এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  গপ্পো  শরৎ ২০২১

  • রানার ছুটেছে তাই

    দময়ন্তী
    গপ্পো | ১৫ অক্টোবর ২০২১ | ৬১৫২ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • স্কেচ ৬ | পানুর মেটামরফোসিস | চালচিত্রের চালচলন | কেমন আছে ওরা? | চাও করুণানয়নে | পুত্রার্থে | সই | আপনি যেখানেই থাকুন | কিসসা গুলবদনী | জনৈক আবহ ও অন্যান্যরা | গুচ্ছ কবিতা | অমল রোদ্দুর হয়ে গেছে | ইনি আর উনির গপ্পো | দুগ্গি এল | দুর্গারূপে সীতা, ভিন্নরূপে সীতা | প্রিয় অসুখ | শল্লকী আর খলিলের আম্মার বৃত্তান্ত | রানার ছুটেছে তাই | বিসর্জনের চিত্রকলা | কল্পপ্রেম | লম্বা হাত খাটো হাত | কেন চেয়ে আছো গো মা, মুখ পানে! | ছোট্ট পরীর জন্মদিন | জাপানি পুতুল | আধাঁরে আলোঃ শারদ সাহিত্য | ইন্দুলেখার ইতিকথা | মুর্শিদাবাদ | এই দিনগুলি | জ্বিন | জোনাকি এবং ডোরেমিরা | বাসায় চুরি | বিশ্বকর্মার গুপ্তঘট | দুর্গাপূজা - দুটি প্রবন্ধকথা | টিউশন | ফেরা | মায়া | বন্দী | মেয়েদের কিছু একটা হয়েছে | কেল্লা নিজামত | সীতারাম | দড়াবাজি | মায়াফুলগাছ | যখন শ্যামের দ্বারে | কুয়াশা মানুষের লেখা | সময় হয়েছে নতুন খবর আনার | মিষ্টি চেখে ওড়িশার ডোকরা শিল্পীদের গ্রামে | নিশি | পথ | প্রাকার পরিখা | নীল সাইদার গল্প | তুষারাচ্ছন্ন ইউরোপে শ্রীমতী ফ্রয়ডেনরাইখের আশ্চর্য বিষাদ | দীপাবলীর বারান্দায় | কলমি শুশনি | এক অনিকেত সন্ধ্যা | গৌরি বিলের বৃত্তান্ত | আনন্দগামী বাস থেকে | মুয়াজ্জিনকে চিরকুট | দেবীর সাজে সৌরভ গোস্বামী | শরৎ ২০২১
    ছবি: সুনন্দ পাত্র


    এক

    ওভারব্রিজের সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতেই শীতল দেখল ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস ঢুকছে, প্রাণপণে দৌড় লাগাল, আর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বুঝল আবারও হয়ে গেছে। কাল রাত্তির থেকে কম করে জল খাওয়া, বেরোবার আগে বারবার বাথরুমে গিয়ে পেচ্ছাপদানি খালি করে আসার চেষ্টা, কিচ্ছু কাজ করেনি। তলপেটে ঝাঁকুনি লাগতেই ফোঁটায় ফোঁটায় বেরিয়ে এসেছে পেচ্ছাপ। দুই পা শক্ত করে এক মুহূর্তের জন্য দাঁড়িয়ে পড়ল, কিন্তু আজ ঠিক সময়ে না গেলে চাকরি রাখা মুশকিল হবে। এমনিতেই ট্রেন দাউন্দ ঢুকতে ঢুকতে পৌনে এগারোটা বাজিয়েই দেবে, সাড়ে এগারোটার আগে অফিসে ঢোকার সম্ভাবনা কম। তবে স্টেশান থেকে বেরোতে বেরোতেই যদি অটো পেয়ে যায় অথবা অফিসের কারোর সাথে দেখা হয়ে যায়, তো সোয়া এগারোটার মধ্যে ঢুকে যেতে পারবে। মালিক ঢোকে বেলা বারোটার দিকে। তবে বলা যায় না, আজই হয়তো এগারোটায় চলে এল। তাহলেই বকাবকি গালিগালাজ।

    ট্রেনে এখন বসার জায়গা মোটামুটি পাওয়াই যায়। এখনো খুব কম লোকই ট্রেনে উঠছে। সিটে গুছিয়ে বসতে গিয়ে আবার থমকে গেল শীতল, বসলেই সালোয়ার ভিজবে, উঠে দাঁড়ালেই ভেজা ছাপ ফুটে উঠবে। থাক, বরং দুইদিকের দরজার মাঝে সিটের পেছনে ঠেস দিয়ে দাঁড়ানো যাক। অফিস মানে এটা আসলে গুদাম, একটা ভারতজোড়া বৈদ্যুতিক বাণিজ্য সংস্থার গুদাম। ‘কম্ফিকার্ট’ নামের এই সংস্থা শুরু হয়েছিল পুণে থেকে সোলাপুর পর্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্নরকম মোবাইল ফোন সরবরাহ করার লক্ষ্য নিয়ে। দেশে ও বিদেশে উৎপন্ন বিভিন্ন সংস্থার মোবাইল অনলাইনে অর্ডার নিয়ে আনিয়ে ঠিকানামাফিক পৌঁছে দেবার কাজ বছর পাঁচেক বিশেষ সাফল্যের সাথে করার পর আস্তে আস্তে আরো নানান জিনিস বিক্রি করতে শুরু করে। ব্যবসাও বাড়তে বাড়তে গোটা ভারতেই প্রায় ছড়িয়ে পড়েছে। বাজারের চাহিদা আন্দাজ করে অগ্রিম জিনিসপত্র এনে জমা করে রাখতে দরকার হয়েছে গুদাম।

    কলেজ পাস দিয়ে শীতল একটা বাচ্চাদের ইস্কুলে ঢুকেছিল পড়াতে। জিলাস্কুলে চাকরি লেগে গেলে জিন্দেগিটা সেট হয়ে যাবে, রাজ্যওয়াড়ি পরীক্ষার জন্য তৈরি হচ্ছিল। ইস্কুলেই একদিন বাচ্চাদের পিটি ক্লাস করানোর সময় টের পায় – দৌড়ালে, লাফালেই বিন্দু বিন্দু পেচ্ছাপ বেরিয়ে আসছে, কোনভাবেই চেপে নিতে পারছে না। শাড়ি পরতে হত ওখানে, ব্যাপারটা তেমনভাবে ধরা পড়েনি কারো সামনে। তারপর এই বদ বিমারি এল, ইস্কুল বন্ধ হয়ে গেল। দুই মাস পেরোবার আগেই সেক্রেটারি স্যার ফোন করে বলে দিলেন, ইস্কুলে কামাই নেই, বাচ্চারা মাইনে দেয়নি, ওকে আর রাখতে পারবেন না। পাওনাগণ্ডা ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তা সেসব আর একবছরেও আসেনি। দুই-একবার ফোন করেছে সেক্রেটারি, হেডমিসকে – সব নাম্বার স্যুইচড অফ, নয়তো নেটওয়ার্কের বাইরে। লকডাউনের মধ্যেই বড়েভাইয়া বিয়ে করে ভাবীকে নিয়ে সোলাপুরে চলে গেল। প্রথম একমাস টাকা পাঠিয়ে আর পাঠায়নি।

    সেই সময় ব্যাঙ্কের খাতা খালি হয়ে আসছে প্রতি সপ্তাহে, ইস্কুলবাসের ড্রাইভার আমিনের সাথে দেখা হয়ে গেল একদিন বাসডিপোয়। আমিনই খবর দিয়েছিল – কম্ফিকার্ট লোক নিচ্ছে ওদের দাউন্দ গুদামে। পরেরদিনই কপাল ঠুকে চলে গেছিল ওখানে। পুনা থেকে রোজ রোজ আপ ডাউন করবে কী করে ভেবে মালিক একটু দোনামোনা করছিল। আবার বিকম পাস মুলগি অনেক কম টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ভেবে ঠিক না করতেও পারছিল না। মালিকের অ্যাসিস্টেন্ট বুদ্ধি দিল – ছয়মাস ট্রেনিং করে নিতে, আরো পাঁচশ’’ টাকা কম মাইনে। ছ’মাস পরে কাজে খুশি হলে এক বছরের কন্ট্রাক্টে নেবে, পাঁচশ’ টাকা বাড়বে। গুদামে নতুন আসা মাল কমপিউটারে তোলা, কোনটা কোথায় যাচ্ছে সাইট থেকে ঠিকানা মিলিয়ে প্যাকেটের গায়ে লেবেল মারা, মাল বেরিয়ে গেলে ফাইল আপডেট করা – এই মোটামুটি কাজ। তাতেই সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা অবধি ঘাড় তুলতে পারে না।

    ফেরার সময় আর ট্রেনের ভরসায় থাকতে হয় না। আমিনের সাথে ওর ডেলিভারি ভ্যানে চেপেই ফেরে। যেদিন টিফিন খাওয়ার সময় পায় না, সেদিন ওই ভ্যানে বসেই নিজে খায়, আমিনকেও দেয়। দিনের ডিউটির সবকজনই আমিনের ভ্যানে আসে। লোনি আর উরুলিতে দু’জন নামে আর দু’জন হাদপসর। একদম শেষে একটু ঘুরে খারকি স্টেশানের সামনে শীতলকে নামিয়ে আমিন চলে যায়। তা নামতে নামতে রোজই রাত দশটার এদিক ওদিক হয়। ওখানে অটো থাকলে ভাল, না হলে তেলুগুদের মশলার দোকানের গোল-চক্কর অবধি হেঁটে এসে দাঁড়ায়। এখান থেকে পিএমটি বাস, অটো, কখনো ওদের মহল্লার কারো গাড়ি, কি স্কুটি – কিছু না কিছু পেয়েই যায়। এই কাজটা নেবার পরে কিছুদিন ভালই ছিল, অফিস থেকে বেরোবার সময় বাথরুম সেরে বেরোত আর সোজা বাড়ি গিয়ে আবার। একদিন রাতে বাস দেখে দৌড় দিল, বাসটা পেয়েও গেল। বাসে উঠেই খেয়াল হল, হেল্পার ওকে দেখছে হাঁ করে।



    দুই

    সিগনাল হলুদ হতে, কষে ব্রেক চেপে, লাইনের এধারেই বাইক দাঁড় করিয়ে, একপায়ে ভর দিয়ে, মোবাইল বের করে সময় দেখে নেয় গিরীশ। এখনো কুড়ি মিনিট আছে, কোথাও ফেঁসে না গেলে, আর দশ বারো মিনিটের মধ্যে ডেলিভারি দিয়ে আজকের মত ফ্রি হয়ে যাবে। আজ দু’টো এক্সট্রা ডেলিভারি নিতে পেরেছে, সাতশ’ টাকা বেশি পাবে। রোজ যদি এমন দু’টো তিনটে করে এক্সট্রা নিতে পারে, তাহলেই আঠার-কুড়ি হাজার এক্সট্রা টাকা আসে হাতে। তাই দিয়ে একটা ভাল ফোন নেবে গিরীশ। এই ফোনটায় মুভি দেখে আরাম হয় না, ফাইটিঙের সিনে, নাচের সিনে সব কেমন জড়িয়ে রঙে রঙে মিলে যায়। নার্সারিক্লাসে যেমন পাতলা প্লেটে সব রঙ সাইড বরাবর একটু একটু করে ঢেলে গুলে নিত, তারপর ব্রাশ চালাতে চালাতে সব কেমন মিলেমিশে একটাই জবরদস্ত কালার হয়ে যেত, অমনি হয়ে যায়। আহ, আবার যদি ইস্কুলে ফেরত যাওয়া যেত! এবার তাহলে ও মন দিয়ে পঢ়াই করত ঠিক।

    আর ৬ সেকেন্ড পরে সিগনাল সবুজ হবে, হেলমেটটা ঠিকঠাক করে পা তুলে বাইকে রেডি হয়ে বসতে বসতেই গিরীশ খেয়াল করে, একটা মেয়ে কেমন থ্যাপ থ্যাপ করে দৌড়ে আসছে সামনে ডানপাশে দাঁড়ানো পিএমটি বাসটার দিকে। আহ যন্ত্রণা! এখন বাঁদিক থেকে স্পিডে বেরিয়ে যেতে পারবে না এ মেয়ে বাসের দরজায় না পৌঁছানো অবধি। সিগনাল সবুজ হয়ে গেল, মেয়েটা এখনো বাসের সামনের দরজা অবধি পৌঁছাতে পারেনি। পেছনের দরজা দিয়ে তুলে নিতে পারত কন্ডাকটারকাকা, কিন্তু নাহ, এটা সরকারি বাস, করবেই না। একটু আগে আসতে কি হয় এদের! দাঁত আর জিভের ফাঁকে ছিঁক করে বিরক্তিসূচক শব্দ করে গিরীশ। হেলমেট আর মাস্কের ভেতরে সেই শব্দ ওরই ঠোঁট আর গোঁফে লেপটে থাকে, বিরক্তিটাও। মেয়েটার পায়ে কোন সমস্যা আছে নাকি? কেমন অদ্ভুতভাবে থ্যাপ থ্যাপ করে দৌড়াচ্ছে দেখো! আসলে জোরে জোরে হাঁটছে বলাই ভাল। অথচ মেয়েটা বেশ রোগা পাতলা।

    মোড় পেরিয়ে স্পিড বাড়ালো গিরীশ। নাহোক, এক দুই মিনিট দেরি হয়ে গেল বেকার। এই ঠিকানাটা অবশ্য চেনা, পরিহার চওক পেরিয়েই, ডানদিকের মহল্লার গলিতে ঢুকে, তিনটে বাড়ি পরেই ঠিকানা। গেটে সিকুরিটিকাকারাও এমনি ভাল, মুখে মুখে ফ্ল্যাট নম্বর শুনে নিয়ে নিজেরাই সিস্টেমে এন্ট্রি করে ছেড়ে দেয়। বারোতলায় যেতে যেতেই সিকুরিটিরা ফোন করে দেয়, ম্যাডাম দরজা খুলে দাঁড়িয়ে থাকে, কোনোদিন বা ওদের দশ বছরের ছেলে। প্যাকেট নিয়ে থ্যাঙ্কু বলে, কোনোদিন টিপস যোগ করে দেয় অ্যাপে। অনলাইন পেমেন্ট করাই থাকে, রেটিঙও হয় ৪ নয় ৫ দেয় এই ফ্যামিলিটা। স্যার খুব একটা সামনে আসে না, হয় বসে টিভি দেখে, নয়তো ল্যাপটপ নিয়ে কিছু করে। খোলা দরজা দিয়ে দেখেছে গিরীশ। দেখে বেশ সুখী পরিবার মনে হয়। হাতে পয়সাও আছে, সপ্তাহে অন্তত দুইদিন গিরীশদের ‘নাস্তা বোলে তো’ অ্যাপ দিয়ে কাছের দূরের নানা রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার অর্ডার করে। এরকম একটা সংসার চাই ওর।

    স্পিডে যেতে যেতে হঠাৎ খেয়াল করে, পরের সিগনালের চৌমাথার বেশ একটু আগে ওই বাসটা সাইড নিচ্ছে। আরে আরে, এখানে স্টপ নেই তো, বাস দাঁড়াচ্ছে কেন? স্পিড কমিয়ে ব্রেকটা ছোঁয় গিরীশ। ওদিকে বাসে উঠেই শীতল টের পায়, দু’পায়ের ফাঁকে গরম স্রোত নেমে আসছে কোনোকিছুর তোয়াক্কা না করে। ‘আরে আরে মুতনা হ্যায় তো টয়লেট কিঁউ নেহি গ্যয়ে? বদতমিজ আওরত তু ঝল্লি হ্যায় কা?’ কন্ডাকটারের কর্কশ চিৎকারে সারা বাসের লোক ঘুরে ওকে দেখতে থাকে। কয়েকজন হেসে ওঠে, এক মহিলা এসে পিঠে খোঁচা মেরে বাস থেকে নেমে যেতে বলে। বাসের বেশিরভাগ লোক সায় দিয়ে গলা মেলায়। বাস ততক্ষণে পরের সিগনালে। কে যেন জলের বোতল খুলে জল ছুঁড়ে দেয় গায়ে, বাসের মধ্যে হুরডা পার্টি শুরু হয়ে যায়। হেল্পার দুই থাবড়া মেরে বাস থামিয়ে ওকে হাত ধরে টেনে নামিয়ে দেয়। ওকে নামিয়ে দিয়ে হোঃ হোঃ করে হাসতে হাসতে বাসটা চলে যায়।

    এই সিগনালের চারকোণে কোন বাসস্ট্যান্ড নেই, অটো নেই। দাঁড়ানো কিছুই নেই, সব বেরিয়ে যাচ্ছে সাঁ সাঁ করে, হরিণের মত দৌড়ে উড়ে চলে যাচ্ছে। মুলানদীর মত তরতরিয়ে বয়ে যাচ্ছে পিচের রাস্তা।
    ~ তুলা নাম কায়?
    ~ শীতল লোখান্ডে
    ~ ইথে কায় করতআহে?
    কামিজের খানিকটা ছেটানো জলে ভেজা, সালোয়ার ভেজা, বুকের কাছে জাপটে ধরা ব্যাগ – শীতল ভয়ে ভয়ে চোখ একটু তোলে। একটা বাইক সামনে দাঁড়িয়েছে, এক পা নামিয়ে বাইকওলা প্রশ্ন করছে। ‘নাস্তা বোলে তো’ অনলাইন খাবার ডেলিভারি চেনের লোগো আঁকা ব্যাগ, টিশার্ট। যাক পুলিশ নয়। এখানে স্টপ নেই, বাসটা তাও সাইড করে প্রায় টেনে জাপটে একটা মেয়েকে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল দেখে খানিক কৌতূহলেই এগিয়ে এসেছে। হয়তো মাতাল কি গ্যাসখোর, আজকাল মেয়েগুলোও এইসব খেয়ে টাল হয়ে পাবলিকে আসে। কিন্তু মেয়েটাকে দেখে কথা শুনে টাল্লি বলে তো ঠিক মনে হচ্ছে না।



    তিন

    শীতল সেদিন গিরীশের বাইকের পেছনে বসেই বাড়ি ফিরেছিল। ডেলিভারি শেষ করে, ওর আপত্তি সত্ত্বেও গিরীশ বাড়ির সামনেই নামিয়েছিল। ততক্ষণে জানা হয়ে গেছে শীতলের দিনরাতের চলাফেরার স্থানকাল। শীতলও জেনেছে ওর কামধান্দার খবর। খারকি অঞ্চলেই ডেলিভারি করে গিরীশ, তাই টুকটাক দেখা হয়েই যেতে লাগল। সে রাতে বাইকের সিট ভিজে যাওয়াটা গিরীশ খেয়াল করেছিল কিনা, এটা আর জিগ্যেস করে উঠতে পারেনি এখনও। করবে একদিন ঠিক। সকালে অফিস যাওয়াটা আমিনের সাথেই করার চেষ্টা করেছিল ওরা ক’জন। কিন্তু আমিন বেরোয় ভোর সাতটায়, বারোটা অবধি ‘আপলা মন্ডি’র হয়ে শাক সবজি, ফল, ফুল ডেলিভারি করে, তারপর কম্ফিকার্টের ডেলিভারিতে যায়। সময় বাঁচাতে অনেকসময় আগের রাতেই পরের দিন সকালের ডেলিভারির মাল গাড়িতে তুলে নেয়। মেট্রোর কাজ চলছে পুরোদমে, খারকি অবধি চালু হয়ে গেলে অনেকটা সুবিধে হবে, টাইমও বাঁচবে।

    অনেককিছু খুলে গেছে, মানুষ তবু রেস্টুরেন্টে কম যায়, অর্ডার করে বাড়িতে আনায় বেশি। গিরীশের কাজের চাপ বেড়েছে ভালই, রোজগারও হচ্ছে বেশ। এর মধ্যে বাপটা ঘ্যান ঘ্যান করছে জমি কেনার জন্য। সেই কোন একশ’ বচ্ছর আগে ওর পরদাদা আরো সব কিসানদের সাথে মিলে খেতিজমি বাঁচাতে লড়েছিল। ওর দাদা তখন পাঁচ বছরের মুলগা। টাটা কোম্পানি মুলানদীতে বাঁধ দিল, কি না, ইলেকট্রিসিটি তৈরি হবে, মুলশি লেক তৈরি হবে। সেখানে সব বড়লোকরা বেড়াতে আসবে। খানাপিনা মৌজমস্তি। তাতে ওর পরদাদাদের খেতিজমি নিয়ে নিচ্ছে, কী খাবে কী করবে কিসান? তখন পাণ্ডুরঙ বাপতেজি ডাক দেয় মুলশি সত্যাগ্রহের। ভারতে তখন ব্রিটিশরাজ, জমি বাঁচাতে পারেনি বটে, তবে বদলি জমি পেয়েছিল মুলশি লেকের পশ্চিমপাড়ে। পরদাদা, দাদা, বাপও সেই জমিতে চাষ করেছে এই তিরিশ বচ্ছর আগে পর্যন্ত। তারপর কর্পোরেটাররা এলো খোকার পেটি নিয়ে।

    তা বাপটা পেয়েছিল পাঁচলাখ কম এক খোকা, তার থেকে সরপঞ্চের বেটাকে দিতে হল সত্তর লাখ। সেও নাকি আরো ভাগ হবে, মিনিস্টারের ঘর অবধি যাবে টাকা। তবু হাতে যা ছিল, তাও ওরা জন্মে চোখে দেখেনি কখনো। বাপ কামধান্ধা ছেড়ে মদ আর জুয়ায় মেতে রইল সালভর। তবু মা জোর করে বাড়িটা পাকা করে দোতলা করে নিয়েছিল আর বাড়ি রেখেছিল নিজের নামে। সরপঞ্চ সাহায্য করেছিল খুব, নাহলে সমস্ত টাকাটাই নেশার পেছনে উড়ে যেত। পাঁচ বছর পর, হাতের টাকা পুরো ফুরিয়ে যাবার পরে, বাপের মাথায় ঢুকল আবার জমি কিনে খেতি করবে। প্রথমে ভাগে নিল জমি। নেশা ততদিনে মাথায় চড়েছে, শরীর হয়েছে দুবলা। বেশি খাটতে পারে না খেতে, নেতিয়ে পড়ে আর চাঙ্গা হতে গিয়ে জোটে মার্কেটের পিছে দারুকোঠিতে। ভাগের জমি চাষ হয় না পুরো, দেনা বেড়ে যায়। কোনওবার বর্ষা আসতে দেরি হয়, বীজ মাটিতেই শুকায়। ছেড়ে দিতে হল জমিটা।

    শীতল এসব কথা শুনলে কেমন অবাক হয়ে যায়। চাষবাস, খেতিজমি এইসব ওদের পরিবারে ছিল না কোনোকালে। বড় পোস্টাপিসের পিওন ছিল ওর বাবা। ওর দাদাজিও পিওন ছিল, সরকারি চাকরিতে তখন ছেলেকে ঢোকানোর সুবিধে ছিল। তাতেই ওর বাবা দশক্লাস পাশ দিয়ে চাকরি পেয়ে যায়। তা চলে যাচ্ছিল, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেষ করিয়ে রিটায়ার হবে ভেবে রেখেছিল। কিন্তু কয় বছর আগে হঠাৎই একদিন নোটিশ আসে, সরকারের হাতে অত লোকের অতদিন ধরে মাইনে দেবার মত পয়সা নেই, তাই ওদের আগে আগেই রিটায়ার হয়ে যেতে বলছে। প্রথমে ওরা বিশ্বাস করেনি, তেমন গা’ও করেনি। সরকার অমন কত নোটিশ জারি করে, ক’টা আর ঠিকঠাক মানে লোকে। কিন্তু সত্যিই নয়মাসের মাথায় ওদের একদম বসিয়ে দিল। বেশ কিছু টাকা হাতে পেয়েছিল বটে। তার অর্ধেকের বেশিটা খরচ হয়ে গেল বড়বোনের বিয়েতে। বাবা তেমন চিন্তা করেনি, ছেলে বড় হয়েছে, কামাবে।

    বড়েভাইয়ার ট্রান্সপোর্টের বিজনেস শুরু করতে বাকি টাকাটার অর্ধেক গেল। বাবা ততদিনে মারুঞ্জিতে এ-মার্টের দোকানে সিকুরিটি গার্ডের চাকরি পেয়ে গেছে। স্যার ম্যাডামদের ব্যাগ খুলে উঁকি মেরে দেখে, হাতে একটা লম্বা চ্যাপ্টা যন্ত্র ধরে খরিদ্দারের গায়ের উপর দিয়ে আলতো করে বুলিয়ে নেয়। কখনো পিঁক করে আওয়াজ হয়, কখনো হয় না। ডিউটি দিনে এগারো ঘণ্টা, মাস গেলে পগার আসে সাত হাজার। বড়েভাইয়ার ট্রান্সপোর্টের বিজনেস থেকেও আয় হচ্ছিল টুকটাক। একটা ছোট ট্রাক আর একটা টেম্পো ট্রাভেলার, মাল নিয়ে, পাসিঞ্জার নিয়ে চলে যায় নাসিক, মারগাঁও, ব্যাঙালোর ওদিকে গুজরাট, রাজস্থান। শীতলও স্কুলটায় পেয়ে গেল। তখনই বড়েভাইয়ার বিয়ে পাকা হল, সোলাপুরে এক ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ীর বড় মেয়ের সাথে। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল, এই বদবিমারিটা না আসা অবধি।



    চার

    গুড়ি পড়ওয়ার একমাস আগে থেকেই চারপাশের হাওয়া কেমন থমথমে হয়ে উঠতে লাগল। মুলখের, সাংলি, গোদাম্বেওয়াড়ির গাঁওগুলো থেকে বিমারি আর মওতের খবর আসতে লাগল। কম্ফিকার্টের গুদামে সবাই বলাবলি করে, আবার লক ডাউন হবে। লক ডাউন হলেই ট্রেনও বন্ধ হবে, ভয়ে শীতলের হাত পা ঘামে, গলা শুকিয়ে আসে। গতবার দিওয়ালির পর বাবার জ্বর হল, সিকুরিটি গার্ডের চাকরিটা ফোনে ফোনেই কাটিয়ে দিল দোকান মালিক। নাকি খারাপ জ্বর, না হলেও হতে কতক্ষণ? আর কে না জানে, এই বিমারি অনেকের বডিতেই চুপচাপ লুকিয়ে থাকে, জ্বর-টর হলে বেরিয়ে এসে অন্য লোকের বডিতে চলে যায়। জেনেশুনে দোকানের লোককে বিপদে ফেলবে না মালিক। সেই থেকে শীতলের এই ক’টা টাকায়ই চলছে সংসার। বড়েভাইয়ার বিজনেসও নাকি খুব ডাউন যাচ্ছে, সংসার চালিয়ে কিছুই পাঠাতে পারে না। ওদিকে ভাবীর বাচ্চা হবে, তারও খরচ খরচা আছে।

    গিরীশের মা কাছের একটা হাউসিঙে একটা ফ্ল্যাটে বাচ্চা দেখার কাজ করে, আর আশেপাশের বাচ্চাদের তেল দিয়ে ম্যাসাজ করে, মাস গেলে হাতে সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার পাচ্ছিল। এক্সট্রা বাদ দিয়ে গিরীশও মোটামুটি হাজার কুড়ি পায়। বাপের ঘ্যানঘ্যানানিতে মা কিছু কিছু টাকা সরিয়ে রাখছিল ব্যাঙ্কে, যদি মুলখেরের দিকটায় কিছু খেতিজমি কিনে রাখা যায়। বাপটা অবশ্য এখনো মাসে এক দুইদিন মদ খেয়ে টাল হয়ে পড়ে থাকে, তবে রামিখেলাটা কমেছে। ওর বাপকে খেলার দিকে যেতে দেখলেই গাঁওওয়ালে কেউ না কেউ বাড়িতে খবর দেয়, মা গিয়ে চিল্লিয়ে খেলার ভুত ভাগিয়ে দেয়। গিরীশ শুনেছে, মেট্রোর জন্য সরকার জমি নিয়ে নিচ্ছে এদিক সেদিকে, বাপকে বলে – খেতিতে না লাগিয়ে বিল্ডারদের সাথে লাগালে লস যাবে না টাকাটা। বাপ তেড়ে ওঠে, বিল্ডাররাই ভুলিয়ে ভালিয়ে ওর জমি নিয়ে নিয়েছিল। পাণ্ডুরঙ বাপতেজির নাম করে কিরা কাটে, অভিশাপ দেয়।

    মার্চ, এপ্রিল, মে তিনমাস এদিকে মারাত্মক গরম পড়ে। প্রচুর জল, নিম্বুপানি না খেলে রাস্তায় হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়া অসম্ভব নয়। শীতল ব্যাগে একটা জলের বোতল রাখে, ভেতরটা শুকিয়ে গেলে দুই এক ঢোক খায়। সরকার আধা লকডাউন ডেকেছে, রাতে ফেরার জন্য অফিস থেকে ই-পাস বানিয়ে দিয়েছে। ন’টার পরে পুলিশ থাকে রাস্তায়, ধরে পাস চেক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রায়ই। রাত ন’টা থেকে ভোর ছ’টা কার্ফু, তবে পুলিশ থাকে রাত একটা অবধি। গিরীশ বলে, পুলিশদেরও কামাই কমে গেছে অনেক। এক বচ্ছর হল, রাস্তায় সেভাবে নাকা চেকিং হয়নি, তা কামাই হবে কোত্থেকে? আজকাল সকালেও অটো বা শেয়ারের টমটম পাওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই একমাস আগেও অটো না থাকলেও টমটম থাকত। একটু তাড়াতাড়ি বেরোলে, তিনবার বদলে ঠিক সময়ে স্টেশান পৌঁছানো যেত। মেট্রোরেল চালু হলে বাঁচা যায়, কিন্তু মেট্রোর কাজও ঢিলে তামালে চলছে।

    অ্যাম্বুলেন্সের তীক্ষ্ণ আওয়াজে গিরীশ বাইকটা সাইড করে স্লো করল। লাল-নীল আলো জ্বেলে অ্যাম্বুলেন্স দ্রুত বেরিয়ে যাবার পর, স্পিড না বাড়িয়ে কী ভেবে বাইক স্ট্যান্ড করে শীতলকে নামতে বলল, নিজেও নামল। ফুটপাথে উঠে পায়ের কাছে ব্যাগ নামিয়ে, হেলমেট খুলে বেঞ্চিতে বসে গিরীশ। শীতল অবাক হয়ে দেখছিল, ইশারায় পাশে এসে বসতে বলে ওকে। ব্যাগের সাইড পকেট থেকে দুই লিটারের লিমকার বোতল বের করে ঢকঢক করে জল খায়, শীতলকে দেয়। বর্ষা আসতে এখনো দেড়-দুই মাস বাকি। গিরীশদের এলাকায় জলের সমস্যা খুব। একদিন অন্তর মিউনিসিপালিটির কলে জলে আসে আর সপ্তাহে তিনদিন সকালে ট্যাঙ্কার আসে, সব বাড়ি থেকে লাইন দিয়ে সারা দিনের জল ভরে নিয়ে যেতে হয়। এই বছরে ট্যাঙ্কারের ভাড়া বেড়ে হয়েছে ২৪০০/- টাকা। মহল্লার সবাই মিলে ভাগেও মাসে অনেকগুলো টাকা লেগে যায় জল কিনতে। গিরীশ তাই যতটা পারে, নিজের খাবার জল সিটি এলাকা থেকে ভরে নেয়।

    শীতল এসব জানে, তাই জলটা নিতে ইতস্তত করে। ওর নিজের বোতলের জল অবশ্য ফেরার পথে গাড়িতেই শেষ হয়ে গেছে, এদিকে ভেতরটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে। গিরীশ ওর হাতে গুঁজে দেয় বোতলটা, শীতল মুখে জল ঢালতে ঢালতেই শোনে গিরীশ বলছে, একটু বসে নেওয়া যাক। তাছাড়া ওর কিছু বলারও আছে। গিরীশ আস্তে আস্তে বলে ‘নাস্তা বোলে তো’র ভেতরের অবস্থা খুব ভাল না। বেশ কিছু রাইডারকে বসিয়ে দিয়েছে এই মাসে। এছাড়া লোকের অর্ডার করাও কমে গেছে কিছুটা। শুক্র শনিবারে বাঁধা অর্ডার ছিল বেশ ক’টা পরিবারের, তার মধ্যে মাত্র দু’টো করছে তাও অনেক কম টাকার। ও তাই ‘ইটস ডান’ নামে আর একটা অ্যাপের ডেলিভারির কাজ নিয়েছে। এরা সবকিছুই ডেলিভারি করে, কিরানা জিনিসপাতি, রান্না করা খাবার, ওষুধ, কাগজপত্র এমনকি পান সিগারেটও। অর্ডার নিয়ে পয়েন্ট ট্যু পয়েন্ট প্যাকেজ পৌঁছানো কাজ। এই দুটো কাজই ও একসাথে করবে।



    পাঁচ

    সাড়ে বারোটার পরে শীতলকে গুদামে ঢুকতে দেখে খিঁচিয়ে উঠল মালিক, এইরকম লেট হলে ওকে আর কাজে রাখা সম্ভব হবে না। আজকাল খরিদ্দার আশা করে সিস্টেমে দেখানো ডেলিভারি ডেটের বেশ খানিকটা আগেই যেন ডেলিভারি হয়ে যায়, সেখানে এন্ট্রিই লেট হলে ডেলিভারি আগে কী করে হবে? আর এ মাসে শীতল প্রায় রোজই লেট। গোটা গুদামের চিৎকার বকুনি শুনতে শুনতে শীতল, টের পায় চুড়িদারের থাইয়ের কাছে বিন্দু বিন্দু সিক্ততা। অকারণেই লম্বা কামিজটা হাত দিয়ে টেনেটুনে বাথরুমে ঢুকে যায়। ট্রেন থেকে নেমে আজ প্রাণপণে দৌড়েছিল, কিন্তু তাও বাসটা পায়নি। এখন বাসও কমে গেছে, ঘণ্টায় একটা আসে কি আসে না। ওদিকে আজ তিনদিন হল বড়েভাইয়াকে ধরেছে বদবিমারিটা। কাল রাতে খুব খারাপ অবস্থা গেছে, সোলাপুরে কোন হাসপাতালে বেড পায়নি। আজ সকালে শ্বাসের কষ্ট একটু কম। ওদিকে ভাবী এদিকে মা সমানে কাঁদছে, গণপতিকে ডাকছে।

    বেলা চারটেয় শেষ ডেলিভারি লট নিয়ে আমিন বেরিয়ে যাবার পর মালিকও বেরিয়ে গেল। যাবার আগে আঙুল তুলে শীতলকে বলে গেল, এই মাসে আর একদিনও লেট হলে, এ মাসের মাইনে ও পাবে না, ওর জন্যই কম্ফিকার্টের রেটিং খারাপ আসছে। আমিন ফিরলে ওরা বেরোবে। ততক্ষণ আজকের হিসেব মিলিয়ে, রাত আটটায় যে মাল আসে, তার এন্ট্রি করে রাখবে। রাত দু’টো আর সকাল দশটার লট দু’খানার এন্ট্রি শীতলকে সকালে এসে একসাথে করতে হয়, তাই দেরি হলে ডেলিভারিও দেরি হয়। ও বোঝে সকাল ন’টা নাগাদ পৌঁছে যেতে পারলে ওরও সুবিধে আর মালিকও খুশি হয়। কিন্তু অত দূর থেকে দুই ঘণ্টা ট্রেনে, আবার এদিক ওদিক মিলিয়ে দেড় ঘণ্টার অটো কি বাসে করে আসতে গিয়ে ন’টার মধ্যে পৌঁছানো হয় না। মাঝে কয়েকদিন গিরীশ ওকে বাইকে করে একদম অফিস অবধি পৌঁছে দিচ্ছিল, তখন সাড়ে ন’টা কি দশটার মধ্যে ঢুকে যেত। তারপরই ‘ইটস ডান’এর কাজটা ধরে নিল। ব্যস, আবার লেট।

    আটটার মালের গাড়িতে খবর এল, রাত দু’টোর গাড়ি আসবে না। কাল থেকে পুরো লকডাউন ডেকে দিয়েছে আবার গরমিন্ট। আজ রাতের সব ই-পাস ক্যান্সেল করেছে। কেউ যেন ন’টার পরে না বেরোয়। মালের গাড়ি বেরিয়ে যেতে, ওরা ক’জন বসে একটু হাসাহাসি করল। বিমারীর হাতে যেন ঘড়ি বাঁধা আছে, গণপতি যেন ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে অসুখ, মওত পাঠাবে! আজ মাল এসেছেও কম, ঝটপটই এন্ট্রি হয়ে গেল। বিকেলে একবার বাবা ফোন করেছিল, বলল, বড়ে ভাইয়ার শশুরাল থেকে ফোন এসেছিল, ওদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সোলাপুরে যেতে বলেছে। শীতল কাজের অজুহাতে ছেড়ে দিয়েছিল তখন, মনে পড়তেই বুকের ভিতরে কী যেন খামচে ধরল। লক ডাউনের মধ্যে যাবেই বা কী করে? চিন্তাগুলো তাড়াতে কম্পিউটারে চোখ রাখে ও। আজ একটা অদ্ভুত জিনিস এসেছে এক কার্টন, উপরে লেখা প্যান্টি লাইনার। অনেকটা স্যানিটারি প্যাডের মতই দেখতে। মনিটরটা নিজের দিকে একটু কোণাচে করে ঘুরিয়ে নিয়ে জিনিসটার বর্ণনা পড়তে থাকে। আরে এটাই তো ওকে বাঁচাতে পারে!

    আমিন তাড়াতাড়িই ফিরল, জানাল বাইরে আবহাওয়া থমথমে গুমোট হয়ে আছে। লোকজন বিশেষ কেউ বাইরে নেই, গরমিন্ট থেকে মাইক নিয়ে সবাইকে ভেতরে থাকতে বলছে। আলিবাগ, মালভনে নাকি মাছুয়াদের সরিয়ে নিয়ে গেছে অন্য জায়গায়, এফএমে শুনেছে। কদিন ধরে শীতলের সাথে ভাল করে কথা বলে না, তাকায় না আমিন। ডেলিভারি একটু দেরি হওয়ায় ওর রেটিং খারাপ দিয়েছে কয়েকজন। আজও একটু দায়সারাভাবেই ডাকল ফেরার জন্য। শীতল গিরীশকে ফোনে বলছিল, আজ ওরা তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যাচ্ছে, তাড়াতাড়ি ফোন ছেড়ে কুঁকড়ে গুটিয়ে গাড়িতে উঠল। গিরীশ হাদপসারে এসে তুলে নেবে ওকে। হঠাৎ মনে হয়, আচ্ছা গিরীশ কি কোনোদিন খেয়াল করেছে, টের পেয়েছে ওর অসুখটার কথা? স্যানিটারি প্যাডের বড্ড দাম, রোজ রোজ পরা পোষায় না। প্যান্টিলাইনার কিনতে পারলে গিরীশ আর টের পাবে না। কিন্তু সামনের মাসে মাইনে পাবে তো শীতল?

    রাত ন’টা পেরিয়ে গেছে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক আগে, ই-পাস তো আজ রাতে ক্যান্সেল, গিরীশ তাই হাইওয়ে ছেড়ে ভেতরের শর্টকাট রাস্তায় বাইক ছোটায় হু হু করে। অন্যদিন ওদের দু’জনের মাঝখানে থাকে ডেলিভারির ব্যাগটা, আজ ওটা শীতলের পিঠে দিয়ে ওকে বলেছে গিরীশকে শক্ত করে ধরে বসতে। এই রাস্তাটায় লাইট তেমন নেই, বাইকের হেডলাইট ভরসা। মেট্রোর মাটি খুঁড়ে রাস্তার পাশে স্তুপ করে রেখেছে, জায়গায় জায়গায় মেট্রোরেলের সুড়ঙ্গের পাশের টিনের পার্টিশান দেয়াল খানিকটা ভেঙে কাত হয়ে রয়েছে, হেডলাইটের আলোয় মনে হচ্ছে মস্ত গহবর চলে গেছে পৃথিবীর কেন্দ্র অবধি। গিরীশ হেলমেটের সামনের ঢাকনিটা কপাল অবধি তুলে শীতলকে বলে, রেললাইনেরা আসলে এক অন্যের সাথে জোড়া থাকে। একটা রেলগাড়িতে চড়লেই আসলে পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে চলে যাওয়া যেত, যদি না মানুষের রাজনীতি মাঝখানে সীমানা বসিয়ে রেললাইনটা টুকরো করে দিত।



    ছয়

    তালেগাঁও যাবার মোড় ছেড়ে সোজা খানিক এগিয়েই গিরীশ টের পায়, পাশের পিছল আঠালো মাটি রাস্তায় এসে পড়েছে, বাইক পিছলাচ্ছে অল্প অল্প। গতিবেগ কমায় আর ওকে চমকে দিয়ে পিছনে বেজে ওঠে ‘ইয়ে দেশ কি ধরতি সোনা উগলে, উগলে হীরে মোতি, ইয়ে দেশ কি ধরতি, শীতলের মোবাইলের রিংটোন। গিরীশ জিগ্যেস করে, দাঁড়াবে কিনা? শীতল ততক্ষণে একহাতে ব্যাগ অল্প খুলে, দেখে নিয়েছে বাবার ফোন, থামতে না করে ফোনটা কেটে দেয়। ওরা আবার রেলের গল্পে, মেট্রোর গল্পে ডুবে যায়। শীতল বলে, শিবাজীনগরে মেট্রোয় চেপে যদি হরদোয়ার পৌঁছে যাওয়া যেত! গিরীশ বলে সে আর এমন অসম্ভব কী? মেট্রো তো ইন্টারসিটির স্টেশান অবধি যাচ্ছেই, সেখান থেকে মুম্বাই, মুম্বাই থেকে দিল্লী – রাজধানী এক্সপ্রেসের লাইন ধরে, ব্যস, সেখান থেকে সোজা হরদোয়ার। ওর বাঙালি পড়শি বলে ‘হরিদ্বার’, ভগবান হরির কাছে যাবার দরজা, সেখানে নাকি ভীষণ সুন্দর আরতি হয় গঙ্গার উপরে।

    ঠিক ঝড় নয়, তবে হাওয়া দিচ্ছে এলোমেলো, নিঃশব্দে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে আকাশের পুব থেকে পশ্চিম অবধি। গিরীশ বলে, এই যে আঠালো মাটি, এতে খেতি ভাল হয়, গন্না, গেঁহু। ‘ইয়ে দেশ কি ধরতি সোনা উগলে’ আবার বাজছে শীতলের ফোন, এবারে ওর বড়বোন। প্রচণ্ড ভয় করে শীতলের, আলতো করে ছুঁয়ে নীরব করে দেয় ফোনটা। এমন মাটির জন্যই পাণ্ডুরঙ বাপতে সত্যাগ্রহ করেছিল, বলে চলেছে গিরীশ। বলতে বলতেই হ্যান্ডেলের আয়নায় দেখে, পিছন থেকে বিরাট কালো কী যেন একটা তেড়ে আসছে ওদের দিকে, যার নীচের বাঁ দিকে মিটমিটে কিছু একটা জ্বলছে। ইস্কুলে পড়া একচক্ষু দানব সাইক্লপসের কথা মনে পড়ে। এটা কি কোন জানোয়ার? না কি হাইওয়ে থেকে পুলিশের ভয়ে শর্টকার্ট নেওয়া বেয়াইনি ট্রাক? গিরীশের শরীরে পাক দিয়ে মাথাটা ঘুরে ওঠে হঠাৎই, ক’দিন ধরেই শরীরে তেমন জুৎ নেই। ইতোমধ্যে আরো একটা অর্ডার ঢুকেছে ফোনে, শীতলকে নামিয়ে সেটা করে তবে বাড়ি।

    নাহ, কাল থেকে আধা লিটার দুধ খাবে গিরীশ, শরীর ঠিক না হলে কামধান্ধা ঠিকঠাক হবে না; ভাবতে ভাবতেই বাইকটা আরেকটু সাইড করার চেষ্টা করে, এখানটায় মেট্রোর টিনশেড ভেঙে রাস্তায় চলে এসেছে অন্ধকারে দেখতে পায় নি, চাকায় ধাক্কা লেগে বাইক ছিটকে হেলে রাস্তার মাঝে চলে আসে। আর তক্ষুণি ওই একচোখো সাইক্লপস এসে ওদের দু’জনকে গিলে নেয় বাইকশুদ্ধ। কতক্ষণ পরে কে জানে, ট্রেনের আওয়াজে শীতল চোখ খোলে। আরে মেট্রোরেল কবে চালু হয়ে গেল? এই তো দিব্বি কেমন চকচকে আলোজ্বলা স্টেশন, বড় বড় কাচের জানলাওলা মেট্রো দাঁড়িয়ে আছে, ঠিক যেমন ইউটিউবে দেখে। গিরীশকে টেনে তোলে, দু’জনে মিলে বাইকটা নিয়ে ঢুকে আসে প্ল্যাটফর্মে। ওদের সামনের দরজাটা দুইপাশে সরে গিয়ে খুলে হাট হয়ে যায়। সড়াৎ করে বাইকটা তুলে দুজনে উঠে পড়ে, এই কামরাটায় কেউ নেই, কেউ হয়তো জানেই না চালু হয়ে গেছে। সামনের কামরায় আছে মনে হচ্ছে, কিন্তু ঠিকমত দেখা যাচ্ছে না। ঝমাঝম করে ট্রেন সুড়ঙ্গে ঢোকে, দু’জনে ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে পড়ে জানলার ধারে। জলকাদা নরম আঠালো মাটির মধ্যে থেকে শুধু বারেবারে বেজে ওঠে ‘মেরে দেশ কি ধরতি সোনা উগলে উগলে হীরে মোতি। মেরে দেশ কি ধরতি’।




    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
    স্কেচ ৬ | পানুর মেটামরফোসিস | চালচিত্রের চালচলন | কেমন আছে ওরা? | চাও করুণানয়নে | পুত্রার্থে | সই | আপনি যেখানেই থাকুন | কিসসা গুলবদনী | জনৈক আবহ ও অন্যান্যরা | গুচ্ছ কবিতা | অমল রোদ্দুর হয়ে গেছে | ইনি আর উনির গপ্পো | দুগ্গি এল | দুর্গারূপে সীতা, ভিন্নরূপে সীতা | প্রিয় অসুখ | শল্লকী আর খলিলের আম্মার বৃত্তান্ত | রানার ছুটেছে তাই | বিসর্জনের চিত্রকলা | কল্পপ্রেম | লম্বা হাত খাটো হাত | কেন চেয়ে আছো গো মা, মুখ পানে! | ছোট্ট পরীর জন্মদিন | জাপানি পুতুল | আধাঁরে আলোঃ শারদ সাহিত্য | ইন্দুলেখার ইতিকথা | মুর্শিদাবাদ | এই দিনগুলি | জ্বিন | জোনাকি এবং ডোরেমিরা | বাসায় চুরি | বিশ্বকর্মার গুপ্তঘট | দুর্গাপূজা - দুটি প্রবন্ধকথা | টিউশন | ফেরা | মায়া | বন্দী | মেয়েদের কিছু একটা হয়েছে | কেল্লা নিজামত | সীতারাম | দড়াবাজি | মায়াফুলগাছ | যখন শ্যামের দ্বারে | কুয়াশা মানুষের লেখা | সময় হয়েছে নতুন খবর আনার | মিষ্টি চেখে ওড়িশার ডোকরা শিল্পীদের গ্রামে | নিশি | পথ | প্রাকার পরিখা | নীল সাইদার গল্প | তুষারাচ্ছন্ন ইউরোপে শ্রীমতী ফ্রয়ডেনরাইখের আশ্চর্য বিষাদ | দীপাবলীর বারান্দায় | কলমি শুশনি | এক অনিকেত সন্ধ্যা | গৌরি বিলের বৃত্তান্ত | আনন্দগামী বাস থেকে | মুয়াজ্জিনকে চিরকুট | দেবীর সাজে সৌরভ গোস্বামী | শরৎ ২০২১
  • গপ্পো | ১৫ অক্টোবর ২০২১ | ৬১৫২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • সায়ন্তন চৌধুরী | ১৫ অক্টোবর ২০২১ ০৯:২০499601
  • ভালো লাগল, আনসেন্টিমেন্টাল গদ্য এবং চরিত্রগুলি ইন্টারেস্টিং; কিছু জায়গায় লেখক সরাসরি কথা না বললে এবং অন্য কিছু জায়গায় পোয়েটিক্সের সাহায্য নিলে আরও ভালো হত মনে হয়েছে।
  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 49.37.***.*** | ১৫ অক্টোবর ২০২১ ১৩:০৩499606
  • বাঙালি যেখানে যাবে, সেখানকার গল্প লিখবে। নতুন নতুন পেশার লোকের গল্প লিখবে।  এই ভাবে বাংলা সাহিত্যের পরিসর বাড়বে। আমার এই গল্পটা ভালো লাগলো। 
     
    সাধারণ ভাবে সিনেমাটিক চিত্রকল্প গল্পে , গদ্যে আমি খুব একটা ভালোবাসি না। আমার মতে ইকুয়েশন উল্টে দিয়ে লেখার ফর্মটা এমন করে করা উচিত যেটাকে ক্যামেরা দিয়ে করতে গেলে লোকের গ ফেটে যাবে, আর এই তো পরিচালক বা ফোট্গ্রাফার বা শর্ট মেকার , 'ইনটারপ্রেট' করলেন বলে ঢোঁক গিলতে হবে।  
     
    আমার কিউবার সেনেল পাজ বলে লোকটার একটা গল্প মনে পড়লো। গল্পটার নাম সম্ভবত , 'ডোন্ট টেল হার ইউ লাভ হার'। লাতিন আমেরিকার সাহিত্যে আমার সর্বকালের ফেভারিট এর মধ্যে একটা। কার্লোস ফুয়েন্তেস আর হুলিও ওর্তেগা সম্পাদিত পিকাডর এর কোন একটা কালেকশনে পড়েছিলাম। সম্ভবত। সেনেল পাজ বাই দ্য ওয়ে সেই লেখক, যার গল্প থেকে স্ট্রবেরি চোকোলেট ইত্যাদি সিনেমাটা হয়েছে। 
     
    একবার একটা ছেলে, একটা মেয়েকে নিয়ে প্রেম নিবেদন ও সেক্স করার প্ল্যান করে হাভানায় এসেছে, থাকার জায়গা ব্যবস্থা ইত্যাদি কমপ্লিট, এমন একই দিনে, আর সময় পেলো না, একই সময়ে চে গুয়েভারার খুনের খবর এসে পৌচেছে বলিভিয়া থেকে হাভানায়। তার পরে শহর ও শরীর জুড়ে নানা ক্যাওস বা মরাল ক্রাইসিস ইত্যাদি।  
  • ইন্দ্রাণী | ১৫ অক্টোবর ২০২১ ১৮:৩২499623
  • দময়ন্তী যেন একটা সিরিজ লিখছেন- দুষ্কালের পদধ্বনি, তিমিরের বেদীতে উৎসব, ইস্মাইলের পাঁঠার দোকান, রানার ছুটেছে - একটা দুঃসময়কে ধরে চলেছেন টানা- আমার এই রকম মনে হচ্ছে।

    এই গল্পটির চরিত্রদুটি, ডিটেলিং, ভাষা- পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল একটা শর্ট ফিল্ম দেখছি। স্টেশনের ওভারব্রিজের সিঁড়ি বেয়ে দৌড়ে নামছে একটি মেয়ে- ক্যামেরা তাকে পিছন থেকে ধরছে ; শেষ হচ্ছে কাদা মাটি অন্ধকারের ওপর টাইটল কার্ড, দেশ কি ধরতি গানটা বাজছে-
     
  • শিবাংশু | ১৫ অক্টোবর ২০২১ ১৮:৪৭499627
  • একটা পৃথিবী, বলা ভালো মানুষের যাপন, যেন বারবার হাত ফসকে পালিয়ে যাচ্ছে। নাগালের বাইরে, ব্যথা-বেদনার ঊর্দ্ধে, সীমার বাইরে। তাকে ধরতে চাওয়া, নয় নয় সহজ এ খেলা ... বাহ... 
  • স্বাতী রায় | ১৫ অক্টোবর ২০২১ ২০:৫৪499631
  • অস্বস্তিকর গল্প। সব দিক দিয়েই। আর সেজন্য লেখিকাকে ধন্যবাদ। অস্বস্তির কাঁটা জিইয়ে রাখার কাজটাও কাউকে করতে হয়। 
  • সুদীপ্ত | 115.187.***.*** | ১৫ অক্টোবর ২০২১ ২১:২৬499634
  • দময়ন্তীদি বাংলা ভাষায় যেভাবে ভিন্ন শহরের খেটে- খাওয়া মানুষদের কাহিনী সহজভাবে তুলে ধরে, এই গল্প তার ব্যতিক্রম নয়। গল্প তৈরী হওয়ার সাথে সাথে একটা মেলানকোলিক আবহ শুরু থেকেই জড়িয়ে যায় আর শেষ অবধি, এমনকি শেষ হওয়ার পরেও রেশ রেখে যায়। গিরীশ আর শীতলের এই পার্টনারশিপগুলো আজকের দিনে বড্ড জরুরী, বাঁচা-মরার দৈনন্দিন যাপনে আর্থ-সামাজিক শ্রেণী নির্বিশেষে। শীতলের মনে গিরীশকে ওর অসুখের কথা জানানো-না জানানোর দ্বন্দ্বটাও এই গল্পে উল্লেখযোগ্য মনে হয়েছে, আমাদের দেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটের বিচারে। এই পার্টনারশিপ-টা আর ওই দ্বন্দ্বটা এই গল্পের বড় পাওনা! 
  • aranya | 2601:84:4600:5410:705b:b276:54c0:***:*** | ১৬ অক্টোবর ২০২১ ০১:৫৩499637
  • ভাল লেখা 
  • Pallab Ray | 2001:bc8:1820:614::***:*** | ১৬ অক্টোবর ২০২১ ১৬:২৪499658
  • কঠিন সময়ের কঠিন সংগ্রামের গল্প। ভাল্লাগল। গুরুচন্ডালিকে ধন্যবাদ। জরুরী কাজ করছেন আপনারা।
  • ঝর্না বিশ্বাস | ১৬ অক্টোবর ২০২১ ২০:৩৭499662
  • স্পীডটা দূর্দান্ত লেখায়...খুব ভালোলাগলো...শরত্‌ সংখ্যাটাই খুব ভালো হয়েছে...
  • রূ | 2a0f:9100:110:a::***:*** | ১৬ অক্টোবর ২০২১ ২৩:৫৬499677
  • শিতলের সাথে নিজের অনেক মিল পেলাম। কি বলব। 
  • 4z | 2606:40:4e5:3232::460:***:*** | ১৭ অক্টোবর ২০২১ ০৮:৩৬499679
  • এক দমবন্ধ করা অনন্ত দৌড় যা কখনো শেষ হয় না, খালি চরিত্ররা বদলে যায়। একটা কখনো না শেষ হওয়া রিলে রেস। লেখাটা পাঠককেও সেই দৌড়ে সামিল করে দেয়। 
  • পথভোলা | 2a03:e600:100::***:*** | ১৭ অক্টোবর ২০২১ ১২:৪৯499693
  • যতদিন তাগদ আছে ততদিন একসাথে দুটো তিনটে কাজ করে চলো তারপর ধপ করে পড়ো। মড়লে ভাল না মরলে যাদের ঘাড়ে পরলে তাদের লাথি ঝাটা এই জীবন আমাদের। নমস্কার
     জানবেন দিদি। 
     
     
     
  • | ১৭ অক্টোবর ২০২১ ২১:৩৭499716
  • সায়ন্তন, 
    অজস্র ধন্যবাদ। ঠিকই বলেছেন, লেখকের ঢুকে পড়াটা এড়াতে হবে। 
     
    বোধি, 
    সেনেল পাজ'এর কোনও ইংরাজি অনুবাদ আছে বলে জানি না তো। পেলে পড়ে দেখতাম। 
     
    ইন্দ্রাণী ঠিক বলেছেন। দুঃসময়কে ধরে রাখার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা আর কি। আরো দুই তিনটে লিখব হয়ত। আসলে প্রতিদিনই এতকিছু হয়ে যাচ্ছে যে তাল রাখা যাচ্ছে না। 
     
    শিবাংশু, অরণ্য, পল্লব রায়, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। 
     
    স্বাতী, 
    সাধারণত কিছু কিছু বিষয় শিশু বা বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে যদি বা উল্লেখ করা হয়, একজন ওল্পোবয়স্ক মেয়ে বা মহিলার ক্ষেত্রে কদাচ নয়। সে একেবারে বিগ নো নো। অথচ একে তো শারিরীক সমস্যা, তারপরে সমাজের চাপ মেয়েগুলোর অবস্থা শোচনীয় হয়ে ওঠে। 
     
    সুদীপ্ত, পড়েছিস আবার বলেও গেলি। একগাল হাসি আর ভালবাসা। 
     
    ঝর্ণা বিশ্বাস, রূ, পথভোলা, আপনাদের যে গল্পটা ছুঁতে পেরেছে সেটা অনেক বড় পাওয়া আমর। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানবেন। 
     
    ফোজ্জি, ভালবাসা কৃতজ্ঞতা। 
  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 49.37.***.*** | ১৭ অক্টোবর ২০২১ ২২:৫৫499719
  • আমি ইংরেজিতেই পড়েছি।  কোথা থেকে পড়েছি তার রেফারেন্স ও আগেই দিয়েছি। 
     
    এটা শুধু দৈনন্দিন এর শ্রান্তির বিষয় না, এটা স্বপ্নের , চিন্তার স্বাধীনতার, জীবনের স্বাভাবিক প্রবাহের অবদমন এর বিষয়। সেটা তোমার ​​​​​​​গল্পে ​​​​​​​এসেছে, ​​​​​​​বলেই ​​​​​​​সেনেল ​​​​​​​পাজ ​​​​​​​এর ​​​​​​​অতি ​​​​​​​প্রশংসিত ​​​​​​​সৃষ্টিটির ​​​​​​​কথা ​​​​​​​মনে ​​​​​​​পড়েছে। 
     
    আমি ২০০০ সালে বইটা কিনে পড়েছিলাম। অনেকদিন আগেকার কথা। 
     
    তবে পাজ এর গল্পটা একটু জকুলার এবং মরালিটি বিষয়টার প্রতি প্রচন্ড নকল রেভারেন্স দিয়ে ভরা বলে বেশি করে মনে আছে। সেটা তোমার জেনেরালি নেই। তোমার এম্ফাসিস কমপ্যাসনে। অন্যদিকে আলোর বর্ণনায় , দৃষ্য বর্ণনায় একটা সিনেমাটিক গঠন আছে, সেটা আমি নর্মালি পছন্দ করি না, আমি মনে করি সিনেমা এবং জার্নালিজম এর ফর্মের দিক থেকে যে ওভারবিয়ারং পাওয়ার যেটার শিকার অল্প বিস্তর বড় থেকে ছোটো সকলেই, তার একটা খেলা ঘোরার সময় এসেছে। তাই সেসব দিক দিয়ে তুমি তোমার মত।
     
    প্রতিটি লেখক ই আলাদা হবে। আশাকরি এই লেখার জন্য তুমি আলাদা সম্মান ভবিষ্যতে পাবে। লোকের মনে রাখা উচিত।
     
    লেখকের ঢুকে পড়া প্রসঙ্গে তোমার আর সায়ন্ত্বনের কথোপকথন আমি স্বাভাবিক ভাবেই বুঝি নি। বিষয়, চরিত্র র সঙ্গে চুড়ান্ত আইডেন্টিফিকেশন আর চুড়ান্ত ডিসপ্যাশনেট ন্যারেটিভ , আর দুই এর প্রাচীর ভেঙ্গে দেওয়া তিন ধরণের উমদা লেখাই বাংলায়, ও অন্যান্য সাহিত্যে রয়েছে।   অতএব আই রিয়েলি ডিড নট গেট দ্যাট। 
     
    স্ট্রবেরি অ্যান্ড চোকোলেট ইংরেজিতে রয়েছে। অন্তত নেই বলার মত কন্ফিডেন্স পাচ্ছি না। আমিই হয়তো কারো বাড়ি টাড়ি তে দেখেছি। আর ​​​​​​​ইংরেজিতে কিছু ​​​​​​​দেখলে ​​​​​​​বলব। প্রচুর পাবলিশার বিশেষতঃ নিউ ইয়র্কে আছে, তারা কিউবা সম্পর্কে ইন্টারেস্টেড। তবে লাতিন আমেরিকা সম্পর্কে জেনেরাল ইন্টারেস্ট ইংরেজি রিডার দের কমে গেছে বলেই হয়্তো, স্প্যানিশ আর পোর্তুগীজে e বেশি মাল কড়ি রয়েছে। 
  • সায়ন্তন চৌধুরী | ১৮ অক্টোবর ২০২১ ০০:৪৮499725
  • আসলে এনার লেখা পড়ে আমার সাদাত হোসেন মান্টো, চুঘতাই এঁদের কথা মনে পড়েছে। বাস্তবতা থেকে না বেরিয়ে ন্যারেটিভকে আলগা হতে না দেওয়া এবং ন্যারেটিভে কোনো জায়গা না ছাড়াটা চোখে পড়েছে এবং, বলা বাহুল্য, সেটা ভালো লেগেছে। তো, লেখকদের সাধারণত প্রবণতা বা দায় থাকে চরিত্রদের মাধ্যমে বক্তব্য রাখার; মান্টোর আর্টে লক্ষ্য করি চরিত্রগুলির মাধ্যমে লেখক দেশভাগের বড় বিষয়গুলি নিয়ে কোনো গ্র্যান্ড ন্যারেটিভ তৈরি করার চেষ্টাই করছেন না, বরং চরিত্রগুলির নিজস্ব ভয়ভীতি, হিংসা, রিরংসা, বিচ্ছিন্নতা, ইনসিকিয়োরিটি শুধু এইসব লিখে রাখছেন। তাতেই কিন্তু কয়েকটি মাত্র ছোটোগল্পে একটা গুরুত্বপূর্ণ সময় ধরা থাকছে। এই গল্পের ক্ষেত্রেও চরিত্রদুটির ভয়, ইনসিকিয়োরিটি চমৎকার ফুটে উঠেছে।
     
    এই দৃষ্টিকোণ থেকে আমার ধারণা হয়েছিল এধরনের প্রজেক্টে লেখকের স্বর টেক্সটের যত বাইরে রাখা যায়, ততই ভালো; এটা সমসাময়িক দেশকালকে ধরার জন্যে একটা এফেক্টিভ ক্র্যাফট বলে মনে করি। অবশ্যই এছাড়াও অন্যান্য নানারকম লেখালিখির স্টাইল আছে।
  • bodhisattvagc dasgupta | ১৮ অক্টোবর ২০২১ ০২:২১499726
  • আই সি , বুঝতে পারলাম।  লেখকের সাধারণ ভাবে নারীবাদী অবস্থান থেকে লেখার বিষয় অনেক সময় পার্টিশন বা পারিবারিক দৈনন্দিন বলেই কি এই ধারণাটা আপনার তৈরি হয়েছে? হতে পারে। প্রগতি সাহিত্যের কড়া রিয়ালিস্ট , ক্রাফ্টকে একটু দূরে সরিয়ে এখন ধরণের লেখার ঐতিহ্যের একটা ট্রেসিং করা যেতে পারে। তবে এই লেখাটা তে অনেকে রিয়ালিস্ট লেখার মতো পরিবারের ইনস্টিটিউশনের সাবেকি প্রেক্ষিতে র বালাই নাই। এটা এই সিরিজটাতে, যেটার উল্লেখ ইন্দ্রাণীদি করেছে , ডেলিবারেটলিই হয়তো করেছে। হয়তো সেই জন্যই মরালিটির বিষয়টাতে একটা শেড এনেছে। 
    আই সি , ভালো‌ মন্দ ঐতিহ্য নিরীক্ষা তো আলোচনায় আসবে, তবে কিসে একটা লেখা আরো উতরোতে পারে ,  সেটা সাধারণ ভাবে আ্যডাল্ট সমালোচনা র স্কোপের বাইরে, মা কি হ ইয়াছেন পর্যন্ত সমালোচকের সীমা:--))) তাই প্রথমটা বুঝিনি। :--))))
  • সায়ন্তন চৌধুরী | ১৮ অক্টোবর ২০২১ ০৫:১৯499731
  • আমার মূলত সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে লেখার জন্যেই মনে হয়েছে; আর স্টাইলটাও লক্ষ্য করেছি। সব মিলিয়ে লেখায় একটা ইউনিটি অফ এফেক্ট বজায় থেকেছে।
     
    "কিসে একটা লেখা আরো উতরোতে পারে" সেটা সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব বিষয়। আমি শুধু আমার দৃষ্টিভঙ্গি জানিয়েছি। অবশ্যই সমালোচনা লিখিনি। লিটেরারি ক্রিটিসিজমের কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড আমার নেই। আর পৃথিবীর কোথাও পত্রিকায় একটা লেখা প্রকাশের সঙ্গেসঙ্গে তার সমালোচনা লেখা হয়না। মূলত ক্রিটিক/ফীডব্যাক/লেখা সম্পর্কে টুকরো ডায়ালগ এগুলো আসে। তারপর সেটা বই/অ্যান্থোলজিভুক্ত হলে বুক রিভিউয়ের জন্যে পাঠানো হয়। রিভিউয়ার মূলত বিচার করেন লেখকের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়টি। লিটেরারি ক্রিটিসিজম আসে এর পরের ধাপে; যদি বইটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হয়, তা ঐ ভাষাসাহিত্যের ক্যাননের অংশ হিসেবে ধরা হয়। এটাই মোটামুটি স্বীকৃত স্ট্রাকচার। সুতরাং, আপনার বক্তব্য মেনে নিতে পারলাম না। :)
  • 4z | 2606:40:490:99cd::1261:***:*** | ১৮ অক্টোবর ২০২১ ০৭:৫৪499735
  • কৃতজ্ঞতা? পতন ও মূর্ছা
  • সম্বিৎ | ১৮ অক্টোবর ২০২১ ১২:৫২499749
  • কাহিনীটা যে খুব মন টেনেছে, তা বলবা না। কিন্তু ক্রাফটটা অসম্ভব ভাল লাগল। 
  • | ১৮ অক্টোবর ২০২১ ২১:১০499769
  • থ্যাঙ্কু বোধি। খুঁজে নেব। 
     
    থ্যাঙ্কু ন্যাড়াদা। 
  • শত | 2405:8100:8000:5ca1::2a9:***:*** | ২০ অক্টোবর ২০২১ ০০:২০499849
  • এখন অনেকেই দুটো তিনটে করে কাজ ধরে নেয়। মায়না কমে গেছে সংসার চলবে কি করে? ভাল লাগ্ল এদের কথা জেনে।
  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 2405:201:8008:c03c:19c1:68d6:e447:***:*** | ২০ অক্টোবর ২০২১ ০১:৫৭499851
  • সায়ন্তন, দ্যাট্স ওকে, আমিও আপনার কথা একেবারেই মেনে নিতে পারিনি। ক্যানন শব্দটার ​​​​​​​যে ​​​​​​​ব্যবহার ​​​​​​​করেছন , ​​​​​​​সেটা ​​​​​​​এক্ষেত্রে ​​​​​​​অর্থহীন, প্রচুর লেখা এবং আস্তো বই পত্র তথাকথিত ক্যানন হয়ে ওঠার আগে রিভিউ এবং সমালোচনা (ক্রিটিসিজম অর্থে ) হয়ে থাকে। এমনকি ​​​​​​​ক্যানন ​​​​​​​এর ​​​​​​​অংশ ​​​​​​​হিসেবে ​​​​​​​জন্ম ​​​​​​​নিলেও ​​​​​​​থাকে, ​​​​​​​থিয়োরীর ​​​​​​​বইতে ​​​​​​​তাই ​​​​​​​হয়। ​​​​​​​আমি ​আপনার ​​​​​​​শেষ ​​​​​​​পোস্ট ​​​​​​​টার ​​​​​​​মাথামুন্ডু কিসুই ​​​​​​​বুঝি ​​​​​​​নি। :-)))) ক্যানন ​​​​​​​শব্দটার ​​​​​​​ব্যবহারে ​​​​​​​হয়তো ​​​​​​​আমাদের ​​​​​​​শিক্ষায় ​​​​​​​পার্থক্য ​​​​​​​আছে। 
     
    একটা লেখা কে কখন রিভিউ করা হবে কখন সমালোচনা করা হবে তার খুব সাংঘাতিক নির্দিষ্ট পদ্ধতি  নেই। শুধুই বিপণন এর স্বার্থে কিছু শর্ট রিভিউ বেরোয় অনেক সময় , পাঠাভিজ্ঞতা শেয়ার করার টুল ও এসেছে , কিন্তু রিভিউ জিনিসটা সমালোচনার থেকে খুব আলাদা নয়, বিপণন ছাড়া অন্য উদ্দেশ্য থাকলে। 
     
    মানে আপনার কথাটা এতটাই আজগুবি লাগছে, যে বুঝতে পারছি না, কোথা থেকে শুরু করব আর কোথায় ই বা শেষ করব। শুধু এটুকু বলি, আপনি রিভিউ, সমালোচনা এই লেখাটা সম্পর্কে প্রথমে কিছুই করেন নি, খাতা দেখার মত করে বলেছেন, কি করিলে ছাত্রী উন্নতি করিবে।  আমার ডিম ভাজা খেয়ে হোম সাইন্স দিদিমনি বলেছিলেন, গুড ইন পার্ট্স প্রায় সেরকম :-))) 
    সেটা আমার ফ্র‌্যাংকলি অড লেগেছে এর বেশি কিছু না। পরে আপনার পজিশন ক্লিয়ার করার সময়ে আপনি কিছুটা সেটা বুঝিয়েছেন, কোন ধরণের শৈলীর কথা আপনার মনে হয়েছে বা কেন মন্তব্য টি করেছেন। ফেয়ার এনাফ, ইট রিমেন্স অড দো। আমি আগেও বলেছি সেটা। 
    আমার কথা হল একটা একটা লেখা বা একটা বই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তম মন্তব্য ও ব্রডলি সমালোচনা। সমালোচনা তো আকাশ থেকে পড়া কিসু না, বিপণন স্বার্থ ছাড়া যে কোন লেখাই সমালোচনা, ভালো মন্দ কমেন্ট যাই হোক। আমি এটাও মনে করি, একটা সাবজেক্টে ইনটারভেন্শন করার টুল হয়ে ওঠে একটা সমালোচনা। সেটাই স্ট্যান্ডার্ড। শুধু সেই জন্যেই লোকে একট ফিল্ডের একটা বই কে , একটা গল্প উপন্যাস কে একজন বিশেষ স্বীকৃত লোকের কাছে রিভিউ করতে পাঠায়। জেনেরাল রিডার যদি সিরিয়াস হয়, তাইলে সেটা সেও করতেই পারে। 
     
    আমার যেমন মনেই হয়েছে, দুটি প্রসঙ্গে, একটা হল নতুন অসংগঠিত কাজ, আরেকটা হল, প্রবাসী বাঙালির লেখায় সেখানকার সঙ্গেই এনগেজমেন্ট ইন্টারনেট e লেখার পরে নস্টালজিয়ার চোটে যা উঠতে বসেছিল, সেটা ফিরে আসছে, এই দুটি প্রসংগে এই লেখাট ইন্টারেস্টিং। আপনার অর্থে ক্যানন হবে কিনা জানি না। তবে আমার অর্থে তার আগেই এটি মন্তব্য , রিভিউ , সমালোচনা যোগ্য।  
     
    যাই হোক আপনার থিয়োরীর প্রবন্ধ পড়িনি, গল্প পড়েছি, গুণমুগ্ধ পাঠক হিসেবেই নিজেকে ভেবে থাকি। সেটা তো থাকছে। 
     
    কিন্তু এক্ষেত্রে আপনি কেন প্রথম পোস্টে পোয়েটিক্স শব্দটা কেনো ব্যাবহার করেছেন আর পরে ক্যানন শব্দটা ব্যবহার করলেন একেবারেই  বুঝি নি। আমি যা বুঝি পোয়েটিক্স হল সাহিত্য দর্শন বা দারশনিক অবস্থান, সেটা কোন টেকনিক না, সেটা টেকনিক কে পরিচালিত করতে পারে মাত্র। তবু যাই হোক দর্শন দ্বার পরিচালিত হয়ে মানুষ যদি কিসু লেখে, মেনে নিলাম না হয় বলা যেতে পারে, দর্শন ই ব্যবহৃত হল, টেকনিক না হয় উহ্য রইলো।  
     
    আর ক্যানন কথাটার মানে , একটা লিটেরারি বা ধর্মীয় বা সাধারণ ভাবে সাংস্কৃতিক ঐতিহহ্যের লিখিত বা টেক্সচুয়াল রুপ। সেটা কোন একটা ইন্ডিভিউয়াল লেখাকে বলার স্কোপ নেই, যদি না সেটা কোন ধরণের স্ক্রিপচার হয়। :-)))
     
    যাই হোক , আমি কেন এ কথা গুলো বল্লাম। কারণ মতামত পছন্দ অপছন্দ, দ্বিমত স্ভাবিক ব্যাপার। হবেই। কিন্তু থিয়োরেটিকাল টার্ম সম্পর্কে যদি আলোচনায় অংশগ্রহণকারীর ই সশয় থাকে ক্লিয়ার করে দেওয়া ভালো, কারণ টার্ম গুলি স্পেসিফিক। এবার বিষয়টা সাহিত্য, ফিজিক্স না, আপনার অন্য রেফারেন্স থাকতে পারে। 
     
    আমি অক্সফোর্ড ডিকশনারি ব্যাবহার করলাম এক্ষেত্রে। আর উদা হিসেবে দুটো কথা বললাম। 
     
    ধরুন - ধরুন গেট অফ দ্য সান বেরোনোর পরে জেরেমি হার্ডিং এলিয়াস খৌরী র লেখা নিয়ে লং ফর্ম প্রবন্ধ লিখলেন। বই নতুন। ক্যানন ট্যানন তখনো হবর সুযোগ নেই, স্ক্রিপচার ও না, কিন্তু রিভিউ হল, রিভিউ হতে গিয়ে আরব আধুনিক সাহিত্য সম্পর্কে, ডিসপ্লেসড লোকের মেমরি নিয়ে দুটো কথা হল। সেটা কি সমালোচনা না? বিপণন তো শুধু মাত্র উদ্দেশ্য না। ক্লিয়ারলি পড়লেই বুঝবেন । নাকি শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় বা সরোজ আচার্য্য বঙ্কিম সম্পর্কে লিখলেন শুধু সেটাই সমালোচনা। কারণ ন্যাশনালিস্ট বাঙ্লা লেখা, শুধু না আধুনিক বাংলার অন্যতম জনক ততদিনে পরে কি লেখা হবে, তা ঠিক করে দেওয়ার জায়্গায় বহুদিন চলে গেছেন। 
     
    টেরি ইগলটন, রিচার্ড ডকিন্স এর বই, নতুন বেরোলো, প্র‌্যাকটিকালি তুলোধন করলেন , ক্রিশ্চিয়ান মেডিয়েভাল স্টাডিজ নিয়ে আলটপকা প্রচুর কথা লিখেছেন বলে, সেটা রিভিউ না সমালোচনা ? প্রবন্ধ গুলো মনে করে দেখুন, এতটাই বিখ্যাত নিশ্চয়ী পড়েছেন, সেগুলো রিভিউ আর্টিকল হিসেবেই, বিষয়ে ইনটারভেন করছে। ইত্যাদি। 
     
    এবার পোয়েটিক্স এর বিখ্যাত একেবারে হাতে গরম উদা তো বিটুইন দ্য লাইন্স ( বোলানো)  তাতেও ক্রিটিসিজম আছে, তবে ধীরে ধীরে নিজের ক্রাফ্ট গড়ে তোলার একটা বিষয় রয়েছে। 
     
    আমি দাদা গত প্রায় তিরিশ বছর ধরে রিভিউ পড়ে, এবং তা থেকে বিপণন ছেঁকে নিতে শিখে, এই মোটামুটি শিখেছি, যে ভালো রিভিউ সবসময়েই ক্রিটিক অর্থে সমালোচনা। ইন ফ্যাক্ট নানা বিষয়ের ক্রিটিক যদি নির্দিষ্ট দর্শন মেনে চলে বহুদিন ধরে, তাইলে স্ক্রিপচারের ক্ষেত্রে সে নিজেও ক্যানোন হয়ে উঠতে পারে। ততদিনে তো তাকে নিয়েও নান রিভিউ ও ক্রিটিক ও সমালোচন লেখ হবে। এই যেমন ধরুন লুকাচ ও তার উপন্যাসের বিষয়ে বক্তব্য, ক্রিস্টোফার কডওয়েল বা আর্ন্স্ট ফিশার এর লেখা যেগুলি কে  মার্ক্সবাদী টেক্সট er উদা হিসেবে ধরা হয় ও গাল দেওয়া হয়, ক্যানন অবার এত আগে থেকে যে ক্যানোন হয়েছে কিনা হলপ কইরা বলাই যায় না । 
     
    এই মতামত আপনার না পছন্দ হলেও কিস্যু এসে যায় না, ঠিক যেমন এত ভাটে আপনার কি আর কিছু এসে যাবে। এই নশ্বর জীবনে দেখা হলে দুপাত্তর খাইয়ে দেবেন আর কি , টাইপিং এর জন্য ভিক্ষা হিসেবে। :-)))) 
     
    বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত
  • bodhisattvagc dasgupta | ২০ অক্টোবর ২০২১ ০২:১১499852
  • আচ্ছা বিষয়টা এতটা অদ্ভুত লাগছে মাথা থেকে যাচ্ছে না। একটা হতে পারে আপনি সায়ন্ত্বন লিটেরারি ক্রিটিসিম কে ইউনিতে পড়ানো বিষয়পেপার নং অমুক  হিসেবে বলছেন। আর আমি বলছি পদ্ধতি হিসেবে যেখানে কনটেম্পোরারি কাজের ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছে এবং সিটি বিষয়টাতে রিভিউ আর্টিকল এর মধ্যে থেকেই একটা ইন্টারভেনশন উঠে আসছে। রাইট দ্যাট প্রোবাবলি সেটলস ইট ফর ক্যানোন ।
  • bodhisattvagc dasgupta | ২০ অক্টোবর ২০২১ ০২:১৩499853
  • and Literary criticism and 'critique' . Ok 
  • সায়ন্তন চৌধুরী | ২০ অক্টোবর ২০২১ ০৫:৩৯499856
  • আমি তো পোয়েটিক্স শব্দটা খুব সাধারণ অর্থে ব্যবহার করেছিলাম কবিতার আর্ট বা এসথেটিক্স বোঝাতে; লিট ক্রিটের বাইরে হামেশাই ব্যবহার হয়। আর লিখেছিলাম লিটেরারি ক্রিটিসিজমের মাধ্যমেই একটা ভাষাসাহিত্যের ক্যানন আকৃতি পায়, কিন্তু সেটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। অন্যরকম কিছুই লিখিনি; আপনি খড়ের পুতুল খাড়া করছেন। আসলে সমস্যা হচ্ছে আপনি বলতে চাইছেন একটা লেখা পড়ে কেন ভালো লাগল বা কেন খারাপ লাগলো এরকম ফীডব্যাকের কোনো গুরুত্ব নেই। তো আমিও দাবী করছি না যে এধরনের মন্তব্যের ভ্যালু আছে। কিন্তু লেখা পড়ে শুধু ভালো/খারাপ লাগল না বলে কী ভালো/খারাপ লাগল, জানালে অসুবিধেটা কোথায়? লেখকের তো আদৌ কোনো দায় নেই মন্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়ার। ফীডব্যাকের আদানপ্রদান ইন্টারনেটে হয়ই, তাছাড়াও এধরনের ওয়ার্কশপ/ক্রিটিক গ্রুপ/রাইটিং সার্কল দেখি তো নতুন লেখকদের মধ্যে।
     
    আর অখ্যাত অচেনা নতুন লেখকদের লেখা নিয়ে খুব গভীর ও লংফর্ম প্রবন্ধ লেখা হচ্ছে এমন তো হয়না। স্বাভাবিক কারণেই হয়না, কেননা সময় লাগে। বেশিরভাগ লেখক যে হারিয়ে যাবে, সেটাও জানা। আপনি যে এর মধ্যে এত তর্ক করার উপাদান খুঁজে পেলেন তাতেই আশ্চর্য হলাম। বাদবাকী লিটেরারি ক্রিটিসিজমের গুরুত্ব নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। অবশ্য আপনি তিরিশ বছর ধরে লিট ক্রিট চর্চা করছেন জেনে আন্তরিক ভালো লাগল। আমার সে সুযোগ হয়নি এখনও, তিরিশ পেরোই আগে। :)
     
    যাইহোক, সব লেখা পড়া সম্ভব নয়; যদি পড়ি, সেক্ষেত্রে ইচ্ছে হলে ফীডব্যাক দিতেই পারি। খারাপ লাগলেও জানাব আর কি। লেখালিখির টেকনিক্যাল দিক নিয়েও মন্তব্য করব। গুরুচণ্ডা৯তে সবার লেখার সুবিধে রয়েছে কিনা।
  • বোধিসত্ত্ব ​​​​​​​দাশগুপ্ত | 49.37.***.*** | ২১ অক্টোবর ২০২১ ১১:৩৭499926
  • :-)))) হাহাহাহাহা ফেয়ার এনাফ। হ্যাঁ  একদম ই দিতেই পারেন। -)))) 
     
     :-))) মানে ধরেন শীর্ষেন্দুর লেখা বাজে লাগে বলতে পারি, কনজারভেটিভ বলতে পারি, কিন্তু তিনি কি করলে ভালো হবেন বলতে পারি না, এটা রিভিউআর, ক্রিটিক কারোর ই এক্তিয়ারে বাই কনভেন্শন নাই। এগুলো সংশোধনাগার প্রকল্প না:-))))))  একটা লেখা, একটা অবস্থানের দায়িত্ত্ব লেখক কে নিতে হবে, এই হল প্রিমাইস। পরের লেখায় তিনি ​​​​​​​ঠিক ​​​​​​​কি ​​​​​​​ধরণের ​​​​​​​ফীড ​​​​​​​ব্যাক ​​​​​​​গ্রহণ ​​​​​​​করবেন কোন দার্শনিক ​​​​​​​অবস্থান ​​​​​​​থেকে ​​​​​​​করবেন, ​​​​​​​আদৌ ​​​​​​​করবেন ​​​​​​​কিনা ​​​​​​​তাঁর ​​​​​​​ব্যাপার। 
     
    আমি নতুন পুরোনো , বিখ্যাত , অবিখ্যাত, বাজে ভালো অল্পবয়সী সিনিয়র কোন লেখককেই, শুধু একজন ইন্ডিপেন্ডেন্ট লেখক বলে মনে করি এবং সম্মান করি বলেই কিসে ভালো হবে গোছের ফিডব্যাক দেই না। একটা লেখা  একজন লেখক বা লেখিকার এস্থেটিক , নান্দনিক , দার্শনিক অবস্থানের প্রকাশ। অলরেডি কম্প্লিট একটা কালআরাল প্রোডাক্ট।  সেটাকে আমি বাজে বলে গাল দিতে পারি, কিন্তু কি করলে ভালো হবে বলতে পারি বলে মনে করি ই না। এটাই লিট ক্রিট এর দর্শন। আমি খাতা দেখতে বসি না। ভুলকেও ইন্সিডেন্টাল অমিসন বলে থাকি :-)
     
    এই দর্শন নিয়েই আমি গত ১৯৮৬ সাল থেকে বুক রিভিউ ইত্যাদি করছি, পত্রিকা চালানো, পুস্তক সম্পাদনার কাজে , প্রকাশ পূর্ব এডিটিং এ সাহাজ্য করছি । 
     
    ইতিমধ্যে গত ১৫-২০ বছরে ইংল্যান্ডের রুটলেজ প্রকাশিত পত্রিকায়, পাকিস্তান এর লাহোর থেকে প্রকাশিত নিউজ অন সানডে পত্রিকায়, কলকাতার ভাষাবন্ধন এবং এই সময় পত্রিকায় পত্রিকায়, এবং এই গুরুচন্ডালি ব্লগ ও পত্রিকায় বই য়ের রিভিউ এ জীবনে করেছি। সুযোগ পেলে আরো করার ইচ্ছে আছে। বইয়ের আলোচনাটাকেও মুদ্রিত সংস্কতির গুরুত্ত্বপূর্ণ অংশ বলে মনে করি বলে করি। 
     
    তবে আপনি নিজে প্রতিভাবান লেখক , অনেক কিছু পারেন,  মানুষে আপনাদের কথা হয়তো শুনবেন ও। প্রসঙ্গত বলে রাখি বর্তমান লেখিকা আবাউট ১৬ বছর ধরে লিখছেন মানে শুধু গুরুচন্ডালিতেই।  এবং এই থ্রেডেই যা বুঝলাম, আপনি নিশ্চয়ী ফীডব্যাক ভালো দিয়েছেন, উনি গ্রহণ ও করেছেন সেটা। আমি তাতে আপত্তির কারণ দেখি না। ফীডব্যাক দেওয়াটাই আমার অড লাগে তাই বলেছি। তবে বলে চলেছি হয়ে যাচ্ছে :-))))) আলোচনার পাঠক নিজের পজিশন নিজে বিচার করবেন। 
  • !!! | 2405:8100:8000:5ca1::1b7:***:*** | ২১ অক্টোবর ২০২১ ১৬:০৩499941
  • লেখাটা বুঝেছি।  ভালই।  নিচের তর্কটা কিছু বুঝছি না।
  • সায়ন্তন চৌধুরী | 99.238.***.*** | ২১ অক্টোবর ২০২১ ১৬:১৩499943
  • ঠিক আছে। দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে আপনি যখন এটাকে লেখকের প্রতি অসম্মান মনে করছেন, মেনে নিলাম। যদিও লেখা নিয়েই বলেছি, লেখককে ডিসরেসপেক্ট করার কোনো অভিপ্রায় আমার ছিল না। যাইহোক, ভুল হয়েছে এবং ক্ষমাপ্রার্থী। ধন্যবাদ।
  • ar | 173.48.***.*** | ২১ অক্টোবর ২০২১ ১৬:১৪499944
  • তার কারণ টইটা হাইজ্যাক হয়ে গেছে!!!
    একই ছলে কিছুটা লেখক আর তার লেখার অসম্মানও করা যায়। কিন্তু সেটা আমার ব্যক্তিগত অভিমত!!
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন