১
লেখার মতো এটাই যে
কিছুক্ষণ আগে পাখিরা এল,
গল্প টল্প ফুরুৎ ফুরুৎ, একটু
ফল ঠুকরোল, নোংরাও করল ডাল
এখন সেখানে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কীট
উড়ে এসে খুটে খাচ্ছে ক্ষুদ্রতর কণিকা
পাতার মাঝখানে প্যান্ডেল করল মাকড়শারা
হাত-পা ডালপালায় পিঁপড়ের ফৌজ সারাদিন
লেফট রাইট লেফট রাইট লেফট রাইট…
এছাড়াও রোদ বৃষ্টি মেঘ আলো
শিরায় খাদ্যরস কুঁড়ি গজায়, বড় করে।
লেখার কথায়, আমার এগুলোই মনে পড়ে।
২
দোকানের মতো খোলে দিনগুলো
প্রকাণ্ড হাঁ-মুখ, সারাদিন যা পাচ্ছে খাচ্ছে
আর হজম করে উগরে দিচ্ছে বর্জ্য।
এত কথা এত কথা এত কথা —
সেগুলো গিলতে ভিড় পাশের দোকানে।
হাঁ-মুখ আর খাদ্য-বর্জ্য বেচাকেনা —
এ ছাড়া আর দিন কাটে না, রাত কাটে না।
৩
যে সম্ভাবনার কথা মনে পড়ে
তার পাশে সরু রাস্তাটি পায়ে পায়ে
নদীর কাছে পৌঁছেছে।
জলের দল কলরোলে বিদেশী সমুদ্র অভিমুখী
সেখানে জাহাজ যাবে পৃথিবী পেরিয়ে…
সম্ভাবনা কখনও ফেরে না, আমিও পাশ ফিরে ঘুমিয়ে।
৪
জেব্রার মতোই নিরীহ সততা
লোকমুখে কবিতার গুণাগুণ শুনে
চলল সাক্ষাতে।
পথে মহুয়ার গাছ, টুপটাপ ফল ঝরে
আকাশে রঙিন মেঘ সন্ধে দিতে এসে
আলোয় ভরেছে আচমকা
মৃদু স্বরে কে ডেকেছে তাকে এত কাছে?
অনেক আনন্দ হ'ল
এবারে দাবার ছকে কেবল আড়াই পাক নাচে।
৫
চোখ অবধি যেতে হবে না,
তার আগেই অটো ছেড়ে দেবেন
পাশেই সরু রাস্তা চলে গিয়েছে
এবার হাঁটতে হবে কিছুটা
বেশি না, বছরখানেক
তার মধ্যেই লাল নীল সবুজ খাপছাড়া
পুকুর টুকুর বুজিয়ে ঘপাঘপ বাড়ি উঠে যাবে।
পারবেন অতদূর টানতে?
তার আগে সন্ধ্যা ঘনাবে।
৬
বললাম না, বাঘ ছিলাম, বাঘ..
হাঁকডাকে মহল্লা কেঁপে উঠত
শীতকালে পাতা ঝরিয়ে দিত তাবড় মহীরুহ
বর্ষায় জল দাঁড়িয়ে যেত পথ করে দিতে।
কোনও লাভ নেই এতে আজকাল
বাজারে পাঁচ টাকা দাম কমায় না মাছওলা
ছেলেছোকরারা সামনেই হাসাহাসি করে
সিগারেট অবধি লোকায় না
অসময়ে বর্ষা, ঝঞ্ঝা ঘূর্ণিঝড় মহামারী….
বাঘ ছিলাম জানো… বাঘ
দাগ-টাগ ধুয়ে মুছে গেলে
তালপুকুরে ফেলে দিলে
ঘটিটার টোল পড়ে যায়…
৭
সারাক্ষণ আবহসঙ্গীত চলে ভিতরে ভিতরে
দেখি, আমি ছুটি নিয়েছি বলেই দরজার পর্দারা
পাখার হাওয়াতে দুলে দুলে মেঝেতে পড়া
রোদ্দুরটুকু বন্দী করতে চায়।
সিঙারার তিনকোণা পৃথিবী বহন করে
ময়দার খোলে
দু'জনের দেখা হ'লে প্রেম নচেৎ বিরহ —
তাদেরই পাশাপাশি অমোঘ অদৃশ্য ছড় টানে
টেবিলের নুনদানি — জনৈক আবহ।