পারমিতার অবিশ্বাস্য লাবিয়ার তুলতুলে কুচুরমুচুর গোলাপি অনায়াস ঠোঁটের মাঝে চারভাঁজ করা দুটো দু’হাজার টাকার করকরে পিঙ্কি-পিঙ্কি নোট কালো বেঁটে কদমছাঁট চাপদাড়ি সোনার বোতাম হাফকুর্তা হেটোধুতি কুলীন খদ্দের চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) গুঁজে দেবার পর ব্যাপারটা স্পষ্ট হল গলা খ্যাঁকারির পর দরোজায় তিনটে টোকা পড়তে ফুলকলি ওরফে নিভা ওরফে রানি ওরফে মৌসুমী ওরফে পারমিতা সন্ধ্যা হলে যার নাম রোজই পালটে যায় সে ওই আধখোলা উঁকি অবস্হাতেই মানে ব্লাউজের বোতাম খোলা আর শায়া-পরা শাড়ি খুলে ফেলে তৈরি হচ্ছিল ওকে দেখে মনে হল দরোজায় খ্যাঁকারি-তিনটোকার ইঙ্গিত ও চেনে ফুলকলি ওরফে নিভা ওরফে রানি ওরফে মৌসুমী ওরফে পারমিতা দরোজা খুলতে দেখা গেল বেশ কালো চেহারার এক মাঝবয়সী খাড়ুস চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) পুরুষ খোনা গলায় ফুলকলিকে বলল পারমিতা তোর হিসেবটা দিতে এলুম লাস্ট ট্রেন ধরব তাড়া আছে খাতায় লিখে নিস নে তোর শুয়েজারল্যাণ্ডের ভল্টটা খোল দিকিনি এক ঝলক চোখ সার্থক করে যাই ফুলকলি ওরফে নিভা ওরফে রানি ওরফে মৌসুমী ওরফে পারমিতা শায়া ওপরে তুলে ধরতেই ওর অবিশ্বাশ্য লোপাটচুল লাবিয়ার দুই চিঙ্কি-চিঙ্কি ঠোঁটের ফাঁকে পিঙ্কি পিঙ্কি গুঁজে দিয়ে পেছন ফিরল সহসা ঘুমের তল্লাট ছেড়ে শান্তি পালালো আজ দিন আর রাত হল অস্হির কাজ আর শুধু কাজ শবনম আর ফুলকলি দুজনেই জানতে চাইল লোকটা কেন নিজেকে ভাইরাস চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) বলে কেন মারামারি করে অথচ মারামারির লোকগুলোর সঙ্গে ওনার কিছুই করার নেই লোহার সঙ্গে মরচের মাংসামাংসি পেতলের সঙ্গে কলঙ্কের ধামসাধামসি এক-একখানা ছয়েল ছবিলি ওদের বললে আমি চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) আমার মা প্রথমে এক হাসপাতালে মারা গেলেন বিষাক্ত গ্যাসে দমবন্ধ হয়ে মায়ের চিকিৎসা চলছিল ডিলাক্স রুমে হাসপাতালটার বেসমেন্টে নানা বাতিল জঞ্জালে ঠাশা সেখানে আগুন লাগতেই তার বিষাক্ত নীল ধোঁয়া এসির নল বেয়ে ওপরের ঘরগুলোয় লাফাতে লাফাতে পৌঁছোতেই পাশের বস্তির মানুষরা রাত আড়াইটে নাগাদ ঘুম ভাঙিয়ে কাশি কাশিয়ে ধোঁয়া বেরোতে দেখে ঢোকার চেষ্টা করতেই সিকিউরিটির খ্যাংরাকাঠি লোকেরা ওদের ঢুকতে দেয়নি শেষে অনেক টানাহ্যাচড়া উরিত্তেরি বাঞ্চোৎ ইসকিমাকা আগুন ছড়িয়ে পড়তে লোকগুলোকে সাড়ে তিনটের সময়ে ঢুকতে দিলে হাসপাতাল ফায়ার ব্রিগেডকে ফোন করেনি সাড়ে চারটে নাগাদ পুলিশ খবর পেয়ে ফায়ার ব্রিগেডের ঝিমন্ত কর্মীরা এসে তোলপাড়া উদ্ধার কাজ শুরু করে আগুন লাগা সম্পর্কে আমাদের বাড়িতে ডিউটি নার্সের ফোন এলো সাড়ে চারটের সময়ে ফায়ার ব্রিগেডের ক্লান্ত কর্মীরা দড়ি বেঁধে জানলা দিয়ে আমার মাকে নামায় বিষাক্ত গ্যাসের শ্বাসে মা মারা গেছেন সরকারি হাসপাতালে পোস্টমর্টেম হলো বাবা অ্যাবনর্মাল হয়ে গেলেন ডায়রেক্টারদের গ্রেপ্তার করল সরকার তারা দিব্বি ছাড়া পেয়ে গেছে আগুন লাগার চার বছর পর খুলেছে হাসপাতাল সবসুদ্দু পঁচানব্বুইজন মারা গিয়েছিল বাবাও মারা গেলেন একটা আদ্দেকতৈরি উড়ালপুলের তলায় একেবারে থেঁতলে ওনাকে চেনা যাচ্ছিল না পকেটে ক্রেডিট কার্ড দেখে পুলিশ আমায় জানালো শ্যাওলাধরা ফ্লাইওভারটা নয় বছর ধরে ওইরকমই পড়েছিল আধখ্যাঁচড়া যে কোম্পানিটা কনট্র্যাক্ট নিয়েছিল তারা ঝাঁসু পালের গোদানি আর পালের গোদাদের পাড়াতুতো সিনডিকটকে ঠিকেদারি দিতে বাধ্য বললে দুর্ঘটনাটা ঈশ্বরের কাজ ওদের কোনো দায়িত্ব নেই ওরা হিজড়িয়ে গেছে যে নেতার কোম্পানি সে মারা যাবার পর পাঁচ হাজার কোটি টাকা বাজারে দেনা বাবা কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিটে বন্ধুর বাড়ি আড্ডা মারতেন আপন ছুরাতে আদম গড়লেন দয়াময় তা নইলে কি ফেরেস্তারে সেজদা দিতে কয় বাবা আর মা দুজনেই মারা যাবার পর আমার রাগটা কার ওপর মেটাবো সরকার মানে তো জনগণ তাই জনগণের মারামারি দেখতে পেলে তাতে ঢুকে নিজেই ষাঁড়াষাঁড়ি টিরিনচাগা ( বংপুং ) জনগণ হয়ে যাই এদের ওদের তাদের সবায়ের পোঁদে শহিদ মিনার কুতুবমিনার মাপের অন্ধকার যুগ ঢুকিয়ে উড়িয়ে দাও আমি আদি আমি অন্ত আমি শেষ আমিই প্রথম জরার শ্মশানে আমি নিশাচর যৌবনের ডোম আমার আর কোনো শেকড় নেই আমি ম্যাকলেপুত্র ভাইরাস চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) আর তোমরা তো লর্ড কর্নওয়ালিসের জমিদারিপ্রথার উপহার হেটোমাগি থেকে তরতরিয়ে প্রথমে জমিদারদের স্ফটিকাকৃতি লিঙ্গদণ্ডের খাঁকতি মেটাতে বাগানবাড়িগুলোয় তারপরে বউবাজারে বাইজি শেষে আধুনিকতার সমুদ্রমন্হনে উর্বশী মেনকা রম্ভা তিলোত্তমা ঘৃতাচী অলম্বুষা মিশ্রকেশী বিদ্যুৎপর্ণা অদ্রিকা শুচিকা সুগন্ধা চারুনেত্রাদের স্বার্থতান্ত্রিক গোষ্ঠীক্যাচাল সংস্করণ হয়ে ছড়িয়ে পড়লে মহানগরে শহরে গঞ্জে বন্দরে আমি ম্যাকলেপুত্র চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) আর তোমরা কর্নওয়ালিসপুত্রী সরকার মায়ের দাম ধরেছিল পাঁচ লাখটাকা আর বাবার দাম তিন লাখ আমি কিছুই নিইনি ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ পানিবসন্ত আমায় যদি কেউ জিগ্যেস করে কিসের এতো তাড়া তাহলে ওই একটাই উত্তর আছে সব সময় মনে হয় পোঁদে গু লেগে আছে যেন জীবনে কখনও ছোঁচাইনি তাই যতো পারি যমহাটের ঘেন্না জোগাড় করে চলেছি ট্রেনে বাজ পড়েছিল যখন হাগতে বসেছিলুম ট্রেন থেমে গেল একদিকে লইলই সবুজ ধানখেত আরেকদিকে জবড়জঙ পাহাড় আর গাদাগাদি কামরার আলো তক্ষুনি নিভে গেল বাজ পড়ার ঝাঁজ আমার হেগো শরীর বেয়ে মৌমাছির গুনগুনে হুল বেরিয়ে যেতে দরোজা খোলার চেষ্টা করেছিলুম খুলল না লাথি মারতে লাগলুম চেঁচাতে লাগলুম অগাচণ্ডী টেটন-টেটনি প্যাসেঞ্জারও কালা মেরে গেছে বাজ পড়ার ভয়ে নাকি পুড়েই মরে গেল ট্যাঁকখোর কেলোকাত্তিক গেঁজেলগুলো দরোজা বন্ধ তার ওপর কলে জল নেই হাগতে বসার সময়ে চেক করে নিইনি যে কলে জল আছে না নেই রাতদুপুরে হাগা পেয়েছিল আমি শব্দ বাক্য উপমা উৎপ্রেক্ষা চিত্রকল্প রূপক অলঙ্কার হাগি এটা আধুনিকতার পরের দুমবো-দুমবো মিছেকথার নিমকিছেনালি যুগ নইলে চলে না বোকচৈতন সেজে স্বার্থতন্ত্রের শেয়ানা ভাল্লুক-ষাঁড় বাংক থেকে নেমে হাফপ্যান্ট অবস্হাতেই হাগতে ঢুকেছিলুম ট্রেনের এতো ভিড় জবরদস্তি জানলা দিয়ে কামরায় সেঁদিয়ে বাংকের ওপর থেকে লোকটা গোঁত্তা মেরে কে জানে কোন স্টেশানে নেমে যাবার আগেই তড়াক-দখল করে নিয়েছিলুম মহাপৃথিবীর ওপর আমার রাগ কিছু করার নেই অন্ধকারে টয়লেটের দরোজায় লাথি মেরেও কিছু হয়নি পাবলিক ভেবেছে ভুতের ছ্যাঁচড়ামি তারপর মা-বাপ মরে যেতেই আমায় পেয়ে বসল মানুষ প্যাঁদাবার মর্ষআহ্লাদ কিরি কিরি দুম কিরি কিরি দুম স্কুলের সময় থেকে জড়ো করা সার্টিফিকেট ডিগ্রি সব ছিঁড়ে-পুড়িয়ে-উড়িয়ে পুরস্কারের বইপত্র-কাপ-শিল্ড বিলিয়ে এখন থেকে আমার কোনো নাম নেই আমি ম্যাকলেপুত্র চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) আমি ওসবের ধার ধারি না ভালো বলো খারাপ বলো যা ইচ্ছে হয় বলো আমি করি কারণ আমি স্বার্থমাত্রবাদী জনগণ ওই কাজে মেতে উঠি কারা কাদের ধোলাই দিচ্ছে তা আমার ভাবার কথা নয় ভাবিও না জাস্ট দেখি কোথাও নিজস্বতান্ত্রিক জনগণের দুটো দল মারামারি করছে পেতলসোঁটা-লাঠি হেরোদলের হকি স্টিক জংধরা-সাইকেল চেন সবুজ সোডার বোতল চালাবাড়ি-শিল্পের দড়ি বোমা নিয়ে আমিও ভিড়ে যাই তাতে যারা মার খাচ্ছে আর যারা খাচ্ছে না আমার কাছে তাদের কোনো তফাত নেই আমিও এলোপাতাড়ি মার দেয়া আরম্ভ করি যারা মারছে আর মার খাচ্ছে তারা আমাকে চেনেনা কেননা আমি চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) জনগণকে আঘাতের আত্মীয় মনে করে উৎসাহ যোগাতে থাকি মাথায় মার পিঠে মার ওই বাঞ্চোতটাকে ঠ্যাঙে মার পোঁদে লাঠি ঢুকিয়ে দে আমি তাদের কথায় কান দিই না যেমন ইচ্ছে বেরহম মারতে থাকি যেই দেখি যারা মার খাচ্ছে তারা পালাচ্ছে আর যারা মারছে তারা আরও মারবে বলে ধরধরধরধর পিছু নিয়েছে আমি থ্যাৎলানো দুইপক্ষের কয়েকজনের পকেট হাতড়িয়ে টাকাকড়ি নিয়ে কেটে পড়ি কেননা আমারও তো মানুষের হাত-পা মনুষ্যত্ব বলে ব্যাপার আছে মানবিকতা আছে আশাবাদ আছে জীবনবোধ আছে দায়বদ্ধতা আছে মারতে-মারতে ব্যথা দেখি ছাঁচেফেলা মুখের মানুষের হুড়দঙ্গ হকি স্টিক বা লাঠি ফেলে দিয়ে কেটে পড়ি আর ওৎপেতে থাকি স্বার্থতান্ত্রিক চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) জনগণের কোথায় নতুন মারামারি শুরু হতে চলেছে আমি তো ম্যাকলেপুত্র চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) ঝগড়া দেখলেই থমকে থেমে পড়ি আশায় থাকি যে ঝগড়াটা আরেকটু পাকুক নিশ্চই ধ্রুপদি কায়দায় প্যাঁদাপেঁদি আরম্ভ হবে মারামারির বিষয়-ফিষয় নিয়ে মাথা ঘামাই না পাবলিক মিলে পাবলিককে প্যাঁদাচ্ছে পাবলিক মিলে পুলিশকে প্যাঁদাচ্ছে দেখলেই ভিড়ে যাই যদি দেখি আগুন ধরাবার তোড়জোড় চলছে জেরিক্যান তুলে আগুন ধরিয়ে দিই কে পুড়ছে কে মরতে চলল এসব আমার দেখার দায়িত্ব নয় আমি চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) গণস্বার্থতন্ত্রে বিশ্বাসী না অবিশ্বাসী তা নিজেই জানি না তবে আমি জনগণ আসলে মারবার পর যাকে মারছি আগুন ধরাবার পর যে পুড়ছে তার মুখ থেকে যে আওয়াজ বেরোয় আমি তা উপভোগ করি মরছে বাঞ্চোত আবার কাতরাচ্ছেও টুঁটি টিপে মেরে ফেলতে পারলে আরও ভালো হতো বলিও যে গাণ্ডুটার গলা টিপে ধর চুতিয়াটার গলায় গামছে বেঁধে টানতে টানতে নিয়ে চল আমি দলাদলিতে নেই পার্থক্যহীনতায় তফাত আছে কিনা দেখিও না কোন স্বার্থতান্ত্রিক দল কাদের প্যাঁদাচ্ছে যারা প্যাঁদাচ্ছে তাদের হাতে ঝাণ্ডা আছে কি না থাকলে কোন রঙের ঝাণ্ডা ওসব দার্শনিক চিন্তা করি না তবে একটা ভাবনাকে তোল্লাই দিই ঝাণ্ডার ডাণ্ডাগুলো কাদের তেলচুকচুকে মোটাশোটা হাতে যদি সাইকেল চেন থাকে তাহলে এলোপাতাড়ি মার দিতে গিয়ে কার গায়ে লাগছে কার পিঠ থেকে মাংস চেঁছে বেরিয়ে এলো রক্ত ছিটকে বেরোলো সেদিকে বিশেষ নজর দিই না রক্ত যদি আমার মুখে ফিনকিয়ে লাগে জিভ দিয়ে চেটে স্বাদ নিই মিষ্টি না নোনতা না তেতো না টক না ঝাল স্বাদ থেকে যদিও বুঝি কে কোন দলের গাণ্ডু তারপর আবার লেগে পড়ি সমঝোতা করা চলবে না সমঝোতা করলেই চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) জনগণকে কেউ পাত্তা দেবে না আর পাত্তা না দিলেই বা কী এলোগেলো চশমখোর র্যাডক্লিফপুত্রী পালের গোদানি আর রুবলখোর স্তালিনপুত্র পালের গোদাদের বোমক্যাওড়া দলই তো মড়াখেকো একদল পায়ের দিক থেকে খায় আরেকদল মাথার দিক থেকে খায় পুরুষের বডি হলে খেতে-খেতে জিভরোচক নুনুটা আয়েস করে চোষে আর মেয়েমানুষের বডি হলে টাটকা পাঁউরুটি মাইয়ের বোঁটা দুটো কেকের ওপর বসানো চেরির মতন মুখে রেখে লজেন্স বানিয়ে তারিয়ে ভোগ করে আমি লাশ-ফাশ খাই না আমাকে ওদের একজন মনে করে-কি-করে-না তা নিয়ে আমার দর্শনতত্ব নেই আমি স্রেফ জনগণ যখন মার লাগাই তখন আমি বুঝতে পারি আমি নবরত্নের পোখরাজ কিংবা বাইরের গ্রহ দল-ফল আমার ব্যাপার নয় ওসব যারা আকচাআকচি নিয়ে লেকচারবাজি করে তাদের আমার কাজ হল নেকড়ের দলে না ঢুকে একলা একটা রাস্তার নেকড়ে হয়ে ঘুরে বেড়ানো আর চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) স্বার্থতান্ত্রিক নেকড়ে দল কোনো চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) স্বার্থতান্ত্রিক হায়েনা দলকে ঘিরে ধরে প্যাঁদাপেঁদি করলে যারা মার খাচ্ছে আর মারছে তাদের পোঁদ থেকে সুযোগ বুঝে মাংস খুবলে নেয়া দলাদলি করবই বা কেন যতো বাঞ্চোত বাস্তববাদীরা দলাদলি করে যারা করে না তারা আদর্শ নিয়ে ভ্যানতারা ভাঁজে আমার কোনো আদর্শ নেই দলও নেই পয়সাকড়িও থাকে না এই মারামারির ফাঁকে যাদের প্যাঁদাচ্ছি তাদের পকেটে টাকাকড়ি পেলে হাতিয়ে নিই লাশ পড়ে গেলে হাতিয়ে নিয়ে কেটে পড়ি অবাক হই না যে দলদাসদের নুনুগুলো মাইক্রোমাপের আজকাল চারিধারে সিসিটিভি বসেছে আমার সুবিধে যে আমি তো কোনো দলে নেই তাই কেউ ধরতে পারে না যারা ধরা পড়ে যায় তারা বলতে পারে না যে আমি কে তারা ভাবে তাদের হয়েই মারছে ষণ্ডাটা অথচ তারা কোনো দিন আমাকে দ্যাখেনি আমি তো জাস্ট ম্যাকলেপুত্র চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) পকেট হাতিয়ে যে টাকাফাকা পাই তা খাবার কিনতে চলে যায় বাস ভাড়ায় ট্রেন ভাড়ায় লাগে এক জায়গায় তো আটকে থাকতে পারি না বাসে করে যেতে যেতে দেখি কোথাও ঝগড়াঝাঁটির চার্বাক টিরিনচাগা( বংপুং ) স্বার্থতান্ত্রিক তাপ শুরু হয়েছে কিনা শুরু হয়ে থাকলে আর যদি দেখি যে দুচারজনের হাতে মারামারি করার লাঠিসোঁটা চালাবাড়ি-শিল্পের ওয়ানশটার দড়িবোমা রয়েছে তাহলে সেখানে নেমে পড়ি দেখিনা দড়িবোমার জন্যই চটকলগুলো টিকে গেল ভাবি না কারা গাণ্ডু কারা চুতিয়া কারা বানচোদ কারা খানকির বাচ্চা কারা কুত্তির বাচ্চা কারা রাঁঢ়ের নাঙ কারা শুঁটকির পুঁটকি কারা টেণ্ডাই-মেণ্ডাই করছে মারামারি করতে ওসকাই যেই দেখি মারামারি শুরু হল দেখে নিই কাদের পাল্লা ভারি কাদের কম যাদের পাল্লা ভারি তাদের সঙ্গে কিছুক্ষণ থাকি তারপর কিছুক্ষণ যারা দুবলাপাতলা আর মারধর শুরু করে দিই আমি লোকটা খুবই খারাপ আমি ভালো চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) নই আমি স্বার্থতান্ত্রিক গোদানি আর গোদাদাদাদের বিশ্বাস করি না নির্ভরযোগ্য মনে করি না ফালতু জনগণ হয়ে ক্ষমতাকেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জ জানানোই বেঁচে থাকার পুরস্কার অন্য রকমভাবে চিন্তা করাই হল মুক্তি আমার কথা বলার খোঁচাকে অনেকে সহ্য করতে পারে না আমার পক্ষে বদলে যাওয়া সম্ভব নয় আমি একটুও পেছোবো না সে যতোই নিমহাকিমের বোলতিবন্ধ ভূষণ বিভূষণ নিভূষণ আভূষণের হাড্ডি ছুঁড়ে দাও যতোই যাই হোক আমি নিজেকে অসহায় মনে করি না তবে পুলিশ কন্সটেবল পিটিয়ে সুখ হয় না তাদের খয়েরখাঁ বড়োসাহেবরা হুকুম দিয়েছে হাত গুটিয়ে থাকতে পড়ে-পড়ে মার খাও মার খাও মার খাও চাকরি বজায় রাখো মার খাও জয় হিন্দ জয় জওয়ান জয় কিসান জয় মাতা দি একটি মৃত্যু হল শোক আর লক্ষ মৃত্যু শুধুই পরিসংখ্যান বলো চিংড়ি মাছের চচ্চড়ি তাইতে দিলেম ফুলবড়ি ফুলবড়িটা গলে গেল সবাই মিলে একপা তোলো বেদও এই প্রতারক পুরোহিতদের সৃষ্টি সুতরাং চার্বাকগণের মতে বেদকে বিশ্বাস করা মানুষের উচিত নয় জড়বাদী চার্বাকদের মতে প্রত্যক্ষই একমাত্র প্রমান এবং যা প্রত্যক্ষগোচর নয় তাহার অস্তিত্ব নেই যেহেতু ঈশ্বর প্রত্যক্ষগোচর নয় সেহেতু ঈশ্বরের অস্তিত্ব স্বীকার করা যায় না ক্ষিতি অপ তেজ ও মরুত্ এই চার রকমের জড় উপাদানের স্বাভাবিক পরিনতিই হলো জগৎ অর্থাৎ চতুর্ভূতের স্বাভাবিক মিশ্রণের ফলেই জগতের সৃষ্টি হয়েছে তাই জগত স্রষ্টারুপী ঈশ্বরের অনুমান করার কোনও প্রয়োজন নেই টিরিনচাগা ( বংপুং ) দার্শনিকগণের মধ্যে বেদও এই প্রতারক পুরোহিতদের সৃষ্টি সুতরাং চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) মতে বেদকে বিশ্বাস করা মানুষের উচিত নয় জড়বাদী চার্বাকদের মতে প্রত্যক্ষই একমাত্র প্রমান এবং যা প্রত্যক্ষগোচর নয় তার অস্তিত্ব নেই যেহেতু ঈশ্বর প্রত্যক্ষগোচর নয় সেহেতু ঈশ্বরের অস্তিত্ব স্বীকার করা যায় না ক্ষিতি অপ তেজ ও মরুত্ এই চার রকমের জড় উপাদানের স্বাভাবিক পরিনতিই হলো জগৎ অর্থাৎ চতুর্ভূতের স্বাভাবিক মিশ্রণের ফলেই জগতের সৃষ্টি হয়েছে তাই জগত স্রষ্টারুপী ঈশ্বরের অনুমান করার কোন প্রয়োজন নেই বংপুং দার্শনিকগণের মধ্যে অনেকেই আত্মার মুক্তি বা মোক্ষলাভকে মানব জীবনের পরম কল্যান তথা চরম লক্ষ্য বলে অভিহিত করেছেন কিন্তু চার্বাক টিরিনচাগারা বলেন আত্মারই যেখানে কোন সত্তা নেই সেখানে আত্মার মুক্তির প্রশ্ন অবান্তর মাত্র তাঁদের মতে ইন্দ্রিয়-সুখই মানুষের পরম কল্যান তাই এই ইন্দ্রিয়-সুখই তাদের জীবনের চরম লক্ষ্য হওয়া উচিত চার্বাক টিরিনচাগারা আরো বলেন অতীত চলে গেছে ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত কেবল বর্তমান মানুষের আয়ত্বে আছে সুতরাং বর্তমান জীবনে মানুষ যে উপায়েই হোক যত বেশি সুখ করতে পারে তা করা উচিত দুঃখমিশ্রিত বলে বা অন্য কোন কারনে বর্তমান সুখকে বিসর্জন দেয়া মানুষের পক্ষে মূর্খতা অনেকেই আত্মার মুক্তি বা মোক্ষ লাভকে মানব জীবনের পরম কল্যান তথা চরম লক্ষ্য বলে অভিহিত করেছেন কিন্তু চার্বাক টিরিনচাগারা কুমির-ভরা-নদীতে হরিণদের যেমন কামড়ে খেতে-খেতে কুমিরের পেটে ঢুকে পড়ে কন্সটেবলগুলো থানার কোনো ঘরে লুকিয়ে পড়ে আর কন্সটেবলদের পকেটে বিশেষ কিছু পাওয়া যায় না ট্র্যাফিক কন্সটেবলরা তবু ট্রাক থামিয়ে ঘুষঘাস নেয় ওদের পকেটে টাকা কড়ি থাকে তা ওদের তো স্বার্থতান্ত্রিক কর্মীরা মারধর করে না হয়তো ওপরঅলাদের তেমনটাই হুমকি যদি দেখে তারা কোনো স্লোগান দিচ্ছে মার দিতে দিতে তো আমিও দিই কিন্তু সেসব স্লোগানে আমার ঝাঁটের ঝাণ্ডাও দোল খাবে না তারপর আক্রোশ ঠাণ্ডা হলে দুচারটে পকেট হাতড়িয়ে কেটে পড়ি সেখান থেকে পকেটে টাকাকড়ি যতই কম থাকুক না কেন আমি তো ব্যক্তি নই আমি স্বয়ংসম্পূর্ণ ম্যাকলেপুত্র চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) যখন ভিড়ে ঢুকে পড়ি তখন আমি আর আমি থাকি না আমি তখন স্বয়ং শব্দ বাক্য চিত্রকল্প বাকপ্রতিমা রূপক মেটাফর ভাইরাস মুহূর্ত দিয়ে গড়া মানুষের মাংসের বিশাল এলাকা যেখানে ব্যক্তির সাধারণ আর স্বাভাবিক আচরণকে জলাঞ্জলি দিয়ে ভিড়ের নিজস্ব নিয়মকানুন গড়ে ওঠে একবার যদি ভিড়ের বিস্ফোরণ হয় তাহলে সামনে যেই থাকুক তাকে ভয় পাবার দরকার নেই সামনের মানুষ বা জিনিসপত্র নিছকই অপর মানে যার শরীর থেকে প্রাণের প্রতীক ছিঁড়ে আলাদা করে দেয়া হয়েছে তাকে বিনা দ্বিধায় মেরে ফেলা চলে কেননা তার ওপর তখন একচ্ছত্র অধিকার কেবল ম্যাকলেপুত্র চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং )জনগণের তখন ভিড়ের প্রতিনিধিত্ব করে ভিড় মানে এই নয় যে তারা প্রাগৈতিহাসিক প্রবৃত্তি দিয়ে চালিত ভিড় তার শত্রুকে খোঁজে নয়তো তাকে তক্ষুনি শত্রু আবিষ্কার করে নিতে হয় সামনে পেলে তাকে ধ্বংস করে ফেলতে হয় তার সম্পত্তি মাটিতে মিশিয়ে দিতে হয় তার কারবার যেন মড়াখেকো যারা একই সঙ্গে নিজেকে আর অপরকে মড়ামাংসের পিণ্ডি চটকাতে পারে দেখেছি যে মারামারি খুনোখুনি করে পাওয়া পয়সায় এক বেলা খাওয়া হয়ে যায় আর কোনো ডবলডবকা উঠন্তি মেয়েমানুষের সঙ্গে চকাচক শোয়া হয়ে যায় কম পয়সা থাকলে কম পয়সার মেয়েমানুষ বেশি পয়সা থাকলে বেশি পয়সার মেয়েমানুষ আর যার সঙ্গে শুচ্ছি তাকে দুচারটে ভালো কথা বলে জোচ্চুরিও করে নিই যাতে রাতটা তার সঙ্গে তার মশারিতে কাটিয়ে নেয়া যায় ওরা জানে সকালে কোথায় হাগতে যেতে হবে কেননা শহরে হাগা ভয়ংকর সমস্যা সুলভ শৌচালয়ে যাবার মতন পকেটে পয়সা থাকলে অসুবিধা হয় না কিন্তু খতিয়ে দেখতে হয় যে এক বেলার খাওয়ার মতন রেস্ত বাঁচছে কি না কোনো-কোনো মেয়েমানুষের অলবড্ডে বর থাকে বরেরা বউকে শোবার জন্য পাঠায় আবার রোজগার বেশি না হলে প্যাঁদায় আমি এই মেয়েমানুষগুলোর শরীরে চোটজখম একেবারে সহ্য করতে পারি না আমি ওদের আঘাতের রক্তের সঙ্গে প্রেম করি চেটে-চেটে আদর করি ওরা আনন্দ পায় আর আনন্দ পেলে শরীরের মধ্যে যে নাচ লুকিয়ে আছে গান লুকিয়ে আছে সঙ্গীত লুকিয়ে আছে মাংসের চলোর্মি ঢেউ খাচ্ছে তা নিজেদের বাধ্যতামূলক ভ্রষ্টাচারের রসালো চটচটে উথালপাথাল দিয়ে জানান দিতে থাকে মনে হয় যেন আমি একটা পাঁচ ফিটের কেন্নোর ওপর শুয়ে আছি তাছাড়া মেয়েমানুষ মানেই তো রক্ষিতা নয় আমার জীবনটাই আমার রক্ষিতা আর ফুটপাথে কারোর বউয়ের বা রক্ষিতার বা ছেড়ে যাওয়া মেয়েমানুষের টাঙানো মশারি ব্যাপারটাকে কী বলব আমাদের সংস্কৃতির অঙ্গ সব বোকাচোদা এদিকে সংস্কৃতি বলতে অজ্ঞান অথচ পকেটে যদি দশ টাকা থাকে তাহলে পাঁচ টাকায় মাগ পাওয়া যাবে যদি পাঁচ টাকা থাকে আড়াই টাকায় পাওয়া যাবে যদি দুটাকা থাকা তাহলে এক টাকায় পাওয়া যাবে এ এমনই সংস্কৃতি সমাজে মাংসল-ফুটোর দাম পকেটের রেস্ত অনুযায়ী বাঁধা এরকম সংস্কৃতিকে কোন নামে ডাকা হবে বলো দিকিনি তো সন্ত্রাস দুরাচার উত্তর দিতে হলে হামাগুড়ি দিয়ে নিজের মগজে ঢুকতে হবে সেখানে ছায়া হাতড়ে যেটুকু পাওয়া যায় সারারাত মশারিতে কাটাতে হলে যতো পারা যায় চুল্লু টেনে ঢোকাই ভালো সেক্ষেত্রে ঠেঁটা-নুনু দেহের নির্দেশ মানতে অস্বীকার করবে প্যাঁদাবার সময়ে কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক ভাবলে দিনযাপন ব্যাপারটা গুবলেট হয়ে যায় তাই আসল ক্যারদানি হল আশেপাশে কাউকে ঘেঁষতে না দেয়া তবু মশারির ভেতরে ঘেঁষতে হয় এদের আবার কী যে কষ্ট তা বোঝাবার মতন পড়াশোনা নেই কিংবা বোঝবার মতন যতটা মুকখু হওয়া দরকার তার চেয়ে বেশি চালাক-চতুর আমি চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) আর এই ফুটপাতিয়া অপ্সরাদের শরীর জড়ালেই টের পাওয়া যায় তার মধ্যে কী ধরণের কাতরানি কষ্ট যন্ত্রণা পেটেরখিদে লুকিয়ে আছে যে তাকে বিদকুটে আর দুঃখি লাগছে আর অতীত নিয়ে শোক করার সকলেরই কিছু-না-কিছু গুপ্তধন থাকে মশারির ভেতরে ফুটপাতে শুয়ে কানে মোবাইলের গান লাগিয়ে আ যা সনম মধুর চাঁদনি মেঁ হম কিংবা তুমি যে আমার গান শুরু হতেই মশারির মাগি বলে উঠেছিল এই চামার বন্ধ কর আর পাটালি চেটে যা করার করে কেটে পড় ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ পানিবসন্ত নিজের দুঃখের পায়খানা অন্য রাঁঢ়ের মাথায় হাগগে যা সারা রাতে দশজন খদ্দের না হলে এক কিলো চাল আর সবজির দাম উঠবে না বেঁচে থাকা এরকমই কাল যা করেছি আজও তাই করতে হবে আগামীকালও তাই করতে হবে পরশুও তাই করতে হবে তরশুও তাই করতে হবে তার পরের দিনও তাই করতে হবে তার পরের দিনও তাই করতে হবে কে বোঝে এই একঘেয়েমির যন্ত্রণা থাক থাক আর বলতে হবে না যা করার করে নিয়েছি এই নাও তোমার টাকা আর যাও নতুন খদ্দেরকুটুম ধরতে কারা ইনকেলাবের জগঝম্প কারা জিন্দবাদের ঝিনচাক তাতে তোমার কি লাভ যারা প্যাঁদায় তাদের আগে কোনো দল পেঁদিয়ে থাকবে এই প্যাঁদাপেঁদি চলতেই থাকবে চলতেই থাকবে ভাট বকিয়ে বোকাচোদারা চলে যাবে ল্যাদখোর পনজি-স্কিমের দলে গিয়ে মুরুব্বিদের পায়ে গড়াগড়ি খেয়ে ছাগু সেজে পোঁয়া উলটিয়ে বক্তিমে ঝাড়বে কেন দরবারি দলে গেল কেন মশারির ভেতরে লুলামির দোকানদারি সবাই যখন নিজের-নিজের সমস্যা ফিরি করে বেড়াচ্ছে কুত্তির বাচ্চা তুইও তাই বেচগে যা কী ভাবিস দুঃখের বদলা পৃথিবী নেবেই শালা তুমি জার্সি পালটে যতই গা বাঁচাবার চেষ্টা করো লোভে দরবারি দলে যাও ভয়ে দরবারি দলে যাও গ্রামের রাস্তায় মারামারি চলছে দেখে বাস থেকে নেমে যারা প্যাঁদাচ্ছে তাদের দলে ভিড়ে চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) আমিও প্যাঁদাতে শুরু করি লাশ পড়ে গেলে আমিও ঠ্যাং ধরে টানতে-টানতে খুঁড়ে রাখা গর্ততে নিয়ে গিয়ে ফেলি মাটি চাপা দেবার আগে পকেট হাতড়ে যা পাই নিয়ে পরের বাসে চাপি গ্রামজীবনের সংস্কৃতি আহা আহা আহা আহা কী অসাধারণ বর্ণনা করে গেছেন তারাশঙ্কর বন্দ্যোঘটি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোঘটি মানিক বন্দ্যোঘটি একেবারে আলাদা লাশ লোপাট করার সুযোগ আছে তা থেকে জৈবসার ভালো হয় একটু সময় লাগে এই যা রাসায়নিক সারের মতন ক্ষতিকর নয় গ্রামে ফুটপাথ নেই মশারির ভেতরে শোয়া নেই গঞ্জ হলে সন্ধ্যায় কোথায় বাজার বসে ভুতুড়ে ভেঙেপড়া রাজবাড়ির মোদো গন্ধের টান সেই দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যায় এটাকে বলতে হবে লম্পটের নাচমহল আবিষ্কার মানুষ চাইতো অচেনা জায়গায় সঙ্গদানের জন্যে মানুষ ওই একটা জায়গাতেই মদের আড্ডায় আর শহরের চেয়ে সস্তা মাগের পর্দায় গ্রামে সাতসকালে মাঠে গিয়ে হেগে নেয়া যায় পুকুরে খালে ছুঁচিয়ে নেয়া যায় বাইরের লোক দেখলেই আপনি কে কোথায় থাকেন কোন কাজে এয়েচেন বালের কিচাইনের পর কিচাইন তার চেয়ে হেগে ছুঁচিয়ে নিয়ে প্রথম বাসেই কোনো শহরে সেখানে মারামারি হবেই কেননা মারামারিরও ঋতু হয় চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) আমি হাওয়া বুঝে টের পেয়ে যাই কোথায় মারামারি চলছে ফেস্টুন দেখে দেয়ালের চ্যাংড়াবুলি পড়ে দলগুলোর চিরনদাঁতী ভোদামি টের পেয়ে যাই আর পৌঁছোই গিয়ে অপেক্ষায় থাকি পোঙাপুঙি শুরু হলেই ঢুকে পড়ে অকারণে প্যাঁদাবার মতন আনন্দ আর নেই ট্রেনের পায়খানায় হাগতে গিয়ে আটকে গিয়েছিলুম শহরে কোথাও হাগার জায়গা ছিল না সেই দিন পকেটে সুলভ শৌচালয়ে দেবার মতন টাকা ছিল না গুমুতের ক্যাশিয়ারকে বললুম যে দাও না বাকিতে ও বললে বাকিতে হাগা-মোতা যায় না ওপরঅলার আদেশ আছে দেখুন দেয়ালে লেখা আছে বাই অর্ডার তাই প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো ট্রেনে হাগতে ঢুকেছিলুম তাও জানলা দিয়ে বাঙ্ক দখলের পর এতো জোরে পেয়েছিল পায়খানায় ঢুকতেই ট্রেনটা ছেড়ে দিলে ভেবেছিলুম পুরো কোটা হেগে নিয়ে শব্দ বাক্য চিত্রকল্প রূপক অলঙ্কার মেটাফর বের করে দিয়ে লাফিয়ে নেমে যাবো স্পিড ধরার আগেই কিন্তু পায়খানার দরোজা খুলল না চেঁচিয়ে টিটিকে পাবলিককে ডাকলুম কেউ সাড়া দিলে না কি আর করি বসে রইলুম উবু হয়ে কমোড থাকলে না হয় চেয়ারের মতন করে বসতে পারতুম তা গাড়ি এগিয়ে চলল তারপর কোথাও কিছু নেই ধানখেত আর পাহাড়ের মাঝে বাজপড়ল ট্রেনের ওপরে অন্ধকার ছেয়ে গেল দুপুরে পাইস হোটেলে খেয়েছিলুম নিমবেগুন আর ভাত ওরা ডাল আলুভাজা ফ্রি দেয় খেতেই পকেট ফাঁকা হয়ে গেল পাইস হোটেলের জলে ভেজাল ছিল নয়তো তক্ষুনি হাগা পাবে কেন এমন শহর যে সবেতেই না বলে হেগো না পেদো না খেয়ো না যেও না কোরো না বোলো না শুনো না দাঁড়িও না বোসো না এসো না যেও না না না না না না ছাড়া কারোর মুখে কথা নেই যদি কথা খরচ করার মতন স্টক না থাকে তাহলে ঘাড় নাড়িয়ে বলে ঘাড় নাড়ানো দেখে বুঝে নিয়ে সেখান থেকে কেটে পড়তে হবে গঞ্জের পোড়ো ভুতুড়ে রাজবাড়ির সদরে দেখি সিঁদুর শাঁখা নোয়া পলা জিগ্যেস করতে বাধ্য হই তুমিই শোবে না শোবার মেয়ে ভেতরে আছে উত্তর পাই আমি-আমি সিঁদুর-টিপ-শাঁখা পরেছি খদ্দেরকুটুমরা পরকীয়া করতে ভালোবাসে ভাবে অন্যপুরুষের মাগ পেয়ে গেলো কেল্লা ফতে এখন ছিকেষ্টর র্যালা করে যেতে পারে বলি তোমার নাম কি উত্তরে শবনম শুনে জিগ্যেস করি আজকাল হিঁদুরাও এমন নাম রাখছে নাকি উত্তর পাই কে বললে তোমায় আমি হিন্দু ওপার থেকে তালাক খেয়ে পাইলে এইচি সিঁদুর-শাঁখা-পলা দেখে ভেবে নিলে এই বাজারেও শেয়ারের ওঠানামা মানতে হয় গো সারারাত থাকবে না এক্ষুণি চলে যাবে সারারাতের খরচ দিয়ে থাকতে পারো বলি সারারাতই তো থাকতে চাই রাতে তো থাকার জায়গা নেই উত্তর পাই তাহলে আগে দুমুঠো খেয়ে নেবে না আগে কোঁচড়ের চাহিদা সেরে ফেলে তারপর খেতে বসবে বলি আগে দুজনে খেয়ে নিই তোমার আবার দালাল-টালাল নেই তো তাকেও ডেকে নাও না গো কেউ নেই যে যখন আসে সেই তখন আমার আত্মীয় পরমপুরুষ আমার দালাল তুমি আমার দেহের দালাল চলো খেয়ে নাও আগে হ্যাঁ খেতে বসি খাটের ওপরে দুটি ভাত আর নিমবেগুন এই নিমবেগুন আমার পিছু ছাড়ল না তোমাকে চুমু খাবো কিন্তু তখন তেতো লাগার কথা বোলো না কতো তেতো টক ঝাল নোনতা খেলুম আজ পাঁচ বছর হয়ে গেল একেই প্রেম বলে বুঝলে গো যার হাতের খাওয়া তার সঙ্গে শোয়া বিয়ে করার পর প্রেমিকারা তাই করে জানতে চায় কি করো চাকরি করো আপিসের কাজে এয়েচো আর হোটেলের বদলে এখানে রাতটা কাটাচ্ছো বলি নাগো কিছুই করি না আমি তো একজন ম্যাকলেপুত্র চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) ভিড়পুরুষ ভাইরাস কেবল সুযোগ পেলে মানুষ পেটাই বলে উব্বাবা গুণ্ডা নাকি বলি নাঃ ওটাই ভাল্লাগে হবি বা শখ বলতে পারো বা আর্ট-শিল্প বা উত্তরণ বলতে পারো যেমন এই পোড়ো জমিদারবাড়ির আনাচে-কানাচে ব্রিটিশের নকল-করা আর্ট ঝরে-ঝরে পড়ছে চাষির রক্ত চুষে এর নাম হয়েছিল রাজবাড়ি সেসব রাজারা এখন হাপিশ রাজবাড়ি সারাবার ট্যাক্স দেবারও টাকাকড়ি নেই রাজবাড়ি এখন যৌনালয় তার ঘরে ঘরে যুবতীরা জানতে চায় কোন দল করো বলি কোনো দল করি না যারা বেশি পেটায় তাদের সঙ্গে ভিড়ে গিয়ে যারা মার খাচ্ছে তাদের পেটাই আর ফের যারা মার খাচ্ছে তাদের সঙ্গে ভিড়ে যারা মার দিচ্ছে তাদের পেটাই আমার বাইসেপ দেখছ তো আর সুযোগ পেলে পকেট ফাঁকা করে দিই হা হা সেই টাকায় খাই আর তোমাদের দিই যেমন টাকা হাতাতে পারি তেমন জায়গায় রাতটা কাটাই উত্তর দ্যায় অ আজকে তেমন ভালো হাতাতে পারোনি বলি ভালোই হাতিয়েছি কিন্তু তোমাদের গঞ্জের দর শহরের চেয়ে কম মহানগরের চেয়ে অনেক কম এই যদি তুমি শহরে ঘর নিয়ে বসতে রাতভরে অনেক ইনকাম করে নিতে পারতে তোমার ফাঁকা দিনও যায় একজনও খদ্দের পেলে না উত্তর দ্যায় হ্যাঁ কতো কতো রাত গেছে দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে দরোজায় ঘুমিয়েছি একজনও আসেনি বর্ষাকালে বড্ডো ফাঁকা যায় ব্যাবসাদাররাও আসে না গঞ্জে কেনাকাটা করতে তখন অনটন অনটন তোমার অমন দিন যায় বোধহয় যখন কিছুই হাতাতে পারো না বলি হ্যাঁ একবার এক ব্যাটার পকেটে শুধু একটা কয়েন পেয়েছিলুম দুদিকেই তিনমাথা সিংহের ছাপ আর তলায় লেখা সত্যমেব জয়তে ভেবে দ্যাখো দু-দুবার লেখা সত্যমেব জয়তে যখন একবার একদিকে থাকার কথা অথচ কয়েনটা চলল না কয়েনটা অচল নয় ডবল সচল তাই চলল না সরকারের কয়েন কারখানা থেকেই লুকিয়ে বেরিয়ে পড়েছে উত্তর দিল হ্যাঁ ঠিকেরও ভুল হয় আবার ভুলেরও ঠিক হয় তোমার হয়েছে তাই প্রণামীয়া পাটুনী কহিছে জোড় হাতে আমার সন্তান যেন থাকে দুধেভাতে তথাস্তু বলিয়া দেবী দিলা বরদান দুধেভাতে রহিবেক তোমার সন্তান দুজনে খেয়ে নিলুম আর পোশাক খুলে জড়াজড়ি করে শুয়ে পড়লুম নিজের নাম বলল শবনম খদ্দেরকুটুমরা কেউ ডাকে পাপড়ি কেউ ডাকে পায়েলি কেউ ডাকে ঝুমুর কেউ ডাকে চম্পাকলি বলল প্রেমের কাজটা সকালে করলেই ভালো তখন পুরুষেরা ষাঁড় হয়ে থাকে আমিও সকালেই চান করি নইলে এই রাতের বেলায় ধোয়াধুয়ি ভাল্লাগে না শবনমের নাক ডাকা ভালো লেগেছিল সকালে দেবদাসী গো আমি পূজারিণী গান শুনে ঘুম ভাঙতে শবনম বললে ওর শবনম ছাড়াও অনেকগুলো নাম আছে শুনে ভয় পেয়ে গেলুম একশো আট নাম হলে হ্যাঙ্গাম ওরা দক্ষিণ ভারতীয় দেবদাসী পরিবারের ওর দিদিমা পালিয়ে এসেছিল কিন্তু এসেও পালাতে পারেনি ঠিক খুঁজে বের করেছে লুঙ্গিপরা ভুঁড়িদাস ব্রাহ্মণের দল মন্দির ছেড়ে বেরোনোর ফলে আর মন্দিরে ফেরত যাওয়া গেল না গঞ্জে বদনাম করে দিয়ে চলে গেল সেই থেকে গঞ্জেই রয়েছি দেবদাসী হয়ে বামুনদের সঙ্গে শুতো এখন খদ্দেরদের সঙ্গে শোয় ভাবি শালা বামুনগুলো যাদের ছুঁতে চাইতো না অস্পৃশ্য বলে তাদের বাড়ির কচি মেয়েদের দিব্বি ভোগ করার এলেম বের করে ফেলেছিল বিছানা থেকে বিছানায় ঘোরানো যায় এমন মেয়েমানুষ ঈশ্বরের সঙ্গে বিয়ে যার মাথা থেকে বেরিয়েছিল তাকে তারিফ করতে হয় দুপায়ের ফাঁকে কুয়োর গোলাপি অন্ধকারে সাতসকালে নিজেকে হারিয়ে ফেলার পর শবনমের পায়খানায় হেগে যন্তর ধুয়ে প্যান্ট পরার সময়ে দেখলুম তোরঙ্গের ওপর গোটাকতক মলাট-ছেঁড়া বই উল্টেপাল্টে দেখি পঞ্চতন্ত্রের গল্প বত্রিশ পুতুলের উপাখ্যান মোল্লা নাসিরুদ্দিন গোপাল ভাঁড় ছোটোদের আরব্য রজনী এগুলো কে পড়ে জিগ্যেস করার সাহস হল না জানি কী উত্তর পাবো টাকা কালকেই মিটিয়ে দিয়েছি শবনমের মুখজুড়ে মুচকি হাসির নাচ জানোয়ারের মতন জিভ দিয়ে চাটবার মায়ামমতা ক’জনই বা টিকিয়ে রাখতে পারে যে যা হয়েছে সে তা চায়নি বলেই হয়েছে কপালের এক-একটা বলিরেখায় লেখা আছে এক-একটা হেরে যাবার গল্প বললুম আমি সব সার্টিফিকেট ডিগ্রি পুড়িয়ে দিয়েছি সোনার মেডেল বেচে দিয়েছি পড়ার বইপত্র সেরদরে বিক্রি করে দিয়েছি যাতে এই সমাজের কারবার থেকে বেরিয়ে যেতে পারি যাতে আমার জন্মদিনের কোনো প্রমাণ না থাকে যাতে আমার বাপ-মায়ের নাম কেউ জানতে না পারে যাতে আমার নামের কোনো লেখাজোখা কোথাও না থাকে আমি ম্যাকলেপুত্র চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) দেবদাসীদের গল্পটা জানি বৌদ্ধ সংঘের ভিক্ষুণীরা ক্রমশ হয়ে যেতে লাগল ভিক্ষুকদের সেবাদাসী তারপর রাজারাজড়াদের দেবদাসী কী আর করবে বাইরে থেকে হাজার-হাজার সৈন্য এসে ভেঙে তছনছ করে দিলে বৌদ্ধদের সংঘগুলো আর গণধর্ষণ করে ছেড়ে দিলে ভিক্ষুনীদের কিংবা ডান হাতে ঝুলিয়ে তুলে নিয়ে গেল বৌদ্ধ ভিক্ষুকরা পালালো নেপালে ভুটানে চিনে তিব্বতে রক্ষা করার কেউ নেই বৌদ্ধ মেয়েরা হিন্দু হয়ে যেতে লাগল তারা শেষে শবনম যে শবনম নয় তার নাম যে কি জানা হয়নি জেনেই বা লাভ কি এখন তো দেবদাসীদের বাজার তৈরি হয়ে গেছে খোলাবাজারের যুগে মালিকগুলো সহজে মরে না বাঞ্চোতরা চাকরবাকর পেল্লাই গাড়ি প্রাসাদ টাইপের গেটঅলা বাড়ি পাহারাদার চব্বিশ ঘণ্টা কিংবা সরকারি সান্ত্রি বাঞ্চোতদের গলায় সোনার বিস্কুটের হীরের মুক্তোর হার জেলে গিয়েও এয়ারকাণ্ডিশানে থাকে জেল থেকে বেরিয়ে দুই আঙুলে বিজয়ের ডঙ্কা দেখায় জুতোয় কখনও ধুলো লাগে না বিছানা থেকে বিছানায় বিকিনি পরা হাল আমলের ফর্সা ধবধবে জর্জি্যান রাশিয়ান লাটভিয়ান রোমানিয়ান চটচটে কুঁচকির রসে গরমগরম দেবদাসী বাঞ্চোতদের জন্যেই মারামারি দাঙ্গা রাহাজানি ফসললুঠ ডাকাতি গণধর্ষণ তাড়াতাড়া বড়োমাপের পিঙ্কি পিঙ্কি করকরে নোট কখনও শালারা দেউলিয়া হবে না গেলাসে গেলাসে ঠুংঠাং চালিয়ে যাবে একশো-দেড়শো কিলো ওজনের বেঁটে-বাঁটকুল গোরিলাহাত কানে চুল যতো বড়ো শহর ততো পেল্লাই বহরের লোভী ঘুষখোর পেটমোটা পুরুষ ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ পানিবসন্ত ফাঁকা মাঠে দাঁড়িয়ে বাপমা তুলে গালাগালি দিই বাস আসছে দেখে উঠে পড়ি বাস স্টপেজে নেমে লোকাল ট্রেনে উঠে বসি একটু পরেই কামরায় বোমা ফাটে হাওয়ায় বারুদের গন্ধের সঙ্গে মানুষের টুকরো উড়তে দেখি রক্ত হাড় হাত পা মেয়েমানুষের পুরো একটা ঠ্যাং জড়িয়ে ধরে সারাজীবন কাটিয়ে দেয়া যেতো এখন ধোঁয়ায় ধোঁয়া কান্না কাতরানি চেঁচামেচি আমার কিছু হয়নি কেন হল না ভেবে ভালোও লাগে খারাপও লাগে ওদের মতন টুকরো হয়ে উড়ে গেলে ল্যাটা চুকে যেতো কারা করেছে কালকে কাগজে বেরুবে তার আগেই জানি কারা করেছে জেনেই বা কী হবে তাদের কাজ তারা করেছে বৌদ্ধদের সংঘগুলো ভেঙে উড়িয়ে দিয়েছিল এখন ট্রেন ওড়াচ্ছে অথচ ট্রেনে ফাঁকা সিট দেখেও বসিনি হাওয়া খাবো বলে দরোজায় দাঁড়িয়েছিলুম ছিটকে পড়লুম বাইরে হাওয়া খাচ্ছিলুম ভাল্লাগে বলে একটি মৃত্যু হল শোক আর লক্ষ মৃত্যু শুধুই পরিসংখ্যান শবনম যে আসলে শবনম নয় তাকে ভালোবাসতে ভালো লেগেছিল তার চটচটে জান্তব ঔদ্ধত্যের রসের কুয়োর গভীর ভালো লেগে গিয়েছিল আসলে এটা আমার রোগ এই ভালোবাসাবাসি আর মানুষ প্যাঁদানো দুটোর মধ্যে বিশেষ পার্থক্য নেই একই কয়েনের দুই দিকে ভুল করে খোদাই হয়ে যাওয়া সত্যমেব জয়তে সত্যি করে বলো দিকিন তোমার বর কোথায় শবনম যার আসল নাম শবনম নয় বললে সে তো অনেককাল জেল খাটছে উকিল ধরার টাকা ছিল না যাবজ্জীবন জেল হয়ে গেছে বললুম জেলগুলো ছিঁচকেতে ঠাশাঠাশি বসার ওব্দি জায়গা নেই আস্ত কম্বল নিয়ে টানাটানি ছোটোজাতের গরিবের ময়লা চামড়ার মানুষের জায়গা যে ওই কোনে তা ঘাড় ধরে টের পাইয়ে দেবার প্যাঁচপয়জার যতো নিচু জাত যতো কালো চামড়া ততো বেশি জেলে ঢোকার ততো বেশিদিন ঘানি ঘোরাবার সম্ভাবনা ওখানেই পচে মরো বাইরে বের করার জ্ঞাতিদের হাতে রেস্ত নেই আর বাইরে বেরোলে মরো খালিপেটে খিদে পায় বলেছো কি পোঁয়ায় আছোলা রাজডাণ্ডা সত্যিকার অভিজ্ঞতা বলে কিছু আছে নাকি খাঁটি অভীষ্ট সম্যক উপলব্ধি সবই স্বাভাবিকতার দুঃস্বপ্ন তুমি নিজেই জানতে পারো না মাংসের কোথা দিয়ে স্বপ্নেরা ঢুকে পড়ে ঘাপটি মেরে থাকে আর গভীর রাত হলেই বেরিয়ে আসতে থাকে স্বপ্নগুলোকে যতোদিন মাংসের ভেতরে আসতে দেবে ততোদিন শ্মশানকে দূরে রাখতে পারবে জিগ্যেস করি শবনমকে যার আসল নাম শবনম নয় ছেলেপুলে নেই উত্তরে শোনায় এখনকার সব সন্তানই বেজন্মা তারা মাবাপকে ফেলে কতো তাড়াতাড়ি কেটে পড়বে তার আচারের তেল গরম করে রাখে মগজে আর কাঁচা আম দেখলেই সেই তেলে চুবিয়ে হাতে নিয়ে দৌড়োয় জানতে চায় তুমি কি কিছুই চাও না সব মুছে ফেলেছো বলি আমি চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) কি চাই তা ঠিকমতন জানি না এটুকু জানি যে কাউকে চাই না মরে যাবার আগে শেষ দুঃখের আমোদে ভুগতে চেয়েছিলুম তাও আর চাই না শহরে তিনদিনের পুরোনো বরফঘেরা ফুলে ঢাকা অলপ্পেয়ে বুড়োর চোপসানো লাশ দেখেছিলুম কি পচা গন্ধ রে বাবা তাকে হাসিমুখে গান গাইতে গাইতে পেছু নিয়েছে উড়ঞ্চড়ে ছোকরা-ছুকরিরা দলের ভোঁদড়মুখো রসিদজীবিরা বাঁদরপোঁয়া তিকড়মবাজরা চোঁচু ধড়িবাজরা র্যাডক্লিফপুত্র-পুত্রীরা যেন সংখ্যাগরিষ্ঠরাই বুদ্ধিমান শালারা যা ইচ্ছে তা চাপিয়ে দেবে তত্ব তথ্য জ্ঞান কর সুদ খাজনা জেলজরিমানা মায় পচা লাশের বোমকেওড়া বাঞ্চোতদের উচিত শবগুলোকে পচতে দেয়া যাতে তাদের শরীর থেকে সারাজীবনের দুষ্কর্মের দুর্গন্ধ হাওয়ায় দূর-দূর ছড়িয়ে পড়ে শবনম যার আসল নাম শবনম নয় বললে তুমি বেশ গুছিয়ে রাগ দেখাতে পারো বললুম প্রটেস্ট্যান্ট খ্রিস্টানদের হাতে-গড়া বেমমোদের ভাষায় কথা বলি কেমনভাবে মুখ থেকে বাক্য বেরোবে ক্রিয়া বিশেষ্য বিশেষণ অব্যয় যতি কমা কোলোন সেমিকোলন মাস্টাররা তোল্লাই দেবে সাধু সাধু ওয়াহ ওয়াহ দেখলুম তো কতো গালফুলো নেউলে এলো গেলো কথার কেরেস্তানি ফুলঝুরি জ্বেলে জেলে পচে বরটা পাগল হয়ে গেছে গো কেউ শোনার নেই কেউ চিকিচ্ছে করার নেই বললুম না কিছু মনে-মনে ভাবলুম লোকে তো পাগল আধপাগলদের ক্ষ্যাপাদের পুজো করতে চায় তাদের জীবনের অসুখের অংশ নিতে চায় বাউল দেখলে পিছু-পিছু দৌড়োয় কেঁদুলিতে গিয়ে কয়েকদিনের ফোঁকাফুঁকির আধপাগলামি সেরে নিজেদের চিলচক্কোর ভ্যানতারার আরামে ফিরে যায় পরের বছর আবার গিয়ে পার্টটাইম দামড়া পাগল সাজবে দিনকয়েকের জন্যে জয়দেবের গীতগোবিন্দ শুনলে মানে বুঝতে পারে না জিগ্যেস করে কার লেখা সত্যি বলতে মানুষ বোবা আর অক্ষরহীন হলে তার জীবন সুখের হতো অন্ধকার ব্যাপারটা সব জায়গাতেই এক নয়তো দেশে-দেশে মারামারি করছে কেন ছেলে-ছোকরারা কার জন্যে করছে যাদের জন্যে করছে তারা কি কপালে একটা বাড়তি সোনার কোলাপসিবল লিঙ্গের কিংবা প্রজাপতিডানা-যোনির অলঙ্কার বসিয়ে দেবে কোনো বাঞ্চোত হাফল্যাওড়া জানে না কেন লড়ে মরছে খুনোখুনি করে মরছে জানে না বলেই আমি চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) তাদের দলে ভিড়ে যাই মানুষ পেটাই খুনোখুনি করি আমার অতীত থাকছে না বর্তমান নেই ভবিষ্যত আসবে না ভালো যে মন্দিরগুলোর বাইরে পুরুতরা হয়ে গেছে পার্টটাইম পুরুত বই দেখে কতিয়ে-কতিয়ে মন্তর পড়ে থিয়েটার সেরে কলা বাতাসা দক্ষিণে নিয়ে কেটে পড়ে ভিতু আর পর্যটকরা ছাড়া কেউ আর মন্দিরে যায় না সেখানে পুরুতের চেয়ে মূর্তির কদর কম স্কুলে ফেল পুরুত ফুলে-ফেঁপে জলহস্তি হয়ে জীবন নষ্ট করে চালায় মন্দিরের দেবতাদের কোনো পরোয়া নেই কে মরল কে বাঁচল যারা মারছে তারা জানে কাকে মারতে হবে বাছাই করার দরকার নেই ওদের মারতে হবে জাস্ট ওদের সে যে-ই হোক স্বাধীনতার অবদান সংসদীয় স্বার্থতন্ত্রে সবাই স্বাধীন বাংলা হিন্দি তামিল তেলুগু ওড়িয়া অহমিয়া পাঞ্জাবি ফিলমের নায়কের মারের শব্দ কানে ঠমঠমঠমঠম ঢমঢমঢমঢম করে মিনিট পনেরো কি আধঘণ্টা আধাপাগলামি কেঁদুলির বদলে প্যাঁদানির মেলা লালনগীতির বদলে শিরাস্ফীতির গীতি রামভিতু বনাম শ্যামভিতু পালের গোদানি আর পালের গোদাদের দলপোকাদের পোঁদে পুতুলের চাবিকাঠি ঘুরিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে যতক্ষণ ওদের শ্বাস ততক্ষণ করো বাঁশ আত্মা বলে আর কিছু হয় না প্রতিটি মারামারির খুনিখুনির দর্শক-দূরত্ব আঁকা অদৃশ্য চকখড়ি দিয়ে পা কাঁপিয়ে বুক ধড়ফড়িয়ে বাড়ি ফিরে ঠাণ্ডা জল খেয়ে ভুলে থাকতে চাইবে পরের থিয়েটার পর্যন্ত মারামারির ঘামের হল্কা হাওয়ায় ঝুলবে বহুক্ষণ আমরা কারা আমরা ইতিহাসের ভাইরাস চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) জোকার ওরা কারা ওরা ইতিহাসের ম্যাকলেপুত্র চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) জঞ্জাল ফেলার গাদা মাথার ওপর কিলবিলে সাপের বাচ্চারা নাচে মারামারি খুনোখুনি দেখেই বোঝা যায় পৃথিবী ওদের বেজন্মা মনে করে ফেলে দিয়েছে বহুকাল আগে ভুল-ঠিকের সমস্যা নেই আমার সত্যমেব জয়তে কয়েনের মতন ভুল ভাবলে ভুল ঠিক ভাবলে ঠিক উজবুকের কাছে চালিয়ে দিতে পারি যে কয়েনের অন্য পিঠ দেখবে না শবনম যার আসল নাম শবনম নয় বলল যে ও হল শবনম ওরফে পাপড়ি ওরফে পায়েলি ওরফে ঝুমুর ওরফে চম্পাকলি জানতে চেয়েছিল শুধু মেয়েদের সঙ্গে শোও না পুরুষদের সঙ্গেও শুয়েছ ওকে বলি ব্যাপারটা ঠিক কী কতোটা আনন্দের জানার জন্যে একটা কচি কিশোরকে ফাঁসিয়ে শুয়েছিলুম কিন্তু তাতে তেমন আনন্দ নেই মনে হয় নোঙর কোথায় যে জাহাজের শেকল আটকাবে তোমার বুকে শবনম দুটো নোঙর আছে ধরে ভেসে থাকতে পারি অনেকক্ষণ শবনম ওরফে পাপড়ি ওরফে পায়েলি ওরফে ঝুমুর ওরফে চম্পাকলি বলেছিল দাপট থাকলে পয়সাকড়ি থাকলে সংখ্যাগরিষ্ঠরা তোমার দিকে তুমি না চাইলেও সেদিকে যেতে তুমি বাধ্য নয়তো সংখ্যাগরিষ্ঠরা তোমাকে কোতল করে সেই রক্ত দিয়ে ভাত মেখে তোমার বিধবা মায়ের মুখে গুঁজে দেবে তোমার দিদির হাত-পা বেঁধে তার ওপর তোমার ছোটো ভাইকে চিৎ করে শুইয়ে কুড়ুল দিয়ে মুণ্ডু উড়িয়ে দেবে যার নামকরণের উৎসব তাকে ভিয়েনের গনগনে উনোনে ফেলে পুড়িয়ে মারবে বড়দা খাটের তলায় লুকোলে তাকে বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে বের করে কুড়ুল দিয়ে মুণ্ডু আলাদা করে দেবে বাড়ির মাস্টারমশায় রান্নাঘরের পেছন দিয়ে পাঁচিল টপকে পালাতে চেষ্টা করলে তাকে টেনে নামিয়ে টাঙ্গি দিয়ে খচাখচ খচাখচ চাকরদুটো বাড়ির লোকেদের বাঁচাবার চেষ্টা করলে তাদেরও খচাখচ খচাখচ খচাখচ খচাখচ খচাখচ খুনিদের সরদার অ্যাঁড়া রায় পালিয়ে ফেরার থেকে পোঙা বোস সেজে ফিরলে আদালত থেকে কাগজপত্র হাপিস কেউই বদলায় না হেগো পোঁদে রেক্সিনের কেদারায় বসে বিলিতি হরমোন নিয়ে দোল খাবে রক্ত না দেখলে আশ মিটবে না মনে হাহাকারের গর্ত তৈরি হবে যারা নিপিত্তে যুবক তারা মারামারি খুনোখুনি করে মরবে আর যদি বেশিদিন বেঁচে থাকতে পারে তাহলে বড়ো হয়ে যেতে-যেতে গদাইলস্কর বুড়ো হয়ে খাবলা মেরে-মেরে মাখন খাবে পোঁদের বিশাল কুয়োয় সোনাদানা গুঁজবে মরবার দুন্দুভি-নাকাড়া হয় না আলতো ফিকে শিস হয় খেল খতম জীবন হজম ধর্মে সইবে না মানে কোন ধর্ম জানেন না আপন মতামত ও লক্ষ্য গোপন রাখতে তারা ঘৃণা বোধ করে তারা খোলাখুলি ঘোষণা করে যে তাদের অভীষ্ট অর্জিত হতে পারে কেবল সমস্ত বিদ্যমান সামাজিক অবস্হার হিংস্র উচ্ছেদ ঘটিয়ে তাদের বিপ্লবের আতঙ্কে শাসক শ্রেণিরা কাঁপুক উড়ালপুল ধ্বসে পড়ে ধড়াম হাসপাতালে আগুন লাগে দাউদাউ কুকুরে কুকুরে মারামারি কথাকাটাকাটি ঘেউঘেউ শবনম যার আসল নাম শবনম ওরফে পাপড়ি ওরফে পায়েলি ওরফে ঝুমুর ওরফে চম্পাকলি জানতে চায় তুমি কি কোনো কুমারী মেয়ের কুমারীত্ব যাবার মুহূর্তের আতঙ্কের সঙ্গে পরিচিত হয়েছ কখনও আমি ওকে বলি তা করলে ওখানেই সংলাপ ফুরিয়ে নটে গাছটি মুড়িয়ে যেতো আর শরীরের ভেতরে যে শব লুকিয়ে থাকে সেও তোমার সঙ্গে বড়ো হয় বুড়ো হয় মুখ জুড়ে নানা বোকামির ছাপ গজাতে থাকে এই যে তোমার সঙ্গে একখানা কুইকি সেক্স করলুম এটা কি কোথাও নিয়ে গেল যায় না এই সেক্স কোথাও নিয়ে যায় না এর কোনো উদ্দেশ্য নেই প্রকৃতি তো এইভাবে শোবার জন্যে লিঙ্গ-যোনি বানায়নি কুকুর বেড়াল বাঘ সিংহ ছাগল ভেড়ার যে জন্যে বানিয়েছে আমার আর তোমারও সেই জন্যেই বানিয়েছিল আমরা একে উদ্দেশ্যহীন করে ফেলতে শিখে গেছি যাবতীয় উদ্দেশ্যহীনতায় আমরা আনন্দ পাই খুনোখুনি হোক মারামারি হোক যুদ্ধ হোক আণবিক বোমা হোক কার্পেটবোমা হোক তুমি কবে থেকে মরা আরম্ভ করেছো তা তুমি গোপনে জানো সকলেই জানে কিন্তু না-জানার ভান করে রক্ত দিয়ে মাখা ভাত মুখে গুঁজে দেবার পর বিধবা বুড়ি পাগল হয়ে গিয়েছিল কিন্তু কেঁদুলির পাগলদের থেকে সে পাগলামি আলাদা তা মাত্র কয়েকদিনের আমোদের জন্যে নয় কৃমি ক্যানসার বা যক্ষ্মার মতন শরীরে দুষ্কর্মের দানবকে ঢুকতে দিতে হবে যার কাছে কুকাজ আর মঙ্গলময় কাজের পার্থক্য নেই সে পাথরের ক্ষয়ে-যাওয়া স্ফিংকসের থাবা গেড়ে ফ্যালফ্যালিয়ে চেয়ে থাকবে আপন ছুরাতে আদম গড়লেন দয়াময় তা নইলে কি ফেরেস্তারে সেজদা দিতে কয় শবনম যার আসল নাম শবনম ওরফে পাপড়ি ওরফে পায়েলি ওরফে ঝুমুর ওরফে চম্পাকলি বলে ওঠে তোমার কথা বুঝছি না কিন্তু শুনতে বেশ ভালো লাগছে আমি ওকে বলি ঘেন্না করাও কি ভালোবাসা নয় তুমি টাকা হাতে করে নিতে চাও যারা তোমার কাছে আসে লজ্জায় টাকাটা তোমার টেবিলে তোরঙ্গের ওপর রেখে দিতে চায় তোমার কাছে তা চলবে না অচল নকল পাকিস্তানে ছাপানো টাকা গছিয়ে কেটে পড়তে পারে তুমি বললে হ্যাঁ অমন হয়েছে একবার তাছাড়া কাউকে তো বিশ্বাস করি না আসল টাকার দাম মা লক্ষ্মীর চেয়েও বেশি কখনও অবহেলা করে না বলি হ্যাঁ আর কচি যুবক হওয়া তো যাবে না নিজের দুরবস্হাকে তাই ভালোবাসি টাকা তো দুজনের মাঝের সম্পর্ক গড়ে তোলে মালিক আর মালকিনির সম্পর্ক শরীরের মালিক আর শরীরের মালকিনি শবনম যার নাম শবনম ওরফে পাপড়ি ওরফে পায়েলি ওরফে ঝুমুর ওরফে চম্পাকলি পরকীয়া যার পুরুষ নেই বলে ওঠে বলো বলো থামলে কেন বেশ ভাল্লাগছে গপ্পোগুলো আমি বলি বর্ষাকালে যখন বৃষ্টি নেই বাবু খুন হলেন দুই রাস্তার মোড়ে পালের গোদিরা বললে ওরা মেরেছে পালের গোদারা বললে এরা মেরেছে ব্যাস লেগে গেল মারিকাটারি মোহে জানা ইয়ে আঁখিয়া কিসিসে মিলানা না পাবলিক ক্ষেপে গিয়ে খুনেদের মেরে ভাসিয়ে দিলে গঙ্গায় এ আবার কেমন পাবলিক রে বাবা ওদের হাতে পুলিসের রিভলভার শ্মশানের পাশ দিয়ে তেড়ে আসছে তারা ভয়ে লুকোতে হয় গিয়ে শ্মশানের লাগোয়া নৌকোর ছইয়ে যাদের ওরা পায়নি তাদের বাবা কাকা দাদার গায়ে পেটরল ঢেলে পোড়ানো হল তখন পেটরল ছিল দেড় টাকা লিটার কি আর করা যাবে ডেডবডিদের মুখময় আলকাৎরা মাখিয়ে পরিচয় মুছে দিয়েছিল আর ঠেলা বোঝাই করে মাঝগঙ্গায় ঝুপাঝুপঝুপাঝুপ পরিচয় হাপিশ নো আইডেনটিটি প্রবলেম কখন যে কার গুহ্যের সিংদরোজা দিয়ে মেফিসটোফিলিস ঢুকে যায় কে-ই বা টের পায় সে ভাবে কৃমি বলে পোঁদ কুটকুট করছে শবনম যার আসল নাম শবনম ওরফে পাপড়ি ওরফে পায়েলি ওরফে ঝুমুর ওরফে চম্পাকলি যে পরকীয়া অথচ যার পুরুষ নেই তাকে বলি এতো গল্প শোনাচ্ছি তোমায় আরেক রাত থাকতে দিতে হবে আঠায় ভালো করে আঠা মেশানো হয়ে ওঠেনি রাজি রাজি রাজি রাজি রেস্তটা কিন্তু দিয়ে যেও গো নইলে খাবো কি বলো হ্যাঁ আমি তো ছন্নছাড়া ভবঘুরে বেদে যাযাবর বোহিমিয়ার নাগরিক চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) মন্দপন্হী প্রতিকূলবাদী পরক বহিরাগত বেমানান অস্বভাবী স্বেচ্ছা-নির্বাসিত নৃসংস জঘন্য অসহ্য দানবিক অপদেবতার-অধিপতি লাগামছেঁড়া অশিষ্ট রূঢ় অমার্জিত জিনপুরুষ লোচ্চা লাফাংগা লম্পট বহুগামী প্রেতাত্মা নরকাগ্নি মাংসাশী খলনায়ক অন্ধকারের রাজপুত্র আমি একজন চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) যে লোকটা আসলে অপরাধী হবার আনন্দে ভোগে মগজ থেকে চার্বাক লোকটা বেরিয়ে গিয়ে তাকে আত্মনিয়ন্ত্রণহীন করে দিয়েছে সে তার আত্মপরিচয় মুছে ফেলেছে তার অপরাধবোধ লজ্জাবোধ আচরণের নিয়ম লোপাট হয়ে গেছে যুক্তিতর্ক কানে যায় না সে ভাবে কেউ তার কাজকারবার দেখছে না কেননা সকলেই একই কাজ করে চলেছে সমাজের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়ে সে জেলখানায় বন্ধ ভুলে-যাওয়া কয়েদিদের মতন হয়ে গেছে তার চেহারা টিংটিঙে হলেও সে আক্রমণাত্মক হয়ে কেন অবরোধ করছে রেললাইন ওপড়াচ্ছে দলবেঁধে মানুষ পেটাচ্ছে খুন করে মাটির তলায় পুঁতে দিচ্ছে যানবাহন পোড়াচ্ছে কাদের দিকে পাথর ছুঁড়ছে তা ভেবে দেখার মতন একাকীত্ব সে হারিয়ে ফ্যালে দশ থেকে কুড়ি থেকে পঞ্চাশ থেকে একশো থেকে হাজারজন হয়ে সে আক্রান্ত হয় টিরিনচাগার ছোঁয়াচে রোগে সে টের পায় না আবেগ তাকে বুদ্ধিভ্রষ্ট করে দিয়েছে তার সমবেদনা তখন প্রাগৈতিহাসিক ঠিক যেমন যৌনসম্পর্কের প্রয়োজনীয়তার বোধ চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং ) একজোট হয়ে যতো সংখ্যা বাড়ে ততো রোগ ছড়ায় তখন সে অনুভূতিশূন্য উত্তেজিত অস্হিরসংকল্প ম্যাকলেপুত্র চার্বাক টিরিনচাগা ( বংপুং)-এর মধ্যে এই বিষবীজ রয়ে গেছে যুগযুগ ধরে শবনম যার আসল নাম শবনম ওরফে পাপড়ি ওরফে পায়েলি ওরফে ঝুমুর ওরফে চম্পাকলি যে পরকীয়া অথচ আমিই এখন তার পরপুরুষ আমার নাম জানতে চাইলে বলি আমার নামেও এরা-ওরা আছে চণ্ডীদাসের মতন দ্বিজ না বড়ু যে নাম তোমার পছন্দ শুনে শবনম গেয়ে ওঠে এমন পিরীতি কভু দেখি নাই শুনি পরাণে পরাণ বাঁধা আপনা আপনি দুহুঁ কোরে দুহুঁ কারে বিচ্ছেদ ভাবিয়া তিল আধ না দেখিলে যায় না মরিয়া জল বিনু মীন জনু কবহুঁ না জিয়ে মানুষে এমন প্রেম কোথা না শুনিয়ে দুগ্ধে আর জলে প্রেম কিছু নাহি স্হির উথলি উঠলি দুগ্ধ জল পাইলে ধীর ভানি কমল বলি সেহ হেন নহে হিমে কমল মরে ভানু সুখে রহে চাতক জলদ কহি সে নহে তুলনা সময় নহিলে সে না দেয় এক কণা কুসুমে মধুপ কহি সেহ নাহি তুল না আইলে ভ্রমর আপনি না যায় ফুল কি ছার চকোর চাঁদ দুহুঁ সম নহে ত্রিভূবনে হেন নাহি চণ্ডীদাস কহে আমি বলি ফাঁদে পোড়ো না শেখ নিজাম রসুল বক্স সবুর শেখ শেখ সালামত হরাই শেখ সরণ মিটি সফিকুল শেখ শেখ শফিক আশরাফ শেখ সাইফুর শেখ শেখ আসি হোসেন অজয় আর ময়ূরাক্ষীর মাঝে পঞ্চায়েত আর বালিঘাটের দখল যার তার হাতে অঢেল কাঁচা টাকা ধানচালের আড়তদারি দখলের লড়াই গরিবকে লেলিয়ে দাও গরিবের বিরুদ্ধে বাড়ি পোড়াও বোমা মারো গুলি চালাও টাঙ্গি বল্লম কুড়ুল চালাও খচাখচ খচাখচ খচাখচ আমি কখনও পালের গোদানির দলে কখনও পালের গোদাদের দলে যারা মারামারি খুনোখুনি করে জেতে তাদের দলে দেখছো তো চার্বাক টিরিনচাগার নামও সেই বৈষ্ণব কবির মতন ধোঁয়াটে কয়েনের দুদিকেই তিন সিংহ আর সত্যমেব জয়তে শবনম যার আসল নাম শবনম ওরফে পাপড়ি ওরফে পায়েলি ওরফে ঝুমুর ওরফে চম্পাকলি যার পরকীয় পুরুষ আমি সেই শবনম বলে ওঠে প্রেম তো ধোঁয়াটেই কখনও টাকা দিয়ে কখনও সংসারের জাঁতিকলে বেঁধে তাহলে আরেকটা গান শোনাই তোমাকে কী মোহিনী জান বঁধু কী মোহিনী জান অবলার পপাণ নিতে নাই তোমা হেন ঘর কৈনু বাহির বাহির কৈনু ঘর পর কৈনু আপন আপন কৈনু পর রাতি কৈনু দিবস দিবস কৈনু রাতি বুঝিতে নারিনু বঁধু তোমার পিরীতি আমি বললুম চণ্ডীদাস ছিলেন নানুরের সেই জায়গায় গিয়ে মনে হয়নি যে এখানে মানুষ-মানুষীর প্রেম সম্ভব হয়েছিল একদিন কখনও বোমাবারুদের আঁতুড়ঘরে বাসস্ট্যাণ্ডের পাশে তেরাস্তার মোড়ে রামী-চণ্ডীদাসের গ্রিলে ঘেরা সোনালি মূর্তি দোলের সময় পরিষ্কার হয় অন্য সময়ে প্লাসটিকের কাপ চাউ-লুচি খাওয়া ফাইবার থালা বিধবা ধোপানির কাপড় কাচার পাটা তুলে রাখতে হয়েছে নয়তো পালের গোদানির দল আর পালের গোদাদের দল কুড়ুল টাঙ্গি বল্লম বর্শা শান দিতো পাথরে নবাবের কামানের গোলায় উড়ে গিয়েছিল চণ্ডীদাস তখন গান গাইছিল মন্দিরের চাতালে দাঁড়িয়ে উনিশজন মার্গীর গায়ে পেটরল ঢেলে কসবার বিজন সেতুর ওপরে পুড়িয়ে মারা হল তদন্তকারী অফিসার গঙ্গাধরকে পেছনের সিটে বসে উড়িয়ে দিলে বাঁটকুল গুড়ুম গুড়ুম গুড়ুম গুড়ুম রামী একটি মৃত্যু হল শোক আর লক্ষ মৃত্যু শুধুই পরিসংখ্যান কোথায় রামী কোথায় রামী শুন রজকিনী রামী ও-দুটি চরণ শীতল জানিয়া শরণ লইনু আমি এক নিবেদন করি পুনঃ পুনঃ শুন রজকিনী রামী শবনম যার আসল নাম শবনম নয় যার পরকীয় নেই তবু পরকীয়া সেজে সিঁদুর শাঁখা পলা নোয়ায় পাতলা কোমর ফর্সা কোঁকড়া চুল বড়ো-বড়ো চোখ ছোট্ট ঠোঁট চিৎকার করে ওঠে পায়ে হাত দিও না দিও না দিও না আমি রামী নই তুমি চণ্ডীদাস নও বলি কী যে করি আমার শরীরে কয়েকজন চণ্ডীদাস ঢুকে উড়ে বেড়াচ্ছে হাত দিইনি তো ঠোঁট দিচ্ছি আমি সারা শরীরে ঠোঁট বুলিয়ে ভালোবাসাকে পা থেকে চুমু দিয়ে দিয়ে ওপর দিকে নিয়ে যাই দ্যাখো তাতে তুমি কেমন করে রসে ভিজে যাও আর সেখানে আমি মুখ দিয়ে জিভ দিয়ে ভালোবাসাকে ছড়িয়ে দিই তোমার সারা শরীরে তোমার কেন কাঁটা দিতে আরম্ভ করবে অনুভব করতে থেকো শবনম যার আসল নাম রামী নয় গেয়ে ওঠে নিজের লেখা হাজার বছর আগের গান চিৎ হয়ে শুয়ে শবনম যার আসল নাম রামী নয় মিহিমিহি গুনগুন করে কি কহিব বঁধু হে বলিতে না জুয়ায় কাঁদিয়া কহিতে পোড়ামুখে হাসি পায় অনুমুখ মিনসেগুলোর কিবা বুকের পাটা দেবীপূজা বন্ধ করে কুলে দেয় বাটা দুঃখের কধা কইতে গেলে প্রাণ কেঁদে ওঠে মুখ ফুটে না বলতে পারি মরি বুক ফেটে ঢাক পিটিয়ে সহজবাদ গ্রামে গ্রামে দেয় হে চক্ষে না দেখে মিছে কলঙ্ক রটায় হে ঢাক ঢোলে যে সুজন নিন্দা করে ঝঞ্ঝনা পড়ুক তার মস্তক উপরে অবিচারপুরী দেশে আর না রহিব যে দেশে পাষণ্ড নাই সেই দেশে যাব বাশুলী দেবীর যদি কৃপাদৃষ্টি হয় মিছে কথা সেঁচা জল কতক্ষণ রয় আপনার নাক কাটি পরে বলে বোঁচা সে ভয় করে না রামী নিজে আছে সাঁচা শবনম যার আসল নাম শবনম সে রামীর শরীর থেকে বেরিয়ে আসে স্ফূরিতদেহে একটু একটু করে ভেসে উঠতে থাকে আমি শবনমের যোনির কাছে পোঁছে থমকে যাই সেখানে তিল দেখে মনে হয় একে তো চিনি দেখেছি কোথাও আমার ঠোঁট ওপরে উঠতে থাকে নাভিতে পৌঁছোয় আমি সেই সুগন্ধ পাই একে তো আমি চিনি আমার ঠোঁট আরও ওপরে ওঠে দুই বুকের মাঝখানে থমকে যায় এই সুগন্ধ তো আমি চিনি দুই হাতে নিয়ে আমার ঠোঁট আরও ওপরে উঠে শবনমের ঠোঁটের সঙ্গে মেশে এই লালা তো আমি চিনি সকালে কেন চিনতে পারিনি আমি একে বাঁচিয়েছিলুম গণধর্ষকদের হাত থেকে মনে পড়ছে মনে পড়ছে মনে পড়ছে মনে পড়ছে এই সুগন্ধ তো সেই বীরাঙ্গনার যাকে ভালোবেসেছিলুম বহুকাল আগে যে হারিয়ে গিয়েছিল যাকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যৌনক্রীতদাসী করে রেখেছিল অপারেশান সার্চলাইটের সময়ে দিনের পর দিন কতোজন পাকিস্তানি যে ওকে ধর্ষণ করেছিল তার ইয়ত্তা নেই ওর দাদাকে কোতল করে তার রক্ত ভাতে মেখে মাকে জোর করে খাইয়েছিল মা সেই থেকে পাগল হয়ে ঘুরে বেড়ায় দেশ থেকে দেশে পাঁচ ভাই এক বোন বিধবা মায়ের সংসার সেদিন ছিল বাচ্চার নামকরণের উৎসব দোলযাত্রা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পাঠানো আল বদরের খুনেরা বাড়ির দরোজা ভেঙে বড়ো ভাইকে খাটের তলা থেকে বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে টেনে বের করে এনে কোতল করেছিল বাড়ির মাস্টারমশায় রান্নাঘরের পেছনের দেয়াল টপকে পালাতে গেলে তাকে টেনে নামিয়ে কুপিয়ে টুকরো করে নেচেছিল তিন মাসের বাচ্চাকে উনোনে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল খুনি অ্যাঁড়া খান নাম ভাঁড়িয়ে পোঁঙা মনসুর সেজে ফিরেছিল অনেকদিন ওদের কাগজপত্র আদালতে পৌঁছোয়নি কতো কতো বছর কতো কতো বছর শবনম যার আসল নাম শবনম ওরফে পাপড়ি ওরফে পায়েলি ওরফে ঝুমুর ওরফে চম্পাকলি কিন্তু যার নাম বীরাঙ্গনা তার সুগন্ধ আমি ঠিক চিনেছি সে নিজের খোঁপা খুলে গলায় চুল জড়িয়ে আত্মহত্যা করেছিল দু-লাখ তিন-লাখ চার-লাখ কিন্তু ইয়াহিয়া খানের মাকে রক্তমাখা ভাত খাওয়ানি কেউ টিক্কা খানের মাকে রক্তমাখা ভাত খাওয়ানি কেউ রাও ফরমান আলির মাকে রক্তমাখা ভাত খাওয়ানি কেউ গ্যারিসনের সামনে দিয়ে যদি গেছো তো তোমায় নুনু দেখিয়ে প্রমাণ করতে হবে নুনুর খোসা দেখলেই হানাদার কেউটেদের মুখে তেলে ফোড়ন ছাড়ার ছ্যাঁকছেঁকে হাসি প্যান্টুল খুলে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ো তোমার পোঁদ মেরে মোড়ক উন্মোচন করবে গ্যারিসন কমাণ্ডার তার পরে একে-একে পায়ুপিপাসীরা তা তাদের আধুলিনুনু হোক পাতলাপতন হোক মাইপোষ্য মরদ হোক চিল্লিয়ে শোনানো যাবে না কাউকে ড্যাঙডেঙিয়ে ক্যাচাল-প্যাঁচাল মেরে কাদাখোঁচারা কাদায় পুঁতবে আর এদিকে আতোয়াঁ আর্তোর থিয়েটার অব দি অ্যাবসার্ডের খলনায়কের উক্তি ডলবি ডিজিটালে গরগরিয়ে চিল্লিয়ে আমি প্রচুর মাস্তানি করেছি আমি পকেটে মাল নিয়ে ঘুরি নিজে রিভরবার দিয়ে গুলি করে চলে যাব ওদের গুলি করে মারব আমার মা বোন বাবা বাচ্চা কারো গায়ে যদি হাত পড়ে আমি ছেড়ে কথা বলব না বাড়ি-বাড়ি ছেলে পাঠিয়ে রেপ করিয়ে দেবো আমাদের কারো গায়ে যদি ওদের কেউ হাত দেয় তাদের গুষ্টি শেষ করে দেব বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেব শবনম যার সত্যিকার নাম এখনও বুঝে উঠতে পারিনি আমার দীর্ঘপতনের মাঝে জিগ্যেস করে তোমার গল্পে জোকার নেই সেই যেমন সার্কাসে দেখেছি ছোটোবেলায় ওকে বলি আছে তো সার্কাসের নয় থিয়েটারের যার নাম ফলস্টাফ সে একদিন বলছিল ওরা আবার চুনোপুঁটির মতন লাফিয়ে বেড়াচ্ছে আমরা জানি চ্যাং-চিঙুড়ি মাছের মতন ওদের লাফাবার দরকার নেই ওই চ্যাং-চিঙুড়ি মাছকে ঢেলিয়ে মেরে দিতে বলব যাতে ওরা আর লাফাতে না পারে ওরা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে হুঁশিয়ারি দিয়ে গেলাম রাজনীতি করতে হয় রাজনীতির মতন করো পিছন থেকে ঢেলা মারলে তীর ছুঁড়ে মারব বুকে শবনম যার আসল নামও হয়তো শবনম হাসতে থাকে খিলখিলিয়ে আর সেই সঙ্গে আমাদের দুজনের অর্গাজম একই সঙ্গে ঘটে আমরা পাশাপাশি পোশাকহীন শুয়ে থাকি ভিকিরির দাঁতকিড়মিড়ের মতন হল প্রেম খিদে পেলে প্রেম পায় না খিদে পেলে কোনো লণ্ডজ্ঞান কাজে লাগে না শবনম যার আসল নাম শবনম না হলেই বা কি এখন থেকে শবনমকে নাম ধরে ডাকার দরকার হয়তো নেই আমার নাম শবনম জানে না কিই বা হবে জানিয়ে শবনম বলে ওঠে পাশে চিৎ হয়ে শুয়ে তুমি আমার কাছেই থেকে যাও আমি জিগ্যেস করি দালাল হয়ে শবনম বলে না গো না তুমি আমার খোলা-বর হয়ে থেকে যাও খোলা-বর জানোতো খোলা-বর হল যারা অন্য কারোর সঙ্গে শুতে পারবে যেদিন তোমার মারামারি জুটবে না কারোর পকেট হাতড়াতে পারবে না সেদিন আমি খদ্দেরের সঙ্গে শোবো যাতে দুজনে দুমুঠো মুখে দিতে পারি আমার একজন দেখাশোনার লোকও হবে আমার সঙ্গে শুয়ে-শুয়ে তোমার মন কোনো দিন ভরে গেলে তুমি অন্য কারোর সঙ্গে গিয়ে শুয়ো আমি সে-খরচটা দিয়ে দেব যদি তোমার কাছে রেস্ত না থাকে আমার একজন পুরুষ মানুষ খুবই দরকার কাছেপিঠে থাকবে খেয়াল রাখবে তোমারও তো একজন মেয়েমানুষের দরকার যে তোমার খেয়াল রাখবে মারামারি খুনোখুনিতে যদি চোট-জখম পাও তাহলে সে তোমার সেবা-শুশ্রুষা করবে আমি বলি খোলা-বিয়ে এই শুনলুম আগে তো শুনিনি শবনম বলল তাহলে রাজি তো আমি বললুম হ্যাঁ কিছুদিন চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে এই হাফবাঁধন চলবে কিনা শবনম বলল তাহলে ওই ঘটনাটা বলো সেই যে একজন ছাত্রী বাড়ি ফিরছিল আটবিঘায় তাকে অনেকে মিলে ধর্ষণ করে খুন করেছিল কোনো বন্ধ কারখানায় নিয়ে গিয়ে সেই কারখানা বন্ধ করে দিয়েছিল ইনকেলাব জিন্দাবাদের দল আমি বললুম কোথায় শুনলে শবনম বলল খদ্দেরের মুখে খদ্দেররা তো মুখ বুজে নিজের কাজ করে চলে যায় তাদের সঙ্গে কথা বলার সম্পর্কে গড়ে ওঠে না যেটুকু হয় তা দরদস্তুর আমি বললুম সেই কাণ্ডে তো তিনজনের ফাঁসি আর তিনজনের যাবজ্জীবনের হুকুম হয়ে গেছে মেয়েটা দুপুরে কলেজ থেকে হেঁটে ফেরার সময়ে তাকে তুলে নিয়ে যায় দলটা দলের পাণ্ডা ছিল ওই কারখানার কেয়ারটেকার সবাই নিলে একে একে মেয়েটাকে ধর্ষণ করে প্রমাণ লোপাটের জন্য পা চিরে মেরে ফেলেছিল জজ বলেছে নির্যাতিতাকে বশে আনতে পরিকল্পিতভাবে কাজ করেছে অপরাধীরা ব্যক্তিগত কারণে নয় এলাকার লোকেদের সন্ত্রস্ত করতেই এই অপরাধ সংগঠিত করা হয়েছে এখান থেকেই এই অপরাধের সমাজবিরোধী চেষ্টা স্পষ্ট নির্যাতিতার গোপনাঙ্গে আঘাত এমনই যে স্পষ্ট হয় তার সঙ্গে জোর জবরদস্তি করে নৃশংসভাবে যৌনসংসর্গ করা হয়েছে এই মেয়েটির উপরে যারা এধরণের জঘন্য অপরাধ করেছে তাদের এই মর্মে কড়া বার্তা দেয়া জরুরি যে এ ধরণের অপরাধ করে পার পাওয়া যাবে না শবনম দীর্ঘশ্বাস ফেলে শ্বাসের সঙ্গে কথা মিশিয়ে বলে ওঠে আগেও যদি এরকম কড়াকড়ি থাকতো তাহলে আমাকে এই লাইনে আসতে হতো না আমি বলি এখন তো তোমার আর আমার খোলা বিয়ে হয়ে গেছে তোমার লাইন তো অমন নেই আমাদের দুজনেরই কোনো লাইন নেই শবনম যার নাম শবনম না হলেও আর কিছু যায় আসে না তার খোলা-বিয়ে ব্যাপারটা যতোটা বুঝতে পারলুম তা হলো অন্তর্নিহিত অবিশ্বাসকে প্রশ্রয় দিয়ে আচার আচরণ সীমাকে ভেঙে ফেলতে হবে আর যাকে লোকে বলে বিকৃত জীবনাচরণ তাকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে অবাধ যৌনতার মাধ্যমে মুছে ফেলতে হবে আত্মপরিচিতি দেশীয় কৃষ্টি-সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে পড়ে ঢুকে যেতে হবে অশ্লীল বিকৃত আর নৈতিক মূল্যবোধ বিবর্জিত অন্ধকার জগতে সেই নিকষ কালো আঁধারে পাওয়া যাবে চূড়ান্ত বস্তুবাদ ভোগবাদ স্বেচ্ছাচারিতার শেষপ্রান্ত যা দেবে ধ্বংসের আনন্দ জীবনকে করে তুলবে উদ্দাম বল্গাহীন শরীরের আকূলতা নিয়ে যাবে অপারমুক্তির আগুনে বেদাচার শাস্ত্রাচার লোকাচারের জেল ভেঙে বেদ কোরান বাইবেল ত্রিপিটক গ্রন্হসাহেব জেন্দাভেস্তা মন্দির গির্জা মসজিদ এজিয়ারি সিনাগগ যাগযজ্ঞ ধর্মাধর্ম কিছুই আমাদের নয় আমরা অভেদের সন্ধানী প্রতিবারে মুহূর্মুহু যৌনসম্পর্কে ভুলিয়ে দেবে পূর্বস্মৃতির নষ্টামি আর জানা যাবে যে ব্যক্তিস্বরূপের সঙ্গে জগতের সম্পর্কেই আছে সত্য এক হোক বা অনেক সত্য যদিও শবনম যার নাম শবনম ওরফে পাপড়ি ওরফে পায়েলি ওরফে ঝুমুর ওরফে চম্পাকলি নিজের মতো করে বলেছিল খোলা-বিয়ের কথাগুলো আমি তাকে নিজের মতন করে বুঝে নিলুম বোঝাবার সময়ে শবনম আমার ধাতুরসে-চানকরা লিঙ্গ ধরে রেখেছিল যাতে ওর বক্তব্য আমার দেহে উজান-ভেটেল খেতে-খেতে ছড়িয়ে পড়ে আমিও আমার হাত রেখেছিলুম ওর ভিজে আপাত-শান্ত লাবিয়ার কুঁড়িতে আমি বললুম সৌন্দর্য কাকে বলে জানো সৌন্দর্য হল আমার কল্পনার ওপর তোমার অধিকার যে মেয়ে আমাকে অবিমিশ্র বিজয়ের আহ্লাদ দিতে পারে অনেক মেয়ের ব্যক্তিত্ব ভালো লেগেছে কিন্তু দেহকাঠামো পছন্দ হয়নি তখন মনে পাপবোধ জড়ো হয়ে যেতো অনেকে আবেগের খুঁটি সামলে দিয়েছে কিন্তু তারা কেবল মাই আর পাছার মাপের জোরে নোঙর ফেলতে চেয়েছে শবনম জানতে চায় তোমার কেমন মেয়েমানুষ পছন্দ আমি বলি শহরের সব মেয়েই প্রায় একরকম হয় পথে ঘাটে রাস্তায় বাজারে কিংবা রেড লাইট এরিয়ায় কেননা যারা রেড লাইট এরিয়ায় থাকে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে হয় শহরের সাধারণ মেয়েদের সঙ্গে শহরের মেয়েরা আজকাল সকলেই আকর্ষণীয় যদিও কাউকেই ট্রফি-টাইপ বলা যায় না তারা শরীরের খেয়াল রাখে খাওয়া দাওয়ার খেয়াল রাখে চাকরির খেয়াল রাখে রোজগারের খেয়াল রাখে তাদের প্রত্যেককেই একে আরেকজনের মাঝে আলাদা মনে হলেও তারা আসলে আলাদা নয় সকলেই থ্রেডিং ওয়াক্সিং ফেশিয়াল ম্যানিকিওর পেডিকিওর চুলসোজা চুলের রঙ করিয়ে হাতে স্মার্টফোন কানে হিন্দি-ইংরেজি গান আঙুলে নানা আঙটি লেগিংস নাইক প্যান্ট চানকরার বিশেষ সাবান বডি ডেওডোরেন্ট বিশেষ শ্যাম্পু টাইট ব্রা কিংবা ব্রাহীন টুইটার ফেসবুক এমোজি ইন্সটাগ্রাম ব্র্যাণ্ডেড ব্যাগ সব মিলিয়ে নতুন ধরণের আকর্ষণের খেলা খেলে তাদের থেকে গ্রামের গঞ্জের মেয়েরা আলাদা হয় সেখানেও রেডলাইট এলাকার মেয়েরা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগীতা করে যাতে পুরুষদের সংসার থেকে টেনে আনতে পারে শাড়ি বা চুড়িদার তেলতেলে মুখ সাধারণ বিজ্ঞাপিত সাবান পাউডার ক্রিম শ্যাম্পু চটি স্যান্ডাল কাঁধব্যাগ চুল সোজা হলে সোজা কোঁকড়া হলে কোঁকড়া খোঁপা চুলে কখনও তেল সস্তা স্মার্টফোন শুনতে শুনতে শবনম বলে ওঠে তুমি নেশা করো আমার কাছে বাংলা মদের বোতল আছে পাতা আছে চরস আছে আমি বলি আমি সব নেশাই করি তোমাকে একদিন কোকেন ব্রাউন শুগার মেয়াউ-মেয়াউ হেরোয়িন হ্যাশিশের নেশা করাবো এখন মদের নেশাই করা যাক দুজনে মিলে একটা বোতল খালি করি নিজেদের পুরোনো লাগামছেঁড়া কাসুন্দি ঘাঁটি খুনোখুনির ইচ্ছে আর পাগল হয়ে গারদে বহু পাগলের সঙ্গে বসবাস এগুলো আমাদের ভেতরে লুকিয়ে থাকে অনেকে পাগলাগারদটাকেই মনে করে সমাজ কাজের বউকে চিনতে না পেরে দিদিমনি বলে ডাকে কেননা সে নিজেও আসলে সমাজটার কেনা গোলাম যতোটা মদ খেলে নিজেকে সামলাতে পারো তার চেয়ে বেশি খেয়ে ফেললে তোমার মুখ দিয়ে ভাষার কুয়াশা বেরোতে শুরু করে যা তোমার পাশে বসে আরেকজন মাতাল বুঝতে পারে না গো ওই কুয়াশা যেন পরীর দেশ যতোক্ষণ তুমি মাতাল ততক্ষণ ওই পরীর দেশের মতন আর দেশ নেই শবনমের ওরফে পাপড়ির ওরফে পায়েলির ওরফে ঝুমুরের ওরফে চম্পাকলির একটু আগে গাওয়া গান আমার ভিড়মানুষ একাকীত্বকে অন্ধকারময় করে তোলে আমার আত্মা নেই সেই ফাঁকা জায়গাকার সঙ্গীত সময়কে হারিয়ে দিচ্ছে বুঝতে পারছি আমাকে অদৃশ্য করে তুলতে চাইছে আঘাতপাওয়া চোটখাওয়া শিরায় বয়ে চলেছে গানের আহ্লাদ যা প্রতিটি রোমকূপ দিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে আমার চারিধারে ভেদি বর্ম চর্ম দেহ বহিল প্লাবনে শোণিত পড়িল রক্ষোনরকুলরথী পড়িল কুঞ্জরপুঞ্জ নিকুঞ্জে যেমতি পত্র প্রভঞ্জন বলে পড়িল নিনাদি বাজীরাজী রণভূমি পুরিল ভৈরবে ছাদের অ্যাসবেসটসের ওপর বৃষ্টির টুপটাপ শুনে শবনমকে ওরফে পাপড়িকে ওরফে পায়েলিকে ওরফে ঝুমুরকে ওরফে চম্পাকলিকে বলি তোমার কেবল শাড়ি ব্লাউজই আছে না চুড়িদারও পরো শবনম বলে রোজ-রোজ শাড়ি পরে তো সব খদ্দের ধরা যায় না অনেক খদ্দের নিজে হাতে চুড়িদারে দড়ির গিঁট খুলতে চায় বউকে তো বাড়িতে শাড়ি-সিঁদুর-শাঁখায় দেখছেই তাই অন্য রকম সাজি আমি বলি তাহলে চুড়িদার পরে নাও সিঁদুর মুছে শাঁখা-পলা খুলে রাখো চলো দুজনে মিলে বৃষ্টিতে ভিজি আমরা দুজনে ভিজতে বেরোই পাশের ঘর থেকে এক যুবতী বেরিয়ে এসে বলে কি রে চম্পাকলি মাসকাবারি বাবু ধরলি নাকি কাল থেকেই দেখছি গানও গাইছিলিস দুজনে মিলে শবনম তাকে বলে না রে ফুলকলি আমি খোলা বিয়ে করে নিলুম ফুলকলি আমার দিকে তাকিয়ে প্রস্তাব দেয় তাহলে তো ভালো কথা যেদিন ফাঁকা থাকবেন আর শবনমের খদ্দের থাকবে সেদিন করে আসবেন আমি খাজুরাহো দেখেছি চুরাশি আসনের চেয়ে বেশি আসন জানি দাঁড়িয়ে ওই সময়ে হিন্দি ফিলিম বলুন বাংলা ফিলিম বলুন গান শোনাতে পারি শবনমের যা করতে লজ্জা করে আমার তাতে কোনো লজ্জা-ঘেন্না-ভয় নেই দেখতে আমায় শবনমের মতন চটকদার না হলেইবা চটকাতে দিই খদ্দেরের ইচ্ছেমতন সে চাইলে আমিও চটকে দিই বললুম ঠিক আছে গো ফুলকলি আসব তোমার কাছে যেদিন পকেটে রেস্ত থাকবে ফুলকলি বলল আপনি তো শবনমের সঙ্গে খোলা-বিয়ে করে ফেলেছেন মানে ওর ঘরেই ডেরা ডালবেন তাই আমার কাজে বাকিও রাখতে পারেন মাসের শেষে দিলেই চলবে আমি অনেকের অমন হিসেবের খাতা খুলেছি আমি ফুলকলির দিকে তাকিয়ে এক চোখ টিপে শবনমের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে ভিজতে বেরোলুম যেন সবে প্রেমে পড়েছি দুই প্রেমিক-প্রেমিকা রাস্তার দুপাশে সজনে গাছ থোকাথোকা ফুল নুয়ে পড়েছে এই সময়ে এক-দু পোঁচ বৃষ্টি হয় যাতে ফলের কুঁড়িগুলোকে ঘেঁটে ঘষটে নষ্ট করে দিতে পারে ফোঁটাগুলোর চাপ কোনো-কোনো সজনেফুলের আকুলিবিকুলি গর্ভ থেকে বিস্ফোরণে বেরিয়ে ঝুলছে সজনেডাঁটার ন্যানোনুনু হাওয়ার উড়াল সামলাতে না পেরে বুড়িয়ে যাওয়া ফুলগুলো রাস্তায় লাফিয়ে আত্মহত্যা করে চলেছে দুটো ছোটো মেয়ে কুড়োচ্ছে ফুলগুলোর লাশ সেগুলো নিয়ে কালকে বাজারে গিয়ে পশরা সাজাবে একটা বেঁজি ভিজতে ভিজতে রাস্তার মাঝ বরাবর কিলবিলে কেউটে সাপকে তাড়া করতে এসে দুজনে লড়ার জন্যে তৈরি হয়েছে সাপের ফণায় লেজের সুড়সুড়ি দেচ্ছে বেঁজি মাঝেমাঝে বেঁজিকে দেখে শবনম বলল কিরে দেবশর্মা এতোদূর তাড়া করার কি দরকার ছিল আমাদের পাড়া ছেড়ে যাচ্ছে সেটাই তো যথেষ্ট দেবশর্মা নামের বেঁজি জোরে জোরে বলল এই হারামখোর কুত্তির বাচ্চা আর এর রুবলখোর গুষ্টি আমাদের এলাকা দখলের তাল করেছিল তাই ভাগাচ্ছি সবকটাকে টুকরো টুকরো করে ছাড়ব ভেবেছে কি পোঁদক্যালানে গুষ্টি আমাদের এলাকা দখল করবে কালকে দুটো স্তালিনপুত্রকে এলাকাছাড়া করেছি আজকে এই র্যাডক্লিফপুত্রীটাকে তাড়াচ্ছি আমি দেখলুম সাপটার মাথায় মণি জ্বলজ্বল করছে আর মণিটার রঙ কখনও চুনী কখনও পান্না কখনও ফিরোজা কখনও নীলা কখনও পোখরাজ হয়ে যাচ্ছে সাপটা আমাদের দিকে ফণা ওঁচানো মাথা ঘুরিয়ে বলল আমি ক্ষতি করার উপযুক্ত নই আমার বিষদাঁত কবেই ভেঙে দেয়া হয়েছিল আমরা তো শুধু ফোঁস করার কাজে লাগতুম যারা এলাকা দখলের কাজে যোগ দিয়েছে তারা ময়াল অজগর জাতের বেঁজি বলল আরে এই শুয়োরজাদার কথা বিশ্বাস কোরোনো তোমরা এরা গর্তের মধ্যে লুকিয়ে থাকে আর সুযোগ পেলেই গণ্ডায় গণ্ডায় বাচ্চা ছেড়ে দিয়ে এলাকার পর এলাকা দখল করে আমরা দুজনেই এই পৃথিবীর বাইরে বেরিয়ে ভিজতে-ভিজতে হাঁটছি গঞ্জে ব্যাবসা করতে এসে বারফটকা কেউ আটকে গেছে আড়তদারের টিনের শেডের তলায় বৃষ্টি থামার অপেক্ষায় ভাবছে এই শবনম কুত্তিটার সঙ্গে তো তারা মাঝে-মাঝে দুর্ব্যবহার করে চড়চাপড় মারে টাকার দাম উশুল করার জন্যে তার সঙ্গে বেরিয়েছে এই পাগলটা আবার কে হাত ধরাধরি করে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে আস্তে আস্তে হাঁটছে আমরা দুজনেই জানি আর আমরা কচি যৌবনে ফিরে যেতে পারব না ইশকুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী হয়ে উঠতে পারব না কিন্তু তাতে কি শবনম হয়তো ক্লাস ফোর ফাইভের বেশি পড়েনি আমি জানতেও চাইনি বোধহয় শবনম আমি যা ভাবছি তা ভেবে বলে উঠল আমি বিশেষ পড়াশুনা করিনি গো তুমি তো অনেক জ্ঞানী মানুষ সমাজকে ছেড়ে দিলে কেন বললুম আজ পর্যন্ত তো তুমি তোমার দুঃখকষ্টকে ভালোবেসে এসেছো নিজের ভূমিকা আর ভাগ্যকে মেনে নিয়েছিলে কখনও ভাবোনি যে এমন খদ্দেরও পাবে যে সাহস করে তোমার হাত ধরে রাস্তায় বেরিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে বেরোবে তুমি কি ভাবছ আশে-পাশের আড়তগুলো থেকে যে প্যাঁকপ্যাঁকানি ভেসে আসছে তা শুনতে পাচ্ছি না তাদের চাউনির মানে বুঝতে পারছি না কিন্তু মেশিনরা যেমন কারখানায় নিজেদের মধ্যে কথা বলাবলি করে তা করছি না ঠিক এই কারণেই আমি সমাজ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছি তোমাকেও আজ বের করে এনেছি তোমার বাঁধাধরা ঘেরাটোপ থেকে কারোর মন্তব্যে কান দেবার দরকার নেই ফেরার সময়ে দেখলুম সজনে গাছগুলো পলাশফুলের গাছ হয়ে গেছে থোকা থোকা পলাশ ফুটে আছে শবনম বলল আমাদের এখানে সজনেগাছে বেশিক্ষণ বৃষ্টি পড়লে তা ক্রমশ পলাশ গাছ হয়ে যায় তালগাছ হলে তা হয়ে যায় খেজুরগাছ যদি আমগাছ হয় তা হয়ে যায় লিচুগাছ পুকুরের তেলাপিয়ারা হয়ে যায় রুই বোয়ালরা হয়ে যায় চেতল পুঁটিরা হয়ে যায় কাতলামাছ পরে যখন তোমায় নিয়ে বেড়াতে বেরোবো তখন সব দেখাবো এক এক করে তুমি বরং তোমার গল্পটা বলো হ্যাঁ আরেকটা খুনোখুনির ঘটনা বলি এই কিছুকাল আগেই ঘটেছিল আর যারা ঘটিয়েছিল তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছিল এতোদিন কুড়ি জনের মধ্যে উনিশজন ধরা পড়েছে হায়দ্রাবাদ ঝাড়খণ্ড হুগলি থেকে ওরা কম বয়সী ছেলেদের ধরে এনে বোমা-বারুদ-বন্দুক চালিয়ে মানুষ খুনের ট্রেনিং দিতো পশ্চিম মেদিনীপুরের এক গ্রামে পঁচাত্তর-একশো টাকা প্রতিদিনের মজুরি দিয়ে এনেছিল খুনোখুনির পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রেখেছিল কয়েকটা দোতলা বাড়িতে নিচের তলায় থাকতো ছেলেগুলো আর ওপর তলায় বুলেট-বন্দুক-র্যাশান একদিন শীতের সময়ে ছেলেগুলোকে বললে গুলি চালিয়ে গামের লোকেদের মারতে ছেলেগুলো তো আর কাউকে চেনে না ওদের পালের গোদারা চেনে গুলিতে মারা গেল নয় জন আর আঠাশজন জখম ওদের এক পালের গোদা সরকারি খরচের টাকা মেরে পেল্লাই বাড়ি হাঁকিয়েছিল দেখে ফরেস্ট এরিয়ার মাওবাদীরা বাড়িতে হামলা করে জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছিল ওদের মাতব্বরদের এতোকাল ধরা যায়নি দরবারের ছাতার তলায় ছিল বলে সে ছাতা ফর্দাফাঁই হতেই খুনেগুলো ফেরার হয়ে গা-ঢাকা দিয়েছিল বেয়োনেট হোক যতো ধারালো কাস্তেটা শান দিও বন্ধু শেল আর বম হোক ভারালো কাস্তেটা শান দিও বন্ধু শবনম ভিজতে-ভিজতে ওড়না নিঙড়িয়ে মুখ পুঁছে বলল যাক ধরা তো পড়েছে তারপর বলল তুমি ওই ঘটনাটা জানো সেই যে মোটর কারখানাটা তৈরি হতে-হতে হল না তার ভেতরে একটা মেয়েকে ধরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছিল একজন আধবুড়ো কানাঘুষা শুনেছি কিন্তু পুরো ঘটনাটা জানি না শবনমকে বলি হ্যাঁ তাপসী মালিক নামে এক কিশোরীকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল তাতে দামড়ু মালিক আর চামড়ু মালিক নামে দুজনের সাজা হয়েছিল তারপর হাইকোর্টে তারা খালাস পেয়েছে এখন ব্যাপারটা সুপ্রিম কোর্টে ঝুলছে তাপসী মালিকের মূর্তি বসেছে গাঁয়ে কিন্তু চাষিদের এখনও কোনো হিল্লে হয়নি মোটর গাড়ি তৈরির কারখানাও বসে নি সেটা চলে গেছে গুজরাটে চাষের জমিতে এতো বালি ফেলা হয়েছিল কারখানায় যাবার জন্য ধানিজমির ওপর দিয়ে রাস্তা তৈরি হয়েছিল এখন কেউ কিছুই জানে না কীভাবে সমস্যার সমাধান হবে চাষির কাছে জমিটাই একমাত্র পুঁজি অনেকে টাউনে গিয়ে নানা ধান্দা আরম্ভ করতে বাধ্য হয়েছে বৃষ্টি আরম্ভ হয়েছিল ফিসফিসিয়ে কথা বলার মতন করে এখন বিশৃঙ্খল আর পাগল ফোঁটারা হাওয়াকে ভুল বুঝিয়ে তার পথ গোলমাল করার খেলায় মেতেছে এক বার বুনো পাক দিয়ে আরেকবার জলের বেঁকা চাদর হয়ে উড়ছে দেখছি শবনমের মুখ বেয়ে গড়িয়ে চলেছে ওর বুকের দিকে বুক ভিজিয়ে অনুপ্রভ বোঁটাদুটো ঝিলমিলে ঠাণ্ডায় উঁচু হয়ে উঠেছে ফোঁটাগুলো বর্ষাকালের মতন ঠাণ্ডা নয় আবার বসন্তকালের উষ্ণতাও তাতে তেমন নেই আজকে শবনমের অপ্রতিরোধ্য ভেজার দিন হয়তো ভেজবার স্বাধীনতার দিন যেন এক-একটা ফোঁটা ঝংকারের মতন বেজে উঠছে ওর গহনে আমার কাছে ছোটোবেলা থেকেই বৃষ্টি ছিল সঙ্গীত শবনমের ছোটোবেলা জানি না জিগ্যেস করলে হয়তো ভয়ংকর কিছু বেরিয়ে আসবে বৃষ্টি আমাকে ইশারা করেছে ডাক দিয়েছে যার ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই যখন ধূসর আকাশ থেকে ফোঁটাগুলো লাফিয়ে নামে নিয়ে আসে প্রশান্তি আমার জীবনে যতোই গোলমেলে ঝঞ্ঝাট গিয়ে থাকুক না বৃষ্টি সেসব স্মৃতিকে আমার মগজ থেকে ধুয়ে নিয়ে চলে যায় মুখের ধুলো আর ঘামের সঙ্গে চলে যায় সেসব স্মৃতি শবনমের চোখের পাতায় শিশিরের মতন ফোঁটারা ঝুলছে শবনম বারবার মুছে ফেলছে হয়তো ওর দেহ থেকে নোংরা খদ্দেরদের দুর্গন্ধ আর বদ-আচরণের আস্তরণ সরিয়ে দিচ্ছে বৃষ্টি শবনম হঠাৎ বলে ওঠে বৃষ্টিটা আরো জোরে পড়ুক জবজবে ভিজে যাই দুজনে যাতে একজন জ্বরে পড়ে আর আরেকজন তার সেবা করে আমি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করি বৃষ্টির সঙ্গে ভয় কেমন করে মিশে আছে বৃষ্টির নিজেরই হয়তো উদ্বেগ আছে ঘন মেঘের আর পৃথিবীর শক্ত মাটির মাঝামাঝি আচমকা হারিয়ে যাবার তারপর বৃষ্টি কমে আসছে হয়তো বৃষ্টিও অনুভব করছে শবনমের ফেলে আসা ভয়ংকর দিনগুলো আর ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার আতঙ্ক প্রতিটি ফোঁটা ওর দেহের ওপর নেমে আসছে যাতে ওর মনকে অতীতের দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রণার দিনগুলো আর ভবিষ্যতের আতঙ্ক থেকে বের করে আমার আশ্রয়ে এনে দিতে পারে শবনম একবার আমার দিকে তাকিয়ে দেখল তারপর দূরে কালো মেঘে অস্পষ্ট দিগন্তের দিকে যেদিকে দুপাশে সজনেগাছের সারি নিয়ে চলে গেছে গঞ্জের কাঁচা রাস্তা হুঁশিয়ারি দিচ্ছে যে আজকে বৃষ্টি সহজে থামবে না শবনম বলে ওঠে জানো ফুলকলির বরকে ওরা মেরে ম্যানহোলে ফেলে দিয়েছিল দুর্গন্ধ বেরোতে আড়তদাররা মিউনিসিপালিটিকে বলে পরিষ্কার করাতে গিয়ে লাশ পেয়েছিল ফুলকলিকে ধর্ষণ করে ছিল অনেকে মিলে তারা কারা জানা যায়নি আজও ওর দেওর-ভাসুর ওকে কোনোরকম সাহায্য করেনি উল্টে তারাও সুযোগ বুঝে ওকে ধর্ষণ করতো ও বলে ওই বাড়িতে থেকে অমন কাজ করার চেয়ে এই পাড়ায় ঘর নিয়ে যৌনকর্মীর ধান্দা করা ভালো সবসময় হাসিখুশি থাকে ওকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে মাথায় কতো ঝড় ভরে রেখেছে রক্তমাখা ভাতের কথা বলছিলে তুমি ফুলকলি কালীপুজোর দিন ব্লেড দিয়ে নিজের বুক চিরে সেই রক্তভাতে মেখে অদৃশ্য ভুতপ্রেতদের দিকে ছুঁড়ে মারে রাস্তার পাশের এক আড়তদারের শেডে দাঁড়িয়েছিল পেটমোটা বছর পঞ্চাশের কদমছাট লোক সঙ্গে কুড়ি-একুশ বছরের যুবক আমাদের দেখে এগিয়ে এলো দুজনের মাথায় ছাতা শবনমের সামনে দাঁড়িয়ে বলল যাক পায়েলি তোকে এখানেই পেয়ে গেলুম আজকে আমি যাচ্ছি না আমার ছেলেকে এনেছি ওকেই তোর কাছে নিয়ে যাচ্ছিলুম বিয়ের আগেই প্রেম করে বাচ্চা পয়দা করেছিল এখন বিয়ের পর দুবছরে দুটো বাচ্চা ভেবে দ্যাখ এই ভাবে যদি চলে আমার ব্যবসা তো লাটে উঠে যাবে বউয়ের ন্যাওটা হয়ে আছে কনডোন ওব্দি কেমন করে কখন পরতে হয় তাও জানে না তুই একটু ওগুলো শিখিয়ে দে আর তোদের পাড়াটাও দেখে নেবে যাতে মুখ বদলাতে পারে বউ ছাড়া দুনিয়ায় আরও যে কতো রঙ্গতামাশা আছে তা জানুক আজকে কিন্তু তোকে চুড়িদার পরে বেশ কচি দেখাচ্ছে ভালোই হল ছেলেটার মনে ধরবে তোর গাটাও বিষ্টিতে ভিজে নরম হয়ে আছে আমার উপস্হিতি খেয়াল করেনি হঠাৎ আমার দিকে তাকিয়ে শবনমকে পেটমোটা জিগ্যেস করল তোর আজকের বাবু পেয়ে গেছিস নাকি রে চম্পাকলি না না ও আমার খোলা বর পেটমোটা বললে যাক বাঁচলুম নয়তো তোদের পাড়ায় যেতে হতো আর লোভে পড়ে কারোর ঘরে ঢুকে পড়তুম জানিস তো আমার বদভ্যাস ছাড়তে পারি না ছোঁকছুঁকে ওব্বেশ কুড়ি বছর বয়স থেকে যাক এই নে রঙিন গন্ধঅলা কনডোম এক প্যাকেট কিনেছি তুই নিয়ে যা ওকে তোর ঘরে শবনম ছেলেটার কোমর জড়িয়ে জিগ্যেস করল তোমার নাম কি গো ছেলেটা বাবার দিকে তাকায় পেটমোটা বললে বাড়িতে ওকে খোকা বলে ডাকি আমরা তুইও খোকা বলে ডাকতে পারিস যদ্দিন না ঠিক মতন এলেম হয়ে যাচ্ছে পেটমোটা চামড়ার ব্যাগ বের করে শবনমের বাঁ হাতখানা নিজের হাতে নিয়ে একগোছা নোট গুঁজে দিল শবনমের হাতে বলল চম্পাকলি দেখিস যেন বাড়ি পালাবার তাল না করে সারারাত ওকে বেঁধে রাখিস তোর দুপায়ের ফাঁকে আমি চললুম দেখি যদি হয় পরের হপ্তায় আসব ছেলেটাকে অন্য কারুর ঘরে যদি ঢোকাতে পারি পেটমোটা চলে যেতে আমি জিগ্যেস করি শবনম না চম্পাকলি শবনম বলল উনি যেদিন প্রথম আমার ঘরে এসেছিলেন সেদিন আমার নাম ছিল চম্পাকলি যুবক আমাদের দিকে চেয়ে শবনমকে জিগ্যেস করল আমি কি নামে ডাকব তোমায় শবনম জিগ্যেস করল তোমার বউয়ের নাম কি যুবক উত্তরে বলল করুণাময়ী শুনে শবনম বলল তাহলে আমাকেও করুণা বলে ডেকো আমার দিকে তাকিয়ে বলল তুমি ফুলকলির ঘরে চলে যেও হাতে পয়সা আছে তো ফুলকলি অবশ্য ধারের খাতা রাখে যুবককে নিয়ে হনহন হাঁটা দিল শবনম ওরফে চম্পাকলি ওরফে করুণাময়ী যুবক ছাতাটা নিজের মাথার ওপরই রাখল শবনম যাতে আর না ভেজে তার আগ্রহ দেখা গেল না আমি ভিজতে ভিজতে ওদের পেছনে ওরা তাড়াতাড়ি হেঁটে বৃষ্টির ছাটের ঘষাকাচে উধাও হয়ে গেল বেশ আগেই পৌঁছে গিয়ে থাকবে শবনম ওরফে চম্পাকলি ওরফে করুণাময়ীর ঘর ভেতর থেকে বন্ধ আলোজ্বলছে দেখলুম নিজের ঘরের দরোজায় দাঁড়িয়ে আছে ফুলকলি আমাকে দেখে হাসল বলল আপনার অপেক্ষাতেই আছি এই বিষ্টি-বাদলায় কেই বা আসবে মাতাল হয়ে আসে বটে কেউ-কেউ তা মাতালরাও বিষ্টিতে ভিজে নিজেদের আয়েশ নষ্ট করবে কেন আসুন আসুন দেখেছি পাপড়ি একটা বাচ্চা রাতকুটুম নিয়ে ঢুকলো ওর ঘরে তখনই ধরে নিয়েছিলুম যে আজকে রাতটা আপনি খোলা আসুন আসুন আপনার গা পুঁছে দিই নয়তো জ্বরজারি হতে পারে অসময়ের বিষ্টি আমি বললুম আপনি-আপনি কোরো না শুনলে মনে হয় যেন বৌবাজারের মাসকাবারি বাবু ফুলকলি বললে আঁচ্ছা বলব না এসো আমিই জামাকাপড় খুলে দিই জুতোও খুলে দেবো বোসো ওই টুলটায় চিন্তা কোরো না আমার কাছে খদ্দেরদের ধারের খাতা আছে মাসের শেষে মাইনে পেলেই দিলে চলবে বললুম আমি তো চাকরি-বাকরি করি না উঞ্ছবৃত্তি করে রোজগার করি শুনব শুনব কাল শোনা যাচ্ছিল তোমাদের অনেক কথা কিছু-কিছু আঁচ করেছি আমি নিজেকে ফুলকলির হাতে ছেড়ে দিলুম ফুলকলি দরোজা বন্ধ করে ছোটো আলো জ্বেলে আমার শার্ট গেঞ্জি ট্রাউজার জাঙিয়া এক-এক করে ভেতের ঘরে শোকাতে নিয়ে গেল বলল ফ্যান খুলে শুকোতে দিয়ে দিলুম তুমি তো দেখছি ঝাড়া হাত-পা মুখ থেকে মদের গন্ধ বেরোচ্ছে শুনতে পাচ্ছিলুম তুমি আর পায়েলি মিলে মদ খাচ্ছো আর গল্প করছ কী খাবে বলো ডিম পাঁউরুটি করে দেবো বিষ্টিতে ডিমের বড়ার সঙ্গে পাঁউরুটি খেতে ভাল্লাগবে আমি ভাতটাত রাঁধার ঝামেলায় যাই না ভাত খাবার থাকলে শিবুর দোকান থেকে ভাত-মাছের ঝোল আনিয়ে নিই কেন জানো ভাত খেলে ঘুম পায় আর গঞ্জের দোকানগুলো দুপুরেও খোলা থাকে বলে কোনো কোনো খদ্দের দুপুরটা এখানে কাটাতে আসে ঘুমও দিয়ে নেয় আবার শুয়েও নেয় বললুম তোমার বরের কথা শুনেছি খুন করে ম্যানহোলে ফেলে দিয়েছিল তোমাকেও ধর্ষণ করেছিল তোমার শশুরবাড়িতে নিতে চায়নি নিয়েও তোমার ভাসুর আর দেওররা তোমাকে ধর্ষণ করতো তাই তুমি নিজের ইচ্ছেতে এই পাড়ায় চলে এসেছো ফুলকলি বলল ওসব পার্টির বদমায়েশির কথা বাদ দাও দিকি তোমার কথা বলো তুমিও তো মারামারি খুনোখুনি করো এক ইঁটের দেয়ালে কান পেতে শুনেছি গো হুঁ হুঁ আমি বললুম আমার কোনো নাম নেই কোনো ঠিকানা নেই আমি ভিড়পুরুষ যেখানে দেখি মারামারি চলছে সেখানে আমিও ঢুকে পড়ি আর যারা মারামারি খুনোখুনিতে জিতছে তাদের দলে ভিড়ে যাই তারপর হেরো দলের যারা মার খেয়ে পড়ে থাকে তাদের পকেট ফাঁকা করে টাকাকড়ি নিয়ে নিই ঘড়ি-সোনাদানা নিই না এমনকি চামড়ার পকেটব্যাগ আইডেনটিটিকার্ড নিত্যযাত্রীর টিকিট ওগুলোও ফেরত রেখে দিই পকেটে আমার পোশাক খুলে আগাপাশতলা মুছে ফুলকলি বলল দাঁড়াও তোমার জন্যে ডিমের বড়া আর পাঁঁউরুটি সেঁকে আনছি পোশাক মোছার সময়েই আমার দাঁড়িয়ে গিয়েছিল দেখে ফুলকলি বললে অপেক্ষা করো সারা রাত তো পড়ে আছে আমিও শাড়ি-ব্লাউজ খুলে ফেলব তখন দুজনে মিলে আশনাই করব কেমন এই পাড়ায় আমারই ঘরে ডানলোপিলো আছে ডানলোপিলোর ওপরে পাতা আছে বাচ্চাদের প্লস্টিক কাঁথা যাতে চাদর না নষ্ট হয় বুঝলে বলে ভেতরে চলে গেল ফুলকলি এই ঘরেই বিছানা দুটো বালিশ একটা পাশবালিশ সবুজ রঙের সাটিনের ওয়াড় পরানো একটা ছোট্টো টেবিল তার লাগোয়া দেয়াল-আয়না টেবিলের ওপর সাজগোজের টুকিটাকি কিন্তু ফুলকলিকে তেমন সেজে থাকতে দেখলুম না তো মেয়েটা বেশ ঢ্যাঙা পাঁচ ফিট সাত ইঞ্চি মতন হবে হয়তো চুল ঘাড় পর্যন্ত গোল মুখ সাধাসিধে বোধহয় ওর আকর্ষণ করার ক্ষমতা ওর ওই সাধাসিধেভাবে নিয়ে এলো ওমলেট যাকে ও বলছিল ডিমের বড়া আমার জন্যে ছয়টা স্লাইস নিজের জন্যে দুটো কোমরটা পাতলাই রাখতে চায় দুজনে খেতে বসলুম টেবিলের ধারে ফুলকলি টুলে বসল আমি ঘরের একমাত্র চেয়ারে ঘরে কোনো দেবীদেবতার ছবি নেই যেমন ছিল শবনম ওরফে চম্পাকলি ওরফে করুণাময়ীর ঘরে জানতে চাইলুম তোমার ঘরে দেবীদেবতা নেই সকলের ঘরেই তো দেখেছি থাকে মুখঝামটা দিয়ে বলে উঠল ফুলকলি ওরফে নিভা ওরফে রানি ওরফে মৌসুমী ওরফে পারমিতা ওসব ফালতু ছবিতে কোনো দম নেই দেবীদেবতা সব বাচ্চাদের গপ্পের বইতে থাকে আর ভিতুদের মাথায় দেবীদেবতা বলো আর ভগবান-ঈশ্বর বলো ওসব গল্পগাছা আসলে ওরা কোথাও নেই আমি ভুতেও বিশ্বাস করি না আর দেবীদেবতাতেও বিশ্বাস করি না এককালে করতুম তারপর বুঝেছি ওরা সবই বানানো গল্প যারা তোমাকে চুষে খায় তোমাকে খুন করে তোমাকে নর্দমার পোকা করে রাখে ওসব তাদের তৈরি বুজরুকি সেই বানতলার ব্যাপারটা জানো তো তিনজন মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল আর তারা ছিল কতো বড়ো-বড়ো আপিসার তাদেরই বাঁচাতে পারল না কোনো দেবীদেবতা তো আমাদের কে বাঁচাবে বললুম তুমি কোথায় শুনলে ফুলকলি ওরফে নিভা ওরফে রানি ওরফে মৌসুমী ওরফে পারমিতা বললে কেন কাগজে পড়েছিলুম তখন আমি খবরের কাগজ পড়তুম গো ইশকুলের ছোটো বাচ্চাদের পড়াতুম আমার বর পার্টি করা আরম্ভ করলে আর তার ফলে নিজে মরল আমাকেও জ্যান্তমরা করে রেখে গেল আর ত্যাখনকার মুখ্যমন্ত্রী বলেছিল অমন ঘটনা তো হামেশাই ঘটে বললুম হ্যাঁ জানি ঘটনাটা গোসাবায় টিকাকরণ কর্মসূচী সেরে গাড়ি করে ফিরছিলেন সরকারি আধিকারিক অনিতা দেওয়ান আর উমা ঘোষ সঙ্গে ইউনিসেফের রেণু ঘোষ সন্ধ্যা সাড়ে ছটা নাগাদ ইস্টার্ন মেট্রপলিটান বাইপাসে বানতলায় পার্টি অফিস থেকে বেরিয়ে এসে চার-পাঁচজন লেড়ো মাস্তান ওদের গাড়ি রাস্তার ওপর থামাবার চেষ্টা করে তাদের মতে বাচ্চাদের টিকা দিয়ে ওদের ইজ্জত-ইমানকে নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে ড্রাইভার ওদের কাটিয়ে বেরোতে গেলে গাড়িটা ডিগবাজি খায় তখন দশ-বারোজনের একটা লুঙ্গিপরা দল এসে মহিলাদের টেনে-টেনে গাড়ি থেকে বের করে পাশের মাঠে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে মহিলাদের প্রতিটি অঙ্গ টুকরো টুকরো করে যৌনতার ভোগ্যবস্তু করে তুলেছিল তারা পা হাত উরু গাল চোখ ঠোঁট পেট নাভি থুতনি মাথার চুল যেন এক একটা অঙ্গ থেকে এক একরকম নিষ্ঠুরতার আমোদ ঝরে পড়ে ড্রাইভারকে মেরে তার নুনু পাথর দিয়ে ঘষে দেয়া হয়েছিল আর গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল একজন আধিকারিক সেখানেই মারা যান মাঝরাতে পুলিশ ওনাদের আধমরা দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা দেখে ভেবেছিল মারা গেছেন তিনজনই একজনের যোনিতে অ্যালুমিনিয়াম টর্চ ঢোকানো ছিল যা দেখে একজন ডাক্তার অজ্ঞান হয়ে যান ওনাদের দোষ ছিল ওনারা জন্মনিয়ন্ত্রণের উপকারীতা বোঝাবার চেষ্টা করেছিলেন আমার কথা শুনে কাঁদতে আরম্ভ করে ফুলকলি ওরফে নিভা ওরফে রানি ওরফে মৌসুমী ওরফে পারমিতা আমার মুখ দুহাতে চেপে চেঁচিয়ে ওঠে বোলো না বোলো না বোলো না ধর্ষণের কথা শুনলেই আমার সারা গা কাঁপতে থাকে বমি পেতে থাকে দেখছ তো কতো তফাত দুটোয় এখানে আমি স্বেচ্ছায় শুচ্ছি অথচ জোরজবরদস্তি করে কেউ যদি আমার সঙ্গে শোয়া তা একেবারে আলাদা ব্যাপার হয়ে যায় ফুলকলির মুখ দুহাতে নিয়ে বলি কেঁদো না কেঁদো না কাঁদলেই সম্পর্ক গড়ে ওঠে যা আমি আর তুমি দুজনেই চাই না আমি মারামারি করি কিন্তু আমি কাউকে সেসময়ে সমর্থন করি না মারামারি করার সময়ে আমি যদি কাউকে খুন করে ফেলি তাহলে জানি যে সে আমার শত্রু ছিল না তাকে মারার উদ্দেশ্য আমার ছিল না আমার উদ্দেশ্য নিজের নিষ্ঠুরতার জগত থেকে বাইরে বেরোনো তাই আমি এই সমাজের কেউ নই আমি ভিড়পুরুষ ম্যাকলেপুত্র ম্যাকলে সাহেবের বেজন্মা সন্তান যদি জানতে চাও তুমি কে আমি বলব ফুলকলি ওরফে নিভা ওরফে রানি ওরফে মৌসুমী ওরফে পারমিতা হলো কর্নওয়ালিসপুত্রী চিরস্হায়ী বন্দোবস্তের বেজন্মা যুবতী আমি প্রতিবার নিজের একটা ঝলক দেখতে পাই প্রতিবার একজন ভিন্ন আমিকে দেখি কেননা সেই মুহূর্তে আমি নিজেকে বিজয়ী ভাবি মনে করি যে নিজেকে অতিক্রম করে যেতে পেরেছি মানুষ যখন যুক্তি তর্ককে পরিত্যাগ করে তখন নিষ্ঠুরতা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না নিজেদের গোলমালের ফয়সালা করার ভবিষ্যত তো একটা মিথ্যা যার সাহায্যে আমরা বর্তমানের নিষ্ঠুরতাকে মান্যতা দিই আমার সঙ্গে বানতলার ধর্ষণকারীদের পার্থক্য কি জানতে চাইলে বলব যে বানতলার ধর্ষণকারীদের উদ্দেশ্য ধর্ষণ ছিল না তাদের উদ্দেশ্য ছিল নিষ্ঠুরতার সাহায্যে নিজেদের মতবাদের প্রাধান্যকে প্রমাণ করা মানুষের মুক্তির বিরুদ্ধে চিরকাল কাজ করে গেছে ভণ্ডামি আর অত্যাচারের দুই নিষ্ঠুর ড্রাগনের আগুনেনিঃশ্বাস সৌন্দর্যকে নষ্ট করার জন্য কিছুই বাকি রাখেনি বাঙালির সমাজ-সভ্যতা সব রকমের নিষ্ঠুরতা আর দৌরাত্ম্য আর বদমায়েশির চর্চা করা হয়েছে যাতে নাগরিকের অধিকারকে খর্ব আর ধ্বংস করে দেয়া হয় ফুলকলি ওরফে নিভা ওরফে রানি ওরফে মৌসুমী ওরফে পারমিতা তোমার কি মনে হচ্ছে আমি আবোলতাবোল বকছি এখনও নেশা রয়ে গেছে মগজে ফুলকলি ওরফে নিভা ওরফে রানি ওরফে মৌসুমী ওরফে পারমিতা বলে ওঠে না না তুমি বলো বলো লোকে ভাবে আমরা শুধু শোবার জন্যে আমাদের বোধবুদ্ধি কিছুই নেই তোমার সব কথা আমি বুঝতে পারছি না ঠিকই কিন্তু এটুকু বুঝতে পারছি যে এই কথাগুলো বলতে বলতে তুমি আমাকে কোথায় তুলে নিয়ে গেছো শোয়াশুয়ির ছোট্ট বিছানা থেকে নিয়ে যাচ্ছো অন্য এক আকাশে যেখানে সবকিছু নতুন করে গড়ার চেষ্টা হচ্ছে হয়তো তা স্বপ্ন তবু তা আমার মতন একজন মুকখুকে বলছ নেশার ঘোরে বললেও আমি নিজেকে নতুন করে ভাবতে পারছি আমি সোজা হয়ে বসি ফুলকলির চোখে চোখ রেখে বলি প্রতিটি অপরাধকে পুরস্কৃত করা হয়েছে আর প্রতিটি সদগুণকে শাস্তি দেয়া হয়েছে বাঙালির সব পথ যেন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে তারা এক জায়গাতেই পাক খেয়ে চলেছে ঢাকা বইমেলা থেকে বেরিয়ে আসার সময়ে হুমায়ুন আজাদকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জামায়েতুল মুজাহাদিন সংস্হার নেতা আবদুর রহমানের নির্দেশে কয়েকজন যুবক মিলে চাপাতি মেরে মেরে ওনাকে ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছিল ওনার মতামত তাদের পছন্দ ছিল না বলে ওই আঘাতের কারণে উনি কয়েকমাস পরেই মারা যান নিষ্ঠুরতা শুধু অস্ত্র চালিয়ে চাপাতি মেরেই কেবল হয় না অন্য ভাবেও হয় নন্দীগ্রামের চাষিরা তাদের জমি থেকে উচ্ছেদ করে সেজ এলাকা তৈরি আর ইনদোনেশিয়ার সালেম গোষ্ঠীর কেমিকাল হাব গড়ার বিরোধিতা করেছিল চাষিরা একজোট হয়ে তখন শাসকের লোকেরা চাষিদের চারিদিক থেকে ঘিরে জীবন হেল করে দেবার আর দমদম দাওয়াই দেবার জন্য ভাঙাবেড়ায় তালপটি খালের ওপর থেকে আর নেতার বাড়িতে বাঙ্কার বানিয়ে চাষিদের ওপর বেপরোয়া গুলি চালিয়েছিল এদের আর ওদের মাঝে আরম্ভ হয়ে গিয়েছিল লড়াই ওদের লোকেরা নানা জায়গায় বাঙ্কার তৈরি করে ইঁটভাটা দখল করে গ্রামগুলো লক্ষ করে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে লাইফ হেল করে দিতে লাগল মাঝরাতে সশস্ত্র বাইকবাহিনী চাষিদের ভয় দেখাতে লাগল তাতেও বিশেষ ফল হল না তখন পুলিশের গাইড হিসেবে পুলিশের পোশাক পরা পায়ে হাওয়াই চটি মাথায় ভগৎ সিংএর ছবি ছাপা টুপি হাতে বন্দুক লোকেরা তালপাটি খালের ওপর ভাঙাবেড়া আর তেখালি ব্রিজ পেরিয়ে গুলি চালাতে চালাতে নিরস্ত্র গ্রামবাসীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল মারা গেল চোদ্দজন চাষি তিনজনকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি সেই সঙ্গে লাইফ হেল করার উদ্দেশ্যে চলল ধর্ষণ আর গণধর্ষণ পুলিশের কাছে ষোলোজন মহিলা ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছিল পরে জাতীয় মহিলা কমিশনের কাছে পাঁচশোজন গোপন জবানবন্দিতে এই অভিযোগ তুলেছিলেন চাষিদের রোষের খবর পেয়ে ঝানভপুত্র শাসকপ্রধান বলেছিল ব্লো দেম আপ কিন্তু আজ পর্যন্ত কারোর শাস্তি হয়নি ক্ষতিপূরণ মেলেনি অনেকে এই সুযোগে ফুলেফেঁপে উঠেছে নয়াচরে ভেড়ি চালাচ্ছে পেল্লাই বাড়ি তুলেছে বেশ কয়েকজন জার্সি পালটে ওদের ঘাঁটি থেকে এদের ঘাঁটিতে চলে গেছে নিখোঁজ পরিজনদের জন্যে স্বজনহারা মানুষ চৌকাঠে হাত রেখে অপেক্ষা করতে করতে স্বর্গে চলে গেছে অনেক কথা বলে চলেছি বেয়নেট হোক যতো ধারালো কাস্তেটা শান দিও বন্ধু শেল আর বম হোক ভারালো কাস্তেটা শান দিও বন্ধু না ফুলকলি তোমার বেলায় যা ঘটেছিল তা সমাজের একটা ছোট্ট অংশ ঘটিয়েছিল তাতে ভাগ নিয়েছিল তোমার ভাসুর আর দেওর আমি যাদের কথা বললুম তাদের ভাসুর-দেওর ছিল খয়েরখাঁয়ের দল খয়েরখাঁয়ের দরবার ফুলকলি ওরফে নিভা ওরফে রানি ওরফে মৌসুমী ওরফে পারমিতা বলল আমি দেবীদেবতা মানি না কিন্তু কালিপুজোর রাতে নিজের বুক ব্লেড দিয়ে চিরে নিজের রক্ত ভাতে মেখে মুখে পুরি আর ঘেন্নায় থুঃ থুঃ করে ছেটাই এই ঘরের পৃথিবীর মাটিতে আমি তো পোশাকহীন বসে আছি ফুলকলি শাড়ি খুলে ফেলে ব্লাউজের বোতাম খুলে তৈরি হচ্ছিল তখনই তিনটে টোকা পড়ল ওর দরোজায় যেভাবে এগিয়ে গেল বুঝলুম টোকাটা ওর চেনা দরোজা খুলতে দেখতে পেলুম বেশ কালো একজন মধ্যবয়সী পকেট থেকে দুটো হাজার টাকার করকরে নোট বের করে বলল নে তোর শুয়েজারল্যাণ্ডের ভল্টের দরোজা খোল ফুলকলি শায়াটা তুলে নিল মাথার কাছে কালো লোকটা নোটদুটো গুঁজে দিল ফুলকলির যোনিতে আর বলল হিসেবের খাতায় লিখে নিস ফুলকলি জিগ্যেস করল শুক্কুরবার আসছেন তো অপেক্ষায় থাকব লোকটা বলল হ্যাঁ রে আসব না তো কোথায় যাবো বউ তো ঋতুবন্ধের পর বুড়িয়ে কাৎ বললে কাৎ হলো বললে হলো আমার দিকে তাকিয়ে বলল তোর ঘরে দেখছি বোফোর্স কামান রেডি তা কামান দাগা হয়ে গেছে না হবে কামানের সাইজ তো ভালোই দেখছি ফুলকলি বলল না এখনও কামান দাগা হয়নি ও আচ্ছা বলে লোকটা পেছন ফিরতে দরোজা বন্ধ করে ব্লাউজ আর শায়া খুলে আমার কোমরের দুদিকে পা রেখে ফুলকলি বলল ও হল আমার কাকেশ্বর কুচকুচে ফি শুক্কুরবার আসে আগে পঞ্চায়েত প্রধান ছিল এখন ওর বউ পঞ্চায়েত প্রধান তাই করকরে কাঁচা টাকার কমতি নেই টাকা দিতে এসে যদি দ্যাখে আমার মেন্সের পিরিয়ড চলছে তাহলে বলে তোর পেন্টাগনের গেট খোল তখন আমি পেছন ফিরে দাঁড়াই আর উনি পোঁদে দুটো করকরে হাজার টাকার নোট গুঁজে দিয়ে যান সারা রাত থাকেন না চটপট কাজ সেরে ফিরে যান অনেক কাস্টামার আবার কবে থেকে পিরিয়ড জিগ্যেস করে আসে তাদের ওই চটচটে রক্তের মধ্যেই করতে ভাল্লাগে বাঞ্চোৎরা বোঝে না যে তখন মেজাজ কতো তিরিক্ষি থাকে কিন্তু কী করব বলো ভালো দাম নিই হারামজাদাদের কাছ থেকে এই রে তোমার আবার চটচটের শখ নেই তো আমি বলি কখনও তো করে দেখিনি করলে বুঝতে পাারবো ফুলকলি ওরফে নিভা ওরফে রানি ওরফে মৌসুমী ওরফে পারমিতা বলল যাক তুমি নিষ্ঠুরতার গল্প বজায় রাখো প্রেমের সময়ে অন্য দিকে খেয়াল দেয়া জরুরি নয়তো তোমার বোফোর্স কামান জেগে উঠলে যুদ্ধু জলদিই ফুরিয়ে যাবে আমি বললুম দ্যাখো ফুলকলি চটচটেপ্রিয় লোকটা আমার মতনই লম্পট কিন্তু ওনাকে দেখে টের পেলুম যে রাষ্ট্রের লাম্পট্যের চেয়ে ব্যক্তির লাম্পট্য শ্রেয় রাষ্ট্র তার ক্ষমতা প্রয়োগ করে দুর্বলের ওপর লাম্পট্য চালিয়ে যায় ব্যক্তি কিন্তু তা নিজের চরিত্রের ভেতরেই লুকিয়ে রাখে অন্যের ওপর অত্যাচার করে না ধর্ষণকারীদের মতন ফুলকলি জিগ্যেস করল তুমিও কি পার্টি করো আমি বললুম তোমাকে বলেছি তো আমার কোনো নাম নেই বাড়ি নেই দেশ নেই নাগরিকতা নেই দল নেই পক্ষ-বিপক্ষ নেই আমি ম্যাকলেপুত্র ভিড়পুরুষ ফুলকলি বলল আজকাল আর আগেকার মতন পরপুরুষ-নিজপুরুষের গোলমেলে ভাগাভাগি নেই যে পরপুরুষ সে-ই চাইলে নিজপুরুষ আমি বললুম মন্দ বলোনি প্রতিটি ম্যাকলেপুত্র এখন তা-ই তোমাকে তাহলে ছত্তিসগড়ে রাষ্ট্রের লাম্পট্যের কথা বলি ছত্তিসগড় শুনেছো তো ফুলকলি বলল হ্যাঁ একটু একটু ওটা নাকি মাওবাদীদের জঙ্গল আমি বললুম তাহলে তোমায় বলি ছত্তিসগড়ের বস্তার জেলার জঙ্গলটা ওখানকার গোঁড় আর মুরিয়া আদিবাসীদের ওই জঙ্গলে মাওবাদীরাও লুকিয়ে থাকে যারা আগে মাওবাদী ছিল কিন্তু এখন পুলিশের খোচর হয়ে গেছে সেসব গোঁড় আর মুরিয়া ছেলে-ছোকরারাও পুলিস আর আধাসামরিক বাহিনীর লোকেদের সঙ্গে গাঁয়ে-গাঁয়ে মেয়েদের পেছন ধাওয়া করে ধর্ষণ করে বেড়ায় ওটা হল মেয়েদের ওপর নিষ্ঠুর অত্যাচারের শেষ অস্ত্র ওটা হল রাষ্ট্রের লাম্পট্য বিজাপুর আর সুকমা জেলার পেগড়াপল্লি চিন্নাগেলুর পেড্ডাগেলুর গুনডেম বুরগিচেরু গ্রামে গত বছর চল্লিশজন আদিবাসী যুবতীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে এমনকি চোদ্দ বছরের পার্বতীকে চোখে কাপড় বেঁধে পাতেলপারা গ্রাম থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কয়েকজন মিলে মুখে কালো মুখোশ পরে ধর্ষণ করেছে অন্যেরা সেসময়ে মেয়েটার দুপা ধরে রেখেছিল মেয়েটা গিয়েছিল জঙ্গলে গোরু চরাতে সোমি ছিল চার মাসের গর্ভবতী বছর কুড়ি বয়স তাকে দশেরার আগের দিন নদীর ধারে একা পেয়ে কয়েকজন মিলে ধর্ষণ করেছে ধর্ষণ করার সময়ে তারা হিন্দিতে আর গোঁড় ভাষায় মেয়েটাকে অকথা-কুকথা শুনিয়েছে যাদের কোলে বাচ্চা দেখেছে তাদের মাই টিপে দুধ বের করে দিয়েছে যাতে বাচ্চাটা খেতে না পায় বাচ্চাদেরও এমনভাবে মেরেছে যে তারা মুখে গ্রাস তুলতে পারেনি সপ্তাহখানেক যাবত বয়স্ক কেউ বাধা দিতে গেলে তাদের বাড়ি থেকে মুর্গি তুলে নিয়ে চলে গেছে যোনিতে কাঁচা লঙ্কা কেটে ঢুকিয়ে দিয়েছে কাপড় জ্বালিয়ে দিয়েছে গ্রামবাসীরা অভিযোগ করার পর নব্বুই দিন কেটে গেলেও কোনো এফ আই আর হয়নি ওদের পোশাক রঙবেরঙের শায়া আর ব্লাউজ এতো সাধারণ হয়ে গেছে আদিবাসী ধর্ষণ যে কোনো যুবতীকে আর আলাদা করে আদিবাসী সংস্কৃতির নিয়ম-আচরণ লাগু করা যায় না তোমাকে ধর্ষণের জন্যে সমাজ ছাড়তে হয়েছিল ওদের ওপর অকথ্য অত্যাচারের পরও সকলেই সমাজের ভেতরেই রয়েছে আপন ছুরাতে আদম গড়লেন দয়াময় তা নইলে ফেরেস্তারে সেজদা দিতে কয় ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত আমি আদি আমি অন্ত আমি শেষ আইমিই প্রথম জরার শ্মশানে আমি নিশাচর ডোম ফুলকলি বলে ওঠে ওই দ্যাখো তোমার বোফোর্স কামান দাগার জন্যে নড়ানড়ি করছে কেন আমি তো দুহাজার টাকার করকরে দেয়াল তুলে রেখেছি আমি বলি তোমার ওই নোটের জন্যেই হচ্ছে সরাও ওদুটো রেখে এসো যেখানে রাখার ফুলকলি ওরফে নিভা ওরফে রানি ওরফে মৌসুমী ওরফে পারমিতা নেমে টাকা দুটো ঘরে গিয়ে রেখে এসে আবার সেই ভাবেই আমার কোমরের দুই দিকে দুই পা রেখে বসে বলল ঠিক আছে শুরু করো গল্প নয়তো কামান ফের রেডি হয়ে যাবে আমি বলি এখন এতো ঘরছাড়া গ্রামছাড়া করা হয় কেন বলোতো মানুষকে আগে তো হতো না ব্রিটিশরা আসার আগে সুলতানদের সময়ে হতো না ব্রিটিশরা যখন ছিল তখন হতো না ব্রিটিশরা যাবার পরও তক্ষুনি আরম্ভ হয়নি হলো কেন এমন যে মানুষ নিজের গ্রাম থেকে খেত থেকে বসতবাড়ি ছেড়ে লুকিয়ে বেড়াতে বাধ্য হল ফুলকলি বলল কে জানে কেন এমন হল বোধহয় ছেচল্লিশের দাঙ্গার পর মানুষে-মানুষে দুটো ভাগ হয়ে গেছে একদল একদিকে অন্যদল অন্যদিকে আমি বললুম হ্যাঁ এই কিছুদিন আগে দেগঙ্গা থানার আমুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নিরামিষা গ্রামের বাসিন্দা জাকির হোসেনকে হাট থেকে ফেরার পথে তিরিশ হাজার টাকা জরিমানা দেবার জন্যে জোরাজুরি করা হয়েছিল উনি অন্য দলের সমর্থক বলে উনি দিতে পারেননি তখন মসজিদের কাছে লোহার রড লাঠি ভোজালি দিয়ে তাঁকে রাস্তার ওপরে পিটিয়ে পায়ের শিরা কেটে দেয়া হয় এতো রক্ত বেরিয়েছিল যে আত্মীয়স্বজনরা ভেবেছিলেন মারা গেছে জাকির হোসেন ওনাকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রথমে বারাসাত হাসপাতালে তারপর সেখান থেকে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাবার পর উনি মারা যান এই নিষ্ঠুরতা সরাসরি রাষ্ট্রের নয় কিন্তু রাষ্ট্রের প্রচ্ছন্ন সমর্থনে ভেদি বর্ম চর্ম দেহ বহিল শোণিত পড়িল রক্ষোনরকূলরথী পড়িল কূঞ্জরপূঞ্জ নিকুঞ্জে যেমতি পত্র প্রভঞ্জন বলে পড়িল নিনাদি রাজীরাজী রণভূমি পুরিল ভৈরবে ফুলকলি আমাকে জড়িয়ে ওর বুক চেপে ধরল আমার বুকে বললুম দ্যাখো তোমার বুকের চাপেই আমার বোফোর্স কামান গর্জে উঠতে চাইছে ফুলকলি নিজের বুক তুলে নিল আমার বুক থেকে দুই হাত দিয়ে ধরে বলল এই পাড়ায় সবায়ের চেয়ে আমার বুক যেমন বড়ো আমার কোমরও তেমন সরু একজন আছে এপাড়ায় তার নাম ছবি তার বুক এতোই ছোটো যে একবার যে খদ্দের ওর কাছে যেতো আর দ্বিতীয়বার যেতো না তাই ও প্ল্যান করে খুকি সাজা আরম্ভ করেছে মাথায় দুটো ঝুঁটি তাতে রঙিন রিবন হাঁটু পর্যন্ত স্কার্ট কাঁধ পযর্ন্ত চুল কোঁকড়া সোনালি কলপ লাগায় মাঝেমধ্যে চোখে নীল রঙের কনট্যাক্ট লেন্স পরে ভুরু থ্রেডিং করায় না ওখানে চুলগুলোকে কলপ লাগিয়ে ব্রাউন করে ফেলেছে এখন ওর ভালোই খদ্দের হয় বরং আমাদের চেয়ে ছবির খদ্দের বেশি কম বয়সী খোকা খদ্দের হলে ভেতরে গিয়ে ড্রপারে করে এক ফোটা আলতা ফেলে রাখে ওর শুয়েজারল্যাণ্ডের ভল্টে ওই যে আজকাল টিভির জন্য আলতা বেরিয়েছে ধুলেই চলে যায় সেই আলতা খোকারাও খুশি ভার্জিন মেয়ে পাবার আহ্লাদে ওমা তোমার কামান যে নেতিয়ে পড়ছে গো চোখে ভেসে উঠল নাকি ছবি যেও যেও তুমি তো খোলা বিয়ের বর ছবিরও অনেক নাম কোনো খদ্দেরের কাছে খুকি বীথি রাধা শিপ্রা তুমিও ওকে নাম দিতে পারো ওর দুঅক্ষরের নাম ভাল্লাগে আমি বললুম সোনালী চুল আর নীল চোখ আমি ছবিকে মেম বলে ডাকবো ফুলকলি আমাকে জড়িয়ে ওর বুক চেপে ধরে আমার বুকে বলে বিষ্টিতে ভিজে তোমার বুকটা বেশ ঠাণ্ডা-ঠাণ্ডা ভাল্লাগছে বলল আমাদের কেউ তো আপনি বা তুমি করে বড়ো একটা কথা বলে না তুইতোকারি করে তুমিও তাই করো তাহলে নিকটজন মনে হবে আমি বললুম তোর বরের বডি ম্যানহোল থেকে পেয়ে পুলিস তো তোকে বেশ টানাটানি করে থাকবে ফুলকলি বললে তবে না তো কি বেশিরভাগ মানুষ তো জানেই না পুলিশের পাল্লায় পড়লে তাদের সন্দেহ দুর্ব্যবহার আর অত্যাচারী আচরণ জিনিসটা কেমনধারা হয় ওরা যাদের ধরে তাদের মুখের দিকে তাকালেই বোঝা যায় যে লোকগুলোর জীবনে কোনো আশা নেই স্বপ্ন নেই আকাঙ্খা নেই তাদের মুখে সব সময় যেন খিদে-পাওয়া যন্ত্রণার চাদর পাতা আমি বললুম ঠিকই বলেছিস পুলিশের সমাজে ইচ্ছে আর ভয় আর গেঁতোমি প্রতিফলিত হয় আর আমরা যতোই কেননা পুলিশকে খারাপ বলি এই সমাজের অপরাধী-বিচারের প্রক্রিয়ার বদনাম করি পুলিশকে তো আমরাই নিজেদের ওপর চাপিয়ে নিয়েছি তা তো নবাবরা সুলতানরা চাপায়নি আমি ভিড়পুরুষ ম্যাকলে সায়েবের বেজন্মা সন্তান কিন্তু পুলিশ হলো ম্যাকলে সাহেবের নিজের সন্তান ওদের হাতে যে বিশাল রাষ্ট্রের নিয়মকানুন সন্দেহজনকদের ওপর থার্ড ডিগ্রি তা তো নির্বাচিত সদস্যদের হাতে গড়ে এই গণতন্ত্রের দেয়া উপহার ফুলকলি আমার মুখে ওর জিভ ঢুকিয়ে বলে আরও বলো কেননা তুমি তো খোলা বর কালকে হয়তো তোমার খোলা বউ তুলে নিয়ে যাবে আবার কবে তুমি খদ্দের হয়ে আসবে জানি না ছবির কথা শুনে অব্দি অন্যমনস্ক হয়ে গেছো হয়তো ছবির কথাই ভাবছ আচ্ছা তুমি আমায় তুমি-তুমি কোরো না সকলেই তুইতোকারি করে সেটাই ভালো লাগে তাইতেই আমি অভ্যস্ত আর আমি কিন্তু মুকখু নই উচ্চমাধ্যমিক পাশ তোমার কোন আঙ্গিকের শিল্প চাই বলো সঙ্গীত নাচ গান যাত্রা কুটির সিন্ডিকেট তোলা বা