ফেরা -১
জীবনের মাঝখানে বসে বসে তুমি দেখতে পাচ্ছো
বাইরে উজ্জ্বল দিন, উল্টোদিকে পেরিয়ে যাচ্ছে নানান নামের বিন্দু
চেনা জানা শব্দেরা অপেক্ষায়, তুমিও
ভাবছ কে কে উঠে আসবে বদলে যাবে দিনরাত্তির
ঠিক কোনখানে থামলে
অথচ প্রতিটি বদলের পর তুমি আসলে ছুটে যেতেই থাকো
পরবর্তী বদলের দিকে
তুমি তাহলে কে !
বাইরে দাঁড়িয়ে তুমি দেখতে পাচ্ছো সে
দ্রুত ছুটে চলেছে একদিকে
অজস্র শব্দ শুয়ে বসে ঝরে গিয়ে তবু
আরো কত কথা বাকি কত শব্দ
কারা উঠে গেলে জীবনেও জুড়ে যাবে আরো কত ভালোমন্দ কথা
সেসব জেনেও তুমি বাইরেই রয়ে যাও
তুমি সত্যিই তবে কে !
ফেরা-২
সেইসব ঘরেদের কথা লিখি
সেই ঘরগুলি, সেইসব বাগানের কথা
যেসকল জানালায় হাত রাখা শাখাপ্রশাখায়
আমাদের দিনরাত্তির লেগে থাকা ছিল
সময়ের দড়িধরে একমুখী চলে যাওয়া শুধু
তবু ফিরব বললে আজো সেখানেই ফিরি
গাছগুলি পার হয়ে বারান্দার লাল
তারও দুহাতের পাতা জুড়ে ভাঙাচোরা আয়ুরেখা
ছায়া পড়ে, গুলঞ্চের পাতা দোলে
মিহি ঘ্রাণ, ফোড়নের ঝাঁঝ
এখানেই জুতো খুলি, ভিতরের ঘর
নানাবিধ আলো আলো অন্ধকার ভাঙচুর
পার হয়ে নিজেকেই খোঁজা
সে আমারই তো ঘর
আনমনে ঘর মানে তাদেরই তো কাছে
ফেরা যেত, ফেরা যেত, যদি ফেরা যেত---
ফেরা-৩
ডায়রীর পাতা জুড়ে বিগত সময়
সে আমাকে না চিনুক
আমি তার ডাকনাম জানি
যতদুরে চলে যাই ফিরে ফিরে আসি
তার চোখে চোখ পড়ে, সে আমার বিগত সময়
আমি তার হাত ধরে থাকি
অসমান ক্ষতমুখ, মনে পড়ে যথারীতি
আপাততঃ ব্যাথাহীন
স্পর্শটুকু চেনা হলে
একা ফিরে আসি, সে আমার বাড়ি চেনেনা তো—
তবু কেন ফিরে যাই, ফিরে যেতে হয়—
ক্ষতমুখ হাসিমুখ ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখা
তার কাছে মাথানীচু সে আমার বিগত সময়
সে আমায় না চিনুক, আমি তাকে ক্ষমা করে দিই।।