটি।
তা হচ্ছিল অসুস্থতার কথা।
কালাজ্বরে বাঁচলাম কিন্তু অসুস্থতা চিরসঙ্গী হয়ে গেল।
অল্পেই নাক ফ্যাঁচফ্যাঁচ। জ্বর। আমি মায়ের দুধ খুব বেশি খেতে পারিনি। আমুলের বড় বড় ফাঁকা কৌটো ছিল বাড়িতে। রাতের বেলায় লুকিয়ে যে-সব পার্টি আসতেন, তাঁদের ছোলা ভাজা আর মুড়ি ভরে দিতেন। সঙ্গে গুলগুল বাতাসা বা নকুল দানা।
মা দেখিয়ে বলতেন, ফাঁকা কৌটো দেখিয়ে বলতেন, এগুলো সব তোর ।
মায়ের দুধ বা গোরুর দুধ দুটোই তেমন না খেয়ে কৃত্রিম দুধ খাওয়ার ফলে আমার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব কম। মনের জোরে লড়া।
কবে থেমে যাবো, কে জানে!
তবে এই সূত্রেই আমি একটা বড় রাজনীতির কথা শুনে ফেলি। স্কুলে যাওয়ার আগেই।
আমার জন্ম ১৯৬৬।
যুক্তফ্রন্ট সরকার এল ১৯৬৭ তে। কালাজ্বর ওই বছরেই।
যুক্তফ্রন্ট সরকারকে বিপদে ফেলতে বর্ধমান শহরের সবচেয়ে দোকানদার ও স্টকিস্ট দামোদরের জলে সব বেবিফুড নাকি ফেলে দেন।
আর ফেলে দেওয়া হয় গমের বস্তা।
বস্তা গম।
যাতে খাদ্য আন্দোলন করে উঠে আসা যুক্তফ্রন্ট খাদ্য সংকটে পড়ে নাজেহাল হয়।
হিটু মামার কিছু গল্প তোলা থাক। পরে বলি।
এই যে অসুস্থতা তার জের চলতেই থাকলো।
কম জোরি। দুবলা। গোরুর দুধ সহ্য হয় না।
বসন্ত (১৯৭৭) ম্যালেরিয়া (১৯৮১ ও ১৯৮২ দুবার) প্যারাটাইফয়েড ও টাইফয়েড (১৯৮৪-৮৫), কুকুরের কামড়ের প্রতিক্রিয়া, পরে নিউরোলজিক্যাল সমস্যা। বহুদিন পিজিতে এন সারেঙ্গিকে দেখিয়েছি।
এরপর ১৯৮৫ থেকে কলেজে ছাত্ররাজনীতির সুবাদে এল আলসার। কালো পায়খানা হতে লাগল। ঠিক মতো হাঁটতে পারি না। পেটের জ্বালায় ঘুমোতে পারি না।
আমাদের স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র হরিমোহন দে তখন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার।
জোর করে ভর্তি করে দিলেন অনার্স পরীক্ষার আগে।
স্যালাইন ও রক্ত দেওয়া চলছে।
হাতে স্যালাইন নিয়ে পরীক্ষার হলে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে। আমি অজ্ঞান হয়ে গেলাম।