উপগ্রহীয় কক্ষপথ উপবৃত্তাকার - এই নির্ভেজাল সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে কেপলার যত না বেগ পেয়েছেন, তার চেয়ে ঢের বেগ তাঁকে পেতে হয়েছিল নিজের জীবন পথকে মসৃণ করতে। প্রথম স্ত্রী কলেরাতে মারা যাওয়ায় সংসার থেকে অনেক আগেই কক্ষচ্যুত হয়েছেন। বড় অযত্ন আর উপেক্ষায় বেড়ে উঠছিল দুই সন্তান। তাই এবার নিজের ভাঙাচোরা জীবনের মেরামতিতে মন দিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী জোহানেস কেপলার।
একজন পেশাদার গণিতজ্ঞ অঙ্কের সূত্র প্রমাণ করতে যতখানি তৎপরতা দেখান, পাত্রী খোঁজার ব্যাপারে কেপলারের তৎপরতা ছিল তার চেয়ে সামান্য কিছু বেশি। একেবারে কোমর বেঁধে নেমেছেন। বিবাহের প্রাথমিক অধ্যায় যেহেতু সুখের ছিল না, তাই উদ্বেগ এবং সন্দেহের অন্তর্ঘাতে কেপলার এবার যারপরনাই জর্জরিত। যেন একটা বড়সড় বিপর্যয় আসন্ন। সেই আগতপ্রায় বিপর্যয়ের মোকাবিলা করতে গণিত শাস্ত্রের যাবতীয় সূত্রাদি প্রয়োগ করে একটা গাণিতিক কৃতকৌশল বানাতে চান যা কিনা অব্যর্থ ভাবে সেরা পাত্রীটিকে চিনিয়ে দেবে। দুর্ভাগ্য কেপলারের! পাত্রী সন্ধান আর জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় অনুসন্ধানের দূরদূরান্তের কোনও যোগাযোগ নেই। একটায় পারদর্শী হলেই অবধারিতভাবে অন্যটায় উৎকর্ষতা আসে না। তবুও কেপলার এই দুটোকে এক সূত্রে গাঁথার একটা মরণপণ প্রয়াস চালাবেন।
সবেমাত্র চল্লিশের চৌকাঠ পেরিয়েছেন কেপলার। 'প্রবাবিলিটি' শব্দটা তখনও কেবলই লুডোর ছক্কাতেই সীমাবদ্ধ। গণিতশাস্ত্রের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থায়ী জায়গা করে নেয় নি। 'স্ট্যাটিস্টিক্সও' গণিতগর্ভের অঙ্কুর।
ফলে এ ধাঁধাকে কাবু করার দুটি মোক্ষম অস্ত্রই বাজারে অনুপস্থিত। তাই অনেক কাঠখড় পুড়িয়েও স্ট্রাটেজি ডিজাইনের স্বপ্ন (রাজযোটক এর ফর্মুলা) একটা প্রহেলিকা হয়েই রয়ে যায়। হিসাব বলছে, বাগদান পূর্ববর্তী অধ্যায়ে কেপলার মোটমাট এগারো জন অনূঢ়ার সাথে আলাপচারিতায় যান। জনসমক্ষে নাকি নিভৃতে - সে প্ররোচনায় এ আলোচনার মোড় ঘোরানোটা নিছকই অবান্তর। যাই হোক, দু-একটি ক্ষেত্রে কথোপকথন কিছু দূর এগোলেও, গাঁটছড়া বাঁধার ব্যাপারে কেপলার ক্রমাগত দোলাচলে ভুগছিলেন। কিছুটা সিদ্ধান্তহীনতা, কিছুটা 'সেরা পাত্রী মিস করে যাওয়ার' আশঙ্কা আর বাকিটা নেহাতই সে যুগের নিরিখে আদর্শ সর্বগুণসম্পন্নাদের সাময়িক আকাল। কেপলারের বয়ান অনুযায়ী, প্রথমটিকে বাদ দেওয়ার কারণ - মেয়েটির 'দুর্গন্ধময় শ্বাস-প্রশ্বাস'। কী বিড়ম্বনা! দ্বিতীয়টির সাথে আলাপে জানা গেল, যতখানি বিলাসিতায় সে বড় হয়েছে তার যোগান দেওয়া কেপলারের দুঃসাধ্য। তাই অনিবার্য ভাবেই বাতিলের খাতায়। কথাপ্রসঙ্গে উঠে এলো, তৃতীয়টি ইতিমধ্যেই একজনের বাগদত্তা। তবে কেপলারকে সে একবারে হাঁকিয়ে দিচ্ছে না। দেখতে চায়, কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়! চতুর্থটি সুন্দরী, দীর্ঘাঙ্গী। চোখে পড়ার মতই গড়ন। এবং সব দিক বিচার করে কেপলারেরও অপছন্দ নয়। কিন্তু ...
কিন্তু তাতেও কেপলারকে থামানো গেল না। 'এর চেয়েও ভালো'র এক অদম্য আকর্ষণ ততদিনে পেয়ে বসেছে তাকে। কারণ পঞ্চম সম্বন্ধে তিনি ইতোমধ্যেই আশাব্যঞ্জক কিছু খবরাখবর পেয়েছেন। আগেই জানা গিয়েছিল মেয়েটি নম্র, মিতব্যয়ী, পরিশ্রমী। মুখোমুখি পরিচয় পর্বে নিশ্চিন্ত হওয়া গেল আগের পক্ষের সন্তানদের নিয়ে মেয়েটির মনে কোনও ছুঁতমার্গ নেই। বেশ দোটানায় পড়লেন পোড় খাওয়া জ্যোতির্বিজ্ঞানী - চার নাকি পাঁচ!
তানানানা করতে গিয়ে এত সময় খরচ হল যে, চতুর্থ এবং পঞ্চম পাখী ডানা মেলে সটান আকাশে। অগত্যা কেপলারের গন্তব্য - ষষ্ঠ। এই করে করে সংখ্যাটা এগারো ছুঁলো। নৈরাশ্যের সূচিপত্রে আরও কিছু সংযোজন। ততদিনে তাঁর বিস্তর চেতনা হয়েছে এবং জীবন সংগ্রামের একটি আদি-অনন্ত সূত্র তাঁকে ভালোরকম ছেঁকা দিয়ে গেছে। যার সারমর্ম - সময় এবং সংখ্যার সাথে বিয়ের পিঁড়িতে বসার সম্ভাবনা ব্যস্তানুপাতিক হারে ওঠাপড়া করে। সময় ও সংখ্যা বাড়লে সম্ভাবনা দ্রুত কমবে। কাজেই বাগদান জরুরী- অতি সত্বর।
কেপলারের এই বিবাহ-অভিযান কোনও অতিকল্পনা বা বানোয়াটি কিস্যা নয়। অতিরঞ্জনের প্রশ্নই নেই , যদি না তিনি সুহৃদ ব্যারন স্ট্রাহেলেনডরকে লেখা চিঠিতে এই ঘটনার নিখুঁত বর্ণনায় তিনি নিজেই একচেটিয়া মিথ্যাচার করে থাকেন। তবে কেপলার কার সাথে কণ্ঠি বদল করেছিলেন সেটা এক্ষেত্রে একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক। তাই বাকী গল্প আপাতত মুলতুবি রাখলেও চলে। এখানে দুটো প্রশ্ন প্রাসঙ্গিক - কেপলারের কোথায় থামা উচিৎ ছিল ? ঠিক কোন সংখ্যায় ? নৈতিক বিচারে নয় , গাণিতিক হিসাবে। আর তার পরের প্রশ্ন, অঙ্ক কি এমনতর মানবিক সমস্যার প্রতি সত্যিই সহানুভূতিশীল? সিদ্ধান্তহীনতার এই বিভ্রান্তিকর দৈনন্দিন মায়াজাল থেকে সত্যিই কি সে পারে আমাদের মুক্তি দিতে? পারে তো বটেই! এমনকি বিভ্রান্তি ঘোচাতে একটা দু-অংকের সংখ্যা পর্যন্ত বলে দিতে পারে।
কেপলারের মৃত্যুর প্রায় ২৫০ বছর পর , হাভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর আর্থার কেলিই সর্বপ্রথম খেয়াল করেন - পাত্রী নির্বাচনের সেই চিরপ্রসিদ্ধ ঘটনাটা আর কিছুই নয় , তা স্ট্যাটিস্টিকসের একটা বিশেষ ধারার সমস্যারই গাণিতিক রূপ। অনেক কাল পরে ১৯৫০ এর দশকে যা "ম্যারেজ প্রবলেম" এবং অদূর ভবিষ্যতে মার্টিন গার্ডনারের তত্ত্বাবধানে "অপ্টিমাল স্টপিং" নামেও পরিচিতি পাবে। নিমেষে যা বলে দেবে - সিদ্ধান্তহীনতার এই চক্রব্যূহ থেকে বেরিয়ে আসার চটুল উপায়। গতিশীলতা যে পৃথিবীর একমাত্র সত্য বলে স্বীকৃত, ঠিক সেই মাটিতেই দাঁড়িয়ে অপটিমাল স্টপিং অক্লেশে জানিয়ে দেবে ঠিক কোথায় থামতে হবে।
ধরে নিন, আপনাকে ঠিক কুড়িজনের ইন্টারভ্যু নিতে বলা হল। শূন্য পদের সংখ্যা স্রেফ ১। লক্ষ্য - সেরা প্রার্থীকে ছেঁকে তোলা। শর্ত তিনটে। যার প্রথমটা হল - প্রত্যেক প্রার্থীর ইন্টারভ্যু পর্ব চুকে গেলে সাফ জানিয়ে দিতে হবে তাকে নিয়োগ করা হল কিনা। যদি তাই হয় , সেক্ষেত্রে পরের প্রার্থীকে তলব করাটা নেহাতই অপ্রাসঙ্গিক - কারণ শূন্য পদের সংখ্যা 'এক'। দ্বিতীয় শর্ত - নাকচ হওয়া প্রতিযোগীদের ফিরিয়ে আনার কোনও উপায় নেই । সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। শেষ শর্ত - চাকরি দেওয়াটা এক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক। সুতরাং সর্বশেষ প্রার্থী ইন্টারভ্যুয়ে বসার আগে ,যদি উপযুক্ত প্রার্থীদের সকলেই অজ্ঞাতবাসে রয়ে যায় তাতেও শর্তানুযায়ী ওই অন্তিম প্রার্থীই চাকরিটি বগলদাবা করবে - তা সে যতই নালায়েক হোক।
আঁচ করা যায়, দেখতে যতই নিরীহ হোক কাজটা কিন্তু বেশ ঝকমারির। এর গাঁটে গাঁটে রয়েছে মারপ্যাঁচ। কারণ যে কোনও পদপ্রার্থীর ইন্টারভ্যু চলাকালীন বারে বারে মনে হবে : কে জানে ! দরজার বাইরে হয়তো 'ভূ-ভারতে তুলনাহীন' কোনও প্রতিযোগী অপেক্ষা করছে । গণিতশাস্ত্র অনুযায়ী এজাতীয় সমস্যাকে বাগে আনতে অপ্টিমাল স্টপিং হল ব্রহ্মাস্ত্র। নিয়মটা ঠিক এরকম : ৩৭% প্রার্থীর ইন্টারভ্যু পরপর নিয়ে যান।
তবে ভুলেও এঁদের কাউকে নিয়োগ করবেন না। সংখ্যাটা এক্ষেত্রে দাঁড়াল ৭ ( ২০ × ৩৭/১০০)। কারণ এই ৩৭% র ভিতর যাকে সেরা মনে হয়েছে , মূলত তার যোগ্যতা-দক্ষতা সম্পর্কে ধারণা তৈরি করাটাই ছিল আমাদের উদ্দেশ্য। চাকরিটা তাকে দেওয়া না হলেও, সেই কিন্তু এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাপকাঠি। পরের ৬৩% ইন্টারভ্যুয়ের শুরু থেকেই প্রস্তুতি থাকবে যে কোনও মুহূর্তে নিয়োগ করার। তক্কে তক্কে থাকুন। যেক্ষণে প্রথম দলের সেরা প্রার্থীর চেয়েও ভালো কারোর খোঁজ মিলবে, কালবিলম্ব না করে তাঁর হাতে নিয়োগপত্র ধরিয়ে দেওয়াটাই বাঞ্ছনীয়। সে'ই হল চাকরির যোগ্য হকদার। হ্যাঁ, তাতে ১০০% প্রার্থীর অনেক আগেই ইন্টারভ্যু শেষ হতে পারে। হোক না! গাণিতিক নিয়মে সেটাই যে রীতি। এতটাই সহজ! গণিতজ্ঞরা আদর করে এর নাম দিয়েছেন ৩৭% রুল । আজগুবি মনে হলেও ৩৭% এই লুকিয়ে আছে তালাবন্ধ সব বিচিত্র হেঁয়ালির আশ্চর্য এক চাবিকাঠি।
নিঃসন্দেহে প্রশ্ন উঠতে পারে, যদি প্রথম ৩৭% র ভিতরই রয়ে যায় যোগ্যতম প্রার্থী? হ্যাঁ, এ সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া মুশকিল। সেক্ষেত্রে একটাই রাস্তা - যোগ্যতম হাত ফসকে গেলেও, যোগ্যতর প্রার্থীকে ঝুলি বন্দি করো। আমরা যেন মনে রাখি, অঙ্ক ভোজবাজি নয়। একশো শতাংশ সাফল্যের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি সে দেয় না। তবে আশ্বাস দিতে পারে সাফল্যের সম্ভাবনাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার। অনেকের কাছে সেটাই হয়তো ভোজবাজি। ইন্টারভ্যুয়ে যে বিদঘুটে শর্তগুলোর কথা বলা হয়েছিল, বাস্তবে সেরকম নিয়োগ প্রক্রিয়া খুঁজতে বসলে, তার অনেক আগেই নির্ঘাত কাঁঠালের আমসত্ত্ব চাখা হয়ে যাবে। তবে, পাত্রপাত্রীর পাতায় চোখ রাখেন যাঁরা, তাদের কাছে বোধহয় ব্যাপারটা এ্যাদ্দিনে গা সওয়া হয়ে গেছে। কে বলতে পারে! এই সামান্য হিসেবের বোঝাপড়াটা এমনই কারও কাছে হয়তো জীবনদায়ী ঔষধ হতে পারত। সে-ই কেবল বোঝে, যাপিত জীবন আর অদূরে মিলিয়ে যাওয়া অলীক পৃথিবীর মধ্যে ফারাক কেবল একটি মাত্র সিদ্ধান্তের।
তবে আরেকটা সম্ভাব্য প্রশ্ন এখনো বাকি রয়ে গেল, মানুষ কি কলকব্জার তৈরি যন্ত্র না গনৎকার যে আগে থেকেই বলে দেয়, ঠিক অত জনের সাথেই আলাপ করব, তাও আবার বিবাহের সদিচ্ছা নিয়ে। ভরসার কথা হল - ৩৭ % ফর্মুলা, শুধুই সংখ্যার উপর নয় সময়সীমার উপরও পুরোদমে কাজ করে। অর্থাৎ কেউ যদি মনে করেন ৩৪ বছর বয়সের পর তাঁর বিয়ে হওয়াটা স্রেফ 'না-মুমকিন', তাই তড়িঘড়ি ২৩ বছর থেকেই দেখাশোনা শুরু করে দেন, তবে অঙ্কের নিয়ম অনুযায়ী মাঝের ওই ১১ বছরের ৩৭% অর্থাৎ সাড়ে পাঁচ বছরের বেড়া টপকেই উচিত কোনও সিদ্ধান্তে আসা। যখন বয়স কিনা ২৮ বছর ৬ মাস।
গণিতজ্ঞদের অকৃপণ বদান্যতায় আমরা জানতে পেরেছি, ৩৭%র হাত-ধরাধরি করে আছে অপর একটি সংখ্যা। যাকে ইংরেজি বর্ণমালার 'e' দিয়ে প্রকাশ করা হয়। 'e' এর মান ২.৭১৮২৮। অনোন্যক করলে পাবো ( reciprocal ) ১/e = ০.৩৬৭৮ বা শতাংশের হিসেবে ৩৬.৭৮ % , এবং রাউন্ড ফিগারে প্রায় ৩৭ %। দীর্ঘ গবেষণায় প্রমাণিত, নিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতির ক্ষেত্রে ( = মোট প্রার্থীর সংখ্যা বা পাত্র/পাত্রীর সর্বোচ্চ বয়স ... ইত্যাদি ) ৩৭ শতাংশের মতো একটা সাদামাটা সূত্রও একেবারে তাক লাগিয়ে দিতে পারে। তবে, খেয়াল রাখা জরুরি, অপটিমাল স্টপিং এ সাফল্যের সম্ভাবনা বা প্রবাবিলিটিও কিন্তু হরেদরে সেই ৩৭ শতাংশ অর্থাৎ ১০০ বার চেষ্টা করলে সাঁইত্রিশ বার সফল হওয়া যাবেই। গাণিতিক দুনিয়ায় যা 'এনাফ'।
১৯৬১ সালে ডেনিস লিন্ডলি সর্বপ্রথম কাগজে-কলমে অপ্টিমাল স্টপিংয়ের সমাধান করে তা টীকাটিপ্পনী সহ প্রকাশ করেন। পরবর্তীকালে এর নাম হয়েছিল "সেক্রেটারি প্রবলেম"। সত্তরের দশকে 'অপটিমাল স্টপিং' শেয়ার বাজার সংক্রান্ত মূল্য নির্ধারণের একটি অত্যাধুনিক হাতিয়ার হয়ে ওঠে , যা বিশ্বের অর্থনৈতিক বাজারে বিপ্লব এনে দেয়। এর জন্য ফিশার ব্ল্যাক এবং মাইরন স্কোলস ১৯৯৭ সালে অর্থনীতিতে নোবেলও পান। ন্যায্য পুরস্কার! অপ্টিমাল স্টপিং এর সূত্র গাড়ি পার্ক করা বা বাড়ি ভাড়া নেওয়ার মত মামুলি সিদ্ধান্তেও যেমন ফলপ্রদ, তেমনই মাইক্রোসফট-এর মতন কর্পোরেট দৈত্যের নতুন প্রোডাক্ট লঞ্চ হওয়ার উচ্চকোটির সিদ্ধান্তেও অপটিমাল স্টপিং অপরিহার্য। কিংবা ধরুন, টর্নেডোর পূর্বাভাস থাকলে মার্কিন প্রশাসনকে যখন সিদ্ধান্ত নিতেই হয় ঠিক কোন সময় থেকে উপকূলবর্তী এলাকার মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, ঠিক তখন। সিদ্ধান্ত, সময় আর ঝুঁকি - এই তিন শব্দ-বান্ধবের সখ্যতা সৃষ্টির ইতিহাসে আদিমতম। ইতিহাস শিখিয়েছে এগিয়ে চলাই শুধু নয়, থমকে দাঁড়াবার অভ্যাসটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। দিগ্বিজয়ী নেপোলিয়ানও রাশিয়া আক্রমণ করার পরই এ সহজ সত্য আবিষ্কার করেছিলেন, আর হিটলারকে তো সায়ানাইড এবং বুলেট একপাতে খেতে হল।
যারা এখনো অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে রইলেন তাদের উদ্দেশ্যে বলি, কেপলারের দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম ছিল সুযান্না রেটিংগার। বিতর্কিত তালিকায় যাঁর নম্বর ছিল পাঁচ। বিশ্রী দৌড় থেকে নিজের নাম তুলে নিলেও, কেপলারের পীড়াপীড়িতে শেষ পর্যন্ত যিনি বিয়েতে সম্মত হন। তাজ্জব ব্যাপার, এগারোর সাইত্রিশ শতাংশ হল চার। আর চারের ঠিক পরের পূর্ণ সংখ্যাটাই '৫'।