অমরত্ব
আমি অমর আলেকজাণ্ডার হতে চাই না
আমি আরশোলার মতন অমর হতে চাই
আমি অমর চেঙ্গিজ খান হতে চাই না
আমি কাঠপিঁপড়ের মতন অমর হতে চাই
আমি অমর হিটলার হতে চাই না
আমি ঝিঁঝিপোকার মতন অমর হতে চাই
আমি অমর রবার্ট ক্লাইভ হতে চাই না
আমি উচ্চিংড়ের মতন অমর হতে চাই
আমি অমর মীর জাফর হতে চাই না
আমি উইপোকার মতন অমর হতে চাই
আমি অমর জুলিয়াস সিজার হতে চাই না
আমি বোলতার মতন অমর হতে চাই
আমি অমর আত্তিলা হতে চাই না
আমি গুবরে পোকার মতন অমর হতে চাই
আমি অমর শাহজাহান হতে চাই না
আমি ফড়িঙের মতন অমর হতে চাই
অবন্তিকাবানুর জন্য প্রেমের কবিতা
অবন্তিকাবানু, রাষ্ট্রের দিকে তোলা তর্জনী থেকে
যে স্ফূলিঙ্গ ছড়িয়ে দিলি তুই
দেখেছিস, বোরখা থেকে বেরিয়ে এসেছেন বুড়ি আর তরুণীরা
মাথায় হিজাবঘোমটা অবন্তিকাবানু
প্রান্তকে টেনে এনে মেইনস্ট্রিমে মিলিয়ে-মিশিয়ে দিলি
এই বদল একদিনের নয়
এমনকি শুধুই বদল নয় তোর ওই তর্জনী তোলা
ভেতরে-ভেতরে ভয়ংকর ওলোটপালোট করে দিলি
তোর দেখাদেখি হিজাবঘোমটা ফেলে হাজার তরুণী
রাষ্ট্রের দিকে ওঠাচ্ছে তর্জনী
হয়তো তুই শুধু ছবি হয়ে থেকে যাবি কৌম-আয়নায়
কিন্তু ওই তর্জনী তোলা ভুলবে না কেউ
সশস্ত্র পুরুষদের তোর ধমকানি এবং হুঁশিয়ারি
আমার আশিতম জন্মদিনে সবচেয়ে দামি উপহার
তুমি কেমন গো
তোমার কবিতা যেন কেমন-কেমন
এরকম লেখো কেন
ভালো কবিতা লিখতে পারো না
অন্য সবাই যেমনটা লেখে ?
জিগ্যেস করল তরুণী
বললুম : এরকম মানে ?
এরকম মানে কেমন যেন বাউল বাউল
দেহতত্ব তোমার কবিতা জুড়ে
রসে-রসে টুপটুপে
সেই প্রথম থেকেই লিখছ এই রকম কবিতা
কেন গো ?
জিগ্যেস করল তরুণী
বললুম : বাউল বাউল মানে
বাউলদের তো সঙ্গিনী দরকার হয়
তাছাড়া কেমন করেই বা দেহতত্বের গান লিখব
সঙ্গিনীই তো নেই
এই বুড়ো বয়সে কেই বা হতে চাইবে সঙ্গিনী ?
মেয়েটি বলল : কেন, আমি !
রেডিও
দেখি সমুদ্রতীরে একপাশে রেডিও আরেকপাশে মগ রেখে
সন্ধ্যাবেলায় প্রাতঃকম্মো সেরে নিচ্ছে কোনো ফুটপাথবাসী
সাগর ঢেউয়ের দিকে মুখ করে যাতে ওর মুখ কেউ দেখতে না পায়
উলঙ্গ পেছন তো মোটামুটি সবায়ের একইরকম
রেডিও রয়েছে পাশে জ্ঞানের কথা শুনতে নয়
নেতার নিয়মিত বাণী ওকে সুরক্ষা দেবে
এই সময় পুলিশ বা কর্পোরেশনের লোক এসে ঘাড় ধরে
লকাপে পুরবে না
চাইবে না ঘুষ বা খুচরো জরিমানা
রেডিওটা গ্রাম থেকে তাই তো এনেছে
সেখানে অকেজো বোবা মাচায় পড়েছিল ঝুলধুলো মেখে
তিরিশ বছর আগে বিয়েতে যৌতুক পেয়েছিল
রাষ্ট্রের ইঁদুরেরা
হলুদ ওয়াটের টুনি ঝুলে আছে বটে কিন্তু জ্বালেনি
চিটচিটে অন্ধকারে নেংটি ইঁদুর সরসরে উঠে এলো
আমারই প্যান্টের ভেতর দিয়ে খাবারের খোঁজে
ঝুলে থাকা ধেড়ে ইঁদুরটাকে দেখে
চমকে পালিয়ে গেল ভয়ে কাতুকুতু দিয়ে
হলুদ ওয়াটের টুনি জ্বালেনি কেননা
পাশের লকাপে
তিনটে বেশ্যাকে এনে পুরেছে সন্ধ্যায়
কন্সটেবলদের হফতা
ঠাণ্ডা সিমেন্টের মেঝে, ধড়কনের ধড়াস গালাগাল
ঘেমো ধর্ষণের আধভিজে আওয়াজ এর আগে
শুনিনি, তাল দিয়ে গালাগাল আওয়াজের শিরশিরেভাব
রাষ্ট্রের ইঁদুরদের রাত্তিরের মুফতের খেলা