এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ইস্পেশাল  উৎসব  শরৎ ২০২২

  • নবনীতার কয়েকদিন

    শেখরনাথ মুখোপাধ্যায়
    ইস্পেশাল | উৎসব | ২৫ অক্টোবর ২০২২ | ১৯৬৮ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৪ জন)
  • অ-মৃত | হায়দারি মঞ্জিল থেকে | দুটি কবিতা | ক্যুও ভ্যাদিস | কি করবেন মাস্টারমশাই | ২০২২ এ পুজো বিষয়ক কয়েকটি লেখা | ক্ষত | এক গুচ্ছ কবিতা | অরন্ধন | শমীবৃক্ষের বুকের আগুন | তিনটি কবিতা | ধুলামুঠি | অনিমা দাশগুপ্তকে মনে পড়ে? | যে রূপ আশ্বিনের | এক্সাম পেপার | কুহক | প্রজাপতি প্রিমিয়াম | চিকিৎসা, সমাজ, দাসব্যবসা, ছিয়াত্তরের মন্বন্তর – টুকরো চিত্রে কলকাতা ও বাংলা | ভাস্কর্য | তিনটি কবিতা | স্বর্ণলতা | পাখি | অথ অহল্যা - গৌতম কথা | দুগ্গি এলো | আহ্লাদের কলিকাল | রুদালি টু ডট ও | অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো | প্রত্নতত্ত্বে তৃতীয় স্বর : প্রাচীন টেপ হাসানলু'র সমাধিগুলি | করমুক্ত | শারদ গুরুচণ্ডা৯ ২০২২ | একে একে নিভে গেছে সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমার আলো | মিষ্টিমহলের বদলটদল | নিজের শরীর নিজের অধিকার – পোশাক ও মেয়েদের আজকের দুই লড়াই | উমেশ, ইউসুফ এবং প্রাইম টাইম | কবিতাগুচ্ছ | উৎসব মনের | তিনটি অণুগল্প | বর্ডার পেরোলেই কলকাতা | রূপালি চাঁদ, সুমিতা সান্যাল আর চুণীলালের বৃত্তান্ত | দেবীপক্ষ ও অন্যান্য | দুটি সনেট | নদীর মানুষ | বৃংহণ | শ্যামাসংগীতের সাতকাহন | নবনীতার কয়েকদিন | ভিআইপির প্রতিমাদর্শন এবং.. | বেইজ্জত | পায়েসের বাটি | শারদ সম্মান | দুটি কবিতা | মালেক আব্দুর রহমান


    বাবা হঠাৎ মারা গেলে কী হবে জানত না নবনীতা, কিন্তু মা-ও যে জানত না সেটা ও বুঝল পরে। কষ্টেসৃষ্টে সংসার চলত, কিন্তু চলত তো। মারা যাবার পর মা বলল, বাবার মরদেহ হাসপাতালে দান করা হবে, সেটাই বাবার ইচ্ছে ছিল। রাণীকুঠিতে কর্পোরেশনের ময়লা ফেলার ভ্যাটের পিছনে প্রায়-পড়া-যায়-না এরকম দেওয়াল লিখন একটা মাঝে-মাঝেই দেখেছে নবনীতা, সেখানেই একটা ফোন নম্বর দেখেছিল ও, মরণোত্তর দেহদানের জন্যে। নম্বরটা দেখে এসে সেখানে ফোন করল নবনীতা, এক ভদ্রলোক এসে দেখে গেলেন, তারপর ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে একজন ডাক্তার আর দলবল নিয়ে এসে নিয়ে গেলেন দেহটা। ওর ভয় ছিল ওরা হয়তো পয়সা-কড়ি চাইবে কিছু; চাইল না কিন্তু, একটা ছাপা কাগজে শুধু সই করাল মাকে দিয়ে। নবনীতাকে ওরা বলেওছিল ওদের সঙ্গে হাসপাতালে যেতে, ও যেতে চায়নি। ওদের মুখ দেখে মনে হল একটু অবাক হয়েছে ওরা, কিন্তু বলল না কিছু। সেদিনই সন্ধ্যেবেলা ওদের একজন এসে হাসপাতালের সার্টিফিকেট একখানা দিয়ে গেল, বলল, এটা দিয়ে কর্পোরেশন থেকে ডেথ-সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে। তা ছাড়াও ব্যাঙ্কে, অফিসে, নানা জায়গায় কাজে লাগবে এটা, কাগজটা যেন হারিয়ে না ফেলে ওরা।

    সেই ভদ্রলোকই এলেন দিন-দুই পর। বললেন, সেদিন বুঝতে পেরেও কিছু জিজ্ঞাসা করেননি উনি, কিন্তু কেমন আছে ওরা? আত্মীয়-স্বজন কে কে আছে? কোন্‌ অফিসে কাজ করতেন বাবা? এখন কী প্ল্যান? শ্রাদ্ধ-শান্তির কী হবে?

    শ্রাদ্ধ-শান্তির কোন প্ল্যান নেই শুনেও ভদ্রলোক অবাক হয়েছেন কিনা বুঝতে দিলেন না। শুধু বললেন, মনে হচ্ছে এই মৃত্যুটার জন্যে তৈরি ছিলেন না আপনারা। তৈরি না-থাকাই স্বাভাবিক। হয়তো একটু অসুবিধেতেই পড়েছেন। যাই হোক, আমাদের ফোন নম্বর আছে আপনাদের কাছে। যদি কোন ব্যাপারে আমরা সাহায্য করতে পারি, জানাবেন। আমার মনে হয় সাহায্যের দরকার হবে আপনাদের। সঙ্কোচ করবেন না। চায়ের অনুরোধ করেছিল নবনীতা। অল্প একটু হেসে, কিন্তু চা না খেয়েই, বিদায় নিলেন ভদ্রলোক।

    বাবার অফিসের নামটা জানত না নবনীতা। মা জানত, কিন্তু অফিসটা যে ঠিক কোথায় সেটা বলতে পারল না। অফিসে তবু যাওয়া একবার দরকার। বাবার বদলে চাকরি ও পাবে না ঠিকই, কিন্তু টাকাপয়সাও যদি পাওয়া যেত কিছু।

    এস-এস এন্টারপ্রাইজ। শুধু এস-এস এন্টারপ্রাইজে কী হবে? গুগ্‌ল্‌ খুলে দেখা গেল গোটা তিরিশেক
    এস-এস- এন্টারপ্রাইজ। তা ছাড়াও শ্যামসুন্দর সত্যসার্থক সুযোগসন্ধানী গোছের আরও গোটাবিশেক এন্টারপ্রাইজ। গুগ্‌ল্‌ সার্চ করতে করতে মা ঘুমে অচেতন। মাকে ঠেলে তোলায় বিরক্ত মুখ করে বলল, কেওড়াতলা শ্মশানের কাছাকাছি হবে কোথাও, তারপর আবার ঘুম। মুশকিল হচ্ছে এই কেওড়াতলা শ্মশানের কথাটা। সত্যিই কি কেওড়াতলার কাছে? নাকি হিন্দু বাঙালির চূড়ান্ত বিরক্তির অভিব্যক্তি হিসেবে শব্দবন্ধটি মুখনিসৃত হল মায়ের?

    আর ভাবতে পারে না নবনীতা, চটিজোড়া পায়ে গলিয়ে বেরিয়ে পড়ে। ট্রাম ডিপো থেকে বেরোচ্ছে একটা চব্বিশ-উনতিরিশ ট্রাম, চড়ে বসে ও। রাসবিহারির মোড়ে নামাই ভালো। কেওড়াতলার কাছে গিয়ে খোঁজ নেওয়া যাবে।

    বাঁদিকের ফুটপাথ ধরে শ্মশান পর্যন্ত গিয়ে আবার বাঁদিকে ঘুরলে আদিগঙ্গার সমান্তরাল একটা রাস্তা। রাস্তাতেই বাজার; উলঙ্গ শিশুদের হাঁটাচলা, পাঁচ-প্রজন্মের মালবাহী এবং যাত্রীবাহী শকটের ঠেলাঠেলি উজিয়ে মিনিট দশেক হাঁটার পর ডানদিকে একটা টিনের চালের দোতলা বাড়ি, তার সবুজ রঙের বন্ধ দরজার গায়ে টিনের পাতে ইংরিজি-বাংলায় পরপর লেখা: এস-এস-এন্টারপ্রাইজ। কোন ইলেক্ট্রিক বেল-এর সুইচ দেখতে না পেয়ে খোলা হাতে পরপর কয়েকটা চাপড় মারে ও। রং-চটা লম্বা ঝুলের কোন একটা পোশাকের উপর গামছা গায়ে-জড়ানো দেখে-বয়েস-বোঝা-যায়-না গোছের একজন মহিলা হাতে টুথব্রাশ মুখে থুতু নিয়ে দরজা খুলে দিল।

    এখানে কি এস-এস-এন্টারপ্রাইজের অফিস? – জিজ্ঞেস করে নবনীতা।

    মহিলা কোন জবাব দেয় না, একটু পিছিয়ে গিয়ে (নবনীতা বুঝতে পারে ওকে ভেতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে) খুব সরু, প্রায় অন্ধকার সোজা-উপরে-উঠে-যাওয়া একটা সিঁড়ি দেখিয়ে দেয়।

    সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যায় নবনীতা। সিঁড়ি পেরোলেই লম্বাটে ঘরটায় দুখানা জানলা, দুটো টেবিল। প্রথম ডানদিকের টেবিলটায় যিনি বসে আছেন তাঁর মাথার পিছনেই প্রবাহিত আদিগঙ্গা, সেই আলোয় আলোকিত ঘর। অযথা বাহুল্য বিধায় ঘরটি নিষ্প্রদীপ। প্রথম টেবিলের ভদ্রলোকের মাথার পিছনের অংশটা নিশ্চয়ই আলোকিত, তাঁর মুখমণ্ডল, অতএব, সম্পূর্ণ অন্ধকার। একটু থতমত খেয়ে যায় নবনীতা, ঘরটায় অভ্যস্ত হবার চেষ্টা করে, এমন সময় বজ্রনির্ঘোষপ্রায় শব্দে চমকিত হয়, কাকে চাই?

    বোঝা যায় প্রথম টেবিল থেকেই শব্দটা উত্থিত, সেদিকে ফিরে নবনীতা বলে, আমি বারিকবাবুর মেয়ে।

    বারিক – – বাবু? কই, বারিক তো আজ তিনদিন আসেনি।

    না, আসতে পারেনি। বাবা মারা গেছে।

    মারা গেছে? – বজ্রনির্ঘোষ খুব একটা অবাক হয়েছে মনে হয় না। তাহলে, তুমি কী মনে করে? শ্রাদ্ধের নেমন্তন্ন?

    শ্রাদ্ধ? না না, ওসব নয়, একটু সঙ্কোচ থাকলেও বলেই ফেলে নবনীতা, ভাবছিলাম অফিসে যদি বাবার পাওনা-টাওনা কিছু থাকে।

    সে তো গত বছরেই মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।

    গত বছরেই? কিন্তু বাবা তো সোমবারেও অফিসে এসেছিল।

    তা এসেছিল ঠিকই, আবার বজ্রনির্ঘোষ, কিন্তু আমাদের এমপ্লয়ী হিসেবে নয়। গতবছর লকডাউন শুরু হবার
    পরে-পরেই আমরা সবায়ের হিসেব মিটিয়ে দিয়েছি। তোমার বাবা তার পর থেকেই আসত কন্ট্র্যাক্টরের এমপ্লয়ী হিসেবে। সেখানে খোঁজ করতে পার, তবে লাভ হবে না। কারণ ওখানে ছিল নো ওয়র্ক, নো পে। রোজকার টাকা রোজ মিটিয়ে দিত ওরা।

    ঠিক আছে, তাহলে আসি, বলে নবনীতা; বলেই, পিছন ফেরে।

    দাঁড়াও, বজ্রনির্ঘোষ আবার, কন্ট্র্যাক্টরের ঠিকানাটা নিয়েই যাও। কে জানে, তোমার কাজে লেগে যেতে পারে হয়তো। পরের টেবিলে দুজন বসেছিল, তাদের দিকে তাকিয়ে বলে, ঠিকানাটা ওকে দিয়ে দিন।

    ওদের মধ্যে একজন সাদা কাগজে একটা রাবার-স্ট্যাম্প লাগায়। নবনীতাকে বলে, এখানে ঠিকানা আছে। পার্কসার্কাস সাতমাথার মোড়। মোড় থেকে থিয়েটার রোড ধরবেন। একটু এগিয়ে বাঁ-দিকে মোটর গ্যারেজের গায়ে-লাগা একটা ছোট ঘর আছে। সেটাই।

    কোন কথা না বলে সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে আসে নবনীতা।

    খানিকটা এগিয়ে ঠিক রাসবিহারি অ্যাভেন্যু-এর মুখটায় পৌঁছিয়ে ডান দিকে ঘুরতে যাবে এমন সময় পিছন থেকে শোনা গেল, এই যে খুকি।

    খুকি-ডাক শুনতে এখন আর অভ্যস্ত না হলেও কেমন যেন মনে হল ওকেই ডাকা হচ্ছে। পেছন ফিরতে দেখা গেল মাঝবয়েসী এক ভদ্রলোক, হ্যাঁ, তোমাকেই ডাকছিলাম।

    এক-মুখ জিজ্ঞাসা নিয়ে তাকায় নবনীতা, আমাকে, কেন?

    পিন্টু ঘোষ, মুখ-বন্ধ-করা মাস্কটা টেনে নীচের দিকে নামিয়ে দিয়ে বলে লোকটা, মানে আমাদের এস-এস এর মালিক, তোমাকে কেমন অল্প কথায় খারিজ করে দিল দেখলাম। আসলে যে কন্ট্র্যাক্টরের কথা ও বলল, সেটা ও নিজেই। ওর একটা হাবা ভাই আছে, তারই নামে ব্যবসা। লকডাউনের সুযোগে সবাইকেই ছেঁটে দিয়েছে, মাইনে কমিয়ে আদ্দেকেরও কম, সেটাও আবার ডেইলি ওয়েজ; নো ওয়র্ক নো পে। যাই হোক, এখন আমার কথা বলার সময় নেই, তুমি যদি ঘণ্টাদুয়েক অপেক্ষা করতে পারো, তাহলে কথা বলতে পারি।

    এই কথাটুকু বলতে বলতেই ডান দিকের চায়ের দোকানটার দিকে ফেরে লোকটা। মালিকের দিকে তাকিয়ে একটু পরিচিতের হাসি, সুখেনদা, এ আমার ভাইঝি, তোমার দোকানে ঘণ্টাদুয়েক বসবে। ওকে চা-বিস্কুট যা খায় দিয়ে দিও। আমার খাতায় লিখবে। আমি ফিরব দু'ঘণ্টার মধ্যেই। বলেই, হন হন করে ফিরে গেল লোকটা, নবনীতা কোন সুযোগই পেল না কিছু বলার।

    নবনীতা ঠিক বুঝতে পারে না কী করবে। দু'ঘণ্টা চায়ের দোকানে একা একা! তা ছাড়া, কেনই বা অপেক্ষা করবে ও, কী লাভ! লোকটাকে অবিশ্যি খারাপ বলে মনে হল না ওর। খারাপ লোক খুকি বলে ডাকবে না ওকে। সুখেন, মানে চায়ের দোকানের লোকটা, চোখ কুঁচকিয়ে তাকিয়েছিল ওর দিকে। চোখাচোখি হতে বলল, আসুন না, বসুন, চা খান। দাসদা নিশ্চয়ই ব্যস্ত, না হলে আপনাকে একা ফেলে চলে যেত না এমন ভাবে।

    অগত্যা দোকানে ঢোকে নবনীতা, বসতে না বসতেই কেটলি থেকে আগে-থেকে-তৈরি-চা একটা কাপে ঢেলে সেটা টেবিলে রাখে সুখেন, একটা ডিশে দুখানা দেশি বিস্কুট। বলে, এ বিস্কুটগুলো ভালো, নাকি থিন দেব?

    ঠিক আছে, নবনীতা চুমুক দেয় কাপে।

    কাগজ পড়বেন? – আনন্দবাজারটা এগিয়ে দেয় সুখেন। দু'ঘণ্টা পুরোপুরি হবার আগেই ফিরে আসে দাসদা, নবনীতার উল্টোদিকে বসে বলে, আমাকেও চা দিও সুখেনদা।

    আমাদের মালিক, দাসদা বলে, মানে ওই পিন্টু ঘোষ, লোক ভালো না হলেও ততটা খারাপ নয়। তোমার টাকাটা যদি একেবারে মেরে দেবার ইচ্ছে থাকত, তাহলে, যেটাকে ও কন্ট্র্যাক্টরের অফিস বলে, সেটার ঠিকানা তোমাকে দিত না। যাই হোক, সে কথায় আসছি। এখন বল, বাবা গেল কীভাবে? সোমবারে শরীরটা ওর ভালো ছিল না, দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। কিন্তু একেবারে চলে যাবে বুঝতে পারিনি।

    জানি না কীভাবে, বলে নবনীতা, অফিস থেকে বাড়ি ফিরে মাকে বলেছিল শরীরটা ভালো নেই, আমি তখন বাড়িতে ছিলাম না। এসে দেখি ঘুমোচ্ছে। রাত্তিরে কিছু খেতে চাইল না। সকালে আর ঘুম থেকে ওঠেনি।

    বড় খাঁটি লোক ছিল বারিক, দাসদা বলে, কষ্ট না পেয়েই গেল। কে জানে, পেয়েছিল হয়তো কষ্ট, কাউকে বলেনি আর। দু-আঙুলে কপালটা কিছুক্ষণ টিপে বসে থাকে দাস, তারপর কাপের অবশিষ্ট চা-টুকু এক নিশ্বাসে শেষ করে বলে, দশদিনের টাকা মালিক দেয়নি তোমার বাবাকে। সেটা কিন্তু ও দিয়ে দেবে। আমাদের সামনে বলল না, কারণ প্রিসিডেন্স তৈরি করতে চায় না। রেগুলার থেকে যখন ও আমাদের সবাইকেই কন্ট্র্যাক্টরের এমপ্লয়ী বানিয়ে দিল, তখন সবায়েরই দশ দিনের টাকা হাতে রেখেছিল। সেই টাকাটা পাবে তুমি। এক্‌খুনি বাড়ি যেও না। রাসবিহারীর মোড় থেকে দুশো-পাঁচের-এ ধরে সোজা চলে যাও পার্কসার্কাস। টাকাটা আজই গেলে পেয়ে যাবে তুমি। কাল কী মতলব হবে পিন্টু ঘোষের, কেউ জানে না।

    তাহলে আমি উঠি এখন, নবনীতা বলে।

    দাঁড়াও, বস একটু। একশো চুয়াত্তর পেত তোমার বাবা রোজ। দশ দিনের মানে সতেরশো চল্লিশ টাকা। ওটুকু ও দিয়ে দেবে বলেই মনে হয়। চল, তোমাকে এগিয়ে দিয়ে আসি।

    চায়ের দোকান থেকে বেরিয়ে রাসবিহারির মোড়ের দিকে হাঁটতে থাকে ওরা। দাস বলে, তোমাদের এখন চলবে কীভাবে জানিনা। আমাকে তুমি জেঠু বলে ডাকতে পার, তোমার বাবা তো দাদাই বলতো। তবে ওই, নামেই জেঠু, কাজে ত কোন হেল্পই করতে পারব না। তবুও, আমি বলি কি, আমার ফোন নম্বরটা তুমি রেখেই দাও, পকেট থেকে একটা বিজনেস কার্ড বের করে দাস, এস-এস-এন্টারপ্রাইজের কার্ডে পী-কে-দাস ছাপা, মোবাইল নম্বর সমেত।

    কার্ডটা দেবার পর আবার বলে দাস, এমন নয় যে কাউকে আমি চিনি না, প্রয়োজন হলে তোমাকে একটা কাজ আমি জোগাড় করে দিতে পারি না। পারি, কিন্তু সে কাজে হয়তো ঠিক ঠিক সম্মান পাবে না। আসলে আমরা তো মধ্যবিত্ত, বুঝলে না সম্মানটাই আমাদের সব। যা-ই হোক, তবু রাখ কার্ডটা। দেখতে দেখতে দুশো-পাঁচের-এ একটা দাঁড়ায় এসে। বাসে উঠে পড়ে নবনীতা, বাসটা ছেড়ে যাওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকে দাস। দাসজেঠু!

    বাসে বসবার সীট পেয়ে যায় নবনীতা, জানলার বাইরে তাকিয়ে ও ভাবতে থাকে, ওর নামটাও জানতে চাইল না দাসজেঠু, খুকিই যথেষ্ট। ও-ও জেঠুর নামটা জিজ্ঞেস করেনি একবারও। শুধুই পী-কে-দাস, কার্ডে যেটুকু লেখা, ওইটুকুই।

    কন্ট্র্যাক্টরের অফিসের লোকটা বাবার নাম শুনে একটা খাতা খুলে কিছু-একটা মেলাবার চেষ্টা করে। তারপর বলে, কই, আপনার বাবার নামে ডিউ তো কিছু নেই।

    ডিউ আছে আমি শুনেছি। বাবা বলে গেছে আমাকে।

    ঠিক আছে, আপনি একটু বসুন। সামনের ধূলিধূসরিত চেয়ারটা দেখিয়ে দেয় লোকটা। তারপর পকেট থেকে মোবাইল বের করে কথা বলে কারো সঙ্গে। একটু বোধ হয় অন্যমনস্ক ছিল নবনীতা, হঠাৎ লোকটার কণ্ঠস্বর কানে আসে, বারিক নাম, যে এসেছে সে বলছে মেয়ে।

    উল্টোদিক থেকে কী জবাব আসে শোনা যায় না। ঠিক আছে, বলে লাইনটা কেটে দেয় লোকটা, তারপর নবনীতার দিকে ফেরে, দশদিনের পাবেন না, একদিনের টাকা খরচ হিসেবে কেটে নেওয়া হবে। মোট পনেরোশো ছেষট্টি। ঠিক আছে?

    উঠে দাঁড়ায় নবনীতা, হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়ায়। গুনে গুনে টাকাগুলো দেয় লোকটা, একটা ভাউচার এগিয়ে দেয়, সই করে বেরিয়ে যায় নবনীতা।

    বাড়িতে মা বোধ হয় অপেক্ষা করছিল ওর জন্যে। ভাত আর ডাল রান্না হয়েছে। নিঃশব্দে খেয়ে নেয় দুজন।

    ওদের বাড়ির সামনেই ছোট পার্ক একটা। পার্কটা পেরিয়ে উল্টোদিকের রাস্তায় প্রায় ওদের বাড়ির কোনাকুনি যে বহুতল ফ্ল্যাটবাড়িটা হয়েছে কিছুদিন আগে, সেখানে তিন তলার একটা ফ্ল্যাটে নবনীতা যায় সপ্তাহে পাঁচদিন। সকাল আটটার মধ্যে। মোনামী শিকদার ওর ছাত্রী। বয়েস পাঁচ। কে-জি টূতে পড়ে। অনলাইন ক্লাস হয় ওর এই পাঁচদিন। কম্প্যুটারের সামনে সেই ক্লাসে মোনামীর সঙ্গে বসে নবনীতা, মোনামীর মার প্রক্সি হিসেবে। স্কুলের এরকমই নিয়ম। মা যদি না পারে, অন্য কেউ বসবে। কী পড়া হল সবটা বুঝে নেবে। পরের দিনের ক্লাসের জন্যে তৈরিও করে রাখবে ছাত্রীকে। মাস গেলে হাজার টাকা ওরা দেয় নবনীতাকে, তা ছাড়াও ব্রেকফাস্ট প্রতিদিন। বাবা মারা যাবার পর তিনদিন যায়নি নবনীতা। এমনকি খবরও দেয়নি ওদের। আজ যাবার সময় বুক ঢিপ ঢিপ করছিল, চাকরিটা আছে তো? এই টাকাটা পুরোপুরি ওরই ছিল। বাবা কখনও একটা পয়সাও নেয়নি। কলেজ তো ওর পাড়াতেই, যাতায়াতে খরচই নেই, তা ছাড়া লকডাউন শুরু হবার পর থেকে তো বন্ধই আছে কলেজ। হাজার টাকার পকেট-মানিতে যথেষ্ট স্বচ্ছল ছিল নবনীতা, স্মার্টফোনটাও নিজের আয় থেকেই কিনেছে। কে জানে আজ গিয়ে কী শুনবে।

    ছাত্রীর মাকে মাসিমা ডেকে প্রথম দিনেই ধমক খেয়েছিল নবনীতা, আমাকে বৌদি বলে ডাকবে। বোঝা গেল, ওর বাবার মৃত্যুর খবর পৌঁছে গেছে বৌদির কাছে। ওকে দেখেই বলল, আজই আসবার কী দরকার ছিল, বাড়িতে মায়ের সঙ্গে আরও কয়েকদিন থাকতে পারতে। তা ছাড়া, মোনামীর স্কুলে তো দশদিনের ছুটি। সীনিয়রদের পরীক্ষা চলছে। ঠিক আছে, তাহলে স্কুল খুললেই আসব, বলে ফিরে আসতে যাবে নবনীতা, বৌদি বলল, ব্রেকফাস্টটা করে যাও না। তোমাকে না হয় আজ ডিম দেব না।

    একটু পর দৌড়োতে দৌড়োতে ঢোকে মোনামী। স্কুলের য়্যুনিফর্ম পরা নেই, টেপ-ফ্রক। বলে, কচুরি এনেছে আজ, আর আলুর দম। একটা প্লেটে চারখানা কচুরি দেয় বৌদি, পাশে বাটিতে আলুর দম। মোনামীকেও দেয়, কচুরি দুখানা। আর একটা আলু দেবে মাম্মা? – জিজ্ঞেস করে মোনামী। দেওয়া হয়; সঙ্গে দুটো লাড্ডু নবনীতার, একটা মোনামীর। আর একটা লাড্ডু দুপুরে খেও, মাম্মা বলে মেয়েকে।

    খাওয়া শেষ হলে বেরোতে যাবে নবনীতা, মোনামীকে নিয়ে যায় তার বাবা। বাড়ির ভিতর থেকে শোনা যায় বৌদির গলা, একটু অপেক্ষা কর নবনীতা, আমি আসছি। বৌদি আসে, একটা খাম দেয় নবনীতার হাতে, এ মাসে দুশো টাকা বেশি দিয়েছি, এবার থেকে বারোশোই দেব। একটু হাসে নবনীতা, কৃতজ্ঞতার হাসি, তারপর বেরিয়ে যায়।

    এখন কোন কাজ নেই হাতে, পেটও ভরা। এই বাড়িটা থেকে বেরোলেই পার্কসংলগ্ন একটা ছোট একতলা বাড়িতে কর্পোরেশনের ডিসপেন্সারি, সেখানে কয়েকদিন ধরেই মানুষের ভীড় লক্ষ্য করছে নবনীতা, মনে হল একবার দেখে আসবে ভীড়টা কিসের। বাড়িটার সামনে গিয়ে দেখল বেশ বড় লাইন একটা। কিসের লাইন জিজ্ঞেস করায়
    দু-তিনজন একসঙ্গে উত্তর দেয়, ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। করোনার ভ্যাকসিন। আধার কার্ড আর প্যানকার্ড নিয়ে আসতে হবে। সামনে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন না।

    করোনার ভ্যাকসিন। ওর নেওয়া হয়নি, ওর মারও। বাবাও নেয়নি। তাহলে কি করোনাতেই মারা গেল বাবা?

    একটু খোঁজ নেওয়া যাক, ভাবতে ভাবতে লাইনের পাশ দিয়ে এগিয়ে যায় নবনীতা। লাইনের পেছনের দিকের মানুষজন যেমন শান্তভাবে দাঁড়িয়ে আছে, খবরের কাগজ পড়ছে কেউ, কেউ-বা সামনের লোকের কোন একটা রসিকতায় হাঃ হাঃ করে জোরে জোরে হেসে উঠল, সামনের দিকে ঠিক সেরকমটা নয়। মনে হচ্ছে যত এগোচ্ছে লোকে তত বেশি বেশি অসন্তুষ্ট। একেবারে সামনে দাঁড়িয়ে আছেন যে মহিলা, তাঁকে জিজ্ঞেস করে নবনীতা, কথা বলতে হবে কোথায়? সামনের পর্দা-ফেলা ঘরটার দিকে আঙুল দেখিয়ে মহিলা বলেন, ওই ঘরে।

    পর্দা ঠেলে সোজা ভেতরে ঢুকে যায় ও। ফিনাইলের গন্ধ। মেঝেতে একটা ভিজে ন্যাতা, তার সামনে বসে সাদা কাপড় পরা এক বৃদ্ধা। একটা বড় টেবিলের পেছনে দায়িত্বপূর্ণ চেহারার এক সুবেশ যুবক। এই টেবিলের পাশেই ছোট একটা টেবিলে একটা খোলা ল্যাপটপ, তার সামনে প্রায় নবনীতারই বয়েসী একটি মেয়ে। ওকে দেখেই যুবকের মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে, হেসে জিজ্ঞেস করে, আপনাকে পাঠিয়ে দিল?

    হ্যাঁ, বলল তো এই ঘরেই, জবাব দেয় নবনীতা।

    তাহলে তৈরি হয়ে নিন, পাশের ঘর থেকে চট করে অ্যাপ্রণটা চড়িয়ে আসুন। বৃদ্ধার দিকে তাকিয়ে যুবক বলে, তাড়াতাড়ি শেষ কর মাসি, তারপর আবার নবনীতার চোখে সোজা চোখ রেখে বলল, আপনি দাঁড়িয়ে রইলেন যে।

    আমি ঠিক আপনার কথা বুঝতে পারলাম না, বলে নবনীতা।

    আপনি ইঞ্জেকশনের জন্যে এসেছেন তো?

    হ্যাঁ, কিন্তু আজকেই হয়ে যাবে?

    আজ শুরু তো করুন, তিন-চার দিন তো নিশ্চয়ই লাগবে। তার পরেও লাগতে পারে।

    তিন চার দিন? কিন্তু একদিনেই তো হয়ে যাবার কথা।

    আপনাকে কি একদিনের কথাই বলেছে?

    কে বলতে যাবে, বলে নবনীতা, এ তো সবাই জানে। একটা ইঞ্জেকশন নেওয়া, সে তো দিলেই হয়ে গেল। একদিন দুদিন এসব কথা আসছে কোথা থেকে?

    ল্যাপটপের সামনের মেয়েটা বুঝতে পারে, কিছু একটা গণ্ডগোল হচ্ছে কোথাও। সে বলে, তোমাকে তুমিই বলছি ভাই। তোমাকে কি ওয়ার্ড অফিস থেকে পাঠিয়েছে? ইঞ্জেকশন দেবার জন্যে?

    ওয়ার্ড অফিস আবার কী? আমি তো ইঞ্জেকশন নিতে এলাম।

    তুমি ল্যাপটপ ব্যবহার করতে জান? করেছ কখনও?

    হ্যাঁ, করিই তো।

    যারা লাইনে দাঁড়িয়ে আছে, এক এক করে এলে তাদের নামটা ল্যাপটপ থেকে মিলিয়ে নেবে। পাশে আধার আর প্যান কার্ডের নম্বরটা আছে, সেটা থেকে ওরিজিনাল কার্ডের সঙ্গে মিলিয়ে এই স্লিপে লিখে আমার কাছে পাঠিয়ে দেবে। পারবে?

    এ আর না পারার কী আছে?

    যুবকের দিকে তাকিয়ে মেয়েটি বলে, আমিই কাজ চালিয়ে দিচ্ছি, ও আমার কাজটা করুক, ঠিক আছে স্যর?

    যুবকের বিস্ফারিত চোখ এবং একটু বোকা-বোকা হাসি-হাসি মুখ। ছি ছি! কী গণ্ডগোল হয়ে যাচ্ছিল!

    দিনের শেষে কর্পোরেশনের একটা ছাপা ভাউচারে সই করে নবনীতা, দুখানা একশো টাকার নোট ওকে দেয় যুবকটি, বলে, কাল আবার এসো। সারাদিনে চার কাপ চা খাওয়া হয়েছে, আর আটখানা বিস্কুট, দাম দিতে হয়নি। বাড়ির দিকে হাঁটতে হাঁটতে বাবার কথা মনে পড়ে নবনীতার। কলেজে ভর্তি হবার দিন বলেছিল, অনেক কষ্ট করে কলেজে ভর্তি করছি তোকে, কী লাভ হবে জানিনা। তবে মনে রাখিস, সত্যি সত্যিই যদি বাঁচতে চাস, দেখবি ঠিকই বেঁচে গেছিস। বাঁচার রসদ জুটে যাবে ঠিকই। তাহলে বাবা কি সত্যি সত্যিই বাঁচতে চায়নি?

    এক সপ্তাহ রোজ কাজ করল নবনীতা। শেষ দিন যুবকটি টাকা দিয়ে বলল ওকে, এবারের মতো আজই তোমার কাজের শেষ। কাল থেকে আমাদের রেগুলার এমপ্লয়ী জয়েন করবে। কিন্তু তোমার ফোন নম্বরটা রেখে যাও। দরকার হলে আবার যোগাযোগ করব।

    বেশ ফুরফুরে মেজাজে বাইরে বেরিয়ে আসে নবনীতা। যে বিহারী লোকটা ঠেলাগাড়িতে ইস্তিরি করে, তার সঙ্গে চোখাচোখি হয়। হাসে লোকটা। নবনীতাও। একটু পা চালিয়ে যেতে হবে। রাণীকুঠি পর্যন্ত। মরণোত্তর দেহদানের ওই ভদ্রলোকের টেলিফোন নম্বরটা হারিয়ে গেছে। ওটা লিখে রাখা দরকার।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
    অ-মৃত | হায়দারি মঞ্জিল থেকে | দুটি কবিতা | ক্যুও ভ্যাদিস | কি করবেন মাস্টারমশাই | ২০২২ এ পুজো বিষয়ক কয়েকটি লেখা | ক্ষত | এক গুচ্ছ কবিতা | অরন্ধন | শমীবৃক্ষের বুকের আগুন | তিনটি কবিতা | ধুলামুঠি | অনিমা দাশগুপ্তকে মনে পড়ে? | যে রূপ আশ্বিনের | এক্সাম পেপার | কুহক | প্রজাপতি প্রিমিয়াম | চিকিৎসা, সমাজ, দাসব্যবসা, ছিয়াত্তরের মন্বন্তর – টুকরো চিত্রে কলকাতা ও বাংলা | ভাস্কর্য | তিনটি কবিতা | স্বর্ণলতা | পাখি | অথ অহল্যা - গৌতম কথা | দুগ্গি এলো | আহ্লাদের কলিকাল | রুদালি টু ডট ও | অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো | প্রত্নতত্ত্বে তৃতীয় স্বর : প্রাচীন টেপ হাসানলু'র সমাধিগুলি | করমুক্ত | শারদ গুরুচণ্ডা৯ ২০২২ | একে একে নিভে গেছে সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমার আলো | মিষ্টিমহলের বদলটদল | নিজের শরীর নিজের অধিকার – পোশাক ও মেয়েদের আজকের দুই লড়াই | উমেশ, ইউসুফ এবং প্রাইম টাইম | কবিতাগুচ্ছ | উৎসব মনের | তিনটি অণুগল্প | বর্ডার পেরোলেই কলকাতা | রূপালি চাঁদ, সুমিতা সান্যাল আর চুণীলালের বৃত্তান্ত | দেবীপক্ষ ও অন্যান্য | দুটি সনেট | নদীর মানুষ | বৃংহণ | শ্যামাসংগীতের সাতকাহন | নবনীতার কয়েকদিন | ভিআইপির প্রতিমাদর্শন এবং.. | বেইজ্জত | পায়েসের বাটি | শারদ সম্মান | দুটি কবিতা | মালেক আব্দুর রহমান
  • ইস্পেশাল | ২৫ অক্টোবর ২০২২ | ১৯৬৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ranjan Roy | ২৬ অক্টোবর ২০২২ ১১:২৭513189
  • খুব খুব ভালো লেগেছে। 
    আর নাকতলা-রাণীকুঠি এবং পার্কসার্কাস আমার কৈশোর ও প্রথম যৌবনের পাড়া। তাই একটু পক্ষপাতিত্বও আছে।
    ভবানীপুরের (প্রয়াত) ব্রজদার দেহদানের সংস্থায় কয়েক বছর আগে ফোন করেছিলাম। 
    এ'বছর সত্যি নাম লেখাব।:))
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ২৬ অক্টোবর ২০২২ ১৩:২০513196
  • খুব ভাল লাগলো গল্পটা। কেমন সুন্দর সরল চলন। এফর্টলেসলি পুরোটা বুকের ভিতর ঢুকে গেল। রোজকার জীবনের একটা টুকরো।
  • selimanando selimanando | ২৬ অক্টোবর ২০২২ ১৩:৪২513197
  • এক লেখা দুবার পোস্ট হয়েছে! 
  • r2h | 192.139.***.*** | ১১ নভেম্বর ২০২২ ০৪:৪৫513691
  • এই গল্পটা... মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকলো। একটা মৃত্যু দিয়ে শুরু হয়ে আনইন্টারাপ্টেড উদাসীন আশাপ্রদ ও অনিশ্চিত বেঁচে থাকা, স্টোইক।
  • &/ | 151.14.***.*** | ১১ নভেম্বর ২০২২ ০৫:৩৬513692
  • এ গল্পটা পড়ে ভালো লাগল। সমস্ত দুঃখ কষ্ট ভয় বিচ্ছেদ ছাপিয়ে সতেজ আশাবাদ লকলক করে উঠেছে যেন, সেই পুঁইমাচা গল্পের শেষটুকুর মতন। 'তবু অনন্ত জাগে'। লেখককে কুর্ণিশ।
  • chandrima naskar | ১১ নভেম্বর ২০২২ ১৬:৪৫513709
  • দারুণ লাগলো লেখাটা। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল প্রতিক্রিয়া দিন