শরতের গোড়ায় গোলাপি হ্যান্ডবিল বিলি করেছিল গুরুচণ্ডা৯ - বার্ষিক কুমুদি পুরস্কারের জন্য গল্প চেয়ে। পরিকাঠামোর অভাব ছিল, কোভিড পরিস্থিতিও পথ আটকেছে নানাভাবে- সবার কাছে পৌঁছতে পারি নি । এতদ্সত্ত্বেও, স্বল্প সময়ে আশাতীত সাড়া - আমরা কৃতজ্ঞ ।
কুমুদি চলে গেছেন- বেশিদিন হয় নি, তার ওপর কোভিডপীড়িত বছর - প্রতিযোগিতা শব্দটা নিয়ে খুঁতখুঁতুনি ছিলই। তবুও, তিনরকম সাইজের নড়বড়ে বেঁটে টুল সাদা কাগজে মুড়ে লাল রঙ দিয়ে ১ ২ ৩ লিখে টিখে আমরা প্রায় রেডিই ছিলাম, বিচারকদের তুমুল চেঁচামেচি শোনা যেতে লাগল এই সময় ।
তাঁরা চশমা এঁটে, হাতের পাকানো কাগজ দেখিয়ে গুরুচণ্ডা৯কে যা বললেন, তা মোটামুটি এই: গপ্প বিচারের পদ্ধতিটি, যেখানে কল্পনাকে নম্বর দিতে বেগুনী খোপে সংখ্যা লিখতে হয়, পরিবেশনার জন্য সবুজ খোপে, বানানভুলের জন্য লাল খোপ বরাদ্দ - কার্যকর নয় মোটেই। ধরা যাক, প্রতিযোগীদের একজনের গপ্পে হয়তো কল্পনার অভাবিত উড়ান, কিন্তু অত গুছিয়ে লেখা নয়, ওদিকে অন্যজনের কল্পনাশক্তি প্রশংসনীয়, কিন্তু উদ্দাম নয়, অথচ অতীব পরিণত পরিবেশনা। এই সব ক্ষেত্রে, মোট প্রাপ্ত নম্বরের নিরিখে প্রথম দ্বিতীয় হেঁকে দেওয়া মোটেই সুবিচার হবে না। এছাড়া, বয়স অনুযায়ী আলাদা গ্রুপ হলেও, সে গ্রুপের ভেতরে বয়সের সামান্য তারতম্যে লেখার মান বদলে যাচ্ছে বা হয়ত একই বয়সী ছেলে আর মেয়ের আলাদা রকম ম্যাচিওরিটি লেখায় প্রতিফলিত- খোপে খোপে সেরেফ সংখ্যা এই ব্যাপারটা ধরতেই পারছে না -
বিচারকদের কনফিউজড লাগছিল। কেউ সামান্য রাগ মাগ করছিলেন।
রইল পড়ে নড়বড়ে টুল, সাদা কাগজে লাল রঙের পোঁচ- আমরা ভাবতে বসলাম। কুমুদির গল্পে ভূষণদা বলত- "পচ্ছন্দ না হইলে চড়িবে না, অত বাক্য কীসের?" আমাদের সেই কথা মনে পড়ে গেল। একেই উল্টোপাল্টা প্রতিষ্ঠান - সকালের কথা বিকেলে পছন্দ হয় না, দুপুরের কথা সাঁঝের ঝোঁকে বদলে দিই। ওরিজিনাল গোলাপী হ্যান্ডবিলেই কাটাকুটি হয়েছে- সময়সীমা বদলে গেছে, বয়স অনুযায়ী নতুন বিভাগ যোগ হয়েছে।
"পচ্ছন্দ না হইলে..." এইটাই আসল কথা- আমাদের মনে হল।
ফলে, আবার কথা বদলাচ্ছি। এবারে প্রতিযোগিতা শব্দটাই বাতিল। তাকে কুলুঙ্গিতে তুলে রাখা হচ্ছে আপাতত- পরের বছর ধুলো টুলো ঝেড়ে ঝুড়ে দেখা যাবে কী করা যায়।
তো, এ'বছর শুধুই কুমুদির জন্য গল্প।
প্রতিযোগিতাকে ভ্যানিশ করেছি, কিন্তু উদযাপন তো রইল- আমাদের নবীন বরণ:
কুমুদির জন্য যারা লিখেছে-গল্প কী প্রবন্ধ- সব্বাই পাবে কুমুদির বই। এর মধ্যে যারা নিয়মকানুন মন দিয়ে পড়ে টড়ে শুধু গল্পই লিখেছে- তারা সকলে পাবে বই কুপন।
বাকি রইল, আপনাদের পড়ানো-
কুমুদির জন্য গল্প পড়তে ১৪ই নভেম্বর থেকে সাইটে চোখ রাখুন!