এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  ইতিহাস  শনিবারবেলা

  • চেকিয়া ৫

    হীরেন সিংহরায়
    ধারাবাহিক | ইতিহাস | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৭৯৬ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৪ জন)
  • প্রাসাদের জানালা থেকে প্রাগ শহর

    প্রাগ : প্রাসাদের জানালা এবং লর্ড ঊর্ধ্ব পতনের কাহিনি



    প্রাগ প্রাসাদ শহর থেকে অনেকটা উঁচুতে। বিমান পরিবহন আবিষ্কার হওয়ার আগে অবধি অবস্থানের উচ্চতাকে নিরাপত্তার প্রধান স্তম্ভ মানা হতো। আধুনিক বাণিজ্যিক যুগের প্রভাব অনুযায়ী আনাচে কানাচে সুভেনিরের দোকান–সেদিকে তার মনোযোগ আকৃষ্ট হবার আগেই মায়াকে বললাম চলো, প্রাসাদের ভেতরে ঢুকি।

    পুরনো প্রাগ প্রাসাদের লুডভিগ উইং-এর একটি অপ্রশস্ত ঘরে হাজির হয়েছি; সিলিং অনেকটা উঁচুতে, জানলাগুলো মাথায় লম্বা কিন্তু চওড়ায় নয়। দেওয়ালে কোন খোদিত ফুল বা আর্ট চোখে পড়ে না। বাল্যকাল থেকেই ভ্রমণের বিষয়ে পুত্র ইন্দ্রনীল এবং কন্যা মায়া দুজনেই এ বিষয়ে এক মত যে তারা কোন সপ্তম শতাব্দীর রোমান আর্চ বা দ্বিতীয় দশকের গ্রিক পদ্মফুল দেখতে দু মাইল হাঁটতে বা দুশো সিঁড়ি ভাঙতে একান্ত অনিচ্ছুক। কিন্তু আমার কাছে সত্যি মিথ্যে ট্রিভিয়া শুনতে ভালোবাসে। ইউরোপ ভ্রমণে আরেক মজা, গল্প জীবন্ত হয়ে ওঠে। যেমন কখনো রোমের ফোরো রোমানায়, একেবারে অকুস্থলে গিয়ে বলেছি, দ্যাখো, ঠিক এইখানে দাঁড়িয়ে মার্ক অ্যান্টনি বলেছিলেন, আই কাম টু বেরি সিজার, নট টু প্রেজ হিম!




    সেই জানালা



    মায়া জানতে চাইলে এই একটা সাদা মাটা ঘরে কি দেখার আছে?

    - মায়া, চারশ বছর আগে এখানে দুই বিবাদী পক্ষের একটি মিটিং হয়েছিল।
    - কি নিয়ে বিবাদ?
    - ধর্ম এবং জমি।
    - দুটো আলাদা ধর্মের লড়াই?
    - না, ধর্মটা একই, ক্রিসটিয়ানিটি। প্রভু এক, সেই যিশুখ্রিস্ট, কিন্তু পক্ষ দুই – ক্যাথলিক, যারা পোপকে মানে আর প্রটেস্টান্ট যারা বড়ো তরফের পুরোহিতকে মানতে রাজি নয়। তাদের ভজনালয় আলাদা হয়ে গেছে, ফলে গিরজের সম্পত্তিও ভাগ হচ্ছে। এখানে সেই নিয়ে বিতণ্ডা হচ্ছিল কিন্তু দু পক্ষ সহমত হলেন না কাজেই এক পক্ষকে বেরিয়ে যেতে হলো।
    - সে তো হতেই পারে।
    - আচ্ছা ধরো তোমাদের উওকিং হাইস্কুলে কিছু ছেলেমেয়েকে যদি শিক্ষক ক্লাস থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন, তারা কি ভাবে যাবে?
    - কেন, দরোজা দিয়ে! শাস্তি হিসেবে বারান্দার এক কোনে দাঁড়িয়ে থাকবে।
    - ঠিক। কিন্তু এখানে তা হয় নি। ক্যাথলিক হাবসবুরগ রাজার দুই সম্মানিত প্রতিনিধি রাজকীয় চিঠি এনে বললেন ক্যাথলিক জমিতে প্রটেস্টান্ট গিরজে বানানো যাবে না। শুনে প্রটেস্টান্ট বোহেমিয়ান কাউন্ট’রা ক্ষিপ্ত হয়ে দুই রাজপ্রতিনিধি ও তাঁদের সেক্রেটারিকে ওই জানালা দিয়ে বাইরে ছুঁড়ে ফেলেন। এর নাম ডিফেনেসট্রেশন অফ প্রাগ*। এ ধরনের ঘটনা নতুন নয়, জানলা দিয়ে মানুষ ছোঁড়ার অগণতান্ত্রিক কায়দা প্রাগ ও বোহেমিয়া থেকে আগেও ঘটেছে। নিচে নেমে গিয়ে দেখাবো ঠিক কোনখানে তাঁরা ভূপতিত হন।
    - পতন ও মৃত্যু?
    - না, এই উচ্চতা থেকে পড়েও তাঁরা প্রাণে বেঁচে যান! ক্যাথলিকদের মতে মাতা মেরি তাদের রক্ষা করেন- ফলে হাওয়ায় ভেসে এই তিন জন সুস্থ দেহে নিচে নেমেই ভিয়েনা মুখে পালান। প্রটেস্টান্ট মত অনুযায়ী তাঁরা এই টাওয়ারের গা দিয়ে গড়িয়ে পড়েন এক অশ্ববিষ্ঠা স্তূপে যা বহুকাল কেউ পরিষ্কার করে নি – ফল সফট ল্যান্ডিং! যে যেটা মানবে।

    বেসরকারি সফর। ব্যবসার দিন শেষ, এখন আবার ইউরোপ ঘুরি ট্যুরিস্টের মতন। চেনা শহরকে নতুন চোখে দেখি। বারো বছরের মেয়েকে গল্পের ছলে ইতিহাস শোনাই।




    পতন স্থল


    মায়া নিচে নেমে অত্যন্ত কৌতূহলের সঙ্গে খুঁটিয়ে দেখছিল ঠিক কোনখানে সেই তিন রাজপ্রতিনিধি অধঃপতিত হয়েও আপন প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হয়েছিলেন! তাকে বললাম, সেক্রেটারি ফাব্রিসিউস এই মহান কৃতিত্বের জন্য হাবসবুরগ সম্রাটের কাছে একটি খেতাব পান – লর্ড হোহেনফাল (ঊর্ধ্বপতন) যদিও মনে হতে পারে এই খেতাবের পেছনে সম্রাটের কোনো প্রচ্ছন্ন কৌতুক ছিল কিন্তু ফাব্রিসিউস আজীবন এই নামে সই সাবুদ করেছেন।

    ব্যাখ্যা যাই হোক না কেন, প্রাগ শহর কর্তৃপক্ষ সযত্নে সেই সব জরুরি তথ্যপ্রমাণ সরবরাহ করে ক্যাথলিক ও প্রটেস্টান্ট দুই পক্ষেরই অসীম কৃতজ্ঞতা অর্জন করেছেন।

    নির্মম সত্য এই যে প্রাগ প্রাসাদের জানলা দিয়ে তিনজন রাজ প্রতিনিধি নিক্ষিপ্ত হবার সরাসরি ফল ইউরোপব্যাপী তিরিশ বছরের ধর্ম যুদ্ধ। বারুদ থাকে থাকে সাজানো ছিল, প্রাগে দেশলাই কাঠিটি জ্বালানো হলো।

    যুদ্ধক্ষেত্রে, দুর্ভিক্ষ ও প্লেগের কারণে প্রাণ হারালেন অন্তত সত্তর লক্ষ মানুষ, বেশির ভাগ জার্মান ভাষা ভাষী। সুজলা সুফলা ধরিত্রীতে নেমে এলো শ্মশানের শান্তি। জনসংখ্যার অর্ধেক প্রাণ হারান। ব্রেখটের নাটক ‘মুটার কুরাজ উনড ইহরে কিনডার’ (মাদার কারেজ অ্যান্ড হার চিলড্রেন) তার অসামান্য চিত্রণ। পৃথিবীর ইতিহাসে ধর্মের নামে এমন বিপুল হত্যাকাণ্ড আগে বা পরে কখনো সংঘটিত হয় নি। এই মহাদেশে পরবর্তী রক্তের হোলিখেলার সূচনা হবে তিনশ বছর বাদে সারায়েভো নগরীতে, ২৮শে জুন ১৯১৪ সালে - ল্যাটিন ব্রিজের পাশে গাভ্রিলো প্রিঞ্চিপের রিভলভারের দুটি গুলিতে রাজকুমার ফারদিনান্দ ও তাঁর পত্নী সোফির মৃত্যুর কারণে শুরু প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, তার রেশ চলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অবধি।

    যিশুর সাক্ষাৎ শিষ্য সন্ত পিটারের অনুগামী পোপ, তিনি অভ্রান্ত, তিনি সত্য, তাঁহার উপরে নাই। অতএব সারা দুনিয়ার চার্চ এক এবং অদ্বিতীয়। এই অমোঘ চিন্তার ওপর প্রথম আঘাত আসে খ্রিস্ট জন্মের হাজার বছর বাদে যখন ইউরোপের পূর্বাঞ্চলের ক্রিস্টিয়ানরা ধর্মাচরণের রীতিনীতি এবং রোমের গুরু পোপকে মানতে অস্বীকার করেন (১০৫৪)। কনস্তানতিনোপলে (আজকের ইস্তানবুল) তাঁরা অর্থোডক্স গিরজে বানিয়ে গড়ে তোলেন দ্বিতীয় রোম – তৎকালীন পোপ তৎক্ষণাৎ তাদের ধর্মচ্যুত বলে ঘোষণা করলেন, পাল্টা দিলেন কনস্তানতিনোপল-তাঁরা পোপকে খ্রিস্ট ধর্ম থেকে নির্বাসন দিলেন (এক্স কমুনিকেট)। চলতে থাকলো একই ঈশ্বরের ভজনা, নিজের নিজের ভঙ্গিতে। দেখেছি বেথলেহেমে প্রভুর জন্মস্থানে অথবা জেরুসালেমে তাঁর শেষ শয্যায় ক্যাথলিক ও অর্থোডক্সের পূজা পদ্ধতি সম্পূর্ণ আলাদা। এই, মাত্র ১৯৬৫ সালে, দুই পক্ষ সমঝোতা করেছেন, প্রায় এক হাজার বছর বাদে পারস্পরিক ধর্মচ্যুতির সরকারি অবসান হলো।




    ষোড়শ শতকে নতুন টাউন হল, প্রাগ


    চারশ বছর বাদে প্রাগের চার্লস ইউনিভার্সটির অধ্যাপক রেকটর ও ডিন, চেক ক্যাথলিক সাধু ইয়ান হুস চার্চের নানান প্রচলিত প্রথার বিরোধিতা করলেন, পোপ হয়তো অভ্রান্ত নন এ কথাও বললেন। রোম সেটি ভালো চোখে দেখে নি। কনসটানসে (আজকের জার্মানি) এক ধর্মসভায় ক্যাথলিক পণ্ডিতদের সঙ্গে মুখোমুখি এক আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ পাঠানো হয় হুসকে। তাঁকে নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। ইয়ান হুস এলেন, ধর্মসভায় পণ্ডিতরা বললেন হুস যেন ক্যাথলিক চার্চ ও পোপের প্রতি তাঁর অপমানজনক মন্তব্য প্রত্যাহার করেন (যেমন গালিলেও গালিলিকে আদেশ করা হবে দুশো বছর বাদে)। হুস তাঁর বক্তব্য ফিরিয়ে না নেওয়ায় করুণাময় প্রভুর নামে তাঁকে প্রকাশ্যে স্টেজের ওপরে বাঁশে বেঁধে পুড়িয়ে মারা হল। বোহেমিয়া তথা চেকের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মবেত্তা ইয়ান হুসের বয়েস ৪৩, দিনটা ৬ জুলাই ১৪১৫।

    এবার জার্মান ভূমিতে অবতীর্ণ মারটিন লুথার। ভিটেনবেরগ শহরের প্রধান গিরজের দরোজায় ৯৫টি পত্র ঠুকে দিয়ে তিনি বললেন পোপের বাকসোয় টাকা জমা দিলেই পরকালের পথটি পরিষ্কার হতে পারে না -এটা ব্যবসা মাত্র, মহা অধর্ম। রিফরমেশনের এবং ইউরোপ জুড়ে অশান্তির শুরু কিন্তু এটি ব্যাপক ধর্মযুদ্ধে পরিণত হয় নি। হুসের মতন তাঁকেও ডাকা হয়েছিল ওয়ারমসের ধর্মসভায়, সেখানে মারটিন লুথার বললেন, ইখ কান নিখট আনডারেস -যা বলেছি সেটাই আমার কথা এর কোন অন্যথা করতে পারি না। এই সভায় অবশ্য তাঁর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় নি যদিও ওয়ারমস ধর্মসভা ঘোষণা করে, মারটিন লুথার বধের যোগ্য। রোমের সঙ্গে মতে না মিললে কাউকে কোতল করা যেতেই পারে।
    ১৫৫৫ সালের আউগসবুরগ চুক্তিতে সাব্যস্ত হল – কুইউস রেগিও, এইউস রেলিগিও, রাজার ধর্মই প্রজার ধর্ম। ফ্রান্সে বাস করতে হলে হাইল মেরি বলতে হবে, রবিবারে গিরজেয় পাদরির চাদরে দুটো মুদ্রা দিয়ে পাপ স্খালন করতে হবে। না পোষালে অন্য দেশে চলে যাও! স্পেনের সরকারি পুলিশ ইতিমধ্যে ইহুদি ও মুসলিম নিধন / বিতাড়ন /ধর্ম পরিবর্তনের কর্ম সম্পন্ন করে ফেলেছে। সুইডেন হল্যান্ড প্রটেস্টান্ট পথে হাঁটল। ইংল্যান্ড আরেক কাঠি ওপরে - রাজার বিবাহ বিচ্ছেদের শুভ বাসনায় স্বয়ং পোপ ঠাণ্ডা জল ঢেলে দিলেন বলে অষ্টম হেনরি তাঁকে বললেন, আপনি থাকুন রোমের পুরুত হয়ে, আপনার আইন এ দেশে চলবে না। প্রভু তো আমাদের একই, আমার প্রজা তাঁর ভজনা করবে আমাদের স্টাইলে। আমি নতুন চার্চ খুলব- চার্চ অফ ইংল্যান্ড! তিনি মোট দু বার বিবাহ বিচ্ছিন্ন হলেন, আরও দুই পত্নীর মুণ্ডুও কাটলেন।




    পুরোনো রাজপ্রাসাদ, প্রাগ


    ইংল্যান্ড ফ্রান্স স্পেন স্বতন্ত্র দেশ, সীমানা টানা আছে, তাদের নিজেদের রাজা, এক ভাষা এক ধর্ম। সমস্যাটা রয়ে গেলো পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যে- সেটা নামেই সাম্রাজ্য এবং সেখানে কাগুজে সম্রাট। আজকের বেলজিয়াম থেকে ইতালি অবধি বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কোন একছত্র শাসক সংবিধান পুলিশ পেয়াদা আইন নেই। হাজার খানেক ছোটো বড়ো রাজা, ডিউক, জমিদার ক্রিস্টিয়ানিটির দুই শাখার সহাবস্থানকে ইচ্ছেয় বা অনিচ্ছায় মেনে নিয়ে আপন লুণ্ঠন শোষণের কাজে ব্রতী হয়েছিলেন। বোহেমিয়াতে ক্যাথলিক হাবসবুরগ রাজা এবং প্রটেস্টান্ট জমিদারেরা নিজের ধর্ম আচরণ করলেন। এমনকি ভিয়েনার সদাশয় রাজা মাথিয়াস ক্যাথলিক জমিতে গিরজে বানানোর জন্য প্রটেস্টান্টদের অনুমতি দিলেন। অপুত্রক মাথিয়াসের পরে রাজা হলেন তাঁর ভাইপো ফারদিনান্দ – তিনি কট্টর পোপ পন্থী – ক্যাথলিক সম্পত্তিতে প্রটেস্টান্ট গিরজের অনুমোদন বাতিল হল। এই সুসংবাদ নিয়ে মোট চার জন কাউন্ট ভিয়েনা থেকে তাঁদের সেক্রেটারিসহ প্রাগ প্রাসাদের এই ঘরে হাজির হয়েছিলেন। বিতণ্ডা শুরু - বোহেমিয়ান প্রটেস্টান্ট রাজপুরুষরা মাথিয়াসের কথামত গিরজে বানানোয় বদ্ধ পরিকর; গোলমাল দেখে ভিয়েনা থেকে আগত দু জন রাজ পুরুষ আমতা আমতা করে এও হয় সেও হয় গোছের কথা বলে বোহেমিয়ানদের সহানুভূতি কুড়লেন, কিন্তু অন্য দু জন, কাউন্ট স্লাভাতা ও বরিতা উলটে চেকদের ধমকানি দিলেন - এমনও বললেন যদি বোহেমিয়ানরা এ প্রস্তাব না মানেন অথবা তাঁদের গ্রেপ্তার করেন, দুপুরের আগেই ভিয়েনার সম্রাট তাঁদের মুক্ত করবেন। সঙ্গে তাল দিলেন সেক্রেটারি ফাব্রিসিউস - পারিষদ বলে তার শতগুণ।




    নতুন টাউন হল, প্রাগ


    এতো বড়ো কথা? আমাদের মুলুকে এসে আমাদেরই চোখ রাঙানো? তবে তোদের দেখাচ্ছি মজা- এই রকম কোন জার্মান গাল দিয়ে বোহেমিয়ান কাউন্টরা হাবসবুরগ রাজার দুই প্রতিনিধি এবং তাঁদের সেক্রেটারিকে তুলে ধরে জানলার বাইরে ছুঁড়ে ফেললেন (ততক্ষণে অন্য দুজন হাওয়া খারাপ দেখে সিঁড়ি দিয়ে নেমে পালিয়েছেন)।

    ২৩শে মে ১৬১৮

    রণবাদ্য বেজে উঠলো – বোহেমিয়ার প্রটেস্টান্টরা ক্যাথলিক সম্রাটের অসম্মান করেছেন! পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের বাইরে দাঁড়িয়ে যারা খেলাটা দেখছিলেন, তাঁরাও এবার ফিল্ডে নামলেন, যেমন সুইডেন। প্রাগের আগুন ছড়িয়ে পড়ল সারা ইউরোপে একই ধর্ম, পৃথক আচরণের কারণে শুরু হল নৃশংস হত্যালীলা।

    বাকিটা ইতিহাস।



    পুনশ্চ:
    জানলা দিয়ে মানুষ ছোঁড়ার ব্যাপারে প্রাগের ঐতিহাসিক এলেম আছে। ১৪১৯ সালে হুস পন্থী একদল মানুষ প্রাগের নতুন টাউন হল অবধি ধাওয়া করেন- দাবি তাঁদের কয়েকজনকে জেল থেকে মুক্তি দিতে হবে। নগর পালক রাজি হলেন না, তখন মরিয়া হুসবাহিনী টাউন হলের সভা কক্ষে ঢুকে পড়ে মেয়র সহ আরও ছ জন পৌরপিতা/কর্মকর্তাকে জানলা দিয়ে বাইরে ছুঁড়ে ফেলেন – সেদিন মাতা মেরি কোন হেলিকপ্টার সাপ্লাই করেন নি। এরও প্রায় সত্তর বছর বাদে একই ঘটনা ঘটে এই টাউন হলে।
    পৌরসভার সেই বাড়ি ও জানলা দেখিয়ে ও উড়ন্ত মানুষের গল্প শুনিয়ে প্রাগ শহর কর্তৃপক্ষ দু পয়সা রোজগার করছেন।

    প্রসঙ্গত, মায়াকে অভয় দিয়ে বলেছি আমার কথার সে প্রতিবাদ করতে পারে, তর্কাতর্কিও করতে পারে নির্ভয়ে। আমাদের বাড়ির জানলা দিয়ে তাকে ছুঁড়ে ফেললেও মায়ার আঘাতের সম্ভাবনা কম। আমাদের বাড়ি একতলা।


    প্রাগ: সেতুর সারি




    প্রাগ শহরে সেতুর সারি


    রুক্ষ শুষ্ক মাদ্রিদ বাদে - সেখানে নদী দূরের কথা একটা খাল বিল অবধি নেই - ইউরোপের প্রখ্যাত শহরগুলি হ্রদ সমুদ্র বা নদীর কূলে গড়ে উঠেছে, প্রয়োজনে তাই দেখা দিয়েছে অজস্র সেতু-তারা দূরকে করেছে নিকট আমার মনে হয় সেতু যেন আরও কিছু-দিনতো গেল সন্ধ্যা হলো পার করো আমারে, ওপারেতে সোনার কূলে আঁধার মূলে কোন মায়া!

    প্যারিসে সেইন নদীর ওপরে অন্তত তিরিশটা ব্রিজ, আমস্টারডামে, ভেনিসে নিদেন পক্ষে কুড়িটা করে। সুরম্য সবুজ বাতি সাজানো প্যারিসের পঁ আলেক্সান্দ্রর, পঁ নয়েফ (যেটি শহরের প্রাচীনতম তার নাম নতুন সেতু – এই কারণে ফরাসি ভাষার সঙ্গে আমার সখ্যতা গড়ে উঠলো না) অতুলনীয়, তেমনি মনে থেকে যায় ভেনিসের রিয়ালটো, দীর্ঘশ্বাসের ব্রিজ, আমস্টারডামে সিটি ব্যাঙ্ক অফিসের কাছে রেগুলিয়েরসঘ্রাখট থেকে দেখা কানালের ওপরে ছটি আলোকিত ব্রিজ, মাগেরে ব্রুঘ (ক্ষীণকায় সেতু), বুদার পাহাড়ে দাঁড়িয়ে দেখা চেন ব্রিজ (কেটেনব্রুইকে),–সকলই শোভন। তবে সকলকে ছাপিয়ে মনের মধ্যে গেঁথে থাকে প্রাগের সেতু। ইউরোপের মধ্যে একমাত্র এখানেই দেখি একটি নয়, সেতুর সারি। কোন কোন জায়গায়, যেমন লেটনা পার্কের একটি বিন্দুতে দাঁড়ালে মলডাউ ( চেক নাম ভ্লাতাভা) নদীর ওপরে চার বা পাঁচটি, দিন পরিষ্কার থাকলে হয়তো পাই সাতটি সেতুর আভাস। নদীর জলের, আকাশের রেখা মিশে যায় দিগন্তে।




    কার্লোভি মস্ত - চার্লস ব্রিজ

    চার্লস ব্রিজে দাঁড়িয়ে


    শহরের কেন্দ্র ওয়েনসেসলাস স্কোয়ার পেরিয়ে দু পা হেঁটে গেলে পাবেন চতুর্দশ শতাব্দীর পাথুরে চার্লস ব্রিজ বা কার্লস ব্রুইকে। এটি কেবলমাত্র পথচারীদের জন্য নির্মিত হয়েছিল ( শোনা যায় পাথরের সঙ্গে পাথর গাঁথতে রাজ মিস্ত্রীরা দই এবং ডিম ব্যবহার করেছিলেন)। এই ব্রিজে পদচারণা না করলে আপনার প্রাগ সফর বৃথা।




    শিল্পীর রেখায় মায়া


    চার্লস ব্রিজ শুধু নদী পারাপারের জন্য তৈরি হয় নি – এটি একটি প্রমেনাদ, একটি রঙ্গমঞ্চ, ক্যাট ওয়াক! যেমন প্যারিসের শঁজেলিজে বা পুরনো বার্লিনের ঊনটার ডেন লিনডেনে, যেখানে সকালে বিকেলে সুশোভিত নারী পুরুষ মন্দ গতিতে হাঁটেন, কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্যের অভিমুখে নয়, শুধুই দেখা দেন; মৃদুস্বরে বাক্যালাপ করেন, মলডাউ নদী বয় ধীরে, শিশুরা ছুটে যায়, দু পাশে সন্তদের স্ট্যাচু আপনার মঙ্গল কামনায় আশীর্বাদের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, বিজন সন্ধ্যায় নামে ছায়া, পাহাড়ের গায়ে প্রাগ প্রাসাদে আলো জ্বলে ওঠে, নগর চত্বরের গিরজেয় বাজে ঘণ্টা। বেহালায় কেউ বাজান স্মেতানার ডি মলডাউ – মাতৃভূমি বোহেমিয়ার বন্দনা। দু’পাশে স্কেচ আঁকিয়েরা এই মুহূর্তটিকে অমর করে রাখেন।




    স্মেতানার ডি মলডাউ – মাতৃভূমি বোহেমিয়ার বন্দনা


    সময় স্তব্ধ হয়ে থাকে।




    রাতের আলোয় প্রাগ দুর্গ




    *জানলার ল্যাটিন ফেনেস্ত্রা, জার্মানে ফেন্সতার – প্রাগের সেই পতনের জার্মান প্রতিশব্দ ফেন্সতারশ্তুরতস (জানলা থেকে পতন)। তা থেকে অ্যাংলো সাক্সনরা বানিয়েছে একটি খটোমটো কিম্ভুত শব্দ, ডিফেনেসট্রেশন। ইতিহাসেনিশ্চয় মানুষ অন্য দেশেও জানলা দিয়ে কিছু না কিছু ছোঁড়া ছুঁড়ি করেছে কিন্তু এই ডিফেনেসট্রেশন শব্দটি ব্যবহারের কপিরাইট একা প্রাগের!

    একটা উটকো চিন্তা মাথায় আসে- আমরা জানলা শব্দ পেয়েছি পর্তুগিজ জানেলা থেকে, সেই হারমাদেরা আমাদের সমুদ্রে দেখা দেয় পাঁচশ বছর আগে। জানতে ইচ্ছে করে পর্তুগিজরা আসার আগে জানলাকে বাংলায় কি বলা হতো?

    খিড়কি? ঘুলঘুলি?


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৭৯৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Amit Chatterjee | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:৫৫537897
  • প্রাগ সত্যি মন্ত্রমুগ্ধকর, এক আশ্চর্য শহর, একসাথে বর্তমান আর অতীত দুটো টাইমলাইন যেন পাশাপাশি বয়ে চলেছে শহরটাতে। লেখাটা এত ভালো লাগল মনে হল যেন চার্লস ব্রিজে আপনার সাথেই কিছুটা হেঁটে এলাম। ছবি গুলোও অপূর্ব, বিশেষত রাতের প্রাগের ছবিটা আর পর পর ব্রিজগুলো।  
     
    দি মলডাউ সুর এটুকু শুনে তৃপ্তি হল না, এর দীর্ঘ ভার্শন টি শুনতে হবে। নতুন সুরের সাথে পরিচয় করানোর জন্য ধন্যবাদ জানাই লেখককে।
  • Amit | 193.116.***.*** | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৬:০৮537900
  • বাপরে -এতো অনেক উঁচু জানলা। ওখান দিয়ে পড়ে প্রাণে বেঁচে গেছে মানে সত্যি মিরাক্যল প্রায়। হয়তো সেই ঘোড়ার পটির স্তুপ ও দুতিন তলা উঁচু ছিল। মানে ওটার মধ্যেও চাপা পড়তে পারতো :)
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:০৩537903
  • লর্ড ঊর্ধ্ব পতনের গল্পটা সত্যি চমৎকার ছিল! বেশ উঁচু জায়গাটা। পড়েও বেঁচে যাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার বলতে হবে। চেক পর্বগুলো খুব খুব ভালো হচ্ছে।
  • হীরেন সিংহরায় | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:২৫537904
  • অমিত চট্টোপাধ্যায়
     
    অনেক ধন্যবাদ। চার্লস ব্রিজের সন্ধ্যা মনে রেখে দিয়েছি।
    ডি মলডাউ এর একটু লম্বা ভারশন শুনুন - আমার স্ত্রীর সবচেয়ে প্রিয় ক্লাসিকাল পিস
     
     
     
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:৩৯537944
  • আচ্ছা জানলার আগের বাংলা হিসেবে ঝরোখা চলতে পারে কি? আর তো তেমন কিছু মাথায় আসছে না।
  • শিবাংশু | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:১৪537945
  • @রমিত চট্টোপাধ্যায় , 
    বাংলা ভাষার আদি যুগে জানালা'কে 'গবাক্ষ' বলা হতো। পরে  'বাতায়ন' শব্দটি আসে। 'ঝরোখা' অন্য বস্তু,  
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:১৭537946
  • @ শিবাংশু ধন্যবাদ। 
     
    গবাক্ষ ও বাতায়ন দুটিই জানি, কিন্তু দুটোর কোনোটাই ঠিক সাধারণ চলতি কথার মতো নয়। একটা চলতি কথা কিছু খুঁজছিলাম। একটু সাহায্য করুন না।
  • শিবাংশু | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০০:০৪537948
  • 'গবাক্ষ'র প্রাকৃত অপভ্রংশ 'গওখা' বা 'গোখা' চলিত ভাষার অংশ ছিলো। জৈন শাস্ত্রগ্রন্থ গুলিতে এই শব্দটি বার বার এসেছে। রাঢ় বঙ্গের অন্যতম  ছিলো জৈন অধ্যুষিত বর্ধমানভুক্তির অংশ।  হতে পারে উত্তর ভারত থেকে এই সূত্রেই শব্দটি এসেছে। চর্যাপদে এরকম শব্দ নজরে পড়েনি। 
  • সত্যব্রত ঘোষ | 103.4.***.*** | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:০৩537955
  • অপূর্ব বর্ণনা। মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়ছি।
  • Prativa Sarker | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:২১537966
  • অসাধারণ বর্ণনা ! জানালাকে আমার বাঙ্গাল ঠাকুমা খিড়কি বলতেন, খিড়কিটা লাগাইয়া দিয়া আয়। 
  • হীরেন সিংহরায় | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:৪৮537968
  • কোনো অজ্ঞাত কারণে বীরভূমে জালানা শুনেছি!অক্ষর দুটোর স্থান বদল! 
  • শিবাংশু | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:১১538014
  • @হীরেনস্যার,
    'জানালা'কে  'জালনা' বা 'জালানা'  বলা বা লেখার ব্যাকরণগত নাম 'ধ্বনিবিপর্যয়' ( Metathesis) .
  • ক্ষান্তবুড়ির দিদিশাশুড়ি | 192.139.***.*** | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৮538019
  • "টাকাকড়িগুলো হাওয়া খাবে ব'লে
         রেখে দেয় খোলা জাল্‌নায়--"
  • Kishore Ghosal | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:৩১538051
  •  অভিনব এবং অপূর্ব  এক অনুভূতি আসে আপনার লেখাগুলি পড়ে।     
  • মোহাম্মদ কাজী মামুন | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:৩৪538084
  • "ক্যাথলিকদের মতে মাতা মেরি তাদের রক্ষা করেন- ফলে হাওয়ায় ভেসে এই তিন জন সুস্থ দেহে নিচে নেমেই ভিয়েনা মুখে পালান। প্রটেস্টান্ট মত অনুযায়ী তাঁরা এই টাওয়ারের গা দিয়ে গড়িয়ে পড়েন এক অশ্ববিষ্ঠা স্তূপে যা বহুকাল কেউ পরিষ্কার করে নি – ফল সফট ল্যান্ডিং! যে যেটা মানবে।"
    সমস্যাটা হচ্ছে, যখন ঐ তিনজন যখন মাধ্যাকর্ষন তত্ত্বকে প্রমাণ করছিলেন তখন ঈশ্বরের ইচ্ছে সম্পর্কে কেউই জানতে পারেননি। ফলাফল দেখে বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠী ঈশ্বরের ইচ্ছে কী ছিল তা নিয়ে শোরগোল তুললেন। আর এভাবেই চলে আসছে আদিকাল থেকে। ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর ঈশ্বরকে ডেকে আনা হয় সুযোগ ও সুবিধার সাথে সঙ্গত করে।  তবে এই 'যে যেটা মানবে' এইরকম বলা হলেও কেউ কখনো অন্যকে মেনে নেয় না। আর যদিওবা মানে,তাও সুযোগ ও সুবিধার সাথে তাল রেখে করা হয়ে থাকে। 
     
    "ফ্রান্সে বাস করতে হলে হাইল মেরি বলতে হবে, রবিবারে গিরজেয় পাদরির চাদরে দুটো মুদ্রা দিয়ে পাপ স্খালন করতে হবে। না পোষালে অন্য দেশে চলে যাও! " 
    সেই ফ্রান্সই এখন অসাম্প্রদায়িক চিন্তার একটি স্বর্গস্থান বলে বিবেচিত হয়। এর জন্য তাকে নিশ্চয়ই কঠিন এক পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। মেরু বা মরু অভিযানের মত ভীষণ ঠান্ডা বা ভীষণ উত্তপ্ত পরিবেশ। 
     
    এই সিরিজ নিয়ে বই হবে হীরেণদা? আপনার এই লেখাগুলি না পড়াটা যেকোন পাঠকের জন্য বিগ মিস। ইতিহাসের এমন সুস্বাদু পরিবেশন খুব কমই দেখা যায়।  তবুও তো মিস হয়ে যায় মনভুলে। হয়ত বই হলে পাঠককে আর হারিয়ে ফেলার শংকা করতে হবে না। 
     
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন