আহুতি
ভালোবাসা এক দুঃসাহস, বারান্দায় বুনো হাঁস
সে যেন দামাল কেউ, কামড়ে দেবে হাত,
যা কিছু আছে, আজ সব উচ্ছন্নে যাক,
সাক্ষী শুধু জোনাক ভরা মাঠ, ভৈরবের থান
ভাবছি যখন, নীরব আমি, ভেতরে কিন্তু সুনামি
আমাদের পায়ে পায়ে বর্ষার রাত, জলঢোঁড়া সাপ
শরীরে কাদামাটি, নখের আঁচড়, আলিঙ্গনের দাগ
শয্যা ছেড়েছি, আনমনে গিলেছি পলাশের সন্ত্রাস
কৃষ্ণচূড়া ডাকবে বলে চুল খুলেছি দুরন্ত চন্দ্রগ্রহণে
স্বপ্ন দেখব, জেগে আছে ধার করা পৌষের রাত
পড়ে নিয়েছি চন্ডীদাস, চর্যাপদের ভেজা শ্লোক
আমার চোখেও কেয়ামত, ধ্যান অথবা খুন
চারপাশে শুধু গমন চিহ্ন, আহত ঠোঁটশৃঙ্গার
ফেলে গেছি ব্যবহৃত মাটি, সাধনসঙ্গিনীর আহুতি
যারা ভালোবাসাকে করেনি ভয়, তৃষ্ণা মিটিয়েছে,
ডাহুকের ডাকে ভাঙা দেউলে চোখ ভেসে গেছে জলে
ভালোবাসা মোছার আগে, তারা বলেছে এখন তবে বিচ্ছেদ হোক, এমন দীনতায় কারা জানি আজ একা
হয়ে যাচ্ছে খুব, অন্ধকারে ঢাকা ব্যালকনিতে শুধু অস্থিরতার কাঁটাছেঁড়া মুখ
আমি পুরুষ হলে
আমি যদি পুরুষ হতাম, প্রিয় নারীকে
চিনতাম তার চোখের প্রথম বিষাদ দিয়ে
ভ্রূ-এর কম্পন জানাত ওর মেধার পরিমাপ
দীর্ঘ সময় কাটানোর অবকাশ থাকলে কথা হত না, নীরবতার চাষাবাদে বিপজ্জনক খাদে পাপড়ি মেলত ব্রহ্মকমল,
নির্দ্বিধায় অঙ্গপ্রত্যঙ্গের প্রশংসা আমার আসত না কিছুতেই ,
তাতে কি সে আনন্দ না দুঃখ পেত জানিনা
হয়তো আকাঙ্ক্ষা থাকবে, কিন্তু আমি তত
উষ্ণ নই!
গান শুনতে চাইতাম, বেসুরো হলে হাসতাম,
জড়িয়ে ধরার আগে, অপেক্ষায় চলে যেত বহু সময়,
যেন নতুন গ্রহ খুঁজতে বেরিয়েছে সৌরযান,
ততদিনে সে কি চলে যেত?
... তার স্থাবরতাকে অস্বীকার করেছি বলে?
ব্যর্থ জ্যোৎস্নাবাহক হতে চাইতাম প্রিয় নারীর কাছে,
যৌনতা আমার বিষয় হওয়ার আগে
ভ্রমণের ম্যাপে খুঁজে ফিরতাম তার ভালোলাগা,
রেগে গেলে, খিস্তি দিলে কেমন করে
প্রিয় নারীর ঠোঁট হয়ে যায় দৃঢ় অববাহিকা,
এটা দেখার ইচ্ছে হত খুব,
যদি সে কবিতা লিখত, ওর অক্ষরগুলোকে ছুঁয়ে আমার পৌরুষত্ব গর্বিত হয়ে উঠত,
ব্রেনসেলের এই দুর্দম তড়িৎপ্রিয়তার চেয়ে যৌন বোধহয় আর কিছু হয় না...
প্রিয় অসুখ
কবিতা একটি আশ্চর্য সুন্দর জিনিস
ক্ষুধার পাশে রাখলেও মানিয়ে যায় তার মুখ
প্রেমের পাশে রাখলে আলো হয়ে যায় মানুষ
দুঃখের দিনে তোমাকে সে ভালোবাসে
আনন্দের সময়ে দরজায় অপেক্ষার চোখ
কবিতার কাছে যেতে যেতে আমি যেন
খুলে ফেলছি আমার হাড়, মাংস ও সুখ