স্কুল শেষ হয়ে সব বাচ্চারা বাড়ি চলে গেছে, এখন চারধার শুনশান। খেতে বসেছে জয়ি আর উৎপল। শুকি এসে ঢোকে হঠাৎ, কতকগুলো বাবু এসেছে গাড়ি কোরে।
অফিস ঘরে বসাও, বলে জয়ি, খাওয়া শেষ কোরে যাচ্ছি।
অফিস ঘরে ঢুকে জয়ি অবাক হয় একটু। দুজন ভদ্রলোক বসে আছেন, কালো চশমা পরা একজন। কালো চশমা পরা লোকটাকে দেখে চেনা মনে হয়। বাপন বটব্যালের মতো দেখতে না অনেকটা?
নমস্কার, আমি জয়মালিকা সেন, হাত তুলে নমস্কার করে বলে জয়ি।
কালো চশমা নয়, অন্য মানুষটি উঠে দাঁড়ায়, নমস্কার করে একটু ভাঙা ভাঙা বাংলায় বলে, আমার নাম সুধীর কার্লেকর, আর – এবার বসে থাকা মানুষটিকে দেখিয়ে – ইনি বাপন বটব্যাল।
বাপন বটব্যাল? – উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারে না জয়ি – আমি তো সেটাই ভেবেছিলাম।
আপনি চেনেন আমাকে? বাপন দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলে হেসে।
চিনি না মানে? আমি কতো ছোটবেলা থেকে ফ্যান আপনার !
আপনি আমার ফ্যান? ইন্টেলেকচুয়ালরা আমার ফ্যান হয় নাকি?
আমি তো ইন্টেলেকচুয়াল নই, হেসে বলে জয়ি।
বলেন কী ! আপনি তো বিখ্যাত শিল্পী। শিল্পী, সাহিত্যিক এরা তো সব ইন্টেলেকচুয়াল হয়।
আমি নই, আমি আপনার ফ্যান সেই স্কুলে পড়ার সময় থেকে। আমি আর আমার এক বন্ধু আপনার সিনেমা এলেই দেখতাম। আমাদের শহর তো অনেক দূরে, সেখানে সব সিনেমাই দেরি কোরে আসতো, কিন্তু এলেই আমরা প্রথম সুযোগেই দেখতে যেতাম। আমার বন্ধু তো আপনার ডায়লগ মুখস্ত বলতে পারতো ! আর আপনার ডান্সার দেখবার পর ঘরে দরজা বন্ধ করে আপনার নাচও তো প্র্যাকটিস করতাম আমরা।
এবার কথা বলে সুধীর কার্লেকর, আপনার ফেভারিট রোল কোন্টা?
আয়নায় অজয় খান্নার রোল। আর, এবার সুধীর নয়, বাপনের দিকে তাকিয়ে বলে জয়ি, আপনিও তো ইন্টেলেকচুয়াল ছিলেন ঐ সিনেমাটায়, মনে আছে? ফটোগ্রাফার ! আর কী পিটিয়েছিলেন ড্যানিকে !
ওসব পেটানো ট্রিক শুধু, ও কিছু না, হেসে বলে বাপন।
যাক, ভালোই হলো, এবার বলে সুধীর, তাহলে আপনার এখানে আমরা কাজ করলে আপনার আপত্তি হবে না বলেই মনে হয়।
কী কাজ করবেন? – আগ্রহের সাথে জিজ্ঞেস করে জয়ি।
এবার কথা বলে বাপন, কেন, কমলেশরা বলে যায়নি?
কমলেশ?
ওরা তো এসেছিলো এখানে সাইট দেখতে।
ও, যারা সাইট দেখতে এসেছিলো? এখানে একদিন থেকে গেলো যারা? ওরা তো আপনার কথা বলেনি, ওরা বলেছিলো প্রোডিউসার আর ডিরেক্টর এসে দেখবেন, তাঁদের যদি পছন্দ হয়...
আমিই ডিরেক্টর, এবার কথা বলে সুধীর, আর বাপনদা প্রোডিউসার-কাম-হীরো। আমি বাংলা জানি, তাই বাপনদা আমাকেই সিলেক্ট করেছেন।
বাংলা সিনেমা হবে?
হ্যাঁ, বাংলা। বাপনদার ফার্স্ট প্রোডাকশন।
এবার হঠাৎ প্রসঙ্গ বদলিয়ে বাপন বলে, আমাদের খিদে পেয়ে গেছে। আমাদের সাথে আরও তিনজন আছে, গাড়িতে আছে তারা, খাবার-টাবার কিছু পাওয়া যাবে এখন?
আপনারা একটু বসুন, আমি দেখছি।
শুনুন, বাপন বলে, আপনার এটা হোটেল নয় আমি জানি, কমলেশ বলেছে আমায়। আপনি দেখুন চাল ডিম আর আলু আছে কিনা; ডিমসেদ্ধ, আলুভাতে আর ভাত হলেই হয়ে যাবে আমাদের।
দেখছি আমি, বেরিয়ে যায় জয়ি। একটু পর ফিরে এসে বলে, হয়ে যাবে। গেস্ট হাউজ খুলে দিচ্ছি, আপনারা একটু ফ্রেশ হয়ে নিন, আধ ঘন্টার মধ্যেই হয়ে যাবে সব।
খেতে বসে বাপন বলে, ঘি পেলেন কোথায়?
খাবার দিচ্ছিলো রঘুনাথ, জবাবটা দেয় সে। আমাদের এখানে গোরু আছে, সেই দুধ থেকে ঘি তৈরি হয়, দইও পাতি আমরা রোজ।
লঙ্কা হবে নাকি একটা? – বাপন বলে, বুঝলে সুধীর, আজ যা খাচ্ছো পৃথিবীতে এর চেয়ে ভালো কোন খাবার নেই। ওঃ, কতদিন পর খাচ্ছি এসব !
বিকেলে বাপন বলে, দুদিন থাকবো আমরা। সুধীরের এখন থেকেই কাজ আছে, দুদিন কাজ করবে ও, এরপর কবে থেকে এসে ক্যাম্প ফেলব আমরা জানিয়ে দেবো তোমাকে। এঃ, তুমি বলে ফেললাম...
তুমিই তো বলবেন, জয়ি বলে, আপনি তো কত বড়ো সব দিক থেকেই।
না নাঃ, তোমার সম্বন্ধে অনেক শুনেছি আমি, বয়েসে ছোট হতে পারো, কিন্তু তুমি কিছু ছোট নও। অনেক বড়ো তুমি, অনেক ভালো কাজ করছো।
সুধীর গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায় সেদিন বিকেলেই, বাপন ঘরেই থাকে। কিছুক্ষণ পর খুশিঝোরার ভিতরেই ঘোরাঘুরি করে বাপন খানিকটা, বেরিয়ে যায় হেঁটে গেট দিয়ে, আশপাশে ঘোরাঘুরি করে একা একাই, ওকে মনে হয় কেউ চিনতেই পারেনা এখানে, যারা চেনেও তারা হয়তো বিশ্বাসই করতে পারেনা ওকেই দেখেছে, নিশ্চিন্তে ঘোরাঘুরি করতে পারার স্বাধীনতাটা বেশ উপভোগ করে ও।
ফিরে এসে জয়িকে বলে বাপন, রাস্তার ওপারে অতখানি জায়গা জুড়ে যে চারাগাছ লাগানো হয়েছে সেগুলো তোমরাই লাগিয়েছো?
হ্যাঁ, আমরাই। এখানে বনসৃজন আমাদের একটা ডিক্লেয়ার্ড প্রোগ্রাম।
এই এতো জমি তোমাদের?
নাঃ, সবটাই আমাদের নয়। ভেতরদিকে একটা পুকুর আছে সেটাই শুধু আমাদের। বাকিটা অন্যের জমি, পড়েছিলো। আমরা ওদের সাথে কথা বলে চারাগুলো লাগিয়েছি।
ওঃ, তোমাকে একটা কথা বলি। টিভি দেখো তুমি?
আমাদের এখানে তো টিভি নেই, এখানে থাকলে দেখা হয়না। কলকাতায় গেলে দেখি মাঝেসাজে।
অমিতাভ বচ্চন একটা শো করেছিলো কৌন বনেগা ক্রোরপতি, দেখেছো কখনো?
হ্যাঁ, কখনো কখনো দেখেছি বৈকি।
ঐ শোটার সাকসেসের পর ঐ জাতীয় অনেক শো হচ্ছে আজকাল। বাংলাতেও হচ্ছে একটা চ্যানেলে। 'আমাকেও চ্যালেঞ্জ!' নামে একটা প্রোগ্রাম চলছে খবর রাখো?
খবর রাখে জয়ি। একটা একটা কোরে সব ব্যাপারে মার খেতে খেতে বাঙালিদের এখন প্রায়-শেষ আইকন একজন ক্রিকেট প্লেয়ার, যে ক্রিকেটে বাঙালিদের উৎসাহ ছিলো বরাবরই, কিন্তু তেমন কিছু দক্ষতা ছিলো না কোনদিনই। সেই ক্রিকেটেই এই ছেলেটির অভ্যুদয় ও উত্থান সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বাঙালিদের আত্মসম্মান ফিরে পাবার জায়গা কোরে দিয়েছে খানিকটা। ক্রিকেট থেকে ধীরে ধীরে অবসর নিতে নিতে এই ছেলেটিই এখন একটা বাংলা টিভি চ্যানেলে কুইজ-প্রোগ্রাম করছে নিয়মিত। সারা পৃথিবীর বাঙালি সপ্তাহের একটা নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট সময়ে তার টিভি সেটের সামনে বসে যায় এর প্রোগ্রাম দেখবার জন্যে। কলকাতায় থাকলে জয়িও।
এই প্রোগ্রামের যে প্রোডিউসার, বলতে থাকে বাপন, সে আমার চেলা। ওরা একটা স্পেশাল শো করবে বাঙালি সেলিব্রিটিদের নিয়ে। আমি তো অনেককে চিনি, ও আমাকে বলছিলো, সমাজ-সেবার ভালো কাজ করছে এমন কোন বাঙালিকে যদি চিনি আমি তার নাম রেকমেণ্ড করতে। আমি জাস্ট রেকমেণ্ড করবো না, আমি তোমাকে নিয়ে তৈরি একটা পাঁচ মিনিটের ডকুমেন্টারি দিয়ে দেবো ওকে। বাকিটা ওর ব্যাপার।
আমাকে নিয়ে? – অবাক হয়ে বলে জয়ি – কিন্তু আমি তো সেলিব্রিটি নই।
হয়তো এখনো পুরোপুরি সেলিব্রিটি হওনি, কিন্তু হওয়া উচিত তোমার। তুমি যে কাজ করছো আদিবাসীদের আর এই অঞ্চলের জন্যে, কজন এমন কাজ করে? সুধীরের সাথে আমার কথা হয়ে গেছে, আমাদের শূটিং পুরোপুরি শুরু হওয়ার আগে ও তোমাকে নিয়ে একটা ডকুমেন্টারি বানাবে। ও তোমার সাথে কথা বলবে আলাদা করে, তোমাকে আমি বলে রাখলাম। ছবিটা হয়ে গেলে প্রিন্টটা আমি ঐ চ্যানেলে দিয়ে দেবো। তারপর দেখো, কী হয় !
সে দিনই হাতের কাজ নিয়ে আসে তিন চারটে মেয়ে, ওরা বাপনকে চেনে না। কাজগুলো বাপনকে দেখায় জয়ি, বলে, এগুলোর একটু অর্গানাইজ্ড্ মার্কেটিং করার চেষ্টা করছি, মার্কেটে ঠিক ঠিক কীরকম ডিমাণ্ড সেটা বুঝতে পারলে ওদের একটু ট্রেনিং দেওয়া, এই সব প্ল্যান আছে। আপনি তো অনেককে চেনেন, দেখুন না, কিছু করতে পারেন কিনা।
পরের দিন সকালে স্কুলের ছেলেমেয়েরা আসতে শুরু করলে বাপন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে, কারো গাল টিপে দেয়, চুল টেনে দেয় কারোর। ক্লাসের এক কোণে বসে ওদের লেখাপড়া দেখে, উৎসাহ দেয় উৎপলকে। তারপর ক্লাস শেষ হলে বাচ্চাদের সাথে নাচেও একটু। বাচ্চারা যখন খায়, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখে বাপন।
রাত্রে খাওয়ার সময় জয়িকে বলে বাপন, কাল সকালে চলে যাবো আমরা। ব্রেকফাস্ট তোমার সাথে একসাথে করবো। তখন তোমার সাথে কথা হবে। হাতে সময় রেখো।
আমাদের শূটিং চলবে মোটামুটি দু মাস, বলে বাপন পরের দিন ব্রেকফাস্ট খেতে খেতে। এই দু মাস তোমাদের গেস্ট হাউজটা আমরা দখলে রাখবো। চারটে ঘরের একটাতে থাকবো আমি, একটাতে সুধীর। বাকি দুটোয় আমাদের লোকরাই, অভিনেতা-অভিনেত্রী বা যে-ই হোক্, যখন যার দরকার। কিন্তু বুঝতেই পারছো, মাত্র চারটে ঘরে কুলোবে না আমাদের। এরকম অবস্থায় সাধারণত আমরা টেন্ট খাটিয়ে ফেলি, আর আমাদের ক্রু থাকে টেন্টে। আমার মনে হচ্ছে এখানে সেটা খুব সুবিধের হবে না।
সুবিধের হবে না কেন? আমাদের এখানে তো ফাঁকা জায়গার অভাব নেই।
জায়গার অভাব নেই সেটা তো আমিও লক্ষ্য করেছি, কিন্তু এখন বর্ষা হবে, আর বর্ষা যদি না হয় তেমন, বড্ড ঠাণ্ডা পড়বে কয়েকদিনের মধ্যেই। আমার একটা অন্য প্ল্যান আছে।
কী প্ল্যান?
ঐ যে ছোট দরজাটা আছে তোমাদের ঐ কার পার্কিঙের জায়গাটার পাশে, ওটা দিয়ে বেরিয়ে গেলে তোমাদের যে বিরাট জায়গাটা আছে, যেখানে তোমরা আম-জামের গাছগুলো লাগিয়েছো, গাছগুলোর সামনেই তো অনেকটা ফাঁকা জায়গা আছে, ধরো ওই জায়গাটায় পাঁচিলের ধার ঘেঁসে আমরা যদি একটা ছোট দোতলা বাড়ি বানিয়ে নিই, তাহলে কেমন হয়?
বাড়ি? পুরো একটা বাড়ি?
হ্যাঁ, বাড়িই। দোতলা বাড়ি। আমাদের অনেকগুলো টয়লেট লাগবে, অনেক ধরণের লোক কাজ করে তো একটা শূটিঙের সময়, ঐ বাড়িটায় আমরা সাত-আটটা টয়লেট করবো, তিনটে একতলায় তিনটে দোতলায় মোট ছটা বড়ো ঘর, আর ছোট ছোট ঘর দুটো। ফ্যান আলো এসব লাগিয়ে নিলে, জলের ব্যবস্থা করে ফেললে, আমাদের শূটিং যতদিন চলবে ততদিন আমরা ব্যবহার করলাম, শূটিং শেষ হলে তোমাদের স্কুলটা শিফট হয়ে গেলো এখানে। স্কুলটাও তো বড়ো হবে আস্তে আস্তে।
কিন্তু বাড়ি তো একটা অনেক খরচের ব্যাপার !
তুমি কী মনে করো? একটা ফিল্মের শূটিং কী চাট্টিখানি কথা নাকি? আর খরচের কথা তোমাকে ভাবতে বলেছে কে?
ঠিক আছে, হলে তো ভালোই।
আচ্ছা, এই গেলো এক নম্বর কথা। দু নম্বর হচ্ছে, আমাদের খাওয়া-দাওয়া আর হাউজ-কীপিং। এসব আমাদের নিজেদের দায়িত্ব, আমরা লোকজন নিয়ে আসবো। তোমরা তোমাদের মতো থাকবে, আমরা আমাদের মতো, ঠিক আছে?
ঠিক আছে। কিন্তু কোথায় করবেন সে সব?
সেটাই কথা। ডাইনিং রূম আমরা ঐ বাড়িটাতেই বানিয়ে নেবো, রান্নার জায়গাটা বাইরেই করতে হবে। তোমাদের তো জায়গার অভাব নেই, তুমি দেখিয়ে দেবে কোথায় সেটা করলে তোমাদের অসুবিধে সবচেয়ে কম হয়। আচ্ছা, এবার আসি শূটিঙের কথায়। বেশির ভাগ সময়ে আমরা তোমাদের ঐ দরজার ওপারেই কাজ করবো, কিন্তু কিছু শূটিং আছে তোমাদের বাগানে। বাগানেই শুধু নয়, তোমাদের সামনের এই ঘরগুলো, যে ঘরে এখন তোমাদের স্কুল চলছে সেই হল, গেট থেকে সোজা তোমাদের যে লাল শুরকির রাস্তাটা আছে সেই রাস্তাটা, এগুলো সবই শূটিঙে থাকবে। তোমাদের কম্পাউণ্ডটা এই সিনেমায় একটা আশ্রম। তবে, সুধীর আগে থেকে জানিয়ে দেবে তোমাকে, আমি চাই না এই শূটিংটার জন্যে তোমাদের নিজেদের যে কাজ, তার ক্ষতি হোক।
তাহলে এই হলো মোটামুটি ব্যাপার। তুমি কী এর মধ্যে আপত্তি করার মতো কিছু পেলে?
নাঃ, এখনও পর্যন্ত অন্তত নয়।
ঠিক আছে, একটা সিনেমার শূটিঙে আগে থেকে না-ভাবা অনেক সিচুয়েশনও এসে পড়ে। সেটা আমরা অ্যাডজাস্ট করে নেব, কী বলো?
সে তো ঠিকই, বলে জয়ি।
এবার তাহলে একটা মোটামুটি এস্টিমেট দিই তোমাকে। দু মাস বললাম, কিন্তু সত্তর দিন ধরছি। তোমাদের এই গেস্ট হাউজের কী ট্যারিফ বললে? পাঁচশো টাকা পার রূম পার ডে, তাই তো? মানে, দু হাজার টাকা পার ডে। সত্তর দিনে এক লাখ চল্লিশ হাজার টাকা। তাছাড়া সত্তর দিনের দখলদারি তোমাদের কম্পাউণ্ডে, শূটিং বলে ব্যাপার ! তার জন্যে ধরো অ্যানাদার টূ ফিফটি। তাহলে হলো থ্রী নাইনটি। ফূড থেকে যে প্রফিটটা তোমরা করতে পারতে কিন্তু আমি করতে দিচ্ছি না, সেটার জন্যে যদি এক লাখ ষাট হাজার ধরি তাহলে টোটাল ফাইভ ফিফটি, সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা। ডু য়্যু এগ্রী?
আমি এর কী বুঝি ! আপনি যেটা ভালো মনে করবেন সেটাতেই আমি একমত।
ওকে, আই উইল মেক ইট সিক্স। আর, বাড়িটা তোমরাই রেখে দিও, ওটা তো আর প্যাক কোরে দিয়ে দিতে পারবে না। আমাদের লীগাল টীম সামনের সপ্তাহে তোমাদের এখানে আসবে, তোমাদের সাথে এগ্রীমেন্ট সই করবে, কিছু অ্যাডভান্স দেবে। ওদের সাথেই আসবে আমাদের ইঞ্জিনীয়র-মিস্ত্রী সব। বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে। ওরা দুমাসে কাজ শেষ করবে। পঞ্চায়েত-টঞ্চায়েতের সাথে যা কাজ, ওরাই সামলাবে, ঠিক আছে?
অ্যাবসল্যুটলি।
আমি ফার্স্ট জানুয়ারী টার্গেট ডেট রাখছি শূটিং শুরু করার। তাহলে যাওয়া যাক, কী বলো?
হ্যাঁ, কথা তো হয়েই গেলো সব।
কথা হলো, কাজ হলো না। এই যে দুদিন থাকলাম আমরা সদলবলে, তার খরচটা?
যারা ব্রেকফাস্টের টেবিলে ছিলো তাদের মধ্যে একজনের দিকে তাকিয়ে বাপন বললো, কী মাস্টার?
মাস্টার বলে যাকে সম্বোধন করা হলো সে বললো আমি কুড়ি দিয়ে দিই?
যা তুমি বোঝো !
সবাই উঠে গাড়ির দিকে হাঁটতে শুরু করে। মাস্টার ব্যাগের থেকে একশো টাকার দুটো বাণ্ডিল জয়ির হাতে দেয়। জয়ি বলে, দাঁড়ান, আমি বিলটা নিয়ে আসি।
বাপন একটু হেসে হাত তুলে নিরস্ত করে জয়িকে, তারপর বলে, সব হিসেব মিটিয়ে দিলে হবে ! এই জায়গাটা কোন্ থানা বল তো।
জয়ি বলে, বান্দোয়ান।
কোন্ দিকে?
সুধীর বলে, আমি চিনি, চলুন, দেখিয়ে দেবো।
গাড়ি স্টার্ট দেয়। বাপন হাত নাড়ে, সুধীর দুহাত জোড় করে নমস্কার করে, হাত নাড়ে জয়িও।
পড়ছি ।
দারুণ