এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  সমাজ

  • কাদামাটির হাফলাইফ

    ইমানুল হক
    ধারাবাহিক | সমাজ | ০৯ জুলাই ২০২২ | ২০০৯ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • পর্ব ১-৩ | পর্ব ৪-৬ | পর্ব ৭-৯ | পর্ব ১০-১২ | পর্ব ১৩-১৫ | পর্ব ১৬-১৮ | পর্ব ১৯-২১ | পর্ব ২২-২৪ | পর্ব ২৫-২৭ | পর্ব ২৮-২৯ | পর্ব ৩০-৩১ | পর্ব ৩২-৩৩ | পর্ব ৩৪-৩৫ | পর্ব ৩৬-৩৭ | পর্ব ৩৮-৩৯ | পর্ব ৪০-৪১ | পর্ব ৪২-৪৩ | পর্ব ৪৪-৪৫ | পর্ব ৪৬-৪৭ | পর্ব ৪৮-৪৯ | পর্ব ৫০-৫১ | পর্ব ৫২-৫৩ | পর্ব ৫৪-৫৫ | পর্ব ৫৬-৫৭ | পর্ব ৫৮-৫৯ | পর্ব ৬০-৬১ | পর্ব ৬২-৬৩ | পর্ব ৬৪-৬৫ | পর্ব ৬৬-৬৭ | পর্ব ৬৮-৬৯ | পর্ব ৭০-৭১ | পর্ব ৭২-৭৩ | পর্ব ৭৪-৭৬ | পর্ব ৭৭-৭৮ | পর্ব ৭৯-৮০ | পর্ব ৮১-৮২-৮৩ | পর্ব ৮৪-৮৫ | পর্ব ৮৬-৮৭ | পর্ব ৮৮-৮৯ | পর্ব ৯০-৯২ | পর্ব ৯৩-৯৪ | পর্ব ৯৫-৯৬ | পর্ব ৯৭-৯৮ | পর্ব ৯৯-১০০ | পর্ব ১০১-১০২ | পর্ব ১০৩-১০৪ | পর্ব ১০৫-১০৬ | পর্ব ১০৭-১০৮ | পর্ব ১০৯-১১০ | পর্ব ১১১-১১২ | পর্ব ১১৩-১১৪
    নামাঙ্কনঃ ইমানুল হক। ছবিঃ র২হ

    পর্ব ৯০


    কাল বকরিদ। বাংলায় তাই বলি। পোশাকি নাম অনেক। ইদুজ্জোহা, ইদ উল আজহা। ইদ উল আধহাও কেউ কেউ লিখছেন। তবে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নাম। গুগল করলেই মেলে। উচ্চারণ দূরে থাক সঠিক বানান করতে পারব কি? তাই না বলাই ভালো। তবে উইকি থেকে একটু লিখে দেওয়া যাক--

    আরবি ছাড়া অন্য ভাষায়, এই নামটি প্রায়ই স্থানীয় ভাষায় বলা হয়ে থাকে, যেমন বাংলায় কোরবানি ঈদ, জার্মান ভাষায় ওপফারফেস্ট, ওলন্দাজ ভাষায় অফফারফিস্ট, রোমানিয় ভাষায় সারবাতোয়ারিয়া স্যাক্রিফিসুইলুই , হাঙ্গেরিয় ভাষায় আলদোজাতি উন্নেপ, স্পেনীয় ভাষায় এটি ফিয়েস্তা দেল কর্দেরো, বা ফিয়েস্তা দেল বোররেগো (দুটিরই অর্থ "মেষশাবকের উৎসব") নামে পরিচিত। এছাড়া মিশর, সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যে এটি ইদ-উল- বাকারাহ নামে, ইরানে ইদে কোরবান নামে, তুরস্কে কুরবান ব্যায়রামি ("ত্যাগের দিন") নামে, ত্রিনিদাদে বকারা ইদ নামে, ভারত ও পাকিস্তানে বকরা ঈদ বা বকরি ঈদ নামে পরিচিত।

    গুরুচণ্ডা৯-র পাঠকরা শিক্ষিত এবং বহুদর্শী। এখানে লিপিকরণে ভুল হলে ধরিয়ে দিলে উপকৃত হব।
    আমাদের ছোটো বেলায় মানে সত্তর দশকের শুরুতে গ্রামে ৬৫ ঘর মুসলিম বাস করতেন। কুরবানি দিতেন ১৬-১৭ টি পরিবার। এখন মুসলিম পরিবারের সংখ্যা পৃথক হতে হতে বহু। ১৭৫-র বেশি। হিন্দু মুসলমান আদিবাসী সব সম্প্রদায়েই পরিবারের সংখ্যা ৫ গুণ বেড়েছে। কারণ যৌথ পরিবার নেই বললেই চলে। খুব কম।
    তা এখন ৬৫-৭০ টি কুরবানি হয়।‌ তা ১৯৭৯ সালে একবার ধুয়ো উঠল উট কুরবানি দেওয়া হবে। সেহারাবাজার গোরুর হাটে সেবার উট এসেছে।‌ মঙ্গলবার হাট বসতো। হাট থেকে ৮০০ টাকা দামে উট এল। সাতজন অংশীদার। সাতজন মানুষ সাত পূর্বপুরুষের নামে কুরবানি দিচ্ছেন। জীবিত বা মৃত যে-কোনো ব্যক্তির নামে কুরবানি দেওয়া যায়। ছেলে মেয়ে নারী পুরুষ --সবার নামেই উৎসর্গ করা যাবে।
    তো উট তো এল। সেটা গাঁয়ে দেখার বস্তু। সেটা এতকাল বর্ণপরিচয় বইয়ের পাতায় ছিল। এ একেবারে জলজ্যান্ত। দুটো গ্রামের এখানে ওখানে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাতে লাগলেন একজন মানুষ। তার পিছে পিছে আমরা ছেলেপুলের দল। মেলা বসার জোগাড়। পরদিন কোরবানি। দেওয়া দায়। কে জবাই করবে? অত বড় পশু।
    আমি মাংস খেতে ভালোবাসলেও কাটাকুটি দেখতে পারি না। কষ্ট হয়। আমি পালিয়ে গেলাম। মনকে বললাম, উটটা যেন ছুটে পালায়।
    আশ্চর্য মন, মুরগি কাটাও দেখতে পারি না। মাছ কাটলেও কষ্ট লাগে।অথচ খাই।
    উট শেষ পর্যন্ত কুরবানি হল।
    মজার ঘটনা ঘটল, হাজির হলেন এক ব্রাহ্মণ সন্তান। তিনি ছোটোখাটো ডাক্তারির সঙ্গে ওঝাগিরিও করতেন।‌ দুর্গাপূজার সময় বাইরে পুরোহিত হয়ে যেতেন।
    তিনি এলেন একটি বড় চামর এবং চামড়ার চাবুক নিয়ে।
    এটি ছিল তাঁর ভূত প্রেত জিন ছাড়ানোর হাতিয়ার।
    সেটি তিনি উটের রক্তে মাখিয়ে নিলেন।
    বললেন, এ হল খোদ নবির দেশের উট। এর রক্ত বহু পুণ্যের। যত বড় ভূত বা জিনই আসুক--এর মার খেলেই পালাবে। তাকে নিয়ে মজার অনেক গল্প। আগে মেয়েদের হিস্টিরিয়া হতো। ডাক্তার না দেখিয়ে ওঝা ডাকার চল ১৯৮০তেও দেখেছি।
    তা ভূত তাড়ানোর প্রমাণ হিসেবে ওঝা বা গুণিনরা বলতেন, তুই যে যাচ্ছিস তার প্রমাণ রেখে যা।
    কী প্রমাণ?
    না কাছের কোনো গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়বে।
    তো, এই রকম এক ঘটনায় আমাদের এক নিম গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়ল।
    আমরা আগের রাতে তাল কুড়াবো বলে বৈঠকখানার দাওয়ায় শুয়েছিলাম। দেখেছি ওই ওঝা মামাকে ডালের অর্ধেক কেটে যেতে‌‌।

    আমরা কেউ কিছু বলি নি। কারণ মানুষটি ছিলেন বড় ভালো। কিছু লোক তাকে একটা জায়গার নাম বলে ক্ষেপাত। আজকের ভাষায়, ট্রোলিং। উনি রেগে খুব গাল দিতেন। আমাদের খারাপ লাগত, ওই মানসিক নির্যাতন দেখে। বড় কিছু লোক এটা করাতেন ছোটদের দিয়ে।
    গ্রামীণ বা শহুরে জীবনে এই কুপ্রথা ছিল। ক্ষেপানো। কাউকে সদরঘাট, কাউকে আটা, এ-রকম কিছু একটা বলে উত্যক্ত করার খারাপ রেওয়াজ ছিল।
    ওই ওঝামামাও ছিলেন তার শিকার।
    বড় মনের মানুষ ছিলেন।
    হিন্দু মুসলমান ভেদাভেদ ছিল না একটুও।
    অবশ্য আমাদের গ্রামে এটা খুব একটা ছিল না।
    কিন্তু ওই ওঝা মামার উচ্চ শিক্ষিত দাদা ভেদাভেদ একটু করতেন।‌ কিন্তু তিনিও শেষ জীবনে পাল্টে উদার হয়ে ওঠেন।

    বাবা ও দাদা দিদিদের বন্ধুরা ইদ বকরিদ সবেবরাত মহরমে নিমন্ত্রণ খেতে আসতেন। ওরাও যেতেন অষ্টমীতে। নবান্নে/ ভাই ফোঁটায়।
    আমি ভাবতাম, আমি কবে বড়ো হবো, এ-রকম নিমন্ত্রণ করবো ও নিমন্ত্রণ লুচি খাবো।
    তৃতীয় শ্রেণিতে উঠেই নিমন্ত্রণ করা শুরু করলাম। এবং নিমন্ত্রণ পাওয়াও শুরু হলো।
    কাউকেই ডাকতে হলো না। নিজে নিজেই উঠে স্নান করে একবার তাগাদা দিয়ে এলাম নটার মধ্যে চলে আসবি সব।
    নামাজ শেষ হলো ইদগাহ তলায় কোলাকুলি সালাম শেষে ছুট বামুন/বেনে পাড়ায়।
    ডাকতে গেলাম।
    সিমুই আর লাচ্চা নারকেল আর দুধ দিয়ে তৈরি মোটা সিমুই।
    কেউ মাংস খাবে না।
    ওইসব বাড়িতে ঢোকার আগেই বন্ধুদের খাইয়ে দিতে হবে।
    নিখিল সদ্য যজমানদের বাড়ি পূজা শুরু করেছে। সে-ও আসবে দীনু, দিলীপ, তাপস, চাঁদু, জগন্নাথ, দিবাকরদের সঙ্গে। নিখিলের বাবা পটল ঠাকুরের কাছেই আমার হাতে খড়ি।
    অ আ লেখা শেখা।
    বকরিদের দিন একটু বেশি সতর্ক থাকতে হতো।
    মাংস কাটাকাটির আগেই তো খাওয়াতে হবে। এখানে নিমন্ত্রণ সেরে ওরা আজম, কালাম, কাজী মুকুলদের ঘর যাবে। সেখান থেকে আরো কোথাও। ইদে চলবে দুপুর বা রাত পর্যন্ত।
    বকরিদে দুপুরে খাওয়া বাদ।
    অলিখিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ আছে। ওইদিন বিশেষ মাংস হবে যে!
    যেন কোনো বদনাম না হয়।
    বড়ো হয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় এক বন্ধুর সামনে আমরা বাকিরা গোমাংস খাচ্ছিলাম বলে দাদার জোর ধমক , ওর সামনে খাচ্ছিস কেন?
    ও বললো, ওর ইচ্ছে আছে।
    কিন্তু..
    দাদা বললেন, না। ও আরো বড়ো হোক, নিজে ভালো মন্দ বুঝতে পেরে যদি খায় খাবে, এখন দিস না।
    পরে সেই বন্ধুটি ঘোর গো-মাংসাশী হয়ে ওঠে।
    কিন্তু আমি দিই নি কোনোদিন।
    ইদ বকরিদে বিকেলে গোলামহলের মাঠে ফুটবল ম্যাচ হতো‌। একবার জুনিয়র টিম মানে ১৪-১৮ র দল হিন্দু মুসলমান ফুটবল ম্যাচ খেলেছিল, বাবার সে কী বকুনি।
    এরপর থেকে এ-পাড়া ও-পাড়া বা বিয়োনি না বিয়োনি বা বিবাহিত অবিবাহিত ছেলেদের ফুটবল ম্যাচ হতো।
    তাতে কোনোবার আইবুড়ো কোনোবার বিবাহিতরা জিততো।
    জোর প্রতিযোগিতা।
    আমরা তো ১৪ বছরের নীচেররা দর্শক।
    পুকুরে বল পড়লে ঝাঁপ দিয়ে তুলে আনবো।
    আনার সময় বলে শট মেরে নিজেদের যোগ্যতা প্রদর্শনের চেষ্টা থাকতো জোরদার।

    এছাড়া থাকতো কুটুম বাড়িতে মাংস পৌঁছে দেওয়ার কর্মসূচি।
    অনর্থ গ্রামে দিদি বা পিসির বাড়ি।
    বকরিদের নিয়ম মাংস তিনভাগ হবে।
    একভাগ কুরবানি দাতাদের। মোট সাতজন দিতে পারেন।
    দ্বিতীয় ভাগ, আত্মীয়-স্বজন
    তৃতীয় ভাগ, গ্রামে যাঁরা কুরবানি দেন নি তাঁদের বাড়ি।
    যিনি কুরবানি দেন না,তিনিও এদিন কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ কেজি মাংস এদিন পান।
    যিনি কোরবানি দিয়েছেন তাঁর বাড়িতেও এতোটা মাংস থাকে কিনা সন্দেহ!

    পর্ব ৯১


    পড়ার পর বা আগে যদি এই ইউটিউব সংযোগ দেখেন।


    এই ফল পুঁতি বা কুঁচ ফলটি পাওয়া যায় শ্রীলঙ্কাতেও।
    শ্রীলঙ্কার প্রকাশক দীনেশ কুলতুঙ্গা ঢাকা ক্লাবে বসে এই পুঁতি তথা কুঁচ ফলের ছবি দেখিয়ে শুনিয়েছিলেন, বাংলার সঙ্গে শ্রীলঙ্কার সংযোগের কথা। দীনেশ কুলতুঙ্গা শ্রীলঙ্কার বিশিষ্ট লেখক।‌ লেখক ও প্রকাশক সংগঠনের নেতা।‌ বামপন্থী। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করি, বাঙালি সন্তান বিজয় সিংহের সংযোগ বিষয়ে সিংহলিদের মত কী?
    জবাবে তিনি বার করেন কুঁচ ফলের ছবি।
    বলেন, আমরা একটা ছড়া বলি। কুঁচ ফলকে দেখিয়ে:
    তুমি কোথা থেকে থেকে এলে?
    বঙ্গালদেশ থেকে এলাম বঙ্গালদেশ থেকে এলাম।
    উত্তর দেয় কুঁচ ফল।
    শ্রীলঙ্কার ছড়াটি এইরকম:

    Olinda thibenne koi koi deshe
    Olinda thibenne Bangali Deshe
    Genath hadanne koi koi $heshe
    Genath hadanne Sinhala deshe

    ছোটোবেলায় এই সব কুঁচ ফল আমাদের জীবন রঙিন করে দিত।
    খেলতাম।
    আর খেলার সঙ্গী ছিল একটা ফল, নাম মনে পড়ছে, সেটাও কুঁচ ফল বলে মনে পড়ছে।
    টিয়া পাখি খুব খেত।
    সবুজ রঙের হতো। পেকে গেলে লাল। আমরাও খেয়েছি। কী খাই নি। ঘাসও চিবিয়েছি। একটা ঘাস ছিল উত্তরপাড়ার কলাপুকুরে বিস্কুট ঘাস। সুন্দর গন্ধ।
    আর একটা ফল হতো কবরখানার ধারে। বেঞ্চি ফল বলতো। বৈঁচি ফল কী?
    গায়ে কাঁটা থাকতো গাছে।
    ছোটো ছোটো গাছ। আমার মনে পড়তো ম্যাক্সিম গোর্কির কথা। খেতাম। টক টক নোনতা।
    গ্রাম থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে ছিল সর্ষেডাঙার পুল।
    ওখানে কোনোদিন সরষে দেখিনি।
    আমাদের ছটা ছাগল ছিল।
    আমার তত্ত্বাবধানে সেটা ৩৬ টিতে দাঁড়ায়। স্কুলের টিফিনে ছুটতাম ছাগল দেখতে। একটা ছাগলছানা কুড়িয়ে পেয়েছিলাম শীর্ণ রুগ্ন অসহায়। বৃষ্টিতে সারারাত ভিজে পড়েছিল। সবাইকে জিজ্ঞেস করি কাদের ছাগল? দেখা যাক কারো নয়। দূর গাঁ থেকে শেয়ালে নিয়ে এসেছিল অথবা দল ছুট।
    তাকে সেবা করে দুধ খাইয়ে বাঁচাই। খুব পায়খানা করতো। হোমিওপ্যাথি ওষুধ খাওয়াই।
    বেঁচে যায়। শেয়ালে একটা পা কামড়ে ছিল।‌ তাই তার নাম হয় শেয়াল। তার পায়ে ব্যান্ডেজ দিই। লতাগুল্ম আর গাঁদা পাতা থেঁতলে লাগিয়ে দিই। বেঁচে যায়।
    শেয়াল বড়ো হয়। পাটকিলে রঙ। ছাগী। দুম্বার মতো পায়ে বড়ো বড়ো চুল।
    শেয়ালের বংশধররা সংখ্যায় বাড়ে। হৃষ্টপুষ্ট হয়।
    আগে যে-সব ছাগল তেড়ে আসতো ওকে। তারা ভয় পায়, ও শিং উঁচিয়ে তেড়ে গেলে।
    ওই শেয়ালের প্রতি আমার খুব মায়া ছিল। ও অনেক দূর দূর চলে যেতো।
    দলকেও নিয়ে যেতো। কালে সেই হয়ে ওঠে দলনেত্রী। এমনিতে দুলকি চাল। বিরোধী দল আক্রমণ করলে তীক্ষ্ণ শিং নিয়ে তেড়ে যেতো।
    সর্ষেডাঙার মাঠে একটা জমিতে ছিল কেশুর ঘাস।
    মাটির তলায় মোটা শিকড়।
    ওর চেয়ে মিষ্টি ফল আজো খাই নি।

    পর্ব ৯২


    আঁচল ঝুলানো পথে কতশত স্মৃতির আঁকিবুঁকি। কোন কথা বলা যাবে, আর কোন কথা যাবে না, কেউ জানে না। জানতেও হবে না।
    শেয়াল নামক ছাগলের অস্তিত্ব মনে পড়তেই জেগে উঠল ভুলো নামক সিংহ সারমেয়র কথা।

    ১৯৭৮ এর বন্যার পর পূজার ছুটি। গ্রামে তখন দুর্গাপূজার লম্বা ছুটি থাকতো, দুর্গা পূজা যদিও গ্রামে হতো না। মানুষের আয় বেড়েছে, বামফ্রন্টের স্থায়িত্ব বেড়েছে দুর্গাপূজাও বেড়েছে। ইদ বকরিদ এবং মহরমে জাঁকজমকও।
    গ্রামে তখন পূজা বলতে ধুমধাম করে পৌষ মাসে কলেরার দেবী ওলাইচণ্ডী পূজা। আমাদের গ্রামে এবং পাশের বর্গক্ষত্রিয় পাড়ায় রসপুকুরে।
    পূজা মানে মেলা।
    কেনাকাটা।
    আত্মীয় স্বজন আসা।
    যাত্রা হওয়া।
    আমাদের এলাকায় যাত্রার সূচনা হতো দু কিলোমিটার দূরের বোড়া গ্রাম দিয়ে।
    অগ্রহায়ণ মাসে নবান্নের দিনে।
    এরপর পাঁচ কিলোমিটার দূরে কোনা।
    সেখানেও বোধহয় তাই।
    মেলার ধুম পড়তো পয়লা মাঘ-- মকর সংক্রান্তির দিন থেকে।
    কারণ ধান ঝাড়া শেষ।
    গরিব মধ্যবিত্ত বড়োলোক--সবার হাতে দুটো পয়সা।
    বর্ধমান শহরের গায়ে দামোদর নদে জাত বসতো। জাত মানে মেলা।
    বিরাট মেলা নদীর চর জুড়ে।
    আরেকটা বসতো আরামবাগের দিকে একলক্ষ্মীর কাছে। মুইধারা গ্রামে‌।
    আমাদের পাশের বাড়ির বেলা ফুফুর বিয়ে হয়েছিল ওই গাঁয়ে।
    তার ফলে পাশের বাড়ির ছেলেমেয়েরা সেখানে মেলা দেখতে যেতো।
    আমাদের অনুমতি মেলে নি।
    মেলায় গেলে স্বভাব নষ্ট হয়।
    কিন্তু পাশের গ্রাম বোড়া রসপুকুর যাওয়া যেতো।
    মূলত যাত্রা দেখতে।
    আর স্কুলের বন্ধুরা নিমন্ত্রণ করতো।
    গেলে পাঁপড় জিলিপি জিভে গজা কাঠি ভাজা বারো ভাজা খাওয়াতো বাড়িতে ডেকে।
    বর্ধমানের মেলার নাম ছিল সদরঘাটের জাত বা বড়ো মেলা।
    সেখান থেকেই ধুম মেলার।
    মেলার পসারীরা আজ এই গ্রাম সেই গ্রাম করতেন।
    ৭ মাঘ রসপুকুর।
    ১৬ মাঘ রামবাটি। এটা 'ধর্মমঙ্গল' কাব্য প্রণেতা গ্রামের কর্মক্ষেত্র।
    ১৮ মাঘ গোপীনাথপুর তথা বুড়ুলের মেলা।
    ১৯ মাঘ আউশাড়া গ্রামে। প্রথম দিন বড়ো। তারপর ভাঙা হাট।
    এবার গিয়ে দেখলাম তিন চারদিন জমজমাট বড়ো মেলা। সব মেলে সেখানে।

    একদিন একটা ঘটনা ঘটল। ১৯৭৮ এর বন্যার পরের কথা।
    বৈঠকখানায় বসে আছি।
    বাঘবন্দি খেলা খেলছি।
    বলা ভালো শিখছি।
    গ্রামে কিছু মানুষ থাকতেন যাঁরা বই পড়তে পারতেন না, কিন্তু অঙ্কের ধাঁধা জানতেন আর বুদ্ধির খেলা বাঘবন্দীতে ছিলেন ওস্তাদ।
    আমি ফুটবল ক্রিকেট হাডুডু কবাডি নুনচিক বুড়ি বসন্তি ভলিবল একটু হকি --সব খেলতাম, কিন্তু বাঘবন্দি চাইনিজ চেকার দাবায় ওস্তাদ হয়ে উঠি।
    ক্যারাম তাসে সুবিধা করতে পারি নি।
    তা বাঘবন্দি খেলছি এক ওস্তাদ খেলুড়ের সঙ্গে।
    সংকল্প হারাতেই হবে‌।

    এমন সময় দেখি একটা সিংহের মতো দেখতে বিশাল কুকুর হেলতে দুলতে আমাদের খামারে হাজির। সোনালী ঝালর কেশর। বুকের কাছে বেশ চওড়া।
    কোমর সরু।
    এমন কুকুর কেবল সিনেমায় দেখেছি আগে।
    পরে বাস্তবেও এতো সুন্দর কুকুর দেখিনি।
    সংকর প্রজাতি। দেশি আর বিদেশি মিশেল।

    ঘর থেকে ব্রিটানিয়া বিস্কুট এনে একটু দূরে দূরে ফেলে ওঁকে সদর দরজা পার করিয়ে ঘরে আনা গেল।

    ঘরে থেকে গেল।
    নাম হলো ভুলো।
    কদিন পর সন্ধান পেয়ে ভুলোর আসল মালিকরা নিতে এলেন বোড়া থেকে।
    বেশ বড়োলোক বাড়ি।
    সাতদিন গেল না, ভুলো এসে হাজির।
    আবার নিয়ে গেল।
    এবার চেন দিয়ে বাঁধা।
    ভুলো চেন ছিঁড়ে পালিয়ে এলো।
    এইভাবে কয়েকমাস চললো।
    ভুলো চলে আসেন।
    ওঁরা নিয়ে যান।
    ওঁরা নিয়ে গেলে খুব কষ্ট।
    আবার দেখতেও যাওয়া যায় না, ভাববে লোভ দেখাতে এসেছি।

    ভুলোও পালিয়ে আসে।
    এবং একটা ব্যাপার আমরা দেখলাম ভুলো ঠিক সেদিনই পালিয়ে আসে যেদিন বড়দা শহর থেকে বাড়ি আসেন।
    এবার থেকে ভুলো এলেই আমরা বুঝে যেতাম দাদা আসছেন।
    দাদা থাকতেন কিন্তু ২৪ কিলোমিটার দূরে বর্ধমান শহরে।
    রাজ কলেজের জিএস তখন।
    ভুলো কী করে বুঝতো এটা একটা রহস্য!
    এর কোনো কিনারা আজো করতে পারি নি।

    এরপর মাস চার পাঁচ চেষ্টা করেও যখন ভুলোকে নিয়ে রাখা গেলো না, মালিকরা হাল ছাড়লেন।
    চেন ছিঁড়ে রক্তাক্ত মুখে ভূলো হাজির।
    যা দাঁড়াল তারপর আমি যেখানে ভুলো সেখানে।
    খেলার মাঠ বাজার সব জায়গায়।
    অবস্থা এমন দাঁড়াল সাড়ে ছয় কিলোমিটার দূরে আমার স্কুল। ভুলো সেখানেও হাজির।
    আমাদের গ্রাম থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে গোপীনাথপুর রেলস্টেশন।
    বিডিআর রেলের ট্রেন।
    একদিন ট্রেনে করে স্কুল যাচ্ছি।
    দেখি দূরে আলপথ দিয়ে ভুলোও ছুটছে সমান তালে।
    আমার চিন্তা পাশে নয়ানজুলি।
    পড়ে না যায়। সাপ খোপ আছে।
    কে শোনে ।
    দরজায় দাঁড়িয়ে দেখি, ওকে।
    স্টেশনে নামতেই সে ছুটে আসে।
    কুঁইকুঁই করে জানান দেওয়া-- চোখের ভাষা রাগ করো না।
    স্কুলের গেটে গিয়ে বসে থাকলো।
    স্কুলের বন্ধুরা আওয়াজ দিতো-- তোর বন্ধু বসে আছে।
    প্রতি পিরিয়ডে গিয়ে দেখে আসতাম।
    কী করছে।
    বিকেলে আমার সঙ্গেই ফিরবে।
    অনেক বোঝানো হলো।
    তারপর একদিন বুঝলো।
    বললাম, এ-রকম করলে আমি স্কুলই যাবো না।
    চিন্তা হতো খুব।
    বাজারে অনেক কুকুর মারামারি করে যদি।
    তবে ভুলোর বিশাল চেহারা দেখে এগোতো না।
    বোধহয় অ্যালসেশিয়ান আর দেশি কুকুরের মিশ্রণ ছিল।
    একাদশ শ্রেণিতে বর্ধমান শহরে ভর্তি হলাম।
    প্রতি শনিবার ফিরি ওর টানে।
    ভুলো ঠিক বসে থাকবে তিন কিলোমিটার দূরে বাসস্ট্যান্ডে।
    ফিরবে আমার সঙ্গে।
    শহরে রাজনীতি বিতর্ক তাৎক্ষণিক বক্তৃতা বিজ্ঞান ক্লাব নাটক জড়িয়ে পড়ছি।
    একটু অনিয়মিত হচ্ছে ফেরা।
    একবার বাড়ি গিয়ে দেখি ভুলোর ডানপায়ে বিশাল কাটা। কাটারি ছুঁড়ে মেরেছে কোনো শয়তান লোক।

    ঘা সারলো না। পোকা হয়ে গেল।
    ফিনাইল দিলাম। তখন তো এতো ডাক্তার বদ্যি ছিল না কুকুরের।
    একদিন স্কুল থেকে ফিরেছি, ভুলো এলো না।
    নির্জীব শুয়ে আছে।
    কাছে গেলাম। মাথায় হাত দিয়ে মাথাটা কোলে নিলাম।
    একফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো ভুলোর।
    ওই প্রথম কোলে নেওয়া।
    ভুলো আর মাথা তুললো না।
    আগরাপুরার মাঠে ভুলোকে কবর দিলাম।
    প্রতি শনিবার রজনীগন্ধা কিনে নিয়ে যেতাম বর্ধমান থেকে।
    করে ফুল রেখে আসতাম।

    বহুদিন পর ভুলোর কথা মনে পড়ে চোখ দিয়ে জল ঝরছে।
    ভুলোর মতো কুকুর আর দেখি নি‌।
    তবু কুকুরের বিশ্বস্ততার বহু প্রমাণ পেয়েছি।
    ব্যান্ডেলে কিছুদিন ছিলাম।
    একটা কুকুরকে 'আজকাল' পত্রিকায় চাকরি করতে যাওয়ার সময় খেতে দিতাম।
    রাতেও।
    একদিন প্রবল ঝড়জল বৃষ্টি।
    ট্রেন বন্ধ।
    মধুময় পালের সঙ্গে ফিরতাম।
    মধুময়দা গাড়ির চালককে বললেন, চলো পৌঁছে দিয়ে আসবে। মধুময়দা ভদ্রেশ্বর আমি ব্যান্ডেল।
    আমার বুক ধুকপুক করছে।
    অফিস কী বলবে।
    মধুময়দা গল্পকার।
    বুঝে বললেন, কর্মীর দায়িত্ব কাগজকে দেখা, কাগজও দেখবে। চলো।
    বাড়ি ফিরছি জল ভর্তি রাস্তা।
    ঘরে ফিরি দেখি কুকুরটা লম্বা হয়ে শুয়ে আছে যাতে ওকে কেউ না মাড়িয়ে ঘরে ঢুকতে পারে।
    এখন যেখানে থাকি সেখানেও এক দশা-- একজন আছেন আমি যেখানে তিনি সেখানে।
    বাইরে গিয়ে বসে থাকবেন।
    চারতলায় উঠবেন।
    মিটিংয়ে হাজির হবেন।
    আর সমস্যা একটাই, আমি সামনে না থাকলে খাবেন না।
    অন্য আরো পাঁচ ছটি কুকুর আছে। তাঁদেরও খেতে দিই দুবেলা।
    ওঁর খাবারের দিকে সবার লোভ।
    ও কাউকে কিছু বলবে না।
    চুপ করে চেয়ে দেবে খাবার।
    ফলে আমাকে দাঁড়াতেই হয়।
    আমার গাড়ির আওয়াজ পেলেই ওই পাঁচ ছটি কুকুরের কী আনন্দ প্রকাশ।
    আমাদের ঘরের দরজার সামনে লাল্টি শুয়ে থাকে।
    তাকে দেখতে না পেলেই আমার চিন্তা।
    এর আগে আরেকটি ছিল।
    তার এবং আরেকজনের গল্প আরেকদিন।


    (ক্রমশঃ)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
    পর্ব ১-৩ | পর্ব ৪-৬ | পর্ব ৭-৯ | পর্ব ১০-১২ | পর্ব ১৩-১৫ | পর্ব ১৬-১৮ | পর্ব ১৯-২১ | পর্ব ২২-২৪ | পর্ব ২৫-২৭ | পর্ব ২৮-২৯ | পর্ব ৩০-৩১ | পর্ব ৩২-৩৩ | পর্ব ৩৪-৩৫ | পর্ব ৩৬-৩৭ | পর্ব ৩৮-৩৯ | পর্ব ৪০-৪১ | পর্ব ৪২-৪৩ | পর্ব ৪৪-৪৫ | পর্ব ৪৬-৪৭ | পর্ব ৪৮-৪৯ | পর্ব ৫০-৫১ | পর্ব ৫২-৫৩ | পর্ব ৫৪-৫৫ | পর্ব ৫৬-৫৭ | পর্ব ৫৮-৫৯ | পর্ব ৬০-৬১ | পর্ব ৬২-৬৩ | পর্ব ৬৪-৬৫ | পর্ব ৬৬-৬৭ | পর্ব ৬৮-৬৯ | পর্ব ৭০-৭১ | পর্ব ৭২-৭৩ | পর্ব ৭৪-৭৬ | পর্ব ৭৭-৭৮ | পর্ব ৭৯-৮০ | পর্ব ৮১-৮২-৮৩ | পর্ব ৮৪-৮৫ | পর্ব ৮৬-৮৭ | পর্ব ৮৮-৮৯ | পর্ব ৯০-৯২ | পর্ব ৯৩-৯৪ | পর্ব ৯৫-৯৬ | পর্ব ৯৭-৯৮ | পর্ব ৯৯-১০০ | পর্ব ১০১-১০২ | পর্ব ১০৩-১০৪ | পর্ব ১০৫-১০৬ | পর্ব ১০৭-১০৮ | পর্ব ১০৯-১১০ | পর্ব ১১১-১১২ | পর্ব ১১৩-১১৪
  • ধারাবাহিক | ০৯ জুলাই ২০২২ | ২০০৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • touhid hossain | ১৪ জুলাই ২০২২ ১৬:০৯509848
  • ঈদ, কুঁচফল, ম্যাচ,ভুলো,শেয়াল, ওঝা-- স্মৃতির ঝাঁপিটা অমূল্য। রূপকথার চেয়েও সুন্দর। এমন জ্যান্ত লেখা খুব কম পড়েছি। আর কী মিষ্টি শ্রীলঙ্কার মেয়েরা! ❤
  • ইমানুল হক | 110.224.***.*** | ১৫ জুলাই ২০২২ ১৪:১৫509878
  • ধন্যবাদ @তৌহিদ 
  • Santosh Banerjee | 2401:4900:3149:c1e:0:65:9143:***:*** | ০২ আগস্ট ২০২২ ১২:২০510686
  • ভালো লাগলো। ধন্যবাদ!!
  • গোপা মুখোপাধ্যায় | 117.223.***.*** | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২১:২২511558
  • ভয়ানক ভাল 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন