ঘুম থেকে উঠে একটা কেমন যেন অন্যরকম ঠেকছে চারপাশ। চোখ খুলতেই মাথার উপর একটা নোংরা মশারি। তাতে নানা সাইজের ফুটো। কয়েকটা ফুটো আবার সেলাই করা। কয়েকটা সেফটিপিন মারা। তার উপরে কাঠের কাঠামোতে বাঁশের ছাউনির ছাদ। তেলচিটচিটে বালিশ মাথায় শুয়ে আছি। একটা বেডকভার দিয়ে আমার শরীর ঢাকা। সেটাও তেলচিটচিটে। উঠে বসলাম। মনে পড়ল কাল সন্ধ্যায় আমার ছোটবেলার বন্ধু কেতকী দত্তের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলাম। এসেছিলাম বলতে হঠাৎ নেওয়া সিদ্ধান্ত। কলকাতার এই মেকী জীবনযাত্রা ভাল লাগছিল না। ক্লান্ত হয়ে উঠছিলাম কোম্পানির ব্যালেন্সশীট ঘাঁটতে ঘাঁটতে। টার্নোভারের গ্রাফ চড়ছে তো চড়ছেই। ... ...
ইয় ... ...
ঘোর বর্ষা। ঘোর কলমভার। ঘোর কলমবাজি। খাতা থেকে আকাশ মুখ তুলতে পারছে না। আকাশ ধূসর, আকাশে নীল নেই - শেষ বিকেলের অস্তরাগটুকুও ছিলনা। অফিসফেরতা এই এক রোখ চেপে বসে। দিনের সব তাপ শুষে নিতে চায় কবিতায়। মুখ তুলছে না। চোখ বুজছে না। খাতার কাছে সে অসীমান্তিক। খাঁ খাঁ ঘরে কলম পেষাইয়ের শব্দ। বাকি সব শব্দ জব্দ। শব্দে ভয়। শব্দ মনোরোগ। শব্দ জীবনবিতৃষ্ণা। সব শব্দ খাতায় পুরে কোন ইমারত তুলবে? ইত্যবসরে ঘরে ঢুকছে কেউ। ইঁদুরের মতো চুপিচুপি। দরজার বাইরে হাই হিল সন্তর্পনে খুলে রাখলো। বর্ষাতি ছিল না, ছিল ছাতি। টুক করে দেওয়ালে হেলান পেল সে। ইতস্ততঃ করছে। ... ...