মাড পয়েন্ট, ঘোড়ামারা দ্বীপ
ওই ধীর ওই চুপ
লোকালয় থেকে দূর
কর্দমাক্ত ছলাৎ ছলাৎ
কত পদধুলো ভূখন্ড বাহিত
মিশে আছে ওইখানে
ট্রলারের ধুকপুক
মাছের মত মানুষের তাল
ফেলেছে এখানে
যেন তুলে আনা চারাগাছ
রোপণ করেছ কাদায়
শিকড় উপড়িয়ে
এইখান থেকে ঘরে ফেরা দায়।
ঘোড়ামারা মিলন বিদ্যাপীঠ
ঈশ্বরের সামনে প্রতিদিন হাঁটুমুড়ে বসি
মন্দিরগাত্রে আঁকিবুঁকি কেটেছে কত খুদে স্থপতির দল
এইখানে মন্ত্রপাঠ শুরু হলে বলি, থামো থামো
আগে বলো গর্ভগৃহে কত সম্পদ সঞ্চিত হল?
কে কার হিসেব নিয়ে বসে থাকে!
অন্ধকার ঘিরে ধরে চারপাশ থেকে
স্থপতির দল পূজারী হয়ে গেলে
আমি দেখি, দল বেঁধে দেবতা চলেছে খেলার মাঠে।
ঘোড়ামারা মহামিলন সংসদ পাঠাগার
এই দ্বীপে বাস করেছি সাতটি দিন
পরিবারহীন সেসব সময় অন্তহীন
সোলার বাল্বে আলোর থেকে অন্ধকার
গ্রাস করেছে ভয় বিষাদে বেহাগ রাগ
খুঁজতে গেছি মায়ের মতো তেমন কেউ
আগলে রাখবে এমন দেশে হয়তো যে।
কেউ ছিল না, তেমন তোমার সাতটি দিন?
কাজের শেষে যত্ন করে মুছিয়ে ঘাম
খাবার দেবে, সাহস দেবে অনিবার?
বিকেল থেকে আটটা অবধি কাজের দিন
চারিদিকে জলের মাঝে দ্বীপ জাগায়
ঘোড়ামারা মহামিলন পাঠাগার।
বাঁধপাড়ের জানকী দিদি
জানকীদিদি, ক্ষমা কোরো
বড় অবহেলা করে ফেলে এসেছি সেদিন
খবরে শুনেছি আগের রাতে, সিডার ঝড় এসে
তছনছ করে দেবে সব।
ওই ক্ষয়ে যাওয়া দ্বীপে সারারাত আমি হাওয়া গুণি সেইবার
ভোররাতে চুপিচুপি সব বেঁধে
প্রথম ট্রলারে চেপে বসি
মোচার খোলার মত ভেসে ভেসে
সেই শেষবার।
জানকীদিদি, বিশ্বাস করো, ওইখানে মন পড়ে
আছে আজও। প্রতি রাতে মনে পড়ে,
টিউবওয়েল থেকে
ঘড়াঘড়া জল বয়ে এনে বলতে
শহরের মেয়ে তুমি, পুকুরে কি পারো!