এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  গপ্পো  শরৎ ২০২১

  • রানার ছুটেছে তাই

    দময়ন্তী
    গপ্পো | ১৫ অক্টোবর ২০২১ | ৬১৫৩ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • স্কেচ ৬ | পানুর মেটামরফোসিস | চালচিত্রের চালচলন | কেমন আছে ওরা? | চাও করুণানয়নে | পুত্রার্থে | সই | আপনি যেখানেই থাকুন | কিসসা গুলবদনী | জনৈক আবহ ও অন্যান্যরা | গুচ্ছ কবিতা | অমল রোদ্দুর হয়ে গেছে | ইনি আর উনির গপ্পো | দুগ্গি এল | দুর্গারূপে সীতা, ভিন্নরূপে সীতা | প্রিয় অসুখ | শল্লকী আর খলিলের আম্মার বৃত্তান্ত | রানার ছুটেছে তাই | বিসর্জনের চিত্রকলা | কল্পপ্রেম | লম্বা হাত খাটো হাত | কেন চেয়ে আছো গো মা, মুখ পানে! | ছোট্ট পরীর জন্মদিন | জাপানি পুতুল | আধাঁরে আলোঃ শারদ সাহিত্য | ইন্দুলেখার ইতিকথা | মুর্শিদাবাদ | এই দিনগুলি | জ্বিন | জোনাকি এবং ডোরেমিরা | বাসায় চুরি | বিশ্বকর্মার গুপ্তঘট | দুর্গাপূজা - দুটি প্রবন্ধকথা | টিউশন | ফেরা | মায়া | বন্দী | মেয়েদের কিছু একটা হয়েছে | কেল্লা নিজামত | সীতারাম | দড়াবাজি | মায়াফুলগাছ | যখন শ্যামের দ্বারে | কুয়াশা মানুষের লেখা | সময় হয়েছে নতুন খবর আনার | মিষ্টি চেখে ওড়িশার ডোকরা শিল্পীদের গ্রামে | নিশি | পথ | প্রাকার পরিখা | নীল সাইদার গল্প | তুষারাচ্ছন্ন ইউরোপে শ্রীমতী ফ্রয়ডেনরাইখের আশ্চর্য বিষাদ | দীপাবলীর বারান্দায় | কলমি শুশনি | এক অনিকেত সন্ধ্যা | গৌরি বিলের বৃত্তান্ত | আনন্দগামী বাস থেকে | মুয়াজ্জিনকে চিরকুট | দেবীর সাজে সৌরভ গোস্বামী | শরৎ ২০২১
    ছবি: সুনন্দ পাত্র


    এক

    ওভারব্রিজের সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতেই শীতল দেখল ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস ঢুকছে, প্রাণপণে দৌড় লাগাল, আর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বুঝল আবারও হয়ে গেছে। কাল রাত্তির থেকে কম করে জল খাওয়া, বেরোবার আগে বারবার বাথরুমে গিয়ে পেচ্ছাপদানি খালি করে আসার চেষ্টা, কিচ্ছু কাজ করেনি। তলপেটে ঝাঁকুনি লাগতেই ফোঁটায় ফোঁটায় বেরিয়ে এসেছে পেচ্ছাপ। দুই পা শক্ত করে এক মুহূর্তের জন্য দাঁড়িয়ে পড়ল, কিন্তু আজ ঠিক সময়ে না গেলে চাকরি রাখা মুশকিল হবে। এমনিতেই ট্রেন দাউন্দ ঢুকতে ঢুকতে পৌনে এগারোটা বাজিয়েই দেবে, সাড়ে এগারোটার আগে অফিসে ঢোকার সম্ভাবনা কম। তবে স্টেশান থেকে বেরোতে বেরোতেই যদি অটো পেয়ে যায় অথবা অফিসের কারোর সাথে দেখা হয়ে যায়, তো সোয়া এগারোটার মধ্যে ঢুকে যেতে পারবে। মালিক ঢোকে বেলা বারোটার দিকে। তবে বলা যায় না, আজই হয়তো এগারোটায় চলে এল। তাহলেই বকাবকি গালিগালাজ।

    ট্রেনে এখন বসার জায়গা মোটামুটি পাওয়াই যায়। এখনো খুব কম লোকই ট্রেনে উঠছে। সিটে গুছিয়ে বসতে গিয়ে আবার থমকে গেল শীতল, বসলেই সালোয়ার ভিজবে, উঠে দাঁড়ালেই ভেজা ছাপ ফুটে উঠবে। থাক, বরং দুইদিকের দরজার মাঝে সিটের পেছনে ঠেস দিয়ে দাঁড়ানো যাক। অফিস মানে এটা আসলে গুদাম, একটা ভারতজোড়া বৈদ্যুতিক বাণিজ্য সংস্থার গুদাম। ‘কম্ফিকার্ট’ নামের এই সংস্থা শুরু হয়েছিল পুণে থেকে সোলাপুর পর্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্নরকম মোবাইল ফোন সরবরাহ করার লক্ষ্য নিয়ে। দেশে ও বিদেশে উৎপন্ন বিভিন্ন সংস্থার মোবাইল অনলাইনে অর্ডার নিয়ে আনিয়ে ঠিকানামাফিক পৌঁছে দেবার কাজ বছর পাঁচেক বিশেষ সাফল্যের সাথে করার পর আস্তে আস্তে আরো নানান জিনিস বিক্রি করতে শুরু করে। ব্যবসাও বাড়তে বাড়তে গোটা ভারতেই প্রায় ছড়িয়ে পড়েছে। বাজারের চাহিদা আন্দাজ করে অগ্রিম জিনিসপত্র এনে জমা করে রাখতে দরকার হয়েছে গুদাম।

    কলেজ পাস দিয়ে শীতল একটা বাচ্চাদের ইস্কুলে ঢুকেছিল পড়াতে। জিলাস্কুলে চাকরি লেগে গেলে জিন্দেগিটা সেট হয়ে যাবে, রাজ্যওয়াড়ি পরীক্ষার জন্য তৈরি হচ্ছিল। ইস্কুলেই একদিন বাচ্চাদের পিটি ক্লাস করানোর সময় টের পায় – দৌড়ালে, লাফালেই বিন্দু বিন্দু পেচ্ছাপ বেরিয়ে আসছে, কোনভাবেই চেপে নিতে পারছে না। শাড়ি পরতে হত ওখানে, ব্যাপারটা তেমনভাবে ধরা পড়েনি কারো সামনে। তারপর এই বদ বিমারি এল, ইস্কুল বন্ধ হয়ে গেল। দুই মাস পেরোবার আগেই সেক্রেটারি স্যার ফোন করে বলে দিলেন, ইস্কুলে কামাই নেই, বাচ্চারা মাইনে দেয়নি, ওকে আর রাখতে পারবেন না। পাওনাগণ্ডা ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তা সেসব আর একবছরেও আসেনি। দুই-একবার ফোন করেছে সেক্রেটারি, হেডমিসকে – সব নাম্বার স্যুইচড অফ, নয়তো নেটওয়ার্কের বাইরে। লকডাউনের মধ্যেই বড়েভাইয়া বিয়ে করে ভাবীকে নিয়ে সোলাপুরে চলে গেল। প্রথম একমাস টাকা পাঠিয়ে আর পাঠায়নি।

    সেই সময় ব্যাঙ্কের খাতা খালি হয়ে আসছে প্রতি সপ্তাহে, ইস্কুলবাসের ড্রাইভার আমিনের সাথে দেখা হয়ে গেল একদিন বাসডিপোয়। আমিনই খবর দিয়েছিল – কম্ফিকার্ট লোক নিচ্ছে ওদের দাউন্দ গুদামে। পরেরদিনই কপাল ঠুকে চলে গেছিল ওখানে। পুনা থেকে রোজ রোজ আপ ডাউন করবে কী করে ভেবে মালিক একটু দোনামোনা করছিল। আবার বিকম পাস মুলগি অনেক কম টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ভেবে ঠিক না করতেও পারছিল না। মালিকের অ্যাসিস্টেন্ট বুদ্ধি দিল – ছয়মাস ট্রেনিং করে নিতে, আরো পাঁচশ’’ টাকা কম মাইনে। ছ’মাস পরে কাজে খুশি হলে এক বছরের কন্ট্রাক্টে নেবে, পাঁচশ’ টাকা বাড়বে। গুদামে নতুন আসা মাল কমপিউটারে তোলা, কোনটা কোথায় যাচ্ছে সাইট থেকে ঠিকানা মিলিয়ে প্যাকেটের গায়ে লেবেল মারা, মাল বেরিয়ে গেলে ফাইল আপডেট করা – এই মোটামুটি কাজ। তাতেই সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা অবধি ঘাড় তুলতে পারে না।

    ফেরার সময় আর ট্রেনের ভরসায় থাকতে হয় না। আমিনের সাথে ওর ডেলিভারি ভ্যানে চেপেই ফেরে। যেদিন টিফিন খাওয়ার সময় পায় না, সেদিন ওই ভ্যানে বসেই নিজে খায়, আমিনকেও দেয়। দিনের ডিউটির সবকজনই আমিনের ভ্যানে আসে। লোনি আর উরুলিতে দু’জন নামে আর দু’জন হাদপসর। একদম শেষে একটু ঘুরে খারকি স্টেশানের সামনে শীতলকে নামিয়ে আমিন চলে যায়। তা নামতে নামতে রোজই রাত দশটার এদিক ওদিক হয়। ওখানে অটো থাকলে ভাল, না হলে তেলুগুদের মশলার দোকানের গোল-চক্কর অবধি হেঁটে এসে দাঁড়ায়। এখান থেকে পিএমটি বাস, অটো, কখনো ওদের মহল্লার কারো গাড়ি, কি স্কুটি – কিছু না কিছু পেয়েই যায়। এই কাজটা নেবার পরে কিছুদিন ভালই ছিল, অফিস থেকে বেরোবার সময় বাথরুম সেরে বেরোত আর সোজা বাড়ি গিয়ে আবার। একদিন রাতে বাস দেখে দৌড় দিল, বাসটা পেয়েও গেল। বাসে উঠেই খেয়াল হল, হেল্পার ওকে দেখছে হাঁ করে।



    দুই

    সিগনাল হলুদ হতে, কষে ব্রেক চেপে, লাইনের এধারেই বাইক দাঁড় করিয়ে, একপায়ে ভর দিয়ে, মোবাইল বের করে সময় দেখে নেয় গিরীশ। এখনো কুড়ি মিনিট আছে, কোথাও ফেঁসে না গেলে, আর দশ বারো মিনিটের মধ্যে ডেলিভারি দিয়ে আজকের মত ফ্রি হয়ে যাবে। আজ দু’টো এক্সট্রা ডেলিভারি নিতে পেরেছে, সাতশ’ টাকা বেশি পাবে। রোজ যদি এমন দু’টো তিনটে করে এক্সট্রা নিতে পারে, তাহলেই আঠার-কুড়ি হাজার এক্সট্রা টাকা আসে হাতে। তাই দিয়ে একটা ভাল ফোন নেবে গিরীশ। এই ফোনটায় মুভি দেখে আরাম হয় না, ফাইটিঙের সিনে, নাচের সিনে সব কেমন জড়িয়ে রঙে রঙে মিলে যায়। নার্সারিক্লাসে যেমন পাতলা প্লেটে সব রঙ সাইড বরাবর একটু একটু করে ঢেলে গুলে নিত, তারপর ব্রাশ চালাতে চালাতে সব কেমন মিলেমিশে একটাই জবরদস্ত কালার হয়ে যেত, অমনি হয়ে যায়। আহ, আবার যদি ইস্কুলে ফেরত যাওয়া যেত! এবার তাহলে ও মন দিয়ে পঢ়াই করত ঠিক।

    আর ৬ সেকেন্ড পরে সিগনাল সবুজ হবে, হেলমেটটা ঠিকঠাক করে পা তুলে বাইকে রেডি হয়ে বসতে বসতেই গিরীশ খেয়াল করে, একটা মেয়ে কেমন থ্যাপ থ্যাপ করে দৌড়ে আসছে সামনে ডানপাশে দাঁড়ানো পিএমটি বাসটার দিকে। আহ যন্ত্রণা! এখন বাঁদিক থেকে স্পিডে বেরিয়ে যেতে পারবে না এ মেয়ে বাসের দরজায় না পৌঁছানো অবধি। সিগনাল সবুজ হয়ে গেল, মেয়েটা এখনো বাসের সামনের দরজা অবধি পৌঁছাতে পারেনি। পেছনের দরজা দিয়ে তুলে নিতে পারত কন্ডাকটারকাকা, কিন্তু নাহ, এটা সরকারি বাস, করবেই না। একটু আগে আসতে কি হয় এদের! দাঁত আর জিভের ফাঁকে ছিঁক করে বিরক্তিসূচক শব্দ করে গিরীশ। হেলমেট আর মাস্কের ভেতরে সেই শব্দ ওরই ঠোঁট আর গোঁফে লেপটে থাকে, বিরক্তিটাও। মেয়েটার পায়ে কোন সমস্যা আছে নাকি? কেমন অদ্ভুতভাবে থ্যাপ থ্যাপ করে দৌড়াচ্ছে দেখো! আসলে জোরে জোরে হাঁটছে বলাই ভাল। অথচ মেয়েটা বেশ রোগা পাতলা।

    মোড় পেরিয়ে স্পিড বাড়ালো গিরীশ। নাহোক, এক দুই মিনিট দেরি হয়ে গেল বেকার। এই ঠিকানাটা অবশ্য চেনা, পরিহার চওক পেরিয়েই, ডানদিকের মহল্লার গলিতে ঢুকে, তিনটে বাড়ি পরেই ঠিকানা। গেটে সিকুরিটিকাকারাও এমনি ভাল, মুখে মুখে ফ্ল্যাট নম্বর শুনে নিয়ে নিজেরাই সিস্টেমে এন্ট্রি করে ছেড়ে দেয়। বারোতলায় যেতে যেতেই সিকুরিটিরা ফোন করে দেয়, ম্যাডাম দরজা খুলে দাঁড়িয়ে থাকে, কোনোদিন বা ওদের দশ বছরের ছেলে। প্যাকেট নিয়ে থ্যাঙ্কু বলে, কোনোদিন টিপস যোগ করে দেয় অ্যাপে। অনলাইন পেমেন্ট করাই থাকে, রেটিঙও হয় ৪ নয় ৫ দেয় এই ফ্যামিলিটা। স্যার খুব একটা সামনে আসে না, হয় বসে টিভি দেখে, নয়তো ল্যাপটপ নিয়ে কিছু করে। খোলা দরজা দিয়ে দেখেছে গিরীশ। দেখে বেশ সুখী পরিবার মনে হয়। হাতে পয়সাও আছে, সপ্তাহে অন্তত দুইদিন গিরীশদের ‘নাস্তা বোলে তো’ অ্যাপ দিয়ে কাছের দূরের নানা রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার অর্ডার করে। এরকম একটা সংসার চাই ওর।

    স্পিডে যেতে যেতে হঠাৎ খেয়াল করে, পরের সিগনালের চৌমাথার বেশ একটু আগে ওই বাসটা সাইড নিচ্ছে। আরে আরে, এখানে স্টপ নেই তো, বাস দাঁড়াচ্ছে কেন? স্পিড কমিয়ে ব্রেকটা ছোঁয় গিরীশ। ওদিকে বাসে উঠেই শীতল টের পায়, দু’পায়ের ফাঁকে গরম স্রোত নেমে আসছে কোনোকিছুর তোয়াক্কা না করে। ‘আরে আরে মুতনা হ্যায় তো টয়লেট কিঁউ নেহি গ্যয়ে? বদতমিজ আওরত তু ঝল্লি হ্যায় কা?’ কন্ডাকটারের কর্কশ চিৎকারে সারা বাসের লোক ঘুরে ওকে দেখতে থাকে। কয়েকজন হেসে ওঠে, এক মহিলা এসে পিঠে খোঁচা মেরে বাস থেকে নেমে যেতে বলে। বাসের বেশিরভাগ লোক সায় দিয়ে গলা মেলায়। বাস ততক্ষণে পরের সিগনালে। কে যেন জলের বোতল খুলে জল ছুঁড়ে দেয় গায়ে, বাসের মধ্যে হুরডা পার্টি শুরু হয়ে যায়। হেল্পার দুই থাবড়া মেরে বাস থামিয়ে ওকে হাত ধরে টেনে নামিয়ে দেয়। ওকে নামিয়ে দিয়ে হোঃ হোঃ করে হাসতে হাসতে বাসটা চলে যায়।

    এই সিগনালের চারকোণে কোন বাসস্ট্যান্ড নেই, অটো নেই। দাঁড়ানো কিছুই নেই, সব বেরিয়ে যাচ্ছে সাঁ সাঁ করে, হরিণের মত দৌড়ে উড়ে চলে যাচ্ছে। মুলানদীর মত তরতরিয়ে বয়ে যাচ্ছে পিচের রাস্তা।
    ~ তুলা নাম কায়?
    ~ শীতল লোখান্ডে
    ~ ইথে কায় করতআহে?
    কামিজের খানিকটা ছেটানো জলে ভেজা, সালোয়ার ভেজা, বুকের কাছে জাপটে ধরা ব্যাগ – শীতল ভয়ে ভয়ে চোখ একটু তোলে। একটা বাইক সামনে দাঁড়িয়েছে, এক পা নামিয়ে বাইকওলা প্রশ্ন করছে। ‘নাস্তা বোলে তো’ অনলাইন খাবার ডেলিভারি চেনের লোগো আঁকা ব্যাগ, টিশার্ট। যাক পুলিশ নয়। এখানে স্টপ নেই, বাসটা তাও সাইড করে প্রায় টেনে জাপটে একটা মেয়েকে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল দেখে খানিক কৌতূহলেই এগিয়ে এসেছে। হয়তো মাতাল কি গ্যাসখোর, আজকাল মেয়েগুলোও এইসব খেয়ে টাল হয়ে পাবলিকে আসে। কিন্তু মেয়েটাকে দেখে কথা শুনে টাল্লি বলে তো ঠিক মনে হচ্ছে না।



    তিন

    শীতল সেদিন গিরীশের বাইকের পেছনে বসেই বাড়ি ফিরেছিল। ডেলিভারি শেষ করে, ওর আপত্তি সত্ত্বেও গিরীশ বাড়ির সামনেই নামিয়েছিল। ততক্ষণে জানা হয়ে গেছে শীতলের দিনরাতের চলাফেরার স্থানকাল। শীতলও জেনেছে ওর কামধান্দার খবর। খারকি অঞ্চলেই ডেলিভারি করে গিরীশ, তাই টুকটাক দেখা হয়েই যেতে লাগল। সে রাতে বাইকের সিট ভিজে যাওয়াটা গিরীশ খেয়াল করেছিল কিনা, এটা আর জিগ্যেস করে উঠতে পারেনি এখনও। করবে একদিন ঠিক। সকালে অফিস যাওয়াটা আমিনের সাথেই করার চেষ্টা করেছিল ওরা ক’জন। কিন্তু আমিন বেরোয় ভোর সাতটায়, বারোটা অবধি ‘আপলা মন্ডি’র হয়ে শাক সবজি, ফল, ফুল ডেলিভারি করে, তারপর কম্ফিকার্টের ডেলিভারিতে যায়। সময় বাঁচাতে অনেকসময় আগের রাতেই পরের দিন সকালের ডেলিভারির মাল গাড়িতে তুলে নেয়। মেট্রোর কাজ চলছে পুরোদমে, খারকি অবধি চালু হয়ে গেলে অনেকটা সুবিধে হবে, টাইমও বাঁচবে।

    অনেককিছু খুলে গেছে, মানুষ তবু রেস্টুরেন্টে কম যায়, অর্ডার করে বাড়িতে আনায় বেশি। গিরীশের কাজের চাপ বেড়েছে ভালই, রোজগারও হচ্ছে বেশ। এর মধ্যে বাপটা ঘ্যান ঘ্যান করছে জমি কেনার জন্য। সেই কোন একশ’ বচ্ছর আগে ওর পরদাদা আরো সব কিসানদের সাথে মিলে খেতিজমি বাঁচাতে লড়েছিল। ওর দাদা তখন পাঁচ বছরের মুলগা। টাটা কোম্পানি মুলানদীতে বাঁধ দিল, কি না, ইলেকট্রিসিটি তৈরি হবে, মুলশি লেক তৈরি হবে। সেখানে সব বড়লোকরা বেড়াতে আসবে। খানাপিনা মৌজমস্তি। তাতে ওর পরদাদাদের খেতিজমি নিয়ে নিচ্ছে, কী খাবে কী করবে কিসান? তখন পাণ্ডুরঙ বাপতেজি ডাক দেয় মুলশি সত্যাগ্রহের। ভারতে তখন ব্রিটিশরাজ, জমি বাঁচাতে পারেনি বটে, তবে বদলি জমি পেয়েছিল মুলশি লেকের পশ্চিমপাড়ে। পরদাদা, দাদা, বাপও সেই জমিতে চাষ করেছে এই তিরিশ বচ্ছর আগে পর্যন্ত। তারপর কর্পোরেটাররা এলো খোকার পেটি নিয়ে।

    তা বাপটা পেয়েছিল পাঁচলাখ কম এক খোকা, তার থেকে সরপঞ্চের বেটাকে দিতে হল সত্তর লাখ। সেও নাকি আরো ভাগ হবে, মিনিস্টারের ঘর অবধি যাবে টাকা। তবু হাতে যা ছিল, তাও ওরা জন্মে চোখে দেখেনি কখনো। বাপ কামধান্ধা ছেড়ে মদ আর জুয়ায় মেতে রইল সালভর। তবু মা জোর করে বাড়িটা পাকা করে দোতলা করে নিয়েছিল আর বাড়ি রেখেছিল নিজের নামে। সরপঞ্চ সাহায্য করেছিল খুব, নাহলে সমস্ত টাকাটাই নেশার পেছনে উড়ে যেত। পাঁচ বছর পর, হাতের টাকা পুরো ফুরিয়ে যাবার পরে, বাপের মাথায় ঢুকল আবার জমি কিনে খেতি করবে। প্রথমে ভাগে নিল জমি। নেশা ততদিনে মাথায় চড়েছে, শরীর হয়েছে দুবলা। বেশি খাটতে পারে না খেতে, নেতিয়ে পড়ে আর চাঙ্গা হতে গিয়ে জোটে মার্কেটের পিছে দারুকোঠিতে। ভাগের জমি চাষ হয় না পুরো, দেনা বেড়ে যায়। কোনওবার বর্ষা আসতে দেরি হয়, বীজ মাটিতেই শুকায়। ছেড়ে দিতে হল জমিটা।

    শীতল এসব কথা শুনলে কেমন অবাক হয়ে যায়। চাষবাস, খেতিজমি এইসব ওদের পরিবারে ছিল না কোনোকালে। বড় পোস্টাপিসের পিওন ছিল ওর বাবা। ওর দাদাজিও পিওন ছিল, সরকারি চাকরিতে তখন ছেলেকে ঢোকানোর সুবিধে ছিল। তাতেই ওর বাবা দশক্লাস পাশ দিয়ে চাকরি পেয়ে যায়। তা চলে যাচ্ছিল, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেষ করিয়ে রিটায়ার হবে ভেবে রেখেছিল। কিন্তু কয় বছর আগে হঠাৎই একদিন নোটিশ আসে, সরকারের হাতে অত লোকের অতদিন ধরে মাইনে দেবার মত পয়সা নেই, তাই ওদের আগে আগেই রিটায়ার হয়ে যেতে বলছে। প্রথমে ওরা বিশ্বাস করেনি, তেমন গা’ও করেনি। সরকার অমন কত নোটিশ জারি করে, ক’টা আর ঠিকঠাক মানে লোকে। কিন্তু সত্যিই নয়মাসের মাথায় ওদের একদম বসিয়ে দিল। বেশ কিছু টাকা হাতে পেয়েছিল বটে। তার অর্ধেকের বেশিটা খরচ হয়ে গেল বড়বোনের বিয়েতে। বাবা তেমন চিন্তা করেনি, ছেলে বড় হয়েছে, কামাবে।

    বড়েভাইয়ার ট্রান্সপোর্টের বিজনেস শুরু করতে বাকি টাকাটার অর্ধেক গেল। বাবা ততদিনে মারুঞ্জিতে এ-মার্টের দোকানে সিকুরিটি গার্ডের চাকরি পেয়ে গেছে। স্যার ম্যাডামদের ব্যাগ খুলে উঁকি মেরে দেখে, হাতে একটা লম্বা চ্যাপ্টা যন্ত্র ধরে খরিদ্দারের গায়ের উপর দিয়ে আলতো করে বুলিয়ে নেয়। কখনো পিঁক করে আওয়াজ হয়, কখনো হয় না। ডিউটি দিনে এগারো ঘণ্টা, মাস গেলে পগার আসে সাত হাজার। বড়েভাইয়ার ট্রান্সপোর্টের বিজনেস থেকেও আয় হচ্ছিল টুকটাক। একটা ছোট ট্রাক আর একটা টেম্পো ট্রাভেলার, মাল নিয়ে, পাসিঞ্জার নিয়ে চলে যায় নাসিক, মারগাঁও, ব্যাঙালোর ওদিকে গুজরাট, রাজস্থান। শীতলও স্কুলটায় পেয়ে গেল। তখনই বড়েভাইয়ার বিয়ে পাকা হল, সোলাপুরে এক ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ীর বড় মেয়ের সাথে। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল, এই বদবিমারিটা না আসা অবধি।



    চার

    গুড়ি পড়ওয়ার একমাস আগে থেকেই চারপাশের হাওয়া কেমন থমথমে হয়ে উঠতে লাগল। মুলখের, সাংলি, গোদাম্বেওয়াড়ির গাঁওগুলো থেকে বিমারি আর মওতের খবর আসতে লাগল। কম্ফিকার্টের গুদামে সবাই বলাবলি করে, আবার লক ডাউন হবে। লক ডাউন হলেই ট্রেনও বন্ধ হবে, ভয়ে শীতলের হাত পা ঘামে, গলা শুকিয়ে আসে। গতবার দিওয়ালির পর বাবার জ্বর হল, সিকুরিটি গার্ডের চাকরিটা ফোনে ফোনেই কাটিয়ে দিল দোকান মালিক। নাকি খারাপ জ্বর, না হলেও হতে কতক্ষণ? আর কে না জানে, এই বিমারি অনেকের বডিতেই চুপচাপ লুকিয়ে থাকে, জ্বর-টর হলে বেরিয়ে এসে অন্য লোকের বডিতে চলে যায়। জেনেশুনে দোকানের লোককে বিপদে ফেলবে না মালিক। সেই থেকে শীতলের এই ক’টা টাকায়ই চলছে সংসার। বড়েভাইয়ার বিজনেসও নাকি খুব ডাউন যাচ্ছে, সংসার চালিয়ে কিছুই পাঠাতে পারে না। ওদিকে ভাবীর বাচ্চা হবে, তারও খরচ খরচা আছে।

    গিরীশের মা কাছের একটা হাউসিঙে একটা ফ্ল্যাটে বাচ্চা দেখার কাজ করে, আর আশেপাশের বাচ্চাদের তেল দিয়ে ম্যাসাজ করে, মাস গেলে হাতে সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার পাচ্ছিল। এক্সট্রা বাদ দিয়ে গিরীশও মোটামুটি হাজার কুড়ি পায়। বাপের ঘ্যানঘ্যানানিতে মা কিছু কিছু টাকা সরিয়ে রাখছিল ব্যাঙ্কে, যদি মুলখেরের দিকটায় কিছু খেতিজমি কিনে রাখা যায়। বাপটা অবশ্য এখনো মাসে এক দুইদিন মদ খেয়ে টাল হয়ে পড়ে থাকে, তবে রামিখেলাটা কমেছে। ওর বাপকে খেলার দিকে যেতে দেখলেই গাঁওওয়ালে কেউ না কেউ বাড়িতে খবর দেয়, মা গিয়ে চিল্লিয়ে খেলার ভুত ভাগিয়ে দেয়। গিরীশ শুনেছে, মেট্রোর জন্য সরকার জমি নিয়ে নিচ্ছে এদিক সেদিকে, বাপকে বলে – খেতিতে না লাগিয়ে বিল্ডারদের সাথে লাগালে লস যাবে না টাকাটা। বাপ তেড়ে ওঠে, বিল্ডাররাই ভুলিয়ে ভালিয়ে ওর জমি নিয়ে নিয়েছিল। পাণ্ডুরঙ বাপতেজির নাম করে কিরা কাটে, অভিশাপ দেয়।

    মার্চ, এপ্রিল, মে তিনমাস এদিকে মারাত্মক গরম পড়ে। প্রচুর জল, নিম্বুপানি না খেলে রাস্তায় হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়া অসম্ভব নয়। শীতল ব্যাগে একটা জলের বোতল রাখে, ভেতরটা শুকিয়ে গেলে দুই এক ঢোক খায়। সরকার আধা লকডাউন ডেকেছে, রাতে ফেরার জন্য অফিস থেকে ই-পাস বানিয়ে দিয়েছে। ন’টার পরে পুলিশ থাকে রাস্তায়, ধরে পাস চেক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রায়ই। রাত ন’টা থেকে ভোর ছ’টা কার্ফু, তবে পুলিশ থাকে রাত একটা অবধি। গিরীশ বলে, পুলিশদেরও কামাই কমে গেছে অনেক। এক বচ্ছর হল, রাস্তায় সেভাবে নাকা চেকিং হয়নি, তা কামাই হবে কোত্থেকে? আজকাল সকালেও অটো বা শেয়ারের টমটম পাওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই একমাস আগেও অটো না থাকলেও টমটম থাকত। একটু তাড়াতাড়ি বেরোলে, তিনবার বদলে ঠিক সময়ে স্টেশান পৌঁছানো যেত। মেট্রোরেল চালু হলে বাঁচা যায়, কিন্তু মেট্রোর কাজও ঢিলে তামালে চলছে।

    অ্যাম্বুলেন্সের তীক্ষ্ণ আওয়াজে গিরীশ বাইকটা সাইড করে স্লো করল। লাল-নীল আলো জ্বেলে অ্যাম্বুলেন্স দ্রুত বেরিয়ে যাবার পর, স্পিড না বাড়িয়ে কী ভেবে বাইক স্ট্যান্ড করে শীতলকে নামতে বলল, নিজেও নামল। ফুটপাথে উঠে পায়ের কাছে ব্যাগ নামিয়ে, হেলমেট খুলে বেঞ্চিতে বসে গিরীশ। শীতল অবাক হয়ে দেখছিল, ইশারায় পাশে এসে বসতে বলে ওকে। ব্যাগের সাইড পকেট থেকে দুই লিটারের লিমকার বোতল বের করে ঢকঢক করে জল খায়, শীতলকে দেয়। বর্ষা আসতে এখনো দেড়-দুই মাস বাকি। গিরীশদের এলাকায় জলের সমস্যা খুব। একদিন অন্তর মিউনিসিপালিটির কলে জলে আসে আর সপ্তাহে তিনদিন সকালে ট্যাঙ্কার আসে, সব বাড়ি থেকে লাইন দিয়ে সারা দিনের জল ভরে নিয়ে যেতে হয়। এই বছরে ট্যাঙ্কারের ভাড়া বেড়ে হয়েছে ২৪০০/- টাকা। মহল্লার সবাই মিলে ভাগেও মাসে অনেকগুলো টাকা লেগে যায় জল কিনতে। গিরীশ তাই যতটা পারে, নিজের খাবার জল সিটি এলাকা থেকে ভরে নেয়।

    শীতল এসব জানে, তাই জলটা নিতে ইতস্তত করে। ওর নিজের বোতলের জল অবশ্য ফেরার পথে গাড়িতেই শেষ হয়ে গেছে, এদিকে ভেতরটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে। গিরীশ ওর হাতে গুঁজে দেয় বোতলটা, শীতল মুখে জল ঢালতে ঢালতেই শোনে গিরীশ বলছে, একটু বসে নেওয়া যাক। তাছাড়া ওর কিছু বলারও আছে। গিরীশ আস্তে আস্তে বলে ‘নাস্তা বোলে তো’র ভেতরের অবস্থা খুব ভাল না। বেশ কিছু রাইডারকে বসিয়ে দিয়েছে এই মাসে। এছাড়া লোকের অর্ডার করাও কমে গেছে কিছুটা। শুক্র শনিবারে বাঁধা অর্ডার ছিল বেশ ক’টা পরিবারের, তার মধ্যে মাত্র দু’টো করছে তাও অনেক কম টাকার। ও তাই ‘ইটস ডান’ নামে আর একটা অ্যাপের ডেলিভারির কাজ নিয়েছে। এরা সবকিছুই ডেলিভারি করে, কিরানা জিনিসপাতি, রান্না করা খাবার, ওষুধ, কাগজপত্র এমনকি পান সিগারেটও। অর্ডার নিয়ে পয়েন্ট ট্যু পয়েন্ট প্যাকেজ পৌঁছানো কাজ। এই দুটো কাজই ও একসাথে করবে।



    পাঁচ

    সাড়ে বারোটার পরে শীতলকে গুদামে ঢুকতে দেখে খিঁচিয়ে উঠল মালিক, এইরকম লেট হলে ওকে আর কাজে রাখা সম্ভব হবে না। আজকাল খরিদ্দার আশা করে সিস্টেমে দেখানো ডেলিভারি ডেটের বেশ খানিকটা আগেই যেন ডেলিভারি হয়ে যায়, সেখানে এন্ট্রিই লেট হলে ডেলিভারি আগে কী করে হবে? আর এ মাসে শীতল প্রায় রোজই লেট। গোটা গুদামের চিৎকার বকুনি শুনতে শুনতে শীতল, টের পায় চুড়িদারের থাইয়ের কাছে বিন্দু বিন্দু সিক্ততা। অকারণেই লম্বা কামিজটা হাত দিয়ে টেনেটুনে বাথরুমে ঢুকে যায়। ট্রেন থেকে নেমে আজ প্রাণপণে দৌড়েছিল, কিন্তু তাও বাসটা পায়নি। এখন বাসও কমে গেছে, ঘণ্টায় একটা আসে কি আসে না। ওদিকে আজ তিনদিন হল বড়েভাইয়াকে ধরেছে বদবিমারিটা। কাল রাতে খুব খারাপ অবস্থা গেছে, সোলাপুরে কোন হাসপাতালে বেড পায়নি। আজ সকালে শ্বাসের কষ্ট একটু কম। ওদিকে ভাবী এদিকে মা সমানে কাঁদছে, গণপতিকে ডাকছে।

    বেলা চারটেয় শেষ ডেলিভারি লট নিয়ে আমিন বেরিয়ে যাবার পর মালিকও বেরিয়ে গেল। যাবার আগে আঙুল তুলে শীতলকে বলে গেল, এই মাসে আর একদিনও লেট হলে, এ মাসের মাইনে ও পাবে না, ওর জন্যই কম্ফিকার্টের রেটিং খারাপ আসছে। আমিন ফিরলে ওরা বেরোবে। ততক্ষণ আজকের হিসেব মিলিয়ে, রাত আটটায় যে মাল আসে, তার এন্ট্রি করে রাখবে। রাত দু’টো আর সকাল দশটার লট দু’খানার এন্ট্রি শীতলকে সকালে এসে একসাথে করতে হয়, তাই দেরি হলে ডেলিভারিও দেরি হয়। ও বোঝে সকাল ন’টা নাগাদ পৌঁছে যেতে পারলে ওরও সুবিধে আর মালিকও খুশি হয়। কিন্তু অত দূর থেকে দুই ঘণ্টা ট্রেনে, আবার এদিক ওদিক মিলিয়ে দেড় ঘণ্টার অটো কি বাসে করে আসতে গিয়ে ন’টার মধ্যে পৌঁছানো হয় না। মাঝে কয়েকদিন গিরীশ ওকে বাইকে করে একদম অফিস অবধি পৌঁছে দিচ্ছিল, তখন সাড়ে ন’টা কি দশটার মধ্যে ঢুকে যেত। তারপরই ‘ইটস ডান’এর কাজটা ধরে নিল। ব্যস, আবার লেট।

    আটটার মালের গাড়িতে খবর এল, রাত দু’টোর গাড়ি আসবে না। কাল থেকে পুরো লকডাউন ডেকে দিয়েছে আবার গরমিন্ট। আজ রাতের সব ই-পাস ক্যান্সেল করেছে। কেউ যেন ন’টার পরে না বেরোয়। মালের গাড়ি বেরিয়ে যেতে, ওরা ক’জন বসে একটু হাসাহাসি করল। বিমারীর হাতে যেন ঘড়ি বাঁধা আছে, গণপতি যেন ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে অসুখ, মওত পাঠাবে! আজ মাল এসেছেও কম, ঝটপটই এন্ট্রি হয়ে গেল। বিকেলে একবার বাবা ফোন করেছিল, বলল, বড়ে ভাইয়ার শশুরাল থেকে ফোন এসেছিল, ওদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সোলাপুরে যেতে বলেছে। শীতল কাজের অজুহাতে ছেড়ে দিয়েছিল তখন, মনে পড়তেই বুকের ভিতরে কী যেন খামচে ধরল। লক ডাউনের মধ্যে যাবেই বা কী করে? চিন্তাগুলো তাড়াতে কম্পিউটারে চোখ রাখে ও। আজ একটা অদ্ভুত জিনিস এসেছে এক কার্টন, উপরে লেখা প্যান্টি লাইনার। অনেকটা স্যানিটারি প্যাডের মতই দেখতে। মনিটরটা নিজের দিকে একটু কোণাচে করে ঘুরিয়ে নিয়ে জিনিসটার বর্ণনা পড়তে থাকে। আরে এটাই তো ওকে বাঁচাতে পারে!

    আমিন তাড়াতাড়িই ফিরল, জানাল বাইরে আবহাওয়া থমথমে গুমোট হয়ে আছে। লোকজন বিশেষ কেউ বাইরে নেই, গরমিন্ট থেকে মাইক নিয়ে সবাইকে ভেতরে থাকতে বলছে। আলিবাগ, মালভনে নাকি মাছুয়াদের সরিয়ে নিয়ে গেছে অন্য জায়গায়, এফএমে শুনেছে। কদিন ধরে শীতলের সাথে ভাল করে কথা বলে না, তাকায় না আমিন। ডেলিভারি একটু দেরি হওয়ায় ওর রেটিং খারাপ দিয়েছে কয়েকজন। আজও একটু দায়সারাভাবেই ডাকল ফেরার জন্য। শীতল গিরীশকে ফোনে বলছিল, আজ ওরা তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যাচ্ছে, তাড়াতাড়ি ফোন ছেড়ে কুঁকড়ে গুটিয়ে গাড়িতে উঠল। গিরীশ হাদপসারে এসে তুলে নেবে ওকে। হঠাৎ মনে হয়, আচ্ছা গিরীশ কি কোনোদিন খেয়াল করেছে, টের পেয়েছে ওর অসুখটার কথা? স্যানিটারি প্যাডের বড্ড দাম, রোজ রোজ পরা পোষায় না। প্যান্টিলাইনার কিনতে পারলে গিরীশ আর টের পাবে না। কিন্তু সামনের মাসে মাইনে পাবে তো শীতল?

    রাত ন’টা পেরিয়ে গেছে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক আগে, ই-পাস তো আজ রাতে ক্যান্সেল, গিরীশ তাই হাইওয়ে ছেড়ে ভেতরের শর্টকাট রাস্তায় বাইক ছোটায় হু হু করে। অন্যদিন ওদের দু’জনের মাঝখানে থাকে ডেলিভারির ব্যাগটা, আজ ওটা শীতলের পিঠে দিয়ে ওকে বলেছে গিরীশকে শক্ত করে ধরে বসতে। এই রাস্তাটায় লাইট তেমন নেই, বাইকের হেডলাইট ভরসা। মেট্রোর মাটি খুঁড়ে রাস্তার পাশে স্তুপ করে রেখেছে, জায়গায় জায়গায় মেট্রোরেলের সুড়ঙ্গের পাশের টিনের পার্টিশান দেয়াল খানিকটা ভেঙে কাত হয়ে রয়েছে, হেডলাইটের আলোয় মনে হচ্ছে মস্ত গহবর চলে গেছে পৃথিবীর কেন্দ্র অবধি। গিরীশ হেলমেটের সামনের ঢাকনিটা কপাল অবধি তুলে শীতলকে বলে, রেললাইনেরা আসলে এক অন্যের সাথে জোড়া থাকে। একটা রেলগাড়িতে চড়লেই আসলে পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে চলে যাওয়া যেত, যদি না মানুষের রাজনীতি মাঝখানে সীমানা বসিয়ে রেললাইনটা টুকরো করে দিত।



    ছয়

    তালেগাঁও যাবার মোড় ছেড়ে সোজা খানিক এগিয়েই গিরীশ টের পায়, পাশের পিছল আঠালো মাটি রাস্তায় এসে পড়েছে, বাইক পিছলাচ্ছে অল্প অল্প। গতিবেগ কমায় আর ওকে চমকে দিয়ে পিছনে বেজে ওঠে ‘ইয়ে দেশ কি ধরতি সোনা উগলে, উগলে হীরে মোতি, ইয়ে দেশ কি ধরতি, শীতলের মোবাইলের রিংটোন। গিরীশ জিগ্যেস করে, দাঁড়াবে কিনা? শীতল ততক্ষণে একহাতে ব্যাগ অল্প খুলে, দেখে নিয়েছে বাবার ফোন, থামতে না করে ফোনটা কেটে দেয়। ওরা আবার রেলের গল্পে, মেট্রোর গল্পে ডুবে যায়। শীতল বলে, শিবাজীনগরে মেট্রোয় চেপে যদি হরদোয়ার পৌঁছে যাওয়া যেত! গিরীশ বলে সে আর এমন অসম্ভব কী? মেট্রো তো ইন্টারসিটির স্টেশান অবধি যাচ্ছেই, সেখান থেকে মুম্বাই, মুম্বাই থেকে দিল্লী – রাজধানী এক্সপ্রেসের লাইন ধরে, ব্যস, সেখান থেকে সোজা হরদোয়ার। ওর বাঙালি পড়শি বলে ‘হরিদ্বার’, ভগবান হরির কাছে যাবার দরজা, সেখানে নাকি ভীষণ সুন্দর আরতি হয় গঙ্গার উপরে।

    ঠিক ঝড় নয়, তবে হাওয়া দিচ্ছে এলোমেলো, নিঃশব্দে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে আকাশের পুব থেকে পশ্চিম অবধি। গিরীশ বলে, এই যে আঠালো মাটি, এতে খেতি ভাল হয়, গন্না, গেঁহু। ‘ইয়ে দেশ কি ধরতি সোনা উগলে’ আবার বাজছে শীতলের ফোন, এবারে ওর বড়বোন। প্রচণ্ড ভয় করে শীতলের, আলতো করে ছুঁয়ে নীরব করে দেয় ফোনটা। এমন মাটির জন্যই পাণ্ডুরঙ বাপতে সত্যাগ্রহ করেছিল, বলে চলেছে গিরীশ। বলতে বলতেই হ্যান্ডেলের আয়নায় দেখে, পিছন থেকে বিরাট কালো কী যেন একটা তেড়ে আসছে ওদের দিকে, যার নীচের বাঁ দিকে মিটমিটে কিছু একটা জ্বলছে। ইস্কুলে পড়া একচক্ষু দানব সাইক্লপসের কথা মনে পড়ে। এটা কি কোন জানোয়ার? না কি হাইওয়ে থেকে পুলিশের ভয়ে শর্টকার্ট নেওয়া বেয়াইনি ট্রাক? গিরীশের শরীরে পাক দিয়ে মাথাটা ঘুরে ওঠে হঠাৎই, ক’দিন ধরেই শরীরে তেমন জুৎ নেই। ইতোমধ্যে আরো একটা অর্ডার ঢুকেছে ফোনে, শীতলকে নামিয়ে সেটা করে তবে বাড়ি।

    নাহ, কাল থেকে আধা লিটার দুধ খাবে গিরীশ, শরীর ঠিক না হলে কামধান্ধা ঠিকঠাক হবে না; ভাবতে ভাবতেই বাইকটা আরেকটু সাইড করার চেষ্টা করে, এখানটায় মেট্রোর টিনশেড ভেঙে রাস্তায় চলে এসেছে অন্ধকারে দেখতে পায় নি, চাকায় ধাক্কা লেগে বাইক ছিটকে হেলে রাস্তার মাঝে চলে আসে। আর তক্ষুণি ওই একচোখো সাইক্লপস এসে ওদের দু’জনকে গিলে নেয় বাইকশুদ্ধ। কতক্ষণ পরে কে জানে, ট্রেনের আওয়াজে শীতল চোখ খোলে। আরে মেট্রোরেল কবে চালু হয়ে গেল? এই তো দিব্বি কেমন চকচকে আলোজ্বলা স্টেশন, বড় বড় কাচের জানলাওলা মেট্রো দাঁড়িয়ে আছে, ঠিক যেমন ইউটিউবে দেখে। গিরীশকে টেনে তোলে, দু’জনে মিলে বাইকটা নিয়ে ঢুকে আসে প্ল্যাটফর্মে। ওদের সামনের দরজাটা দুইপাশে সরে গিয়ে খুলে হাট হয়ে যায়। সড়াৎ করে বাইকটা তুলে দুজনে উঠে পড়ে, এই কামরাটায় কেউ নেই, কেউ হয়তো জানেই না চালু হয়ে গেছে। সামনের কামরায় আছে মনে হচ্ছে, কিন্তু ঠিকমত দেখা যাচ্ছে না। ঝমাঝম করে ট্রেন সুড়ঙ্গে ঢোকে, দু’জনে ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে পড়ে জানলার ধারে। জলকাদা নরম আঠালো মাটির মধ্যে থেকে শুধু বারেবারে বেজে ওঠে ‘মেরে দেশ কি ধরতি সোনা উগলে উগলে হীরে মোতি। মেরে দেশ কি ধরতি’।




    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
    স্কেচ ৬ | পানুর মেটামরফোসিস | চালচিত্রের চালচলন | কেমন আছে ওরা? | চাও করুণানয়নে | পুত্রার্থে | সই | আপনি যেখানেই থাকুন | কিসসা গুলবদনী | জনৈক আবহ ও অন্যান্যরা | গুচ্ছ কবিতা | অমল রোদ্দুর হয়ে গেছে | ইনি আর উনির গপ্পো | দুগ্গি এল | দুর্গারূপে সীতা, ভিন্নরূপে সীতা | প্রিয় অসুখ | শল্লকী আর খলিলের আম্মার বৃত্তান্ত | রানার ছুটেছে তাই | বিসর্জনের চিত্রকলা | কল্পপ্রেম | লম্বা হাত খাটো হাত | কেন চেয়ে আছো গো মা, মুখ পানে! | ছোট্ট পরীর জন্মদিন | জাপানি পুতুল | আধাঁরে আলোঃ শারদ সাহিত্য | ইন্দুলেখার ইতিকথা | মুর্শিদাবাদ | এই দিনগুলি | জ্বিন | জোনাকি এবং ডোরেমিরা | বাসায় চুরি | বিশ্বকর্মার গুপ্তঘট | দুর্গাপূজা - দুটি প্রবন্ধকথা | টিউশন | ফেরা | মায়া | বন্দী | মেয়েদের কিছু একটা হয়েছে | কেল্লা নিজামত | সীতারাম | দড়াবাজি | মায়াফুলগাছ | যখন শ্যামের দ্বারে | কুয়াশা মানুষের লেখা | সময় হয়েছে নতুন খবর আনার | মিষ্টি চেখে ওড়িশার ডোকরা শিল্পীদের গ্রামে | নিশি | পথ | প্রাকার পরিখা | নীল সাইদার গল্প | তুষারাচ্ছন্ন ইউরোপে শ্রীমতী ফ্রয়ডেনরাইখের আশ্চর্য বিষাদ | দীপাবলীর বারান্দায় | কলমি শুশনি | এক অনিকেত সন্ধ্যা | গৌরি বিলের বৃত্তান্ত | আনন্দগামী বাস থেকে | মুয়াজ্জিনকে চিরকুট | দেবীর সাজে সৌরভ গোস্বামী | শরৎ ২০২১
  • গপ্পো | ১৫ অক্টোবর ২০২১ | ৬১৫৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ২১ অক্টোবর ২০২১ ১৭:২৫499952
  • গল্পটায় শুকনো আর ঘিঞ্জি মাটির গন্ধ ভরা। কিকরে এই কর্পোরেট রাজের আমলে মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত তে পরিণত হয়ে যাচ্ছে তার দারুণ বর্ণনা উঠে এসেছে। আগে ভাবা হত কত জনের ভালো করা যেতে পারে, এখন সবার লক্ষ্য আরো কত বেশি জনকে বঞ্চিত করা যায়, কার কার সঞ্চিত অর্থ কিভাবে বার করে নেওয়া যায়। খুবই খারাপ দিন এর মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা। 
  • একক | ২১ অক্টোবর ২০২১ ২০:২৪499960
  • এক কথায় বললে,  ভালা পাইলাম :) 
     
    দু কথায় বললে : 
     
    "গিরীশ হেলমেটের সামনের ঢাকনিটা কপাল অবধি তুলে শীতলকে বলে, রেললাইনেরা আসলে এক অন্যের সাথে জোড়া থাকে। একটা রেলগাড়িতে চড়লেই আসলে পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে চলে যাওয়া যেত, যদি না মানুষের রাজনীতি মাঝখানে সীমানা বসিয়ে রেললাইনটা টুকরো করে দিত।" 
     
     এখানে " রাজনীতি " শব্দটা ফোকাল প্লেন কে ঘেঁটে দিচ্চে। এবং ঘেঁটে কোন নতুন কিচু দিচ্চে না।  একে কেও লেখকের ঢুকে পড়া বলবেন। বা অন্য কিচু। 
     
    আমি মোদ্দা বুজি, ক্যামেরাটা কোথায় রাকচো। আর লেন্স। লেখক দিব্যি প্যান প্লাস  জুম ইন আউট করেচেন মুন্সিয়ানার সঙ্গে,  পাস্ট প্রেসেন্ট,  প্রেসেনটে ডেলিভারি সারভিসের মালিক একটু লং আবার ইন করে ছেলেটা - মেয়েটা যেটা কিনা লেখকের প্রেস্ক্রাইব করা পারস্পেক্টিব ফোকাল লেংথ এই গপ্পের।  আবার মেয়েটার চামড়ার গায়ে ছেলেটার ঠোঁটের সামনে থুতু সুপার যুম --- পুরোটা ফাস্ট এন্ড কার্ট হ্যান্ডলিং যা পাঠকের সামনে শব্দের ফোনোলজির হারডল বেশি না তুলে সরাসরি দৃশ্যে ঢোকায়। এটাই এই গল্পের স্টাইল হিসেবে দেকচি। 
     
    ত,  সেই যায়গায়,  দুম করে " রাজনীতি ",  পলিটিস ও নয়,  শুদধ " রাজনীতি " শব্দ ও বাক্যটা  একটা সুপার এবস্ট্রাকশন প্লেনে নিয়ে চলে যায় যার কোন নেইবারিং নোড গপ্প থেকে পাইনা।  সরপঞ্চের মত লোক রা বললে কি পেতুম?   হয়ত। হয়ত নয়। কিন্তু সে নিয়ে ভাবা লেখকের কাজ। তাছাড়া পাঠকের চশমার ও পাওয়ার আচে। 
     
    তো এরকম কয়েক জায়গায় হয়েচে। যার ফলে গাড়ি চাপা পড়তেই মন বলে এবার সব সফট ফোকাস হবে। হাই কী র লাইটের মধ্যে দিয়ে হাঁটবে চরিত্ররা।
     
    তা না হলে,  পাঠক একটু এক্সট্রা মজা পেত। আগের ইনারশিয়া নিয়ে শেষ সেট এ ঢুকে,  উল্টোদিকের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর,  আবার ফিরে তাকালে একটা দৃশ্য তইরি হত। 
     
    বিটিডাব্লু,  এগুলো কোন সমালোচনা রিভিউ কিস্যু না, যারা সুক্ত রাঁধে তারা খেতে খেতে নিজেদের মদ্যে পলতা পাতার সঙ্গে নারকেলের দুধ কেমন গেচে তাই নিয়ে আলাপ করে। এ হবেই ঃ)))
     
     
    খাদুরা মন দিয়ে খাক। নিক্তি মেপে যুক্তি দিক। সবার জন্যেই রান্না।
     
     
     
     
  • | ২২ অক্টোবর ২০২১ ১৯:৩৬500054
  • আরে না না আমি একটুও অসম্মানিত বোধ করি নি। আমি কি রাজ্যপাল নাকি? সায়ন্তন আপনি নিশ্চিন্তে  বলে যাবেন যা মনে হবে। 
     
    রমিত, থ্যাঙ্কু। 
     
    একক একদম মোক্ষম ধরেছে
     :-)
  • শঙ্খ | 103.217.***.*** | ২২ অক্টোবর ২০২১ ২৩:৪৬500069
  • পড়লুম। এই অস্থির সময়ের ডকু হিসেবে এগুলো তোলা থাকবে।
    যে দুএকটা কথা না বললেই নয়, বিল্ড আপ আমার যতটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে রয়ে সয়ে শিক কাবাবের স্কিউয়ার ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বানানো মনে হল, শেষের দিকে এসে কেন জানি একটু ঝপ করে বাটার মেরে মাইক্রো তে ঢুকিয়ে গরম করে পরিবেশন করে দেবার মত লাগল। আগাগোড়া নির্মম নিস্পৃহ লেখা, কিন্তু আমি যে প্রথম থেকেই ধরে নিয়েছিলুম, এদের কেউ একটা মরবে, না হোক করোনায়, বা অন্য় কিছুতে, সেইটে মিলে গেল বলেই হয়তো এরম মনে হচ্ছে। তবে ক্রাফট অন্য লেভেলের। সেদিক থেকে কুনো কমতি নাহি।
  • bodhisattvagc dasgupta | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ১২:১৩500096
  • বাঃ এখানে লেখকদের নিজেদের মধ্যে রাইটার্স ক্যাম্পের মতো খুব সুন্দর আলোচনা হলো। লেখক ও খুব সুন্দর ফীডব্যাক ও রেসিপি গ্রহণ করলেন। আরো লোকে এই চমৎকার লেখাটা পড়ুন আর ফীডব্যাক বা রেসিপি দিন। থাম্বস আপ টু এভরিওয়ান। এটা কোনো দিন আমার পদ্ধতি হবে না তবে নো হার্ড ফিলিংস পর সায়ন্ত্বন। লেখক সায়ন্ত্বনের আমি অনেকদিন ধরেই গুণমুগ্ধ। একবার লোককে ডাকাডাকি করে সায়ন্ত্বনের লেখা পড়াতে গিয়ে স্পাইটফুল কমেন্ট ও পেয়েছি,  গুরুতে রাজনৈতিক ঝগড়ার খিস্তো খিস্তির অন্ত নেই কিন্তু কবি , অঙ্কবিদ, রান্না , বেড়ানো এনথুসিয়াস্ট দের মতো ফিকশন রাইটার দের মধ্যে কোলাবরেশন গড়ে উঠলে সেটা আনন্দ সংবাদ।
  • π | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ১৪:৩৫500102
  • সায়ন্তনের নামের বানানটা কি বোধিদা ইচ্ছা করেই বিকৃত করে বারবার ?   লেখকের সম্মান অসম্মান নিয়ে এত কথা হচ্ছে ( যদিও এই ফিডব্যাক পদ্ধতিতে লেখকের কীসের, কোন যুক্তিতে অসম্মান  এই দিস্তে দিস্তে মন্তব্য পড়ে বিশেষ বুঝিনি),  তাহলে তাঁর নামের বানানটা এরকম ভুল লেখা, এখানে তিনি নিজে লেখার পরেও খেয়াল না করা, ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল লেখা হলে তো আরো কথাই নেই, এটা খুব বেসিক লেভেলেই সম্মানের অভাব মনে হয়।
  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 2405:201:8008:c03c:f9ae:95be:42d1:***:*** | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ১৫:৩৯500104
  • ও হাই পাই  অনেকদিন  পারে তোকে দেখে ভালো লাগলো।  শরীর কেমন ?আশাকরি  বাংলা দেশের ঘটনার পরে তোর চেনাজানা দের উপরে আমাদের দেশের বাঁদর দের আক্রমণ হয় নি। 
     
     
    এই  লিংকটা অসাধারণ গল্পের , সায়ন্তন চৌধুরী র লেখা। তলায় গুরুর রীতি অনুযায়ী কমেন্ট আছে। বানান ভুলে ভয়ে কপি করে আনলাম নাম টা :-)  এই লিংক টা দেখলে বোঝা যাবে আমি গল্পটা পড়ে উচ্ছসিত কত হয়েছিলাম। এমনকি আমি জানতাম না যে এটাই তার একমাত্র সৃষ্টি কিনা, যদিও লেখার স্টাইল দেখে মনে হয়েছিল বেশি বয়স না লেখকের। এতটাই উচ্ছসিত হয়েছিলাম, যে চেয়েছিলাম এঁর গল্প সংকলন হোক,ইশান , তুই আর হুতো কে অনুরোধ জানিয়েছিলাম নাম করে। তাই জেনে শুনে অসম্মান করার প্রশ্ন ওঠে না। বানান ভুল হয়েছে। 
     
    এই লিংকটা আরেকটা কাজে লাগবে, দেখা যাবে লেখাটি নিয়ে আমি খ নামে লিখে কি মন্তব্য করেছি। আর কারা লেখাটা পড়ে অথবা না পড়েই ব্যান্টার করেছেন। তাতে ব্যান্টারে আগ্রহ আছে বোঝা গেলেও একজন নতুন লেখকের সাড়া জাগানো লেখাটা নিয়ে তেমন আর বিশেষ মন্তব্য নেই। একটি ছাড়া। আমার প্রতি করা আনডারস্ট্যান্ডেবলি মজার এবং খুব ই সাটল :-)))))  ব্যান্টার গুলি বাদে একটি তীর্যক মন্তব্য রয়েছে, সেটি লেখকের নতুনত্ত্ব অ্যান্ড অর প্রিজিউমেবলি যোগ্যতা নিয়ে। 
     
    "
    •  | 236712.158.786712.183 (*) | ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:২৮48757
    • একদম ঝক্কাস।
    •  | 236712.158.453423.93 (*) | ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৫৩48758
    • this is so good
    •  | 237812.68.454512.210 (*) | ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:০৯48761
    • ভাল বেশ।
    •  | 236712.158.786712.69 (*) | ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:৪৮48762

    • একক, দমু , সৈকত (২য়), ইন্দ্রানীদিদি, তোমরা এনার লেখা পড়ে যাও। তিতাস, সৈকত (প্রথম) , ইন্দো, শাক্য তোরা একবার পড়ে যাশ। ডিডি দাকে যদি কেউ পারে একটু লিং টা পাঠিয়ে দিয়ো। খুশি হবেন। একদম মন টা খুশি হয়ে গেছে, নবারুণ বেঁচে থাকলে খুব খুশি হতেন এই লেখা পড়ে। ফিকশনে নতুন কাজ দেখলে একেবারে ছেলে মানুষের মত খুশি হতেন। কাঁচা পাকা বড় কথা না, নতুন, একটা হরাইজন কে বাড়ানোর প্রয়াস দেখলেই খুশি হতেন।

      ইন্দো বিইং দ্য শাহেনশা অফ গুরু ফিকশন, আমি ভাবতাম আমি সেই স্ট্যান্ডার্ড রাখতে পারই নি। তার পরে অনেক গুলো ভালো লেখা হল। বাংলা হল, দখনে হল, শহর হল, পার্টিশন হল, সাইকোলোজি হল, জেলা হল, অভিবাসন এবং স্মৃতি হল এ মানে খুব ই ভালো হচ্ছে। সংকলন যেটা হয়েছে একটু আর্লি হয়ে গেছে, আর বছর দশেকের মধ্যে একটা মাইলস্টোন সংকলন হয়ে যাবে।

      স্ট্রীটকার শব্দটা , ওহ , গুরু এই শব্দের মত বিবলিওফিলিয়ায় আক্রান্ত শব্দ আর নেই। টেনেসি উইলিয়াম্স, নেসিও, জীবনানন্দ, কাফকা, বালডউইন, সারামাগো, উইল সেল্ফ, ইয়ান সিনক্লেয়ার, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, বুল্গাকোভ, গ্রুশিন, ইলিয়াস, জহির এরা প্রত্যেকে যেমন আর্বানাইজেশন এর একেকটা সময় আর স্থানের চিহ্ন ধরে রেখেছেন, এটাও তাতে আমাদের সময়টা কে , এই বাসাহীনতা কে ধরে রাখলো। সিকি থাকলে বলত টোটাল ফেলে চুমু।

      শহরে সব সময়েই যেমন সাবার্ব থাকে, আর মূল শহরের মধ্যেও সাব কালচার আর স্তরে স্তরে আলাদা আলাদা ফিজিকাল স্পেস থাকে, এই লেখাটা তার একটা নিদর্শন হয়ে রইলো। কদিন আগেই নিউ ইয়র্কার এ জে ম্যাকিনার্নে বলে একজ্ন লেখকের 'ক্লোয়ে'জ সিন' বলে একটা লেখার কথা পড়ছিলাম। আর্কাইভ থেকে তোলা। একজন ইন্ডি ফিল্ম অ্যাকট্রেস এর প্রোফাইল। আমার সাংঘাতিক ভাবে দৃশ্যকল্পের দিক দিয়ে সে টার কথা মনে হচ্ছে। একটা আশ্চর্য্য আলোআঁধারী, যেখানে স্মৃতি এবং সত্তা আলো আর ছায়ার মত একবার স্ট্রীটকারের তলায় যাবে আবার বেরিয়ে আসবে। ফ্যান্টাস্টিক।

      হুতো, ইশান, পাই, এনার বই হোক।
    • T | 237812.69.563412.229 (*) | ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:৪৬48763
    • ভালো লাগল।
    • b | 236712.158.566712.63 (*) | ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ০৮:২০48764
    • খ, আমি কি লেখাটা পড়বো?
    • একক | 237812.69.453412.116 (*) | ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ১১:০৭48767
    • যদ্দুর খেয়াল হচ্ছে এই নিয়ে তৃতীয় লেখা পড়লুম সায়ন্তনবাবুর । ভালো লেগেছে :) আরও পড়বার অপেক্ষায় রইলুম ।
    •  | 237812.68.674512.43 (*) | ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ১১:৩২48765
    • যদি বই বেরোয় আমি রিভিউ করার অনুমতি চাইবো।
    • অহ | 237812.68.454512.90 (*) | ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ১২:২২48766
    • আজকাল একটা ছোটগল্প দিয়েই সংকলন বেরিয়ে যাচ্ছে।
    • :-2 | 237812.68.344512.71 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:০৬48768
    • গুচানুযায়ী দ্বিতীয় মনে হচ্ছে। অ-এর পর আ; মানে অশ্বক্ষুরাকৃতির পর আমলকী।
    • ন্যাড়া | 237812.68.344512.53 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:১৩48769
    • আমিও খনু না বললে পড়তে পারছি না।
    • Atoz | 237812.69.4545.147 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৩48770
    • হি হি হি হি। খননেন্দ্রবাবু, ও খননেন্দ্রবাবু---

      ঃ-)
    • :-() | 236712.158.565623.141 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৫48771
    • খয়ের মন্তব্য খুব এমনিতে বোঝাটোঝা যায় না। কিন্তু এই লাইনটা বড্ড বেশী কটিনঃ “স্ট্রীটকার শব্দটা , ওহ , গুরু এই শব্দের মত বিবলিওফিলিয়ায় আক্রান্ত শব্দ আর নেই”।
      মানুষে বিবলিওফিলিক হয় জান্তুম, শব্দ কি করে বই ভালোবাসবে? প্যারাটার প্রথম লাইনের সঙ্গে পরের ছত্রগুলির কোনও সম্পর্ক না থাকায় আরও-ই ঘেঁটে যাচ্ছে।

      এই রিভিউ পড়লে, মূল লেখা পড়ার আর দর্কার কি?!
    •  | 236712.158.786712.69 (*) | ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৫৯48772
    • বিভিন্ন লোক কে এই লেখা পাঠিয়েছি। অন্তত দুজন যাকে বলে মুগ্ধ হয়ে গেছে। খুব ই আনন্দ হয়েছে আমার।

    "
     
    তো এই মন্তব্য টির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, অবশ্য ব্যস্ততায় নাও পড়া যেতে পারে। 
     
    "
    • অহ | 237812.68.454512.90 (*) | ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ১২:২২48766
    • আজকাল একটা ছোটগল্প দিয়েই সংকলন বেরিয়ে যাচ্ছে।
    "
    এটার সঙ্গে দৃষ্টিভঙ্গীতে কাকতালীয় ভাবে একটা সাম্প্রতিকতর মন্তব্যেরই মিল আছেঃ 
     
    দমুর এই লেখাটি সম্পর্কে সায়ন্তনের ঃ 
     
    "
    • সায়ন্তন চৌধুরী | ২০ অক্টোবর ২০২১ ০৫:৩৯499856
    • আমি তো পোয়েটিক্স শব্দটা খুব সাধারণ অর্থে ব্যবহার করেছিলাম কবিতার আর্ট বা এসথেটিক্স বোঝাতে; লিট ক্রিটের বাইরে হামেশাই ব্যবহার হয়। আর লিখেছিলাম লিটেরারি ক্রিটিসিজমের মাধ্যমেই একটা ভাষাসাহিত্যের ক্যানন আকৃতি পায়, কিন্তু সেটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। অন্যরকম কিছুই লিখিনি; আপনি খড়ের পুতুল খাড়া করছেন। আসলে সমস্যা হচ্ছে আপনি বলতে চাইছেন একটা লেখা পড়ে কেন ভালো লাগল বা কেন খারাপ লাগলো এরকম ফীডব্যাকের কোনো গুরুত্ব নেই। তো আমিও দাবী করছি না যে এধরনের মন্তব্যের ভ্যালু আছে। কিন্তু লেখা পড়ে শুধু ভালো/খারাপ লাগল না বলে কী ভালো/খারাপ লাগল, জানালে অসুবিধেটা কোথায়? লেখকের তো আদৌ কোনো দায় নেই মন্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়ার। ফীডব্যাকের আদানপ্রদান ইন্টারনেটে হয়ই, তাছাড়াও এধরনের ওয়ার্কশপ/ক্রিটিক গ্রুপ/রাইটিং সার্কল দেখি তো নতুন লেখকদের মধ্যে।
       
      আর অখ্যাত অচেনা নতুন লেখকদের লেখা নিয়ে খুব গভীর ও লংফর্ম প্রবন্ধ লেখা হচ্ছে এমন তো হয়না। স্বাভাবিক কারণেই হয়না, কেননা সময় লাগে। বেশিরভাগ লেখক যে হারিয়ে যাবে, সেটাও জানা। আপনি যে এর মধ্যে এত তর্ক করার উপাদান খুঁজে পেলেন তাতেই আশ্চর্য হলাম। বাদবাকী লিটেরারি ক্রিটিসিজমের গুরুত্ব নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। অবশ্য আপনি তিরিশ বছর ধরে লিট ক্রিট চর্চা করছেন জেনে আন্তরিক ভালো লাগল। আমার সে সুযোগ হয়নি এখনও, তিরিশ পেরোই আগে। :)
       
      যাইহোক, সব লেখা পড়া সম্ভব নয়; যদি পড়ি, সেক্ষেত্রে ইচ্ছে হলে ফীডব্যাক দিতেই পারি। খারাপ লাগলেও জানাব আর কি। লেখালিখির টেকনিক্যাল দিক নিয়েও মন্তব্য করব। গুরুচণ্ডা৯তে সবার লেখার সুবিধে রয়েছে কিনা।
    "
    অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে ফীডব্যাক ও রেসিপি আদানপ্রদানের মূল কনফিডেন্স অথবা একজন লেখকের সংকলন ছাপানো উচিত কিনা সেই সম্পর্কে নেগেটিভ জাজমেন্ট টা আসছে একজ্ন লেখক নতুন কিনা তাই নিয়ে, লেখাটার কোয়ালিটি নিয়ে নয়। :-))))))
    আই অ্যাম শিয়োর , দ্য রেস্পেক্ট ফর নিউ রাইটিং ফ্রম আদার নিউ রাইটার্স জাম্প্স আউট অফ দিজ লাইন্স। :-))))
    যাই হোক এগুলোর তো আর কোন নিয়ম নেই, ফীডব্যাক আদান প্রদান চলবে। 
     
    অন্যদিকে আমার রিভিউয়ার হিসেবে পজিশন হল, নতুন লেখক হোক, জীবনে প্রথম লেখা যাই হোক, একটা কম্প্লিট কালচারাল প্রোডাক্ট যখন আসবে, আমার যদি সেটা নিয়ে মনে হয় লং ফর্ম বড় করে সমালোচনা লেখার , প্রশংসা অথবা নিন্দা সূচক তখন লিখব। এবং টেক্স্ট টার মধ্যে কন্টেইন্ড থাকবো, কি করলে ভালো করতেন সেটা বলব না, কারণ একটা এক্সপ্রেস্ড পজিশন ক্রাফ্ট অনুভূতি শুধু নিজস্ব তার কারণেই ইন্ডিপেন্ডেন্ট। রিভিউ বা ফীডব্যাক আমি যা দেই, সংশোধন প্রচেষ্টা আমি নর্মালি অ্যাভয়েড করি। ইত্যাদি। 
     
    এটা অবস্থানের পার্থক্য। 
     
     
    আর বানান ভুল করে আমি নাকি ডেলিবারেটলি অসম্মান করছি। :-)
     
     
       
  • Tim | 2603:6010:a920:3c00:6d65:f562:d575:***:*** | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ১৮:১৯500116
  • প্রথমবার পড়ে মনে হয়েছিলো আরেকবার পড়তে হবে। তো, বলা বাহুল্য, ভালো তো লেগেইছে।ওপরের আলোচনাও ভালো লাগলো। 
     
    দুই কথা লিখতে গেলে, হিন্দি শব্দগুলো উল্লেখযোগ্য। একদিক থেকে, এতে আঞ্চলিক ফ্লেভারটা এলো। আবার অন্যদিক থেকে, গল্পটার দেশ (এবং সম্ভবত কালের) সীমানায় বাঁধা না পড়ার সম্ভাবনা, সেইটা খানিকটা মার খেলো কি? এই ব্যাপারটার ভালো খারাপ দুই দিকই আছে সেটাই ভাবছিলাম।
     
    আর মাঝে মাঝে ছোট ছোট বাক্যগুলো বা অংশগুলো আলাদা করে ভালো লেগেছে (যেমন "ঠিক ঝড় নয়" দিয়ে যে প্যারা শুরু হচ্ছে)। 
  • | ২৫ অক্টোবর ২০২১ ১৫:১৯500192
  • শঙ্খ, টিমি, থ্যাঙ্কু। 
    টিমি, হিন্দি নয় মারাঠি মূলত। 
  • Tim | 2603:6010:a920:3c00:c07b:7e1e:5f66:***:*** | ২৫ অক্টোবর ২০২১ ২০:৪৩500199
  • হ্যাঁ ঠিক তো, খেয়াল করিনি লেখার সময়, অনেক চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিল।
  • Manidipa | 2405:8100:8000:5ca1::9e:***:*** | ০৪ নভেম্বর ২০২১ ০৮:০৬500669
  • ভাল লেগেছে দি। কান্না পেয়েছে।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন