এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সিএস | 49.37.***.*** | ২২ অক্টোবর ২০২১ ২২:১৫500061
  • দ্বিতীয় পয়েনটা হল, উনিশ শতক নিয়ে কচলানো। সেটা পাওয়া গেছে এই মতটির মধ্যে যে ইংরেজধন্য বাবুশ্রেণীর পুজোর সাত্ত্বিকতা ভুলে গিয়ে মদ্য - খাদ্য - নচ গার্লের ব্যবস্থা করে ইংরেজদের খুশী করার সাথে বর্তমানে সেল্ফি তোলাকে যুক্ত করার চেষ্টাতে । প্রাজ্ঞ বুদ্ধি দিয়ে এই বালখিল্য যোগটা কি করে আসে সেটা বুঝিনি, যদি না ভাবি বাবুরা তখনও  টাকা খরচ করত  আর এখনও  টাকা খরচ করে ফোন কিনে সেল্ফি তুলে আমোদ হয় ! বা দুই সময়তেই লোকে পুজোর আমোদ করে বলে সেই আমোদের চরিত্র একই ,ঔপনিবেশিক ! যদি এও দেখি যে এম এল এ সাহেব বুর্জ খলিফা খাড়া করেছে, পয়সা, স্পনসর ইত্যাদি জোগাড় করে স্পেক্ট্যাকল তৈরী করছে এবং সেই স্পেকট্যাকল বা আমোদ করা হচ্ছে নিজের ক্ষমতা বা প্রতিপত্তি বা জনপ্রিয়তা বাড়াবার জন্য, কিন্তু সেসবও নির্ভর করে জনগণের ওপরেই। জনগণকে খুশী করাই তার উদ্দেশ্য এবং সে জনগণের ওপর নির্ভরশীল তার নাম ফাটানোর জন্য, 'জনসংযোগের' জন্য , কিন্তু এখনকার  নাম ফাটানো আর আগে বাবুরা মনিবদের খুশী করে  নিজের নাম ফাটাতো, গুণগতভাবে  এই দুটো সম্পূর্ণ আলাদা; অতএব পুজোর মধ্যে  সেই ঔপনিবেশিক সময় বা প্রক্রিয়াই চলছে, এই যুক্তিটি একটি আধা-সমাজক্রিটিসিজম কিন্তু দুই সময়ের দুই পরিস্থিতির  মধ্যে  মিল নেই। অথবা নচ গার্ল এনে 'মোচ্ছব' করার চেষ্টা বা  দেদার খানা - পিনার বন্দোবস্ত , সেরকম করার ক্ষমতা কোন পুজো ওয়ালাদের  নেই ।  নেই ,  কারন পুজো যারা  করছে  আর পুজো যারা  দেখছে, তাদের র্সাথে দেড়শো  বছর আগে র্মানুষের সামাজিকভাবে কোন মিল  নেই।  হ্যাঁ, এখনকার পুজো নিয়েও নকশা লেখা যায় নিশ্চয়, কিন্তু তত্ত্ব করতে গিয়ে  একই তত্ত্ব সব জায়গায় ফিট করতে গেলে বর্তমানটাই ফস্কে যায়। তত্ত্বের সেটাই সমস্যা, বর্তমানটাকে ধরতে গেলে অন্য তত্ত্ব লাগে, একবগ্গা ঔপনিবেশিকতা দিয়ে বর্তমানের সব ফাঁক - ফোঁকর ধরা যায় না।
     
     
  • bodhisattvagc dasgupta | ২২ অক্টোবর ২০২১ ২৩:২৭500064
  • বাংলায় বিজেপির বাড়াবাড়ি আরম্ভ হবার পর থেকে খুব সিস্টেমেটাকালি হোয়াটসঅ্যাপ ক্যাম্পেন শুরু হয়েছে , থীম পুজো , কলকাতার পুজোর , সব পুজোর সামাজিক বড় পার্টিসিপেশন এর বিরুদ্ধে । এবং এই ক্যাম্পেন গুলোতে বারোয়ারী পুজোকে এই স্খলনের আদিরূপ হিসেবে দেখানো হয়েছে। সনাতন ধর্মকে , কোনো একটি টাইমলেস (যেটা টিপিকাল রাইট উই়ং ট্রোপ) বিশুদ্ধতা কে আক্রান্ত হিসেবে দেখানো। 
    আমি অনেক ভেবেচিন্তে ই এই বিষয় তৎপরবর্তী নর্তন কুর্দন কে আদর্শ আর এস এসীয় ভারতীয় সমাজের বর্ণ হিন্দুদের আভ্যন্তরীন বিতর্ক হিসেবে দেখেছি।
     
     
    ঠিক ই বলেছো পপুলার টেস্ট এর ট্রানজিশন নিয়েও তো কাজ হতে পারে এবং সেটাকে পুরোনো জাতি নির্মাণ  প্রকল্পের বাইরে নিয়েও করা যায় , সেটা হয় না হবেও না। 
    আমার দু তিনটে টুকরো স্মৃতির কথা বলি। আমি শ্রীনিকেতন সুরুল জমিদার বাড়ির পুজো ছাড়া কিছুই বিশেষ দেখিনি। 
    পরে বোলপুর কাশিমবাজার আর বর্ধমান নীলপুর আর তেঁতুল তলায় দেখলাম পেছনে সীন আঁকা পুজো আর চন্দননগরের লাইট। তারপরে একবার মামাবাড়ি এসে কলকাতায় যোধপুর পার্কে আলো দেখে চোখ্যধাঁধিয়ে গেল। তারপরে খানিকটা বড় হবার দেখলাম মহম্মদ আলি পার্কে কাগজ আর কাপড় দিয়ে করা দাক্ষিনাত্যের মন্দির আর বাবুবাগানে তাজমহলের মত প্যান্ডেল। তখন বাজেট বেড়েছে থীম পুজো এসেছে । আমার খুবই প্রিয় এবং খুবই আদ্যপান্ত সাম্প্রদায়িক এক আত্মীয়  ছিলেন তিনি বাবুবাগান দেখে খুব গোমড়া হলেন।  আরো গোমড়া হলেন আমি সিপিএম এর স্টল থেকে কিছু ব ই কেনাতে। কিন্তু আবার রাণীকুঠি হাউজিং একটি এফিমিনেট প্রতিবেশী জন হেনরি গানের সঙ্গে নাচল পুজোর অনুষ্ঠানে তাতে হৈহৈ করে ব্রাভো আই আম সো প্রাউড ইত্যাদি বলে চেঁচামেচি করলেন। 
     
    এর পরে নাইনটিজ এ বেহালা আর বোসপুকূর থীম শুরু হল, আর্ট কলেজের ছেলেরা পুজোয় নামলো। তখন একটা নতুন করে প্রতি মডার্নৎবাংলা রুরাল‌লাইফ দেখা শুরু হল কিন্তু তার সঙ্গে আর্টিস্টিক এক্সপ্রেশনৎশুরু হল এবং তাতে প্রাইমর্ডিয়াল চেতনাকে ভাঙতেও হল। মধুবনী পেন্টিং , লোহাপট্টিতে তারের কাজ, বাদামতলায় জাহাজ ইত্যাদি। 
    তারপরে গ্লোবালাইজেশনের পরে সোনায় মোড়া সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার হল , এবারের বুর্জখলিফা একটা থীম পার্ক মডেল‌ নিয়ে এলো পুজোয় । এর আগে অবশ্য একবার হ্যারি পটার কাসল‌ হয়েছে তবে সেটার এম্ফাসিস শুধু নভেলটিতে তে ছিলৃনা হয়তো। 
    আর আরেকটা তৃণমূলের উত্থানের পরে হয়েছে এ নেতা বাবু দের নামে বিজ্ঞাপন এটা লাতু ছাতু  হুতোমে প্রত্যাবর্তন খানিকটা। 
     
    কিন্তু যাই হোক ১৯৫৯-৬০ এ কিন্তু কলকাতায় কৃষক আন্দোলন এর উপরে পুলিশি অত্যাচারের বিরুদ্ধে ৎপ্যান্ডাল সাজিয়েৎপ্রতিবাদ হয়েছিল জগবন্ধু পার্কে সম্ভবত। সুতরাং কলকাতার পুজো বাংলার পুজোয় পোলিটিকাল এক্সপ্রেশন আর্টিস্টিক এক্সপ্রেশন মানুষের সারা রাত হাঁটা এগুলোতে বা এপ্রসঙ্গে  ট্রাডিশন খোঁজার কোনো অর্থ হয় না। 
     
    মুসলমান ফেস্টিভাল গুলো এই ইউনিভার্সালিটি পায় না এই দুঃখ ছাড়া বাকি গোটাটাই খুব ই পজিটিভ আলর ইন্টারেস্টিং ।
    কত মানুষ একসঙ্গে মজা করছে এর চেয়ে ভালো কি আছে এবং যেখানে রিলিজিওসিটি টাই পেছনের সিটে এতে কনজারভেটিভ ছাড়া আর কারও দুশ্চিন্তা র কারণ দেখি না।
     
  • bodhisattvagc dasgupta | ২২ অক্টোবর ২০২১ ২৩:৪৩500067
  • * প্রতিবেশী একটি ক্লিয়ারলি  এফিমিনেট  ছেলে নাচল তাতে ব্রাভো বললেন।
     
    তাই বলছিলাম বিশুদ্ধতা চর্চা দিয়া সামাজিক ইতিহাস হয় না, জাতি নির্মাণ প্রচেষ্টা  হতে পারে। 
  • bodhisattvagc dasgupta | ২২ অক্টোবর ২০২১ ২৩:৫৩500071
  • এটা নিয়ে কদিন‌ আগে জুতো কন্ট্রোভার্সিতে তিতিবিরক্ত হয়ে লিখতে হলো ঃ
     
    I am not from here , I feel a bit out of place everywhere, not because I am an intellectual misanthrope(don't have it in my bottle) , it is because of personal history. I grew up in Santiniketan but we were not from there. I was always bit torn between Santiniketan's physical isolationism and its claim for being the abode of peace for the world traveller, unwelcoming to common folks yet secretly anti intellectual in the critical contemporary sense since Sartre, at least in the 70s and the 80s. So I enjoyed the wonderful libraries , bookshops , galleries and the quiet they brought yet I never felt I could stay for too long.
    Baba was from a family of railway jobbers who had roots in Barishal. Ma similarly grew up in Basirhat and Kolkata but her folks were from Pabna Pharidpur  her father was again a land revenue official in the colonial set up. I have tried to be the fat man from Birbhum but actually it never worked, after a point I did not understand provincialism I have lived almost everywhere in India and in some big cities of the world as a low level white collar worker , never felt I was from anywhere yet was very curious about each of those places and that includes Kolkata. The language has been  claimed as a country but it is a bogus claim, I am slightly unsure of my literary and linguistic tradition as I like much of what I read in translation or in English, none of which will ever be my language. 
    Bangla Kobita is something, yes I do try to make it my habitat but since I cannot express myself in poetry , it becomes artificially imposed memory  after a point. Politically I am slightly more stable, the thin ice under my feet notwithstanding generally on the left. Kolkata , now a city which is being taken over brick by brick by the  Bengali babu's awakening on the right and of course the sold out fuckers in culture in name of choice , light hearted entertainment and so called shedding of pretention. Amidst all this , I see kids holding hands , readers looking for books, students and women erupting in protests against the NRC and the CAA, non descript faces crowding pro farmer rallies, or making a big deal about right to unionise and then slowly dying. And creating puja pandals that honour the farmers sacrifice or the plight of migrant workers or the landless. I wish the muslim festivals had equally universal appeal. But yeah what the hell, to see perpetrators of injustice being humiliated in a social event, even in a limited sense yes it is a pleasure. These are the moments I feel fucking great about Kolkata 
  • এলেবেলে | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ০০:১০500075
  • আজ্ঞে না, এখানে ঔপনিবেশিক জাবর কাটা নেই। একটি তত্ত্বকে সর্বত্র ফিট করার 'প্রাজ্ঞ বুদ্ধি দিয়ে বালখিল্য যোগ' করারও অপচেষ্টা নেই। সাত্ত্বিকতা নিয়ে তো কোনও খুঁতখুঁতুনিই নেই। বরং বেশ দাপটের সঙ্গে বলার চেষ্টা করা হচ্ছে পুজো = দুর্গাপুজো তত্ত্বকে ফিট করতে গিয়ে ওসব আখাম্বা আর্ট ইনস্টলেশন কিংবা সর্বজনীন উৎসব মার্কা আচাভুয়া টার্মের আমদানি করতে হচ্ছে। এবং এটা করেছেন কলকাতার নিমুড়িনিছুড়িদের উত্তরপুরুষরা। এই কালচারাল ডমিনেশন তথা একবগ্গা গাম্বাটপনা একটি আধিপত্যবাদী প্রকল্প, যেটাকে সুকৌশলে কাকদ্বীপ থেকে কুচবিহার অবধি দিব্যি ছড়িয়ে দেওয়া গেছে। এর ফলে বাঙালির অন্যান্য পুজো ও উৎসব ক্রমশ প্রান্তিক হতে হতে প্রায় বিলীয়মান। 
     
    এই কালচারাল ডমিনেশনের থেকে শিফেমও মুক্ত নয় বলে তারা বেছেবুছে বছরের চারটে দিনে লাল শালু ঢেকে বুগু বেচে। কারণ আর্বানিটি বুগু চায়। এবং শিফেমও গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরার চিন্তা থেকে শত যোজন দূরে বলেই শিফেমের অন্ধ ভক্তরাও ওই আর্বানিটির পূজারি। 
     
    আর বুর্জ খলিফা বা ভাঁড়ের প্যান্ডেল জনগণের পয়সাতেও নয়, জনগণের জন্যও নয়। আগে যেটা ছিল কোম্পানির পুজো, এখন সেটা কর্পোরেটের পুজো। কারণ দুর্গাপুজো আদতে একটা লোভনীয় বাজার। তাই কর্পোরেটরা সেই বাজারকে রথের খুঁটিপুজো থেকে ধরে এবং ১০০ দিন আগে থেকে পুজোর আর এতদিন বাকি বলে ঢক্কানিনাদটা বজায় রাখে। আর আপ্রাণ চেষ্টা জারি রাখে সেটাকে বাড়িয়ে ২০০ দিনে নিয়ে যাওয়ার। 
     
    তা ছাড়া আফ্রিকান ও ল্যাটিন আমেরিকান সাহিত্যের জাবর কাটা প্রবল পড়ুয়ারা ঔপনিবেশিকতাকে সমর্থন করেন বলে জানি না। কাজেই ঔপনিবেশিককে ঔপনিবেশিক বললে সেটা জাবর কাটাও হয় না, একই তত্ত্বকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সর্বত্র ব্যবহার করাও হয় না। মদ্য-খাদ্য-নচ গার্লের জন্য বিশেষত যখন কোথাও এখন আর দুর্গাপুজোর বাহানার দরকার পড়ে না, তখন তাকে মহামহিমমণ্ডিত করাটাই বাতুলতা।
  • দীপ | 2401:4900:314f:f64f:5b0f:fdab:bfd0:***:*** | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ০০:২৪500076
  • দুর্গাপূজা একেকজনের কাছে একেক রকম রূপে আসে।কারো কাছে আধ্যাত্মিক সাধনা, কারো কাছে আত্মশক্তির জাগরণ, কারো কাছে নিখাদ‌ আনন্দ, কারো কাছে বেড়িয়ে পড়ার সময়, কারো কাছে জমিয়ে ফূর্তি। যে যেভাবে দেখে। তাই এটি উৎসব, বাঙালীর হৃদয়ের উৎসব, "আমার দুর্গোৎসব।"
  • দীপ | 2401:4900:314f:f64f:5b0f:fdab:bfd0:***:*** | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ০০:২৮500077
  • আর এর আগেও দেখিয়েছি বর্তমান দুর্গাপূজা মোটামুটি হাজার বছর ধরে চলে আসছে। অত‌এব, যারা কৃষ্ণচন্দ্র আর নবকৃষ্ণদেব থেকে দুর্গাপূজার মোচ্ছব দেখায়; তারা হয় অজ্ঞ অথবা ধান্দাবাজ!
  • দীপ | 42.***.*** | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ০০:৫৪500079
  • বাঙালী এই মাতৃমূর্তিকে তার সমগ্র হৃদয় অর্পণ করেছে। আধুনিক বাংলা সাহিত্যে মধুসূদন, বঙ্কিম, রবীন্দ্রনাথ, দ্বিজেন্দ্রলাল, অতুলপ্রসাদ, নজরুল- সবার কাছেই এই মাতৃমূর্তি প্রাণের আরাম, হৃদয়ের শান্তি। 
  • Amit | 120.22.***.*** | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ০৪:৩৬500081
  • ব্যাস। গঠনমূলক প্রমান সাপেক্ষ আলোচনার কোনো দরকার নেই আর। চাড্ডিপনার আবেগের বালতিতে ধুয়ে ভক্তির বাতাসে হাওয়া দিলেই সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। 
  • &/ | 151.14.***.*** | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ০৭:০০500082
  • গিরীন্দ্রবাবুর 'পুরাণ প্রবেশ' থেকে কিছু দিন প্লীজ! একটু দেখি।
  • cm | 198.144.***.*** | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ০৯:২৭500085
  • চাড্ডি রবীন্দ্রনাথ নিপাত যাক। মেয়েছেলের পূজা নিয়ে মাতৃমূর্তি ফুর্তি আদিখ্যেতা মানছি না মানব না।
  • | 49.207.***.*** | ২৩ অক্টোবর ২০২১ ১০:১১500089
  • সাথে বিদ্যাসাগর ও নিপাত যাক | 
  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 49.37.***.*** | ২৮ অক্টোবর ২০২১ ১০:৪৯500321
  • এলে (২৩ অক্টোবর ২০২১ ০০:১০) নর্মালি থিয়োরেটিকাল গোঁজামিল দিলেও আউটরাইট ব্লান্ডার করে না, তবে এইটে রাগের মাথায় খুব ই কাঁচা কথা কয়েছে। লাস্ট প্যারা টায় বিশেষতঃ।
    পোস্ট কলোনিয়াল সাহিত্য টা মূলতঃ সাহিত্য থ্যাংকফুলি, জাতি নির্মাণ প্রকল্প বা রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রাম না, এবং ফ্র‌্যাংকলি কোন জাতীয়তাবাদী ব বিপ্লবী পার্টি প্রোগ্রাম ও না। সুতরাং তার ভিতরে নানা জিনিস রয়েছে। 
     
    খুব সঙ্ক্ষেপে বলতে গেলে এইঃ 
    ১ অফ ২ 
    আফ্রিকার ক্ষেত্রে পোস্ট কলোনিয়াল সাহিত্যের মডেল হিসেবে চিনুয়া আচেবের থিংস ফল অ্যাপার্ট উপন্যাসটাকে আর আমোস টুটুওয়ালার পাম ওয়াইন ড্রিন্কার্ড / ড্রানকার্ড ( বাংলা অনুবাদে তাল মদিরা মাতাল) কে আর সোয়িংকার কাজকে ধরা হয়,  যেরকম ধরা হয় তত্ত্ব চর্চায় ফ্রাঁজ ফ্যানোন এবং আরেকটা বড় জল বিভাজিকা হল , আফ্রিকার ইনটেলেকচুয়াল দের দ্বারা কনরাড এর হার্ট অফ ডার্কনেস এর রিজেকশন। 
    এর প্রত্যেকটাকেই শুধু লিটেরারি ট্র‌্যাডিশন হিসেবে, এবং কলোনীর তৈরী যে জ্ঞানচর্চা তার রিজেকশন হিসেবে দেখতে গিয়ে যেটা ভুলে যাওয়া হয়, সেটা হল, এগুলো প্রত্যেকটাই নিজের নিজের দেশের নানা সময়কার প্রগতিশীল স্বাধীনতা আন্দোলনের মধ্যে থেকে উঠে আসা সাহিত্য বা দর্শন চর্চা। এনলাইটেনমেন্ট আদর্শের যে লিনিয়ারিটি  যেটা কিনা মার্ক্সবাদী সাংস্কৃতিক তত্ত্বচর্চা কে প্রভাবিত করেছিল তার বিরুদ্ধে তৈরী হওয়া শোষিতদের কন্ঠস্বর হিসেবে একে প্রোজেক্ট করতে চাওয়াটা কোল্ড ওয়ারের আমলে খুব আশ্চর্য্যের কিছু ছিলনা। জাতীয়তাবাদী স্বাধীনতাকামী আন্দোলন গুলি সহজে শেষ হয় নি, আর স্বাধীনতা উত্তর ব্যক্তিস্বাধীনতা , উন্মুক্ত মনের চর্চা এই ঐতিহ্য থেকে উঠে আসা লোকেদের ই চালাতে হয়েছে, বা সাউথ আফ্রিকাতে ম্যান্ডেলার তৈরী করা ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন এর যে স্পেস, বা দক্ষিন আফ্রিকার শ্বেতাংগ লিবেরাল ও কমিউনিস্ট রা যাঁরা সেখানকার স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে বরাবর ছিলেন, তাঁদের স্বর ও তাদের নিজের জায়গা করে নিয়েছে। এবং সবচেয়ে বড় কথা আফ্রিকার সাহিত্যের ক্ষেত্রে, স্বাধীনতা উত্তর অর্থনৈতিক উন্নতি সব সময়ে ত্বরান্বিত না হওয়ায় কিনা জানি না, সেরা আফ্রিকান লেখক রা বহুদিন ধরেই ইংল্যান্ড ফ্রান্স আর আমেরিকায় বসে পাবলিকেশন করেছেন, এবং উপনিবেশ থেকে মুক্তির আন্দোলন শেষ পর্য্যন্ত সভ্যতার প্রতিযোগিতা হয়ে ওঠে, তার সব রকমের ডিসপোজিশন কে নিয়েই কথা বলেছেন। অন্যদিকে প্রথমে সি এল আর জেম্স , পরে মূলতঃ স্টুয়ার্ট হল, ইতিহাস , রাজনীতি এবং থিয়োরী চর্চায় এমন সব কথা বলেছেন, যেগুলো কলোনীর ইতিহাসের বীভৎঅসতার সম্পূর্ণ বিরোধিতা করেও, জাতীয়বাদী, পোস্টকলোনিয়াল,এবং বামপন্থী সব ধরণের স্ট্রাকচারকেই নানা প্রশ্নের মুখে ফেলেছেন, এবং সেটা করতে গিয়ে পশ্চিমী ডেমোক্রাসির যে প্লুরালিটির একছত্র দাবী সেটাকে প্রশ্ন করেছেন। 
    আরব আফ্রিকায় তো আরো নানা কান্ড ঘটেছে। সুদানের তায়েব সালিহ, আর ইজিপ্টের আল আসোয়াইনি ইত্যাদি  নানা লেখক আর আর্বানিটি এবং ইমরালিটি নিয়ে গত পঞ্চাশ বছরে যা এক্সপেরিমেন্ট করেছেন, তাতে রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক বিশুদ্ধতার কাপড় চোপড় একেবারেই খুলে গেছে। অবশ্যই এগুলো ধরুন এক দিনে তো হয় না। মহাশএতার পক্ষে খচ্চর আদিবাসী বা শবর দের নিয়ে লেখা যেরকম সম্ভব হত না, তেমনি আদিভাসি উইল নট ডান্স গত দশ বছরে শৌভেন্দ্র হাঁসদা লিখতে পেরেছেন, সেটা 6 বা ৭ এর দশকে লেখা অসম্ভব ছিল। নাথিং কাম্স ফ্রম নাথিং। কিন্তু যেটা আপনাকে লক্ষ্য করতে বলছি, রেজ, প্যাথোস এবং মেমরি, ক্রোধ, শোক ও স্মৃতির তৈরী করা যে সৌধ তাতে ইরেভারেন্স এবং লাফটার এবং সোশাল অর্ডারের নানা ট্রান্সগ্রেসন আসছে, এবং সেটা দিয়েই প্রতিনিধিত্ত্বএর দায় থেকে সাহিত্য মুক্তি খুঁজছে। 
     
     
  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 49.37.***.*** | ২৮ অক্টোবর ২০২১ ১১:২২500323
  • ২ অফ 2 
    লাটিন আমেরিকার ক্ষেত্রে এটা অনেক আগে ঘটেছে, ও তাড়াতাড়ি ঘটেছে। 
    সোশাল অর্ডারের প্রতি চুড়ান্ত ইরেভারেন্স আর লাফটার এবং অকপট যৌনাচার লাতিন আমেরিকান সাহিত্যে ছিল। ইউরোপের লিখে দেওয়া ইতিহাসের বিকল্প খোঁজার প্রাথমিক প্রচেষ্টার (১৯৩৬ - মিহুয়েল আস্তুরিয়াস , ফেবল্স অফ গুয়াতেমালা) পরে পরেই ছিল। ইউরোপের এই সময়কার উপন্যাস গুলোর আলোকিত শহরের একাকী ইনটেলেকচুয়াল এর জগত তার কন্ট্রাস্টে, একটা গোটা টাউন আর গোটা দেশ, গোটা বন্দর এবং তার বেড় ভাঙা পাবলিক প্রাইভেট এর ধারণা সেইটে তার বৈশিষ্ট ছিল। 
     
    তাছাড়া কুইকসোটের উদাহরণ থাকায়, অসম্ভব একলা জার্নি এবং পরাজয়ের গৌরব গাথাও ছিল। সঙ্গে একটা বিকট ম্যাচিসমো ও ছিল।সেটা হিউমর দিয়ে আর ডিকটেটরশিপের চুড়ান্ত রাজনৈতিক বিরোধিতা দিয়ে খানিকটা ম্যানেজ হবার একটা প্রবণতাও ছিল। উদাহরণ দিয়ে বললে সুবিধে হবে। 
    জোর্জে আমাদু, ডোনা ফ্লোরে অ্যান্ড হার টু হাজব্যান্ড্স , লাঞ্ছালামোর চুড়ান্ত, কিন্তু হাস্যরসে ভরা। মরাইটি কে নিয়ে চুড়ান্ত রসিকতা ইত্যাদি রাইট এবং লেফট অফ সেন্টার অনেকেই করেছেন। এই ধরুন বাসে দেখা হয়েছে বলে, অন্যকুশলাদির সঙ্গে এক প্রৌঢ়া গণিকা, তার বর্তমানে বৃদ্ধ পুরোনো ক্লায়েন্ট ke জিজ্ঞাসা করছেন,  আর ইউ স্টিল ফাকিং ? এই বিশুদ্ধতার প্রতি ভ্যাঙানির মানসিকতা ওঁদের খুব সিরিয়াস পোস্ট কলোনিয়াল দের মধ্যেও আছে। 
     
    অন্যদিকে কোর্তাজার একজাইল এর ইন্টেলেকচুয়াল দের একাকীত্তএর কথা যা লিখছেন, তাতে সেটা ইউরোপ না লাতিন আমেরিকা কার বৈশিষ্ট্যের উপন্যাস থাকছে সেটা বোঝাই কঠিন হচ্ছে। মারকেজ নিজে, মকোন্দো ইত্যাদি লিখলেন বটে, কিন্তু ছোটো টাউনের ফকনারপন্থী নিষ্ঠুরতা আর রক্ষনশীলতা কে মনে করাতে ছাড়লেন না , লিফ স্টর্ম , ক্রোনিকল অফ ডেথ ফোর্টোল্ড এবং লাভ অ্যান্ড আদার ডেমোন্স যথাক্রমে। এছাড়া বঁ ভয়াজ মিস্টার প্রেসিডেন্ট, বা আই ওনলি কেম টু ইউজ দ্য টেলেফোন, বা স্টোরি অফ শিপরেক্ড সেইলর বা নিউজ অফ কিড ন্যাপিং এ গল্প গুলো কে ক্যাটিগোরাইজ করাই মুশকিল। 
    পরে তো নানা কান্ড হচ্ছে, দমুর গল্পের থ্রেডে তর্ক করতে গিয়ে নাকি কোথায় যেন তর্ক করতে গিয়ে দেখবেন, সায়ন্তন , সৈকত এবং আমি, লাতিন সাহিত্যে, পোস্ট কলোনীর বিকল্প সন্ধান কেন আরো ইন্ডিভিজুয়াল ইন্টিগ্রিটির দিকে চলে আসছে, সেটা নিয়ে আলোচনা কিছুটা করেছি। আমি বোলানো নিয়ে বড় প্রবন্ধ নবারুণ ভট্টাচার্য্যের উৎঅসাহে আগেও লিখেছি, তাতে ম্যাজিক রিয়ালিজম কেন আর্বান ইন্ডিভিজুয়াল ইন্টিগ্রিটির দিকে সরে আসছে তাই নিয়ে দু কথা আছে। নবারুণ দা অযোগ্য ছোটোদেরও লাই দিতেন, একটি বই মেলা সংখ্যায় ভাষাবন্ধনের কভার আর্টিকল করেছিলেন। আমি যা বলছি তার প্রতিফলন আপনি অন্য আলোচক দুজনের বক্তব্যে আরো স্পষ্ট ভাবেও পাবেন। 
     
    অতএব কাটা জাবর আর জাবর এর মধ্যে একটা পার্থক্য থাকছে। মাস্টার আর্টিস্ট দের হাতে  ক্যাটিগোরির ট্রান্সগ্রেসন ছাড়া জেনে রাখুন সাহিত্যে এক্সাইটিং আর তেমন কিছুই নাই। তাঁরা নিজেরাও টিটিলেট করেও হয়তো সম পরিমাণ মজা আর পান না।
     
      
  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 49.37.***.*** | ২৮ অক্টোবর ২০২১ ১১:৪৩500325
  • ৩ অফ ২ 
    ভারতবর্ষের ইতিহাসচর্চায় বংকিম দের জাতিনির্মাণ প্রকল্পের সমালোচনা সঠিক ভাবেই পোস্ট কলোনিয়াল রা শিবাজী দা রা করেছিলেন। আপনার যেটা পেট প্রোজেক্ট , ঊনবিংশ শতকীয় আলোকপ্রাপ্তি কতটা আলোক আর কতটা অন্ধকারের প্রসার সেসব আলোচনা তাঁরাই শুরু করেছেন, অতএব আপনি দীপ এর পজিশন টাকে কোশ্চেন করে ভুল করেন নি। কিন্তু ঘটনা হল আপনি প্রি কলোনিয়াল আর্বানিটি বা ভারতীয় ইতিহাস চর্চায় ব্রজদুলাল চট্টোপাধ্যায় দের আর্লি মেডিয়েভাল ক্যাটিগোরিতে নিউ আর্বানাইজেশন কেন আশছে এবং সেটা সম্পর্কে নতুন গবেষণার উল্লেখ না করলে , পোস্ট কলোনিয়াল এবং সাব অলটার্ন থিয়োরিটিশিয়ান দের কলোনিয়াল ডেটার উপরে নির্ভরশীলতার সীমাবদ্ধতার কথা উহ্য থেকে যাচ্ছে। 
    আর এস এস এব নানা গোত্রের হিন্দুত্ত্ববাদী রা প্রি কলোনিয়াল আর্বানিটি কে গুরুত্ত্ব দেয় না, কারণ তাইলে মুসলমানি প্লুরালিজম যে হতে পারে, তাকে স্বীকার করতে হয়। অন্যদিকে পোস্ট কলোনিয়াল থিয়োরেটিশিয়ান রা যেহেতু তাঁদের স্কোপ কে কলোনি আমলের জাতি নির্মাণেই সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন, তাই প্রি কলোনিয়াল ইতিহাস নিয়ে আইডিওলোজিকাল নন এরকম ঐতিহাসিক দের আলাদা কাজ ও পড়ে দেখতে পারেন। সম্প্রতি ব্রজদুলাল কেই সম্মান করে একটা ফেট্শ্ক্রিফ্ট মত বেরিয়েছে,, সেট নেড়ে দেখতে পারেন। পুঁটির মার করা একটি রিভিউ ইতমধ্যে কাগচে প্রকাশিতও হয়েছে। তাতে সহায়তা করতে গিয়ে আমারো কিছু প্রবন্ধ পড়া হয়েছে। 
     
    আর্বানিটিকে শুধুই স্খলনের পরিসর হিসেবে দেখার অভ্যেস অনেকের ছিল, একই সঙ্গে বিশুদ্ধতার খোঁজে কু ঝিক ঝিক বা মুক্তাঞ্চল নির্মাণের এর অভ্যেস ও হয়েছিল ৬ এর দশকের লোক জনের, সেটা যে বাম ও নকশাল আন্দোলনের মধ্যেই প্রকারন্তরে প্রশ্নের মুখে পড়ে নি, তাতো না। দুটি ফ্যাক্ট দেই, আপনি রেফারেন্সিং করে মিলিয়ে নেবেন।  
    ক - নবান্ন র বিজন ভট্টাচার্যের ব্যাটা নবারুণ , বলা যায় আইপিটিএ r নার্ম সেন্টারেই জন্ম , শৈশব  কৈশোর, গ্রামীন বিষয় নিয়ে গল্প লিখছেন একটি, ১৯৭৯ , বুড়া কাহারের গল্প। এবং কোন আমলে, যে আমলে সিপিএম এর গ্রামের রাজনীতি কে সমালোচনা করে লিখলেই আনন্দ পুরস্কার বান্ধা। এটাই সঙ্ক্ষেপে ইন্টিগ্রিটি।
    খ - শমিক বন্দ্যোপাধ্যায় , ৮ এর দশকের ফোক আর্ট , ফোক ফেস্টিভাল প্রোজেক্ট সম্পর্কে সমালোচনা করে বলছেন, এগুলি স্টেট প্রোজেক্ট, আর্বান থিয়েটারের স্টেট ক্রিটিক এর ঐতিহ্যকে চ্যালেঞ্জ করার জন্যই তৈরী। আবার ফোক আর্টের ফর্মকে ইউজ করে চরনদাস চোর ও হচ্ছে এবং  রতন থৈয়াম ও হচ্ছে। ইত্যাদি। 
    তো বলছিলাম, যাঅ কিছু চলছে, তাকে ডিফেন্ড করার জন্য বলছি না, er কোরাপশন টাকে ডিফেন্ড করার প্রশ্নই নেই।  পুজো এখন বাবুদের স্টেটাস er প্রতিযোগিতার পার্ট, কিন্তু তাতে অংশগ্রহণকারী মানুষকে কোন ন্যারেটিভে প্যাক দেওয়া হলে তার রেজিস্টান্স , শুয়োরের বাচ্চা সুলভ গোঁয়ারতুমি সহ ই হবে।    
  • bodhisattvagc dasgupta | ২৮ অক্টোবর ২০২১ ১২:২৫500328
  • ** ব্রজদুলাল‌ চট্টোপাধ্যায় মহাশয়ের ফেসটস স্ক্রিশফট বেরিয়েছে , নেড়েচেড়ে দেখা যেতে পারে। যিনি আর্লি মেডিয়েভাল কে সময়ের আলাদা ক্যাটিগোরি হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিয়েছেন। সিপিএম এর প্রচারক এর কাছে আইডিওলোজিকাল‌ পজিশনের বাইরে ইতিহাস ও‌ সাহিত্য আগ্রহের কথায় মানুষের অবাক লাগতেই পারে তবে ওয়েলফেয়ার স্টেট এর প্রোগ্রেসিভ অন্তর্ভুক্তি র প্রোগ্রামের সঙ্গে খোলা লেখাপড়ার আদর্শগত কোনো বিরোধ সেরকম দেখি না।
  • সিএস | 103.99.***.*** | ২৮ অক্টোবর ২০২১ ১২:৩৪500330
  • ওও, আবার সেই টইটা উঠেছে।

    বক্তব্য হল, যে বাঙালী তাত্ত্বিকরা সেই উনিশ শতকেই পড়ে আছেন। সেটাকেই কচলানো বলা হয়েছে।

    'পপুলার' নিয়ে আলোচনা সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় করবেন, বই - প্রবন্ধ লেখা হবে কিন্তু সেসবই উনিশ শতক নিয়ে। সেসব পাথ-ব্রেকিং নিশ্চয় এবং সেসবের গুরুত্ব অপরিসীম।

    কিন্তু বিশ শতকের 'পপুলার' নিয়ে, স্বাধীনতা পরবর্তী পপুলার নিয়ে এবং সেখানে দুর্গাপুজোর ভূমিকা নিয়ে লেখাপত্তর আসে কি ? চোখে তো পড়ে না বিশেষ কিন্তু দেশের অন্য অংশে হয়ত এ বিষয়ে লেখাপত্তর হয়েছে। এখানে না হওয়ার কারণ হয়ত, ক্রিটিকরা উনিশ শতকেই পড়ে আছেন, বিশ্লেষণের ক্যাটাগরিগুলো সেই উনিশ শতকীয়, সাহেব - বাবু - ভদ্রলোক ইত্যাদি।

    বক্তব্য হল, পপুলারের সাথে গণতন্ত্র যুক্ত। গণতন্ত্রের প্রসার যুক্ত, যা ভারতে হয়েছে, দুর্নীতি ও ফাটল সত্ত্বেও হয়েছে। দুর্গাপুজোর সাথে আমি এই গণতন্ত্রের প্রসারকে যুক্ত করে দেখি। যেমন - ১৯৮০ - ৯০ র সময়ে দুটো কথা কানে আসত - প্রমথমতঃ সিপিএমকে যারা অপছন্দ করে তারা বলত, সিপিএম দুর্গা'পুজো'-কে শারদ 'উৎসব'- এ পরিণত করেচে, (অর্থাৎ পুজোর দিকটা মানুষকে ভুলিয়ে দিয়েছে, এখানেও সেই সাত্ত্বিকতা !) আর দ্বিতীয়তঃ, এ কথাও বলা হত যে কলকাতার পুজোয় যে ভীড় হয় সেটা হয় কলকাতার বাইরে থেকে লোকে আসে বলে, কলকাতায় যারা থাকে তারা বিশেষ বেরোয় না (এখানেও কলকাতার পুজোয় সেই বিশুদ্ধতা রাখার চেষ্টা !)

    লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, ১৯৮০ - ৯০ থেকেই গণতন্ত্রের প্রসার, ভোটের রাজনীতির প্রসার, ভদ্রলোক রাজনীতির বিপরীতে অন্য রাজনীতির প্রসার, এসব ঘটছে, প্রবল কনসোলিডেশন ঘটছে ভদ্রলোক রাজনীতির উল্টোদিকে, ভারতের অন্য জায়গায় ঢের বেশী করে, এ রাজ্যে হয়ত কম। কিন্তু দুর্গাপুজো ঐ প্রসার - কনসোলিডেশন - অ- ভদ্রলোক মানুষের চাপ এসবের সাথে যূক্ত হয়ে যাচ্ছে। এর মানে এই নয় যে বাবুরা তাদের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিচ্ছে, মন্ত্রী মশাইয়ের বুর্জ খলিফা জনগনণকে 'নিয়ন্ত্রন' করার একটি উপায় হিসেবে দেখি যেখানে জনগণকে তার দিকে টেনে আনার চেষ্টা করছেন আবার এই চেষ্টা করতে হচ্ছে কারণ 'জনগণ' পুজোর সময় কলকাতার রাস্তায় নেমে আসছে।

    এখন, গণতন্ত্রর চাপ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হলেও এরকম নয় যে পুজো ব্যাপারটা খুব গণতান্ত্রিক হচ্ছে বা নিয়ম-রীতির খুব তাড়াতাড়ি বদল ঘটছে, কিন্তু পুজোর যে উৎসব চরিত্র বা পপুলার চরিত্র সেটা মানুষের সংখ্যা বা তাদের উপস্থিতি দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। খুব সহজ উদাহরণ হল, মূর্তি নিয়ে রেড রোডে 'কার্নিভাল' -এর ব্যব্স্থা করা - কার্নিভাল শব্দটির মাধ্যমে জনগণকে টেনে আনা হচ্ছে, আবার ঐ মিছিল ইত্যাদির মাধ্যমে সরকার সম্বন্ধে জনগণের ধারণাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

    পপুলার ও ক্ষমতা , একে অপরকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।

    এখন বলার হল, একবগ্গা উনিশ শতক আর ঔপনিবেশিক চরিত্র দিয়ে বর্তমানের মধ্যে পপুলারের প্রভাব আর তার বৈশিষ্ট্য বুঝে ওঠা যাবে না। তাতে অবশ্য কারোরই যায় আসে না; তাত্ত্বিকরা, বর্তমান পরিস্থিতি আর তার ফাটলগুলো না বুঝেই দুশো বছরের পুরোন ঘটনা, বই আর তত্ত্বের চর্বণ ঘটিয়ে যাবেন আর বর্তমানের জনগণ নিজের মত করে দুর্গাপুজোয় আমোদ করবে।
     
     
  • bodhisattvagc dasgupta | ২৮ অক্টোবর ২০২১ ১২:৩৫500331
  • এম্পেরিকাল গবেষণা কে নতুন করে তত্বায়নের ভিত্তি করার ব্যাপারে কয়েকটি প্রজন্মের ছাত্রদের শিখিয়েছেন।
     
  • এলেবেলে | ২৮ অক্টোবর ২০২১ ১৪:৫১500343
  • আচ্ছা, আমিও খুব অবাক টইটা ভেসে ওঠায়। বিশেষত আফ্রিকান ও লাতিন আমেরিকান সাহিত্য নিয়ে খ যা লিখেছেন, সেটা টইটির একটি অতুলনীয় সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার যোগ্য। এবং এই বিষয়ে আমি তাঁকে আনত কুর্নিশ জানাই। আমাদের ছাত্রাবস্থায় হার্ট অফ ডার্কনেস পাঠ্য ছিল বটে, ছিল প্যাসেজ টু ইন্ডিয়াও; কিন্তু ছাত্রাবস্থাতে আমরা কনরাডের দিকেই ঝুঁকেছিলাম। আমাদের আমলে স্পেশাল পেপারের দৌলতে জার্মান, ফরাসি, রুশ ও আমেরিকান সাহিত্য টুকটাক পড়লেও আফ্রিকান, লাতিন আমেরিকান ও অস্ট্রেলিয়ান সাহিত্য পাঠ্যক্রমে ছিল না। ফলত গাঁয়ের স্কুলের মাস্টারটি তার পেশার চাপেই সেদিকে বিশেষ পা বাড়াতে পারেনি।
     
    আর এই লোক বা ফোক নিয়ে যে আদিখ্যেতা হয় ইদানীং, ওই 'চাষার ব্যাটা'-র কাঁধে গামছা রাখার মতোই তা অতীব হাস্যকর। কাজেই সেটাকে বাদ দিচ্ছি। 
     
    বাকি রইল আর্বানিটি-কার্নিভাল-সর্বজনীন ইত্যাদি প্রভৃতি। দেখুন কোনও তত্ত্বের মোড়কে ঢেকেঢুকে না রেখে মফস্‌সলের বাসিন্দা হিসেবে একটা সোজা কথা বলতে চাই। আমি যেমন বিজেপির হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্তান অ্যাজেন্ডার ঘোর বিরোধী, ঠিক তেমনই বাঙালি = কলকাতা = হিন্দু = দুর্গাপুজো = শ্রেষ্ঠ উৎসব সমীকরণের যে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, তারও চূড়ান্ত বিরোধী। এখানে আর্বানিটি বনাম গ্রামীণ নেই, চরম এককেন্দ্রিকতা আছে বলে আমি নিজে মনে করি। একটি মহানগরকে প্রায় পুরো অকেজো করে দিয়ে যে স্টেট স্পনসর্ড বেলেল্লাপনা চলে, সেটার সঙ্গে আর যাই হোক আর্বানিটির কোনও সম্পক্কো নেই।
     
    ব্রজদুলালবাবুর বইটির সন্ধান দেওয়ার জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই।
  • সিএস | 103.99.***.*** | ২৮ অক্টোবর ২০২১ ১৫:০০500344
  • বোধির পোস্টে কলকাতার কিছু পুজোর উল্লেখ দেখে আর তত্ত্ব করার ইচ্ছেটা যায়নি বলে, এই অ্যাঙ্গেলটা আনার কথা মনে হল। জানি না, সেটা কতখানি ঠিক।

    ১৯৮০-৯০ নাগাদ অবধি, কলকাতার বড় পুজো বলতে ছিল কয়েকটা হাতে গোনা পুজো; উত্তরে বাগবাজার, মধ্যে কলেজ স্কোয়ার - মহম্মদ আলি পার্ক - পার্ক সার্কাস, দক্ষিণে যোধ্পুর পার্ক - মুদিয়ালি ইত্যাদি। থীমপুজোর প্রসারের সাথে তাক লাগানো পুজোর সংখ্যা বাড়তে থাকে, সেগুলো হতে থাকে আরো দক্ষিণে টালিগঞ্জ - নাকতলা, বেহালা - বড়িশা বা উত্তরে উল্টোডাঙা - মাণিকতলা অঞ্চলে। পুরোনো পুজোগুলো 'ট্রাডিশনাল' হয়ে যায়, নতুন পুজোগুলো 'নতুন' লোকদের টানতে থাকে। এও দেখার যে এই সব অঞ্চলগুলোতে অনেকাংশেই তৃণমূলের প্রভাব বাড়তে থাকে, যদি ধরে নিই পুরোন পুজোতে কংগ্রেসী প্রভাব ছিল তাহলে নতুন পুজোগুলো তৃণমূল নেতাদের প্রভাবে। আর কে না জানে, তৃণমূলের জনপ্রিয়তাই এসেছে পুরোন কংগ্রেসী রাজনীতিকে সরিয়ে দিয়ে, সেই রাজনীতির নেতাদের সরিয়ে দিয়ে, মানুষের গ্রিভান্সকে ব্যবহার করে, অর্থাত যা পপুলার রাজনীতি সেই রাজনীতির মারফত, হাওয়াই চটি আর নীল পাড় - সাদা শাড়িতে যার প্রমাণ। এটা হয়ত আপতিক নয় যে এইসব নতুন পুজোর তৈরী হওয়া, তৃণমূল দলটির জনপ্রিয়তা আর কলকাতার বাইরে থেকে কলকাতার পুজো দেখতে আসা মানুষের সংখ্যাবৃদ্ধি মোটামুটি একই সময়ে ঘটছে। এও আপতিক নয় যে এই সময় জুড়েই কলকাতা শহরটা ক্রমশঃ উত্তর - দক্ষিণে বিস্তৃত হচ্ছে, নতুন পাড়া আর ফ্ল্যাটবাড়ী তৈরী হচ্ছে, কলকাতায় বসবাসকারী মানুষের সংখ্যাও হয়ত বাড়ছে। এও ঘটছে যে মোটামুটি একই সময়ে চীটফান্ডের রমরমা হচ্ছে, '৯০ পরবর্তী নতুন অর্থনীতির সাথে ঐ অর্থনীতি যুক্ত হচ্ছে, সেই টাকা পুজো কমিটিও পাচ্ছে আবার রাজনৈতিক দলটিও পাচ্ছে। কলকাতায় অন্তত দুর্গাপুজো ব্যাপারটি শুধুই ভদ্রলোকীয় চিন্তাভাবনার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে না, রাজনীতি আর সমাজ মিলিয়ে অনেক বড় আকার নিচ্ছে, অনেক কিছু যুক্ত হয়ে যাচ্ছে। হয়ত অনুসন্ধান করলে এও দেখা যাবে যে, যে সময় জুড়ে থীমপুজো শুরু হচ্ছে, সেই সময়ে টাকা আর মানুষের সংখ্যা ছাড়াও হয়ত আর্ট কলেজ থেকে বেরোন পড়ুয়াদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে, যাদের প্রতিভা এইসব থীমপুজোকে তাদের চরিত্র দিচ্ছে।

    এই এতকিছু যখন ঘটে যাচ্ছে, সমাজের ভেতরে কতরকম না পরিবর্তন আর মানুষের অ্যাসপিরেশন ইত্যাদি, সেসবকে শুধুই ভদ্রলোক হিন্দু বাঙালীর ঔপনিবেশিক মনোভাব দিয়ে বিচার করা নিতান্তই এক lazy analysis, বর্তমানকে বুঝতে না পারা, ঐ ভদ্রলোকীয় চেতনা থেকেই।

    আর আর্টের ব্যাপারটা, ইন্সটলেশন ইত্যাদি, সে আর এক ব্যাপার, এমনিতেই আর্ট খুব কম লোকেই বোঝে বা বুঝলেও যেগুলো জানা আছে সেগুলোই বোঝে, সেগুলোই দেখতে চায় ও রিলেট করতে চায়, ফলে দুর্গাপুজোয় কী ঘটছে সেটা সকলের পক্ষে বুঝে ওঠা পরিশ্রমসাধ্য।
     
     
  • এলেবেলে | ২৯ অক্টোবর ২০২১ ০০:২৯500370
  • বেশ, তাহলে আগে lazy analysis নিয়ে দু'কথা বলে নিই। প্রথমত দুর্গাপুজোকে কোথাও এক ও একমাত্র ঔপনিবেশিকতার সঙ্গে জড়িত বলা হয়নি। বলা হয়েছে এর প্রথম বাড়বাড়ন্ত এবং দেদার হুল্লোড় ও মোচ্ছবের সূচনা পলাশিতে জয়লাভের পরে। নবকেষ্টর পুজো পরিচিতই ছিল 'কোম্পানির পুজো' হিসেবে এবং ১৮৪০ সালে দশ নম্বরি আইন জারি করে এতে শেষ পর্যন্ত রাশ টানার আগে পর্যন্ত, প্রায় একশো বছর ধরে সেই রেওয়াজ অবিকৃত থাকে। কাজেই ঔপনিবেশিকতার সাইড এফেক্টকে এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।
     
    ১৯৯০-৯১ নাগাদ আমি প্রথম কলকাতায় দুর্গাপুজো দেখি। পিসির বাড়ি ছিল খাস উত্তর কলকাতার গিরিশ পার্কে। পিসতুতো ভাইয়ের সঙ্গে ওই বাগবাজার, শোভাবাজার, সিমলা ব্যায়াম সমিতি, কলেজ স্কোয়ার হয়ে সম্ভবত বৌবাজারে আমাদের অভিযান শেষ হয়। দক্ষিণের কথা বললে ভাইটি এমন প্রবল নাক সিঁটকেছিল যে আর সেমুখো হইনি। তো সেই ৯১ সালেও থিম পুজো, আর্টের ঠাকুর, আরও হরেক কিসিমের 'এই এক নতুন' চোখে পড়েনি।
     
    বহুদিন আগে পুজোর একমাত্র চাহিদাপূরণের ক্ষেত্র বাটার নতুন জুতো ছিল বটে, কিন্তু কোনও কালেই সেটা নিখাদ কর্পোরেট্গন্ধী ছিল না। পুজোসংখ্যা অবশ্যই ছিল (শরৎকালেই কেন যে বাঙালি লেখকদের এত লেখা 'পেত' তা ততটা বুঝতাম না, কিন্তু সেই বদৌলত কিছু ভালো সাহিত্য পড়ার সুযোগ হয়) কিন্তু পুজোর খাওয়া, পুজোর বেড়ানো, পুজোর... এক্কেবারে নো নো ছিল।
     
    এখান থেকে দুর্গাপুজো পুরোদস্তুর কর্পোরেটপোষ্য হয়ে ওঠে এশিয়ান পেন্টস-এর হাত ধরে। এবং সেটা নিয়ে পুরনো কংগ্রেসি বা নব্য তৃণমূলীদের কোনও ল্যালাপনা ছিল না। শিয়ালদার কাছাকাছি হওয়ার সুবাদে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার-মহম্মদ আলি পার্ক আর একডালিয়া চিরকালই ভিড় টানত, এখনও টানে। আগেও বনগা লোকাল আর ক্যানিং লোকালের যাত্রীরাই ছিলেন কলকাতার দুর্গাপুজোতে ভিড় বাড়ানোর প্রধানতম সম্বল (সম্ভবত এখনও তাই)।
     
    কিন্তু এশিয়ান পেন্টস-এর যে ক্যাচলাইন 'শুদ্ধ শুচি সুস্থ রুচি' তার প্রথম তিনটে শব্দে কেউ যদি ভিক্টোরিয়ান মরালিটির তীব্র আঁশটে গন্ধ পান, তাহলে সেটাকে কি ঔপনিবেশিকতার তত্ত্বের মোড়কে হাজির করা বলা হবে? ঠিক জানি না। কিন্তু ভাবটা স্পষ্ট ছিল - বেহুদা বেলেল্লাপনা নয়, সেসব করো-টরো কিন্তু সামান্য গা বাঁচিয়ে বাপু। মানে একটু সিল্পো-সিল্পো ছোঁয়া আনো বাওয়াসকল। মাইকে সানাই বাজাও, পরিবেশটাকে শুদ্ধতর করো। বেশ যেন একটা শুচিশুভ্র ভাব থাকে তাতে। ভাবটাই আসল রাজা, আমি রাজা নই।
     
    এর পরে পরেই টিভির হরেকরকম্বা চ্যানেল যেখানে দিনরাত্তির চোখ ও কানের মাথা খেয়ে দুর্গাপুজোর ভিড়ের লাইভ টেলিকাস্ট; শপিং মলে কেনাকাটা, না পোষালে অ্যামাজন বা ফ্লিপকার্ট কিংবা আরও যা যা আছে-টাছে; শ্রেষ্ঠ ইদুঁর-সেরা প্যাঁচা হওয়ার জন্য হরেক কোম্পানির হরেক কিসিমের পুরস্কারের মাল; অতঃপর খুঁটিপুজো এবং সবশেষে সবার চাইতে ভালো মহালয়ায় উদ্বোধন ও কার্নিভালে বিসর্জন। এই টাইম ফ্রেমে তিনো ঠিকঠাক ১০ বছর। বাকি বছরগুলোর হিসেব কীভাবে মিলিবে? হিসাব মিলাইতে গেলে কী করিতে হইবে? কোথা হইতে কী হইয়া গেল-র দস্যু মোহন ছাড়া এই অসাধ্যসাধন কে করিবে?
     
    আহা, উতলা হবেন না। মেলাবেন, তিনি মেলাবেন।
     
     
  • lcm | ২৯ অক্টোবর ২০২১ ০১:২৭500371
  • আগে থিম পূজো তেমন হত না, কিন্তু, যেমন ধরুন দক্ষিণ কলকাতায় বকুলবাগান এর পুজোর কথা :
    - ১৯৭৫ এ নীরদ মজুমদার
    - ১৯৭৬ এ রথীন মৈত্র
    - ১৯৭৭ এ পরিতোষ সেন
    - ১৯৭৮ এ রামানন্দ বন্দোপাধ্যায়
    - ১৯৮২ তে অনন্ত মালাকার
    - ১৯৯০ এ মীরা মুখার্জি
    - ১৯৯১ তে বিকাশ ভট্টাচার্য
    - ১৯৯২ তে ঈশা মহম্মদ
    - ২০১৪ তে পরেশ মাইতি
    এনারা বকুলবাগানের পুজোর প্রতিমা করেছেন (ঐ পুজোর ফেসবুক পাতা থেকে আরও তথ্য পাওয়া যাবে)। আরও দু একটা পুজোতে নামী শিল্পীরা কাজ করতেন। সেগুলোতে কতটা জাকজমক হল (খুব জাঁকজমকপূর্ণ হতও না) বা কত খরচা হল তার থেকেও মানুষের আগ্রহ ছিল নামী শিল্পীদের কাজ পুজোর ছুতোয় চাক্ষুষ দেখতে পাওয়া।

    আমার ধারণা এই সর্বব্যাপী থিম পুজোর ব্যাপারটায় রমরমা আসে নব্বুইএর দশকের মাঝামাঝি বা শেষের দিক থেকে, যখন প্রচুর টাকা আসে, প্রচুর বলতে অনেক, অনেক টাকা।

    যখন থেকে, ধীরে ধীরে, সাউথ পয়েন্ট বা সেন্ট জেভিয়ার্স বা হিন্দু স্কুল নয়, দিল্লি পাবলিক স্কুল হয়ে উঠতে থাকে কলকাতার এলিট স্কুল।

    যখন থেকে দু চাকার বাজাজ স্কুটার নয়, চার চাকার গাড়ি হয়ে উঠতে থাকে মধ্যবিত্তের অ্যাফোর্ডেবেল বাহন।

    শহুরে মধ্যবিত্তের উইকেন্ডের এন্টারটেইনমেন্ট হয়ে ওঠে - হলের ছোট কাঠের চেয়ারে বসে সিনেমা দেখে বেরিয়ে পাশের দোকান থেকে চপ-কাটলেট খেয়ে বাড়ি ফেরা নয়, মাল্টিপ্লেক্সে আরামদায়ক চেয়ারে বসে ভুট্টাভাজা আর কোকাকোলা খেতে খেতে সিনেমা দেখে বেরিয়ে ম্যাকডি বা কেএফসি থেকে খেয়ে বাড়ি ফেরা।

    এই সব বদলের সঙ্গে সঙ্গে আসতে থাকে শহরে বারোয়াড়ি পুজোর আকাশছোঁয়া বাজেট এবং থিমপুজোর প্রভাব প্রতিপত্তি।

    কিন্তু এটা হবেই, সব কিছু বদলাবে আর পুজো আটকে থাকবে সেটা হবে না।

    দেখবেন এই বদল কিন্তু বারোয়াড়ি পুজোতেই বেশি, বাড়ির পুজোতে থিম কনসেপ্ট তেমন নেই, কারণ তাদের বাজেট ইনফ্লেশনের অনুপাতে বেড়েছে তার বেশি নয়।

    তাই ঠিক ঔপনিবেশিকতার প্রভাব বলব না, বলব নব্বুই এর দশকের পর থেকে খোলা অর্থনীতির প্রভাব, যাকে বিশ্বায়ন বলা হচ্চে, বা আরও যেসব টার্ম আছে।
     
  • দীপ | 2402:3a80:1968:e2b2:5f4d:6b35:a54a:***:*** | ২৯ অক্টোবর ২০২১ ০১:৪১500372
  • আর যোগেশচন্দ্র অত্যন্ত তথ্যনিষ্ঠ ও বিস্তারিত ভাবে দুর্গাপূজার উৎস ও বিবর্তন নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাঁরা যোগেশচন্দ্রকে টিয়াপাখি নিয়ে বসা জ্যোতিষীরূপে দেখাতে ইচ্ছুক- তাঁরা নিজেরা কি এ বিষয়ে কোনো গবেষণা করেছেন? দেখাতে পারবেন? 
    গবেষণায় যুক্তি দিয়ে অপরের মত খণ্ডন করতে হয়, ব্যক্তিগত গালাগালি চলেনা! আশা করব যোগেশচন্দ্রের মত যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করবেন!  নাহলে নিজেদেরকেই রাস্তার মোড়ের জ্যোতিষীরূপে প্রতিপন্ন করবেন!
  • দীপ | 2402:3a80:1968:e2b2:5f4d:6b35:a54a:***:*** | ২৯ অক্টোবর ২০২১ ০১:৫০500373
  • রমেশ শাস্ত্রী কংসনারায়ণকে কলির অশ্বমেধযজ্ঞরূপে দুর্গাপূজা করতে বলেছিলেন। তখন কোথায় ব্রিটিশ শাসন? কোথায় ঔপনিবেশিকতা? সব জায়গায় এক‌ই গরুর রচনা লিখলে চলবে?
  • Sara Man | ২৯ অক্টোবর ২০২১ ২৩:৫৭500399
  • আমাদের ছোটোবেলায় বাড়িতে বাড়িতে নারকেল কোরা আর চিনির গুঁড়ো পাক দিয়ে, ছাঁচে ফেলে একরকম সন্দেশ বানানো হতো। নাম ছিল নারকেল ছাপা, বা ছাপা সন্দেশ। তাতে কোনো দুধ বা ছানা থাকতোনা। সেই মিষ্টান্নকেই বোধ করি নারকেল ছাবা বলা হয়েছে। 
  • হেহে হেহে | 172.96.***.*** | ৩০ অক্টোবর ২০২১ ০১:০৭500405
  • দীপ ছাগল আর এলবো মিলে হেব্বি খোরাক!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন