কালী পুজো কাটিয়ে কয়েকদিন পর কলকাতা থেকে যখন ফেরে সোমেশ্বর ওর সাথে ব্যাটারি দেওয়া দুটো জোরদার আলো। ব্যাটারিগুলোর চার্জ কমে গেলে যে কোন ইলেকট্রিক পয়েন্ট থেকে রিচার্জ করে নেওয়া যাবে। এ দুটো কিনে দিয়েছে ওর এক বন্ধু। এখানকার লোড-শেডিঙের কথা ভেবে একসাথে বেশ কয়েক-ডজন মোমবাতি কেনার কথা ভাবছিলো সোমেশ্বর। ওর এক বন্ধু ছিলো সাথে। দাম শুনে সে বললো, এর মানে হয় না কিছু। আর সামান্য কিছু বেশি খরচ করলে একটা পার্মানেন্ট ব্যবস্থা হতে পারে। সোমেশ্বরকে সে নিয়ে যায় চাঁদনির বাজারে। সেখান থেকেই ব্যাটারির আলো দুটো কেনা হয়, দামটা সে-ই দেয়, বলে, একটা ভালো কাজ তো করা গেলো। আলো দুটো পেয়ে সোমেশ্বর খুবই খুশি। এর একটাতেই কাজ হয়ে যাওয়ার কথা, বেশি একটা হাতে রইলো।
এই বন্ধুর সাথেই কথা হচ্ছিলো খুশিঝোরার ছেলেমেয়েদের নিয়ে। সেই যে রিমিলকে খেতে দেখেছিলো, আর প্রতুলবাবুর কাছে শুনেছিলো ওদের প্রতিদিনের কী খাদ্যতালিকা, তারপর থেকেই কিছু একটা করার কথা ভাবছিলো সোমেশ্বর। স্কুলের ছাত্রসংখ্যা মাত্র একশো এগারো, এটা শুনে ওর বন্ধু বলে, এটা তো কিছুই না সোম। আজকাল একটা ডিমের দাম পাঁচ টাকার বেশি নয়। খুশিঝোরার প্রতিটি ছাত্রছাত্রীকে রোজ সকালের খাবারের সাথে একটা কোরে ডিম খাওয়ালে সারা মাসে বারো-তেরো হাজার টাকার বেশি খরচ হয় না। আমরা যদি পনেরো জন বন্ধুর কাছ থেকে মাসে মাত্র হাজার টাকা করেও সংগ্রহ করি, এই টাকাটা উঠে গিয়ে প্রতি মাসে দু-তিন হাজার টাকা বেঁচে যাবে, সেটাকে অন্য কাজেও খরচ করা যায়। এ তো কাল থেকেই শুরু করা যেতে পারে। এটা কী এমন একটা ব্যাপার ! এমনিতে পেট-ভরা ভাত তো ছেলেমেয়েরা পাচ্ছেই, তার সাথে রোজ একটা করে ডিম হলে যথেষ্ট পুষ্টি। আর তাছাড়া, দিস উইল ওনলি বী দ্য বিগিনিং। একবার ঠিক ঠিক মতো শুরু যদি হয়ে যায়, টাকা আরও অনেক আসবে, অনেকেই দেবে। তখন অনেক কিছু করা যাবে। শুধু কশন একটাই, সেটা কিন্তু মাথায় রেখো।
কী? – প্রশ্ন করে সোমেশ্বর।
টাকাটা ঠিক ঠিক মতো খরচ হওয়া। জুতোর ব্যাপারে যা শুনলাম তোমার কাছে, তাতে এটা বোঝা যাচ্ছে যে টাকাটা কোনমতেই খুশিঝোরার ম্যাডামকে দেওয়া চলবে না। ডিম কেনার দায়িত্ব আর বাচ্চাদের রোজ সকালে সেগুলো খাওয়াবার দায়িত্ব তোমাকে নিজেকে নিতে হবে।
সেটা বুঝেছি, বলে সোমেশ্বর। বাচ্চাদের সকালের খাবারটা নিজের হাতে রোজ রান্না করেন প্রতুলবাবু। ওঁর সাথে কথা বলে দেখবো। এর মধ্যে আমি কয়েকজনের সাথে কথা বলে যাচ্ছি, তুমিও কথা বলতে থাকো। যতজনই রাজি হোক কন্ট্রিব্যুট করতে, আমরা যে কোনদিনই কাজটা শুরু কোরে দিতে পারি, সামান্যই টাকা তো। খুশিঝোরার আশপাশে একটা ব্যাঙ্ক-অ্যাকাউন্ট খুলবো আমি। সব ব্যবস্থা পাকা হয়ে গেলে অ্যাকাউন্ট নাম্বার জানিয়ে দেবো যারা যারা টাকা পাঠাতে রাজি হবে সবাইকে। একটা কোরে ম্যাণ্ডেট নিজের নিজের ব্যাঙ্কে দিয়ে দিলে টাকাটা সোজা পৌঁছিয়ে যাবে আমার অ্যাকাউন্টে।
সম্ভৃতাও বসে ছিলো না কলকাতায় গিয়ে। কয়েকটা বড়ো বড়ো জুতোর দোকানে কথা বলে ও। শেষ পর্যন্ত একটা দোকান রাজি হয় প্রতি আট জোড়া জুতোয় এক জোড়া করে ফ্রী দিতে। মাপ-টাপ পাঠিয়ে অর্ডার দিয়ে দিলে এক সপ্তাহের মধ্যেই পাঠিয়ে দেবে ওরা।
জয়মালিকা যথারীতি বান্দোয়ানে গিয়ে জুতোর ব্যাপারে খোঁজ নেবার সময় পায়নি। সম্ভৃতাকে বলে সোমেশ্বর, এখান থেকে কলকাতায় মাপ পাঠাবার কোন মানে হয়না। মাপ নেবে কে? আমরা নিজেরা নিলে ভুল হবেই। প্রত্যেক সপ্তাহেই তো আমরা বান্দোয়ান যাচ্ছি, এর পর যেদিন যাবো ওখানে কথা বলে দেখবো।
বেশ নাম-করা দুটো জুতোর কম্পানীর এজেন্টের খোঁজ পাওয়া গেলো বান্দোয়ানে। একেবারে রাস্তার ওপর যেটা তার সাথেই কথা বলে ওরা। কলকাতায় যেরকম খরচ, প্রায় একই। সোমবার স্কুলে ছেলেমেয়েদের জানিয়ে দিলেই হবে, মঙ্গলবার ওরা মাপ নিতে আসবে। সেদিনই রাতে খাওয়ার সময় উৎপল-জয়মালিকাকে বিশদ জানায় সোমেশ্বর। মাপ অনুযায়ী একটু হেরফের হতে পারে দামের, তবে কুড়ি হাজার টাকার মধ্যে নিশ্চয়ই হয়ে যাবে, এরকমই বলেছে ঐ এজেন্ট। জয়মালিকা বলে, ভালোই হলো। লোকাল সাপ্লাই, মাপজোকের গণ্ডগোল হলে বদল-টদল করতে ঝামেলা কম হবে। পঁচিশ হাজার টাকা তো পেয়েছি আমরা, মোজার দামও উঠে যাবে।
তাহলে সোমবারের অ্যাসেমব্লিতে যদি খবরটা দিয়ে দেন, উৎপলকে বলে সোমেশ্বর, মানে সব ছেলেমেয়েরা যেন মঙ্গলবার আসে স্কুলে, পায়ের মাপ নিতে লোক পাঠাবে বলেছে ওরা।
আমি বলতে যাবো কেন, আপনারাই বলবেন, নাম করবেন আপনারা আর বলবো আমি? – উত্তেজিত জবাব উৎপলের।
জবাব দেয় না সোমেশ্বর, সে আর সম্ভৃতা খানিকটা অসহায় ভাবে তাকায় জয়মালিকার দিকে।
জয়মালিকা হাসে। বলে, উৎপল, ওঁরা দিচ্ছেন এ কথা তো ওঁরা বলেননি। দিচ্ছে খুশিঝোরা। ওঁরা টাকাটা এনে দিয়েছেন, কিন্তু দিয়েছেন তো আমাদের। আমরাই দিচ্ছি। স্কুল তো তোমার, তুমি ছাড়া অ্যাসেমব্লিতে বলবে কে?
সেদিন আর কোন কথা হয় না, চোখের ইঙ্গিতে জয়মালিকা বুঝিয়ে দেয় সে-ই সামলিয়ে নেবে।
মঙ্গলবার কিন্তু পায়ের মাপ নিতে এলো না কেউই।
সেদিন স্কুলের ছুটির পর বান্দোয়ানে যায় সোমেশ্বর। এজেন্টের দোকানে গিয়ে জিজ্ঞেস করে, কী ব্যাপার, আপনারা তো পাঠালেন না কাউকে পায়ের মাপ নিতে !
যে উত্তরটা পায় সোমেশ্বর, সেটা খানিকটা রূঢ়ই, আপনারা আগে নিজেদের মধ্যে ঠিক করুন কী করবেন, কোথা থেকে কিনবেন। কালকেই তো আপনাদের একজন বলে গেলো কাউকে পাঠাবার দরকার নেই, আমাদের কাছ থেকে জুতো কিনবেন না আপনারা।
কে বলে গেলো?
আমরা কী সবায়ের নাম জেনে বসে আছি নাকি? ঐ যে কালো মতো একজন আছে, মোটাসোটা, আপনাদের ওখানে। সে-ই।
সোমেশ্বর বুঝতে পারে না কী করবে। কলকাতা থেকে ফিরে বান্দোয়ানের স্টেট ব্যাঙ্কে সে একটা অ্যাকাউন্ট খুলেছে। আজকাল এসব কাজ সহজ হয়ে গেছে, ওর কলকাতার অ্যাকাউন্টের পাস-বুকেই কাজ হয়ে গেলো। পাস-বুকে এখন বার-কোড থাকে, তাতেই পরিচয়। এখানে নতুন কোরে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্যে কাউকে প্রয়োজন হলো না। ভেবেছিলো সব ছেলেমেয়ে জুতো পেয়ে গেলে ডিমের কথাটা উত্থাপন করবে জয়মালিকার কাছে। সবটাই কী গণ্ডগোল হয়ে গেলো?
সম্ভৃতা বলে, মনে হয় না এরা টিকতে দেবে আমাদের।
ঠিকই, আমারও মনে হচ্ছে তাই। তাহলে কী করবো, হাল ছেড়ে দেবো? অপমানটা কতো দূর পর্যন্ত করতে পারে একটু দেখতে ইচ্ছে করছে। কলকাতা থেকে ফেরার পর এখনো পর্যন্ত সন্ধ্যেবেলার পড়ানোয় ঝামেলা হয়নি। রোজ পড়ছে ছেলেমেয়েরা। এ সপ্তাহটা দেখি কোথায় দাঁড়ায়।
শনিবার আই-আই-টির দলটা আবার হাজির। এসেই সোমেশ্বরের খোঁজ, এখনো টিকে আছেন সোমদা?
টিকে? হ্যাঁ, টিকেই আছি কোনরকমে, তবে বেশিদিন টিকবো না বোধ হয়।
কেন, কী হলো?
জুতোর ব্যাপারে সমস্ত ঘটনাটা বলে সোমেশ্বর, ওর ভাইয়ের ব্ল্যাঙ্ক চেক দেওয়া থেকে বান্দোয়ানে গিয়ে জুতোর কম্পানীর এজেন্টকে উৎপলের বারণ কোরে আসা পর্যন্ত। এমনকী ওর ডিম খাওয়ানোর পরিকল্পনাটাও।
গোড়াতেই ভুল কোরে ফেলেছেন, বলে ওরা, চেকটা জয়িদিকে দেওয়াটা ঠিক হয়নি। এখানে ব্যাপারটা কীরকম জানেন? ছেলেমেয়েদের জুতো যদি পরাতে হয়, জুতো কিনে দিতে হবে, টাকা নয়। লক্ষ্য করেছেন কী, আমরা যখন আসি, বাজার-টাজার কোরে দিয়ে যাই, নিজেরা রান্না কোরে খাওয়াই বাচ্চাদের, কিন্তু টাকা দিই না কখনো।
খুশিঝোরার গেট থেকে বেরিয়ে বাঁদিকে ঝোরাটার দিকে একটু হাঁটলে রাস্তার ওপর একটা ছোট দোকান আছে। চা পাওয়া যায়, আর চপ-মুড়ি। আই-আই-টির এই দলটা এলে সকালেই চলে আসে এখানে, চপ-মুড়ি-চা খেয়ে আড্ডা দেয়। পরের দিন সকালে সোমেশ্বরকে ওরা ডেকে নিয়ে এলো। নানা কথায় খুশিঝোরায় ওরা এসে পড়লো কীভাবে সেই কথা উঠলো। ওদের অনেক সীনিয়র একজন দাদা এখানে প্রথম এসেছিলেন জয়মালিকার ছবির এগজিবিশনের সময়। জায়গাটা ওঁর ভারী ভালো লেগে যায়, তারপর থেকে প্রায়ই আসতেন, ওদের দুয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আসতেন। সেই ওদের আসা শুরু। ওরা যে মাঝে মাঝেই আসে এখানে সে শুধু জায়গাটার টানে।
তবে হ্যাঁ, জয়িদির ধীরে ধীরে বদলে যাওয়াটাও লক্ষ্য করছি, বলে ওদের মধ্যে একজন। শুরুতে ছিলেন শিল্পী, শিল্পী আস্তে আস্তে পরিবেশবিদ এবং সমাজসেবী হলেন, এখন ঝোঁকটা গুরুগিরির দিকে।
শুধু গুরুগিরিটাই বলছো কেন, পরিবেশজীবী হয়ে ওঠাটাও বলো, বলে ওঠে ওদের মধ্যে আর একজন।
পরিবেশজীবী? – খানিকটা অবাক হয়েই প্রশ্ন করে সোমেশ্বর।
হ্যাঁ, গত পাঁচ বছরে যতো গাছ লাগিয়েছেন সব সোনাঝুরি আর য়্যুক্যালিপটাস; যতই ওঁর 'ধরণী'র ক্ষতি করুক, তাড়াতাড়ি বাড়ে, আর বিক্কিরিও হয় ভালো দামে।
প্রথম যে কথা বলছিলো সে-ই শুরু করে আবার, ঠিকই, তবে এই সব পরিবর্তন আজকাল হয়েছে। একেবারে প্রথমের দিকে কিন্তু এখনকার ডাইনিং হলটায় শুধুমাত্র কয়েকটা বাচ্চাকে নিয়ে স্কুলটা শুরু করেছিলেন জয়িদি। তারপর বাস এলো। বাসটা আসার পর থেকে একটা দারুণ কাজ শুরু করলেন উনি, একেবারে জঙ্গলমহলের ভেতরের গ্রামগুলোর থেকে একটা একটা করে বাচ্চাকে ধরে নিয়ে এসে স্কুলে ভর্তি করে দিলেন। আমরা স্কুলের বাসে গিয়েও দেখেছি কেমন সব গ্রাম। শুনেছি তখন জলধর নামে এক সাঁওতাল যুবক ছিলো জয়িদির সঙ্গে, সে নাকি পড়াতোও ভালো। কিন্তু সে চলে যাওয়ার পর থেকে আর নিয়মিত পড়াবার মতো ভালো লোক জোগাড় করা যায়নি। সব আমাদের মতো ক্যাজুয়াল শিক্ষক, দুয়েকদিনের জন্যে এসে একটু-আধটু পড়িয়ে চলে যায়, ছেলেমেয়েদের কোনই কাজে লাগে না সেই পড়ানো। আপনারা যখন এলেন তখন মনে হলো এবার বোধ হয় শিক্ষকের সমস্যার একটা স্থায়ী সমাধান হলো, কিন্তু আপনাদের অভিজ্ঞতা শুনে বুঝতে পারছি আমাদের যে ধারণাটা ছিলো সেটাই ঠিক।
কী ধারণা? কী ধারণা ছিলো আপনাদের?
আসলে সত্যি সত্যি পড়ানোয় আগ্রহী নয় খুশিঝোরা। সত্যি সত্যিই যদি পড়াতে হয় তাহলে পড়ার সময় তো দিতে হবে ছেলেমেয়েদের। সেটা দিলে চলবে কী কোরে? ওদের অন্য অনেক কাজ আছে। পড়ানো হচ্ছে, একটা ভালো কাজ হচ্ছে, লোককে এটা দেখানোটাই আসল কাজ। গেস্টরা দেখছে আই-আই-টির প্রফেসররা পড়াচ্ছে কোনদিন, কোনদিন বা অন্য কোন য়্যুনিভার্সিটির প্রফেসর। তাতে টাকা আসে, নাম-ডাক হয় !
খানিকটা সঙ্কোচের সাথে বলে সোমেশ্বর, এতো কিছু জেনেও আপনারা...
হুঁ, এতো কিছু জেনেও। কারণ কী জানেন সোমদা, এতে মিউচুয়াল বেনিফিট। আমরা তো আপনাদের মতো কোন মিশন নিয়ে আসি না, আমরা আসি দুদিনের জন্যে রিল্যাক্স করতে, জায়গাটা ভালো লাগে, তাই। খাতির পাই, একটু-আধটু বাজার-টাজার করি, ছেলেমেয়েদের খাওয়াই-টাওয়াই। যখন ফিরি, বেশ একটা মানসিক তৃপ্তি। ভালো কাজ করার মানসিক তৃপ্তি। জয়িদি খুশি, খুশি আমরাও।
এইসব কথা বলতে বলতে হঠাৎ স্কুলের বাসটা এসে দাঁড়ায় চায়ের দোকানটার পাশে। জয়মালিকা বান্দোয়ান যাচ্ছিলো, আই-আই-টির দলবলকে দেখতে পেয়ে দাঁড়িয়ে গেছে, যাবেন নাকি বান্দোয়ান?
হ্যাঁ, আমরা তো যাবই, সোমদাও যাবেন।
উঠে আসুন, উঠে আসুন।
বান্দোয়ানে গিয়ে প্রচুর বাজার করা হয়। জয়মালিকা যা কেনে তার পরেও প্রফেসররা কেনে অনেক কিছু। এ সব কেনা হয়ে গেলে ওদের মধ্যে একজন বলে জয়মালিকাকে, চলুন ছেলেমেয়েদের জুতোর অর্ডারটা দিয়ে যাই।
জুতোর অর্ডারটা? জয়মালিকা একবার সোমেশ্বরের দিকে তাকায়, তার পর তাকায় এক এক কোরে বাকিদের দিকে। বাসটাকে এক জায়গায় দাঁড় করায় সে। তারপর সোমেশ্বরের দিকে তাকিয়ে বলে, চলুন।
প্রমাদ গণে সোমেশ্বর। যে এজেন্টের দোকানে ও গিয়েছিলো সেখানেই না পৌঁছিয়ে যায় জয়মালিকা ! তাহলে কেমন ব্যবহার পাবে ভাবতে পারে না ও।
কিন্তু হলো না তেমন কিছুই। সেই দোকানটা পেরিয়ে আরও খানিকটা হেঁটে দ্বিতীয় এজেন্টের দোকানে ঢোকে জয়মালিকা। বাকিরাও। দোকানী অপ্রস্তুত। এতো জনকে একসাথে বসাবার জায়গা কোথায়?
কথাবার্তা হয়ে যায়। মঙ্গলবার মাপ নিতে পাঠিয়ে দেবে ওরা। ঠিক সকাল নটায় পৌঁছিয়ে যাবে ওদের লোক। সব ডেলিভারি হয়ে যাবে এক সপ্তাহের মধ্যে।
এবার কথা বলে প্রফেসরদের একজন, আজ রোববার, তাই তো?
হ্যাঁ, রোববারই তো, বলে দোকানী।
এই জুতোগুলো ছেলেমেয়েদের দেওয়া হবে সামনের রোববারের পরের রোববার। আমরা আসবো খড়গপুর থেকে জুতোগুলো দেবার জন্যে। বুঝতেই পারছেন স্কুলের এটা একটা উৎসব। ঠিক দেবেন তো তার আগে? ফেল করবেন না তো?
না স্যর, বললাম তো আমরা এক সপ্তাহের মধ্যেই দিয়ে দেবো ডেলিভারি।