এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  ইতিহাস  শনিবারবেলা

  • পূর্ব ইউরোপের ডায়েরি – স্লোভেনিয়া ৪

    হীরেন সিংহরায়
    ধারাবাহিক | ইতিহাস | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৬২৭ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (৪ জন)
  • হ্রদের তীরে স্লোভেনিয়ান পথ নাটিকা


    নীল হ্রদের তীরে একদিন


    দেড় দশক আগে ব্লেদের গ্র্যান্ড হোটেল টপলিচের বয়স্ক কনসিয়ারজ বলেছিলেন, যদি পারেন গ্রীষ্মের দিনে আসুন, দেখবেন কী গভীর নীল এই ব্লেদ লেকের জল।

    ইতিমধ্যে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডে এসেছি – তার চরিত্র কলোনিয়াল। ইউনিয়ন জ্যাক যেখানে কখনও ওড়েনি – সে সব দেশে এ ব্যাঙ্কের বিশেষ আগ্রহ বা প্রতিপত্তি ছিল না। পূর্ব ইউরোপে আমার আসা যাওয়ার রাস্তা বন্ধ। এমন সময়ে আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাঙ্ক কেনা হল। যার ফলে না চাহিতেই পূর্ব ইউরোপে মস্কো-কিভ-আলমাতি সহ বেশ কয়েকটা শাখার মালিকানা জুটে গেল। আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাঙ্কের আন্তর্জাতিক ব্যাবসা মুখ্যত ব্যাঙ্ককেন্দ্রিক – নিউ ইয়র্কে ডলার ক্লিয়ারিং, লেটারস অফ ক্রেডিট, কিছু ফরেন এক্সচেঞ্জ। ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কিং নামক অনিশ্চিত পথে তারা পা বাড়ায়নি। আমাদের তো পলিসিতে আটকায় না। অতএব আমরা সেইসব দেশের ব্যাঙ্কের সঙ্গে বন্ড এবং আন্তর্জাতিক ঋণের আমড়াগাছি শুরু করি। রাশিয়া-কাজাখস্তানে কিছু অর্থসংগ্রহ করার ফলে আমাদের ব্যাঙ্কের মার্গদর্শকেরা উৎসাহিত হলেন – আদেশ দিলেন পূর্ব ইউরোপের অন্যান্য খদ্দেরের জন্য ‘ডলার দেবে গো’ বলে মাধুকরী ভিক্ষায় নেমে পড়ার পথে বাধা নেই – এগিয়ে যাও ফি-আদায়ের সন্ধানে। তাঁরা অবশ্য বোঝেন না, এই ভিক্ষার অনুমতি আমার ব্যাঙ্ক নয় – কোনো খদ্দের দিতে পারে।

    অতঃপর চলো স্লোভেনিয়া। আমাদের প্রাথমিক লক্ষ লুবলিয়ান্সকা বাঙ্কা।

    স্লোভেনিয়ার নোভে মেসতো (নতুন শহর) হতে ক্রোয়েশিয়ার কারলোভাচ শহর আধ ঘণ্টা, এ-পাড়া ও-পাড়া। ইয়ুগোস্লাভিয়ার রিপাবলিকের ছিল না কোনো নির্দিষ্ট সীমান্ত। লিলিয়ানাদের নোভা লুবলিয়ান্সকা বাঙ্কা ক্রোয়েশিয়ার সব বড়ো শহরে খাতা খুলেছিল। এক দেশ, এক দিনার। আটের দশকের অর্থনৈতিক বিপর্যয় এবং ১৯৯১ সালে দেশভাগের পরে সে ব্যাঙ্ক বললে, আমরা এখন আলাদা দেশ। ক্রোয়েশিয়ান আমানতকারিদের জমা টাকার কোনো দায়িত্ব আমাদের নেই (কিছু মামলা আজও ঝুলে আছে)। ইতিমধ্যে তাদের নিজের অবস্থাও সঙ্গিন। স্বাধীনতার পরে স্লোভেনিয়ান সরকার করদাতার পয়সায় লুবলিয়ান্সকা বাঙ্কাকে পুনর্জীবন দিলেন। সঙ্গত কারণেই নতুন নাম হল নোভা (নতুন) লুবলিয়ান্সকা বাঙ্কা। পুরোনো ব্যাঙ্কের নামে যারা মামলা করেছে ,আইনি হিসেবে তারা এটাকে সহজে আক্রমণ করতে পারবে না।

    প্রসঙ্গত – করাচীর চুন্দ্রিগর রোডে পুরোনো অট্টালিকার দেওয়ালে আগের নাম লেখা দেখেছি - ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। ভারত ভাগের পরে দুই দেশের আমানতকারিদের স্বার্থ কীভাবে রক্ষিত হয়েছিল জানি না।

    স্বাধীনতার পরে উন্নয়নের গতি দুর্বার। অচিরে স্লোভেনিয়ার ক্রেডিট রেটিং – আপনার আমার ক্রেডিট স্কোর – গ্রিস-আয়ারল্যান্ড-পর্তুগালকে ছাড়িয়ে যায়। সরকারি মালিকানাধীন নোভা লুবলিয়ান্সকা দেশের পয়লা নম্বর ব্যাঙ্কের তকমা অর্জন করে। বাঙ্কা মারিবর (জার্মান মারবুর্গ) দু নম্বরে। পাশার দান উলটে গেলো – যাদের পাত্তা দেওয়া হতো না এতদিন, তাদের ডলার অ্যাকাউন্ট খোলার জন্যে সিটি ব্যাঙ্ক হামলে পড়ে। সিটি ব্যাঙ্কে আমার প্রাক্তন সহকর্মী রজার নিত্যি চক্কর কাটে লুবলিয়ানা মারিবরে সেই সব ব্যাঙ্কের অফিসে। কেমন করে যে দুনিয়া বদলিয়ে যায়! প্রাক্তন ইয়ুগোস্লাভিয়ার প্রথম রিপাবলিক হিসেবে ২০০৪ সালে স্লোভেনিয়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য পদ অর্জন করেছে। প্রায় এক দশক বাদে ক্রোয়েশিয়া এই কেলাবে ঢোকে। সার্বিয়া এখনও কড়া নেড়ে যাচ্ছে।

    একদিন আমাদেরও কপাল ফিরল। বিজনেসের উদ্দেশ্যে অনেক ঘোরাঘুরি, চা-কফি পান করার পরে নোভা লুবলিয়ান্সকা ব্যাঙ্কের ইনভেস্টমেন্ট প্রধান ওলেঙ্কা একদিন বললেন, ‘অন্যত্র আপনারা কর্মব্যস্ত জানি, কিন্তু এই এলাকায় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাঙ্কের নাম তেমন শুনিনি। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের জন্য অর্থসংগ্রহের একটা সুযোগ দিচ্ছি। কিন্তু একা আপনাদের ওপরে ভরসা রাখতে পারি না, আরও তিনটি ব্যাঙ্কের সঙ্গে মিলে মিশে কাজ করুন’।

    সিটি ব্যাঙ্কের হয়ে একদা একছত্র ছড়ি ঘুরিয়েছি। আজ ফি বা পারিশ্রমিক ভাগাভাগি করে নিতে হবে আরও তিনটে ব্যাঙ্কের সঙ্গে? মানুষ তবে বাঁচে কিসে? ইজ্জত ঢিলে। আমার নেতা এবং অন্নদাতা ফিলিপ বললে, ‘ও সব ভুলে গিয়ে একসঙ্গে কাজকর্ম করো। এলেম দেখাও আগে। এশিয়া আফ্রিকায় প্রচুর আয় করি আমরা। এটাকে সমাজ সেবা মনে করে লেগে পড়ো। শুনেছি দেশটা খুব সুন্দর। একবার যাব স্কি করতে’।

    কীভাবে কত ডলার অর্জিত হয়েছিল, সে গল্পের স্থান এটা নয়। তবে আমাদের সমবেত প্রচেষ্টায় তাঁদের তিজৌরি ভরে যায়। ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে ওলেঙ্কা সেই ঋণের কাগজপত্র সই করার জন্যে আমাদের স্লোভেনিয়াতে পদার্পণের আমন্ত্রণ জানালেন। উন্নয়নশীল দেশে কাজ করার এই লাভ – ইংল্যান্ড-জার্মানি-ফ্রান্সে কোনো খদ্দের এমন আপ্যায়ন করেন না। তাঁরা মনে করেন টাকার থলিটি তাঁদের ঘরে পৌঁছে দেওয়াটাই আমাদের কর্তব্য। দু পয়সা ফি দিচ্ছেন যখন!

    লুবলিয়ানা বিমান বন্দরে আমরা একত্রিত - বায়ারিশে লান্দেসব্যাঙ্কের উলরিখ, ইন্তেসা সান পাওলোর পাউলো, লয়েডস ব্যাঙ্কের সাইমন এবং আমি। এক ঘণ্টার কম সময়ে পৌঁছেছি ব্লেদ। গাড়িতে যাওয়ার সময়ে নাতাশা জানালেন আমাদের প্রোগ্রাম একেবারে ঠাসা – ব্লেদ দুর্গ, সেন্ট মেরির গিরজের দ্বীপ, একটি সারপ্রাইজ আইটেম, সবশেষে খাঁটি স্লোভেনিয়ান ডিনার।

    আবার ব্লেদ! একদিন দেখেছি কুয়াশায় ঢাকা হ্রদ, প্রায় নিথর জল। একটি দ্বীপ, কোথাও যেন পাথরে গাঁথা একটা দুর্গ। কোনো ভোরের অন্ধকারে যেখান থেকে বিদেয় নিয়েছিলাম! সেখানে আসিব ফিরে?



    ব্লেদ দুর্গের প্রাকারে সাইমন পাওলো মাতেই


    অনেক দূরের যে দুর্গ সেদিন দেখা হয়নি, জুন মাসের এক সূর্যকরোজ্বল দিনে তার প্রাকারে দাঁড়িয়ে ওলেঙ্কা আমাকে ব্লেদ লেকের আখ্যান শোনাচ্ছিলেন। ব্লেদের দুর্গ হাজার বছর আগে জার্মান সম্রাট দ্বিতীয় হাইনরিখের বানানো। ‘আহা, ১৮৭১ সালের আগে জার্মানদের কোনো দেশ ছিল না গো’ এই গল্প আমরা করে থাকি, কিন্তু ভুলে যাই যে তথাকথিত পবিত্র রোমান সাম্রাজ্য আসলে ছিল একটি বিশাল জার্মান জমিদারি – সেখানে দাগ ও খতিয়ান নম্বর আলাদা করা ছিল না এই মাত্র। প্রত্যেক সম্রাট জার্মান। তারা সুন্দর জায়গা পেলে মহল বানান, উঁচু জায়গা পেলে প্রতিরক্ষার জন্য দুর্গ। ব্লেদ এই দুইয়ের আশ্চর্য সমন্বয়। পাহাড়ে-সবুজে-জলে মিলে মনভোলানো রেসর্ট, আবার দেওয়ালের ফাঁকে ফাঁকে কামান গুঁজে দিয়ে চলে প্রতিরক্ষার কাজ! সমতল থেকে অনেকটা উঠে কয়েকটা পাথরের গেট পেরিয়ে গেলে রাজকীয় বাসস্থান, দেওয়ালের নিচের অংশে দাস দাসীদের আস্তানা। সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মধ্যযুগের হাতে ঘোরানো ছাপার মেশিন। আপনিও সেখানে হাত লাগাতে পারেন। ফল দেখবেন তৎক্ষণাৎ।



    ওলেংকা

    দ্বীপে যাত্রা


    দুর্গের দেওয়াল থেকে ব্লেদ হ্রদের দৃশ্য অতীব মনোরম। নীল জল বলতে শুনি ভূমধ্যসাগরের বা ফিওর্ডের মত নীল অথবা প্রিয়ার চোখের মতন নীল! শেষেরটা অবশ্যই আপেক্ষিক! কেতাবি মতে কোন হ্রদের জল কতটা নীল, তার একটা র‍্যাঙ্কিং আছে – কানাডার পেইতো, আইসল্যান্ডের ব্লু লেগুনের পরেই ব্লেদের স্থান। জুলিয়ান আল্পস থেকে নেমে আসা গ্লাসিয়ার এখানে আবদ্ধ। ব্লেদ দুর্গের ব্যালকনি থেকে দেখা সেই আশ্চর্য ঘন নীল জলের হ্রদ আমার দেখা টপ টেন দৃশ্যের মধ্যে পড়ে।



    ইচ্ছে ঘণ্টা


    সনত মেরির দ্বীপ


    ষোড়শ শতক।
    ব্লেদ দুর্গের বাসিন্দা পোলোনার স্বামী কয়েকদিন যাবত নিখোঁজ। খবর পাওয়া গেল, বনের পথে দুর্বৃত্তেরা অর্থের লোভে তাঁর স্বামীকে হত্যা করে ব্লেদ হ্রদের জলে ফেলে দিয়ে গেছে। পোলোনা স্থির করলেন, তিনি তাঁর সকল অলঙ্কার বেচে দিয়ে একটি ঘণ্টা বানিয়ে দ্বীপের গিরজেতে দান করে যাবেন। ইতালির পাদুয়াতে সে ঘণ্টা তৈরি হল, কিন্তু পোলোনার দুর্ভাগ্যের শেষ নেই। দ্বীপে পৌঁছুনর পথে নৌকাডুবি – অতলে তলিয়ে গেলো সে ঘণ্টা। দুঃখিনী পোলোনা তাঁর সর্বস্ব পোপকে দান করে একদিন দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন। পোপ বললেন, মহিলার শেষ ইচ্ছে পূর্ণ হোক – তাঁর আদেশে একটি ঘণ্টা ব্লেদ হ্রদের দ্বীপে সন্ত মেরির গিরজেয় প্রতিষ্ঠিত হল। প্রবাদ – লম্বা দড়িটি টেনে এই ঘণ্টা বাজালে আপনার প্রার্থনা সিধে প্রভুর কানে পৌঁছে যাবে। করুণাময় প্রভু নিশ্চয় শুনবেন। কেসটা দেখবেন।



    ইচ্ছে ঘন্টার দড়ি - মায়া


    নাম হয়ে গেল ডুবো বা ইচ্ছে ঘণ্টা।

    দুর্গের নিচের জেটি থেকে নৌকা বেয়ে আমাদের সেই দ্বীপে যাত্রা। সাঁতার ভালো জানি না। লাইফ ভেসট আছে জেনে তবে দাঁড় বাওয়ার পাল্লা হাতে ধরেছি!



    দ্বীপে যাত্রা


    এখানে রোমের ফন্তানা দেই ত্রেভির মতন আবার যেন রম্যা আসা হয় এই প্রার্থনা করে নিয়ে উলটো মুখে পয়সা ছোঁড়ার ব্যাপার নেই। সেখানে রোমের পৌরপিতাদের ডেলি কালেকশন তিন হাজার ইউরো, বছরে দশ লক্ষ। তবে সন্ত মেরির গিরজের বাকসোতে কিছু দিয়ে যেতে পারেন। আপনার মনোবাসনাটি যেন পাঁচ কান করবেন না – তাহলে ডেটা ব্রিচ হবে। প্রভু ব্যক্তিগত আবেদন শোনেন – সামাজিক মাধ্যমের নয়।

    ওলেঙ্কা, মাতেই থেকে শুরু করে বায়ারিশে লান্দেসবাঙ্কের উলরিখ – দলের সবাই দড়ি ধরে একবার ঝুলে গেলেন। উলরিখের মতো শক্তিমান জার্মান যখন ঝুললেন, ভাবছিলাম আশা করি দড়িটি এঁরা মাঝেসাঝে বদলান। নইলে ছিঁড়ে গিয়ে বিপদ বাধতে কতক্ষণ!

    সারপ্রাইজ আইটেম ছিল হাতে-কলমে স্লোভেনিয়ান হেঁসেলের পরিচিতি। দলে পড়ে তাতে যোগ দিয়েছিলাম, কিন্তু সে দেশের অসাধারণ ওয়াইনের গুণে আজ কিচ্ছু মনে নেই।



    রান্নাঘরে কে?


    লুবলিয়ানা


    - গড গিভ মি ভেরা অর গিভ মি ডেথ!

    একদিন সকালবেলা গ্র্যান্ড হোটেল থেকে বেরিয়ে মিকলোসেচিয়েভা সেস্তায় (রাস্তা) ফ্রান্সিস্কান গিরজের পাশ দিয়ে হাঁটছি – পুরোনো শহরের কেন্দ্রবিন্দু সেটা। তিন সেতু দেখতে যাব। দু পা গিয়েই চোখে পড়ল ডান দিকে গিরজের নিচু দেওয়াল বরাবর ঈশ্বরের কাছে কেউ তার প্রার্থনা লিখে রেখেছে কালো চক দিয়ে, একবার নয়, পরপর দু বার। দেওয়ালের এ মুড়ো থেকে ওমুড়ো অবধি। বড়ো বড়ো অক্ষরে এক প্রেমিকের গাড় কালো রঙে লেখা আকুল আবেদন – হয় ভেরাকে, নয় মৃত্যু দাও প্রভু। স্লোভেনিয়ান ক্যাথলিক গিরজের দেওয়ালে ঈশ্বরের কাছে সে ইংরেজিতে অ্যাপ্লিকেশন পাঠাল কেন?

    দাঁড়িয়ে পড়লাম। এই সকালে রাস্তা প্রায় জনশূন্য। কবে সে লিখেছে কে জানে। তারপর কী হল? ঈশ্বর ভেরাকে কি তার কাছে পৌঁছে দিলেন? কী পেল সে? ভেরা না মৃত্যু? সে কি আবার সকলকে জানাবে, এইখানে গিরজের দেওয়ালের বোর্ডে?
    ‘আপনি ভেরাকে দিয়েছেন বলে আমি কৃতজ্ঞ’, অথবা ‘ভেরাকে পাইলাম না, অতএব লুবলিয়ানাচা নদীতে লাফাইয়া পড়িয়া মৃত্যু বরণ করিতে চলিলাম’?

    হাতে সময় কম। দেড় দিনের জন্য লুবলিয়ানা এসেছি আপিসের কাজে। কাল সকালে এই দেওয়ালে কোনো আপডেট আছে কিনা দেখতে হবে।

    আজকের ইতালিয়ানদের দেখলে বিশ্বাস হয় না – গুগল, এক্সেল শিটের সাহায্য ছাড়াই তাদের পিতৃপুরুষ একদিন সারা ইউরোপে প্রকাণ্ড কনস্ট্রাকশনের বিজনেস খুলে ফেলেছিল। এত শহর, বাড়ি, ঠান্ডা-গরম স্নানের এলাহি ইমারত, আনন্দ বিনোদনের জন্য তিরিশ হাজার মানুষ বসার স্টেডিয়াম, হাজার মাইল ব্যাপী রাস্তা যার প্রস্থের অনুসারে আপনার আমার গাড়ির অ্যাক্সেল নির্ধারিত হয়েছে। রোম থেকে দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে জার্মানির ট্রিয়ার শহরে গিয়েছিলাম গত মাসে। বাইশশ বছর আগের গেট পোরতা নিগ্রা এখনও দাঁড়িয়ে আছে – তারাপদ রায়ের লাইন ধার করে বলতে ইচ্ছে করছিল, কী গেট বানালে এত বছরেও একটা পাথর খসে ভেঙ্গে পড়ল না! *

    রোমানরা লুবলিয়ানাতে পা ফেলেন দু হাজার বছর আগে। এখানে বাড়ির তৈরির ভিত খুঁড়তে গেলেই পাওয়া যাবে তাদের সেই সংসারের হদিশ। আর দাঁড়িয়ে আছে অজস্র জার্মান ও খানিক ইতালিয়ান স্থাপত্য। বিগত বারশ বছর লুবলিয়ানা ছিল ব্যাভেরিয়ান ডিউক থেকে অস্ট্রিয়ান সম্রাট, বিভিন্ন জার্মান ভাষী প্রভুদের বাগান বাড়ি। তাঁরা নাম দিয়েছিলেন লাইবাখ (বাখ অর্থ জলের ধারা, স্ট্রিম)। আমার অভিজ্ঞতায় ভিয়েনার কফি হাউসে এ নাম আজও প্রচলিত। স্লোভেনিয়া সেই অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশ, এক্সটেনশন মাত্র (ক্লাগেনফুর্ট থেকে গাড়িতে লুবলিয়ানা আসার পথে বোঝাই যায় না কোনটা অস্ট্রিয়ার শেষ আর স্লোভেনিয়ার প্রথম গ্রাম)। লুবলিয়ানা তার বৈঠকখানা। মনে রাখা ভালো – জার্মান ভাষা ও সংস্কৃতি সীমাবদ্ধ থেকেছে বর্ধিষ্ণু জমিদার, সেনাপতি, অধ্যাপকের মধ্যে, শহর অঞ্চলে। গ্রামের চাষি মজুর সম্পূর্ণ অবজ্ঞাত, অবহেলার পাত্র। বহু বছর বাদে একদিন গ্রাম দিয়ে শহর ঘিরে জার্মান উচ্ছেদ হবে।

    বিশ বছর আগের জনগণনায় মাত্র দেড় হাজার মানুষ জানিয়েছেন জার্মান তাঁদের প্রথম ভাষা!

    আড়াই লক্ষ লোকের বাস এই শহরে। লুবলিয়ানা ইউরোপের সবচেয়ে ছোটো রাজধানী শহর - অ্যান্ডোরা, সান মারিনো ভাদুজকে বাদ দিয়ে – ওগুলো ধর্তব্যের মধ্যে পড়ে না। পুরোনো শহর একটা ওপেন এয়ার মিউজিয়ামের মতন। কোনো সুস্থ সবল মানুষের পক্ষে এক ঘণ্টার ভেতরে টুরিস্ট ম্যাপের অবশ্য দ্রষ্টব্য স্থানগুলি দেখা সম্ভব (পাহাড়ের ওপরের কেল্লাটি বাদে)। তবে সেটা ঐ শুধু ‘দেখে ফেলা’-ই হবে। আমেরিকানরা যাকে বলে, বিন দেয়ার, ডান দ্যাট। প্রথম দর্শনে ভেরার খবরটা দেখা হইলেও যেমন জানা হয় নাই, লুবলিয়ানাও দেখা হয় নাই! দ্বিতীয় বা তৃতীয় বারে চক্ষু মেলেছিলাম।

    যেমন তিন সেতু অথবা তিন সেতুর পথ (ত্রমস্তভিয়ে)।



    তিন সেতু লুবলিয়ানা


    ফ্রান্সিস্কান গিরজের সামনে প্রেশারেন চত্বর ; তিনি স্লোভেনিয়ার রবীন্দ্রনাথ। মাঝখানে তাঁর পূর্ণাবয়ব স্ট্যাচু, চেয়ে আছেন লুবলিনিয়াচা নদীর পানে। আমার পক্ষে একে নদীর গৌরব দেওয়া কঠিন – প্রস্থ অতি ক্ষীণ, আদি গঙ্গার আকার। পার হবার জন্য তৈরি ছশ বছরের এক পুরোনো কাঠের সেতু ভেঙে ইতালিয়ান স্থপতি জিওভানি পিকো একটি পাথরের ব্রিজ বানান (১৮৪২), উৎসর্গ করেন অস্ট্রিয়ান সম্রাট ফ্রান্তসকে। বিগত শতাব্দীতে সেই সেতুতে ঘোড়ার গাড়ি ও মানুষের চলাচলে যানজট সৃষ্টি হতে দেখে স্লোভেনিয়ার খ্যাতনামা স্থপতি ইয়শে প্লেচনিক পদব্রজে নাগরিকদের নদী পারাপারের জন্য দু পাশে দুটি সেতু জুড়ে দেন। তাদের আকৃতি ত্রিভঙ্গ। মূল সেতুর সমান্তরাল নয়, সমতল তো নয়ই! আজ গাড়ি ঘোড়া নয়, প্রধান সেতুটি কেবল পথচারীর প্রয়োজনে ব্যবহৃত। অন্য দুটি বিশেষ কাজে লাগে বলে মনে হয় না, সেলফির আকর্ষণ বাড়ানো ছাড়া। তবে মনে রাখবেন কোনো সেলফিতেই তিনটি সেতুকে একত্রে ধরা যায় না। ‘দ্রোণা’-চার্যের সহায়তা আবশ্যক। লুবলিয়াচা নদীর ওপরে প্লেচনিকের দুটি এবং পিকোর একটি সেতু মিলে মিশে যে অসামান্য ছবি সৃষ্টি করেছে তার তুল্য ইউরোপের কোথাও দেখিনি। হালে ইউনেস্কোর সুরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভের তালিকার অন্তর্ভুক্ত।

    যেমন প্রেশারেন স্কোয়ারের কোনায় হাউপ্টমান হাউস।

    দেড়শ বছরের পুরোনো আডলফ হাউপ্টমানের ছতলা বাড়িটি কোনো নিয়মিত ভূমিকম্পে ধরাশায়ী হয়নি। আর্ট নুভোর (জার্মানে ইয়ুগেনড স্টিল) এহেন উদাহরণ লুবলিয়ানা কেন, স্লোভেনিয়াতে বিরল। একটা নির্দিষ্ট উচ্চতা – ছ তলা অথবা একুশ মিটারের বেশি হবে না কিন্তু তার মধ্যেই লক্ষণীয় স্থপতির খেলা। লাটভিয়ার রিগা শহরে আলবার্ট ইয়েলাতে দেখবেন আর্ট নুভো অট্টালিকার সমারোহ – এ বলে আমায় দ্যাখ, ও বলে আমায় দ্যাখ। সবচেয়ে স্মরণীয় নাম মিখাইল আইজেনস্টাইন (তাঁর পুত্রকে আপনারা চেনেন - চলচিত্র নির্মাতা সের্গেই আইজেনস্টাইন)। অস্ট্রিয়ান স্থপতি হুনডারটওয়াসারের (আসল নাম স্টোওয়াসার) কর্মকাণ্ড বা তার অনুকরণে ভিয়েনা বুদাপেস্ত ভরে আছে। গাউদি বার্সেলোনাকে সাজিয়েছেন। রিগা, বুদাপেস্ত এবং এই লুবলিয়ানা বাদে পূর্ব ইউরোপের আর কোন বড়ো শহরে আর্ট নুভো তেমন দেখিনি।

    ১৯২৫ সনের প্যারিস প্রদর্শনীর পরে দেখা দিলো আর্ট ডেকো যার উচ্চতা বেশি, আকার দৃঢ়, একটু রঙচঙে। মায়ামিতে হাজার খানেক দেখা যায়, একেবারে মোচ্ছব লেগে গেছে। পূর্ব ইউরোপে লিথুয়ানিয়ার কাউনাস, বুখারেস্টে। আমার চোখে কলকাতার ভিক্টোরিয়া হাউস আর্ট ডেকোর দুর্দান্ত উদাহরণ।

    যেমন চার কোনায় চারটি মূর্তি সহ ড্রাগন সেতু। ড্রাগন লুবলিয়ানার প্রতীক। লুবলিয়ানার রক্ষক।

    গত শতাব্দীর গোড়ায় অস্ট্রিয়ান সম্রাট ফ্রান্তস ইওসেফের রাজত্বের জয়ন্তী উপলক্ষ্যে তাঁর নামে এই শক্তিশালী (রি এনফোরসড) কংক্রিটের এই সেতু উৎসর্গ করা হয়। শুনলে অবাক লাগে এই ক্ষীণ নদীর ওপরের সেতুর আর্চ ছিল সে আমলে ইউরোপের তৃতীয় বৃহত্তম! খোদ ভিয়েনায় তখন এই ধরণের কোন কংক্রিটের সেতু ছিল না। অস্ট্রিয়ানরা বিদায় নিলে নব নামকরণ হয় ড্রাগন সেতু – চারটে কংক্রিটের ড্রাগনকে আর্ট নুভোর অসামান্য উদাহরণ বলে মান্য করা হয়। নদী ছোটো ক্ষতি নেই, ব্রিজ খ্যাতিময়!

    যেমন কসাইয়ের সেতু।

    ভালবেসে সখী নিভৃত যতনে চাবিটি ফেলিও লুবলিয়ানাচার জলে। প্রেমিক প্রেমিকা তাদের প্রেমকে তালায় বন্ধ করে চাবি ছুঁড়ে ফেলে নদীর জলে। সে চাবি হারিয়ে যায়, প্রেম রয়ে যাবে অটুট। এই বন্ধ তালার চাবি ছুঁড়ে ফেলার প্রবণতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেখবেন জাগ্রেব আমস্টারডাম প্যারিস বুদাপেস্তে – তালার বিক্রি বাড়ছে কোন সন্দেহ নেই। নিতান্ত বেখাপ্পা শোনাবে জেনেও বলি- লক্ষ করেছি তালাগুলো প্রায় একই চেহারার – মানে এর আশে পাশে কোন সুপার মার্কেটে তালার সেল চলছে!



    প্রেমের প্রতীক - তালা । কসাই সেতু । লুবলিয়ানা


    স্লোভেনিয়া সামান্য অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি নিতান্ত স্বল্প পরিসরে পাহাড় বন নদীর এহেন সমন্বয় দেখতে হলে সুইস অস্ট্রিয়ান জার্মান নয়, জুলিয়ান আল্পসে আসুন! ফিলিপকে বলেছিলাম ফ্রান্সের কুরশেভেল, মেরিবেলের মতন দামি আখড়া ছেড়ে এ দেশ দেখে যান। সেই একই আল্পস, একই স্নো, স্কিইঙ্গের খরচাও কম!

    দেশের মাপে স্লোভেনিয়া, রাজধানী হিসেবে লুবলিয়ানা কোনোটাই বড়ো নয়, কিন্তু হৃদয় ছুঁয়ে যায়। ক্লাগেনফুর্ট থেকে ইউলিখার আল্পসের পাহাড়ি পথ যখন নিচে নামে, চোখে পড়ে ইতস্তত ছড়ানো লাল টালির ছাদ, সবুজ বাগান, শান্তির নীড়। সেই ছবিটি ডেভেলপ করা যায় না। মনে থেকে যায়।




    পুঃ লিলিয়ানার সঙ্গে আর দেখা হয়নি। ইয়ুগোস্লাভিয়াতে গৃহযুদ্ধ বাধার অব্যবহিত পরে সে একজন ক্রোয়াটকে বিয়ে করে অস্ট্রেলিয়া চলে যায়। আজ আড়াই লক্ষ ক্রোয়াট অস্ট্রেলিয়াবাসী।

    * “কী কল বানিয়ে দিলে, ফিলিপস অসরামের চেয়ে ঢের ভালো
    এখনও তোমার সূর্য লক্ষ বৎসরেও ফিউজ হ’লো না
    সাবাস ওস্তাদ”
    -- তারাপদ রায়



    স্লোভেনিয়া পর্ব সমাপ্ত।

    ক্রমশ...

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৬২৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ranjan Roy | ০১ অক্টোবর ২০২৩ ০০:৫৬524079
  • উফ, জমাট এবং হিংসে করার মত অভিজ্ঞতা আর তেমনই ছবিগুলো।
  • হীরেন সিংহরায় | ০১ অক্টোবর ২০২৩ ১০:২৩524100
  • সুখী অতীতের স্মৃতিই আমার সম্বল ! 
     
    গতকাল সারবিয়া সৈন্য মোতায়েন করেছে কসোভো সীমান্তে! ইউ এনের শান্তি রক্ষক বাহিনীর সংগে কসোভোর বেসামরিক মানুষের দ্বন্দ্ব চলেছে। আবার সেই গুঁফো জার্মানের কথাকি আবার ফলবে ? 
  • Ranjan Roy | ০১ অক্টোবর ২০২৩ ২২:৪৬524155
  • ঈশ্বর আমাদের সহায় হোন!
  • Amit | 163.116.***.*** | ০২ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:০১524163
  • যথারীতি অসাধারণ। 
     
    এইটা সত্যি কিন্তু একটা ইন্টারেস্টিং প্রশ্ন। ইনডিয়া পাকিস্তান দেশভাগের পরে তখনকার বড়ো ব্যাংকগুলো কিভাবে একাউন্ট হোল্ডার বা লোন একাউন্ট গুলো সেটল করলো  দুদেশের মধ্যে। তখনো তো বোধহয় সবই প্রাইভেট ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্ক বা রিফাইনারি ন্যাশনালিজেশন হতে হতে আরো অন্তত ২৫-৩০ বছর। বাংলার গল্প যেটুকু জানি বহু ব্যাঙ্কে লালবাতি জ্বলেছিল কয়েক বছরের মধ্যেই। 
     
    এদিক দিয়ে হায়দরাবাদের নিজাম কিন্তু বেশ সেয়ানা কাজ করার চেষ্টা করছিলেন , কিন্তু অতি চালাক হলে যা হয়। তেনার পাকিস্তানে যাওয়ার প্রবল বাসনায় ১৯৪৮ এ এক-দেড় মিলিয়ন পাউন্ডস দুই দেশের কোনো ব্যাঙ্কে রিস্ক না নিয়ে সোজা পাক হাই কমিশন এর লন্ডন ব্যাঙ্ক একাউন্ট এ পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাপ্পর প্যাটেল এর বেদম কোত্কা খেয়ে কয়েক হপ্তার মধ্যে সুড়সুড় করে ইন্ডিয়া জয়েন করে ফেলেন আর ঘোষণা করেন ওই টাকাটা নাকি বেআইনি ভাবে এক মন্ত্রী ট্রান্সফার করেছে। পাকিস্তান ওটা তুলতে পারবে না। সেটা নিয়ে বোধহয় এখনো কেস চলছে। 
    :) :) 
  • হীরেন সিংহরায় | ০২ অক্টোবর ২০২৩ ১২:২৯524172
  • অমিত

    ১৯৪৭ সালের পনেরোই আগস্ট দেশ ভাগ হল কিন্তু ঢাকা করাচীতে রাতারাতি নোট ছাপা হয় নি। ভারতীয় টাকার ওপরে পাকিস্তান স্ট্যাম্প মেরে দেওয়া হয় এমনি চলল পয়লা এপ্রিল ১৯৪৮ অবধি নাসিকের প্রেস থেকে পাকিস্তানের প্রথম কারেন্সি নোট ছেপে করাচী লাহোর ঢাকায় পাঠানো হতে থাকল। আরও বোধ হয় এক বছর বাদে পাকিস্তান নিজের নোট ছাপল। অন্যদিকে ভেবে দেখুন ভারতীয় টাকা চলন ছিল দুবাই বাহরেন কাতার সহ ইরাক এবং কুয়েতে। আজও এসব দেশে সুকে বাজার করতে গেলে দোকানীকে বলতে শুনবেন, এই নিন আপনার ফেরত টাকা !

    ১৩ টাকা দরে ফুললি কনভারটিবল! টাকা শক্তিশালী মুদ্রা।

    এ ব্যাপারে আমার আরও জানার আগ্রহ আছে। একটা কাজও করছি।
  • Sakti Basu | ০৩ অক্টোবর ২০২৩ ১০:২৭524203
  • যত পড়ছি বিস্ময়ে অভিভূত হচ্ছি, তা সে লেখাই হোক বা চিঠির উত্তর হোক। চালিয়ে যাও হীরেন।
  • Kishore Ghosal | ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:৫৫524247
  • @ রঞ্জন রায়, হীরেনবাবুর প্রত্যেকটা লেখা পড়েই - হিংসেয় পুড়ি - কিন্তু হিংস্র হতে পারি না, কারণ ওঁর লেখা আর অনুভব মনে প্রশান্তি এনে দেয়।   
  • Abak Chittri | ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:৫৬524258
  • এ ধরনের তথ্য সমৃদ্ধ লেখা পড়া, একটা অসাধারণ অনুভূতি
  • তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় । | 2401:4900:707e:c9c:9a25:23a0:f43:***:*** | ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ২১:৩০524270
  • তোমার স্মৃতি থেকে এই অসাধারণ তথ্যগুলো আমাদের বিতরণ করছো। উপস্থাপনা খুব সুন্দর। 
    অনেক উপকৃত হচ্ছি ।  এ এক ঐতিহাসিক দলিল। 
    অনেক ধন্যবাদ। 
  • Samaresh Mukherjee | ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:২২524285
  • হীরেন‌বাবুর "দূরে কোথায়" ১৪ই মার্চ শুরু হয়ে ছমাস বাদে ৪৩ পর্বে শেষ হয়েছিল ১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২২. প্রথম পর্বে r2h এর প্রথম মন্তব্য ["....হীরেনবাবুর লেখার যা ধরন তাতে এর সঙ্গে বৃহত্তর প্রেক্ষাপটও আসবে বলে আশা করা যায়"] - অক্ষরে অক্ষরে ফলতে দেখেছি। কত কি যে এসেছে! কিন্তু প্রেক্ষাপটে তানপুরার মতো সমানে বেজে গেছে রাশিয়া ইউক্রেনের দ্বন্দ্বের অতীত এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে‌র সুর।
     
    কোনো পছন্দের বড় লেখা যখন ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হয় - - - পরবর্তী পর্বের জন‍্য অপেক্ষা করতে আমার অধৈর্য লাগে। তাই ভালো লাগা কিছু বড় লেখা, যেমন - মানব জমিন, পার্থিব, একা এবং কয়েকজন, সেই সময়, প্রথম আলো, পূর্ব পশ্চিম, অরণ‍্য দন্ডক, আবার যদি ইচ্ছা করো, ভারতের শেষ ভূখণ্ড, বাঙালনামা, পুত্র পিতাকে….একটা‌না পড়ে মনে হয়েছে - এগুলো ধারাবাহিক হিসেবে ছমাস একবছর ধরে পড়লে এমন আনন্দ পেতাম না। 

    তাই "পূর্ব ইওরোপের ডায়েরি" ২০২২এর  ফেব্রুয়ারি‌র মাঝামাঝি দুটি পর্ব পড়ে, রেখে দিয়েছি‌লাম - মনে হয়েছিল এ জিনিস পাক্ষিক গ‍্যাপে পড়ে মজা নেই, শেষ হলে একটা‌না পড়বো। এখন দেখছি ৪০ পর্বে স্লোভেনিয়া পর্ব শেষ হোলো - তবে চলবে আরো। এবার হয়তো লেট লতিফ ধরতে পারে "পূইডা"।
  • হীরেন সিংহরায় | ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ১০:৪৯524299
  • সকলকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। এতো দিন যে সংগে আছেন সবাই! মনের জানালা এখনো খোলা - বাইরের ঝলমলে আলো এখনো দেখতে পাচ্ছি । তাই এ লেখা! 
  • হীরেন সিংহরায় | ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ১১:০৬524300
  • সমরেশ 
    আমার নিতান্ত এলেবেলে লেখা। পূর্ব পশ্চিম, সেই সময় বাঙালির দর্পণ। আমি আপনার সংগে এক বিষয়ে সহমত। প্রথম আলো, সেই সময় পডেছি পুস্তক আকারে রুদ্ধ নিশ্বাসে! গুরুতে ধারাবাহিক স্মৃতি কথার আগে লিখেছিলাম "আমার জারমানি"। প্রায় একাসনে বসে। আমার আফ্রিকাও তদবত। 
    পূর্ব ইউরোপ ৪০ পর্বে পৌঁচছে বটে কিন্তু প্রথম বিশ পর্ব নিয়ে একটি বই ছাপা হয়েছে (পূর্ব ইউরোপের ডায়েরি - প্রথম খন্ড পোল্যানড রাশিয়া পূর্ব জারমানি)। দূরে কোথায়ের সংকলন "ইউক্রেনের যুদ্ধ"। 
    আপনি বড কঠিন কথাটি বলেছেন - প্রেক্ষাপট। সামান্য স্মৃতি কথা লিখতে গিয়ে দেখি শুধু আমার গল্প বললেই হবে না - সেই প্রেক্ষাপটটিকে সমানে সাজাতে হবে!  ধারাবাহিকে হয়তো সেই সুবিধেটি পাই। বিচার পাঠকের হাতে!
    কত কথা যে বলা বাকি এখনো। আশা করি ধৈর্য হারাবেন না!
  • dc | 2401:4900:1f2b:f844:b909:3953:ce3f:***:*** | ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ১১:১৭524301
  • ভগবান আমায় ভেরা দাও অথবা মৃত্যু দাও - এর দ্বিতীয় পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম :-)
  • zizek | 162.245.***.*** | ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ১২:২০524302
  • আরে এই লুবলিয়ানাতেই তো জিজেকবাবুর বাড়ি। স্লাভো জিজেককে হীরেনবাবু চেনেন নাকি?
     
    উনি পূর্ব ইয়োরোপ ও পশ্চিম ইয়োরোপের পার্থক্য বুঝিয়েছেন এইভাবে:
     
  • হীরেন সিংহরায় | ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:৩৩524305
  • অশেষ ধন্যবাদ আমার কনিষ্ঠা কন্যার কারণে স্লাভো জিজেকের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে পরিচয় আছে। পূর্ব ইউরোপ তথা বলকানের ডায়েরি যদি বই হয়ে কখনও বেরোয় তার পরিশিষ্টে ইতিহাস সমাজ চিন্তা দর্শনে জিজেক, মালেসেভিচ অবশ্যই আসবেন। সামান্য ডায়েরি ছাড়িয়ে বাঙালি পাঠকের কাছে বৃহত্তর ছবিটি পৌঁছে দেবার দায়িত্ব আমারই।
  • হীরেন সিংহরায় | ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:৩৪524306
  • শ্রী ডি সি

    এ পর্বেই লিখেছি – জানা হয় নি সে যুবক কাকে পেলো। মাঝ খান থেকে আমাকে ভাবনায় ফেলে গিয়েছে শুধু।
  • Samaresh Mukherjee | ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:৫১524312
  • হীরেন‌বাবু,
    "দূরে কোথায়" - লেখা‌র ওপর আমার মন্তব‍্যে একটি বাক‍্যের (কিন্তু প্রেক্ষাপটে তানপুরার মতো সমানে বেজে গেছে ….)  প্রেক্ষিতে আপনার প্রতি মন্তব‍্যে দুটি বাক‍্য (আপনি বড় কঠিন কথাটি বলেছেন - প্রেক্ষাপট। সামান্য স্মৃতি কথা লিখতে গিয়ে দেখি শুধু আমার গল্প বললেই হবে না - সেই প্রেক্ষাপটটিকে সমানে সাজাতে হবে!)  - পড়ে একটু খটকা লাগলো।  
     
    তাহলে কী আমি যা বলতে চেয়েছি তা ঠিক ভাবে পৌঁছায় নি?  কোনো ভুল বার্তা দিলো? নাকি আমি যা বলতে চেয়েছি আপনি‌ও আপনার অনুরণিত ভাবনায় তাই ব‍্যক্ত করেছেন? আমি‌ই তা বুঝতে পারলাম না। মনে ধন্দ রেখে দেওয়ার থেকে খোলসা করা ভালো। তাই বলি - ঐ "তানপুরার ধুঁয়োটাই" আমার ঐ লেখা‌র প্রাণ বলে মনে হয়েছে। তার ফলেই স্মৃতি‌চারণ ও বর্তমান ঘটনা‌প্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে ব‍্যক্তি অভিজ্ঞতাভিত্তিক লেখাটি‌র বৃহত্তর প্রেক্ষিতে মানবিক উত্তরণ ঘটেছে।
  • হীরেন সিংহরায় | ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:৩৩524313
  • সঠিক ভাবে বলতে পারি নি। সেই ইহুদি রসিকতা লেখার সময় থেকে একটা কথা মনে পাখি- আমি যে বিষয়ে লিখছি তা আমার পাঠকের কাছে হয়তো তেমন পরিচিত নয়। অচেনা দেশ অজানা সমাজ - তাই খানিকটা গৌর চন্দ্রিকা করতে হয় । তাকে  আমি প্রেক্ষাপট বলতে চেয়েছি - আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কৃতী ছাত্র আমাকে সতর্ক করেছিল - মনে রেখো কাদের জন্য লিখছ আর সেই পট বা চালচিত্র যেন খুব ভারী না হয়। পাঠককে সংগে নিয়ে চলো বন্ধুর মত, যেন ঘাড়ে হাত দিয়ে গল্প করছ। সেটাই বুঝি তানপুরার ধোঁয়া! বোঝাতে পারলাম কি? 
  • Samaresh Mukherjee | ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ২০:৪৮524315
  • আপনি "প্রেক্ষাপট" বলতে গৌরচন্দ্রিকা ভেবেছেন - আমি কিন্তু তা বলতে চাইনি। "দূরে কোথায়" লেখা‌র ক্ষেত্রে পাঠ মন্তব‍্যে আমি "প্রেক্ষাপট" হিসেবে যে তানপুরার ধুয়ো বা সানাইয়ের পোঁ-এর উপমা দিয়েছি - আমার কাছে সেটা হচ্ছে লেখাটির Core Focus = রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব, সংঘাত -  যেটা নানা পার্শ্বপ্রসঙ্গ, পটভূমি ব‍্যাখ‍্যান সত্ত্বেও হারিয়ে যায়নি - বার বার ঘুরেফিরে এসেছে। তার ফলেই লেখাটি ব‍্যক্তিগত অভিজ্ঞতার পরিসর ছাড়িয়ে বৃহত্তর মাত্রা পেয়েছে।
    লেখক হিসেবে আপনি যাই ভেবে থাকুন - পাঠক হিসেবে আমার ভাবনা বোঝাতে পারলাম কী?

    ব‍্যস্ত, সময়-তৃষিত, প্রোটিন‌প্রেমী পাঠকের আঁটসাঁট, মেদহীন লেখা পছন্দ। কিছু ক্ষেত্রে তেমন লেখা আমার‌ও অপছন্দ নয়। তবে তেমন রচনা‌ আমার লাগে কোট টাই পরে, এ্যাজেন্ডা ধরে কর্পোরেট মিটিং এ্যাটেন্ড করার মতো। 

    বিস্তৃত ক‍্যানভাসে স্মৃতি‌চারণমূলক রচনায় আসবে নানা পার্শ্বপ্রসঙ্গ - সেটা‌ই স্বাভাবিক। তেমন রচনা পড়ার আনন্দ - বাড়ি‌তে লুংগি, ফতুয়া পরে কজন বন্ধুদের সাথে বৈঠকী মেজাজে আড্ডা দেওয়ার মতো। তার স্বাদ আলাদা। যেমন লেগেছে - রঞ্জন রায়ের "হারানো কলকাতার গল্প"- একটু আলুথালু প্রকাশ‌ভঙ্গি, একটু আগে পিছে প্রসঙ্গ - ওটাই আমার কাছে ঐ আলেখ‍্য‌র USP মনে হয়েছে। 

    মণীন্দ্র গুপ্ত‌র "অক্ষয় মালবেরী" গোছের অতি সচেতন, সংযত, পরিশীলিত ভাষায় লেখা হলে আমার কাছে "হাকগ" তার অনেক‌টা‌ই মাধূর্য হারাতো। আমি মধ‍্যমেধার সাধারণ পাঠক, তাই কখনো লেখ‍্য বিষয় একটু অ-সাধারন, জটিল হলেও গল্পদাদুর আসরের মতো আপনার প্রাঞ্জল ভঙ্গিতে, রম‍্যরসময় লেখা‌র ধরণে, পড়তে ভালো লাগে, বিষয়টা কিছুটা বোঝা‌ও যায়। এই মুন্সীয়ানা সহজে আয়ত্তাধীন নয়।

    একদম সঠিক বলেছেন - আপনার লেখা‌র বিস্তৃত প্রেক্ষাপট (ভৌগোলিক, ঐতিহাসিক, ভূ-রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক) আমার মতো অনেকে‌র‌ই হয়তো অজানা বা আংশিক জানা। তাই তার ওপর আড্ডা‌র ছলে কিছু আলোকপাত অবশ‍্য‌ই জরুরী। না হলে ঘটনাপ্রবাহের পটভূমি‌টাই বোঝা যাবে না। অমন গৌরচন্দ্রিকা আমার কাছে অতীব সুস্বাদু - মূল আহারে‌র সাথে আচার, সস, স‍্যালাডের মতো।
  • হীরেন সিংহরায় | ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:৫৯524333
  • ঠিক ঠিক! আমরা একই পাতায়। আর দশটা দেশের গল্প বলতে আরেক বছর লাগবে! সংগে থাকুন। উৎসাহ এবং পাথেয় পাবো । 
     
    কতটা সময় হাতে আছে কে জানে । বাহাদুর শাহ জফর ( মতান্তরে আকবরাবদী) বলেছিলেন  " দীর্ঘ জীবনের ভিক্ষা করে এনেছিলেম চার দিন । প্রার্থনায় কাটল দু দিন আর দু দিন প্রতীক্ষায়!(  "उम्र-ए-दराज़ माँग के लाए थे चार दिन/ दो आरज़ू में कट गए दो इंतिज़ार में")
  • Amit | 220.24.***.*** | ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:৫৭524336
  • "পাঠককে সংগে নিয়ে চলো বন্ধুর মত"- লাইন টা দারুন লাগলো। সত্যিই এই লেখাগুলো পড়তে পড়তে মনে হয় যেন নিজে ঘুরে বেড়াচ্ছি ওখানে। 
  • মোহাম্মদ কাজী মামুন | ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ২৩:২৪524434
  • আমড়াগাছি,মাধুকরী ভিক্ষা মার্গদর্শক - এসবের অর্থ জানা নেই হীরেনদা। 
    দ্বীপে যাত্রা ছবির লাল গেঞ্জি পরিহিত মানুষটি কি আপনি? কী সুন্দর দেখাচ্ছে! 
    লেখাটা মিঠেকড়া রৌদ্রের মতই ঝলমল করছে। আর কী মনমাতানো নয়নসুখ সব ছবি! 
    " পবিত্র রোমান সাম্রাজ্য আসলে ছিল একটি বিশাল জার্মান জমিদারি" 
    জানা ছিল না। 
    "গ্রামের চাষি মজুর সম্পূর্ণ অবজ্ঞাত, অবহেলার পাত্র। বহু বছর বাদে একদিন গ্রাম দিয়ে শহর ঘিরে জার্মান উচ্ছেদ হবে।/
    বিশ বছর আগের জনগণনায় মাত্র দেড় হাজার মানুষ জানিয়েছেন জার্মান তাঁদের প্রথম ভাষা! "
    বাংলা ভাষার তাহলে কী হবে? সেও কী একই পরিণতি বরণ করবে? 
  • হীরেন সিংহরায় | ১০ অক্টোবর ২০২৩ ০১:২৯524440
  • না মামুন । ওই লাল গেনজীর মালিক আমি না! আমার জারমানি বইতে আমি পবিত্র রোমান সামরাজ্য
    ইতিহাস লিখেছি - ইউরোপের রাজধানী পর্বে। প্রথম সমরাট শারলামেন থেকে শেষ ফ্রানসিস সবাই জারমান ভাষী।
     
    সর্বত্র একই ইতিহাস জমিদার জারমান খেটে খাওয়া মজুর চাষী স্থানীয় মানুষ। অর্থে নয় সংখ্যায় ভারী
     
    আজকের কলকাতা শহরে ৪৫% বাংলা প্রথম ভাষা বলে দাবী করেন। মোবিন ভাই বহুকাল আগে আমায় বলেন কলকাতা শহরে বাংলা বলার প্রয়োজন হয় মা
  • মোহাম্মদ কাজী মামুন | ১০ অক্টোবর ২০২৩ ২১:৩৭524458
  • ""মোবিন ভাই বহুকাল আগে আমায় বলেন কলকাতা শহরে বাংলা বলার প্রয়োজন হয় মা""
    সেদিন হয়ত দূরে নয়, বাংলাদেশেও প্রয়োজন হবে না। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল মতামত দিন