আমাদের ছোটো বেলায় আমাদের বড়োরা তাঁদের মাস্টারমশাইদের নিয়ে খুব গল্প করতেন। তার ফলে সেইসব অদেখা মাস্টারমশাই অধ্যাপকদের আমরা না দেখেও চিনতাম। শ্যামসুন্দর কলেজের গোপেশ দত্তর পড়ানোতে ছেলেমেয়েরা নাকি কাঁদতো শাজাহানের দুঃখে, 'নীলদর্পণ'এর তোরাপের সংলাপে উত্তেজিত হতো, বিদূষকের সংলাপে হো হো করে হাসতো। কবি আলোক সরকার, উৎপলেন্দু চক্রবর্তীর ছবির চিত্রনাট্যকার প্রাবৃট দাসমহাপাত্র, সম্পাদক পুলক চন্দ্র, সমাজকর্মী অধ্যাপক প্রিয়ব্রত দাশগুপ্তকে না দেখেই চিনতাম। গল্প শুনে। প্রাবৃট দাসমহাপাত্রর সঙ্গে আলাপ তো হল এই বছরখানেক আগে।
শ্যামসুন্দর স্কুলের সঙ্কটতারণ মণ্ডলকে চিনতাম। উনি আসতেন বাড়িতে। বাবার বন্ধু।পরে আমার ভাগ্নির বন্ধু হয়ে যান। অসাধারণ যাত্রা করতেন। ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায়ের সাড়াজাগানো পালা 'রক্তে রোয়া ধান' যাত্রাপালায় মি. চাবুকের অভিনয় আজো ভুলি নি। ঝাঁকড়া কোঁকড়ানো চুল নিয়ে যখন আগুনে সংলাপ বলতেন, রক্ত গরম হয়ে উঠতো।
শ্যামসুন্দর রামলাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ভাস্কর বাবুর খ্যাতি ছিল খুব। এখনো বিশিষ্ট আইনজীবী একরামুল বারির সঙ্গে কথা হলেই এই দুজনের কথা উঠবেই।
রায়না স্কুলের মোক্তার সাহেব, আমার খালুর প্রসিদ্ধি দুই কারণে। কমিউনিস্ট পার্টি ছেড়ে অনুকূল ঠাকুরের ঋত্বিক হয়ে যান। ইংরেজিতে দুরন্ত বক্তৃতা করতেন। এই ইংরেজি আর অঙ্ক জানাদেরই সেসময় পণ্ডিত মনে করা হতো। এখন ইংরেজি বোলনেওয়ালাদের।
এই সূত্র ধরেই আসতো আলমপুর হাইস্কুলের সুনীল কোঙারের নাম। যত ফেল করা ছেলেদের ধরে নিয়ে গিয়ে কীভাবে যেন মাধ্যমিক পাস করিয়ে ফেলতেন।
ট্রেনটি স্টেশনে পৌঁছেছে র ইংরেজি ট্রানস্লেশন উনি 'অ্যারাইভড' না করে ' টাচড' লিখেছিলেন। সে নিয়ে কত প্রশংসাসূচক আলোচনা। একবার একটি বাক্যে দুবার 'হ্যাড' হবে কি না এই নিয়ে বিতর্কের অবসান করতে নবম শ্রেণিতে তাঁর কাছে যাই। সুনীল কোঙারের ছেলে দেবাদা
ছিল আমাদের হিরো। কী ফুটবলটাই না খেলতো। বাবা পড়ার জগতের মানুষ, দেবাদার মন মাঠে।
পাঠক, মনে রাখবেন, আমাদের একটা ইংরেজি বা অঙ্ক আটকালে তিন বা ছ কিলোমিটার দূরে যেতে হতো। গাঁয়ে দেখানোর লোক ছিলেন না। এই যে বানান নিয়ে এত খিল্লি হলো, কেউ প্রশ্ন করলেন না, দুটো এল কেন এলো? বার্নাড শ একবার ফিশ বানান লিখেছিলেন এইভাবে, ghitio. কেন? তাঁর জবাব ছিল কাফ বানানে জি এইচ কী বোঝায়? আর স্টেশন বানানে টি আই ও?
কটা বাড়িতে এটি দেবের ডিকশনারি ছিল দেখার বিষয়। তবে গল্পের বই অনেক বাড়িতেই পাওয়া যেতো। কবিতার বই ২০ টি বাড়িতে। এখন কলকাতায় চাকুরিজীবী পরিবারের খুব কম বাড়িতেই বাইরের বই দেখি।
স্কুল কলেজের বই আছে। তাও ওজন দরে বিক্রি হয়। বই ওজন দরে বিক্রি করার কথা গ্রামে কেউ ভাবতেও পারতেন না। বই মা সরস্বতী। বই নষ্ট হলে উইয়ে কাটলে নমস্কার করে পুকুরের জলে ভাসিয়ে দিতেন হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে।
খবরের কাগজ অবশ্য ওজন দরে কিনতেন দুগোদা।
ঠোঙা হবে। তখন প্ল্যাস্টিক যুগ আসে নি। এখন তো প্ল্যাস্টিক মন প্ল্যাস্টিক জীবন প্ল্যাস্টিক মানি প্ল্যাস্টিক মেরুদণ্ড।
সেহারা হাইস্কুল ছিল আমাদের চোখে সেরা। ছোটো মামা পড়েছেন । বড়ভাই পড়েছেন। সেহারা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নিরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়কে একবাক্যে চিনতেন আসপাশের কয়েকটি থানা। দূরদূরান্ত থেকে ছেলে মেয়েরা পড়তে আসতো। আমি ১৯৮১ তে স্কুলের ম্যাগাজিন 'পাথেয়' সম্পাদনার সময় কোন কোন গ্রাম থেকে ছেলে মেয়ে পড়তে আসে তার একটা তালিকা করেছিলাম। স্মৃতি বিশ্বাসঘাতকতা না করলে সংখ্যাটা ছিল ১০১০।
নিরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় ভারি চেহারার মানুষ। আদর করে ছেলেমেয়েরা আড়ালে বলতো, কোলাব্যাঙ। হাতে লাঠি আর নস্যি রঙের হাতে বোতাম ওয়ালা বুশ শার্ট ধরনের পাঞ্জাবি ( ভুল বলছি মনে হয় নামটা!) পরে স্কুলে পায়চারি করতেন প্রার্থনা হয়ে যাওয়ার পর। তাঁকে দেখলেই গোটা স্কুল নিস্তব্ধ হয়ে যেতো। পিন ড্রপ নীরবতা কাকে বলে তা ওখানেই দেখেছি।
আর একবার রোকেয়া স্কুলে সভা করতে গিয়ে।
নিরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি আমার দাদাকে পোষ্য নিতে চেয়েছিলেন এটা শুনে এসেছি আশৈশব। সেহারা স্কুলের আর কয়েকজন শিক্ষকের নাম ভর্তি হওয়ার আগেই শুনেছি। ভবানীপ্রসাদ রক্ষিত, খলিল সাহেব, জাহ্নবীবাবু। এবং পরেশবাবু ও শিশির বাবু। পরেশ চক্রবর্তী ও প্রিয়নাথ নন্দীর কথা কাদামাটির হাফলাইফ ৮ এবং ৯-এ লিখেছি। প্রিয়নাথ নন্দীকে আবিষ্কার করি।
শিশির বাবুর লেখায় ফেসবুকে পড়লাম, বাবার বন্ধু ছিলেন ওঁরা। পরেশবাবু ও শিশির বাবু।
আমার জীবনে এই শিক্ষকদের প্রচুর অবদান। সব শিক্ষকের কাছেই আমি ঋণী।
তবে বিতর্ক, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা, কুইজের জগৎ আমাকে চেনান শিশির দত্ত।
সত্তর দশকে স্কুলেই ছুরি খেয়েছিলেন।
তাঁর সঙ্গে আমার আলাপ অদ্ভুতভাবে।
ইংরেজির ক্লাস।
গাঁয়ে অনেক নম্বর পেয়েছি। কিন্তু জানি না তো তেমন। ইংরেজি গ্রামার বই কিনে স্কুল গেছি। প্রথম ক্লাস ইংরেজি। মাস্টারমশাই যিনি ছিলেন তিনি আমাদের গ্রামের ছেলেদের পছন্দ করতেন না। আমরাও তাঁকে। ব্যঙ্গ করে করে কথা বলতেন।
পরে আমাকে খুব ভালোবাসতেন।
প্রশান্তবাবু। তাঁর ক্লাসে প্রথম স্পেশাল মনিটার করেন আমাকে।
গ্রামার বই খুলে দেখি সব ইঞ্জিরি। বাংলা একটা অক্ষর নাই। শুধু ট্রানস্লেশন অংশ ছাড়া।
এই রে, গেছি।
মনে মনে ভাবছি আমাদেরই ধরবেন। মানে বলতে।
এমন সময় একজন শিক্ষক হন্তদন্ত হয়ে এলেন।
এই একজনের পা ভেঙেছে। ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। কে যাবে?
আর কে যাবে?
আমি লাফ দিয়ে বের হই।
অন্যের পা ভাঙ্গা ঠিক করতে গিয়ে আমার পা ভাঙ্গার জোগাড়।
ভাঙ্গুক।
ভাঙলে ইংরেজি গ্রামারের হাত থেকে তো কদিন বাঁচবো।
আমরা চারজন চ্যাংদোলা করে এক কিলোমিটার দূরে ডাক্তারখানায় নিয়ে গেলাম ছেলেটিকে।
স্কুলে ছেলেদের হাত পা ভাঙ্গা প্রায়ই হতো। গাছ থেকে লাফিয়ে কলতলায় পিছলে পড়ে। হাইবেঞ্চে পা আটকিয়ে। ল্যাং মারামারি করে।
এগুলো ঘটতো বেশি ফাইভে।
সিক্স থেকে সবাই এতো অশান্ত নয়।
শিশির দত্তের সঙ্গে সেই যোগাযোগ। আমি ভয়ে নাম বলি নি। নাম বললেই দাদার কথা জিজ্ঞেস করবেন। দাদার স্কুলে ভালো ছাত্র হিসেবে নাম ছিল। তাঁর ভাই হয়ে যদি কেঁচাই।
একজন বলে দিল, ওর নাম ইমান।
সারাজীবন স্যার আমাকে ইমান বলেই ডেকেছেন। ডাকেন।
রেডক্রসের জেলার পাণ্ডা ছিলেন স্যার। ফার্স্ট এইড ট্রেনিং, ব্যান্ডেজ বাঁধা, সাপে কাটলে কী করতে হবে, জলে ডুবলে কী করে বাঁচাতে ও বাঁচতে হবে-- সব শিখিয়েছেন ১৫ দিনের শিবির করে। বন্যাত্রাণে টাকা তুলেছি তাঁর কথায়। এই শিবিরেই আমার এক বন্ধুর প্রেমের জন্ম। দীপ জ্বেলে যাই-- দেখে অনুপ্রাণিত প্রেম।
রেডক্রস দিবসে বাসে বাসে ঘুরে কৌটো ঝাঁকিয়ে টাকা তুলেছি।
আমাদের সময় জেলার মধ্যে আমাদের স্কুল ছিল টাকা তোলায় সেরা।
স্যার জেলার অনুষ্ঠানে এজন্য পতাকা পেতেন। আমরা জোরে জোরে হাততালি দিতাম।
বর্ধমান শহর অনেক দূরে। তাই বাঁকুড়া মোড়ে রেডক্রসের বিল্ডিং হবে। স্যারের নেতৃত্বে দোকানে বাজারে বাসে ট্রেনে ঘুরে আমরা অর্থ সংগ্রহ করেছি।
স্যার পরোপকারী মানুষ।
মানুষের আপদে বিপদে আছেন।
আজীবন বামপন্থী।
কৈয়ড় গ্রামে জন্ম।
এখন বয়স ৮২।
ফেসবুকেও আছেন।
লেখা পড়েন।
বাবাকে নিয়ে তত লিখি না বলে সস্নেহে বকেন।
আমরা গোটা পরিবার, আমাদের সব ভাই-বোন তাঁর ভক্ত।
এলাকার মানুষ।
অজাতশত্রু বলবো না, ছুরি খেয়েছিলেন একবার, ১৯৭২-এ সিপিএম বলে।
পরে সক্রিয় রাজনীতি করতে দেখি নি।
তিনি ছিলেন কর্মশিক্ষার শিক্ষক।
এ-রকম প্রকৃত কর্ম শেখানো মানুষ বিরল। কেন যে কোনো রাষ্ট্রীয় সম্মান তাঁকে দেওয়া হয় নি।
শিশির দত্তের আজ কোনো শত্রু নেই। ১৯৭২ এর ছুরি মারারাও আশা করি পরে অনুতপ্ত হয়েছিল।
স্যার কোনোদিন ওই প্রসঙ্গ তোলেন নি।
স্যার শতায়ু হোন।
প্রথম লেখা শুরু স্লেটে। কাঠের ফ্রেম। মাঝে কালো বোর্ড। মোটা মোটা পেন্সিল। দাগা বুলানোর কাজ। তবে কয়েকদিনেই ওস্তাদ হয়ে গেলাম। পেন্সিল যত না লিখি তার চেয়ে বেশি খাই। হেভ্ভি খেতে কিন্তু।। এছাড়া দুটো খেলা। একটা ঢ্যাঁরা কাটা আর শূন্য দিয়ে মেলানো।
তলায় একটা ঐ লিখে চার পাশে ১ থেকে ১০০ লিখে সব ঘর ছুঁয়ে কাউকে স্পর্শ না করে আবার ঐ -এ ফেরা। জটিল ব্যাপার। সব সময় ১--১০০ নয়, ১--২০ ও হতো।
এছাড়া এ ওর স্লেট টেনে গাধা ঘোড়া ভেড়া ইত্যাদি লেখা এবং সে-নিয়ে একটু আধটু নালিশ চলতে থাকল।
এবং একটা কাজে সবাই পারদর্শী। স্লেটের ওপর কলমের কালি দিয়ে নিজের নাম লেখা।
নাম লেখা কাঠ যতদিন টিকত, কালো বোর্ডের আয়ু ততদিন বলাই বাহুল্য থাকতো না।
আমাদের কলেজে পড়ার আগে পর্যন্ত ডট পেনে পরীক্ষা দেওয়া ছিল নিষিদ্ধ।
নীল কালি।
প্রথম প্রথম কালি গুলে খাগের কলমে লিখেছি। পেন নয় তখন কলম বলা হতো। সে পেয়েছি তৃতীয় শ্রেণিতে এসে। আর্টেক্স কলম। সাধারণ আর্টেক্স কলমের মূল্য ভাই জইনুল মনে করাল, ২ টাকা ৪০ পয়সা।
পাশ দিয়ে কালি আছে কি না দেখা যেত, সেই কলমের লোভ ছিল খুব।
চারটাকা দাম তখন।
চার টাকা মানে ৪৮ টা ডিম।
চার টাকা ১৩ কেজি ধান।
চার টাকা একজন মজুরের চারদিনের মজুরি।
এই আর্টেক্স কলম আর সুলেখা কালি। ড্রপারে করে কালি ভরা।
নবম শ্রেণিতে সেহারায় পড়তে এসে পেলাম একটা নতুন কলম। লিঙ্ক। আর মিলল গোলাপী একটা রঙ। ক্যামলিন।
সেই কালির দোয়াত অন্য রকমের। চেনা ছকের নয়।
তখন কালি বলতে দুটি। সুলেখা আর শ্রীলেখা।
আমাদের সব সুলেখা।
ক্যামলিন সবুজ গোলাপি বেগুনি তিন কালো নীল-- পাঁচ রঙের কালি আনলো।
পাঁচ টাকা দাম।
আনন্দের চোটে কিনে ফেললাম গোলাপি রঙের কালি।
ছবি আঁকার অক্ষম চেষ্টা আর কবিতা লেখা চলতে লাগল ওই কালিতে।
স্কুলে তো নীল রঙ ছাড়া বাকি সব নিষিদ্ধ।
তবে স্বাধীনতার দিশারী শিক্ষক শিশির দত্তর কল্যাণে কর্মশিক্ষা খাতায় সব রঙ চলবে।
ক্যামেল কোম্পানির স্কেচ পেন দিয়ে কর্মশিক্ষার খাতা বাননো।
আমাদের সহপাঠী সুবীর ভৌমিকের দাদা প্রবীর ভৌমিক কর্মশিক্ষার খাতা বানাতে ১০ টাকা নিত।
সুন্দর হাতের লেখা।
পরে সাইনবোর্ড লেখার দোকান দেয়।
ভালো চলতো।
আমি পোস্টার লেখা শেখার অভ্যাসে নিজের কর্মশিক্ষা খাতা নিজেই বানাই।
তখন রথের দিন যাত্রার বিজ্ঞাপন বের হতো।
খুব ভালো ভালো ক্যালিগ্রাফি পাওয়া যেতো।
এ-ছাড়া সুবোধ দাশগুপ্ত, খালেদ চৌধুরী, পূর্ণেন্দু পত্রীদের প্রচ্ছদ থেকেও শিখতাম।
গৌতম ঘোষের দখল ছবির নাম লিপি ছিল অসাধারণ।
তাও নকল করি।
আর অশোক বিশ্বনাথনের বাবা এন বিশ্বনাথনের একটা গল্পের বইয়ে অন্যরকম হস্তশৈলী ছিল। নকল করি।
এগুলো ভোট বা এমনি দেওয়াল লিখনে কাজে লাগতো।
১৯৮০ তে ফ্লুরোসেন্ট বলে একটা রঙ বের হলো। রাতে অন্ধকারেও দেখা যায়।
দাদার বন্ধু উদয় সরকার, বিমল পালরা বাবার কাছ থেকে কিছু নিজেদের থেকে কিছু নিয়ে কলকাতা চলে গেল। ওই রঙ আর নতুন ধরনের তুলি কিনতে। লাহার দোকান থেকে।
আমাদের গ্রামের সমবায় সমিতির দেওয়ালে সারারাত হ্যাসাক জ্বালিয়ে আরওয়াল হত্যাকাণ্ডের ছবি আঁকল দৌলতদা। সঙ্গে ছিল নজরুল ইসলাম।
তখন সারারাত ধরে দেওয়াল লেখার ও দেখার মজাই ছিল আলাদা।
শ্যামসুন্দর কলেজ হোস্টেলের গায়েও ওই ছবি বহুদিন ছিল।
তো আবার কলমে ফিরি।
একটা কলমের প্রতি খুব আকর্ষণ ছিল-- উইংসাঙ।
কিন্তু কেউ পয়সা থাকলেই কিনতে পারেন না।
কারণ, লোকে আওয়াজ দেবে-- কীরে ফার্স্ট ডিভিশন পেলি নাকি?
অলিখিত নিয়ম-- সেকেন্ডারি বা হায়ার সেকেন্ডারিতে ফার্স্ট ডিভিশন না পেলে ওই কলম ব্যবহারের সে যোগ্য নয়।
ষোলো টাকা দাম।
এক ভরি রূপার দামও তখন ষোলোটাকা।
অবশ্য, কিছু কিছু শিক্ষক ব্যবহার করতেন। তাও প্রধান শিক্ষক না হলে করতেন না।
পার্ক, পার্কার, ম ব্লাঁ-- এ-সব তো গল্প উপন্যাসের বিষয় তখন।