এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  উপন্যাস  শনিবারবেলা

  • সীমানা - ৩৩

    শেখরনাথ মুখোপাধ্যায়
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ০৫ আগস্ট ২০২৩ | ১৫৯৭ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • ছবি: সুনন্দ পাত্র


    ৩৩

    বাঙালির কাজিদা



    উনিশশো আঠাশ থেকেই নজরুল প্রায় প্রকাশ্যেই বলছে কবিতা লেখা সে ছেড়ে দিয়েছে; সে এখন গান লেখে আর গায়। অথচ সেই সময় থেকেই “বিদ্রোহী কবি” নজরুলকে সম্বর্ধনা দেবার জন্যে একদল নজরুল-অনুরাগীর প্রবল উদ্যোগ। এমন নয় যে সম্বর্ধনা নজরুলকে দেওয়া হয়নি আগে – স্বতঃস্ফূর্ত সম্বর্ধনা গান গাইতে গাইতে, কবিতা আবৃত্তি করতে করতে, বক্তৃতা দিতে দিতে, সে যে কতবার পেয়েছে; নানা তহশীলে নানা জেলায় নানা সমাবেশে কতবার যে সে সম্বর্ধিত হয়েছে গত পাঁচ-সাত বছরের মধ্যে, সে তো হিসেবের বাইরে। এবার সাপ্তাহিক সওগাতের একুশে সেপ্টেম্বর সংখ্যায় উদীয়মান কবি মোয়াহেদ বখত চৌধুরীর একটা প্রস্তাবের খবর পাওয়া গেল: তরুণ বাংলার পক্ষ থেকে বিদ্রোহী কবি কাজি নজরুল ইসলামকে একটা সম্বর্ধনা দেওয়া হোক।

    এই যে প্রস্তাবটা প্রকাশ্যে এল সেপ্টেম্বরে, এর পর যথাযোগ্য প্রস্তুতি নিয়ে – তরুণ বাংলাই শুধু নয়, এমনকি মুসলিম বা হিন্দু বাংলাও নয়, সমস্ত বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে জাতীয় কবি হিসেবে – কবিকে সম্বর্ধনা দিতে সময় লাগল এক বছরেরও বেশি; উনিশশো উনত্রিশের পনেরই ডিসেম্বর কলকাতার অ্যালবার্ট হল-এ। গত এক বছর ধরে নজরুলের সাহিত্য এবং সঙ্গীতচর্চা, জনসাধারণ্যে তার প্রকাশ, বাংলার জেলায় জেলায় নানা অনুষ্ঠানে তার অংশগ্রহণ – বস্তুত এতদিনে একটা নির্দিষ্ট মাসোহারার নিশ্চিন্ততায় সংসারপালনেরও তুলনামূলক স্বাচ্ছল্য – এসব যে সম্ভব হচ্ছিল খানিকটা নাসিরুদ্দিন সাহেবের সওগাতেরই সৌজন্যে, তা তো অস্বীকার করা যায় না। সওগাত পত্রিকা কাজির প্রায় সেক্রেটারির দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছিল সেই সময়। কাজির সঙ্গে যোগাযোগের নিশ্চিন্ত ঠিকানা তখন সওগাত। কোথায়, কোন মাসে, কখন কাজিকে পাওয়া যাবে, জানে সওগাত। কাজির সফরসূচি কাজির চেয়েও ঠিকঠাক জানা আছে সওগাতের অফিসের। অতএব, মোয়াহেদ বখত চৌধুরীর প্রস্তাবের খবর সওগাতেই তো বেরোবে!

    কিন্তু, এই প্রস্তাব খবরে কেন?

    একদল মৌলবাদী গোঁড়া মৌলবী এবং তাদের সাহায্য নিয়ে এমনকি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত কিছু মুসলিম লেখকও অনেক দিন ধরেই নজরুলকে নানা অছিলায় যে অসুবিধেতে ফেলতে চাইছে – এ ছাড়াও বাজার-চালু বেশ কিছু পত্রপত্রিকা, যার লেখকগোষ্ঠী মূলত ব্রাহ্ম এবং উচ্চবর্ণজাত হিন্দু, এবং স্পষ্টতই তারাও নজরুল বিরোধীতায় যে স্বোচ্চার –
    এ-সংবাদও তো নাসিরুদ্দিন সাহেবের অগোচর নয়। তিনি প্রথম থেকেই স্থির করলেন, এ-সম্বর্ধনা কোন বিশেষ সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীদত্ত সম্বর্ধনা হবে না, এই সম্বর্ধনা দেবে সমগ্র বাঙালি নেশন। আর তা-ই যদি হয়, তাহলে ভেবেচিন্তে কাজ করতে হবে, তাড়াহুড়ো নয়। জাতিধর্মনির্বিশেষে বাঙালির সর্বসম্মত নেতারা নজরুলকে বাঙালির জাতীয় কবি ঘোষণা করে তাকে সম্বর্ধিত করবেন – এ-ই নাসিরুদ্দিন সাহেবের প্রয়াস। অনেক হিসেব করে, অনেক ভেবেচিন্তে, অথচ অতি তৎপর দ্রুততায় তিনি মধ্য-কলকাতার মুসলিম ইনস্টিট্যুটের সভাকক্ষটি নয়ই অক্টোবর তারিখের জন্যে সংরক্ষণ করে ফেললেন। ইচ্ছে, বাংলার প্রধান নাগরিকদের স্বাক্ষরে, প্রস্তাবিত নজরুল-সম্বর্ধনার আহ্বান করে, ওই দিন ওই সভাকক্ষে এক জনসভা। জনসভা, অর্থাৎ অবারিত দ্বার সকলের জন্যে। আহ্বায়ক হিসেবে যাঁরা স্বাক্ষর করলেন তাঁদের মধ্যে সেই সময়কার কলকাতার বিশিষ্ট নাগরিকদের অনেকেই ছিলেন। ছিলেন সোহ্‌রাওয়র্দি, ফজলুল হক, ভারতবর্ষ সম্পাদক রায়বাহাদুর জলধর সেন, সঙ্গীতজ্ঞ কাজিবন্ধু দিলীপকুমার রায়, কলকাতা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এম হেদায়েত হোসেন, প্রেমেন্দ্র মিত্র, ডক্টর আর আহ্‌মদ ও আরও অনেকে।

    হঠাৎ-গোঁড়ামিতে-পেয়ে-বসা আকরম খানের মোহাম্মদী বেশ কিছুদিন ধরেই বিষোদ্গার করে চলছিল নজরুলের যাবতীয় কাজের বিরুদ্ধে। সেই যে সেবক পত্রিকায় কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তর মৃত্যুর পর সম্পাদকীয় লিখেছিল কাজি, ধর্মীয় অনুশাসনের কোন পরোয়া না-করে নিজের সমস্ত আবেগ ঢেলে লিখেছিল সম্পাদকীয়, যা কাজির বিনা অনুমতিতে কাটা-ছেঁড়া করে ছাপা হয়েছিল সেবক-এ, এবং প্রতিবাদে সেবক-এ যাওয়া বন্ধই করে দিয়েছিল কাজি, তারপর থেকেই তো ক্রোধান্বিত আকরম কারণে-অকারণে নজরুল-বিরোধী। আর নজরুল-বিরোধীতায় তো সবাইকেই সঙ্গ দিতে সব সময়েই রাজি আছে একদল মৌলবাদী। নাসিরুদ্দিন সাহেব ভেবেইছিলেন নজরুলের সম্বর্ধনায় প্রধানতম বাধা হয়ে দাঁড়াবেন এই আকরম এবং তাঁর সঙ্গীসাথীরা। এ-কথা ভেবেই নিঃশব্দে তিনি অগ্রিম মূল্যে সংরক্ষণ করলেন মুসলিম ইনস্টিট্যুটের সভাকক্ষটি।

    সংরক্ষিত, কিন্তু প্রবেশ তো অবাধ! সভা শুরু হবার অনেক আগেই আকরম পাঠিয়ে দিলেন তখনকার মোহাম্মদীর সম্পাদক নাজির আহ্‌মদ চৌধুরিকে মুসলিম ইনস্টিট্যুটে। এই নাজির আহ্‌মদই নজরুলের সম্বর্ধনার প্রস্তাবের খবর পেয়েই মোহাম্মদীতে বিরূপ একটা প্রবন্ধ লিখেছিলেন, “এছলাম ও নজরুল ইসলাম” নামে। তাতে নজরুলকে “কতকগুলি বাঙ্গালা শব্দসমাজ-সম্বল গভীরতাহীন কথার কালোয়াৎ” বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। সভার ঘোষিত সময়ের অনেক আগেই বেশ কিছু ভাড়াটে-গুণ্ডা জাতীয় মানুষকে সভাকক্ষের দর্শক-আসনে বসিয়ে দিয়ে তিনি শুরু করলেন তাঁর বাছাই-করা আক্রমণাত্মক ভাষায় সম্বর্ধনা বিরোধী বক্তৃতা। কিছুক্ষণের মধ্যেই ইশকুল-কলেজ-মাদ্রাসার বেশ কিছু ছাত্রের আগমন হল সভাকক্ষে। পরে-পরেই আসতে লাগল অন্যান্যরা। নবাগতদের প্রবল আপত্তিতে, এবং তরুণ-দলের স্বতস্ফূর্ত রোষে পালাল গুণ্ডার দল, এবং তাদের অনুবর্তী হতে বাধ্য হলেন বক্তা নাজির নিজেও। ক্রমে সভাকক্ষ ভরে গেল, এমনকি কক্ষের দুপাশের বারান্দাতেও উপচে-পড়া ভিড়। খান-বাহাদুর মৌলবি আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে সর্বসম্মতিক্রমে উনিশশো উনতিরিশের পনেরই ডিসেম্বর রবিবার সম্বর্ধনার দিন স্থির হল এবং কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রায়বাহাদুর জলধর সেন, ফজলুল হক; কল্লোলের দীনেশ দাশ; সওগাতের মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিন; এস ওয়াজেদ আলি এবং কলকাতার আরও বহু নেতৃস্থানীয় নাগরিককে নিয়ে অভ্যর্থনা সমিতি গঠিত হল।

    এক বছরেরও বেশি সময় আছে হাতে। এই সময়টুকুর মধ্যে এই সম্বর্ধনার বিষয়ে জোরদার বিতর্ক নানা পত্রিকায়। সব রকমের মতামত এল প্রকাশ্যে। এবং, ধীরে ধীরে সম্বর্ধনা-বিরোধীর সংখ্যা কমতে থাকল। ধার্মিক কারণে
    যে-মুসলমানরা নজরুল-বিরোধী ছিলেন, নানা আলোচনার মাধ্যমে তাঁদেরও অনেককে বোঝানো গেল যে, কবিকে তাঁদের কবি হিসেবেই দেখতে হবে, তিনি কতটা খাঁটি মুসলমান সে-বিষয়ে এই প্রস্তাবিত সম্বর্ধনা নয়। একজন লিখলেন, “এখানে আমাদের এটুকু বলবার আছে যে, কবির ধর্ম-বিশ্বাসকে সম্বর্ধনা দেওয়া হচ্ছে না, এটা হচ্ছে তাঁর কবিতা লিখবার ক্ষমতা-দক্ষতাকে।” মোয়াজ্জিন-এর সম্পাদকীয় লিখল, “নজরুলের পূর্বে বঙ্গ-মোসলেম সমাজে কাব্য-সাহিত্যিকের অভাব অনুভব হইতেছিল। কিন্তু আজ এ সমাজ একজন মুসলমান কাব্য-সাহিত্যিকের অপূর্ব সৃষ্টি-সম্পদের মহান দানে বঙ্গ-সাহিত্যের আসর গৌরবান্বিত হইয়াছে দেখিয়া বুক-ভরা তৃপ্তি-গৌরব অনুভব করত ক্রমশ প্রাণবন্ত হইয়া উঠিতেছে। বিষের বাঁশি-বাদক এই কবি মরণোন্মুখ মোস্‌লেমের – শুধু মোসলেমের নয়, অমোসলেমেরও প্রাণে এই অভিনব স্পন্দন আনিয়া দিয়াছে। তাঁহার রচনার বৈশিষ্ট্য, ছন্দ-নৈপুণ্য, শব্দ-চয়ন-চাতুর্য ও উদ্দাম উদ্দীপনাময় বিচ্ছুরিত বহ্নিশিখা বঙ্গ-সাহিত্যে নবযুগ আনয়ন করিয়াছে। আর মুসলমান আজ তাহার একজন ভাইকে বঙ্গসাহিত্যের সুউচ্চ আসনে সমাসীন দেখিয়া জাতীয় অস্তিত্ব উপলব্ধি করিতেছে।”

    অতএব, উনিশশো উনতিরিশের পনেরই ডিসেম্বর দুপুরে কলেজ স্ট্রীট লোকে লোকারণ্য, মানুষ আর ধরে না। অ্যালবার্ট হল, যেখানে সম্বর্ধিত করা হবে নজরুলকে, থিক থিক করছে। বহু মানুষ জায়গার অভাবে ফিরে যেতে বাধ্য হলেন। পানবাগানের বাড়ি বদলিয়ে ততদিনে নজরুল মসজিদবাড়ি স্ট্রীটের বাসিন্দা। সেখান থেকে পুষ্পসজ্জিত মোটরকারে নজরুলকে নিয়ে আসা হল। সম্বর্ধনা সভার সভাপতি আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র, কবিকে স্বাগত জানিয়ে তাঁর স্বতস্ফুর্ত বক্তৃতায় বললেন, “আজ আমি এই ভেবে বিপুল আনন্দ অনুভব করছি যে, নজরুল ইসলাম শুধু মুসলমানের কবি নন, তিনি বাংলার কবি, বাঙালির কবি! কবি মাইকেল মধুসূদন খৃষ্টান ছিলেন, কিন্তু বাঙ্গালী জাতি তাঁকে শুধু বাঙালিরূপেই পেয়েছিল। আজ নজরুল ইসলামকেও জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলেই শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন।”

    লিখিত বক্তৃতার উপসংহারে আচার্য বলেন, “ …...আমরা আগামী সংগ্রামে কবি নজরুলের সংগীত কণ্ঠে ধারণ করিয়া শ্রীমান সুভাষের মতো তরুণ নেতাদের অনুসরণ করিব। ফরাসি বিপ্লবের সময়কার কথা একখানি বইতে সেদিন পড়িতেছিলাম। তাহাতে লেখা দেখিলাম, সে সময় প্রত্যেক মানুষ অতি-মানুষে পরিণত হইয়াছিল। আমার বিশ্বাস, নজরুল ইসলামের কবিতা পাঠে আমাদের ভাবী বংশধরেরা এক-একটি অতি-মানুষে পরিণত হইবে।”

    অভিনন্দনপত্র পাঠ করলেন এস ওয়াজেদ আলি। রৌপ্যনির্মিত চোঙায় অভিনন্দনপত্রখানা বিপুল হর্ষধ্বনির মধ্যে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র নজরুলের হাতে তুলে দিলেন। জাতির পক্ষ থেকে স্বর্ণনির্মিত একটি দোয়াত ও কলম উপহার হিসেবে তাঁকে দেওয়া হল। সভাপতির অনুরোধে এবার সুভাষচন্দ্র বললেন, “নজরুলকে বিদ্রোহী কবি বলা হয় – এটা সত্য কথা। তাঁর অন্তরটা যে বিদ্রোহী, তা স্পষ্ট বুঝা যায়। আমরা যখন যুদ্ধক্ষেত্রে যাব – তখন সেখানে নজরুলের যুদ্ধের গান গাওয়া হবে। আমরা যখন কারাগারে যাব তখনও তাঁর গান গাইব।”

    যে পুষ্পসজ্জিত গাড়িতে নজরুলকে নিয়ে আসা হয়েছিল, অনুষ্ঠানের শেষে বিদায় দিয়ে সেই গাড়িতেই তাকে তুলে দেবার জন্যে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রসহ অন্যান্যরা নীচে রাস্তায় অপেক্ষমান গাড়িটা পর্যন্ত এলেন। সেখানে, গাড়ির সামনে, অপেক্ষমান দেখা গেল পিংলাকে। তার বাঁ হাতের অনামিকাটি নিজের ডান-হাতের মুঠোয় ধরে দাঁড়িয়ে ছোট্ট বুলবুল, অন্য হাতে পিংলার কাছ থেকে উপহার পাওয়া সেই ছবিওয়ালা পাখির বইটা। কাজির কাছে এটা একটা চমক। পিংলা যে শান্তিনিকেতন থেকে এখানে এই সম্বর্ধনা সভায় আসবে, তা সে ভাবেনি ঠিকই। কিন্তু বুলবুল? সেও? তাকেও নিয়ে এসেছে পিংলা?

    কেউ কিছু বোঝবার আগেই বুলবুল দৌড়িয়ে বাবার সামনে আসে। তার আভূমিলুণ্ঠিত চাদরটা টেনে সে বলে, কী কাজিদা, কেমন লাগল? – মুখে তার দুষ্টুমির হাসি।

    থতমত কাজি কিছু বলবার আগেই সমবেত হাস্যধ্বনিতে মুখর হয়ে ওঠে জায়গাটা। সুভাষ দুহাতে বুলবুলকে তুলে ধরে জিজ্ঞেস করেন, এই বাচ্চাটা কে?

    লজ্জামিশ্রিত হাসির সঙ্গে কাজি বলে, আমার পুত্র। আমার বন্ধুবাবন্ধবরা সঙ্গে থাকলে ও আমাকে আর বাপ বলে মানতে চায় না। বলে, কাজিদা! বারবার বারণ করলেও কথা শোনে না। আমার বন্ধুদের কাছ থেকে প্রশ্রয়ই পায় ও, বলতে বলতে পিংলার দিকে তাকায় সে।

    এবার হাসতে হাসতে এগিয়ে এলেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র। বললেন, আমার বক্তৃতার ফাঁকটা ভরাট করে দিল আপনার পুত্র। আমি বলেছিলাম আপনি বাংলার কবি বাঙালির কবি। যে-কথাটা বলতে ভুলেছিলাম, তা হল আপনি এখন থেকে বয়েস-সম্পর্ক নির্বিশেষে বাঙালির শুধু কবি ন'ন, কাজিদাও! এবার বুলবুলের দিকে তাকিয়ে বলেন, গুড বয়, বুদ্ধিমান ছেলে। তোমাকে কেমিস্ট্রি পড়াতেই হবে।

    সমবেত জনতা হাততালি দিয়ে তাদের অনুমোদন জানায়। তারপর সবাই মিলে গাড়িতে তুলে দেয় বুলবুলকে, বুলবুলের পর ওঠে কাজি, তারপর পিংলা। গাড়ি চলতে শুরু করা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারে না বুলবুল, বাইরের মানুষদের হাত-নাড়িয়ে বিদায় জানানো দেখতেও পায় না সে, বইটা খুলে কাজিকে বলে, আমি নিজে নিজে বই পড়তে শিখে গেছি!



    ক্রমশ...

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ধারাবাহিক | ০৫ আগস্ট ২০২৩ | ১৫৯৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে প্রতিক্রিয়া দিন