এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  শনিবারবেলা

  • পূর্ব ইউরোপের ডায়েরি - রাশিয়া ৫

    হীরেন সিংহরায়
    ধারাবাহিক | ২৭ আগস্ট ২০২২ | ৩১৪৫ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • বার্লিন দেওয়ালের পতনের পরে পূর্ব ইউরোপের দরোজা খুলে গেলো। লৌহ যবনিকা উত্তোলিত হলেও একটা অজানা অস্বস্তি থেকে গেছে মনে। তাই নয়ের দশকে সপ্তাহান্তের ছুটিতে প্রাগ বা বুদাপেস্ট যাবার কথা আমরা কেউ ভাবিনি, মস্কো সেন্ট পিটার্সবুর্গ আরও অনেক দূরের দ্বীপ। হেলসিঙ্কির বন্দরে এসপ্লানাদির বেঞ্চে বসে নৌকো আর জাহাজের আনাগোনা দেখছি আনমনে। পিরকো বললে লাপল্যান্ড যাবে? আমি বললাম শুধু লাপল্যান্ড কেন? সেখানে তো তিনটে দেশ এসে মেলে, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, রাশিয়া। সর্বত্র না হয় পদধূলি দিয়ে আসি!
    আমার যে সব দিতে হবে - মস্কো ১৯৯০


    তৈল তণ্ডুল (১)


    ১৯৯৫



    য়োখেন মলারের ফোন ড্রেসনার ব্যাঙ্ক লুক্সেমবুর্গ থেকে।
    সে বললে, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরিতে সিটি ব্যাঙ্ক দেদার ছড়ি ঘোরাচ্ছে দেখি। রাশিয়া বাদ কেন?

    পূর্ব ইউরোপের বাজারে আমাদের পদসঞ্চার তারা লক্ষ্য করে যাচ্ছে। বিশ্বের বাজার থেকে পোল্যান্ডের জাহাজ কারখানা, হাঙ্গেরির ব্যাঙ্ক, চেকের বিদ্যুৎ উৎপাদক, ইত্যাদি অজানা অচেনা প্রতিষ্ঠানের জন্য বিদেশী মুদ্রায় ঋণ সংগ্রহ করে আমরা শুধু ইতিহাস লিখিনি, ড্রেসনার সহ আরও অনেক পশ্চিমি ব্যাঙ্কের ঈর্ষা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। তবে এই ব্যাঙ্কের সঙ্গে আমার বিশেষ সম্পর্ক ছিল।

    জার্মানিতে পদার্পণের পরে ড্রেসনার ব্যাঙ্কে আমার ছ’মাসের ট্রেনিং হয়। তাঁরাই আমাকে ভাষা শিখতে পাঠান আপন খরচে। সেই বদান্যতার ঋণ শোধ হবার নয়। বাকি জীবন সেটি ভাঙিয়ে খেয়েছি। কয়েক বছর আগে জার্মানির কমারৎস ব্যাঙ্কের সঙ্গে মিশে গিয়ে ১৮৭২ সালে ড্রেসডেন শহরে প্রতিষ্ঠিত এই ব্যাঙ্কটির নাম আজ লুপ্ত।

    ১৯৯০ সাল নাগাদ ড্রেসনার ব্যাঙ্ক তাদের যাবতীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কিং ব্যবসা ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে লুক্সেমবুর্গে স্থানান্তরিত করে। তার প্রাথমিক কারণ লুক্সেমবুর্গের শিথিল ব্যাঙ্কিং তাঁবেদারির সুযোগ্য সদ্ব্যবহার করা এবং কর্পোরেট ট্যাক্স বাঁচানো। তবে এর পিছনে আরেকটা গভীর উদ্দেশ্য নিহিত ছিল। বার্লিনের ছেলে দিতমার এই স্থানান্তকরণের হোতা – সে আমাকে বলেছিল, ফ্রাঙ্কফুর্টের মুখ্যু বড়সাহেবরা আমাদের ব্যবসা বোঝে না; তারা কেবল জানে তোমার-আমার কাছে সস্তায় টাকা ধার নিয়ে বেশি সুদে অন্যদের ধার দিতে। তবু তাদের শ্যেন দৃষ্টি নিক্ষেপ করে প্রত্যহ। নিত্যিদিনের খবরদারি অকারণ যন্ত্রণা বাড়ায়।

    লুক্সেমবুর্গের আরেকটি আকর্ষণ, তার ব্যক্তিগত আয়কর আদায়ের নিয়মাবলী। সে দেশ চায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি – একটা সময় ছিল, যখন চারটি সন্তান হলে দেয় আয়করের পরিমাণ প্রায় শূন্যে পৌঁছত। লুক্সেমবুর্গে পেট্রোলের দাম কম! শনি-রবিবারে জার্মান, বেলজিয়ান, এমনকি ডাচ গাড়ির লাইন দেখেছি পেট্রোল পাম্পে। জার্মানির পশ্চিম প্রান্তের ট্রিয়ার শহর (যেখানে কার্ল মার্ক্সের জন্ম) থেকে লুক্সেমবুর্গ এক ঘণ্টাও লাগে না গাড়িতে। নিজের দেশে থাকা হল, আবার প্রত্যহ বিদেশে কাজ করতে গিয়ে সস্তার তেল-সিগারেট জুটল। যেমন অজস্র ফরাসি তাঁদের আপন গ্রাম থেকে জেনিভায় দৈনন্দিন ক্ষেপ মারেন। কথিত আছে, দুপুর নাগাদ জেনিভার জনসংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। ফরাসি কর্মীকূল সন্ধেবেলা আপন দেশে ফিরে গেলে জেনিভা খানিকটা নির্জন হয়ে পড়ে। দিতমার যে ঠিক কী ভাবে ফ্রাঙ্কফুর্টের উরগেন পনটো প্লাতসের ছত্রিশ তলার বড়সাহেবদের এই সব সাত-পাঁচ বুঝিয়ে-সুঝিয়ে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কিং বিভাগটি লুক্সেমবুর্গে নিয়ে আসতে সক্ষম হয় জানি না, তবে সেই সময় থেকেই তার সঙ্গে আমার পরিচয় ঘনীভূত হয়েছিল।

    উন্নয়নশীল দেশগুলিতে, বিশেষ করে নব উন্মোচিত পূর্ব ইউরোপের জন্য বাজারে হানা দিয়ে ডলার, মার্ক, ইয়েন যোগাড় করে খ্যাতি ও পারিশ্রমিক (ফি) অর্জনের জন্য উদগ্রীব সিটি ব্যাঙ্কের সঙ্গে ড্রেসনার ব্যাঙ্ক লুক্সেমবুর্গের এক নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে নয়ের দশকে। আমরা একদিকে যেমন একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী, তেমনি অনেক সময় সহযোগীও ছিলাম। চোরে চোরে মাসতুতো ভাই বললেও ভুল হবে না। খদ্দেরের পকেটের বোঝা হালকা করার মহান উদ্দেশ্যে সকল ব্যাঙ্ক নিয়োজিত। এক সূত্রে বাঁধিয়াছি সহস্র ধান্দা।

    সে এক আশ্চর্য সময় ছিল। ১৯৮৯ সালের বার্লিন দেওয়াল পতন, নেলসন ম্যান্ডেলার কারামুক্তি, তিয়ানানমেন স্কোয়ারের ঘটনাবলি, ভারতীয় অর্থনীতির উন্মোচন এনে দিয়েছে এক নতুন উন্মাদনা – একদিকে আমরা খুঁজেছি নতুন বাজার, নতুন ঋণ গ্রহীতা – সে ক্রোয়েশিয়ান রেলওয়ে, কলকাতা বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান, রোমানিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক, স্লোভাকিয়ার টেলিফোন কোম্পানি, চিলির ব্যাঙ্ক, সেনেগালের চিনেবাদাম কোম্পানি – যাই হোক না কেন; অন্যদিকে এই সুসমাচার নিয়ে টাকা যোগাড় করার বাসনায় হানা দিয়েছি পশ্চিমের ধনী অর্থ প্রতিষ্ঠানের দুয়োরে। দীর্ঘদিনের অপরিচয়ে ঋণদাতা ও গ্রহীতার মাঝে যে শঙ্কা ও দ্বিধার প্রাচীর গড়ে উঠেছিল, সেটা বার্লিন দেওয়ালের চেয়ে কম দুর্ভেদ্য ছিল না। এঁরা রবার্ট ম্যাক্সওয়েলের মতন চেনা ডাকাতকে ধার দিতে কুণ্ঠা করতেন না, কিন্তু পোল্যান্ডের কোম্পানিকে জাহাজ বানানোর জন্য টাকা দিতে গভীর চিন্তায় পড়তেন।

    আমাদের মস্কো শাখা সবে খোলা হয়েছে। ড্রেসনার ব্যাঙ্কের রাশিয়া অফিস খোলা হয়েছে তার অনেক আগেই, সোভিয়েত ইউনিয়নের আমলে। আমার প্রিয় বন্ধু কার্ল শ্লুয়ে প্রথমে সেন্ট পিটার্সবুর্গ (মেয়রের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা জনৈক ভ্লাদিমির পুতিন, কার্লের বাড়িতে আসতেন – তার ছবি দেখেছি) ও পরে মস্কোর ব্রাঞ্চ ম্যানেজার হয়। তার কাছে গল্প শুনি, মস্কো বিমানবন্দরে নেমে সে দেখে, তার জন্য অপেক্ষা করছে যে বুলেটপ্রুফ কালো মার্সিডিজ গাড়ি, তার ড্রাইভারের পাশে অধিষ্ঠিত বন্দুকধারী এক সুরক্ষা প্রহরী। সেকালে নাইজেরিয়ার লাগোস বিমানবন্দরে সিটি ব্যাঙ্ক আমাদের জন্য পাঠাত একইরকম রক্ষীসহ বাহন।

    ফ্ল্যাটের চাবি ঘোরাতে গিয়ে কার্ল দেখে, সেখানে একটা নয়, দুটো দরোজা। প্রথমটি সম্পূর্ণ স্টিলের, তারপর আধ মিটার গ্যাপ – এবার একটি সশক্ত কাঠের দরোজা – সেটি খুললে গৃহে প্রবেশ করা যায়। কার্লের মনে হয়েছিল, বাসভবন নয়, সে একটা সিন্ধুকের ভেতরে ঢুকছে। ফ্ল্যাটের জানলা দিয়ে কার্ল দেখেছে বাড়ির সামনে রাস্তায় একজন গাড়ি পার্ক করার পরে একে একে খুলে নিলেন গাড়ির স্টিরিও, জানলার ওয়াইপার, দরোজার পাশের আয়না। সেগুলি সুরক্ষিত করে ব্যাগে পুরে আপন আস্তানায় গমন, নইলে রাতে সব চুরি হয়ে যাবে।

    স্টুয়ার্ট উইলসন, আমাদের প্রথম ব্রাঞ্চ ম্যানেজার, সান্ধ্যভোজনের পরে এক বন্ধুসহ আরবাতস্কায়া নামক বিখ্যাত সরণিতে ট্যাক্সির অপেক্ষা করছেন। কোনো ট্যাক্সি চোখে পড়ে না। হঠাৎ একটি গাড়ি থামল, তার নাকের ডগায় পতাকা বাঁধা। বেরিয়ে এলেন এক ভদ্রলোক – অত্যন্ত উত্তেজিত কণ্ঠে বকাবকি শুরু করলেন।

    আপনারা কী উদ্দেশ্যে এখানে দাঁড়িয়ে আছেন?

    আমরা সিটি ব্যাঙ্ক মস্কোয় কাজ করি। ডিনারের পরে বাড়ি ফিরব। ট্যাক্সি খুঁজছি।

    শহরে নতুন? দেখুন, এটা মস্কো। প্যারিস, বার্লিনের মত রাস্তায় দাঁড়িয়ে ট্যাক্সি ধরা যায় না। কোনোকালে হয়তো এ দেশে আইনকানুন ছিল আজ নেই। খুঁজলে ট্যাক্সি পাবেন না সরাসরি কোনো বিপদে পড়বেন। আসুন আপনাদের পৌঁছে দিচ্ছি। চিন্তার কারণ নেই, গাড়ির সামনে পতাকাটা দেখে নিন। আমি আমেরিকান এম্বাসিতে কমার্শিয়াল আতাশে।

    মস্কো তখন ওয়াইল্ড ইস্ট।

    ১৯৮৫ সালে পলিতব্যুরো যাকে সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বেসর্বার পদে অধিষ্ঠিত করে, সেই মিখাইল গরবাচভ চাইলেন সামাজিক ও অর্থনীতিক কাঠামোর পরিবর্তন। স্তালিনিজমের অন্তিম সৎকার। দু’টি রাশিয়ান শব্দ বিশ্বে বিদিত হয়ে গেল তৎক্ষণাৎ! গ্লাসনস্ত এবং পেরিস্ত্রইকা।

    যতদূর শুনেছি গলা (গোলাস) খোলার অধিকার বা বাক স্বাধীনতার নাম গ্লাসনস্ত এবং পুনর্গঠন বা পুনর্নির্মাণের নাম পেরিসত্রইকা। অভিপ্রায় নিঃসন্দেহে ছিল সাধু – কেন্দ্রীয় নির্দেশ দ্বারা ব্যক্তিকে উপেক্ষা করে সমষ্টির শুভ সাধনা করার যে আপাত প্রয়াস চলে এসেছিল স্তালিনের সময় থেকে, সেটির ব্যর্থতা স্বীকার করলেন গরবাচভ। লক্ষ্য – এক স্বচ্ছ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলে দেশের নবনির্মাণ ব্রতে ঝাঁপিয়ে পড়া। এবার ব্যক্তি তার মত প্রকাশের অধিকার পেল। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ, মতান্তরে কেজিবি নিরুদ্দেশ। অন্ধের নগরী, চৌপট রাজা। বাজার থেকে অদৃশ্য হল খাবার। ১৯৯০-এর আগে লাইন দিলে কিছু জুটত। যদিও মস্কোর বাজারে একটা রসিকতা চালু ছিল – কোথাও লাইন দেখলেই মানুষ দাঁড়িয়ে পড়তেন, পরে জানতে চাইতেন এটা কিসের লাইন। জনজীবন বিপর্যস্ত, তার কিছুটা আগেই দেখেছি সেন্ট পিটার্সবুর্গে।



    লাইন লাগাও - মস্কো ১৯৯২


    একের পর এক রিপাবলিক ভ্রাতা সোভিয়েত সংসার ছেড়ে গেছে। এবার রাশিয়ার একলা পথ চলা শুরু। ১৯৯১ সালে বড়দিন নাগাদ সোভিয়েত ইউনিয়নের এন্তেকাল। লেনিনের দেশে কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ হল।

    য়োখেন জানতে চায়, পুবের অভিযান তো শুরু করেছি – রাশিয়া সম্বন্ধে আমাদের কী মত?

    ইচ্ছে থাকলেও বলা গেল না, সিটি ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠার বছরে নাপোলেওঁ এবং তার একশ’ উনত্রিশ বছর বাদে তোমাদেরই নেতা রাশিয়া অভিযানে গিয়ে বিশেষ সুবিধে করতে পারেননি। ন্যাড়া কী হেতু তৃতীয়বার বেলতলায় যাবে?



    ম্যাকডোনাল্ড মস্কো ১৯৯০: তিরিশ হাজার লাইন দিয়েছিলেন


    বললাম, মস্কোয় দোকান দিয়ে ম্যাকডোনাল্ড দিনে এক লক্ষ হামবুর্গার বেচলেও আমাদের বড় সাহেবরা রাশিয়ার ব্যাপারে বিশেষ স্বস্তি বোধ করেন না। ইয়েলৎসিন বাজার খুলে দিয়েছেন বটে, কিন্তু সেখানে পথেঘাটে দিনেদুপুরে চুরিডাকাতি হচ্ছে। ব্যক্তিগত মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত এমন কোনো কোম্পানি নেই, যারা অন্তত দু’বছরের ইতিহাস দেখাতে পারে। সামান্য ভাউচারে সই করে সরকারি তেল কোম্পানিকে কিনে নিচ্ছে কিছু সুবিধেবাদী। অগতির গতি পুরো সরকারি প্রতিষ্ঠান। ঝুঁকি হিসেবে তারা অবশ্যই কাম্য, কিন্তু ব্যাল্যান্স শিট তৈরি করা তাঁদের বুদ্ধির বাইরে। ঋণ যদি আমরা আমাদের আপন মুদ্রায় ফেরত না পাই, রাশিয়ান সরকারকে আদালতে নিয়ে যাওয়া যাবে না। দ্যাখোনি, যে কোনো ঋণপত্রে সার্বভৌমতাকে অতিক্রম (সভারেন ইমুনিটি) করা যাবে না বলে দাসখত লিখে দিয়ে থাকি! চেক পোল্যান্ড হাঙ্গেরিতে এটা অনেকটা আলাদা – তাই অনুমতি পাওয়া সহজ হয়েছে।

    আমাদের মস্কো অফিস সবে খুলেছে। নতুন দেশের বাণিজ্যিক নীতি পদ্ধতি আমাদের চেনা ম্যানহাটানের পাঠ্যপুস্তক থেকে অনেকটাই আলাদা। কীভাবে এদের মিলন ঘটিয়ে দু’পয়সা করা যায়, সেই চিন্তায় লন্ডন স্ট্রান্ড রোডের চারতলায় আমাদের ক্রেডিট গুরুরা নিমজ্জিত হয়ে আছেন। ব্যবসাবাণিজ্যের গতি মন্থর। আয় নগণ্য আর ব্যয় আকাশছোঁয়া। মস্কোর হোটেল ঘরের ভাড়া কম করে দিনে আড়াইশ’ ডলার, ঠিক সে সময়ে অর্ধেক খরচায় থেকেছি নিউ ইয়র্কের বার্কলে ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে। একদা বার্লিনে কাঁটাতার, ইটের দেওয়ালের এ’পার দেখেছে ও’পারের আলো, ও’পার দেখেছে অন্ধকার। আজ কোনো দেওয়াল নেই। আজ দু’টি বিভিন্ন আর্থিক ব্যবস্থা দাঁড়িয়েছে মুখোমুখি। এক সংঘর্ষ অনিবার্য।

    একটি ঘটনা খুব মনে পড়ে।



    ফ্রাঙ্কফুর্টার হোফ


    মার্চ, ১৯৯৫। ফ্রাঙ্কফুর্টের কোনো হোটেলে একটি পথসভা (রোড শো) চলছে। তার হোতা একটি বিখ্যাত জার্মান ব্যাঙ্ক। এক রাশিয়ান প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫০ লক্ষ ডলার সংগ্রহ করতে চান আন্তর্জাতিক বাজার থেকে। প্রথামত জার্মান ব্যাঙ্কের বক্তারা পরিচয় করিয়ে দিলেন সেই রাশিয়ান প্রতিষ্ঠানটির বোর্ড চেয়ারম্যান এবং সিইও-র সঙ্গে। তাঁরা দু’জন স্বল্পভাষী, ইংরেজিতে স্পষ্টত অস্বচ্ছন্দ। আয়োজক জার্মান ব্যাঙ্ক এবং সমাগত আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কারদের ধন্যবাদ জানালেন – তাঁরা সভায় এসেছেন, এই প্রকল্পে ঋণ দানের বিষয়টি বিবেচনা করছেন বলে। কোম্পানির শীর্ষ আধিকারিকদের কাছে এর বেশি আশা করা যায় না। তাঁদের ভাষণের পরে উঠলেন তাতিয়ানা, তিনি সেই কোম্পানির ফাইনান্সিয়াল ডিরেক্টর। ইংরেজি ও জার্মান দু’ভাষায় তিনি সমান দক্ষ বলে শুনেছি। ভাষণটি বাধাহীন ইংরেজিতে দিলেন।

    সম্ভাব্য ঋণদাতারা জানতে চান কোম্পানির অর্থনৈতিক খুঁটিনাটি, বিগত ট্র্যাক রেকর্ড ও ভবিষ্যতের যাত্রাপথ সম্বন্ধে কিছু বাণী। এই কোম্পানির ইতিহাস তিন বছরের পুরনো। তার আগে এটি ছিল সোভিয়েত সরকারের একটি বিভাগ মাত্র। সেখানে ছিল না কারো কোনো ব্যক্তিগত দায়িত্ব। সবাই ছিলেন সরকারি কর্মচারী। শেয়ার হোল্ডার নামক দানবের আবির্ভাব তখনও হয়নি, তাই আয়-ব্যয়ের হিসাবের দাবিদার ছিলেন না কেউ। তাতিয়ানা পেশ করলেন বিগত তিন বছরের আয়-ব্যয়, বাণিজ্যের সংখ্যানুক্রমিক বিবরণ, আগামী তিন বছরের পথচিত্র বা রোডম্যাপ। এরপর প্রশ্নোত্তরের আসর। কোম্পানির অফিসাররা কখনও বিদেশী কেন, দেশি ব্যাঙ্কের প্রশ্নের সামনাসামনি মোকাবিলা করেননি (দেশি ব্যাঙ্কের একমাত্র কাজ ছিল অর্থ সরবরাহ করা, এক ডিপার্টমেন্ট যেমন অন্য ডিপার্টমেন্টকে জিনিস পাঠায়)। এটা আমি অন্যান্য দেশেও, যেমন পোল্যান্ডের রোড-শোতে দেখেছি আগের বছরে, ভিয়েনাতে। নানান ব্যাঙ্কের প্রতিনিধি চোখা চোখা প্রশ্ন করলেন – এই সংখ্যাগুলি পরীক্ষিত (অডিটেড) কিনা, কোনো বিদেশি সংস্থা তা করেছেন কিনা। তাতিয়ানা কোনোমতে তাল দিয়ে গেলেন। বোমাটি ফাটাল ডেকা ব্যাঙ্কের পিটার হফমান। সে আমার বহু দুষ্কর্মের সাগরেদ। মাইন্তসে তার বাড়িতে থেকেছি। রাইনের পাড়ে হেঁটেছি।

    পিটার বললে, “আপনার দেশের বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ার তেমন বড় নয়। ধরুন আপনারা দেশে ভাল ব্যবসাবাণিজ্য চালালেন। ধার শোধ দেবার সময় আপনারা রুবলের গোছা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ককে দিয়ে ডলারে পরিবর্তন করার অনুরোধ করলেন। তাঁরা যদি কোনো কারণে সেটি মান্য করতে অস্বীকার করেন, তাহলে আমাদের ডলার কী উপায়ে ফেরত পাব?”

    আমাদের ভাষায় মুদ্রা বিনিময়ের ঝুঁকি।

    তাতিয়ানা একবার আপন বোর্ড চেয়ারম্যান, একবার সিইও-কে নিরীক্ষণ করলেন। তাঁরা প্রস্তর মূর্তিবৎ বসে আছেন। নীরবতা বাঙ্ময়। উপায় না দেখে তিনি নিজের হাতে রাশ তুলে নিলেন। এ যাবৎ অনুষ্ঠান ইংরেজিতে চলছিল। এবার পিটারের চোখে চোখ রেখে পরিষ্কার জার্মানে বললেন, “সে ধরনের কোনো পরিস্থিতি যদি দেখা দেয়, আমরা নিজেদের দেউলিয়া বলে ঘোষণা করব। আমাদের ব্যবসা (ইস্পাত) দেশের ও রাষ্ট্রের পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকার তখন এগিয়ে এসে এ সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবেন – আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ককে বিদেশী মুদ্রা সরবরাহ করার নির্দেশ দেবেন, যা থেকে আমাদের ঋণ শোধ হবে। অতএব এ বিষয়ে আপনাদের ঋণ দাতাদের, কোনো সন্দেহ থাকা উচিত নয়”।

    ফ্রাঙ্কফুর্টার হোফ হোটেলের সভাগৃহে সমবেত ব্যাঙ্কিং মাতব্বরদের নীরবতা সহজেই অনুমেয়।

    চোখের সামনে দুই পৃথিবীর সংঘর্ষ দেখছি। সত্তর বছর দু’টি বিভিন্ন আর্থিক ও সামাজিক ব্যবস্থা আপন গতিতে, আপন নিশানায় চলেছে। দু’টি সমান্তরাল রেখায়। কোনটা সঠিক, কোনটা বেঠিক – তার মীমাংসা হয়নি। কোনোদিন হবে কিনা সন্দেহ। মাঝেসাঝে দেখা হয়েছে এ পাড়া – সে পাড়ায়। কখনো একই বেড়ার অন্যদিকে, যেমন পূর্ব আর পশ্চিম বার্লিনে। সরাসরি আর্থিক আদান প্রদান কিছু হয়েছে। তবে সেটা একেবারে সরকারী স্তরে। ব্যবসায়ে লাভক্ষতির তর্ক যে এক নিতান্ত ধনতান্ত্রিক ব্যারাম, তা বুঝে নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি কমিউনিস্ট সরকার। আমরা যে সিলেবাসের কেতাব পড়ে মাঠে নেমেছি, সেটা প্রতিপক্ষ পড়েননি। তাহলে খেলাটা হবে কোন আইনে? আমাদের এগারো জন। ওঁরা কি আঠারো জন নিয়ে নামবেন? রেফারি কাদের?


    ক্রমশ...

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ২৭ আগস্ট ২০২২ | ৩১৪৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • dc | 2401:4900:1cd1:2da8:b1ec:ab70:a531:***:*** | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:১১511546
  • অমিতের পোস্টের সাথে অনেকটাই একমত। 
     
    তবে গর্বাচেভ এর সাথে জেলেনস্কির তুলনাটা ঠিক মনে হলো না, বরং গর্বাচেভের সাথে মনমোহন সিং এর বা নরসিংহ রাও এর) তুলনাটা আরেকটু কাছাকাছি হতে পারে। দুজনেই ইকোনমিক ইভেন্ট এর ফলে ফোর্সড হয়েছিলেন কিছু একটা করতে। দুজনেই কিছু নাও করতে পারতেন, কিন্তু দুজনেই কিছু করার সাহস দেখিয়েছিলেন। 
     
    বরং জেলেন্সকির সাথে নেলসন ম্যান্ডেলার তুলনা করা যায়, যদিও দুজনের পদ্ধতি ভিন্ন। ইউক্রেন আক্রমন হওয়ার পর জেলেনস্কি পালিয়েও যেতে পারতেন, সেই সুযোগও তাঁর ছিল, কিন্তু তিনি ঘুরে দাঁড়ালেন। আর তার ফলে পুটিনের হিসেব গোলমাল হয়ে গেল। পুটিন আর সারা পৃথিবী ভেবেছিল যে দশ দিনের মধ্যে রাশিয়ান আর্মি ইউক্রেন দখল করে ফেলবে, কিন্তু জেলেনস্কি নামে ওয়াইল্ড কার্ডের ফলে এখন পুটিন গভীর কাদায় আটকে গেছে। এই ব্যপারে অমিতের সাথে একমত, যে অনেক সময় একজন ব্যাক্তি ইতিহাসের চাকা ঘুরিয়ে দেয়। 
  • Amit | 121.2.***.*** | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:১০511548
  • এগেন - সিচুয়েশন এ ফোর্সড অনেকেই হয় কিন্তু ডিসিশন নেবার সাহস সবাই সবসময় দেখাতে পারেনা। স্টপগ্যাপ জোড়াতালি দিয়েও অনেকেই ম্যানেজ করার চেষ্টা করে। ১৯৮৯ থেকেই ইন্ডিয়ার ফরেন কারেন্সী সিচুয়েশন টেরিবল। তখন যারা পিএম ছিল - ভিপি সিংহ বা চন্দ্রশেখর - কেউ কি সেটা নেওয়ার সাহস দেখিয়েছিলো ? বদলে কি করেছিল ? দু খেপে ৫২ টন অফ গোল্ড বন্ধক রেখেছিলো স্টপগ্যাপ সলুশন হিসেবে। 
     
    রাজীব গান্ধী এক্সপ্লোশনে স্বর্গে  না গেলে ৯১ ইলেকশন আউটকাম কি হতো কেও জানেনা। রাজীব গান্ধী যদি বাই চান্স জিতে পিএম ও হতো তাহলে মনমোহন সিংহ ই  ফিনান্স মিন হতো কি না সেটাও কেও জানেনা-প্রণব মুখার্জি বা অন্য কেউ হতেই পারতো। অন্য পার্টি বা কোয়ালিশন সরকারে  এলে তারা কি করতো সেটাও কেউ জানেনা। 
     
    যেগুলো ঘটেনি সেসব নিয়ে শুধু নানা রকম প্রোবাবিলিটি প্রেডিকশন-ই হয়- সেটা ফ্যাক্ট হয়না। যে  কেউ এলেই একই কাজ করতো সেটাও একটা প্রেডিকশন ছাড়া কিচ্ছু না। কেউ কিছু না করে  দেশটাকে আজকের শ্রীলংকার পথেও ঠেলে দিতেই  পারতো। কে বলতে পারে ? 
     
    দিনের শেষে আজকে ফ্যাক্ট এটাই যে নরসিম্হা রাও মনমোহন সিংহ এর টিম অন্যভাবে ভাবার & ডিসিশন নেওয়ার সাহস দেখিয়েছিলো। 
     
    এবার তাদের জায়গায় জায়গায় রাজীব গান্ধী - প্রণব মুখার্জী অথবা মমতা ব্যানার্জী -মদন মিত্তিরের টিম থাকলেও যে একই  আউটকাম হতো , মনমোহন সিংহ জাস্ট ফল গাই বাই কোইন্সিডেন্স - সেই প্রেডিকশন সবসময় নাও মিলতে পারে। 
     
    সেম এপলাইস টু গর্বাচেভ। 
     
     
  • dc | 2401:4900:1cd1:2da8:b1ec:ab70:a531:***:*** | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:২৪511549
  • ঠিক কথা। তবে কে এলে ​​​​​​​কি ​​​​​​​হতো, ​​​​​​​সেটা ​​​​​​​আমি স্পেকুলেট ​​​​​​​করছি ​​​​​​​না। 
     
    আসলে আমি বলতে চাইছি, গর্বাচেভ আর মনমোহন দুজনের কাছেই একটা নির্দিষ্ট সেট অফ চয়েসেস ছিল। আর গিভেন দ্যাট সেট, দে চোজ টু অ্যাক্ট ইন অ্যান অপটিমাল ম্যানার। দুজনেই সেই চয়েজ না করে অন্য কিছু চুজ করতে পারতেন, যাতে সমস্যাটা আরও গভীর হতো, অন্য কারুর সমস্যা হতে পারতো। সেটা না করে দুজনেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস দেখিয়েছিলেন যাতে লং টার্ম সলিউশান বেরোয়। 
     
    আর জেলেনস্কি বা ম্যান্ডেলার চয়েস সেট একটু অন্য। এঁরা দুজনেই কিছু না করে পালিয়ে যেতে বা চুপচাপ বসে যেতে পারতেন। যেমন কিনা তালিবান আক্রমন করর পর আফগান প্রেসিডেন্ট পালিয়ে গেলেন। কিন্তু ম্যান্ডেলা চুপচাপ বসে না থেকে দীর্ঘকালীন সংগ্রাম শুরু করলেন, আর জেলেন্স্কি পালিয়ে না গিয়ে রেসিসট্যান্স এর নেতৃত্ব দিলেন। ইংরেজিতে যে কথাটা আছে, কামেথ দি আওয়ার, কামেথ দ্য ম্যান, সেটাই আর কি। 
  • Amit | 121.2.***.*** | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৫:১২511559
  • আজকের খবর। রাশিয়ান মাফিয়া পুতিনকে ভালোই সাপোর্ট দিচ্ছে।  
     
     
    যারা তেল গ্যাসের ফিল্ড এ আছেন তারা হয়তো একটু ফেন্টলি মনে করতে পারবেন- তিন বছর আগে ফ্রান্সের টোটাল কোম্পানির সিইও মস্কো য় মিটিঙ থেকে ফেরার সময় এয়ারপোর্টেই প্লেনের চাকা স্কিড্ করে মারা যান। সামনে নাকি হটাৎ আর একটা প্লেন এসে গিয়েছিলো। দুর্ঘটনা তো হতেই পারে। তবে কিনা আর একটা প্লেন হটাৎ এলো কেন সেটার ইনভেস্টিগেশন  কিন্তু আর এগোয়নি। আর ইউরোপে টোটাল এর গ্যাস বা এলএনজি বিজনেস এর মেজর কম্পিটিটর হলো গিয়ে রাশিয়ার গ্যাজপ্রম। 
     
    সূতরাং এক্সিডেন্ট না কন্সপিরেসি -সেগুলো সব নেক্সট জেমস বন্ড মুভির জন্যে তোলা থাকে। 
     
  • guru | 103.135.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:০২511599
  • @ডিসি 
     
    গর্বাচেভের সঙ্গে একজনেরই তুলনা চলতে পারে যিনি গর্বাচেভের সমসাময়িক ছিলেন এবং গরবাচেভের পাশের দেশে থাকতেন | তিনি হলেন তং শিয়াও ফিং (pinyin Deng Xiaoping) |  তার সঙ্গে তুলনা করলে বলাই যেতে পারে যে গর্ভাচেভ একজন হেরো এবং কোনোভাবেই উনি হিরো নয় |
     
    গর্বাচেভের উপরে এই লেখাটি চীনের guancha (অবজার্ভার ) পত্রিকাতে বেরিয়েছে তার মৃত্যুর দুদিন বাদে | লেখাটির শুধু শিরোনামের আমি অনুবাদ করছি মূল চীনা ভাষা থেকে "গর্বাচেভ : একজন হেরো ভূত "
     
    https://www.guancha.cn/ZhangWeiWei/2022_08_31_656001.shtml  (মূল লেখাটি চীনা ভাষাতে এইখানে | আপনারা অনুবাদ করে নিন )
     
    "বরং জেলেন্সকির সাথে নেলসন ম্যান্ডেলার তুলনা করা যায়"  
     
    জেলেন্সকির সাথে মাডিবার তুলনা একেবারেই ভুলভাল ওভারসিমপ্লিফিকেশন ও ইন্টেলেকচুয়াল দ্বিচারিতা | স্বয়ং হিরেনবাবু এই তুলনা করলে আঁতকে উঠবেন যেহেতু উনি নিজে মাদিবার কাজের সঙ্গে খুব ভালো করেই পরিচিত |  মাডিবা তার নিজের যুদ্ধে শুধু জেতেননি তিনি সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে একজন আদর্শ | মাডিবার কৃতিত্ব সম্পর্কে জানতে হিরেনবাবুর আফ্রিকা নিয়ে লেখা ইতিহাস বইটি পড়ুন |
     
    আপনার জেলেনস্কি এখনো যুদ্ধে যেতেইনি উল্টে মাত্র ছয় মাসে তার দেশের প্রায় ২৫ ভাগ হারিয়ে ফেলেছে | আশরাফ ঘানির মতো এও আরেকটা আশরাফ ঘানি ভার্সন 2.0 না হয়ে যায় !!!
  • Abhyu | 97.8.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২১:৩৯511613
  • দুর্দান্ত লেখা, হীরেনবাবু।
  • সিএস | 49.37.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২১:৪৯511615
  • আমি ভ্রমণকাহিনী ধরণের লেখা বড় একটা পড়িনা, হীরেনবাবুর এই লেখাগুলোও অনিয়মিত পড়ি। কিন্তু এই লেখাগুলোর একটা গুরুত্ব মনে হয়, হীরেনবাবুর ব্যাঙ্কিং পেশার সাথে এই লেখাগুলো যুক্ত থাকছে বলে। আধুনিক ব্যবসা বা ইণ্ডাস্ট্রী ইত্যাদির সাথে যুক্ত থেকে এইরকমের লেখা, বাংলায় আছে বলে আমার ধারণা নেই।
     
     
  • dc | 2401:4900:1f2b:6ecb:a870:e5c4:7526:***:*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২২:৩২511617
  • আমার হীরেনবাবুর লেখাগুলো পড়তে বেশ ভাল্লাগে, বিশেষ করে ব্যাংকিং বা ফিন্যান্সের অল্প অল্প টাচ থাকে বলে। 
  • হীরেন সিংহরায় | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২৩:০২511619
  • সর্বশ্রী অভ্যু সি এস ডি সি 
     
    অশেষ ধন্যবাদ । আশির বেশি দেশে গিয়েছি কাজে -   যে স্মৃতিকথা লিখছি তাররঙ্গমঞ্চ বিভিন্ন দেশ তবু এটা  ভ্রমণ কাহিনি নয়! সেখানে সব রকমের গল্প এসে পড়ে । মূল পেশা ব্যাংকিং ছিল তাই সেটা হয়তো প্রাধান্য পায় । ইচ্ছাকৃত নয়। আমার আফ্রিকা বা উত্তরের আলোয় অচেনা ইউরোপে পেশার কাহিনি প্রায় অনুপস্থিত। রাশিয়াতে তার একটু বেশি ব্যাখ্যান করতে হচ্ছে - তাদের ব্যাংকিং এবং অর্থনীতির ভয়াবহ পতনকাহিনির প্রস্তুতি হিসেবে! সঙ্গে থাকার জন্য আগাম ধন্যবাদ জানাই। 
  • Abhyu | 97.8.***.*** | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২৩:৫০511622
  • আপনার পেশার কথা থাকার জন্যেই এটা বেশি উপভোগ্য হচ্ছে। ডিটেল আছে, পাণ্ডিত্যের ভার নেই, স্বচ্ছন্দে বয়ে চলেছে কাহিনীর ধারা।
  • guru | 103.2.***.*** | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২২:১৭511642
  • আপনি অসাধারণ কাজ করছেন হিরেনবাবু | ইতিহাসের একটি অজানা অধ্যায় কে আপনি এতো সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন যেটা ভাবাই যায়না |
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন