এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • ছোটগল্পঃ এক সেনানী মায়ের গল্প (২য় পর্ব)

    Sagarmay Mandal লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৭ জুলাই ২০২৫ | ৪৯ বার পঠিত
  • ২য় পর্ব
    এক সেনানী মায়ের গল্প - পর্ব-২
    সাগরময় মণ্ডল
    কোলের বাচ্চা দুটোকে অসংরক্ষিত কামরায় বাবা-মার সঙ্গে তুলে দিয়ে ভগ্ন হৃদয়ে ইন্দ্রাণী তার সঙ্গের হাবিলদারদের সঙ্গে স্টেশনের বাইরে বাড়িয়ে এলো। তাদের মিলিটারি ট্রেন এসে গেছে। সেটা স্টেশনের পাশের সাইডিং এ দাঁড়িয়ে আছে। তাদেরকে সেখানে যেতে হবে। ইন্দ্রাণী দেখল সারি সারি লরি মালপত্র পিঠে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সব ওই ট্রেনে উঠবে। পিছনের দুটো বগি খুলে নিয়ে সেখানে এ্যাম্বুলেন্স এবং গাড়ি নিয়ে নতুন ফ্ল্যাট ওয়াগন জুড়ে গেল। একটা বগিতে ওয়ারলেস সেট বসে গেল। বাকি মালপত্র বিভিন্ন বগিতে তোলা হোল। এবার সবাই ট্রেনে উঠে পড়েছে। ট্রেনের পাশে যুদ্ধ যাত্রীদের আত্মীয়স্বজনের ভিড়। সবার হৃদয় ভারাক্রান্ত। কেউ তার প্রিয়জনকে ছেড়ে যেতে চাইছে না। অনেকে কান্নাকাটি করছে। অনেকে আলিঙ্গন করে নিচ্ছে। হয়তো এটাই শেষ দেখা! কে ফিরবে, কে ফিরবে না, কেউ জানেনা। যুদ্ধের এক করুণ রূপ ইন্দ্রাণীর চোখে প্রতিভাত হচ্ছে। কতগুলো আগ্রাসী, স্বার্থান্বেষী, ধর্মের ধ্বজাধারী, ক্ষমতা লোভী, অস্ত্রব্যবসায়ী মানুষের জন্য যুদ্ধের এতো আয়োজন। এরা কেউ যুদ্ধে যাবে না। যুদ্ধে হেরে গেলে আবার যুদ্ধের বাহানা খুঁজে বেড়াবে। আর জিতে গেলে পুরো কৃতিত্ব এবং লাভ চেটেপুটে ভোগ করবে। অন্যদিকে দেশপ্রেমিক সৈনিকরা তাদের দেশের জন্য অকাতরে প্রান বিসর্জন দেবে। কারো কারো কপালে মরণোত্তর শৌর্য পদক জুটবে। ব্যাস, এইটুকুই। কে যেন বলেছিল “যারা যুদ্ধ চায়, তারা যুদ্ধে যায় না। যারা যুদ্ধে যায়, তারা যুদ্ধ চায় না”।  একদম সত্যি কথা।
    ট্রেন ছাড়ার আগেই সেনাবাহিনীর তরফ থেকে প্রত্যেকের হাতে অস্ত্রশস্ত্র তুলে দেওয়া হোল। প্রয়োজনে ব্যবহার করতে হবে। এবার ট্রেন ছেড়ে দিল অচিনপুরের উদ্দেশ্যে। অচিনপুর এইজন্য কারণ ট্রেনের কেউ জানে না তাদেরকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কোন স্টেশনে তারা ট্রেন থেকে নামবে।
    কয়েকটা স্টেশন পার করে ট্রেন একটা স্টেশনে থামলে, সেখান থেকে সার্জেন, এনাস্থেটিস্ট এবং আরও কয়েকজন চিকিৎসক উঠলেন। ইন্দ্রাণীর মনে ভরসা এলো। ভাবল সে একা নয়, তার সঙ্গে আরও অনেকে আছে যারা তার মতই তাদের প্রিয়জনকে ছেড়ে এই আপৎকালে  যুদ্ধে যাচ্ছে। একসঙ্গে থাকা একটা বাড়তি পাওনা। কিন্তু কতক্ষণ একসঙ্গে থাকতে পারবে তা কেউ জানে না। সেনার নির্দেশ মতো তাদেরকে বিভিন্ন স্টেশনে নেমে যেতে হবে। তবু এই এই অনির্দিষ্ট যাত্রায় যতক্ষণ একঙ্গে থাকা যায়, সেটাই অনেক পাওয়া।
    মিলিটারি ট্রেন। এর নির্দিষ্ট কোন টাইম টেবিল নেই। তাই ট্রেন কোন স্টেশনে থামবে, কতক্ষণের জন্য থামবে তা জানা যায় না। ট্রেন চলতে চলতে একটা স্টেশনে থামল। ইন্দ্রাণী জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখল প্লাটফর্মে অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে আছে আর কিছু একটা শ্লোগান দিচ্ছে। ব্যাপারটা বোঝার জন্য সে ট্রেনের দরজার কাছে গেল। কথা বলে জানা গেল তারা যুদ্ধ যাত্রীদের শুভেচ্ছা জানাতে এসেছে। ইন্দ্রাণীরা ট্রেন থেকে নেমে প্লাটফর্মে দাঁড়ালো। জনতা সারিবদ্ধ ভাবে এগিয়ে এসে শুভেচ্ছা জানিয়ে গেল। কেউ বা দুহাত জোড় করে আবার কেউ কেউ মুষ্টিবদ্ধ হাত উপরে তুলে। কোন জায়গায় মেয়েরাও এগিয়ে এসে খাবার দিয়ে গেল। কোথাও আবার স্থানীয় ব্যবসাদাররা মিষ্টির প্যাকেট ধরিয়ে দিল। ছোট বড় সবাই ভারতের জাতীয় পতাকা নেড়ে তাদেরকে সাহস যোগাল। “জয় হিন্দ”, “বন্দে মাতরম” আর “ভারত মাতাকি জয়” শ্লোগানে স্টেশন চত্ত্বরের আকাশ বাতাস মুখরিত হয়ে উঠলো। বুঝিয়ে দিয়ে গেল, তোমরা একা নও, তারাও সঙ্গে আছে। এই স্মৃতি ইন্দ্রাণীদের মনের মণি কোঠায় চির অমলিন হয়ে থাকবে।
    চারদিনের টানা যাত্রা পর্বের শেষ হোল জম্মু তাওয়াই স্টেশনে। ট্রেনের জানালা দিয়েই দেখা গেল রাস্তায় সারি দিয়ে মিলিটারি গাড়ি দাঁড়িয়ে। এবার তাদেরকে গাড়িতে যেতে হবে। ট্রেন থেকে নেমে সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্লাটফর্মে ঘোরাঘুরি করতে লাগলো। ইন্দ্রাণীরা একটা প্রতীক্ষালয়ে বসে অপেক্ষা করতে থাকলো। ট্রেন থেকে মালপত্র নামিয়ে নিয়ে গাড়িতে তোলার পরে আবার যাত্রা শুরু হবে। এই ফাঁকে খাবারের ব্যবস্থা হোল। শুকনো পুরি আর আচার।  চারদিন ট্রেন যাত্রার পর এমনিতেই শরীর আর চলছে না। তার উপরে ওই খাবার। ইন্দ্রাণীর মতো আরও অনেকেই সে খাবার খেতে পারলো না। শুধু জল খেয়েই কাটিয়ে দিল। মালপত্র মিলিটারি গাড়িতে উঠে গেলে কনভয় রওয়ানা হোল। এবার গন্তব্য উধমপুর।
    উধমপুরে পৌঁছে শুরু হোল মেডিকেল ক্যাম্প তৈরির কাজ। সে এক অমানুষিক পরিশ্রমের কাজ। ইন্দ্রাণীর মতো যারা ডাক্তার এবং মেডিকেল স্টাফ তারা তো তদারকিতে ব্যস্ত। আসল কাজ করে গেল সেনাবাহিনীর জওয়ানরা। গাড়ি থেকে বড়বড় সরঞ্জাম নামানো, ক্যাম্পের নির্দিষ্ট জায়গায় সে গুলোকে বয়ে নিয়ে আসা, সেগুলোকে যথাস্থানে বসানো, সে যে কি পরিশ্রমের কাজ,  চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। সেই সব কাজ জওয়ানরা হাসিমুখে করে গেল। তাদেরকে স্যালুট না করে পারা যায় না। দুদিনের অক্লান্ত পরিশ্রমের পরে কাজ চালানোর মতো একটা ব্যবস্থাপনা হোল। পুরো ইউনিট কার্যক্ষম হোল আরও কয়েকদিন পরে। ততদিনে দু’একজন করে জখম সেনা এবং অসুস্থ মানুষ আসতে শুরু করেছে ক্যাম্পে। তাদের চিকিৎসা চলছে। একই সঙ্গে চলছে আশেপাশের ক্যাম্পগুলোতে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র জোগানোর কাজ। এটাও ইন্দ্রাণীদের দায়িত্বে রাখা হয়েছে। সব প্ল্যান মাফিক চলছে। তবু মনে একটাই খচখচানি, বাড়ির সঙ্গে এখনও কোন যোগাযোগ করে উঠতে পারে নি। এখনকার মতো, তখন তো হাতে হাতে মোবাইল ছিল না। যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ল্যান্ডলাইন টেলিফোন। সেটার জন্য তো টেলিফোন বুথে যেতে হবে। সেটাও আবার ক্যাম্প থেকে অনেক দূরে। অনেক ধরাধরি, বলাবলি করে এস টি ডি বুথে যাওয়ার অনুমতি মিলল। তবে একা নয়, আগে পিছে সেনার জওয়ান সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। তাই সই। বাবা মায়ের সঙ্গে কথা তো বলা যাবে, খবর নেওয়া যাবে তার সন্তানদের। বাড়িতে কথা বলে সবার কুশল মঙ্গলের কথা জেনে ইন্দ্রাণীর মনটা একটু ভালো হোল। মনের চাপা উৎকণ্ঠা কেটে গেল। এবার সে আরও ভালো কাজ করতে পারবে।
    এমনি করে কয়েকদিন চলার পর অনেক চিকিৎসককে জুড়ে দেওয়া হোল বিভিন্ন পদাতিক বাহিনীর সঙ্গে । মিলিটারি কথায় ইনফান্ট্রি। ইন্দ্রাণীও তাতে সামিল হোল। সে এক কঠিন কাজ। সরাসরি আগ্নেয়াস্ত্র হাতে যুদ্ধ করতে না হলেও চলত শারীরিক সক্ষমতার ট্রেনিং। আপতকা্লীন আত্মরক্ষার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের প্রাথমিক পাঠ। যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠাবার আগে জওয়ানদের মেডিকেল চেক আপ। সার্বিকভাবে বাহিনীকে সুস্থ রাখার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা। প্রাথমিক চিকিৎসা চালানোর জন্য সেনাবাহিনীর নির্বাচিত জওয়ানদের ট্রেনিং দেওয়া। যুদ্ধক্ষেত্রে জখম জওয়ানের চিকিৎসা করা। আরও অনেক কাজ। কাজ যতটা দায়িত্বের, ততটাই ঝুঁকির। অকুত ভয় ইন্দ্রাণী সবকিছুর মুখোমুখি হতে তৈরি। তখন তার ঘরের কথা, সংসারের কথা মনে থাকে না।  মনে হয় পুরো ইউনিটটাই তার সংসার। সংসারের সবাইকে সুস্থ রাখা তার কর্তব্য।
    বেশ কিছুদিন ইনফ্যান্ট্রিতে কাজ করার পরে তাকে আবার ফিরে আসতে হোল মেইন ক্যাম্পে। সেখানে তখন রুগীর ভিড়। যুদ্ধক্ষেত্রের আশেপাশের গ্রামের সাধারণ মানুষ, তারাও শত্রুপক্ষের গোলাগুলিতে ক্ষতবিক্ষত। তাদেরকেও চিকিৎসা দিতে হবে। নতুন করে ক্যাম্প খোলা হোল সিভিল এলাকায়। ইন্দ্রানীকে সেখানেও যেতে হোল। তবে সিভিল এলাকায় কাজ করতে গিয়ে বুঝলো সেটা আরও বেশি ঝুঁকির। সেখানে সাধারণ মানুষ যেমন আসছেন, তেমনি আসছে জঙ্গিদের আশ্রয় দাতা মানুষজন। কে কখন কি করে বসবে, কেউ জানে না। তাই সেখানে কেউ এলে বিস্তর নিরাপত্তা বিধি মেনে চলতে হয়। রাখতে হয় খুঁটিনাটি তথ্যও। এক কোম্পানি সেনাকে সেখানে মোতায়েন করা হোল, যাতে কোন রকম বেচাল দেখলে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করা যায়।
    আজ ইন্দ্রাণীর ডিউটি মেইন ক্যাম্পে। সকাল থেকেই চলছে আহত সৈনিকদের চিকিৎসার কাজ। জেনারেল বিভাগ, সারজিকাল বিভাগ সবাই ব্যাস্ত। এখন যুদ্ধের তীব্রতা অনেক বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। কত রকমের রুগী! মাইন পাততে গিয়ে সেই মাইন ফেটে অঙ্গহানি নিয়ে কেউ শুয়ে আছে, শত্রুর পাতা মাইন নিস্ক্রিয় করতে গিয়ে অনেকে আহত হয়েছে, কেউ বা সরাসরি শত্রুর গুলিতে হাত-পা খুইয়ে বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে। আর প্রায় সবাই ওয়ার সাইকোসিসে ভুগছে। ট্রমা কাটিয়ে উঠতে না পেরে অনেকে ভুল বকছে, কেউ কেউ নিজের ক্ষতি করতে চাইছে। আত্মহত্যার প্রচেষ্টাও যে কেউ করে নি তা নয়। সে এক ভয়াবহ অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে মাথা ঠাণ্ডা রেখে পরিসেবা  দেওয়াটাই মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ। ফলে চব্বিশ ঘণ্টাই ক্যাম্পে থাকতে হচ্ছে। খাবার সময় টি ভি তে এক ঝলক খবর দেখা ছাড়া বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে কোন যোগাযোগ নেই। লাঞ্চ সেরে টি ভি দেখতে দেখতে চোখটা যেন বুজে আসছে ইন্দ্রাণীর। একটু গড়িয়ে নিলে ভালো হয়। বালিশটা হাতের কাছে টেনে নিয়ে শুতে যাবে এমন সময় ইন্দ্রাণীর কানে একটা হট্টগোলের আওয়াজ এলো। রুগীদের কেউ কিছু করে বসলো না তো? সে ছুটে বাইরে বেরিয়ে গেল। দেখল এক রক্তাক্ত জওয়ানকে ধরাধরি করে ক্যাম্পে নিয়ে আসা হচ্ছে। ইন্দ্রাণী দ্রুত তার ইউনিফর্ম পড়ে সোজা ক্যাম্পের ভিতরে চলে গেল। দেখল, রক্তাক্ত জওয়ানকে ইমারজেন্সির বেডে শোয়ানো হয়েছে। ডিউটিতে থাকা ডাক্তারবাবু তাকে পরীক্ষা করে দেখছেন। তার চোখে মুখে হতাশার ছাপ স্পষ্ট। ইন্দ্রাণীও কাছে গিয়ে নানা রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখল। মাথা নেড়ে বোঝাল, কোন আশা নেই। বুলেটে বুলেটে শরীর ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। সব শেষ। তার বুক থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। পুরো ক্যাম্প জুড়ে নিঃস্তব্ধতা নেমে এলো।
    মৃতদেহ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর করার আগে নিয়ম মেনে কিছু চেক আপ করতে হয়। সেগুলো করতে গিয়ে ইন্দ্রাণী একটা জায়গায় থমকে গেল। সহকারী ডাক্তারবাবু ও নার্সকে ডেকে দেখাল। তারা দেখল, মৃত জওয়ানের বাঁ হাতটা তার পোশাকের পকেটের কাছটাকে খামচে ধরে আছে। কিছু একটা আছে তার হাতের মুঠোয়। তারা ধীরে ধীরে হাতটাকে আলগা করে দেখা গেল হাতের মধ্যে কিছু নেই। এবার পকেটের ভিতরটাকে দেখা দরকার। অনেক সময় শত্রুপক্ষ আহত বা মৃত সৈনিকের দেহে চিপস ঢুকিয়ে দেয়, যাতে করে ওই দেহের স্থানান্তকরনের সময় গোপন তথ্য সংগ্রহ করা যায়। পকেটে হাত দিয়ে কিছু কাগজপত্র আছে বলে মনে হোল। সেগুলো খুলে দেখতে গিয়ে রক্তে ভেজা একটা ছবি পাওয়া গেল। দুটো ছোট ছোট বাচ্চার ছবি, বুকের রক্তে ভিজে আবছা হয়ে গেছে। ছবির উল্টো দিকের সাদা পাতায় লেখা রয়েছে ‘আই লাভ ইউ পাপা’। হায়রে হতভাগ্য পিতা, দেশমাতৃকার ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে নিজের সন্তানদের কাছে আর ফেরা হোল না। ইন্দ্রাণীর চোখের জল বাধা মানল না। হায়রে যুদ্ধ, কত শিশুর কত কান্না, কত এয়োতির সিঁথির সিন্দুর, কত বোনের হাহাকার, কত মায়ের কোল খালি হয়ে যাওয়ার বেদনার আর্তনাদ শুনেও তুমি আজও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছো। ইন্দ্রাণী আর অপেক্ষা করতে পারছে না। তাড়াতাড়ি চেক আপের কাজ সেরে নিয়ে দৌড়ে গিয়ে ব্যাগ খুলে তার সন্তানদের ছবি বের করে বুকে জড়িয়ে ধরে হাও হাও করে কেঁদে নিজেকে হালকা করার চেষ্টা করলো। আজ যে তার সন্তানদের কথা বেশি করে মনে পড়ছে।
    মাস দুয়েক পড়ে যুদ্ধ থেমেছিল। কিন্তু তার পারিপার্শ্বিক প্রভাব কাটাতে আরও অনেক সময় লেগছিল। তাই ইন্দ্রাণীদেরকে আরও দেড় বছর সেই ক্যাম্পে কাটাতে হয়েছিল।
    সমাপ্ত

     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    ২য় পর্ব
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন