এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • জোক্‌স্‌ এর জার্নাল [ আমার গুরু তারাপদ রায় কে প্রণাম জানিয়ে শুরু করছি। কোনো টোকাটুকি হয়ে গেলে মাফ করে দেবেন স্যার। ] 

    Atanu Majumdar লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ | ২৭ বার পঠিত
  • এটা নিছকই একটা জোকস, এক বন্ধুদের আড্ডায় শুনেছিলাম। এর সাথে রাজনীতির কোন যোগ নেই। একজন মন্ত্রী তার অধঃস্তন অফিসারকে বল্‌ছিলেনঃ তোমার আইডিয়া টা ভেগু। যাকে বলছিলেন, তিনি একটু ঘাবড়ে গিয়ে বললেনঃ কথাটা স্যার ভেগ। মন্ত্রীও একটু ঘাবড়ে গিয়ে বললেনঃ সরি, ওটা স্লিপ অফ দি টাঙ্গু। অধঃস্তন অফিসার এবারে একটু সাহস পেলেন। মন্ত্রীরা সাধারনতঃ সরি টরির ধার ধারেন না। মন্ত্রীকে শুধরে দিয়ে বললেনঃ টাঙ্গু টা স্যার ভুল উচ্চারণ হয়ে গেল, সঠিক উচ্চারণ হল টাঙ্‌। এবার কিন্তু মন্ত্রী আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না। বিরক্তি সহকারে বলে উঠলেনঃ ডোন্ট আরগ। আমরা জোকস টা শুনে সেদিন খুব হেসেছিলাম। কিন্তু ভেবে দেখেলে এতে মন্ত্রীর কোন দোষ ছিলনা। এটা আসলে ইংরেজী ভাষার খামখেয়ালিপনা। আজকে এটা লিখতে গিয়ে আরেকটা কথা মনে হল। আরে, এটাই তো আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স। আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স কিন্তু ঠিক এইভাবেই কাজ করে। আপনি যদি কোন এ-আই এপ্লিকেশনকে কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল বারবার ফিডব্যাক দিতে থাকেন, সে কিন্তু ঠিক এই পদ্ধতিতেই শেখে। খেয়াল করে দেখবেন, যারা রাজনীতি করে শেষপর্যন্ত মন্ত্রী হয়ে উঠতে পারেন তারা কিন্তু সাংঘাতিক রকমের ইনটেলিজেন্ট। কিন্তু যেহেতু এটা আর্টিফিসিয়াল, তাই মাঝে মাঝে গোলমাল হয়ে যায়। যারা আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স-এর অন্ধ ভক্ত, তারা মনে রাখবেন আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স সফট্‌ওয়ার ও কিন্তু এই রকমের গোলমাল করে ফেলে, কাজেই সাবধানে নাড়াচাড়া করবেন।

    সাম্প্রতিককালে আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স কিন্তু আরো বেশী ইনটেলিজেন্ট হয়ে যাচ্ছে। আরো বেশী ইনটেলিজেন্ট মানে হল যা শেখার খুব তাড়াতাড়ি শিখে ফেলছে। উপরের জোক্‌স্‌ টায় দেখুন – মন্ত্রীমশাই -কে দুবার ফিডব্যাক দেওয়ার পর তৃতীয়বারে উনি প্যাটার্ণটা ধরতে পেরেছিলেন। ইংরেজী ভাষার র‍্যান্‌ডমনেসের জন্য উনাকে দোষ দিলে হবে কেন? এই কয়েকদিন আগে একজন সত্যিকারের মন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বললেনঃ বন্দেমাতরম গানের রচয়িতা বঙ্কিমদা। অনেক বাঙালী তাকে হ্যাটা করেছেন, আমি কিন্তু তাদের দলে নেই। তার আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্সকে যেমন ফিডব্যাক দেওয়া হয়েছিল, তিনি সেইরকমই বলেছিলেন। আমাদের সাম্প্রতিক আইকনদের আমরা তো দাদা ই বলি – আমরা যখন বলি বুদ্ধদা, বিমানদা আমরা কি তাদের অসম্মান করি ? মোটেই না। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে সুভাষদা বললে একজনকে বোঝায়, আর নেতাজী সুভাষ বললে আরেকজন কে বোঝায়, সেটা জ্ঞানের ব্যাপার, ইনটেলিজেনস্‌ এর ব্যাপার নয়। কিন্তু এবারে তার ইনটেলিজেনস্‌ কে বিশ্লেষণ করা যাক, তাঁকে যেই ফিডব্যাক দেওয়া হল যে বঙ্কিমদা নয়, ঋষি বঙ্কিম অথবা বঙ্কিমবাবু বলুন, উনি কিন্তু সাথে সাথে প্যাটার্ণ টা ধরে ফেললেন। মাস্টারদা সূর্য সেন বলার ঝুঁকি আর নিলেন না। উনি বললেন মাস্টার সূর্য সেন। হ্যাঁ, একটু ভুল হল ঠিক ই, কিন্তু যাকিছু আর্টিফিসিয়াল, সেগুলোতে এরকম ভুল হয়েই থাকে। আপনি বরং ইনটেলিজেন্স এর পরে ফোকাস করুন।

    এইরকমের আরেকটা জোক্‌স্‌ বলে আজকের চ্যাপ্টার শেষ করি। এটা কয়েকদিন আগে কোথায় যেন পড়লাম। এক অবাঙালী কাজের দায়ে পশ্চিম বাংলায় থাকতে এসেছেন। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন, অনেক বাংলা শব্দের আমরা গর্বের সাথে ভুল উচ্চারণ করি, অবাঙালীরা কিন্তু সঠিক উচ্চারণ করেন। সেই অবাঙালী ভদ্রলোক, তিনি অল্প অল্প বাংলা জানেন, কাউকে বোঝাচ্ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের শিক্‌ষা ব্যবস্থা কেন খারাপ। আমরা লক্‌ষমির পুজো ঠিক মত করি না। তাই আমাদের টাকাপয়সা নেই। আমাদের কোন দীক্‌ষাগুরু নেই। এইজন্য আমাদের কোনদিন মোক্‌ষলাভ হবে না। আমাদের যে সর্বনাশ আসন্ন তা তিনি লক্‌ষণ দেখেই বুঝতে পারছেন। আবাসনের সিকিউরিটি গার্ড দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুনছিল। সে একদিন সেই অবাঙালী ভদ্রলোককে কে একা পেয়ে বললঃ আপনার কথা শুনে এখানে সবাই হাসাহাসি করে। আমরা শিক্‌ষা বলিনা, আমরা বলি শিখ্যা, আমরা লক্‌ষমি বলিনা, আমরা বলি লখ্যি। আমরা দীক্‌ষাগুরুকে বলি দীখ্যাগুরু, মোক্‌ষলাভকে বলি মোখ্যলাভ। আমরা লক্‌স্‌ণ দেখতেই পাই না, আমরা দেখি লখ্যণ। অবাঙালী ভদ্রলোক -এর বোধহয় তাড়া ছিল। তিনি দেখলাম সেদিন তর্কের ধার দিয়ে গেলেন না। বললেন “সে ঠিক আছে, আমি শিখে নেব ‘খন। তুমি তাড়াতাড়ি একটা রিখ্যা দেকে দাও তো।“

     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন